Hill Voice

Hill Voice Online News for CHT Issues, Indigenous Rights, Minority & Women Issues and Human Rights. Address: 10-96, Churchill Street, Waterloo, ON N2L 2X2, Canada

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্বরসতী পূজার ব্যানার ছিঁড়ে ফেলার ঘটনায় যুব ঐক্য পরিষদের তীব্র নিন্দাহিল ভয়েস, ২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ঢাক...
02/02/2025

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্বরসতী পূজার ব্যানার ছিঁড়ে ফেলার ঘটনায় যুব ঐক্য পরিষদের তীব্র নিন্দা

হিল ভয়েস, ২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ঢাকা: বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শ্রী শ্রী স্বরসতী পূজার ব্যানার ছিঁড়ে ফেলার ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে তদন্ত ও বিচার নিশ্চিতে সরকার ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নিস্পৃহতায় বাংলাদেশ যুব ঐক্য পরিষদের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে।

বাংলাদেশ যুব ঐক্য পরিষদের দপ্তর সম্পাদক সুজিত ঘোষের স্বাক্ষরিক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয় যে, বাংলাদেশে আবহমানকাল ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় পঞ্চমী তিথিতে বিদ্যার দেবী শ্রী শ্রী স্বরসতী দেবীর পূজা আয়োজন করা হচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অত্যন্ত আনন্দমুখর পরিবেশে ধর্ম-বর্ণ-জাতি-লিঙ্গ নির্বিশেষে সকলেই এই দিনটি উদযাপন করে থাকে। সকলের অংশগ্রহণের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি একটি জাতীয় দিবসে রূপান্তরিত হয়েছে।

কিন্তু অতি সম্প্রতি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, নরসিংদী সরকারি কলেজ, সরকারি তিতুমীর কলেজসহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সরস্বতী পূজার ব্যানার ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে বা ব্যানারের উপরে অন্য প্রতিষ্ঠানের ব্যানার ইচ্ছাকৃতভাবে টাঙিয়ে দেয়া হয়েছে- যা ইতোপূর্বে কোনদিন দেখা যায়নি। এই ধরনের ঘটনা বৈষম্যমূলক এবং অত্যন্ত নিন্দনীয়। বাংলাদেশ যুব ঐক্য পরিষদ অদ্যাবধি বাংলাদেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উল্লেখিত ঘটনাসমূহের তদন্ত ও দোষীদের বিচারের সম্মুখীন করার ক্ষেত্রে আইন-শৃংখলা বাহিনী ও সরকারের দৃশ্যমান কোনো ভূমিকা দেখতে পায়নি এবং বাংলাদেশ যুব ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ অতীত অভিজ্ঞতার আলোকে মনে করেন, আইন-শৃংখলা বাহিনী ও সরকারের নিস্পৃহতা দেশে সাম্প্রদায়িক অস্থিরতা আরো উসকে দেবে।

এমতাবস্থায়, বাংলাদেশ যুব ঐক্য পরিষদের সভাপতিত্রয় শিমুল সাহা, সজীব বড়ুয়া ও মিল্টন সেবাসটিয়ান গোমেজ ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিল্লোল সরকারসহ সকল কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ বাংলাদেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শ্রী শ্রী স্বরসতী পূজার ব্যানার ছিঁড়ে ফেলার ঘটনার তদন্ত ও দোষীদের চিহ্নিত করে বিচারের সম্মুখীন করার ক্ষেত্রে সরকারের নিস্পৃহতার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জ্ঞাপন করছে। একই সাথে, কেন্দ্রী নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে দোষী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ারও জোর দাবি জানায়।

এদিকে গত ৩ বছর যাবৎ ঢাকাস্থ জাতীয় প্রেস ক্লাবে বিদ্যা ও জ্ঞানার্জনের দেবী শ্রী শ্রী স্বরসতী দেবীর পূজার্চনা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। তবে এ বছর প্রেস ক্লাবের বর্তমান কমিটি পূজা আয়োাজনের অনুমোদন প্রদান করেনি, যা অত্যন্ত নিন্দনীয় এবং প্রেস ক্লাবের অসাম্প্রদায়িক নীতিমালার পরিপন্থী। বাংলাদেশ যুব ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ জাতীয় প্রেস ক্লাবের বর্তমান কমিটির এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জ্ঞাপন করেছে এবং জাতীয় প্রেস ক্লাবে বিগত বছরগুলোর ন্যায় এবারও শ্রী শ্রী স্বরসতী পূজা আয়োজন করার জন্যে জোর দাবি জানিয়েছে।
https://hillvoice.net/en/bn/2025/02/%e0%a6%b6%e0%a6%bf%e0%a6%95%e0%a7%8d%e0%a6%b7%e0%a6%be%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%a4%e0%a6%bf%e0%a6%b7%e0%a7%8d%e0%a6%a0%e0%a6%be%e0%a6%a8%e0%a7%87-%e0%a6%b8%e0%a7%8d%e0%a6%ac%e0%a6%b0%e0%a6%b8/

চট্টগ্রামে পিসিপি’র ৩১তম বার্ষিক শাখা সম্মেলন ও কাউন্সিল ২০২৫ সম্পন্নহিল ভয়েস, ১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, চট্টগ্রাম: আজ ১ ফেব্রু...
02/01/2025

চট্টগ্রামে পিসিপি’র ৩১তম বার্ষিক শাখা সম্মেলন ও কাউন্সিল ২০২৫ সম্পন্ন

হিল ভয়েস, ১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, চট্টগ্রাম: আজ ১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ, চট্টগ্রাম মহানগর শাখা ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ৩১তম বার্ষিক শাখা সম্মেলন ও কাউন্সিল ২০২৫ অনুষ্ঠিত হয়।

“সকল প্রকার ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের বৃহত্তর আন্দোলনে ছাত্র সমাজ অধিকতর সামিল হউন” উক্ত স্লোগানকে সামনে রেখে অনুষ্ঠিত সম্মেলন ও কাউন্সিলটি চট্টগ্রাম নগরস্থ আন্দরকিল্লা আর্বান সেন্টারে আজ সকাল ১০:০০ ঘটিকায় অনুষ্ঠিত হয়।

সম্মেলন সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সহ-ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক জুয়েল চাকমা। এছাড়াও অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পিসিপি’র কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি নিপন ত্রিপুরা , হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক উলিসিং মারমা , পাহাড়ী শ্রমিক কল্যাণ ফোরামের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ বিকাশ চাকমা প্রমুখ।

পিসিপি, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার বিদায়ী কমিটির সভাপতি অন্তর চাকমার সভাপতিত্বে ও চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সহ-সভাপতি সৌরভ চাকমা ও চবি শাখার সাধারণ সম্পাদক অন্বেষ চাকমার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সভাপতি হ্লামিও মারমা এবং প্রতিনিধি বক্তব্য রাখেন খুলশী থানা শাখার সাধারণ সম্পাদক থোয়াইউ প্রু মারমা, চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট শাখার সহ-সভাপতি সুমান চাকমা , চবি ২ নং গেইট শাখার সহ-সাধারণ সম্পাদক অপূর্ব চাকমা। সম্মেলনে বার্ষিক সাংগঠনিক প্রতিবেদন পেশ করেন চবি শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক সুভাষ চাকমা ও চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক আদর্শ চাকমা। অনুষ্ঠানের শুরুতে জুম্ম জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে সকল শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।

