30/12/2022
মধ্যবিত্তের প্রেম। স্বামী স্ত্রীর ভালবাসা part 2
“শেষকথা- অফিসে যদি দেড়ি হয়, আমার পক্ষে প্রতিদিন দেখা করা সম্ভব নাও হতে পাড়ে।“
“আলাদা করে দেখা করার কোনো প্রয়োজন নেই, বাসে আমাদের এখন প্রিতিদিন দেখা হবে, পাশাপাশি বসে গল্প করব,
আকাশ অবাক হয়ে যায়, কিভাবে মেয়েটা তার এত কিছু মানিয়ে নিতে পাড়বে, এ সত্যি ভাবার বিষয়, বর্তমান দিনেও কি এরকম মেয়ে পাওয়া সম্ভব!
এভাবেই দেখতে দেখতে আকাশ আর পারমিতার প্রেম শুরু হয়, কেটে যায় তিনটি বসন্ত। এবার পরস্পরের আরও কাছে আসার পালা। পরিবার থেকে তাদের কোনো বাধারই সম্মুখীন হতে হয়নি, পারমিতার পরিবারের কথায়-“মেয়ে যদি চায় সে আকাশের সাথে ভালো থাকবে, তাহলে আমরাও অবশ্যই চাই আকাশই যেন তার জীবনসঙ্গী হয়, কারণ মেয়ের সুখই তাদের সুখ।“
ভালো একটা দিন দেখে তাদের বিয়ে হয়ে গেল, দেখতে দেখতে তাদের বিয়ের দুই বছর কেটে গেল। এই দুই বছরে তাদের সম্পর্ক আরও অনেক বেশি মজবুত হয়েছে। পরস্পরকে আরও বেশি ভালোভাবে বুঝতে শিখেছে, পারমিতা নিজেকে অনেকটা মানিয়ে নিয়েছে। এদিকে, আকাশের জন্মদিন চলে আসে, আকাশ অফিস থেকে বাড়ি ফিরতেই সবাই “হ্যাপি বার্থডে,” বলে চেঁচিয়ে উঠে।
পারমিতা- “তোমার জন্য একটি বিশেষ উপহার আছে, চোখ বন্ধ করো”
এরপর পারমিতা আকাশকে একটি বাইকের সামনে নিয়ে যায়, আকাশ বাইক দেখে অবাক হয়ে বলে-“এটা কার বাইক”
পারমিতা-“তোমার বাইক”
আকাশ-“আমার! এত টাকা কোথা থেকে আসল?”
পারমিতা-“তুমি আমাকে প্রতিমাসে হাত খরচের জন্য যে টাকাটা দিতে সেটি আমি খরচ করিনি, তা জমিয়ে রেখেছি, আর আমার আগে থেকেই জমানো কিছু টাকা ছিল, বাকি টাকাটা বাবা দিয়েছেন।“
পারমিতার কথা শুনে, আকাশের চোখ দিয়ে জল পড়তে থাকে, সে কোনো দিন আশাও করেনি যে, বাইকে চেপে সে অফিসে যেতে পাড়বে, পারমিতা তার স্বপ্ন পূর্ণ করেছে।
মধ্যবিত্তের ভালোবাসার গল্প স্ত্রীর প্রেম ছবি
সে মনে মনে ভাবতে থাকে, না সব মেয়েরা টাকা খোঁজে না, কিছু কিছু মেয়ে ভালবাসাও খোঁজে, তারা স্বামীর কাছে টাকা নেই, জেনে বিরিয়ানি খাওয়ার কথা ছেড়ে দিয়ে বলে-“আমার ওইসব খেলে এলারজি হয়” পরিবর্তে পাঁচ টাকার ছোলা ভাজা খেতে খেতে স্বামীর হাত ধরে বাড়ি ফেরে। পুজোর সময় স্বামী দামী বেনারসি সাড়িটা কিনে দিতে চাইলে, “আমার ভারী শাড়ি পড়তে ভালো লাগে না”, বলে সাধারণ মানের একটা কাপড় নিয়েই খুশি থাকে। আবার দিনশেষে স্বামীর মুখে সারাদিনে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনা কৌতূহল ভঁরে শোনে।
এরকম স্ত্রী যদি প্রতিটা ছেলের কপালে জুটত, না জানি কত শান্তি থাকত পৃথিবীতে। অনেক টাকা দিয়ে কি হবে, যেখানে সুখ নেই, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মিল নেই, কথায় কথায় ঝগড়া হয়, অভিমান হয়। তারচেয়ে বরং আমার এই মধ্যবিত্তের জীবনই অনেক ভালো।
এই সব কথা ভাবতে ভাবতে কতক্ষণ পর্যন্ত যে, আকাশ পারমিতাকে জড়িয়ে ধরে ছিল, তা সে নিজেও জানে না।
আসলে মধ্যবিত্তদের স্বপ্ন পূরণের কাণ্ডারি টাকা না থাকলেও, স্ত্রী এবং স্বামী যদি খাঁটি হয়, তাহলে প্রেমটা বেশ ভালোই জমে।