Gazisaifulskyviews

  • Home
  • Gazisaifulskyviews

Gazisaifulskyviews Please visit my website

hi friends, it's my another page, visit Please
06/12/2024

hi friends, it's my another page, visit Please

30/09/2024

প্রসঙ্গ ড. ইউনূস ও তাঁর দলবল
ড. ইউসূসের ক্ষমতা গ্রহণের পর দেড় মাসের কিছু বেশি সময় হয়তো পার হয়েছে। তাঁর আর তাঁর পরিষদ বর্গের কার্যকলাপ নিয়ে ইতোমধ্যেই নানান কথা উঠছে। অসন্তোষ তৈরি হচ্ছে। হওয়াই স্বাভাবিক। যেহেতু, তাদের ঘিরে ২০ কোটি মানুষের বহু আশা-আকাক্সক্ষা একটি বৃত্তের আকৃতি নিয়ে আবর্তিত হচ্ছে।
তারা তাদের মতন করে চেষ্টা করছেন। ইউনূস সাহেবও ছুটছেন তাঁর বলয়ে, দেশের পতিত ভাবমূর্তি উদ্ধার করেÑ দেশকে একটি স্বাভাবিক ট্র্যাকে দাঁড় করিয়ে দিতে। কিন্তু দেশের ভেতরে, জন সাধারণের সঙ্গে তাঁর একটি দূরত্ব (কল্পিত নয়, বাস্তবিক) তৈরি হচ্ছে। তিনি ঢাকা থেকে বের হচ্ছেন না। নাটকের কেন্দ্রীয় চরিত্র, কেন্দ্রেই ঘোরপ্যাঁক খাচ্ছেন। ঠিক হচ্ছে না। আমি মনে করি, তাঁকে মানুষের কাছাকাছি আসতে হবে। তাঁর সঙ্গে যাঁদের খুবই আন্তরিক ও নিকট সম্পর্ক, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর কথাই ধরি। দেশটির জনগণের কত কাছাকাছি তাঁর অবস্থান। জনগণ চাইলেই তাঁর হাত ছুঁতে পারে। বাংলাদেশের জেনারেল জিয়া ও জেনারেল এরশাদ সাহেব সাধারণ মানুষের কাছাকাছি ছিলেন।
আমার মনে হয়, কোনো একটি সার্কিট হাউসে হাজার হাজার জনতার সামনে দাঁড়িয়ে তাঁকে বলতে হবে, “আপনারা আমায় দায়িত্ব দিয়েছেন, আমি চেষ্টা করছি। আমাকে সময় দিন। কিন্তু খুব বেশি সময় আমি নেব না। কিন্তু বলতে পারবেন না, আমি এ লাইনের লোক না।” তাদের সমস্যাগুলো সমাধানের আন্তরিকতাও তাঁকে প্রদর্শন করতে হবে। ফাস্ট, সেকেন্ড থার্ড ইত্যাদি প্রায়োরিটি বাছাই করতে হবে। অল্প সময়ের মধ্যে সেগুলোর বাস্তবায়ন করেÑজনগণকে দেখাতেও হবে। আর কিছু ব্যক্তিত্ব যারা দেশে বিদেশে থেকে ইউটিউবের মাধ্যমে দিক নির্দেশনা দিয়ে ২৯ সেপ্টেম্বও পর্যন্ত বাংলাদেশ গাউড করেছেÑআজকে তারা সমালোচনা করলে, তাদের প্রতিপক্ষ হিসেবে বিবেচনা করা মোটেই বিচক্ষণতার পরিচয় হবে না। কারণ আপনাদেরও কিছু ত্রæটি বিচ্যুতি হচ্ছে। সেগুলো আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেওয়ার দায়িত্বও তাদেরই।
এটাও ঠিক যে, ড. ইউসূস সাহেব পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে অভ্যস্ত না। তিনি হয়তো মানসিক দিক থেকে প্রকৃতই দেশের জনগণের ততটা কাছে ছিলেন না, তাদের বহুমুখী নেতীবাচক চরিত্র সম্পর্কে জানলেও মুখোমুখি হননি। এখন ক্ষমতা গ্রহণ করে হাঁপিয়ে উঠছেন। কারণ এখানে সমস্যার পাহাড়। দাবী-দাওয়ার পাহাড়। ক্ষমতা কেড়ে নেওয়ার জন্য আঙুল বাঁকিয়ে বসে আছে দেশের অর্ধেক জনসংখ্যা। এমনিতেই এদেশে ঘরে ঘরে নেতা। জুলাই-আগস্টের গণ বিপ্লবের পর এখন তাদের সংখ্যা বহুগুণে বেড়ে গেছে। রাস্তাঘাটে, হাটেবাজারে মানুষের কথাবার্তায় এর প্রমাণ মেলে। দেশকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে হলে, সবাইকে নেতৃত্বে রাখা যাবে না। প্রথমে বোঝাতে হবে, এরপর লাগাম টেনে ধরতে হবে। না হলে খালি খুন হতে থাকবে অতি সাধারণ মানুষ। অরাজক পরিস্থিতিতে যা হয়।
আমি মনে করি, ইউনূস স্যার দায়িত্বের যে আগুনে হাত দিয়েছে পুড়ে যাবার ভয় পেলে চলবে না।
গাজী সাইফুল ইসলাম
দেশের একজন অতি সাধারণ নাগরিক।

বিরুদ্ধ স্রোতের বাতাসে সাঁতার কেটে।২.বধূয়া, তোমার জন্য গুণছি কত না প্রহরছুটছি কত না গেরাম শহর বন্দর,তুমি মানে সুরভিত বায়...
30/09/2024

বিরুদ্ধ স্রোতের বাতাসে সাঁতার কেটে।
২.
বধূয়া, তোমার জন্য গুণছি কত না প্রহর
ছুটছি কত না গেরাম শহর বন্দর,
তুমি মানে সুরভিত বায়ু, আয়ু
তুমি মানে প্রেমে মাতাল শহর।
৩.
তুমি মানে ফেনা, অথই সমুদ্র
তুমি মানে জ্বলমলে চাঁদনি রাত
কেওড়ার বনে কোকিলের ডাক
তুমি মানে তুমি আর মেহেদিরাঙা হাত।

I want to know what it means to dream of falling teeth. Religious and scientific explanationsআমি জানতে চাই, দাঁত পড়া স্ব...
13/07/2024

I want to know what it means to dream of falling teeth. Religious and scientific explanations
আমি জানতে চাই, দাঁত পড়া স্বপ্ন দেখলে কী হয়। ধর্মীয় ও বিজ্ঞানভিত্তিক ব্যাখ্যা ।