প্রধান অতিথি বক্তব্যে জুয়েল চাকমা বলেন, “আজ আমাদের জীবনের কোনো নিরাপত্তা নেই। জুম্ম জনগণকে প্রতিনিয়ত নিজ ভূমি থেকে উচ্ছেদ, সেনা নিপীড়ন,নারীদের শ্লীলতাহানি ও অনিরাপত্তাসহ নানা ধরণের অসহনীয় নিপীড়ন অত্যাচারের মধ্য দিয়ে জীবন অতিবাহিত করতে হচ্ছে। তাই ন্যায্য অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে জুম্ম জাতীয় অস্তিত্ব সমুন্নত করার জন্য আদর্শিক চেতনায় জাগরিত হয়ে আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার প্রতিষ্ঠার বৃহত্তর আন্দোলনে ছাত্র সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে। আমরা যদি আত্মমর্যাদা, আত্মপরিচয় ও অধিকার নিয়ে বেঁচে থাকতে চায় তাহলে সংগ্রামের বিকল্প নেই। তাই বর্তমান ছাত্র সমাজকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে ভবিষ্যৎ পার্বত্য চট্টগ্রামকে তারা কীভাবে দেখতে চায়।”

তিনি আরও বলেন, “জুম্ম জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে ছাত্র-যুব সমাজকে ত্যাগের মহিমায় উজ্জীবিত হতে হবে। আমাদের জাতীয় জীবন আজ সংকটের মুখে সেটা প্রজন্মকে অনুধাবন করতে হবে। এই সংকট থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে ছাত্র ও যুব সমাজকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে হবে। চুক্তি করেও সরকার কেন অধিকার দিতে চায় না এটা আমাদের বুঝতে হবে। সর্বোপরি এম এন লারমার আদর্শকে ধারণ করে লড়াই সংগ্রাম করে টিকে থাকতে হবে।”

নিপন ত্রিপুরা বলেন, “কঠোর লড়াই ব্যতীত আমাদের কোনো বিকল্প পথ নেই। জুলাই অভ্যুত্থান পরবর্তী দেশে যে মৌলবাদী শক্তির উত্থান ও সাম্প্রদায়িক রুপ তা আমাদের জন্য শুভকর নয়। তাই কর্মীদের সংগঠনের নীতি আদর্শের ভিত্তিতে সংগঠিত হয়ে বৃহত্তর আন্দোলনে আত্মপ্রত্যয়ী হতে হবে এবং জুম্ম জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ছাত্র ও যুব সমাজকে পার্টির নীতি ও আদর্শের ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধকরণে কাজ করতে হবে।

সন্তোষ বিকাশ চাকমা বলেন, “পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ জুম্ম জনগণের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে এক কান্ডারী সংগঠন। এই সংগঠনের মাধ্যমে ছাত্র সমাজের মধ্য থেকে আদর্শিক সংগ্রামী নেতৃত্ব গড়ে ওঠে। যুগে যুগে নিপীড়িত জাতিসমূহের লড়াই-সংগ্রামে তরুণরাই সামনের সারিতে ছিল। পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্ম জনগণের অধিকার আদায়ের সনদ পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের আন্দোলনেও এই ছাত্র সমাজের এগিয়ে আসা এখন সময়ের দাবি।”

উলিসিং মারমা বলেন, “বাংলাদেশের শাসন কাঠামোতে ক্ষমতার পালা বদল হলেও পার্বত্য চট্টগ্রামে জুম্ম জনগণের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হয়নি। বিগত সময়ে আদিবাসীদের উপর উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর হামলা এবং তার বিচারহীনতা প্রমাণ করে এই রাষ্ট্র আমাদের জন্য আন্তরিক নয়। কাজেই বর্তমান তরুণ প্রজন্মকে জাতীয় অস্তিত্ব সমুন্নত করতে কঠোর সংগ্রামে অবতীর্ণ হওয়ার জন্য প্রস্তুত হতে হবে। পাশাপাশি পার্বত্য চট্টগ্রামের পশ্চাৎপদ নারী সমাজকেও অধিকার সম্পর্কে সোচ্চার হয়ে আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াই সংগ্রামে এগিয়ে আসতে হবে।”

স্বাগত বক্তব্যে হ্লামিও মারমা বলেন, “আত্মকেন্দ্রীকতা ও জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা মানুষকে অন্ধকারের দিকে ধাবিত করে। তাই ছাত্র ও যুব সমাজকে আত্মকেন্দ্রিকতাকে পরিহার করে জাতির সামগ্রিক স্বার্থে ঐতিহাসিক দায়-দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিতে হবে। জাতির অস্তিত্ব রক্ষার ঐতিহাসিক দায়িত্ব তরুণদের নিতে হবে।”

এরপর হ্লামিও মারমাকে সভাপতি, আদর্শ চাকমাকে সাধারণ সম্পাদক ও আশুতোষ তঞ্চঙ্গ্যা সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত করে ২৫ সদস্য বিশিষ্ট চট্টগ্রাম মহানগর শাখা, অন্বেষ চাকমাকে সভাপতি, সুমন চাকমাকে সাধারণ সম্পাদক ও এনতেস চাকমাকে সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত করে ২৫ সদস্য বিশিষ্ট চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা, অপূর্ব চাকমাকে সভাপতি, প্রিয় জ্যোতি চাকমাকে সাধারণ সম্পাদক ও প্রেঙ নি ম্রোকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে ১৭ সদস্য বিশিষ্ট চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ২নং গেইট শাখা, সুমন চাকমাকে সভাপতি, পূর্ণ জ্যোতি চাকমাকে সাধারণ সম্পাদক ও চ শৈ মারমাকে সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত করে ১৭ সদস্য বিশিষ্ট চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট শাখা, আশুতোষ তঞ্চঙ্গ্যাকে সভাপতি, জ্যোতিময় তঞ্চঙ্গ্যাকে সাধারণ সম্পাদক, আইশু ত্রিপুরা সাংগঠনিক সম্পাদক করে ১৭ সদস্য বিশিষ্ট খুলশী থানা শাখা কমিটি ঘোষণা করা হয়।

পিসিপি, চবি শাখা ও চবি ২নং গেইট শাখার নবনির্বাচিত কমিটিকে শপথবাক্য পাঠ করান পিসিপি’র কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রুমেন চাকমা এবং চট্টগ্রাম মহানগর শাখা ও চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট শাখা ও খুলশী থানা শাখার নবনির্বাচিত কমিটিকে শপথবাক্য পাঠ করান পিসিপি’র কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সুপ্রিয় তঞ্চঙ্গ্যা।

