Amader Protidin - আমাদের প্রতিদিন

Amader Protidin - আমাদের প্রতিদিন দেশপ্রেমের চেতনায় ২০১০ সালের ১৫ জুন থেকে লন্ডন হতে প্রকাশিত হচ্ছে আমাদের প্রতিদিন অনলাইন পোর্টাল।

অনলাইন মূলধারার সংবাদপত্র হিসেবে ২০১০ সালে ব্রিটেন যাত্রা শুরু করে আমাদের প্রতিদিন।

গোলাপগঞ্জ প্রতিবন্ধী উন্নয়ন কল্যাণ সংস্থার ক্রিকেট টুর্নামেন্টের পুরস্কার বিতরণ সম্পন্নগোলাপগঞ্জ প্রতিবন্ধী উন্নয়ন কল্যা...
25/01/2025

গোলাপগঞ্জ প্রতিবন্ধী উন্নয়ন কল্যাণ সংস্থার ক্রিকেট টুর্নামেন্টের পুরস্কার বিতরণ সম্পন্ন

গোলাপগঞ্জ প্রতিবন্ধী উন্নয়ন কল্যাণ সংস্থার আয়োজনে বার্ষিক ক্রিকেট টুর্নামেন্টের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান গত ২৪ জানুয়ারি, শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টায় ঢাকাদক্ষিণ সামি প্লাজায় অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশিষ্ট লেখক ও সাংবাদিক আনোয়ার শাহজাহান। সংস্থার সভাপতি সালেহ আহমদের সভাপতিত্বে এ সভা পরিচালনা করেন শ্রবণ ও বাক প্রতিবন্ধীদের দোভাষী মোহাম্মদ সালেহ আহমদ।

প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়নের শিরোপা অর্জন করে ভাদেশ্বর ইউনিয়ন, আর রানার্সআপ হয় ঢাকাদক্ষিণ ইউনিয়ন। চ্যাম্পিয়ন ট্রফি ও মেডেল গ্রহণ করেন ভাদেশ্বর ইউনিয়নের টিম ক্যাপ্টেন জসিম উদ্দিন, আর রানার্সআপ ট্রফি ও মেডেল গ্রহণ করেন ঢাকাদক্ষিণ ইউনিয়নের টিম ক্যাপ্টেন লিপু আহমদ। খেলোয়াড়দের দক্ষতা ও মনোবল উপস্থিত দর্শকদের মুগ্ধ করে।

পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি আনোয়ার শাহজাহান বলেন, "প্রতিবন্ধীরা আর সমাজে পিছিয়ে পড়া গোষ্ঠী নয়। তারা যদি সঠিক সহায়তা ও সুযোগ পায়, তবে সমাজের মূলধারায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে। আমাদের উচিত তাদের পাশে দাঁড়ানো, যাতে তারা আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে নিজেদের প্রতিভা বিকশিত করতে পারে।"

তিনি আরও বলেন, "আমাদের সমাজে এখনো অনেক প্রতিবন্ধী ব্যক্তি অবহেলিত। তাদের দক্ষতা ও প্রতিভার সঠিক মূল্যায়ন করা হয় না। কিন্তু আজকের এই প্রতিযোগিতা প্রমাণ করেছে, তারা অন্যদের মতোই সক্ষম। প্রয়োজন শুধু তাদের জন্য সুযোগ তৈরি করা।"

আনোয়ার শাহজাহান প্রবাসী ও সমাজের বিত্তবানদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, "আমাদের উচিত প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কর্মসংস্থান, শিক্ষা ও খেলাধুলার মতো কার্যক্রমে সম্পৃক্ত করা, যাতে তারা আত্মনির্ভরশীল হয়ে গড়ে উঠতে পারে। দেশে ও বিদেশে যারা সামর্থ্যবান, তারা যদি এগিয়ে আসেন, তাহলে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জীবনমান উন্নয়নে বড় পরিবর্তন আনা সম্ভব।"

তিনি আরও বলেন, "সহানুভূতির পাশাপাশি বাস্তব সহায়তা ও সুযোগ দিতে হবে, যাতে তারা নিজেদের মেধা কাজে লাগিয়ে আত্মনির্ভরশীল হতে পারে। আমরা যদি সম্মিলিতভাবে কাজ করি, তবে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গঠন সম্ভব, যেখানে কেউ পিছিয়ে থাকবে না।"

আয়োজকরা জানান, প্রতিবন্ধীদের সঙ্গে সমাজের অন্যান্য শ্রেণির মানুষের সংযোগ স্থাপন, তাদের আত্মবিশ্বাস বাড়ানো এবং খেলাধুলার মাধ্যমে শারীরিক ও মানসিক বিকাশ ঘটানোই এই টুর্নামেন্টের মূল লক্ষ্য। তারা ভবিষ্যতে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের উন্নয়নে এ ধরনের আয়োজন আরও বাড়ানোর আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে বিজয়ী ও রানার্সআপ দলের খেলোয়াড়দের অভিনন্দন জানানো হয়, এবং প্রধান অতিথি আনোয়ার শাহজাহান তাদের উৎসাহিত করতে উপহার ও স্মারক প্রদান করেন।

শরীফগঞ্জ উন্নয়ন সংস্থা ইউকের উদ্যোগে ঢেউটিন, শীতবস্ত্র ও অর্থ বিতরণগোলাপগঞ্জ উপজেলার শরীফগঞ্জ ইউনিয়নের অসহায় ও দরিদ্র মা...
23/01/2025

শরীফগঞ্জ উন্নয়ন সংস্থা ইউকের উদ্যোগে ঢেউটিন, শীতবস্ত্র ও অর্থ বিতরণ

গোলাপগঞ্জ উপজেলার শরীফগঞ্জ ইউনিয়নের অসহায় ও দরিদ্র মানুষের মাঝে ঢেউটিন, শীতবস্ত্র ও নগদ অর্থ বিতরণ করেছে শরীফগঞ্জ উন্নয়ন সংস্থা ইউকে।

বুধবার (২২ জানুয়ারি) বিকেলে পনাইরচক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এই সহায়তা প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংস্থার সভাপতি মুহিবুল হক এবং পরিচালনা করেন আল ফালাহ জা‌মেয়া ইসলা‌মিয়ার সুপার মাওলানা আব্দুল কা‌দি‌র।

অনুষ্ঠা‌নে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাজ্য প্রবাসী বিশিষ্ট লেখক ও সাংবাদিক আনোয়ার শাহজাহান।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে আনোয়ার শাহজাহান বলেন, “প্রবাসীরা দেশের বাইরে থেকেও নিজেদের এলাকার মানুষের কল্যাণে সবসময় কাজ করে যাচ্ছেন। শরীফগঞ্জ উন্নয়ন সংস্থা তারই উদাহরণ। সংস্থার সভাপতি ও সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানাই।” তিনি আরও বলেন, “এ অঞ্চলের অন্যতম প্রাচীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পনাইরচক উচ্চ বিদ্যালয় কুশিয়ারা নদীর ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে। এ বিদ্যালয় রক্ষায় প্রবাসীদের সম্মিলিত উদ্যোগ প্রয়োজন।”

সংস্থার পক্ষ থে‌কে ইউনিয়নের ১১ পরিবারকে ঢেউটিন, ৪০০ জনকে শীতবস্ত্র এবং নগদ ১ লাখ টাকা প্রদান করা হয়। সহায়তা পেয়ে উপকারভোগীরা অত্যন্ত আনন্দিত ও কৃতজ্ঞ। তারা জানান, এই সহযোগিতা শীতের সময় তাদের জীবনে স্বস্তি এনেছে।