11/07/2024

উপন্যাস-
মানব স্বপ্নের নীল নয়না পৃষ্ঠাগুলো
(খসড়া পাঠ)
দ্বিতীয় অধ্যায়

জালাল রাজা অল্প বয়সে প্রায়শই অসুস্থ থাকত। প্রতিবার অসুখের পরে তার স্মৃতিশক্তি হ্রাস পেত। আগের অনেক ঘটনাই মনে করতে পারত না। ছোট বেলার কথা তার কিছু কিছু মনে আছে। অসুস্থ হলেই প্রচণ্ড জ্বর হত। সেই জ্বরের ঘোরে সে ভয়ঙ্কর সব স্বপ্ন দেখত। মারামারি, কাটাকাটি, রক্তারক্তি চলতে থাকত যতক্ষণ সে ঘুমোতো। কিংবা যতক্ষণ জ্বর দ্বারা সম্মোহিত থাকত। পরে যখন একটু বয়স বেড়েছে সেই ভয়ঙ্কর জ্বর তাকে ছেড়ে গেছে। পরের তার স্বপ্নগুলোকে সে মনে করেছে খারাপ ভবিষ্যতের ইঙ্গিতবাহী। কিন্তু সামনের অন্ধকারে উৎপেতে থাকা অজানা শত্রুর ভয়ে পথ ছেড়ে দেবার পাত্র সে ছিল না। স্বপ্নের কারণে রাতে ঘুম কম হত। রাত শেষে প্রতি রাতের স্বপ্ন সে মনে করার চেষ্টা করত কিন্তু কিছুতেই পারত না। এজন্য একদিন সে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল স্বপ্ন লিপিবদ্ধ করার। একই স্বপ্ন বারবার দেখলেও লিপিবদ্ধ করে। স্বপ্নের পরিবর্তন যেমন, সংযোজন, বিয়োজন, বাঁক, মোড় এগুলো বিশেষভাবে লক্ষ্য করে। এর সঙ্গে নিজস্ব মত, ব্যাখ্যা-বিশেস্নষণ সে যুক্ত করে। এভাবে স্বপ্ন সংগ্রহ ও লিপিবদ্ধ করা তার নেশায় পরিণত হয়ে যায়। স্কুল শেষ করেই বাই-সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে পড়ে স্বপ্ন সংগ্রহের কাজে। পছন্দমত লোকদের সে অুনরোধ করে তাদের দেখা স্বপ্নের কথা তাকে জানাতে। কারও স্বপ্ন সত্য হলে সেটার নিচে সে সবুজ কালিতে মার্কিং করে রাখে।
দুঃস্বপ্ন দেখে প্রায়শই যাদের ঘুম ভাঙে-স্বপ্ন তাদের কাছে ভয়ের বিষয় হয়ে যায়। আর না ঘুমোতে না ঘুমোতে ভয়, অস্থিরতা, বুক ধড়ফড়ানি, শ্বাস কষ্ট, মাথা ঝিমঝিম করা, শরীরে কাঁপুনি, হাত-পা অবশ লাগা ইত্যাদি নানান ধরনের উপসর্গে জীবন দুর্বিসহ হয়ে ওঠে। কেউ কেউ এগুলোকে হার্টের সমস্যা মনে করে আরও বেশি করে মানসিক দুর্ভোগে নিপতিত হন। চিকিৎসকগণ বলেন: এ ধরনের ডিস্টার্বড স্লিপ থেকে প্যানিক ডিসওয়ার্ডারেরও সৃষ্টি হতে পারে। তাদের সবসময় মনে হয়: এই বুঝি খারাপ কিছু হয়ে গেল, এই বুঝি বিপদে পড়লাম। এমন মনোভাব তাদেরকে কোনো সৃষ্টিশীল কাজেই স্থির হতে দেয় না। জালাল রাজা জেনেছে, এমন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে গিয়ে কেউ কেউ নেশা ধরে। কেউ কেউ আত্মহত্যা করে।
একদিন স্কুল শেষে জালাল রাজার এক জুনিয়র শিক্ষক শফিক মাস্টার তাকে বলল: জালাল ভাই, কিছুদিন থেকে আমার ভালো ঘুম হচ্ছে না। ফলে ক্লাসেও মনোযোগী হতে পারছি না। ঘুম ঘুম লাগে। বাচ্চাদের সামনে ঘুমের আমেজে থাকলে আমার খুব লজ্জা লাগে।
-কেন, টেবিলে দু’পা তুলে চেয়ারে শুয়ে একটু ঘুমিয়ে নিবা, সমস্যা কী? আগেকার দিনে তালেব মাস্টাররা যেভাবে ঘুমোতেন। হা হা হা।”
-শুধু আগেকার দিনে না ভাই, এখনও কেউ কেউ এমনে ঘুমোয়। সম্প্রতি ফেসবুকে কয়েকজন শিক্ষকের ছবি দিয়েছে-যারা ক্লাসে বিভিন্ন ভঙ্গিতে শুয়ে বসে ঘুমোচ্ছে। হা হা হা। এদের দেখে শিক্ষকতা পেশার প্রতি আমার বিতৃষ্ণা তৈরি হচ্ছে।
-কিন্তু আমরা তো তাদের মত কিছু করছি না। খারাপ লোক সর্বত্র আছে, শিক্ষকতাতেও। এটা সবাইকে মনে রাখতে হবে।
তারা রাস্তার পাশের টং দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে চা খায়। শফিক মাস্টার বলে:
-জালাল ভাই, আমি আপনাকে সাহায্য করতে চাই।
-কোন ব্যাপারে?
-আপনার সব ব্যাপারে। আপনার কোনো ক্লাস দরকার হলে করে দেব। স্বপ্ন সংগ্রহে আপনার সহকারী হব। ইতোমধ্যেই আমিও কিছু স্বপ্ন সংগ্রহ করেছি। আপনার বইয়ে দিতে পারবেন। বই লেখার জন্য তো আলাদা পড়াশোনার দরকার হয়।
-হ্যাঁ ঠিক বলেছে। প্রচুর পড়াশোনা দরকার। তোমার কাছে স্বপ্নের ওপর কোনো বই আছে?
-হ্যাঁ আছে। মাওলানা সিদ্দিকুর রহমানের(রহ.) আদি ও আসল সোলেমানী খাবনামা ফালনামা ও তাবীর, হযরত মাওলানা মো. আব্দুলস্নাহ আল জুবায়েরের আদি ও আসল সোলেমানী মোহাম্মদী খাবনামা ফালনামা ও তাবীর, হযরত মাওলানা মো. আব্দুলস্নাহ আল জুবায়েরের স্বপ্ন ও এর ব্যাখ্যা। এগুলো আমার দাদার সংগ্রহ থেকে আমি পেয়েছি।
-তোমার দাদা কি টিয়া পাখি দিয়ে রাস্তায় বসে মানুষের ভাগ্য গণনা করতেন নাকি? হা হা হা।
-না না, তিনি ছিলেন মাদ্রাসার শিক্ষক। তাবিছ কবছ দিতেন। মানুষের স্বপ্নের ব্যাখ্যা দিতেন।
-তো তুমি সেইদিকে না গিয়ে স্কুলের শিক্ষকতায় এলে কেনো?
-আমি যে এই লাইনে পড়াশোনা করেছি। আর এ লাইনে না এলে আপনার দেখা পেতাম কী করে?
-যাহোক, মনে হয় তোমার বইগুলোও কিছু কাজে লাগবে। তবে এখন আরও অনেক আধুনিক বই পাওয়া যায়। যেমন আমি সংগ্রহ করেছি- দ্য ইন্টারপ্রিটেশন অব ড্রিমস, ড্রিমস ডিকশনারি, দ্য ড্রিম এন্ড আন্ডারওয়ার্ল্ড, ১২০০ ড্রিমস ইন্টারপ্রিটেড ইত্যাদি।
-তাহলে তো কথাই নেই। কাজ হবেই।
-তো এখন আপনি স্বপ্নের ব্যাখ্যা দিচ্ছেন কীসের ভিত্তিতে?
-কিছু কিছু পড়েছি। মানুষের কাছ থেকে সংগ্রহ করা স্বপ্নগুলো বারবার পড়ে বুঝতে চেষ্টা করেছি। সেই অভিজ্ঞতার আলোকে। শোনো এটাও জাস্ট একটা “লার্নিং বাই প্র্যাক্টিস” সিস্টেম। কোনো লাইনেই মানুষের হুটহাট চলে আসা উচিত না। আগে কনফার্ম হতে হয়: যা করতে যাচ্ছি, সঠিক আর নির্ভরযোগ্য কি-না। এই যেমন এক সময় আমিও প্রচুর স্বপ্ন দেখতাম। আর সে স্বপ্নগুলোই আমার চিন্তার মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল। একবার কী হলো: মাস্টার্সে তখন পড়ি। একরাতে অদ্ভূত একটা স্বপ্ন দেখলাম? দেখলাম: সিনেমা দেখতে গিয়েছি। টিকেট কাউন্টারের লাইনে আছি। ফকিরের মত একটা লোক এসে আমায় জড়িয়ে ধরে বলে:“ধরছি, ধরছি। এই স্যার আমার টিকেট নিয়া গেছে” বুঝতেই তো পারো তখন আমার কী অবস্থা। কাছেই ছিল হলের দারোয়ান। সে লাঠি উঠিয়ে বাড়ি দিতে উদ্ধত হতেই লোকটা এক দৌড়ে মেইন রোডে চলে যায়। আর ওখানকার চলমান একটা গাড়ির সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে ছিটকে পড়ে। সবাই দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছে। কেউ তাকে ধরছে না। আমিই ছুটে গেলাম। আফটার অল লোকটা আমার জন্য আঘাতটা পেয়েছে। তাকে উঠিয়ে একপাশে দাঁড় করালাম। লোকটার শরীর তখন কাঁপছে।