পরিশেষে অন্তর চাকমার সভাপতির বক্তব্যের মধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম মহনগর ও চবি শাখার ৩১তম শাখা সম্মেলন ও কাউন্সিল অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।
https://hillvoice.net/en/bn/2025/02/%e0%a6%9a%e0%a6%9f%e0%a7%8d%e0%a6%9f%e0%a6%97%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%be%e0%a6%ae%e0%a7%87-%e0%a6%aa%e0%a6%bf%e0%a6%b8%e0%a6%bf%e0%a6%aa%e0%a6%bf%e0%a6%b0-%e0%a7%a9%e0%a7%a7%e0%a6%a4%e0%a6%ae/

পাহাড়িদের ওপর হামলায় ড. ইউনূসের পদক্ষেপ দাবিতে ১০৩ আন্তর্জাতিক সংগঠনের চিঠিহিল ভয়েস, ১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, বিশেষ প্রতিবেদ...
02/01/2025

পাহাড়িদের ওপর হামলায় ড. ইউনূসের পদক্ষেপ দাবিতে ১০৩ আন্তর্জাতিক সংগঠনের চিঠি

হিল ভয়েস, ১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, বিশেষ প্রতিবেদন: রাজধানীতে পাহাড়ি শিক্ষার্থীদের ওপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় দ্রুত পদক্ষেপ নিতে এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাজ্য, কানাডা, জাপান, অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন দেশের ১০৩টি সংগঠন ও ২৫৬ ব্যক্তি।

গতকাল শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) এক খোলাচিঠি দিয়ে এ আহ্বান জানানো হয়। থাইল্যান্ডভিত্তিক ইনডিজেনাস পিপলস প্যাক্টের ওয়েবসাইটে এ খোলাচিঠি প্রকাশ করা হয়েছে।

চিঠিতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী ও শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়, ‘জাতীয় পাঠ্যপুস্তক থেকে “আদিবাসী” শব্দসংবলিত চিত্রকর্ম বাতিলের প্রতিবাদে “আদিবাসী শিক্ষার্থীরা” শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ করেছিলেন। এই বিক্ষোভে ভয়াবহ হামলার ঘটনা ঘটে। বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলনে আদিবাসী শিক্ষার্থীরা যে অবদান রেখেছিল, তার নিদর্শন হিসেবে এটি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। অনেকে এর প্রশংসাও করেছিলেন। তবে সেটি ফেলে দেওয়ার পর এর প্রতিবাদ করায় আদিবাসী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনার নিন্দা জানাই আমরা। আমরা আহ্বান জানাচ্ছি, হামলাকারীদের বিচারের আওতায় আনুন ও পাঠ্যবইয়ে সেই চিত্রকর্ম ফিরিয়ে আনুন।’

গত ১৫ জানুয়ারি রাজধানীর মতিঝিলে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্য-পুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) সামনে ‘সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র জনতা’র বিক্ষোভে স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি’ নামক একটি প্ল্যাটফর্মের ব্যানারে আসা লোকজন হামলা চালায়। আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলোর চিঠিতে বলা হয়েছে, স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি একটি সাম্প্রদায়িক সংগঠন। অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গঠনের লক্ষ্যে পাঠ্যবইয়ে যে ‘আদিবাসী’ টার্মটি ব্যবহার করা হয়েছিল, তারা এর বিরোধিতা করে থাকে। এ হামলায় অন্তত ১৯ জন আহত হয়েছেন।

যেসব সংগঠন এ খোলাচিঠি লিখেছে, তার মধ্যে রয়েছে ডেনমার্কের ইন্টারন্যাশনাল ওয়ার্ক গ্রুপ অন ইনডিজেনাস অ্যাফেয়ার্স, সুইজারল্যান্ডের ইন্টারন্যাশনাল মুভমেন্ট অব ক্যাথলিক স্টুডেন্টস প্যাক্স রোমানা, ফ্রান্সের লা ভোইক্স জুম্মাস, যুক্তরাজ্যের মাইনরিটি রাইটস গ্রুপ, জাপানের সিমিন গাইকৌ সেন্টার।

এ চিঠিতে প্রধান উপদেষ্টার কাছে বেশ কিছু দাবি উত্থাপন করা হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে-

১. হামলাকারীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।
২. হামলায় যারা আহত হয়েছেন তাদের বিনামূল্যে চিকিৎসার ব্যাবস্থা করতে হবে।
৩. বিক্ষোভকারীদের পরিবার এবং আন্দোলনে যারা জড়িত তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

এছাড়া বইয়ে আদিবাসী সংবলিত চিত্রকর্ম ফিরিয়ে আনার দাবিও করেছে সংগঠনগুলো।

https://hillvoice.net/en/bn/2025/02/%e0%a6%aa%e0%a6%be%e0%a6%b9%e0%a6%be%e0%a6%a1%e0%a6%bc%e0%a6%bf%e0%a6%a6%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%93%e0%a6%aa%e0%a6%b0-%e0%a6%b9%e0%a6%be%e0%a6%ae%e0%a6%b2%e0%a6%be%e0%a6%af%e0%a6%bc-%e0%a6%a1/

আদিবাসী হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতিসহ আত্মমর্যাদা ও আত্মপরিচয় স্বীকৃতির দাবিতে ঢাকায় গণসমাবেশহিল ভয়েস, ৩১ জানুয়ারি ২০২৫, ...
01/31/2025

আদিবাসী হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতিসহ আত্মমর্যাদা ও আত্মপরিচয় স্বীকৃতির দাবিতে ঢাকায় গণসমাবেশ

হিল ভয়েস, ৩১ জানুয়ারি ২০২৫, ঢাকা: আত্মমর্যাদা ও আত্মপরিচয়ের স্বীকৃতি আদায়ে আদিবাসীদের অস্তিত্ব রক্ষার সংগ্রাম জোরদার করুন”- এ স্লোগানে আজ শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের উদ্যোগে এক গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

অনুষ্ঠানে প্রতিবাদী গান পরিবেশনা করে আদিবাসী গানের দল- দি রাবুগা ও মাদল। বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সহ-সভাপতি অজয় এ মৃ’র সভাপতিত্বে এবং পল্লব চাকমা, উজ্জ্বল আজিম, রিপন চন্দ্র বানাই ও হিরন মিত্র চাকমার যৌথ সঞ্চালনায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জুম সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সংসদের শিল্পীদের মাধ্যমে জাতীয় সংগীত পরিবেশনার মাধ্যমে গণসমাবেশের সূচনা হয়।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, আমরা সাম্প্রতিককালে যে সহিংসতা দেখছি, বৈষম্যকে জিইয়ে রাখতে চাই এরকম সংগঠন তার চরম বৈষম্যমূলক দাবি যার কারনে এনসিটিবি তার বইয়ের প্রচ্ছদ থেকে বাংলাদেশের জনআকাঙ্ক্ষার গ্রাফিতি মুছে দিয়েছে আমি তার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাই। সেই অপশক্তির পেছনে কারা আছে সে প্রশ্নটা আমাদের তুলতে হবে। আমরা বিশ্বাস করতে বাধ্য হচ্ছি যে, এই অপশক্তি কর্তৃত্ববাদী সরকারের একটি অংশ যারা চায় না বাংলাদেশ একটি বৈষম্যমুক্ত দেশ হোক।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলন যুগ্ম সমন্বয়কারী অধ্যাপক ড. খায়রুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, আমাদের বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার কথা ছিল কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি, নানাক্ষেত্রে এখনো পর্যন্ত বিভিন্নভাবে বৈষম্যকে জিইয়ে রাখা হচ্ছে। দেশের সংবিধানে আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদানের দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে তিনি আরো বলেন, আদিবাসী শুধুমাত্র একটি পরিচয় নয়, এর সাথে ভূমির অধিকার জড়িত, ভাষার অধিকার জড়িত, সংস্কৃতির অধিকার জড়িত, অস্তিত্ব রক্ষার অধিকার , ন্যায্যতার অধিকার জড়িত।

গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়কারী আবুল হোসেন রুবেল তার বক্তব্যে বলেন, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বলতে আমাদের এইখানে যেইটা বুঝানো হয় সেটি হচ্ছে সংখ্যাগরিষ্ঠের গণতন্ত্র। কিন্তু গণতন্ত্রের অর্থ মানেই হচ্ছে ক্ষুদ্র অংশকেও আপনাকে রক্ষা করতে হবে, তার কথা শুনতে হবে, তার অধিকার রক্ষা করতে হবে।

বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীষ্টান এসোসিয়েশন এর সংগঠক নির্মল রোজারিও বলেন সরকারকে আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেওয়ার সদিচ্ছা থাকতে হবে।

পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির কেন্দ্রীয় সদস্য ও পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য কে এস মং মারমা বলেন, আজকে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে নানা অশুভ শক্তি দেশের নানা জায়গায় ওৎঁপেতে রয়েছে এই দেশের যা কিছু অর্জন সেসব অর্জনকে ধুলোয় মিশিয়ে দিতে। বাংলাদেশের মানুষ নব্বইয়ের আন্দোলন ভুলে গেছে, ঠিক তেমনি আমি বলতে চাই চব্বিশের চেতনার মশাল যদি প্রজ্জ্বলিত না করতে পারেন, বর্তমান সরকারে যারা দ্বায়িত্বে আছেন তাদের নীতি-আদর্শ যদি ঠিক না থাকে, অন্তর্ভুক্তিমূলক বহুভাষা-বহুধর্ম-বহুজাতির, বহুত্ববাদের দেশ গড়তে যদি সফল না হন তাহলে মানুষ চব্বিশও ভুলে যাবে।

বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)’র সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, আদিবাসী ছাত্র-জনতার উপর ঢাকার রাজপথে হামলার স্বীকার হয়েছে যা খুবই দুঃখজনক। স্বাধীন দেশে সকল মানুষ তাদের অধিকার নিয়ে সসম্মানে মর্যাদার সাথে বসবাস করবে সে আশায় গুড়েবালি দিয়ে বাংলাদেশের প্রথম সংবিধানে বাঙালি ভিন্ন অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীদের স্বীকৃতি দেওয়া হল না। জুলাই অভ্যূত্থানের পরে আমরা দেশবাসীও নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিলাম একটি অন্তর্ভূক্তিমূলক সমাজ বিনির্মানে যেখানে কোন ধরনের বৈষম্য থাকবে না। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি, বৈষম্য নিরসনে বর্তমান দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত সরকার এখনো পর্যন্ত তেমন কোন পদক্ষেপ দেখাতে পারে নি যা আমাদের হতাশ করেছে বলে বক্তব্যে বলেন তিনি।

দৈনিক সমকালের উপদেষ্টা সম্পাদক আবু সাঈদ খান বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানে সবাই অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গঠনের স্বপ্ন দেখেছিল। কিন্তু নতুন বাংলাদেশ গঠনের কয়েক মাস পার হতেই, দূভার্গ্যজনকভাবে আদিবাসীদের উপর তাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে হামলা করা হয়। অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজে সবাই থাকবে, কাউকেই যেন বাদ দেয়া না হয়। আজকে বাংলাদেশে আমরা দেখতে পাচ্ছি মবতন্ত্রের উচ্ছ্বাস। মবতন্ত্রকে নিয়ন্ত্রণ করে সবার নিরাপদ বাংলাদেশ ও সবার অধিকার সুপ্রতিষ্ঠিত করার আহ্বান জানিয়ে গণসমাবেশে সংহতি প্রকাশ করেন।

সিপিবি’র সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স তার বক্তব্যে বলেন, এই দেশ শুধুমাত্র এক ধর্মের না, শুধুমাত্র এক জাতির না। বাংলাদেশে বহুধর্ম বহুজাতির মানুষ সুদীর্ঘকাল থেকে আছে, রয়েছে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সকল জাতির সকল ধর্মের মানুষ কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করেছে। মুক্তিযুদ্ধের যেমন অর্জন রয়েছে তার অনেকগুলো খারাপ দিকও রয়েছে। এর মধ্যে একটি হল সংবিধানে সবার অস্তিত্বকে অস্বীকার করে বাংলাদেশের সকল জনগণ বাঙালি বলিয়া পরিচিত হইবে এই অংশ। জুলাই অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে নতুন বাংলাদেশে আমরাও তো চেয়েছিলাম সকলে সকলের অধিকার নিয়ে মর্যাদার সহিত বসবাস করবে কিন্তু দেশে যে মব সংস্কৃতি চলছে আমি এই সরকারকে প্রশ্ন করতে চাই আপনারা করছেনটা কি?

মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম তার বক্তব্যে বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে একটি সরকার গঠন করা হয়েছে কিন্তু এই সরকারের আমলেই আদিবাসী মানুষের উপর ন্যাক্কারজনকভাবে হামলা করা হয়। আদিবাসীরা বেশি কিছু চাচ্ছে না, তারা তাদের অস্তিত্ব রক্ষা করতে চাচ্ছে। আগের স্বৈরাচার সরকার আদিবাসী উচ্চারন করতে বাধা দিয়েছিল বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছিল। কিন্তু আমরা এখনো এই সরকারের প্রতি আস্থা রাখে আহ্বান জানাতে চাচ্ছি, আদিবাসীদের ন্যায্য দাবির কথা শুনুন, কেন আদিবাসীরা তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে!

