26/08/2022
#ডাক্তারবাবু_আমাকে_বাঁচান.....
বছর ৩০ এর বৌ, স্বামী বাড়ী থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে....
মেয়েটির জীবন-যৌবন শেষ! কেন?
তার কারণ, মেয়েটির যোনী মুখ থেকে বেরিয়ে এসেছে তার আভ্যন্তরীণ যৌনাঙ্গ-সমূহ.....
আর সেই সাথে আটকে যায় মূত্র।
দূর্বিষহ যন্ত্রণা আর ইনফেকশন......!
দু-বার আত্মহত্যার চেষ্টা.......!
জীবনে মেয়েটির আর কিছুই রইল না....
সন্তানহীন মেয়েটি, স্বামী পরিত্যক্তা ( যদিও অফিসিয়াল ডিভোর্স হয় নি).
স্বামী প্রথম দিকে অনেক চেষ্টা করেছেন।
এ-ডাক্তার, সে-ডাক্তার অনেক করেছেন।
কিন্তু সকলেই বলেছে, মেয়েটির যৌনাঙ্গ-সমূহ সম্পূর্ণ রূপে বাদ দিতে হবে।
মা হওয়া আর হবে না....
তাহলে উপায়....?
উপায় একটা আছে। এক বিশেষ অপারেশন।
নাম "ম্যানচেষ্টার-ফদারগিল অপারেশন"!
ম্যানচেষ্টার-ফদারগিল অপারেশন।
আমি মেডিসিন এর ডাক্তার। ছুরি-কাঁচি চালানোর যোগ্যতা আমার নেই....
পরিচিত নার্সিং হোম গুলিতে খোঁজ নিলাম। কোথাও হয় না এই জটিল-কঠিন অপারেশন, যেখানে জরায়ু বা যৌনাঙ্গ কিছুই বাদ যাবে না,
মেয়েটির যৌনজীবন ব্যহত হবে না,
মা হওয়ার সম্ভবনা বেঁচে থাকবে....!
একজন সিনিয়র ও.টি. সিষ্টার জানালেন,
বছর ২০ আগে তিনি একজন সার্জেন কে দেখেছিলেন এই অপারেশন করতে.... (যখন রোগী মারা গেলে, ডাক্তার পেটানোর কথা কেউ ভাবত না)!
কিন্তু তারপর ২০ বছরের ভিতরে এ তল্লাটে আর কেউ ওই জটিল অপারেশনের সাহস দেখান নি।
এক্ষেত্রে সার্জেনের হাত হতে হবে সূক্ষ্মতম, যাকে বলে একেবারে পেপার-কাটিং-হ্যাণ্ড...…!
কে আছে এই মফঃস্বল শহরে....?
কে-ই বা সাহস দেখাবে, এই ডাক্তার-পেটানো জনতার মাঝে...?
নাঃ এই বাজারে কোন আশা-ই নেই!!!!??!!
এরকম অপারেশন এই সব ছোট-খাটো জায়গায় আলীক-কল্পনা। একটুর থেকে একটু হলে, থানা-পুলিশ-আদালত-মারধোর-ভাংচুর....ক্ষতিপূরণ!
হঠাৎ একজনের কথা মাথায় এল।
একটা ছেলে-কে দেখেছিলাম,
পিজি হাসপাতালের MBBS হোষ্টেলে.....
গলায় তুলসীর মালা, কপালে চন্দনের ফোঁটা....!
চেহারায় ঈশ্বর-সুলভ জ্যোতি....!
সম্পূর্ণ নিরামিষ-ভোজী এক ছাত্র.....!
প্রথম দিনেই সকলের থেকে আলদা করে ধরা পড়ল সকলের চোখে.....!
হোষ্টেলে নাম হয় গেল তার "ঠাকুর-ডাক্তার"!
সেই ছেলে আজ ১৭ বছর পর, বড় গাইনোকলজিষ্ট!
যেমন মেধা, তেমন স্থিতধী.....!
যখন ও.টি. করেন,
তখন নার্সিং-হোম বা হাসপাতালে ও.টি. টেবিলের চারধারে ভীড় জমে যায়..... অপারেশন দেখতে আসেন ডাক্তার-সিস্টার-টেকনোলজিষ্টরা!!!!
ওর অপারেশনের হাত দিয়ে যেন শিল্প-রচনা হতে থাকে.....!
সিনিয়র ডাক্তারবাবুরাও অপেক্ষায় থাকেন,
"ঠাকুর-ডাক্তার"-এর ও.টি. দেখবেন বলে....
গোটা অপারেশনে,
একটুও এক্সট্রা রক্ত ক্ষরণ নেই....!