ভা‌দেশ্বর খানম আহমদ বা‌লিকা মাদরাসার শিক্ষক মো; রেজাউল ক‌রিমের কোরআন তেলাওয়া‌তে শুরু হওয়া অনুষ্ঠা‌নে অন‌্যা‌ন্যের ম‌ধ্যে বক্তব‌্য রা‌খেন ও উপ‌স্থিত ছি‌লেন, গোলাপগঞ্জ উপ‌জেলা জামায়া‌তের আমীর আব্দুল আ‌জিজ জামাল, বা‌দেপাশা ইউপির সা‌বেক চেয়ারম‌্যান ও গোলাপগঞ্জ পৌর জামায়া‌তের নায়‌বে আমীর প্রভাষক রেহান উদ্দীন, উপ‌জেলা জামায়া‌তের সেক্রেটারী হা‌বিবুল্লাহ দস্তগীর, পনাইরচক উচ্চ বিদ‌্যাল‌য়ের প্রধান শিক্ষক নি‌খিল বিশ্বাস, ইউ‌নিয়ন জামা‌তের সভাপ‌তি আফতাব উ‌দ্দিন, বিএন‌পি নেতা শরীফ উ‌দ্দিন, উপ‌জেলা শ্রমিক কল‌্যাণ ফেডা‌রেশ‌নের ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক আলাউর রহমান আলাল, মে‌হেরপুর সরকা‌রি প্রাথ‌মিক বিদ‌্যাল‌য়ের সহকা‌রি শিক্ষক কুতুব উ‌দ্দিন, ওয়ার্ড জামায়া‌তের সভাপ‌তি সাইফুল ইসলাম লেবু, উপ‌জেলা দ‌ক্ষিণ ছাত্র শি‌বি‌রের সভাপ‌তি খা‌লেদ আহমদ, কা‌দিপুর ইসলামী ব‌্যাং‌কের ইনচার্জ না‌ছির উ‌দ্দিন জগলু, ডা. মীর কাওছার হো‌সেন, ইউ‌নিয়ন জামায়া‌তের বায়তুলমাল সম্পাদক আব্দুস সামাদ ফাহাদ, আলম আহমদ, ব‌্যবসায়ী ছা‌দিকুর রহমান, ইউ‌নিয়ন শ্রমিক কল‌্যাণ সভ‌াপ‌তি রুহুল আমীন প্রমুখ।

শরীফগঞ্জ উন্নয়ন সংস্থা ইউকের সভাপতি ও গোলাপগঞ্জ ক‌মিউ‌নি‌টি ট্রা‌স্ট ইউ‌কের সে‌ক্রেটারী এবং সি‌লেট সি‌টি স্কুল এন্ড ক‌লে‌জের চেয়ারম‌্যান মুহিবুল হক জানান, সংস্থার পক্ষ থে‌কে ভবিষ্যতে শিক্ষা স্বাস্থ্য ও অবকাঠামো উন্নয়নে আরও বড় উদ্যোগ গ্রহণের পরিকল্পনা রয়েছে। স্থানীয়রা সংস্থার এই উদ্যোগের প্রশংসা করেন এবং তাদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন।

শরীফগঞ্জ উন্নয়ন সংস্থার এই মানবিক উদ্যোগ প্রমাণ করে, প্রবাসীরা দেশের মানুষের জন্য কতটা নিবেদিতপ্রাণ। তাদের এ প্রচেষ্টা স্থানীয় মানুষের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সাহায্য করবে।

https://amarkantho.com/%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%B8-%E0%A6%95%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A0

বইমেলায় আসছেলেখক সাংবাদিক আনোয়ার শাহজাহানের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গল্পগ্রন্থ "অপেক্ষার প্রহর"  #প্রকাশনায়: ইত্যাদি প্রকা...
19/01/2025

বইমেলায় আসছে
লেখক সাংবাদিক আনোয়ার শাহজাহানের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গল্পগ্রন্থ "অপেক্ষার প্রহর"

#প্রকাশনায়: ইত্যাদি প্রকাশন
#প্রচ্ছদ: ধ্রুব এষ
#অপেক্ষার_প্রহর - #আনোয়ার_শাহজাহান

Anwar Shahjahan Anwar Shahjahan - আনোয়ার শাহজাহান

30/12/2024

প্রবাসে দেশের রাজনীতি: কিছু নেতার জন্য লাখ লাখ প্রবাসীর স্বপ্ন ভেঙে যায়

30/12/2024

মুক্তিযুদ্ধের গল্প - প্রতিশোধ আনোয়ার শাহজাহান

30/12/2024

লন্ডন বাংলা স্কুল প্রতিষ্ঠা এবং ভবিষ্যত পরিকল্পনা নিয়ে একান্ত সাক্ষাৎকারে আনোয়ার শাহজাহান

30/12/2024

বিজয় দিবসে মু‌ক্তিযুদ্ধ বিষয়ক লেখক, সাংবা‌দিক ও প্রবাসী ক‌মিউ‌নি‌টি ব‌্যক্তিত্ব আনোয়ার শাহজাহানকে নিয়ে `আমার .....

30/12/2024

সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ড: ষড়যন্ত্র নাকি দুর্ঘটনা? আনোয়ার শাহজাহান, লন্ডন, যুক্তরাজ্য:

30/12/2024

গোলাপগঞ্জ উপজেলা সোশ্যাল ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠা একটি ঐতিহাসিক উদ্যোগ, যা ব্রিটেনে বসবাসকারী গোলাপগঞ্জবাসীদের ঐক.....

30/12/2024

হুন্ডি ও ভুয়া লেনদেন: প্রবাসী পরিচালকদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন -

30/12/2024
22/12/2024

First mosque in North Africa.

 #বাংলাদেশের_যত_গণ্ডগোলের_মূলে_মোদি!১৬ই ডিসেম্বর: আমাদের বিজয়, আমাদের অহংকার #আনোয়ার_শাহজাহান ১৬ই ডিসেম্বর আমাদের জাতীয...
17/12/2024

#বাংলাদেশের_যত_গণ্ডগোলের_মূলে_মোদি!

১৬ই ডিসেম্বর: আমাদের বিজয়, আমাদের অহংকার

#আনোয়ার_শাহজাহান

১৬ই ডিসেম্বর আমাদের জাতীয় জীবনের সবচেয়ে গৌরবময় দিন। এটি একটি তারিখ নয়, বরং বাঙালি জাতির আত্মমর্যাদার প্রতীক। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে বীর মুক্তিযোদ্ধারা ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে যে বিজয় ছিনিয়ে এনেছিলেন, তা অন্য কারও দয়া নয়—এটি আমাদের ত্যাগ, বীরত্ব ও আত্মোৎসর্গের ফল।

তবে আজ আমাদের বিজয়ের গৌরব নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তার ফেসবুক পোস্টে বাংলাদেশের বিজয়ের কোনো উল্লেখ না করে শুধু ভারতীয় বিজয়ের কথা তুলে ধরে ইতিহাস বিকৃতির এক নগ্ন প্রচেষ্টা চালিয়েছেন। এটি হতাশাজনক এবং ঔদ্ধত্যপূর্ণ। ভারতের এই মনোভাব প্রমাণ করে যে তারা নিজেদের স্বার্থের বাইরে কিছুই বোঝে না।

আমরা ভারতের সহায়তা অস্বীকার করছি না। ১৯৭১ সালে ভারত আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছিল, তবে সেটি তাদের রাজনৈতিক ও কৌশলগত স্বার্থেই। যুদ্ধের মূল লড়াইটা ছিল আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের। এই বিজয়ের গৌরব বাংলাদেশের জনগণের, লাখো শহীদ ও মুক্তিযোদ্ধাদের, যারা বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দেশকে স্বাধীন করেছেন।

#ভারতের_নির্ভরতা: আমাদের জন্য হুমকি

বাংলাদেশের খাদ্য, চিকিৎসা ও বিদ্যুৎ খাতে ভারতের উপর নির্ভরতা ক্রমেই বাড়ছে।

১. খাদ্য নিরাপত্তা: ভারতের রপ্তানি নীতির উপর নির্ভর করে আমাদের নিত্যপণ্যের দাম নির্ধারিত হয়। স্বনির্ভর খাদ্য উৎপাদন নিশ্চিত করা জরুরি।
২. চিকিৎসা খাত: আধুনিক চিকিৎসা সুবিধা নিশ্চিত করলে বিদেশের উপর নির্ভরতা কমবে।
৩. বিদ্যুৎ সরবরাহ: বিকল্প ও স্থানীয় উৎসে বিদ্যুৎ উৎপাদনে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে।

#ভারতের_রাজনৈতিক_কৌশল ও আমাদের সতর্কতা

ভারত তার স্বার্থে সবসময় কৌশল পরিবর্তন করে। তিস্তা চুক্তি এখনো হয়নি, সীমান্তে বাংলাদেশিদের হত্যা অব্যাহত রয়েছে। এটি তাদের একপাক্ষিক মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ।

#আমাদের_করণীয়:
১. জাতীয় ঐক্য বজায় রাখা।
২. স্বনির্ভরতা অর্জন: খাদ্য, বিদ্যুৎ ও চিকিৎসা খাতে স্বনির্ভরতা নিশ্চিত করতে হবে।
৩. ইতিহাস রক্ষা: অপপ্রচার ও ইতিহাস বিকৃতির বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকা।