শুভেচ্ছা বক্তব্যে বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সহ-সাধারণ সম্পাদক ডা. গজেন্দ্রনাথ মাহাতো বলেন, একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধানে যেমন বাঙালি ভিন্ন অপরাপর আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীদের স্বীকার করা হয়নি। স্বাধীনতার পর থেকেই আমরা আমাদের সাংবিধানিক স্বীকৃতির জন্য আন্দোলন, লড়াই সংগ্রাম করেছি, চব্বিশের গণঅভ্যূত্থানের পরে আমরা আরো নতুন করে স্বপ্ন দেখেছিলাম এই দেশ একটি বহুত্ববাদী ও বহুজাতিক দেশ হিসেবে নিজেকে প্রকাশ করবে, কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি ঢাকার রাজপথে আদিবাসী ছাত্র-জনতার ন্যায্য দাবি জানানোর গণতান্ত্রিক অধিকারকে হরণ করে উগ্রবাদীরা ন্যাক্কারজনক হামলা করে। তিনি তাঁর বক্তব্যে অধিকার আদায়ে পাহাড় থেকে সমতলে সবখানেই লড়াইয়ের ঘোষণা দিয়ে সরকারের প্রতি হামলাকারীদের দ্রুত বিচারের আহ্বান জানান।

পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের সহ-সাধারণ সম্পাদক জগদীশ চাকমা তার বক্তব্যে বলেন, এই রাষ্ট্র আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীকে স্বীকার করতে চায় না। আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের লড়াই সংগ্রাম করতে হবে। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন এই চুক্তি স্বাক্ষর হওয়ার দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হওয়ার পরেও কোন সরকারই চুক্তির পূর্ণঙ্গ বাস্তবায়নে ইচ্ছা পোষন করেনি। তিনি তার বক্তব্যে সমতলের আদিবাসীদের জন্য পৃথক মন্ত্রনালয়সহ পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নসহ এনসিটিবির সম্মুখে সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতার উপর হামলাকারীদের অতি দ্রুত গ্রেপ্তার করে বিচারের আহ্বান জানান।

বাংলাদেশ আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অলিক মৃ তার বক্তব্যে বলেন, গণতন্ত্রের সৌন্দর্যই হচ্ছে সবাই সবার মতামত প্রকাশ করতে পারবে, কিন্তু আমরা যখনই শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের দাবি আদায়ে অগ্রসর হচ্ছিলাম তখনই স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি নামক সন্ত্রাসী সংগঠন আমাদের উপর হামলা করে। তিনি সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্তদের দ্রুত আইওয়াশ বন্ধ করে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানান ও আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন, সমতলে পৃথক ভূমি কমিশন ও হামলাকারীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনান আহ্বান জানান অন্যথায় তিনি দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলার ঘোষণা প্রদান করেন।

বাংলাদেশ আদিবাসী যুব ফোরামের সহ সভাপতি টনি চিরান তার বক্তব্যে বলেন, স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরেও বাংলাদেশের আদিবাসীরা বিভিন্নভাবে নিপীড়িত-নির্যাতিত। বাঙালির মতো আদিবাসীরাও কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সাম্য-মানবিক মর্যাদার জন্য স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নিয়েছিল। কিন্তু আজ অবধি আমার-আমাদের আত্মপরিচয়ের স্বীকৃতির জন্য গণসমাবেশ করতে হচ্ছে, রাজপথে রক্ত দিতে হচ্ছে। তিনি তার বক্তব্যে আদিবাসীদের আত্মপরিচয়ের স্বীকৃতির দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে লড়াই করার আহ্বান জানান।

সাহেবগঞ্জ বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটি, গাইবান্ধা’র সভাপতি ফিলিমন বাস্কে: আদিবাসীদের উপর হামলা আমরা কখনোই মেনে নিতে পারছি না। স্বাধীনতা পরবর্তী সময় থেকে কোন সরকার আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতির দেওয়া তো দূরের কথা, এই বিষয়ে চিন্তা করেছে কিনা আমি সে বিষয়ে সন্দিহান।

জাতীয় আদিবাসী পরিষদের সভাপতি বিচিত্রা তির্কী বলেন, বাংলাদেশ রাষ্ট্র আমাদের আদিবাসীদের একটার পর একটা পরিচয় চাপিয়ে দিচ্ছে, কিন্তু কেউই কোনদিন জিজ্ঞাসা করলো না আমরা কি হিসেবে পরিচিত হতে চাই?

বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী নিকোলাস চাকমা তার বক্তব্যে বলেন, আজ আমরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের বেদিতে উপস্থিত হয়েছি আমাদের মনের কথা দেশবাসী ও রাষ্ট্রের কাছে শোনানোর জন্য। আদিবাসীদের ব্যাপারে বর্তমান ইন্টেরিম গর্ভমেন্টের চিন্তা কি? এই প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, যে যায় লঙ্কায় সে হয় রাবণ, ক্ষমতায় না থাকলে সব দল ও ব্যক্তিই আদিবাসী বলে কিন্তু ক্ষমতায় যাওয়ার পরে কেন আমাদের পরিচয় চাপিয়ে দেওয়া হয় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী। তিনি আদিবাসী প্রসঙ্গে বর্তমান সরকারের অবস্থান পরিষ্কার করার ও একই সাথে সংবিধান সংস্কার করে আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদানের আহ্বান জানান।

লেখক ও গবেষক পাভেল পার্থ তার বক্তব্যে বলেন, এনসিটিবি যে গ্রাফিটি ব্যবহার করেছে সেটি হচ্ছে বাংলাদেশের জনআকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ও প্রতীক। জুলাই অভ্যূত্থান একই সাথে অন্তর্ভূক্তিমূলক ও বহুত্ববাদী রাষ্ট্র গঠনেরও বার্তা দেয় যেটি প্রকাশ পেয়েছিল সেই গ্রাফিটিতে। যেই গ্রাফিতি এনসিটিবি সরিয়েছে সেটি একইসাথে অভ্যূত্থানের জনআকাঙ্ক্ষার সাথে প্রতারণা। আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিলে বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে এই ধরনের বাইনারি বিভাজন করা হয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

১৫ জানুয়ারির হামলায় আহত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রুপাইয়া শ্রেষ্ঠা তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, আপনারা কখনো জানতে চেয়েছেন তারা কেন আমাদের মারতে চায়? কেন তারা আমাদের নিঃশেষ করতে চায়? আদিবাসী কোন শব্দ নয়, এটি একটি অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই। এটি আমাদের সবারই নৈতিক দায়িত্ব আমাদের অস্তিত্ব রক্ষা করা।

হামলায় আহত ডন জেত্রা বলেন, শরীরের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে হলেও আমাদের অস্তিত্ব রক্ষা করার জন্য লড়াই করে যেতে হবে। আদিবাসীরা কোনদিন অন্যায়ের সাথে আপোষ করেনি এবং ভবিষ্যতেও করবে না। তারা কারা? যে আমার পরিচয় নির্ধারণ করে দিতে চায়? আমার পরিচয় নির্ধারণ করবো আমি। বাংলাদেশে আদিবাসী আছে, ছিল থাকবে। অধিকার আদায়ে সিধু-কানু, এমএন লারমারা প্রান দিয়েছেন আমরাও আমাদের সাংবিধানিক স্বীকৃতির জন্য প্রয়োজনে প্রান উৎসর্গ করবো।

এছাড়া বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অসিত কুমার বাগদি, ফ্লোরা বাবলি তালাংসহ অন্যান্যরা।