-স্যার, আপনি আমার টিকেট নেন নি?
-না। কোথায় রেখেছিলেন?
প্যান্টের পেছনে ছেঁড়া পকেটে হাত দিয়ে বলে: এই যে এখানে।
-সঙ্গে সঙ্গে যত টাকা পকেটে ছিল লোকটার হাতে দিয়ে বললাম: আবার একটা টিকেট কিনে নেবেন। বলেই হোস্টেলের উদ্দেশ্যে পা বাড়িয়েছিলাম।
-এরপর?
-এরপরই ঘুম ভেঙে যায়।
-অদ্ভূদ স্বপ্ন।
-হ্যাঁ, অদ্ভূদ স্বপ্ন। তবে সে স্বপ্ন দেখার পর আমি কিন্তু আর কোনোদিন সিনেমা হলে যাইনি।
-আচ্ছা আপনি কি মনে করেন স্বপ্ন সত্য হয়? বিশ্বাস করেন?
-হ্যাঁ, করি। স্বপ্ন সত্যি সত্য হয়। তবে সব না। কয়েক হাজারে এক দু’টি।
-বুঝবেন কীভাবে?
-দ্য ওয়ারার বেস্ট নোজ হোয়ার দ্য শো পিনসেস। বাক্যটা তুমি জানো না? এটাও অনেকটা এরকম। যে স্বপ্ন দেখে সেই বুঝতে পারে কোনটা সত্য হয়েছে। স্বপ্ন সত্য হয়েছে এমন পৃথিবীখ্যাত কিছু লোকের কথা আমি জানি। তাদের স্বপ্ন কয়েক ঘণ্টা থেকে কয়েকদিন মাসের মধ্যে সত্যে পরিণত হয়েছে। হ্যাঁ, কারওরটা হয়তো বছর গড়িয়ে গিয়ে সত্য হয়েছে। প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে। সিনেমা দেখতে যাওয়ার যে স্বপ্ন আমি দেখেছিলাম সেটি সিনেমার গল্পের মতই। সেই স্বপ্নটির কথা আজও একাকীত্বে ভাবি। কেন এমন স্বপ্ন দেখেছিলাম? কোনো কোনো স্বপ্ন তো সত্য হয়। ভাবি, আমার স্বপ্নে দেখা পাওয়া ওই যে বুড়ো লোকটা অ্যাকসিডেন্ট করেছিল, তার কোনো অস্তিত্ব কি বাস্তবেও ছিল? আমার খুব জানতে ইচ্ছে করে, তাকে খুঁজে বের করে-কিছু টাকা দিতে ইচ্ছে করে। কিন্তু কোথায় পাব তাকে। বিশ্বাস করো তার মুখটা আমি কোনোদিন ভুলিনি। ভিক্ষুক, ছন্নছাড়া, পাগল লোক দেখলেই আমি এগিয়ে যাই, তাকে খুঁজি। এ বিষয়টা নিয়ে প্রায়শই আমার একধরনের টেনশন হয়। সেই টেনশনের কারণেই আমার এ স্বপ্নের কথা একদিন আমি অধ্যক্ষ হাসান ওয়াইজ স্যারকে বলেছিলাম। তিনি তখন আব্রাহাম লিঙ্কনের একটি স্বপ্নের কথা আমায় বলেছিলেন।
-স্বপ্ন দেখেছিলেন আমেরিকার ১৬তম প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিঙ্কন। আততায়ীর গুলিতে নিহত হওয়ার মাত্র ক’দিন আগে। ১৯৬৫ সালের ১১ এপ্রিল আব্রাহাম লিঙ্কন দেখেছিলেন, তিনি হোহাইট হাউজের বিভিন্ন কক্ষে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কোনো কক্ষেই কাউকে দেখতে পাচ্ছেন না। কিন্তু প্রতিটি কক্ষ থেকে কান্নার শব্দ ভেসে আসছে। হোহাইট হাউজের পূর্বদিকের একটি কক্ষে তিনি দেখলেন পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় রক্ষিত একটি কফিন। প্রহরী-সৈনিকদের চারদিক থেকে ঘিরে রেখেছে শোকাচ্ছন্ন নর-নারী। তিনি তাদের জিজ্ঞেস করলেন:“এটি কার লাশ?” তারা জবাব দিল,“প্রেসিডেন্টের। তিনি আততায়ীর গুলিতে নিহত হয়েছেন।”
প্রেসিডেন্ট তাঁর এ স্বপ্নের কথা তাঁর স্ত্রী ও ঘনিষ্ঠ বন্ধু ওয়াড হিল লেমনের কাছে প্রকাশ করেছিলেন। যদিও ওটি একটি স্বপ্ন কিন্তু এটি প্রেসিডেন্টর মনের ওপর গভীর প্রভাব ফেলেছিল। বাকি রাত তিনি আর ঘুমান নি। বারবার তাঁর মনে হচ্ছিল সবকিছু পরিসমাপ্তির দিকে যাচ্ছে। দুর্ভাবনা ও বেদনায় মন ভারী হয়ে গেল।
প্রেসিডেন্ট যেদিন আততায়ীর গুলিতে আহত হয়ে মারা যান সেদিন বিকেলে মন্ত্রীসভার বৈঠক ডেকেছিলেন। নির্দিষ্ট কক্ষে ঢুকে মন্ত্রীরা দেখতে পেলেন যে, প্রেসিডেন্ট আগেই এসে তার আসন গ্রহণ করেছেন। কিন্তু তাঁর মাথা টেবিলের ওপর নোয়ানো। দু’হাতের মধ্যে মাথা এমনভাবে রাখা যে তাঁর মুখ দেখা যাচ্ছিল না। মন্ত্রীদের পায়ের শব্দ শুনে প্রেসিডেন্ট মাথা তুলে ঠিক হয়ে বসলেন। তাদের সম্বোধনের জবাব দিয়ে তিনি বললেন:
‘‘ভদ্রমহোদয়গণ, আপনারা শিগগির কোনো গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ শুনতে যাচ্ছেন।”
‘‘মহামান্য প্রেসিডেন্ট, আমাদের জন্য কি কোনো অশুভ সংবাদ রয়েছে?’’ একজন মন্ত্রী জানতে চাইলেন।
প্রেসিডেন্ট বললেন:‘‘আমি কিছু শুনিনি, আমার কাছে কোনো সংবাদও নেই। কিন্তু গতরাতে আমি একটি স্বপ্ন দেখেছি। স্বপ্নে আমি দেখলাম, একটি নৌকায় আমি সম্পূর্ণ একা। নৌকায় কোনো মাঝি নেই, বৈঠা নেই। অথৈ সাগরে নিঃস্ব অসহায়ের মতো ভেসে চলছি আমি। গন্তব্য জানা নেই।”
কক্ষে ভয়াবহ নিস্তব্ধতা নেমে এল। এরপর কী বলতে হবে কেউ জানে না। প্রেসিডেন্ট বললেন: গৃহযুদ্ধের সময় মাঝেমধ্যেই আমি এ স্বপ্নটি দেখতাম।
প্রতিবারই দু’একদিনের মধ্যে ভয়াবহ যুদ্ধ শুরু হতো। হ্যাঁ ভদ্রমহোদয়গণ, আমার মনে হচ্ছে আগামী কয়েক ঘণ্টার মধ্যে অথবা সম্ভবত আগামীকাল আপনারা ভয়াবহ কোনো দুঃসংবাদ পাবেন।
এর ঠিক পাঁচঘণ্টা পরই প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিঙ্কন আততায়ীর গুলিতে আহত হন।”
-ওই শোনো ঘণ্টা পড়ে গেছে। ক্লাসে চলো। জালাল রাজা বললেন।
-হ্যাঁ, চলেন। তবে আমি কিন্তু ভয় পেয়ে গেছি।
-ভুলে যাও। হতাশা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা চালাও। সব ঠিক হয়ে যাবে।
-একটা বিষয় খুবই লক্ষ্যণীয়। স্বপ্নটা তিনি বহুবারই দেখেছিলেন। আমিও আমার কিছু স্বপ্ন বারবার দেখি। আমার বাবাও দেখতেন।
-তাই নাকি?
-হ্যাঁ।
-একদিন শুনব তোমার সব স্বপ্নের কথা। একটা কথা মনে রেখো, পৃথিবীতে কারও চেহারা যেমন একেবার ১০০% মিলে না, স্বপ্নও মিলে না। ব্যক্তিতে ব্যক্তিতে পার্থক্য হয়। ভৌগলিক, আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক কারণে স্বপ্নে পার্থক্য হয়। খুবই ব্যতিক্রম কিছু স্বপ্ন আছে-রাজার মেয়েও দেখতে পায়, গরীবের মেয়েও দেখতে পায়। যেমন: একদিন এক রাজার মেয়ে স্বপ্ন দেখল-হত দরিদ্র হয়ে রাস্তায় ঠাঁই নিয়েছে। জীবন চালাচ্ছে ভিক্ষে করে। বিপরীত দিকে, গরীব কৃষকের মেয়ে স্বপ্ন দেখল-সে রাজরানী হয়ে জমকালো প্রাসাদে উঠে গেছে। এ ধরনের স্বপ্নগুলো শুধু ব্যতিক্রম নয়, সত্যও হয়ে যায় আকচার।

