Mahir Entertainment

Mahir Entertainment Welcome to my page

ডিভোর্সের ৪ বছর পর আজ হঠাৎ করেই পাশের সিটে আমার প্রাক্তন স্বামীর সাথে দেখা। প্রথমে অবশ্য খেয়াল করিনি, কিন্তু যখন খেয়াল ক...
14/10/2022

ডিভোর্সের ৪ বছর পর আজ হঠাৎ করেই পাশের সিটে আমার প্রাক্তন স্বামীর সাথে দেখা। প্রথমে অবশ্য খেয়াল করিনি, কিন্তু যখন খেয়াল করেছি তখন সিট থেকে আর উঠতে পারলাম না। কেমন একটা অনুভূতি মনে কাজ করছিল। হয়তো ভেতরে ভেতরে খুব সংকোচ করছিলাম। ২ জন ২ জনকে দেখার পর কেন জানি আর কারো দিকে তাকাতে পারছিলাম না। কেন জানি চোখে চোখ রাখতে অনেক লজ্জাবোধ কাজ করছিল। ইচ্ছে করছিল জিজ্ঞেস করতে সে কেমন আছে। কিন্তু কেন জানি আর পারলাম না... মুখটা অনেক হাসফাস করছিল। অবশেষে...

-কেমন আছো?(আমি)
- হুম, ভালো। (সে)
- আমাকে চিনতে পেরেছ?
- হুম, খুব পেরেছি।
- বাসার বাকি সবাই কেমন আছে?
- বাবা একটু অসুস্থ। তাছাড়া বাকি সবাই ভালোই আছে। আমিও আলহামদুলিল্লাহ খুব ভালো আছি। তোমার বাসার সবাই কেমন আছে?
- এইতো চলছে... আব্বু মারা গেল ২ বছর হতে লাগলো। আব্বু মারা যাবার পর থেকে আম্মু হাই প্রেসারের রুগী। আর ছোট ভাইটা আছে ওর মতো...
- কি বলো, আব্বা মারা গেছে!? আর আমরা কেউ জানলাম না!
- জানবে কি করে তোমার সাথে তো কোনো যোগাযোগই ছিল না।
- হুম। তাহলে, এখন তোমরা কি করে চলছো?
- আমি এইতো যেখান থেকে বাসে উঠলাম সেখানে ছোটখাটো একটা চকরি করছি আর আব্বুর পেনশনের টাকায় চলছি কোনো রকম।
- এই ক বছরে কত কি পরিবর্তন হয়ে গেল তাই না?
- হুম, অনেক কিছুই..। তুমি কি তোমার চিকিৎসা চালাচ্ছো?
- কিসের?
- ঐ যে, আমি আমাদের শেষের দিকে তোমাকে ডাক্তার দেখালাম, সেই ঔষধ কি খাচ্ছো এখনো?
- না।
-না কেনো?! তুমি ঐ চিকিৎসা করতে থাকলে তারাতারি সুস্থ হয়ে যেতে।
- আর সুস্থ, এসবের আর দরকার নেই। যা হয়েছে এবং তুমি যা করে এসেছ তা থেকে আমি আজো মুক্ত হতে পারিনি।
- মানে!! আমি কি করেছি!? আমি তো তোমাকে বাঁচিয়ে আমাকে দোষী বানিয়ে চলে এলাম৷ তাহলে তুমি কেনো আজো মুক্ত হতে পারছো না।
- সব দোষ আমার ছিল। অথচ তুমি নিজে সব দোষ নিজের ঘারে চাপিয়ে সবার চোখে খারাপ প্রমানিত হয়ে চলে এলে। এমন ভালো আমি কখনোই হতে চাইনি।

