04/02/2024
এবারের বইমেলার সংযোজন। বইটা বাড়ি নিয়ে রেখেছি,। ঠিক করলাম, একরাতেই পড়বো। যতই হোক এককালে এক একটা কাকাবাবু সমগ্রর খন্ড একরাতে শেষ করতাম। সেসব যেন পূর্বজন্মের কথা। ক্লাস 2 তে পড়তে, যখন মা স্কুলে পড়াতে শুরু করল, দুপুরে সময় কাটাতে প্রথম এক এক দিনে এক একটা পান্ডব গোয়েন্দা পড়া। যাই হোক, বহুকাল পর সাহিত্যের ধারেকাছে এলাম। প্রিয় গীতিকারের গদ্যের হাত নিয়ে উচ্চাশা ছিল, এবং সে আমার আশাকে রক্তমাংসের রূপ দিল। 'ইমেজারি গুলো জড়ো হল একে, একে, একে', চাঁদনিতে উন্মাদ একজনে ভাসতে থাকা ঘটনাপ্রবাহ, উপমা, ছোট বড়ো মুহূর্ত, ক্লাইম্যাক্সে এসে শক্ত বুনোটের যে থ্রিলার তৈরী করল, তার রেশ যাবার মত নয়। বোধহয় তাইই, লিখতে বসলাম পড়ে ওঠার দুদিন পর, দুদিন মগজে থিতু হতে দিয়ে। ব্রহ্ম ঠাকুর দক্ষ, জিনিয়াস, তবে সুপারহিরো নন। পুরো গল্প জুড়েই লেখক ছড়িয়ে রেখেছেন নায়কের মানব গুনাগুন, যা পুরো যাত্রা টিকে অনন্যসাধারন করে তুলেছে। নিশাচরীর জন্ম যে গভীর ভালোবাসা ও অপ্রাপ্তির বেদনা থেকে হয়েছে, ভারী করে তোলে পাঠকের মন। তাই গল্প শেষে বারান্দায় হাওয়া খেতে যেতে হয়। শীতের হাওয়া ছুঁতে পারেনা চুপ করে যাওয়া আমার চঞ্চল মস্তিস্ককে। কিছুক্ষণ হাওয়া খেয়ে ফিরে আসি 'অনামিকা বলে ডাকতে পারি কি তোমায়'এ। এখানে আমরা প্রবেশ করি ব্রহ্মঠাকুরের আত্মোপলব্ধির অন্দরমহলে। আমরা প্রবেশ করি আশ্চর্যের চরিত্রের ডাইনামিক্সে। সমান্তরালে চলতে থাকা দুটো গল্প কখনো তাল কাটেনা, অনেকটা তার গানে চলতে থাকা দুটো ন্যারেটিভের মতোই। ব্রহ্মঠাকুরের আশ্চর্যের প্রতি স্নেহ জন্মে যাওয়া মনে পড়ায়, আজ থেকে অনেকদিন আগে ডাক্তারবাবুর অপারেশন না করার ডিসিশনের কথা। দুচারটে পয়েন্টে আমি ঔপন্যাসিকের বিন্যাসের সাথে ভিন্নমত, তবে তা আমার ঘোর কাটাতে পারেনা। অপ্সরার নাচে মোহিত হয়ে থাকা আশ্চর্যের চোখদুটির মতো আমার মাথাটাও আচ্ছন্ন হয়ে থাকে কি যেন এক কুয়াশার মত মায়ায়। বাকি উপন্যাসগুলো পড়ার অপেক্ষায় আমি, জানি তিনি হতাশ করবেননা।