New Novel By Gazi Saiful Islamমানব স্বপ্নের নীল নয়না পৃষ্ঠাগুলোজালাল উদ্দিন আহমেদ রাজা নিজেকে জালাল রাজা নামে পরিচয় দিয়ে...
09/07/2024

New Novel By Gazi Saiful Islam

মানব স্বপ্নের নীল নয়না পৃষ্ঠাগুলো

জালাল উদ্দিন আহমেদ রাজা নিজেকে জালাল রাজা নামে পরিচয় দিয়ে গর্ববোধ করতেন। পেশায় একজন স্কুল শিক্ষক। অবিবাহিত অস্থির তরুণ। মাঝখানে সামান্য বাঁকা হ্যাংলা-পাতলা গড়নের-বাংলাদেশের গড় পড়তা উচ্চতায় তাকে লম্বা বলাই যায়। হাঁটার সময় কিছুটা সামনের হেলে হাঁটে। মাথা-মুখের গড়ন শরীরের সঙ্গে মানানসই। মুখে সবসময় হাসি লেগে না থাকলেও বেজার মনে হয় না কখনও। মার্জিত রুচি, কথা বলায় হেসেবি। অপ্রয়োজনীয় কথা তার কাছে পাত্তা পায় না। খেলাধুলা-সাংস্কৃতি কর্মকাণ্ডে উৎসাহী ও ক্লান্তিহীন। ভালো শ্রোতা, বলাতেও দক্ষ। ক্লাসে পড়ানোর স্টাইল, কথা বলার ধরন, চাল-চলন সবার থেকে আলাদা। তার নিরহঙ্কারী আচরণ সবাইকে তার দিকে টানে। জগতের প্রতিটি বস্তুর প্রতি নিজে অদৃশ্য বন্ধন সে অনুভব করে। মাঝে-মধ্যে সে ভারি অদ্ভূত একটি স্বপ্ন দেখে। একদিন স্বপ্নে দেখল: একটি ক্ষুধার্ত কুকুরকে সে একটি রুটি দিতে চেষ্টা করছে কিন্তু কুকুরটি কিছুতেই তাকে বিশ্বাস করছে না। তার হাতে রুটি দেখার পরও। রুটি হাতে ধরে কুকুরের পেছনে পেছনে অনেকটা পথ যায়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কুকুরটি দাঁড়ালোই না। এতে তার মন খারাপ হলো। তখন তার স্বপ্ন ভেঙে যায়। আরেকদিন তার মনে হলো, সামনের কুকুরটি ক্ষুধার্ত। সে তাকে আতু আতু বলে ডাকে। এবং খাবার দেওয়ার ইঙ্গিত করে। এতে কুকুরটি ওই জায়গাতে বসে পড়ে। কিন্তু তার কাছে তখন কোনো খাবার নেই। সে দৌড়ে ঘরে যায়, কয়েকটি বিস্কুট নিয়ে আসে। এসে দেখে তখনও কুকুরটি ওইখানে ওইভাবে বসে অপেক্ষা করছে। বিস্কুট খেয়ে এরপর যেদিকে সেটি যেতে চেয়েছিল সেইদিকে চলে যায়।