"১৬ই ডিসেম্বর আমাদের গৌরবের দিন। এই বিজয় বাঙালির অহংকার।"

#বাংলাদেশের_বিজয়_আমাদের
#১৬ইডিসেম্বর
#মুক্তিযুদ্ধ
#গৌরবময়_ইতিহাস

আনোয়ার শাহজাহান
লন্ডন, যুক্তরাজ্য।

সাক্ষাৎকার https://bangla.fm/2024/12/170062/লন্ডন বাংলা স্কুল প্রতিষ্ঠা এবং ভবিষ্যত পরিকল্পনা নিয়ে একান্ত সাক্ষাৎকারে আ...
16/12/2024

সাক্ষাৎকার
https://bangla.fm/2024/12/170062/

লন্ডন বাংলা স্কুল প্রতিষ্ঠা এবং ভবিষ্যত পরিকল্পনা নিয়ে একান্ত সাক্ষাৎকারে আনোয়ার শাহজাহান

২০২৩ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর, লন্ডনের বাংলাদেশি কমিউনিটির জন্য একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়, যখন লন্ডন বাংলা স্কুল তার কার্যক্রম শুরু করে। গোলাপগঞ্জ উপজেলা সোশ্যাল ট্রাস্ট ইউকে’র উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত এই স্কুলটি প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য বাংলা ভাষা, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সংরক্ষণ এবং তাদের মধ্যে শিকড়ের প্রতি গভীর ভালোবাসা তৈরি করার লক্ষ্য নিয়ে পথচলা শুরু করে।

প্রবাসী কমিউনিটির নতুন প্রজন্মের মধ্যে বাংলা ভাষা এবং সংস্কৃতির প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি করা এবং তাদের শিকড়ের সাথে পরিচিত করানোর উদ্যোগে লন্ডন বাংলা স্কুল অনন্য ভূমিকা পালন করছে। এটি এমন একটি প্রতিষ্ঠান, যা পূর্ব লন্ডনে বসবাসরত ব্রিটিশ বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের সন্তানদের বাংলা ভাষা শিক্ষা প্রদান করে, যাতে তারা তাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং শিকড়ের সাথে সংযুক্ত থাকতে পারে।

লন্ডন বাংলা স্কুল একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান, যা সম্পূর্ণভাবে দাতাদের সহায়তায় পরিচালিত হয়। এখানে প্রতি শনিবার বাংলা ক্লাস আয়োজন করা হয়, যাতে শিক্ষার্থীরা বাংলা ভাষা এবং সংস্কৃতির সাথে পরিচিত হতে পারে। স্কুল পরিচালনার খরচ বাংলা স্কুল ম্যানেজমেন্ট কমিটি বহন করছে এবং সোশ্যাল ট্রাস্টের বোর্ড অব ম্যানেজমেন্ট কমিটি প্রতিটি পদক্ষেপে সহযোগিতা প্রদান করছে, যাতে এই উদ্যোগ সফলভাবে পরিচালিত হতে পারে। ফলে, সম্পূর্ণ ফ্রি শিক্ষা সহ শিক্ষা সামগ্রী প্রদান করা হয়।

এই স্কুলটি শুধু ভাষা শেখানোর লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে না, বরং একটি শক্তিশালী সাংস্কৃতিক ভিত্তি গড়ে তোলারও চেষ্টা করছে। লন্ডন বাংলা স্কুলের প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনায় গোলাপগঞ্জ উপজেলা সোশ্যাল ট্রাস্ট ইউকে’র ভূমিকা অতুলনীয়। এই ট্রাস্টের মাধ্যমে, শুধু একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করা হয়নি, বরং বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির প্রতি সচেতনতা বৃদ্ধি এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণের জন্য নানা ধরনের কার্যক্রমও চালানো হচ্ছে।

এই উদ্যোগের ভবিষ্যত পরিকল্পনা এবং এর সাফল্যের পেছনে কাজ করা মানুষদের কথা জানাতে, আমরা সাক্ষাৎকার নিয়েছি লন্ডন বাংলা স্কুল এর চেয়ারম্যান এবং গোলাপগঞ্জ উপজেলা সোশ্যাল ট্রাস্ট ইউকে এর চেয়ারম্যান আনোয়ার শাহজাহান এর সাথে। এই সাক্ষাৎকারে উঠে এসেছে তাদের প্রচেষ্টা, পরিকল্পনা এবং ভবিষ্যতের দৃষ্টিভঙ্গি।

#সাক্ষাৎকার_গ্রহণ_করেন: রাশেদ মানিক

প্রশ্ন ১: লন্ডন বাংলা স্কুল প্রতিষ্ঠার পেছনে মূল উদ্দেশ্য কী ছিল?

আনোয়ার শাহজাহান: লন্ডন বাংলা স্কুল প্রতিষ্ঠার মূল উদ্দেশ্য ছিল আমাদের প্রবাসী কমিউনিটির ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বাংলা ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের সাথে পরিচিত করানো। আমরা জানি যে, নতুন প্রজন্ম অনেকসময় তাদের শিকড়ের সাথে সংযুক্ত থাকতে পারে না, কারণ তারা ইংরেজি মাধ্যমে শিক্ষা গ্রহণ করে এবং তাদের দৈনন্দিন জীবনে বাংলা ভাষা অনেকটা ম্লান হয়ে যায়। এই পরিস্থিতি থেকে আমাদের প্রবাসী সন্তানদের রক্ষা করার জন্য স্কুল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। গোলাপগঞ্জ উপজেলা সোশ্যাল ট্রাস্ট ইউকের উদ্যোগে আমরা এই স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছি, যার মাধ্যমে তাদের শিকড়ের প্রতি ভালোবাসা এবং বাংলা ভাষার প্রতি আগ্রহ জন্মাতে পারে।

প্রশ্ন ২: লন্ডন বাংলা স্কুল প্রতিষ্ঠার সময়ে কোন কোন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছিলেন?

আনোয়ার শাহজাহান: লন্ডন বাংলা স্কুল প্রতিষ্ঠার সময় প্রধান চ্যালেঞ্জ ছিল স্কুলের জন্য পর্যাপ্ত অর্থায়ন এবং উপযুক্ত স্থানের খোঁজ। যেহেতু এটি একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান, তাই প্রথম থেকেই দাতা সদস্যদের সহায়তা প্রয়োজন ছিল। এছাড়া, স্কুলের জন্য সঠিক শিক্ষক নিয়োগ এবং শুরুর প্রাথমিক খরচগুলো সংগ্রহ করাও ছিল একটি বড় চ্যালেঞ্জ। তবে, আমি কৃতজ্ঞ যে, গোলাপগঞ্জ উপজেলা সোশ্যাল ট্রাস্ট ইউকের বোর্ড অব ম্যানেজমেন্ট এবং বাংলা স্কুল ম্যানেজমেন্ট কমিটির কাছে, যারা শুরু থেকে এখন পর্যন্ত আমার পাশে আছেন, এবং কমিউনিটির অন্যান্য সদস্যরা আমাদের প্রচেষ্টায় অংশ নেন। এভাবে ধীরে ধীরে আমাদের স্কুল প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছি।

প্রশ্ন ৩: স্কুলের কার্যক্রম বর্তমানে কেমন চলছে?

আনোয়ার শাহজাহান: এখন পর্যন্ত স্কুলের কার্যক্রম খুব ভালো চলছে। শিক্ষার্থীদের সংখ্যা প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে, এবং অভিভাবকরা আমাদের কাজে সহায়তা করে যাচ্ছেন। স্কুলে প্রাথমিকভাবে বাংলা ভাষা শেখানোর ওপরই গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, তবে আমরা বাংলা সাহিত্য, সংস্কৃতি, ইতিহাস এবং বাংলার ঐতিহ্য নিয়ে পাঠক্রমও চালু করেছি। শিক্ষকরা অত্যন্ত দক্ষ এবং তারা প্রতিটি শিক্ষার্থীকে একেবারে বিশেষভাবে যত্ন নিয়ে পড়াচ্ছেন। স্কুলটি সপ্তাহে একদিন ক্লাস পরিচালনা করে, যাতে শিক্ষার্থীরা তাদের নিয়মিত স্কুলের পড়াশোনার সাথে বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির পাঠ গ্রহণ করতে পারে। এখন পর্যন্ত অভিভাবকদের কাছ থেকে প্রচুর ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া পেয়েছি, এবং এটি আমাদের উদ্যোগের সাফল্যের অন্যতম কারণ।

প্রশ্ন ৪: লন্ডন বাংলা স্কুলের ভবিষ্যত পরিকল্পনা কী?

