17/05/2023
IELTS
বিদেশে যারা পাড়ি জমাতে চাচ্ছেন তা সে পড়াশোনা বা কর্মক্ষেত্র যাই হোক না কেন, আপনার এই প্রক্রিয়ার অন্যতম প্রধান একটি ধাপ হচ্ছে IELTS. সবারই এ বিষয়টি জানা থাকলেও অনেকের মনে প্রশ্ন থাকে যে, IELTS কিভাবে শুরু করবে, কিভাবে স্কোর বাড়াবে, কোচিং করবে কিনা? যারা এই ধরণের কনফিউশনে আছেন তাদের জন্য আজকের এই পোস্ট।
প্রথমেই বলে নেই IELTS টা কি? IELTS হচ্ছে, International English Language Testing System বা সংক্ষেপে IELTS. নামটা থেকে আমরা বুঝতে পারছি যে, এটা হল এমন এক পরীক্ষা পদ্ধতি যার মাধ্যমে কারো ইংরেজি ভাষাতে কি পরিমাণ দক্ষতা আছে তা যাচাই করা হয়।
IELTS exam দুভাগে বিভক্ত। ০১. Academic ও ০২. General Training (GT). যারা মূলত পড়াশোনার উদ্দেশ্যে বিদেশে আসতে চাচ্ছেন তাদের জন্য Academic এবং যারা অভিবাসনের উদ্দেশ্যে আসবেন তাদের ক্ষেত্রে General Training.
Academic আর General Training এ বিস্তর পার্থক্য রয়েছে এবং একটা দিয়ে আরেকটার কাজ হবেনা। প্রশ্নের ধরণ প্রায় একই হলেও Difficulty level ভিন্ন। Academic এর জন্য প্রস্তুতি নিলে কারো GT এর জন্য আলাদা করে প্রস্তুতি নিতে হবেনা। কিন্তু GT এর জন্য প্রস্তুতি নিলেও Academic পারা যাবেনা। এর মূল কারনটা হচ্ছে, Academic এর difficulty level টা একটু বেশি। Difficulty level ভিন্ন হলেও দুটো exam এর pattern একই। মূল পরীক্ষা ৪টা মডিউলে বিভক্তঃ ০১. Listening, ০২. Reading, ০৩. Writing ও ০৪. Speaking.
অনেকের কাছেই স্পিকিং এবং লিসেনিং সেকশন তুলনামূলক সহজ মনে হয়, তবে আমার কাছে সবগুলো মডিউল সমান কঠিন মনে হয়েছে। তাই, সবগুলো মডিউলে আলাদা আলাদা প্রস্তুতি দরকার। সবগুলো মডিউলে যখন আলাদাভাবে ভাল স্কোর আসবে তখনই টোটাল ব্যান্ড স্কোর ভাল আসবে। সুতরাং কোন মডিউলেই আসলে কম গুরুত্ব দিলে চলবে না।
এবার আসি প্রস্তুতি শুরুর বিষয়ে। প্রথমে সবাই কনফিউশনে পড়ে যায়, কোচিং করবে কি করবে না, আদৌ কোচিং এর দরকার আছে কিনা। এটা সম্পূর্ণ নির্ভর করবে আপনার নিজের এবিলিটির উপর। যদি মনে করেন, ইংরেজিতে ভাল দক্ষতা আছে, নিজে নিজে প্রস্তুতি নিতে পারবেন, তাহলে কোচিং এর দরকার নেই। আর যদি মনে করেন ইংরেজিতে টুকটাক দুর্বলতা আছে, গ্রামারে দুর্বলতা আছে, স্পিকিংএ জড়তা আছে, তাহলে কোচিংএ ভর্তি হতে পারেন। তারা আপনাকে গ্রামার শেখাবেনা, কথা বলতে শেখাবেনা, তারা শুধু কিছু টেকনিক বলে দিবে যা দিয়ে আপনি কোনরকম পার পেয়ে যেতে পারবেন। তবে ওভারল ভাল স্কোর করতে হলে নিজের দক্ষতা বৃদ্ধির বিকল্প নেই এবং সেটা নিজের চেষ্টায়ই করতে হবে। কোচিং এর দরকার আছে কিনা তা বোঝার জন্য একটা টেকনিক আপনারা ট্রাই করতে পারেন, আমি নিজেই এটা ট্রাই করেছিলাম। অনলাইনে, ইতো মধ্যে হয়ে যাওয়া IELTS এর প্রশ্নপত্র পাবেন। একসেট প্রশ্ন ডাউনলোড করে নিজে নিজে একবার পরীক্ষাটা দিয়ে দেখুন। যদি দেখেন যে, আপনি প্রশ্ন বুঝতে পারছেন এবং উত্তর করতে পারছেন হয়ত আপনার সময় বেশি লাগছে তবে সে ক্ষেত্রে আপনার শুধুমাত্র practice করলেই হয়ে যাবে। তবে বিষয়টা যদি এমন হয় যে, আপনি প্রশ্নের ধরণ বুঝতে পারছেন না, উত্তর খুঁজে পাচ্ছেন না, বারবার পড়ার পরও pattern ধরতে পারছেন না কিন্তু কিছুটা guidance পেলে আপনি track টা ধরতে পারবেন, সে ক্ষেত্রে আপনি কোন প্রতিষ্ঠান বা ব্যাক্তির সাহায্য অবশ্যই নিতে পারেন। মনে রাখবেন, নিজের টার্গেট পূরণ করার জন্য যে পদক্ষেপ নেয়া দরকার, প্রয়োজন অনুযায়ী সে পদক্ষেপ নেয়াটা আপনাকে আপনার লক্ষ্যে পৌঁছতে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করবে।