জালালের এ দু’টি স্বপ্নের ব্যাখ্যা জানতে খুব ইচ্ছে করত। সে জানে স্বপ্নে ব্যাপারগুলো ভারি রহস্যপূর্ণ। স্বপ্নের ব্যাখায় নানা মুনির নানা মত। সকল ধর্মেই স্বপ্ন নিয়ে কম বেশি কথা আছে। পৃথিবীর সবেচেয়ে আলোচিত স্বপ্ন হযরত ইব্রাহিম (আ.) এর স্বপ্ন। স্বপ্নে আদিষ্ঠ হয়ে তিনি প্রাণ প্রিয় পুত্র হযরত ইসমাইলকে কুরবাণী করতে গিয়েছিলেন। পরে তার স্থলে একটি দুম্বা কোরবাণী হয়। এ স্বপ্নের কথা তৌরাত(Judaism), ইঞ্জিল(Khristianity) ও কোরানে(Islsm) আছে। মুসলমানরা ঈদ-উল-আজহায় যে কোরবাণী করে এটা মূলত হযরত ইব্রাহিম (আ.)এর সন্নাহ। মুসলমানরা বিশ্বাস করে, হযরত ইব্রাহিমই প্রথম ব্যক্তি যিনি মুর্তি পুজারি ছিলেন না। দুনিয়ার প্রথম প্রার্থনার ঘর (First house of worship on Earth)কাবা বা মক্কা শরীফ হযরত ইব্রাহিম (আ.) আর পুত্র ইসমাইল (আ.) তৈরি করেছিলেন। এর পরে স্বপ্নের বিখ্যাত ব্যাখ্যাকার হিসেবে আলোড়ন সৃষ্টি করেন-হযরত ইউসুফ (আ.) হযরত ইব্রাহিমেরই (আ.) বংশধর। বলা হয়ে থাকে: স্বয়ং ঈশ্বরই তাকে স্বপ্ন ব্যাখ্যা শিখিয়েছিলেন। এই গ্রন্থে যথাস্থানে তাঁর স্বপ্নের কথা জানানো হবে।
এর পরে একদিন জালাল স্বপ্ন দেখল: গভীর রাতে মধ্যমাঠ বুকের ওপর দিয়ে বয়ে চলা পাকা সড়কের ওপর সে দাঁড়িয়ে পূর্ব দিকের আশি বিলের দিকে তাকিয়ে আছে। আকাশে গোলকার সুন্দর চাঁদ। চারপাশে হালকা কালো মেঘ। চাঁদের আলোয় চারপাশের সবুজ মাঠে এ ধরনের আধ্যাত্ম সৌন্দর্য ছড়িয়ে পড়েছে। হঠাৎ তার মনে হয়, চাঁদটা তার দিকে নেমে আসছে। হ্যাঁ, আসছেই তো। দূরের আকাশ থেকে দ্রæত আর সোজা সেটি তাঁর দিকে নেমে আসতেছে। কাছাকাছি এসে গতি কমাতে থাকে। এবং খুব কাছে এসে হয়ে স্থির হয়ে যায়। সে হাত বাড়ায়। একটা আলোর প্রজাপতির মতন তার হাতে এসে বসে এবং পরক্ষণেই আবার আকাশের দিকে উড়াল দেয়। এবং দেখতে দেখতে তার নিজের জায়গায় ফিরে যায়। নিজের জায়গায় বসে সে আবার তার দিকে তাকিয়ে হাসতে থাকে। জালাল খুশিতে তার ফ্লায়িং চুমু পাঠায়। মনে মনে বলে: “অদ্ভূত, অদ্ভূত সুন্দর তুমি! তোমার সঙ্গে কথা বলার ভাষা আমি হারিয়ে ফেলেছি।” তখনই ঘুম ভেঙে যায় তার। সে উঠে বসে ডায়েরিতে লিখতে শুরু করে। এটাই তার প্রথম স্বপ্ন যা সে লিপিবদ্ধ করেছিল এলাকা ছাড়ার আগে।