আনোয়ার শাহজাহান: লন্ডন বাংলা স্কুলের ভবিষ্যত পরিকল্পনা অনেক বড়। প্রথমত, আমরা স্কুলের শিক্ষার্থী সংখ্যা বাড়াতে চাই এবং ভবিষ্যতে আরও বেশি ক্লাস চালু করতে চাই। স্কুলের একাডেমিক কার্যক্রম আরও সমৃদ্ধ করার জন্য আমরা ভবিষ্যতে বাংলা সাহিত্য, ইতিহাস এবং সংস্কৃতির উপর আরও অনেক কোর্স চালু করব। আমাদের উদ্দেশ্য শুধু ভাষা শেখানো নয়, বরং শিক্ষার্থীদের মধ্যে তাদের সাংস্কৃতিক শিকড়ের প্রতি ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধা তৈরি করা। আমরা আশা করছি, স্কুলটি বালাদেশ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হিসেবে কাজ করবে, যেখানে বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির সমস্ত দিককে তুলে ধরা হবে।

প্রশ্ন ৫: প্রবাসী কমিউনিটির জন্য আপনার বার্তা কী?

আনোয়ার শাহজাহান: আমার বার্তা প্রবাসী কমিউনিটির জন্য খুবই সোজা। আমি তাদের বলব, লন্ডন বাংলা স্কুল একটি প্রজন্মের জন্য একটি উপহার। এটি আমাদের ঐতিহ্য এবং ভাষার প্রতি সচেতনতা বাড়ানোর একটি উদ্যোগ। আমি সকল অভিভাবকদের আহ্বান জানাচ্ছি, তারা যেন তাদের সন্তানদের এই স্কুলে পাঠান, যাতে তারা বাংলা ভাষা এবং সংস্কৃতির প্রতি ভালোবাসা অর্জন করতে পারে। আমাদের সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা এবং সহায়তা ছাড়া এই উদ্যোগ সফল হবে না। স্কুলটি একটি মাইলফলক হয়ে উঠবে, এমনকি এটি ভবিষ্যতে প্রবাসী কমিউনিটির সংস্কৃতি সংরক্ষণে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

প্রশ্ন ৬: গোলাপগঞ্জ উপজেলা সোশ্যাল ট্রাস্ট ইউকের ভূমিকা কী ছিল?

আনোয়ার শাহজাহান: গোলাপগঞ্জ উপজেলা সোশ্যাল ট্রাস্ট ইউকের ভূমিকা আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ট্রাস্টের বোর্ড অব ম্যানেজমেন্ট কমিটি সবসময় আমাদের পাশে দাঁড়িয়ে আছেন এবং তাদের সহযোগিতায় আমরা স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছি। স্কুলের জন্য যা কিছু প্রয়োজন, ট্রাস্ট সব সময় সহায়তা করেছে এবং করছে। তারা শুধু অর্থায়নেই নয়, বিদ্যালয়ের সুষ্ঠু পরিচালনায় বিভিন্ন প্রাসঙ্গিক সাহায্য প্রদান করছে। আমি তাদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।

প্রশ্ন ৭: স্কুল পরিচালনার জন্য আপনার কী ধরনের পরিকল্পনা রয়েছে?

আনোয়ার শাহজাহান: স্কুল পরিচালনার জন্য আমাদের লক্ষ্য হলো, প্রতিটি শিক্ষার্থী যাতে মানসম্মত শিক্ষা পায় এবং তাদের সংস্কৃতির প্রতি ভালোবাসা বৃদ্ধি পায়। ভবিষ্যতে আমরা আমাদের পাঠ্যক্রম আরও সমৃদ্ধ করার জন্য অভিজ্ঞ শিক্ষকদের নিয়োগ দেব। আমাদের শিক্ষকরা এই কাজটি অত্যন্ত ভালোভাবে করছেন, তবে আমরা আরও নতুন উদ্যোগ নিতে চাই। যেমন, শিক্ষার্থীদের জন্য সংস্কৃতি-ভিত্তিক বিভিন্ন কার্যক্রম আয়োজন। আমরা চাই, স্কুলটি শুধু একাডেমিক শিক্ষা না, বরং একটি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হিসেবেও প্রতিষ্ঠিত হোক। শিক্ষার্থীরা এখানে শুধু বাংলা ভাষা শিখবে না, তারা আমাদের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি এবং মূল্যবোধ সম্পর্কে ধারণা লাভ করবে। আমরা চাই, আমাদের স্কুল ভবিষ্যতে একটি শক্তিশালী কমিউনিটি কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হোক, যেখানে প্রবাসী সন্তানরা নিজেদের শিকড় ও ঐতিহ্যের সাথে সংযুক্ত থাকবে।

প্রশ্ন ৮: লন্ডন বাংলা স্কুলের প্রতিষ্ঠার পর আপনি কোন ধরনের প্রতিক্রিয়া পেয়েছেন?

আনোয়ার শাহজাহান: প্রতিষ্ঠার পর থেকে লন্ডন বাংলা স্কুলের প্রতি অভিভাবকদের এবং কমিউনিটির প্রতিক্রিয়া অত্যন্ত ইতিবাচক। তারা স্কুলের কার্যক্রম এবং শিক্ষার মান নিয়ে খুব সন্তুষ্ট। বিশেষ করে, তারা সন্তানেরা তাদের শিকড়ের সাথে আরও সংযুক্ত হচ্ছে এবং বাংলা ভাষায় দক্ষতা অর্জন করছে—এটি তাদের কাছে একটি বড় সাফল্য। এছাড়া, আমাদের কমিউনিটি সদস্যরা স্কুলের নানা কার্যক্রমে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করছেন, যা আমাদের কাজকে আরও শক্তিশালী করছে।

---
Anwar Shahjahan - আনোয়ার শাহজাহান
London Bangla School

লন্ডন বাংলা স্কুল প্রতিষ্ঠা এবং ভবিষ্যত পরিকল্পনা নিয়ে একান্ত সাক্ষাৎকারে আনোয়ার শাহজাহান

চার বান্ধবী,তাঁরা চারজনই মুক্তিযোদ্ধা।১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে যে গাড়িতে তারা বসেছিলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছর পর, ২০২১ স...
16/12/2024

চার বান্ধবী,
তাঁরা চারজনই মুক্তিযোদ্ধা।

১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে যে গাড়িতে তারা বসেছিলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছর পর, ২০২১ সালে সেই একই গাড়িতে, একই জায়গায় তারা আবার একত্রিত।
এই দৃশ্য আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, সাহস এবং ত্যাগের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।
তাদের প্রতি রইলো শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা। 💕
(Collected)

সাক্ষাৎকারমহান বিজয় দিবস উপলক্ষে অনলাইন পোর্টাল আমার কণ্ঠ-এ প্রকাশিত মুক্তিযুদ্ধের লেখক আনোয়ার শাহজাহান এর বিশেষ সাক্ষাৎ...
15/12/2024

সাক্ষাৎকার
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে অনলাইন পোর্টাল আমার কণ্ঠ-এ প্রকাশিত মুক্তিযুদ্ধের লেখক আনোয়ার শাহজাহান এর বিশেষ সাক্ষাৎকার।

https://amarkantho.com/%E0%A6%AE%E0%A7%81%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%BF%E0%A6%AF%E0%A7%81%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%A7%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%87%E0%A6%A4%E0%A6%BF%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%B8-%E0%A6%A4%E0%A7%81%E0%A6%B2%E0%A7%87-%E0%A6%A7%E0%A6%B0%E0%A6%A4%E0%A7%87%E0%A6%87-%E0%A6%86%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%B0-%E0%A6%B2%E0%A7%87%E0%A6%96%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A7%87%E0%A6%96%E0%A6%BF-%E0%A6%86%E0%A6%A8%E0%A7%8B%E0%A7%9F%E0%A6%BE%E0%A6%B0-%E0%A6%B6%E0%A6%BE%E0%A6%B9%E0%A6%9C%E0%A6%BE%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%A8

।।

মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস তুলে ধরতেই আমার লেখালেখি: আনোয়ার শাহজাহান

বিজয় দিবসে মু‌ক্তিযুদ্ধ বিষয়ক লেখক, সাংবা‌দিক ও প্রবাসী ক‌মিউ‌নি‌টি ব‌্যক্তিত্ব আনোয়ার শাহজাহানকে নিয়ে #আমার_কন্ঠ'র এবারের আয়োজন।