একটাও মপ ভেজে না ( মপ হল একধরণের কাপড়, যা অপারেশনের সময় রক্ত শুষে নেয়),
অতিরিক্ত সময় রোগীকে অজ্ঞান রাখার প্রয়োজন পড়ে না, তাই একটাও অতিরিক্ত অজ্ঞান-করার-ইঞ্জেকশন খরচ হয় না।
( তবুও বলে রাখি, অপারেশন করার সময় যেকোন সময়, যেকোন রোগী খারাপ হতে পারে, যেটা কারো হাতে থাকে না।)
আমাদের সেই ঠাকুর-ডাক্তার.....!
বর্তমানে আমার বাড়ীর কাছের হাসপাতালে পোষ্টেড।
আদ্যপান্ত প্রচার বিমুখ....
নিজের খেয়ালে থাকেন....
নিজেকে লুকিয়ে রেখে,
নিজের ভাবনার জগতেই বিচরণ করতে ভালোবাসেন।
অল্পদিনেই তার সাথে বন্ধুত্ব গাঢ় হয়ে উঠল....
তার স্বপ্ন,
একদিন একটা আশ্রম বানাবো.... গরীব বাচ্চাদের থাকা-খাওয়া-পড়াশোনার ব্যবস্থা করব....অনেক বাচ্চার দায়িত্ব নিয়ে তাদের মানুষ করব, ইত্যাদি ইত্যাদি...
দু-জন মিলে আমরা এখন, আশ্রম বানানোর জন্য পছন্দমতো জমি খুঁজে বেড়াই....!
ফিরে আসি ঘটনায়.....
বন্ধুকে বললাম,
ম্যানচেস্টার-ফদারগিল অপারেশন করতে পারবি?
রোগী পয়সা-কড়ি দিতে পারবে না, উলটে ওষুধ-পত্র, ব্যাণ্ডেজ-সুতো কিনে দিতে হবে......!
ঠাকুর-ডাক্তার বলল,
"হাসপাতালে পারব না, সঙ্গ দেওয়ার মতো সিনিয়র ও.টি. সিস্টার নেই।
অমুক নার্সিং হোমে "সিস্টার পারুল" আছেন, যে একমাত্র ফদার-গিল অপারেশনে সহযোগী হিসাবে ও.টি.-তে নামতে পারে।
ওই নার্সিং-হোমে চেষ্টা করতে পারি.....!
তুই পার্টি-কে শুধু নার্সিং-হোমের চার্জ টুকু দিতে বল।"
সেইমত ব্যবস্থা হল।
নার্সিং-হোম এর চার্জ-টুকু যোগাড় করল রোগীনীর ভাই।
ডাক্তার-সার্জেন,অজ্ঞান করার ডাক্তার - কেউ ফি নেয় নি, ওষুধ-সুতো-ব্যাণ্ডেজের ব্যবস্থা ঠাকুর-ডাক্তার (ডাঃ সুব্রত মণ্ডল) নিজেই করলেন।
ও.টি. হল।
রোগীর স্বামীও একবুক আশা নিয়ে ওটি-র দিন হাজির হল।
ও.টি. সাকসেসফুল।
বছর ৩০ এর মেয়েটির শরীরের কোন অংশ বাদ দিতে হয় নি।
যৌনতা ও মা হওয়ার সম্ভাবনা দু-টোই বেঁচে থাকল।
এক প্রবল মানসিক অবসাদ থেকে বাঁচল একটি পরিবার।
স্বামী-স্ত্রী কিছুদিন পর, ঘরে ফিরে গেল.....!
আর আমাদের ঠাকুর-ডাক্তার,
আবার নিজেকে
সমস্ত প্রচার থেকে দূরে সরিয়ে
আপন খেয়ালে নিজের আশ্রম গড়ার স্বপ্নে মশগুল হয়ে রইল.....!
ঠাকুর-ডাক্তারের বিরুদ্ধে আমার একটি অভিযোগ আছে। তা হলঃ
এই সার্জেন যদি,
এই বিরাট কোয়ালিটি নিয়ে নিজেকে আড়াল করে রাখেন, তবে লোকজন জানবেই না, ঘরের পাশে বনগাঁ-র মত ছোট শহরে, এত ভালো একজন সার্জেন (গাইনোকলজিষ্ট) আছেন। তার দক্ষতা সমাজের উপকারেই আসবে না।
মানুষ এত নির্লিপ্ত-নির্লোভ-প্রচারবিমুখ হতে পারে???
তাই একপ্রকার বাধ্য হয়েই, আমার আজকের এই পোষ্ট। এই ছবিটিও জোর করে তুলেছি।
এই ডাক্তারবাবু হলেন,
ডাঃ সুব্রত মণ্ডল, রেট-পাড়া মোড়, বনগাঁ, উত্তর ২৪ পরগণা।
মোবাইল নম্বর - 9593 988 988
সংগ্ৰহ - Dear Doctor