ওর কথাগুলো শুনে সেই বিয়ের সময়ের কথা মনে পরে গেল। কত পালিয়ে বেরাতে তুমি আমার থেকে। বিয়ের পর টানা ৬ টা মাস আমি বুঝতে পারিনি স্বামি কি জিনিস। কত দূরে দূরে থাকতে তুমি। রাত করে বাসায় ফিরে এসেই ঘুম দিতে আবার সকাল সকাল চলে যেতে। বিয়ের পরে নারী নামক অস্তিত্বকেই আমি বুঝতে পারিনি। মনে হতো একটা রোবটের পাশে আমি শুয়ে আছি। না আছে আমাদের মাঝে প্রেম, আর না আছে আমাদের মাঝে ভালোবাসা। এইতো বিয়ের দিন রাতে বাসর ঘরে নতুন বউকে ফলে মিথ্যে একটা অযুহাত দিয়ে পালিয়ে গেলে। আচ্ছা, আমি তো তোমার বউ ছিলাম। আমি কি একেবারেই বুঝতাম না তেমার সমস্যাগুলো? একটা বার বলেই দেখতে। শুরু থেকেই আমাকে পর ভেবেছ। আর এমন দূরত্ব তৈরি করেছিলে যে আমি তোমার বিষয়ে অন্যকিছু ভাবতে বাধ্য হয়েছিলাম। কি আর করার ছিল বলো? আমি তো নারী। আমারওতো স্বাদ জাগে স্বামীকে স্বামী রূপে ফিরে পেতে। ভেবেই নিয়েছিলাম তুমি তোমার পরিবারের জোরে আমাকে বিয়ে করেছ। আর তুমি মিশে আছো অন্য কারো সাথে।

আমি এখন বুঝি ঐ ভাবনাগুলো আমার একদম ভুল ছিল। শেষের দিকে যখন স্ত্রীর অধিকার চেয়ে তোমার মুখোমুখি হই, তখনও তুমি আমাকে এড়িয়ে যেতে চেয়েছিলাম। আমি তেমাকে আড়াল হতে দেইনি। আমি আমার অধিকার দাবি করেছি তোমার কাছে। এক পর্যায়ে এসে তুমি নিজেই শিকার করলে তোমার পুরুষত্ব নেই আর তুমি কখনো বাবা হতে পারবে না। সেই লজ্জায় তুমি আমার কাছ থেকে পালিয়ে বেড়াতে। বিশ্বাস করো, আমি সেদিন আমার কানকে বিশ্বাস করতে পারিনি। তুমি তোমার লজ্জাবোধের কারণে আমার কাছে আসতে না, এমনকি কথাও বলতে না। একসময় তুমি ই ডিসিশন দিলে ডিভোর্স হওয়ার কথা। আমার সুন্দর একটা ভবিষ্যৎ আছে, আমি আরো ভালো স্বামী পাবো, অমুক-তমুক আরো কতো কি...

নিজ থেকে আমি ই তোমাকে ডাক্তার দেখিয়েছিলাম। আহ, সেই তোমার লজ্জা!! সেই লজ্জার কারনে তুমি তোমার ঔষধগুলোকেও অবহেলা করা শুরু করলে। একসময় আর না মানতে পেরে ডিসিশন হলো ডিভোর্সের। কিন্তু তোমার শারীরিক অক্ষমতার কথা কারো কাছে প্রকাশ করা যাবে না৷ কি অযুহাতে ডিভোর্স হবে!! শ্বশুর-শাশুড়ি, ননদ সবাই তো ভালো। বড়লোকও বেশ৷ কোনো কিছুর কমতি নেই। তাহলে ডিভোর্স কেনো হবে?! আর কিছু মিলাতে না পেরে আমি নিজেই সব আমার মাথায় নিয়ে নিলাম। আমি নিজেই অক্ষম। একটা বাচ্চার সুখ আমি দিতে পারবো না এই অযুহাতেই হয়ে গেলো ডিভোর্স। এরপর দেখতে দেখতে এই ৪ বছর...

দীর্ঘএকটা নিশ্বাস ফেলে...
- কি আর করার আছে বলো।
- বাসার বাকি সবাই আজো তোমাকে অপরাধী মনে করে। আজো কথায় কথায় তোমাকে বকা দেয়। না চাইতেও প্রতিটা কথায় উদাহরণ হিসেবে তুমি ই উঠে আসো।
- ভালোই হয়েছে। তবুও আমকে যা বলার বলুক। তুমি কিছু না শুনলেই হলো। তোমার বিষয়টা জানলে তো তুমি সবার থেকে অনেক দূরে সরে জেতে। এটা আমি ই বা মেনে নিতাম কিভবে বলো। যা হবার হয়েছে। এখন সবাই ভালো থাকলেই ভালো হয়..
- সত্যি বলতে আমি ভালোই। আমার খুব ইচ্ছে করে সবাইকে সত্যিটা বলে দিতে যে, "কমতিটা আমার ছিল, তোমার না।" এতটা অপরাধ বোধ মাথায় নিয়ে বাঁচা যায় না।
- মানে! কিন্তু কেনো? আর হ্যাঁ, সত্য কাউকে বলতে হবে না। যা যেমন আছে ঠিক তেমনই থাকুক। আস্তে আস্তে সব ঠিক হয়ে যাবে। একসময় এসব সব ভুলেও যাবে। একটু সময় লাগবে এই আর কি..
- তোমাকে আমার খুব পছন্দ হয়েছিল। না চাইতেও বিয়েতে রাজি হয়ে গিয়েছিলাম এমন একটা পরীর জন্য যে শুধু নীরবে সব সহ্য করতে জানে। ভালোও বেসে ফলেছিলাম৷ রাত করে বাসায় ফিরে তোমার ঐ ঘুমন্ত নিস্পাপ মুখের দিকে তাকিয়ে কত কেঁদেছি, আর নিজেকে যা ইচ্ছে নয় তাই বলেছি। আমি তোমার জীবনে ডিভোর্সের দাগ টেনে অনেক বড় ভুল করেছি। আমাকে তুমি ক্ষমা করে দেও।
- এভাবে বলো না, প্লিজ। যা হয়েছে ওটা ছিল আমাদের কপালের লিখন। তাই সব মানতে হবে।