আনোয়ার শাহজাহান একজন খ্যাতিমান লেখক, গবেষক এবং মুক্তিযুদ্ধের লেখক। তিনি মুক্তিযুদ্ধের উপর ৪টি বাংলা এবং ২টি ইংরেজি বই লিখেছেন, যার মধ্যে "স্বাধীনতাযুদ্ধে খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা" বইটি ব্যাপক পাঠকপ্রিয়তা লাভ করেছে। তার গবেষণাগুলি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে উপস্থাপন করেছে এবং দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো সবার সামনে তুলে ধরেছে।

১৯৭৩ সালে জন্মগ্রহণ করা আনোয়ার শাহজাহান ১৯৯৫ সাল থেকে ব্রিটেনে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। ১৯৯৭ সাল থেকে তিনি লন্ডন বিচিত্রা এবং ২০১০ সাল থেকে আমাদের প্রতিদিন পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। সমাজসেবা, সাহিত্য এবং সংস্কৃতির প্রতি তাঁর গভীর আগ্রহ রয়েছে, এবং তিনি মুক্তিযুদ্ধের বীরত্ব, সংগ্রাম, আত্মত্যাগ ও বিজয়ের চিত্র তুলে ধরে বাংলাদেশের ইতিহাসে এক বিরল অবদান রেখে চলেছেন।

এখানে তুলে ধরা হলো আনোয়ার শাহজাহানের সাক্ষাৎকার:

#প্রশ্ন ১: আপনি কীভাবে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের প্রতি আগ্রহী হলেন?

আনোয়ার শাহজাহান: আমার মুক্তিযুদ্ধের প্রতি আগ্রহ জন্মেছে মূলত সাংবাদিকতার মাধ্যমে। আমি যখন সাংবাদিকতা শুরু করি, তখন বিভিন্ন মুক্তিযোদ্ধার সাক্ষাৎকার নেয়ার সুযোগ পেতাম। তাদের মুখ থেকে মুক্তিযুদ্ধের সময়কার গল্প শুনে এক ধরনের অদ্ভুত অনুভূতি হচ্ছিল। তাদের ত্যাগ, সাহসিকতা এবং সংগ্রামের গল্পগুলো আমাকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছিল। আমি তাদের গল্পে মানবিকতা, স্বাধীনতার প্রতি ভালোবাসা এবং দেশপ্রেমের একটি গভীর চিত্র দেখতে পেতাম। অনেক মুক্তিযোদ্ধা তাদের জীবন, পরিবার, এবং সর্বস্ব ত্যাগ করে স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছেন। তাদের বীরত্ব, সংগ্রাম এবং আত্মত্যাগের কথা শুনে আমার মনে হচ্ছিল, এই ইতিহাস যেন কখনো ভুলে না যায়। আমি জানতাম, যদি আমরা এই ইতিহাসগুলো সংরক্ষণ না করি, তবে ভবিষ্যত প্রজন্ম হয়তো জানবে না কীভাবে আমাদের পূর্বপুরুষরা তাদের জীবনের সবকিছু ত্যাগ করে আমাদের স্বাধীনতা অর্জন করেছিলেন। সেদিন থেকে আমার মনে হয়েছে, এই অমূল্য ইতিহাসকে সংরক্ষণ করা এবং চিরকাল স্মরণে রাখার জন্য আমাকে কিছু করতে হবে। এই ভাবনা থেকেই আমি মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে লেখালেখি শুরু করি, যাতে এটি ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য একটি শিক্ষামূলক উৎস হয়ে ওঠে।

#প্রশ্ন ২: আপনি প্রথম মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে লেখালেখি কীভাবে শুরু করলেন? প্রথম বইটির নাম কী?

উত্তর: মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আমার লেখালেখির শুরুটি সিলেটের খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের জীবনী নিয়ে। যখন আমি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের প্রতি আগ্রহী হই, তখন সিলেটে মুক্তিযোদ্ধাদের সাক্ষাৎকার নেওয়ার সুযোগ পাই। তাদের জীবনযুদ্ধ এবং সাহসিকতার গল্পগুলো আমাকে গভীরভাবে স্পর্শ করে। একেকটি সাক্ষাৎকার ছিল একেকটি শিক্ষা এবং অনুপ্রেরণা। এসব সাক্ষাৎকারের মধ্যে আমি উপলব্ধি করি, মুক্তিযুদ্ধের অনেক অজানা দিক আজও অনেকের কাছে অজানা রয়ে গেছে। বিশেষভাবে সিলেট অঞ্চলের মুক্তিযোদ্ধাদের অবদান অনেকটা উপেক্ষিত ছিল। তাই আমি সিদ্ধান্ত নিলাম, রাষ্ট্রীয় খেতাবপ্রাপ্ত সিলেটের মুক্তিযোদ্ধাদের মুক্তিযুদ্ধের বীরত্বগাথা নিয়ে একটি বই লিখবো, যাতে তাদের সংগ্রাম এবং ত্যাগের কথা সঠিকভাবে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে পৌঁছে যায়।

আমার প্রথম বইটি ছিল সিলেটের খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা। এটি ২০১৮ সালে অমর একুশে গ্রন্থমেলায় পান্ডুলিপি প্রকাশন থেকে প্রকাশিত হয়। বইটি সিলেট অঞ্চলের মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্ব এবং সংগ্রামকে চিরকাল স্মরণীয় করে রাখতে একটি ক্ষুদ্র পদক্ষেপ ছিল। এটি ছিল আমার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে লেখালেখি যাত্রার প্রথম বই।

---

#প্রশ্ন ৩: মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের কোন দিকটি আপনার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ?

উত্তর: মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো, আমাদের স্বাধীনতা অর্জনের জন্য যেসব সংগ্রাম, আত্মত্যাগ এবং বীরত্বের পথ পাড়ি দেওয়া হয়েছে, তা। মুক্তিযুদ্ধ শুধু একটি সময়কাল নয়, এটি আমাদের জাতির ইতিহাসের এক মহাকাব্য, যেখানে স্বাধীনের জন্য অসংখ্য মানুষের ত্যাগ, সংগ্রাম এবং সাহসের গল্প অমর হয়ে আছে। যারা নিজের জীবনের সর্বস্ব ত্যাগ করে, পরিবারের সুখ শান্তি বিসর্জন দিয়ে দেশের জন্য জীবন বাজি রেখেছেন, তাদের কাহিনীই মুক্তিযুদ্ধের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। তাদের এই বীরত্বপূর্ণ সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আমরা স্বাধীন দেশ পেয়েছি। এ ইতিহাসের গভীরতা এবং গুরুত্ব প্রতিটি প্রজন্মের কাছে পৌঁছানো অত্যন্ত জরুরি, যাতে তারা জানে যে স্বাধীনতা সহজে আসে না, এটি অর্জন করতে অনেক ত্যাগ এবং সংগ্রাম প্রয়োজন। মুক্তিযুদ্ধের এই অনন্য চেতনা আমাদের স্মৃতিতে চিরকাল উজ্জ্বল থাকবে।

#প্রশ্ন ৪: আপনি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস কীভাবে সংরক্ষণ করেন?

উত্তর: মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সংরক্ষণে আমি দুইটি প্রধান পন্থা অনুসরণ করি। প্রথমত, আমি মুক্তিযুদ্ধের বীরদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করি, যাতে তাদের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা এবং সংগ্রামের গল্প তুলে ধরা যায়। এই সাক্ষাৎকারগুলো এক ধরনের জীবন্ত ইতিহাস, যা পাঠকদের মুক্তিযুদ্ধের বাস্তব অভিজ্ঞতার সাথে পরিচিত করিয়ে দেয়। আমি বিশ্বাস করি, সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে যেভাবে মানুষের ব্যক্তিগত অনুভূতি এবং সংগ্রাম উঠে আসে, তা ইতিহাসের একটি অমূল্য অংশ হিসেবে সংরক্ষিত হয়।

দ্বিতীয়ত, আমি বিভিন্ন গবেষণামূলক উৎস, পুরনো ডকুমেন্ট, আর্কাইভ এবং নথিপত্র থেকে তথ্য সংগ্রহ করি। এসব ঐতিহাসিক দলিল ও নথি মুক্তিযুদ্ধের বহু অজানা দিক উন্মোচন করতে সাহায্য করে। এগুলোকে সংরক্ষণ ও বিশ্লেষণ করে আমি মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চিত্র ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করি। এর মাধ্যমে আমি চেষ্টা করি তরুণ প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের গুরুত্বপূর্ণ ইতিহাস তুলে ধরতে, যাতে তারা আমাদের স্বাধীনতার মূল্য এবং এর পেছনের সংগ্রাম বুঝতে পারে।

---

#প্রশ্ন ৫: মুক্তিযুদ্ধের সময়কার আপনার প্রিয় কোনো ঘটনা বা চরিত্র কি?