যারা নিজে নিজে শুরু করতে চান, তাদের জন্য কিছু রিসোর্স দিয়ে দিচ্ছি যেগুলো খুবই হেল্পফুল।
০১. Edx - IELTS এটি ফুল ফ্রি একটি কোর্স যাতে IELTS এর A to Z আলোচনা করা হয়েছে এবং ভাল করার উপায় বলে দেওয়া হয়েছে। সাথে আছে ফ্রি প্র্যাকটিস টেস্ট। কোর্সটি নিয়েছেন Australia এর University of Queensland এর ফ্যাকাল্টিরা।
০২. IELTS LIZ এবং IELTS SIMON ভিডিও লেকচার, এখানে টিপস, মডেল Essay এগুলো পাবেন।
০৩. Youtube এ সার্চ দিলে অসংখ্য স্পিকিং টেস্ট এর ভিডিও পাবেন। এগুলো থেকে রিয়েল লাইফ এক্সাম এর ধারণা পাবেন।
যে বইগুলো কিনতে হবেঃ
০১. Cambridge IELTS 6-16 বা সর্বশেষ যে সিরিজটা আছে। pdf download করে নিতে পারেন বা বই কিনতে পারেন। তবে আমার কাছে মনে হয়েছে বই থেকে দাগিয়ে দাগিয়ে অনুশীলনটা বেশি কাজে দেয়।
০২. Cambridge Official Guide to IELTS
০৩. IELTS practice test plus - Katy Salisbury (optional)
ব্যাস, এই অনলাইন রিসোর্সগুলো ঘাটালে এবং বইগুলো পুরোপুরি শেষ করে ফেললে আপনি ভাল IELTS score করার জন্য প্রস্তুত। এছাড়া নিচের টিপসগুলো আপনাকে মডিউল-ওয়াইজ ভাল স্কোর করতে হেল্প করবে।
রিডিং - স্পিড রিডিং স্কিল বাড়াবেন। কোন একটা আর্টিকেল যত দ্রুত সম্ভব পড়ে অর্থ মোটামুটি বুঝার চেষ্টা করবেন। এক্ষেত্রে সব খুঁটিনাটি বুঝার দরকার নেই।
লিসেনিং - যত বেশি ইংরেজি মুভি, সিরিয়াল, নিউজ, কমেন্টারি দেখবেন, লিসেনিং স্কিল তত বাড়বে। প্রথমে সাবটাইটেল দিয়ে, পরে সাবটাইটেল ছাড়া দেখার অভ্যাস করবেন।
রাইটিং - একুরেট গ্রামার, uncommon words, কমপ্লেক্স সেনট্যান্স, পেসিভ ভয়েস এগুলোর ব্যাবহার বেশি বেশি প্র্যাকটিস করবেন।
স্পিকিং - কোন বন্ধু বা ফ্যামিলি মেম্বারের সাথে কিউ কার্ড দিয়ে নিয়মিত স্পিকিং করবেন। প্রায় সবগুলো কোচিং-এ ফ্রি স্পিকিং ক্লাব আছে। ওগুলোতে জয়েন করতে পারেন।
সবগুলো মডিউল এর জন্য Universal tips হল, প্র্যাকটিস, প্র্যাকটিস এবং প্র্যাকটিস। মনে রাখবেন, Practice makes your IELTS score better!
আর যাদের ক্ষেত্রে, নিজেরা একটু ছন্নছাড়া অনুভব করেন, কেউ একটু গুছিয়ে দিলে এবং গাইড করলে, সহজ কথায় একটু মেন্টরিং পেলে আপনি দ্রুত ভাল করতে পারবেন, তারা নির্দ্বিধায় কোন কোর্সে ভর্তি হয়ে যেতে পারেন।
কানাডা বা অন্য যেকোনো দেশে যাওয়ার জন্য যারা চেষ্টা করছেন এবং যেতে আগ্রহী তাদের সকলের জন্য অনেক শুভকামনা এবং দোয়া।
লিখাটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ। আশাকরি পোস্টটি আপনাদের কাজে আসবে। কানাডা বা বিদেশ বিষয়ক আরো অনেক পোস্ট সামনে আসবে। যদি পোস্টটি ভাল লেগে থাকে এবং বিদেশে আসার বিষয়ে আগ্রহী হয়ে থাকেন, তবে লাইক দিয়ে সাথে থাকতে পারেন, যারা এই বিষয়ে আগ্রহী তাদের সাথে পোস্টটি শেয়ার করতে পারেন।