ডায়েরিতে কিছু বিশ্লেষণ: এ স্বপ্নের আড়ালে কী আছে? আমি কি আমার প্রিয় কাক্সিক্ষত মানুষটির দেখা পেতে যাচ্ছি? কিন্তু সে কে, কোথায় আছে? তার সঙ্গে আমার দেখা হয়েছে? নাকি আমার অবস্থাও কি মান্না দে’র মত হয়েছে। তাঁর গানে আছে।
“চাঁদ দেখতে গিয়ে আমি তোমায় দেখে ফেলেছি
কোন জোছনায় আলো বেশি এই দোটানায় পড়েছি।”
আসলেই তো মানব জোছনার আলো বেশি না-কি চাঁদের জোছনার আলো বেশি? ফেসবুকে আমার কত বন্ধু কত বান্ধবী। তারা তো শুধই ভার্চুয়াল। তারা না নেয় দুঃখের ভাগ না দেয় সুখের লগন। গ্যাব্রিয়েল গর্সিয়া মার্কেজ তার ছেলের ফেসবুকে পাঁচ হাজার বন্ধুর কথা শুনে হেসে ফেলেছিলেন। বলেছিলেন: “যার পাঁচ হাজার বন্ধু তার আসলে কোনো বন্ধুই নেই।” ফেসবুকের বন্ধুরা আসেল তাই। ফেসবুকে তাহলে আমরা কীসের লেনাদেনা করি? কীসের হাটবাজার করি? হ্যাঁ, বহু সফলতার গল্পও রয়েছে ফেসবুক প্রেমের। সেদিন দেখলাম: এক মহিলা তার দেহের অর্ধেক দেহের, কম বয়সের একটি অটোস্টিক ছেলের প্রেমে পড়ে স্বামী ও সন্তানকে ছেড়ে এসেছে। মহিলার পরিবারের লোকদের তীব্র আপত্তি সত্তে¡ও সে ওই অর্ধেক ছেলেকেই বিয়ে করেছে। এখনও সংসার করছে। পেটে নাকি সন্তানও এসেছে। ওই অর্ধেক দেহের ছেলেটির সঙ্গে দাঁড়িয়ে কথা বলছে মহিলা। সাক্ষাৎকারে মহিলার মধ্যে কোনো অনুশোচনা দেখা যায়নি। তাহলে প্রশ্ন কি জাগে না, এই প্রেমের কী রহস্য? আগের স্বামীর কী ছিল না আর এর মধ্যে কী আছে? আমি যদি কোনোদিন জানতে পারি-হয়ত প্রেমের গোপন রসায়নটা আবিষ্কার করতে পারব।
স্বপ্নে হাতে চাঁদ পাওয়ার একটি ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে: প্রিয়জনের সঙ্গে মিলনের পূর্বাভাসের মিথরূপ এটি। কিন্তু আমার তো এমন কোনো প্রিয়জন নেই। একজন আছেন আমার মা’ আমি তো সঙ্গেই আছি। আরেকজন ফেসবুক ‘বান্ধবী’। আমি তাকে প্রায়শই ‘দূর দ্বীপবাসিনী’ বলে ডাকি। সে হাসে। প্রশ্ন করে না। নাকি প্রশ্ন করতেই জানে না। হ্যাঁ, আমার কাছে ‘ফেসবুক’ দূরের দ্বীপই। যদি দু’জনের একজন টিএসসির সড়ক দ্বীপের এপাশে আরেকজন অপরপাশে থাকে-মনের ওই রকম জোর না থাকলে এতটুকু দূরত্বও অতিক্রম করা যায় না। আবার একজন আমেরিকা আর একজন বাংলাদেশে। কথা মুহূর্তেই চলে যাচ্ছে। এ দূরত্ব হয়তো অনতিক্রম্য। কিন্তু মনের জোর দিয়ে কাছে অনুভব করা যায়। তবু ফেসবুকের ‘বন্ধু’কে যাঁচাই করা কঠিন।
কবিরা মনে হয়, দু’টি দিকই সমানভাবে প্রকাশ করতে সক্ষম। ব্যর্থতা থেকে যে হতাশার উৎপত্তি হয় সেটি। বিপরীতক্রমে, দুর্লভ ধরনের প্রাপ্তিতে তার ভেতর যখন কানায় কানায় ভরে উঠে সেই আনন্দের প্রকাশ। কেউ কেউ চাঁদকে উপমা করেন। চাঁদের মিথে আশ্রয় খুঁজেন। বেশিরভাগই গান কবিতাতেই ব্যর্থতার বয়ান। সফলতার কথা কমই দেখা যায়। বাংলাদেশের গীতি কবি ‘ইমতিয়াজ বুলবুল’ মনে হয় চাঁদ মুখটি ঘরে এনে গ্রহণ লাগার ভয়ে ছিলেন:
ঐ চাঁদ মুখে যেন লাগে না গ্রহণ
জোছনায় ভরে থাক সারাটি জীবন \
হাজার বছর বেঁচে থাক তুমি
বুকে নিয়ে স্বর্গের সুখ
দুঃখ ব্যথা সব ভুলে যাই যে
দেখলে তোমার ঐ মুখ।
ফুলও তুমি ফাগুনও তুমি
গন্ধ বিলাও সারাক্ষণ \...
চাঁদের তিথিরে বরণ করতে সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় আমাদের নিয়ে যান প্রেমের আরেক মোহময় জগতে। তার কণ্ঠ, গায়কি মন্ত্রমুগ্ধ করে আমাদের। আসলে এগুলো মানব রহস্যের এক ধরনের সত্যেও প্রকাশ। এইসব আবেগিক সত্যকে অস্বীকার করা নিজেকে বঞ্চিত করার সামিল। সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়ে তাই আমিও গাইতে থাকি:
ঘুম ঘুম চাঁদ ঝিকিমিকি তারা এই মাধবী রাত
আসেনি তো বুঝি আর, জীবনে আমার।
এই চাঁদের তিথিরে বরণ করি
এই চাঁদের তিথিরে বরণ করি
ওগো মায়াভরা চাঁদ আর, ওগো মায়াবিনি রাত
বাতাসের সুরে শুনেছি বাঁশি তার
ফুলে ফুলে ঐ ছড়ানো যে হাসি তার...
আসলে ভালোবাসা পেলে, কিংবা না পেলেও হৃদয়ের গহনে তার গভীর উপস্থিতি থাকলে কবিতা আসে, গান আসে। এগুলোও স্বর্গীয় বিষয়, কারণ এগুলো মানুষের মিলনের কথা শোনায়, দুঃখ বাড়িয়েও দুঃখ ভোলায়। গান, ক্ষেত্র বিশেষ কবিতাও ইসলাম গ্রহণ করে না। কারণ এগুলো জাগতিক আবেগকে বাড়িয়ে দেয়। আল্লাহকে ভুলিয়ে দেয়। এটাও সত্য, আল্লাহ মানুষ সৃষ্টিই করেছেন সত্ত¡, আমিত্ব, জাগতিক মোহ মায়ার বাঁধোন ছিড়ে তাঁর দিকে ফিরে তাকানোর জন্য। কেবল তারই গুণগান করার জন্য। এমন খালি নিজেরটা বোঝার জন্য আল্লাহকে আপাত দৃষ্টিতে কিছুটা ‘স্বার্থপর’ মনে হয় বৈকি। কিন্তু তুমি যদি ওই গভীরতায় বিশ্বাস স্থাপন করো, যদি পরের জীবনের সুখে বিশ্বাস করো, তাহলে তো তোমাকে স্থির করতেই হবে তুমি কোনদিকে যাবে। আল কোরান যে জীবনের বিধান দিয়ে, এদিকে বৈশ্বিক জীবন আরেকদিকে পরলৌকিক জীবনে চিত্র আমাদেও সামনে রেখেছেন সেখান থেকে বাছাই করতে গিয়ে কে কোনটি বেছে নেবেন সেটা একান্তই তার ব্যাপার। কিন্তু আমি ব্যক্তিগতভাবে পরলৌকিক জীবনের দিকে টান বেশি অনুভব করি। হতে পারে এটাও আমার এক ধরনের দুর্বলতা। হতে পারে, জাগতিক জীবনে যতটা সফল আমার হওয়ার কথা না হওয়ার পেছনে এটাও একটা কারণ। ওই ছোট বেলায় শোনা আরেকটা গান আছে: “আমি চাই না মাগো রাজা হতে।” সত্যি জগতে অনেক মানুষ আছে রাজা হতে চায় না। কায়ক্লেসে জীবন কাটিয়ে দিতে চায়। তারাই মনে হয় ভালো করেন। শেখ দয়ালে কবিতায় পড়েছিলাম:
নীলাকাশটি যখন ঢাকা পড়ে কালো মেঘে
ভেবো না দেখতে পাই না চাঁদ ও তারাদের মুখ
এমন আমার দৃষ্টির বাইরে যত দূরে তুমি রও
তোমার নামটি জপে আমি পাই আশিকের সুখ।”
আল্লাহর যেহেতু কায়া নেই, তাঁকে ধরতে হয় মায়া দিয়ে। তাই লোকেরা বলে: মায়ার সংসার। অস্পষ্ট একটা বাঁধন। আসলে সংসারের সকল বাঁধনই অস্পষ্ট, আধ্যাত্ম। বেশি স্পষ্ট করতে গেলে-থাকত না। কারণ ওর ভেতরে কোনো সুতো নেই। পাশ্চাত্যের সংসারের বাঁধোন অনেক ঠুকনো। যখন তখন ভেঙে যেতে পারে। যে যার মতন যেদিকে ইচ্ছে হেঁটে যেতে পারে। ভোগবাদী সমাজে আপাতত এটাকে মিষ্টি মনে হয় কিন্তু জীবন শেষে পরিণতি শুভ নয়। রাষ্ট্রগুলোর সামাজিক ভিত্তি কল্যাণরাষ্ট্র ধারণার ওপর প্রতিষ্ঠিত বলে সেটা ধরা পড়ে না-মানুষের জীবন কোনো পর্যায়ে ঠেকে না।
আগে থেকেই জালাল জানত-স্বপ্নে হাতে চাঁদ পাওয়ার অনেক অর্থ হতে পারে। স্বপ্নে চাঁদ হাতে পাওয়ার মানে শুভ কিছু। বিশ্বখ্যাত ইসলামিক স্বপ্ন ব্যাখ্যাকারী ইবনে সিরিন(আ.) এর মত এটাই। তবে রাজার কাছ থেকে উপটৌকন বা উপহার পাওয়ার ইঙ্গিতও এতে পাওয়া যায়।। অন্য একটি ব্যাখ্যায় এর দ্বারা আল্লাহর কাছে অনুগ্রহের ইঙ্গিত রয়েছে। ইঙ্গিত রয়েছে প্রেমিক-প্রেমিকার মিলনের, স্বপ্ন পুরণের। মনোবিজ্ঞানি কার্ল জংয়ের (Carl Jung) মতে: the moon is also a metaphor for the union of the male and female aspects of one’s personality.
জালাল মাঝেমধ্যে স্বপ্নে স্ফুলিঙ্গ ও জোনাকিদের দেখে। স্ফুলিঙ্গ ও জোনাকির মধ্যে একটি দারুণ মিল আছে।। স্ফুলিঙ্গ একটি অধরা অগ্নিকণা এটিও কোনো কোনো সময় কোনো অবশিষ্ট না রেখে সবকিছু পুড়ে ফেলে। দাবানল/বুনফায়ারগুলোর উৎপত্তি এভাবেই হয়। কিন্তু জোনাকি একটি তেজ-জ্বলুনিহীন মসৃণ আলো, কাউকে, কোনাকিছুকে পোড়াতে পারে না। পথের দিশারি হয়। স্ফুলিঙ্গ পোড়ায় জোনাকি অন্তর জুড়ায়। রবীন্দ্রনাথ কি শুধু স্ফুলিঙ্গ দেখেছিলেন, জোনাকি দেখেননি? তিনি লিখেছিলেন:
‘‘স্ফুলিঙ্গ তার পাখায় পেল
ক্ষণিকের ছন্দ
উড়ে গিয়ে ফুড়িয়ে গেল
সে-ই তার আনন্দ।’’
রবীন্দ্রনাথ স্ফুলিঙ্গের উড়ে গিয়ে ফুরিয়ে যাওয়ার মধ্যে আনন্দের কী দেখেছিলেন আমি বুঝি না। এটা তো চরম বেদনা, এই আছি এই নাই। ক্ষণিকের জীবন ক্ষণিকের পুড়ন এরপরই মহাকালের গর্ভে বিলিন হয়ে যাওয়া। এতে আনন্দের কী থাকতে পারে। আচ্ছা, রবীন্দ্রনাথ কি নিজেকেই স্ফুলিঙ্গ ভেবেছিলেন? এটা হতে পারে। তিনিও যে একদিন থাকবেন না-সেই ভাবনায় কাতর হয়েছিলেন? আর বেঁচে থাকার সময়টুকুই আনন্দময় বলে সান্ত¦না খুঁজেছিলেন? জানি এ ধরনের হাইপোথিসিস অর্থহীন। কিন্তু স্ফুলিঙ্গ ও জোনাকি দুটোই মানুষের ভাবাবেগে অদ্ভুত আলোড়ন তোলে। ভাবাই যায় জোনাকিও স্ফুলিঙ্গেরই আরেক রূপ। জোনাকিদের নিয়ে মাতসুও বাশোর একটি হাইকো তার মনে আসে:

folly in darkness
grasping a thorn
instead of a firefly
(Haiku by Matsuo Basho)
অর্থাৎ:
“মূর্খ অন্ধকার
জোনাকির পরিবর্তে
একটি কাঁটা আঁকড়ে ধরে আছে।”
আরেকটি হাইকো কিন্তু কবির নাম মনে আসছে না।
Summer fireflies
Competing with stars above
In the deep wet woods.
অর্থাৎ:
“গ্রীষ্মের জোনাকিরা
আকাশের তারার সঙ্গে প্রতিযোগিতা করছে
ভেজা গভীর জঙ্গলে।”
কেউ কেউ বলেন জোনাকিরা আশাবাদের প্রতীক। স্বপ্নের জোনাকি দেখা শুভ। জোনাকি হলো আঁধারের আলো। যত আঁধারই হোক যখন জোনাকিরা সেখানে জ্বলে আমরা সাহস পাই। জোনাকি মানে আলোর নাচন। কী সুন্দর দলবদ্ধ হয়ে সৃশৃঙ্খলভাবে রাতকে মনোহারী করে তোলে। জীবনের পথে জোনাকি এক পার্থিব সুন্দরের নাম। জাপানে জোনাকিকে প্রেম, আবেগ, ঋতু পরিবর্তন ও বিদেহী আত্মার প্রতীক মনে করে। এবং জাপানি কিংবদন্তী মতে, দু’প্রজাতির জোনাকি রয়েছে। গেঞ্জি-হোতারু ও হাইকি হোতারু। গেঞ্জি-হোতারুরা মিনামোতোর যোদ্ধা ভূত আর হাইকি হোতারুরা-তাইরা যোদ্ধা (And in Japanese legend, two species of firefly, the Genji-hotaru and the Heike-hotaru, are associated with the ghosts of the Minamoto warriors and the Taira warriors)|।
অন্তর্জালের বিভিন্ন সোর্স বলছে: অন্ধকার রাতে পুরুষ জোনাকিরা আলো জ্বেলে তাদের প্রিয়তমা খোঁজার জন্য। তারা মনে করে তাদের আলোর উজ্জ্বলতা দেখে নারী জোনাকিরা আকৃষ্ট হয়। মহিলা জোনাকিরা তখন ঘাসের ওপর কিংবা ঝোঁপঝাড়ে চুপচাপ বসে থাকে। একসময় আলোকের ভালো লাগা ধওে আকৃষ্ট হয়ে একে একে সবাই যার যার প্রিয়জনের সঙ্গে জুটি বাঁধে। এরপর একে অপরের পাশাপাশি রাতভর উড়ে চলে।
অ্যামাজোনিয়ান মিথোলজিতে আছে: জোনাকির আলো আসে দেবতাদের কাছ থেকে। যা আশা ও পরিচালনের প্রতীক(Kritsky & Cherry, 2000)।
জালাল ইতোমধ্যে জানে-স্বপ্নে জোনাকি দেখার মানে হলো-বুদ্ধির মুক্তি, সৃজনশীলতার বিকাশ, গণ্ডি থেকে বেরিয়ে সামনের দিকে ধাবমান হওয়া, উন্নতি লাভ করা ইত্যাদি। একসঙ্গে অনেক জোনাকি দেখার মানে-শুভ সংবাদ, প্রশংসিত হওয়ার সম্ভাবনা। আর যদি কেউ স্বপ্নে দেখে তার ঘরে, আঙ্গিনায় জোনাকি এসেছে তাহলে বুঝতে হবে, তার জন্য অতুলনীয় আনন্দের সংবাদ অপেক্ষা করছে। “আপনি দুয়ার খুলে বেরিয়ে আসুন প্রচুর আনন্দ করুন।” বিবাহিত মেয়েদের গর্ভবতী হওয়ার ইঙ্গিত এতে থাকে। যদি একসঙ্গে অনেক জোনাকি ঘরে প্রবেশ করতে দেখা যায়-তাহলে বুঝতে হবে, ঘরে সন্তান আসছে। এটা অবশ্যই সুখী সুন্দর পরিবারগুলোর স্বপ্ন, ¯েœহভালোবাসা শূন্য ঘরে এটি সত্য নাও হতে পারে। আসলে জোনাকি হলো-আলো ও জ্ঞানের প্রতীক। পানির ওপর নদী সাগরের ওপর উড়ন্ত জোনাকিদের দেখতে পাওয়ার মানে জ্ঞানের, সৃষ্টিশীল কাজের বন্যা বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা। যদি অনিশ্চয়তা, হতাশা থাকে সে সবের ক্ষেত্রে আশা জাগানিয়া কিছু ঘটার সম্ভাবনা তৈরি হওয়া। আর্থিক ও আধ্যাত্মিক উত্তরণ ঘটতে পারে। আর যদি কেউ সোনালি জোনাকি দেখে-তার ভাগ্য খুলে যেতে পারে। তবে সর্ব ক্ষেত্রেই সতর্কতার সঙ্গে পরিস্থিতির পর্যবেক্ষণ করা জরুরি।
জালাল লেখে যেতে থাকে: জোনাকির প্রাণ আছে স্ফুলিঙ্গের নেই। সত্যি কি নেই? কিন্তু দু’টিই উড়ে, এরপর ফুড়িয়ে যায়। এ দু’য়ের তুলনায় মানব স্ফুলিঙ্গের স্থায়ীত্বকাল একটু বেশি। স্ফুলিঙ্গ আর জোনাকির জীবনকাল যেমন কম দায়িত্ব-কর্তব্যও তেমনই কম। কিন্তু মানব জীবনের স্থায়ীত্ব সসীম হলেও তার জন্ম-মৃত্যু, আনন্দ-বেদনার প্রবাহ, তার সৃজনকর্মের রহস্যময়তা অসীম ও অনন্তকালের। আমি কান পেতে থাকি আমার বুকের গভীরে। বুকের সমূদ্রে ভেঙে পড়া অশান্ত, কূলহারা ঢেউ থেকে অসংখ্য চিৎকার উত্থিত হয়, আমি কিছু করতে চাই, হাত-পা নাড়িয়ে বাঁচতে চাই। ভেতর থেকে কেউ একজন বলল: থামো। সামনে তাকাও, দূরে, যতটুকু দেখা যায়, আরও দূরে, যেখানে দেখা যায় না। এরপর পর্যবেক্ষণ করো অন্ধকারের বিস্তৃর্ণ রূপ, পাঠ করো প্রকৃতির শব্দাবলী, নিঃসর্গের ভাষা। সকল মহানগ্রন্থের মহৎ বাক্যাবলী যেগুলো তোমাকে আলোড়িত করে সঙ্গে নাও। ভেতরে অন্ধকার থাকলে বাইরের আলোতে সে ঘোর কাটে না।
আমি প্রথম যেদিন পাখায় ছন্দ পাওয়া জোনাকিরূপ একটি উড়ন্ত স্ফুলিঙ্গকে ধরতে গেলাম-তুমি বললে: পারবে না। আর আমি তোমাকে কিচ্ছু না জানিয়ে মনে মনে বললাম: আমি পারব। আমাকে পারতেই হবে। আমার নিজের আলো কম তাই আমাকে আলো নিতে হবে স্ফুলিঙ্গ ও জোনাকির কাছ থেকে। গাছ ও মাছের কাছ থেকে, ফুল ও পাখির কাছ থেকে, কৃষি ও কৃষকের কাছ থেকে, যে জন্মান্ধ মেয়েটি জগতে আলো দেখেনি তার মুখে কদাচ যে হাসি ফুটে সেই হাসি থেকে। এরপর একদিন কাউকে না জানিয়ে বিলের জলে জন্ম নেওয়া বুনো ঘাসে ফুড়–ৎ-ফাড়–ৎ ঘুরে বেড়ানো একটি ফড়িংয়ের পিঠে চড়ে বসলাম। সেই আমাকে প্রথম দেখালো, পদ্ম-শাপলা ফোঁটা বিলের সৌন্দর্য, ঔদার্য। পরক্ষণেই যখন একটি সুচতুর শ্যামা সেই ফড়িংয়ের সঙ্গীটিকে ছুঁ মেরে ধরে নিয়ে গিয়ে বসে পাশেই পুঁতে রাখা শুকনো বাঁশের কঞ্চির ওপর, এরপর নিপীড়ন করে হত্যা করে, স্বীয় খাদ্যে পরিণত করে, তখন আমি চিনলাম দুঃখের আগুনকে। আগুন ছাড়া তো আলো হয় না। এভাবেই কখন যে, এই খেয়ালি স্বপ্নের চূড়ায় আরোহণ করলাম জানতে পারিনি। এরপর দেখলাম, তুমি আমার ধারে কাছে কোথাও নেই। অনেক নিচে রয়ে গেছ অস্পষ্ট বিন্দুর মত। আজ আমি ‘অসাধ্যকে সাধন করার’, ‘অধরাকে ধরার’ গল্পই তোমাকে বলব। তোমার সঙ্গে এ গল্প এখন শুনবে সারা পৃথিবী।
আমি করি কারণ আমি পারি
আমি পারি কারণ আমি পারতে চেয়েছি
আমি পারতে চেয়েছি কারণ তুমি বলেছিলে: ‘‘তুমি পারবে না।’’
আর এই দোদল্যমানতার সময়টায় আমার সঙ্গে রয়েছে আমার আত্মবিশ্বাস, আমার ভালোবাসা, আমার সর্বশক্তিমান ¯্রষ্টার অসীম করুণা। এই তো সবকিছু কিংবা সকলের বিশাল আনুকূল্য অনুভব করছি। একবার অধ্যক্ষ হাসান ওয়াইজ আমায় বলেছিলেন: বড় কিছু কিংবা কোনো কিছু শূন্য থেকে হয় না। আন্তরিক প্রচেষ্টার সঙ্গে গুরুর আশীর্বাদ আর আল্লাহর অনুগ্রহও থাকা লাগে। না হলে কাজের মধ্যে এমন বাধা আসে-যা তুমি অতিক্রম করতে পার না। তিনি আরও বলেছিলেন: উদ্দেশ্য সৎ, কল্যাণমুখী হতে হয়। না হলে, সে সৃষ্টি আলোর মুখ দেখলেও স্থায়ী হয় ক্ষণিকের বুদ্বুদ সমান। আমার চলার পথে, সৃষ্টির ধারায় কোনো কিছুকেই আমি অবহেলার চোখে দেখি না। আমি জানি, ঘৃণা-হিংসা-বিদ্বেষ থেকে অতীতে কিছু হয়নি, ভবিষ্যতেও হবে না। তবু যাদের প্রতি আমার মনে বৈরিভাব তৈরি হয়েছে তা আমি গোপন রেখে পথ চলেছি। তাকে পাশ কেটে গিয়েছি এবং কিছুতেই তা তাকে জানতে দিই নি। যদি সে সমোঝদার হয়-একদিন নিজে থেকেই বুঝে নেবে।
অধ্যক্ষ হাসান ওয়াইজ আরও বলেছিলেন, কী বলেছিলেন জান? বলেছিলেন:
:পাওলো কোয়েলহোর শুভ সময়, শুভ লক্ষণের জন্য অপেক্ষা করা বোকামি। কাজের উদ্দেশ্যে পথে নামলে, শুভ সময় শুভ লক্ষণ হাসি মুখ নিয়ে সামনে এসে দাঁড়ায়। খুব প্রিয় বন্ধুর মত হাত বাড়িয়ে দেয়।