উত্তর: মুক্তিযুদ্ধের সময়কার অনেক বীর মুক্তিযোদ্ধাদের গল্প শুনেছি, তবে এক বিশেষ চরিত্র আমার মনকে গভীরভাবে ছুঁয়ে গেছে। তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা, যিনি যুদ্ধের সময় তার পরিবারকে হারিয়ে, নিজের জীবনকে বিপদে ফেলে দেশের জন্য লড়াই করেছিলেন। তার গল্পে ছিল না কোনো হীনমন্যতা, ছিল শুধু অদম্য আত্মবিশ্বাস এবং দেশপ্রেমের এক অমোঘ শক্তি। তার সাহসিকতা এবং আত্মত্যাগের মধ্যে আমি এমন এক অদ্ভুত শক্তি এবং দৃঢ়তা অনুভব করি, যা আমার লেখার প্রতি মনোভাবকে আরও শক্তিশালী করেছে। তার কাছে জীবন এবং দেশপ্রেমের সংজ্ঞা ছিল একেবারে আলাদা; তিনি জানতেন, স্বাধীনতা অর্জন করতে হলে কিছু একটা ত্যাগ করতে হয়। এই ঘটনা আমার জীবনে বিশাল অনুপ্রেরণা। মুক্তিযোদ্ধার এই আত্মত্যাগ আমাকে শিখিয়েছে যে, মানুষের জীবনের সবচেয়ে বড় অর্জন হলো নিজের দেশের জন্য নিঃস্বার্থভাবে কাজ করা। এমন বীরদের কথা আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মের কাছে জানানো উচিত, যেন তারা বুঝতে পারে, এই স্বাধীনতা আসেনি সহজে। তাদের সংগ্রাম এবং আত্মত্যাগকে স্মরণ রেখে, আমাদের উচিত মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা এবং এই অমূল্য সম্পদকে সামনে নিয়ে আসা।

#প্রশ্ন ৬: মুক্তিযুদ্ধের বিষয়বস্তু নিয়ে লেখার সময় আপনার কী ধরনের প্রস্তুতি থাকে?

উত্তর: মুক্তিযুদ্ধের বিষয়বস্তু নিয়ে লেখার সময় আমি খুবই মনোযোগ সহকারে প্রস্তুতি গ্রহণ করি। প্রথমত, আমি বিষয়টির ওপর বিস্তারিত গবেষণা শুরু করি। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা, এবং বিশেষত মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাগুলো জানার জন্য আমি তাদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করি। তাদের গল্প আমাকে আরো গভীরভাবে প্রভাবিত করে, কারণ এটি কেবল যুদ্ধের ঘটনা নয়, এটি মানুষের আত্মত্যাগ, সাহসিকতা এবং দেশপ্রেমের একটি বাস্তব চিত্র।

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তুতি হলো, মুক্তিযুদ্ধের সময়কার প্রামাণ্য দলিল, ডকুমেন্ট, ছবি এবং পত্রিকা সংগ্রহ করা। এই ঐতিহাসিক দলিলগুলো আমার লেখায় সত্যনিষ্ঠতা এবং গভীরতা আনতে সাহায্য করে। এসব তথ্য সংগ্রহ করার মাধ্যমে আমি সঠিক ঘটনা তুলে ধরার চেষ্টা করি এবং আমার লেখায় কোনও ধরনের বিভ্রান্তি এড়াতে পারি।

তাছাড়া, আমি মুক্তিযুদ্ধের সাহিত্য, কবিতা এবং সাহিত্যিকদের রচনাও পড়ি, যা মুক্তিযুদ্ধের সময়কার মনোভাব এবং সংগ্রামের অনুভূতির সঙ্গে পরিচিত হতে সহায়তা করে। গবেষণার পাশাপাশি, আমি সময় কাটাই মুক্তিযুদ্ধের সংগ্রামীদের পরিবার এবং সম্প্রদায়ের সঙ্গে, যাতে তাদের অভিজ্ঞতা আরও ভালোভাবে জানতে পারি এবং তা সঠিকভাবে লেখার মাধ্যমে পরবর্তী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে পারি।

এই ধরনের বিস্তারিত প্রস্তুতির মাধ্যমে আমি নিশ্চিত করি যে, আমার লেখাগুলো মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চিত্র তুলে ধরবে, যা পাঠকদের জন্য শিক্ষামূলক এবং অনুপ্রেরণাদায়ক হবে।

---

#প্রশ্ন ৭: মুক্তিযুদ্ধে নারীদের ভূমিকা কীভাবে আপনি মূল্যায়ন করেন?

উত্তর: মুক্তিযুদ্ধে নারীদের ভূমিকা ছিল অবর্ণনীয় এবং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যদিও অনেক সময় তাদের অবদান ছিল গোপন, তবুও তাদের সাহস, সংগ্রাম এবং ত্যাগ ছিল অসাধারণ। নারীরা শুধু যুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহণই করেননি, বরং মুক্তিযুদ্ধের প্রতি তাদের অবদান ছিল নানা দিক থেকে। তারা মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা, চিকিৎসা, খাদ্য সরবরাহ এবং গুপ্তচরবৃত্তির মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছিলেন। তাদের এই নিঃস্বার্থ অবদান মুক্তিযুদ্ধের সাফল্যের অংশ ছিল।

মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে নারীদের এই ভূমিকা সঠিকভাবে তুলে ধরলে, আমরা শুধুমাত্র তাদের প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা পূর্ণ করতে পারব না, বরং তাদের সংগ্রামের শক্তি এবং ত্যাগের গল্পটি ভবিষ্যত প্রজন্মের কাছে চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবে। নারীদের অবদান ইতিহাসের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ, এবং তাদের এই সাহসিকতা আমাদের সকলের কাছে অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে।

#প্রশ্ন ৮: মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?

উত্তর: মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস এবং বীরদের আত্মত্যাগ নিয়ে আমার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা হল রাষ্ট্রীয় খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জীবনী এবং তাদের অবদান নিয়ে আরও বিস্তারিত, গবেষণাধর্মী বই লেখা। আমি সিলেটের জীবিত মুক্তিযোদ্ধাদের সাক্ষাৎকার নিয়ে তাদের সংগ্রামের ইতিহাস লিখতে চাই, যাতে মুক্তিযুদ্ধের অজানা দিক এবং সিলেট অঞ্চলের মুক্তিযোদ্ধাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা প্রকাশ করা যায়।

বর্তমানে, আমি খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের জীবন ও সংগ্রাম নিয়ে ৩টি বাংলা এবং ১টি ইংরেজি বই লিখছি। পাশাপাশি, সিলেটে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত স্থান ও সৌধ নিয়ে একটি বই লিখেছি, যা পরবর্তীতে ইংরেজি ভাষায় অনুবাদ ও প্রকাশিত হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের সাহসিকতা ও ত্যাগের গল্প নিয়ে একটি প্রেরণাদায়ক গল্পের বইও লিখেছি, যা নতুন প্রজন্মের জন্য একটি মূল্যবান শিক্ষা হতে পারে।

ভবিষ্যতে, আমি এই বইগুলোকে আরও বিস্তৃতভাবে ইংরেজি ভাষায় অনুবাদ করার পরিকল্পনা করছি, যাতে প্রবাসী বাঙালি সন্তানরা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ এবং ইতিহাস সম্পর্কে আরও ভালোভাবে জানতে পারে। আমার মূল লক্ষ্য হল মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা এবং এটি নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছানো, যাতে তারা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মহানত্ব এবং এর বীরদের অবদান সম্পর্কে আরও সচেতন হতে পারে।

---

#প্রশ্ন ৯: তরুণ প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্পর্কে কীভাবে আরো সচেতন করা যেতে পারে?