গণসমাবেশে সংহতি প্রকাশ করে বাংলাদেশ খ্রীষ্টান এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ মারমা স্টুডেন্টস কাউন্সিল, ত্রিপুরা স্টুডেন্টস ফোরাম, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি, গানের দল সমগীত, বাংলাদেশ গারো ছাত্র সংগঠন, জাতীয় আদিবাসী পরিষদ, গারো স্টুডেন্টস ফেডারেশন, এএলআরডি, বাংলাদেশ তঞ্চঙ্গ্যা স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন সহ বিভিন্ন আদিবাসী ও প্রগতিশীল ছাত্র, নাগরিক ও সামাজিক সংগঠন।
https://hillvoice.net/en/bn/2025/01/%e0%a6%86%e0%a6%a6%e0%a6%bf%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%b8%e0%a7%80-%e0%a6%b9%e0%a6%bf%e0%a6%b8%e0%a7%87%e0%a6%ac%e0%a7%87-%e0%a6%b8%e0%a6%be%e0%a6%82%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%a7%e0%a6%be%e0%a6%a8-2/

AIPP and IWGIA sends a letter to Interim Govt to take urgent action on violent attacks on Indigenous studentsHill Voice,...
01/31/2025

AIPP and IWGIA sends a letter to Interim Govt to take urgent action on violent attacks on Indigenous students

Hill Voice, 31 January 2025, International Desk: Asia Indigenous Peoples Pact (AIPP), Thailand and the International Work Group on Indigenous Affairs (IWGIA), Denmark with the endorsement of 103 organizations and 256 individuals from 34 countries of the world have sent a letter expressing the concern about the human rights situation in Bangladesh and urgent appeal to the Honourable Chief Adviser Dr. Muhammad Yunus, Interim Government of Bangladesh on Friday (31 January), to take urgent action on the recent violent attacks on Indigenous students and bring all perpetrators to justice.

It is notable that the violent attack was carried out against Indigenous students and rights activists during their peaceful protest in front of the National Curriculum and Textbook Board (NCTB) office in Dhaka, Bangladesh, on 15 January 2025. At least 19 persons were severely injured in this attack allegedly carried out by the members of “Students for Sovereignty”, a communal organization that opposed the inclusion of the term “Adivasi” in a school textbook.

The letter was sent through email on Friday (31 January) morning to the Chief Adviser of Bangladesh Interim Government and copied on it by his secretary, press secretary, Honourable Adviser on Home Affairs, Adviser on Education, etc.

The letter stated, “We, the undersigned organisations and individuals, would like to bring to your attention, our concern on the recent violent attacks on the Indigenous student protestors during a peaceful protest in relation to the removal of an artwork from the back of a school textbook with the word “Adivasi” (Indigenous). The inclusion and recognition of Indigenous Peoples in the school textbook was an outcome of the movement led by Indigenous Peoples of Bangladesh and a step applauded by many. We condemn the violent attacks on Indigenous protestors and urge for prompt justice for the victims and the restoration of the artwork in the textbook.”

The letter further added, “Bangladesh is a signatory to and has ratified several international human rights instruments. The country has yet to ratify the ILO Indigenous and Tribal Peoples Convention, 1989 (No. 169), but it ratified the Indigenous and Tribal Populations Convention, 1957 of the ILO (C- 107) in 1972. Bangladesh has an obligation to respect the United Nations Declaration on the Rights of Indigenous Peoples (UNDRIP) 2007 as a Member State of the United Nations. Similarly, Bangladesh is a party to various UN and other multilateral institutions, whereby the policies on Indigenous Peoples of these institutions apply to the country.”

The letter therefore urges interim government to:

• Take prompt action to arrest all perpetrators involved in the attacks on Indigenous students and activists following and initiate impartial investigation to bring all perpetrators to justice.
• Arrange for free medical treatment and compensation to those injured in the attacks on the incidents that happened on 15th and 16th January and ensure the security of all indigenous protesters and their families and supporters.
• Reinstate the artwork with the word “Adivasi” in the textbook and take appropriate steps to properly represent indigenous communities’ cultures, traditional values and history to the new generation with respect.
• Recognize Indigenous Peoples in the constitution and recognize their individual and collective rights, including their right to self-determination and Free Prior and Informed Consent (FPIC). Formulate an Indigenous Peoples Rights Act in light of international human rights standards.
• Declare a road map with a clear timeframe for speedy, proper and full implementation of the Chittagong Hill Tracts Accord of 1997.
• Ratify ILO Convention No. 169 on Indigenous and Tribal Peoples of 1989 and endorse the United Nations Declarations on the Rights of Indigenous Peoples (UNDRIP).
• Ensure meaningful and effective engagement of Indigenous Peoples before formulating, reforming, or repealing of any laws and policies concerning their rights and wellbeing.

Hill Voice, 31 January 2025, International Desk: Asia Indigenous Peoples Pact (AIPP), Thailand and the International Work Group on Indigenous Affairs (IWGIA), Denmark with the endorsement of 103 organizations and 256 individuals from 34 countries of the world have sent a letter expressing the concer...

01/31/2025

"আত্নমর্যাদা ও আত্মপরিচয়ের স্বীকৃতি আদায়ে আদিবাসীদের অস্তিত্ব রক্ষার সংগ্রাম জোরদার করুন"

আদিবাসী হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি, এনসিটিবি সম্মুখে আদিবাসী শিক্ষার্থী ও অধিকার কর্মীদের উপর হামলায় জড়িতদের গ্রেফতার ও বিচার এবং পাঠ্যপুস্তকে আদিবাসী সংবলিত গ্রাফিতি পুনর্বহালের দাবিতে –

গণসমাবেশ

স্থান: কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, ঢাকা।
৩১ জানুয়ারি ২০২৫

আয়োজনে: বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম।

সংবিধান সংস্কার কমিশনের ’ধর্মনিরপেক্ষতা’ শব্দকে বিলোপ প্রস্তাবনা আত্মঘাতী: ঐক্য পরিষদহিল ভয়েস, ৩০ জানুয়ারি ২০২৫, ঢাকা: ৭...
01/30/2025

সংবিধান সংস্কার কমিশনের ’ধর্মনিরপেক্ষতা’ শব্দকে বিলোপ প্রস্তাবনা আত্মঘাতী: ঐক্য পরিষদ

হিল ভয়েস, ৩০ জানুয়ারি ২০২৫, ঢাকা: ৭২’র সংবিধানের প্রস্তাবনা ও ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ বিলোপ সংক্রান্ত সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব আত্মঘাতীর সামিল বলে অভিহিত করেছেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মনীন্দ্র কমুার নাথ। এছাড়ও তিনি সাম্প্রদায়িক সহিংসতাকে রাজনৈতিক ট্যাগ দিয়ে অস্বীকারের প্রবণতা দুঃখ ও দুর্ভাগ্যজনক বলেন দুঃখ প্রকার করেন।

আজ বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের আব্দুস সালাম হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিরাজমান সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ও বৈষম্যের চালচিত্র উপস্থাপন করতে গিয়ে এক লিখিত বিবৃতিতে এসব কথা বলেন।

তিনি আরো বলেন, ২০ আগস্ট, ২০২৪ পরবর্তীতে বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকার মাধ্যমে পাওয়া তথ্যের উপর ভিত্তি করে চলমান সাম্প্রদায়িক সহিংসতা বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, গত ২১ আগস্ট, ২০২৪ থেকে ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪ পর্যন্ত বিভিন্ন অঞ্চলে বিশেষ করে গ্রামীণ পর্যায়ে মোট ১৭৪টি সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। যার মধ্যে এমনও সহিংসতার ঘটনা রয়েছে যেখানে একই ঘটনায় একাধিক পরিবার আক্রান্ত ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে হত্যা- ২৩টি, নারী নির্যাতন/ধর্ষণ/গণধর্ষণ- ০৯টি, উপাসনালয়ে হামলা, ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ- ৬৪টি, কথিত ধর্মঅবমাননার অভিযোগে গ্রেফতার ও নির্যাতন- ১৫টি, বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ-৩৮টি এবং জোরপূর্বক বাড়িঘর, জমি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখল- ২৫টি।