কথা বলতে বলতে আমরা আমাদের গন্তব্য স্থান পার হয়ে অনেক দূর কখন যে চলে এসেছি তা আমরা নিজেরাই জানি না। হঠাৎ খেয়াল করেই মনে হলে এখন বাসায় ফিরতে আরো দেরী হবে। কন্টেকরকে বললাম পরের বাস স্টপে সাইডে চাপিয়ে গাড়ী রাখতে। আর ওর চোখের দিকে তাকিয়ে দেখলাম, "ওর চোখে জল"...

কি করবো আমি এই মুহূর্তে? না চাইতেও আলতো করে ওর হাতটা ধরে বললাম নিজেকে আর অপরাধী মনে করো না৷ আস্তে আস্তে সব ঠিক হয়ে যাবে।
হঠাৎ করেই ও আমার হাতটা শক্ত করে ধরে বলে উঠলো, " তুমি কি এখনো সিঙ্গেল আছো?"
আমি মুখ বাঁকা একটা হাসি দিয়ে বলাম, "আমি বিয়ের জন্য আর সহস করিনি। আর সাহস হবে বলে মনেও হয় না।"...

বাস স্টপে গাড়ী থেমে গেছে। আমার এখন নামতে হবে। হাতটা ছাড়িয়ে যাচ্ছিলাম এমন সময়...

- আমি ধীরে ধীরে একটু একটু করে ঠিক হচ্ছি। আর আমরা না হয় একটা বাচ্চা পালক নিলাম। তুমি চাইলে আমি তেমাকে নিয়ে আবার সংসার করতে রাজি আছি। তাহলে কপালে লেগে থাকা ডিভোর্সের সীলটাও উঠে যাবে।
- হুম, তাহলে আবার নতুন করে বিয়ের প্রস্তাবটা বাসায় পাঠিয়ে দিও। আর এবার দূরে দূরে থাকলে চলবে না। সব কিছু খুলে বলতে হবে। কোনো কিছু গোপন করা যাবে না।
- আচ্ছা, তাহলে দাড়াও আমিও আসছি তেমার সঙ্গে। বিয়ের প্রস্তাবটা দিয়ে ঘরের বউকে একবারে সঙ্গে করে নিয়ে যাই, কি বলো??
- হুম, তোমার বউ। তোমার বউকে তুমি কি করবে তা তুমি ই ভালো জানো, আমি এসবের কি জানি...
- হুম, চলো তাহলে।
- চলো....

(বিঃদ্র- কিছু ভালোবাসা অপ্রাপ্তি থেকেই প্রাপ্তি লাভ করে। একটু হলেও আমাদের নিজেদের একান্ত একার জন্য একটু হলেও ভাবা দরকার। কারণ, আমাদের ঘীরে আমরা একারাই বাস করি না। আমাদের ঘীরে বাস করে একগুচ্ছ গোপন ভালোবাসা। যা খুঁজে খুঁজে অর্জন করে নিতে হয়। ভালো থাকুক পৃথিবীর সকল ভালোবাসারা।।)

গল্পও বিন্দু

Hi everyone
14/10/2022

Hi everyone

Address

Gangarampur

Telephone

+919641224539

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Mahir Entertainment posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Share

Nearby media companies


Other Digital creator in Gangarampur

Show All

You may also like