উত্তর: তরুণ প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্পর্কে সচেতন করার জন্য আমাদের বিভিন্ন উপায়ে কাজ করতে হবে। প্রথমত, তাদেরকে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানাতে হবে, যাতে তারা বুঝতে পারে কীভাবে আমাদের পূর্বপুরুষরা ত্যাগ ও সংগ্রামের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জন করেছিলেন। বই পড়া, বিশেষত মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে লেখা বইগুলো পড়তে তাদের উৎসাহিত করতে হবে। এছাড়া, চলচ্চিত্র, নাটক, এবং তথ্যচিত্রের মাধ্যমে ইতিহাসের অমূল্য গল্পগুলো তাদের কাছে পৌঁছানো যেতে পারে। স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে মুক্তিযুদ্ধের উপর বিশেষ পাঠ্যক্রম চালু করা, সেমিনার ও আলোচনা আয়োজন করা তরুণদের মধ্যে এই বিষয়ে আগ্রহ সৃষ্টি করতে সাহায্য করবে। আমরা যদি তাদের মাঝে মুক্তিযুদ্ধের মহান সাহসিকতা, ত্যাগ এবং দেশপ্রেমের গুরুত্ব তুলে ধরতে পারি, তাহলে তারা নিজেদের ইতিহাস সম্পর্কে গর্বিত হবে এবং ভবিষ্যতে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ থাকবে।

#প্রশ্ন ১০: আপনি কী মনে করেন, মুক্তিযুদ্ধের কোন দিকটি সবচেয়ে কম আলোচিত?

উত্তর: মুক্তিযুদ্ধের বেশ কিছু দিক এখনও যথাযথভাবে আলোচিত হয়নি। বিশেষত, দেশের ভেতরের গোপন সংগ্রাম এবং স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের অবদান অনেক ক্ষেত্রে উপেক্ষিত থাকে। এমন অনেক মুক্তিযোদ্ধা আছেন, যারা জনসমক্ষে পরিচিত না হলেও, তাঁদের সংগ্রাম ছিল অমূল্য। এই অজানা যোদ্ধাদের কাহিনী এবং তাদের আত্মত্যাগকে ইতিহাসে গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন, যাতে মুক্তিযুদ্ধের পূর্ণাঙ্গ চিত্র উঠে আসে। এসব দিক নিয়ে আরও গবেষণা ও আলোচনা প্রয়োজন, যা পরবর্তী প্রজন্মকে আমাদের ইতিহাস সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা দেবে।

---

#প্রশ্ন ১১: মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আপনার লেখা বইগুলোর মধ্যে কোনটি সবচেয়ে বেশি পাঠকপ্রিয়?

উত্তর: মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আমার লেখা বইগুলোর মধ্যে "স্বাধীনতাযুদ্ধে খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা" বইটি সবচেয়ে বেশি পাঠকপ্রিয় হয়েছে। বইটি মুক্তিযুদ্ধের বীর যোদ্ধাদের জীবনের সংগ্রাম, ত্যাগ এবং কীর্তির বিস্তারিত বর্ণনা নিয়ে লেখা হয়েছে, যা পাঠকদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

এ বইটির মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের অজানা অনেক দিক উন্মোচিত হয়েছে, বিশেষ করে খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাথা ও তাঁদের অবদান। বইটিতে ৬৭৬ জন মুক্তিযোদ্ধার পরিচিতি রয়েছে, যার মধ্যে ৭ জন বীরশ্রেষ্ঠ, ৬৮ জন বীর-উত্তম, ১৭৫ জন বীরবিক্রম এবং ৪২৬ জন বীরপ্রতীক মুক্তিযোদ্ধার নাম অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এই বইটি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দলিল হিসেবে বিবেচিত।

বইটি প্রকাশের পর, এটি বিশেষভাবে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে আগ্রহী পাঠকদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। এটি কেবল মুক্তিযুদ্ধের যোদ্ধাদের কীর্তি তুলে ধরা নয়, বরং তাঁদের সংগ্রাম ও আত্মত্যাগের প্রতি জাতি হিসেবে আমাদের কৃতজ্ঞতা এবং শ্রদ্ধা জানাতে সহায়তা করেছে। আমি মনে করি, এই বইটি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্পর্কে নতুন প্রজন্মের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে এবং আগামী প্রজন্মের জন্য এটি একটি অমূল্য রেফারেন্স হিসেবে থাকবেই।

---

#প্রশ্ন ১২: মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে সবার কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?

উত্তর: মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস আমাদের জাতির এক অমূল্য সম্পদ, যা আমাদের গৌরব এবং আত্মপরিচয়ের প্রতীক। কিন্তু সময়ের সাথে অনেক গুরুত্বপূর্ণ দিক হারিয়ে যেতে থাকে, যা পরবর্তী প্রজন্মের কাছে পৌঁছানো অত্যন্ত জরুরি। আমি বিশ্বাস করি, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস যদি সঠিকভাবে সংরক্ষণ ও প্রচার না করা হয়, তাহলে তা কেবল কাহিনীতে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়বে। তাই, আমি মুক্তিযুদ্ধের অজানা দিকগুলো নিয়ে লেখালেখি ও গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছি, যাতে এই অমূল্য ইতিহাস সকলের কাছে পৌঁছানো যায়।

আমার লক্ষ্য হলো মুক্তিযুদ্ধের গৌরব, সংগ্রাম, আত্মত্যাগ এবং বিজয়ের চিত্রগুলো ভবিষ্যত প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা, যাতে তারা আমাদের পূর্বপুরুষদের ত্যাগ ও সংগ্রামের মূল্য বুঝতে পারে। আমি চাই, মুক্তিযুদ্ধের এই ইতিহাস যেন কখনো হারিয়ে না যায় এবং আমাদের জাতির ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে থাকে।

ভবিষ্যতে আমি আরও কিছু বই এবং গবেষণার কাজ করতে চাই, যা মুক্তিযুদ্ধের অজানা বা অপ্রকাশিত দিকগুলো উন্মোচন করবে। আমি বিশ্বাস করি, এসব কাজ ইতিহাসের প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়াবে এবং দেশের জাতীয় ঐক্যের শক্তি হিসেবে কাজ করবে।

এছাড়া, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের উপর আরও গভীর গবেষণা এবং আর্কাইভ তৈরির পরিকল্পনাও রয়েছে, যা ভবিষ্যতে একটি মূল্যবান সম্পদ হয়ে উঠবে। মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস সংরক্ষণ ও সবার কাছে পৌঁছে দেওয়া আমার জীবনের প্রধান লক্ষ্য।

 #আনোয়ার_শাহজাহানের ছোট গল্প - অপূর্ণ স্বপ্ন দিলোয়ার হোসেন, সিলেটের একটি গ্রাম থেকে ২০০৬ সালে স্বপ্ন নিয়ে পাড়ি জমালেন...
15/12/2024

#আনোয়ার_শাহজাহানের ছোট গল্প
- অপূর্ণ স্বপ্ন

দিলোয়ার হোসেন, সিলেটের একটি গ্রাম থেকে ২০০৬ সালে স্বপ্ন নিয়ে পাড়ি জমালেন লন্ডনে। একটি ব্যাগ, হাতে কয়েকটি পাউন্ড, আর বুকভরা স্বপ্ন। দেশের মোটামোটি স্বাভলম্বি এক পরিবারের ছোট ছেলে তিনি। বড় ছেলে সিলেট শহরে একটি লাইব্রেরি মালিক। খুবই নাম ডাক ছিল লাইব্রেরির। কিন্তু দিলোয়ার আরো উন্নত জীবনের জন্য পরিবারের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য নিজের সবকিছু ত্যাগ করে এসেছিলেন অজানা এক পৃথিবীতে।

লন্ডনে প্রথম দিনগুলো ছিল বিষাদময়। কাজ শুরু করলেন একটি রেস্টুরেন্টে কিচেন পট্টার হিসেবে। প্রতিদিন ১২-১৪ ঘণ্টা কাজ, ভাঙা শরীর, আর মানসিক চাপের মধ্যে দিয়ে দিন কাটাতেন। তবুও তিনি স্বপ্ন দেখতেন—একদিন তিনি বড় হবেন, নিজের পায়ে দাঁড়াবেন।

এমন একদিন, যখন রেস্টুরেন্টে কাজ করছিলেন, মালিক তাকে বলেছিলেন, "তুমি একদিন ভালো কিছু করবে। তোমার মধ্যে কিছু আছে, শুধু তোমার অপেক্ষা।" এই কথাগুলো দিলোয়ারের মনকে আরো জাগিয়ে তুলেছিল। মালিকের কথা তাকে প্রেরণা দিলো।