সংবাদ সম্মেলনে দুঃখের সাথে বলা হয়, সরকারের পক্ষ থেকে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা সম্পর্কিত পূর্বেকার ঘটনাবলীকে গুরুত্ব না দিয়ে তা মিথ্যা, অতিরঞ্জিত ও বানোয়াট বলে অস্বীকারের কৌশল নেয়া হয়। কিন্তু

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম উক্ত রিপোর্টে উল্লেখিত সহিংসতার ঘটনার উপর বিভিন্ন প্রতিবেদন প্রকাশ করায় এবং দেশী-বিদেশী মানবাধিকার সংস্থা প্রতিবাদ করায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গত ১০ ডিসেম্বর, ২০২৪ তারিখে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে স্বীকার করে যে, বেশ কিছু সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে এবং তা বন্ধে সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।

কিন্তু ইতোমধ্যে ৮৮টি মামলায় ৭০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পরবর্তীতে গত ১১ জানুয়ারি, ২০২৫ প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং পুলিশের অনুসন্ধানের বরাত দিয়ে গণমাধ্যমে ঐক্য পরিষদ কর্তৃক উত্থাপিত অভিযোগের ২০১০টি ঘটনার মধ্যে ১৭৬৯টি ঘটনার কথা স্বীকার করে। এর মধ্যে ১৪১৫টি অনুসন্ধান করেছে ও বাকি ৩৫৪টির অনুসন্ধান চলছে। অনুসন্ধানের ভিত্তিতে ৬২টি মামলা দায়ের ও ৯৫১টি সাধারণ ডায়েরী করা হয়েছে এবং ৩৫ জন অপরাধীকে ইতোমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রেস উইং আরো বলে, পুলিশী তদন্তমতে ১৭৬৯টি ঘটনার মধ্যে ১২৩৪টি ঘটনা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, ২০টি ঘটনা সাম্প্রদায়িক।

সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাড. দিপংকর ঘোষের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সভাপতিত্রয় অধ্যাপক ড. নিমচন্দ্র ভৌমিক, ঊষাতন তালুকদার, নির্মল রোজারিও এবং প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনন্দপ্রিয় ভিক্ষু। এ সময় অন্যানের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজল দেবনাথ, রঞ্জন কর্মকার, সাংগঠনিক সম্পাদক পদ্মাবতী দেবী, যুব বিষয়ক সম্পাদক বলরাম বাহাদুর, সহ-সম্পাদক শান্তি রঞ্জন দাস, যুব ঐক্য পরিষদের সভাপতি শিমুল সাহা, সহ-সভাপতি সুবল ঘোষ, ছাত্র ঐক্য পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সজীব সরকার প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনে সংবিধান সংস্কার কমিশন কর্তৃক প্রধান উপদেষ্টার বরাবরে প্রদত্ত রিপোর্টে ৭২’র সংবিধানের ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’সহ রাষ্ট্রীয় মূলনীতিসমূহ বিলোপ এবং ‘গণপ্রজাতন্ত্রী’ শব্দটি পরিবর্তনের প্রস্তাবের তীব্র বিরোধীতা করে সংবিধানের বিদ্যমান প্রস্তাবনা ১২ ও ২৮ অনুচ্ছেদ বহাল এবং রাষ্ট্রধর্ম সম্বলিত ২ক অনুচ্ছেদ বিলোপের পক্ষে অভিমত ব্যক্ত করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে সংবিধান সংস্কার কমিশনসহ কোন সংস্কার কমিশনে সংখ্যালঘু প্রতিনিধি না রাখায় এবং সংবিধান সংস্কার কমিশনে অংশীজন হিসেবে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সাথে আলোচনার কোনরূপ উদ্যোগ না নেয়ায় গভীর ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।

সংবিধানের ‘রাষ্ট্রধর্ম’ সম্বলিত ২ক অনুচ্ছেদ বিলোপের প্রস্তাব করে বলা হয়, এই অনুচ্ছেদটি সংবিধানের মূল প্রস্তাবনার ‘সকল নাগরিকের জন্য আইনের শাসন, মৌলিক মানবাধিকার এবং রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সাম্য, স্বাধীনতা ও সুবিচার নিশ্চিত’ করার পরিপন্থী ও সাংঘর্ষিক এবং তা বাংলাদেশের ঐক্যবদ্ধ জাতিসত্বাকে ধর্মের ভিত্তিতে বিভাজিত করে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিকে পরিণত করেছে। রাষ্ট্রীয় মূলনীতি হিসেবে ‘ধর্মনিরপেক্ষতা এবং ধর্মীয় স্বাধীনতা’ সম্পর্কিত অনুচ্ছেদ বহাল রাখার উপর জোর গুরুত্বারোপ করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের ক্ষেত্রে বিরাজমান বৈষম্য দূর করার জন্যে- ১) সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, ২) জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠন ও ৩) সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে রাষ্ট্রের বিভিন্ন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান যেমন- বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ, জাতীয় নির্বাচন কমিশন, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, সরকারি কর্ম কমিশন, জাতীয় তথ্য কমিশনসহ সকল ক্ষেত্রে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের ২০% প্রতিনিধিত্ব ও অংশীদারিত্ব সাংবিধানিকভাবে নিশ্চিতের দাবি উত্থাপনের পাশাপাশি বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর যথাযথ প্রতিনিধিত্ব সাংবিধানিকভাবে নিশ্চিত করার লক্ষে বাংলাদেশে ৬০টি সংসদীয় আসন নির্ধারণ করে সংখ্যালঘুদের সরাসরি ভোটে তাদের জন্যে ৬০টি আসন সংরক্ষণের প্রস্তাবনা সরকার, রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজের বিবেচনার নিমিত্তে উত্থাপন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানসমূহের বৈষম্যমূলক আচরণ প্রসঙ্গে মব জাস্টিসের নামে সংখ্যালঘু শিক্ষকদের জোরপূর্বক বিতাড়ন ছাড়াও ৪০তম ক্যাডেট সাব ইন্সপেক্টর (এসআই) পদে চাকুরীতে নিয়োগপ্রাপ্ত ৮০৪ জন সাব ইন্সপেক্টর সারদা পুলিশ একাডেমীতে প্রশিক্ষণকালে কথিত শৃংখলাভঙ্গের ঠুনকো অভিযোগ এনে গত ২১ অক্টোবর ২০২৪ থেকে ৪ ধাপে ৩২১ জনকে চাকুরী থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে। প্রশিক্ষণরত ৮০৪ জনের মধ্যে ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সংখ্যা ছিল ১৭৫ জন যা মোট প্রশিক্ষণার্থীর ২১.৭৭%। অব্যাহতি পাওয়া ৩২১ জন প্রশিক্ষণার্থীদের মধ্যে ১০৩ জন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের। যা মোট অব্যাহতিপ্রাপ্তদের মধ্যে ৩২.০৯% এবং মোট প্রশিক্ষণার্থীদের মধ্যে ১২.৮১%। অর্থাৎ মোট প্রশিক্ষণার্থী মধ্যে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ২১.৭৭% থেকে (১৭৫-১০৩ = ৭২ নিয়োগপ্রাপ্ত) ৮.৯৬% নামিয়ে নেয়া হয়েছে। ৫৫ জন নারী কর্মকর্তার মধ্যে ৩৩ জনকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। অব্যাহতিপ্রাপ্ত নারী কর্মকর্তাদের মধ্যে ১৬ জনই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের, যা মোট অব্যাহতির ৪৮.৪৮%। যাদেরকে অব্যাহিত দেয়া হয়েছে তাদেরকে যথাযথ বিধি অনুসরণ করে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেয়া হয়নি বলে জানা যায়।

সবংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয়, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ তারিখে ৪০তম বিসিএস পুলিশ ক্যাডারে শিক্ষানবিশ সহকারি পুলিশ সুপারদের প্রশিক্ষণকালীন সময়ে ৬৬ জনের মধ্য থেকে ২৫ জনকে অজানা কারণে কারণদর্শানোর নোটিশ জারি করা হয়েছে। পরবর্তীতে এর মধ্য থেকে ২১ জনকে বাদ দেয়া হয়। যার মধ্যে সংখ্যালঘু সম্পদ্রায়ের ৯জন। পুলিশ ক্যাডারে ১৫ অক্টোবর, ২০২৪ তারিখে ৪৩ তম বিসিএস উত্তীর্ণ প্রার্থীদের ২০৬৪ জনের তালিকা প্রকাশ করা হয়। পরবর্তীতে সরকারি কর্মকমিশন কর্তৃক উত্তীর্ণ ঘোষিত ২১৬৩ প্রার্থীর মধ্যে মোট ২৬৭ (সাময়িক অনুপযুক্ত ২২৭ জন + স্বাস্থ্য পরীক্ষায় অনুপস্থিত ৪০ জন) জনকে বাদ দিয়ে ৩০ ডিসেম্বর, ২০২৪ তারিখে ১৮৯৬ জনকে উপযুক্ত ঘোষণা করা হয়। অর্থাৎ ৪৩তম বিসিএস উত্তীর্ণ প্রার্থীদের গোয়েন্দা বিভাগ কর্তৃক যাচাই-র নামে ২২৭ জনকে বাদ দেয়া হয়। বাদ পড়াদের মধ্যে ৮২ জনই ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের, যা মোট বাদ পড়া ৩৬.১২%। সহকারী কমিশনার (প্রশাসন) পদে বাদপড়া ২৬ জনের মধ্যে ১৪ জনই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের, যা মোট বাদপড়া ৫৩.৮৪%। সহকারী সচিব (পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়) পদে বাদপড়া ৩ জনে মধ্যে ৩ জনই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের যা ১০০%। সহকারী কর কমিশনারের ক্ষেত্রে বাদপড়া ৭ জনের মধ্যে ৫ জনই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের। অর্থাৎ এ ক্ষেত্রে বাদপড়ার হার ৭১.৪২%। সহকারী কমিশনার (শুল্ক ও আবগারি) যে ১ জন যোগ্য বিবেচিত হয়েছিল তাকে বাদ দেয়া হয়েছে। একইভাবে সহকারী খাদ্য নিয়ন্ত্রক পদে ১৫ অক্টোবরের সার্কুলারে উল্লেখিত ২জন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রার্থীর নাম ৩০ ডিসেম্বরের সার্কুলারে হারিয়ে গেছে। অনুরূপভাবে প্রভাষক (সমাজবিজ্ঞান) পদে বাদ দেয়া ৫ জনের ৫ জন, প্রভাষক ইংরেজী পদে বাদ পড়া ৮ জনের ৬ জনই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের। অন্যান্য পদসমূহে বৈষম্যমূলক আচরণের প্রবণতা পরিলক্ষিত হচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয়, হাইকোর্টে ২৩ জন বিচারপতি নিয়োগ দিয়েছে। এর মধ্যে ১ জন মাত্র সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের। যতটুকু জানা গেছে, উচ্চতর আদালতে এ্যাটর্নী জেনারেল থেকে সহকারী এ্যাটর্নী জেনারেল পদে নিয়োগকৃত ২২৮ জনের মধ্যে ১ জন মাত্র ডেপুটি এ্যাটর্নী জেনারেল ও ১ জন সহকারী এ্যাটর্নী জেনারেল সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের। সরকারি কর্ম কমিশনে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কোন প্রতিনিধিত্ব রাখা হয়নি।

সংবাদ সম্মেলনে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের স্বার্থ ও অস্তিত্ব রক্ষায় অনতিবিলম্বে সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন ও সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় গঠন, অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইনের যথাযথ প্রয়োগে যাবতীয় আমলাতান্ত্রিক বাধা অপসারণ করে ট্রাইব্যুনালের রায়ের আলোকে জমির মালিকানা ও দখল ভুক্তভোগীদের বরাবরে অনতিবিলম্বে প্রত্যর্পণ, দেবোত্তর সম্পত্তি সংরক্ষণে আইন প্রণয়ন, বৈষম্য বিলোপ আইন প্রণয়ন, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির যথাযথ বাস্তবায়ন এবং তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ আইন ও পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ আইনের যথাযথভাবে কার্যকরীকরণ, সকল সংখ্যালঘু ধর্মসম্প্রদায়ের ধর্ম পালনে অধিকতর উৎসাহিত করার লক্ষ্যে বিদ্যমান সরকারি ছুটিসমূহের অতিরিক্ত হিন্দু সম্প্রদায়ের শারদীয় দূর্গাপূজায় অষ্টমী থেকে দশমী-এ ৩ দিন, বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের প্রবারণা পূর্ণিমায় ১ দিন ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের ইস্টার সানডে’তে ১ দিন সরকারী ছুটি ঘোষণা করার জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র প্রভু চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীসহ দেশব্যাপী আটককৃত সংখ্যালঘু নেতৃবৃন্দের অনতিবিলম্বে মুক্তির দাবির পাশাপাশি বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. রাণা দাশগুপ্তসহ সারা দেশের বিভিন্ন পর্যায়ে সংখ্যালঘু নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত হয়রানীমূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারে পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানানো হয়।
https://hillvoice.net/en/bn/2025/01/%e0%a6%b8%e0%a6%82%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%a7%e0%a6%be%e0%a6%a8-%e0%a6%b8%e0%a6%82%e0%a6%b8%e0%a7%8d%e0%a6%95%e0%a6%be%e0%a6%b0-%e0%a6%95%e0%a6%ae%e0%a6%bf%e0%a6%b6%e0%a6%a8%e0%a7%87%e0%a6%b0/

Address

Waterloo
Waterloo, ON

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Hill Voice posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Videos

Share