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দিলোয়ার নিজের দক্ষতা বাড়াতে থাকলেন। রেস্টুরেন্টের মালিকের চোখে পড়ল তার পরিশ্রম আর একাগ্রতা। ধীরে ধীরে তিনি কিচেন পটার থেকে শেফ হয়ে উঠলেন। কার্ডিফের কাছের একটি রেস্টুরেন্টে কাজ পেয়ে জীবনটা একটু গোছাতে শুরু করলেন। কার্ডিফের রেস্টুরেন্টে কাজ করার সময় তার জীবনের সবথেকে বড় শিক্ষা ছিল—স্বপ্ন পূরণের জন্য কঠোর পরিশ্রমের কোন বিকল্প নেই। এখানে এসে দিলোয়ার বুঝতে পারলেন যে কেবল আর্থিকভাবে সফলতা নয়, মানসিক ও আত্মবিশ্বাসীভাবে শক্তিশালী হওয়া দরকার। এই সময়ে তিনি হালকা হাতে কিছু ইংরেজি শিখতে শুরু করেছিলেন, যা তাকে কাজে সহায়ক হলো।

কিন্তু জীবন তো আর সহজ নয়। ২০০৬ থেকে ২০২৩—দীর্ঘ ১৮ বছর দিলোয়ার লিগ্যাল কাগজপত্রের অপেক্ষায় ছিলেন। কষ্টে জমানো টাকা দিয়ে দেশে বাড়ি করার জন্য জমি কিনেছিলেন। মা বারবার বলতেন, "বাবা, দেশে ফিরে আয়। বিয়ে কর, সংসার কর।" দিলোয়ার প্রতিবার আশ্বাস দিতেন, "মা, আর একটু সময়। সব ঠিক হয়ে গেলেই আসব।"

তবে তার মনের মধ্যে একটা প্রশ্ন ছিল—একদিন দেশে ফিরে তিনি কতটা সফল হতে পারবেন? একদিন দেশে ফিরে বড় বাড়ি কিনবেন, বড় অফিস করবেন, কি না কি! কিন্তু সেই দিন তার কাছে এসে ছিল এতদিনের পরিশ্রমের ফল।

তার দিনগুলো কাটত দেশের কথা ভেবে। গ্রামে ফিরে মাকে একদিন জড়িয়ে ধরার স্বপ্ন দেখতেন। বিয়ে করে নিজের সংসার গড়ার স্বপ্নও ছিল। কিন্তু সময় যেন তার জন্য অন্য পরিকল্পনা করে রেখেছিল। দিলোয়ার বারবার মাকে বলতেন, "আর কিছু সময় মা। সব ঠিক হয়ে যাবে, তুমি দেখতে পাবে।"

২০২৩ সালে অবশেষে তিনি লিগ্যাল হলেন। মনে হলো, জীবনের সবচেয়ে বড় বাধা তিনি পার হয়ে গেছেন। দেশে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করলেন। কিন্তু দীর্ঘদিনের পরিশ্রম আর মানসিক চাপ তার শরীরকে নিঃশেষ করে দিয়েছিল। চিকিৎসকদের পরামর্শে কিছু দিন বিশ্রাম নিলেও তিনি থামেননি। তবুও, তার দেহে কিছু অজানা সংকেত ছিল, যা তিনি অবহেলা করেছিলেন।

একদিন বামিংহামে, হতে কার্ডিফে কাজে যাওয়ার জন্য ঘর হতে প্রস্তুত হচ্ছিলেন। হঠাৎ দিলোয়ার বুকে ব্যথা অনুভব করলেন। হাসপাতালে নেওয়ার আগেই তার হৃদযন্ত্র থেমে গেল। মাত্র ৪৪ বছর বয়সে, অপূর্ণ স্বপ্ন আর অসংখ্য আকাঙ্ক্ষা নিয়ে তিনি চলে গেলেন না ফেরার দেশে।

তার মৃত্যুর খবর গ্রামে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গেই শোকের ছায়া নেমে আসে। তার মা চিৎকার করে বললেন, "আমার ছেলে দেশে ফিরতে পারল না, আমাকে একবার দেখতেও পারল না। এতদিন শুধু বলত, 'মা, আর একটু সময় দাও। সব ঠিক হয়ে যাবে।' কিন্তু আমার দিলু আর ফিরল না।"

দিলোয়ারের বড় ভাই, লাইব্রেরির মালিক, চোখ মুছতে মুছতে বলেন, "সে তো শুধু স্বপ্ন দেখত, আমাদের সবার জন্য ভালো কিছু করতে। কিন্তু তার স্বপ্ন শেষ হয়ে গেল এই বিদেশের মাটিতেই।"

গ্রামের মানুষ দিলোয়ারের সংগ্রামের গল্প নিয়ে আলোচনা করতে থাকে। একজন তরুণ বলেন, "দিলোয়ার ভাই আমাদের মতো সাধারণ মানুষের জন্য একটা উদাহরণ। তিনি দেখিয়েছেন যে চেষ্টা করলে সব সম্ভব। কিন্তু এত কষ্ট করা শরীরের জন্য ঠিক হয়নি।"

তার মৃত্যুর পর তার পরিবার লন্ডনে তার দাফনের ব্যবস্থা করে। পরিবারের সদস্যরা একসঙ্গে দাঁড়িয়ে শপথ করেন যে তারা তার স্বপ্নগুলো পূরণ করার চেষ্টা করবেন। বড় ভাই লাইব্রেরি বিক্রি করে সেই টাকা দিয়ে গ্রামে মসজিদ বানানোর সিদ্ধান্ত নেন, যেখানে দিলোয়ারের নাম থাকবে।

গ্রামে মসজিদ তৈরি করার পাশাপাশি, একটি পাঠাগারও তৈরি করা হয়। পাঠাগারের নাম রাখা হয় "দিলোয়ার হোসেন পাঠাগার", যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম তার সংগ্রামের গল্প জানে এবং শিক্ষা পায়। সেই পাঠাগার থেকে গ্রামের ছেলে-মেয়েরা বই পড়ে, নিজেদের ভবিষ্যৎ গড়ে তোলে। পাঠাগারটি দিলোয়ারের শখ ছিল—তিনি চাইতেন গ্রামের ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা স্বপ্ন দেখতে শিখুক, পড়াশোনা করুক এবং একদিন ভালো কিছু করবে। সে বিশ্বাস করতো, শিক্ষা আর অধ্যবসায়ের মাধ্যমে যে কেউ তার জীবন বদলে ফেলতে পারে।

এছাড়া, দিলোয়ারের ছোট ভাই তার অল্প কিছু জমি বিক্রি করে একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করার চিন্তা করেন। স্কুলটির উদ্দেশ্য ছিল, গ্রামের প্রান্তিক শিশুদের শিক্ষা প্রদান করা এবং তাদের আরও বড় স্বপ্ন দেখানো। স্কুলটি প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর, গ্রামের ছেলে-মেয়েরা সেখানে পড়াশোনা করতে আসত, তাদের জীবনের পথ সহজ করতে শিক্ষার মাধ্যমে। এই স্কুলটি ছিল দিলোয়ারের স্বপ্নের একটি অংশ, যা বাস্তবে রূপান্তরিত হলো তার মৃত্যুর পর।

দিলোয়ারের পরিবারের সদস্যরা তাঁর জীবনযাত্রা এবং সংগ্রামের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে একটি ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠা করেন। এই ট্রাস্টের মাধ্যমে, গ্রামে দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থী ও দরিদ্র অসহায় মানুষদের সহায়তা দেওয়া শুরু হয়। সেই সাহায্যের মাধ্যমে, দিলোয়ারের স্মৃতি জীবিত থাকে এবং তার প্রতিটি কষ্ট আর সংগ্রাম প্রজন্মের পর প্রজন্মকে প্রেরণা যোগায়।

আজও, গ্রামবাসী দিলোয়ারের সংগ্রামের কাহিনির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তার জীবনযাত্রাকে অনুসরণ করে। তিনি যে কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে একসময় বিদেশে স্বপ্ন দেখেছিলেন, তার জীবন কাহিনি গ্রামে এক আদর্শ হয়ে উঠেছে। আজও যখন গ্রামের কেউ কঠিন পরিস্থিতিতে পড়ে, তখন তারা দিলোয়ারের কথা মনে করে এবং বিশ্বাস করে যে কঠোর পরিশ্রম আর আত্মবিশ্বাসের মাধ্যমে তারা তাদের স্বপ্ন পূরণ করতে পারবে।

আনোয়ার শাহজাহান: লেখক, সাংবাদিক, লন্ডন।

Anwar Shahjahan
Anwar Shahjahan - আনোয়ার শাহজাহান

Address

London

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Amader Protidin - আমাদের প্রতিদিন posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Amader Protidin - আমাদের প্রতিদিন:

Videos

Share

Category