আমার জীবনের আরেকটি স্বপ্ন, আমার রচনাকর্মের মধ্যে সেরা কাজ ‘দর্শন বিশ্ববিদ্যাল’ উপন্যাস, ছাপা হচ্ছে কথাপ্রকাশ থেকে। কাজ চ...
05/07/2024

আমার জীবনের আরেকটি স্বপ্ন, আমার রচনাকর্মের মধ্যে সেরা কাজ ‘দর্শন বিশ্ববিদ্যাল’ উপন্যাস, ছাপা হচ্ছে কথাপ্রকাশ থেকে। কাজ চলছে। আমায় যারা ভালোবাসেন তারা এ কাজ নিয়ে গর্ব করতে পারবেন। চারশো পৃষ্ঠার ওপরে। এ উপস্যাসটি প্রচলিত ধারার বাইরে দার্শনিক কথোপকথনের মাধ্যমে লেখা হয়েছে।

Palestine after bombingBenjamin Netanyahu or Yehuda Yamichi how will you knowDarkness after the bombing-how many faces o...
01/07/2024

Palestine after bombing

Benjamin Netanyahu or Yehuda Yamichi how will you know
Darkness after the bombing-how many faces of Palestinians covered with
American President Joe Biden, or French President
Emmanuel Macron how will you know
how the chest of the survivors is heaving - after the bombing?

No one will understand until they hear the ear-splitting sound
Hundreds of tons of concrete collapsed on the chest, piled up.

If you look closely at Gaza and Rafah in Palestine
Then at least some will understand - if human blood
flows through your body. But if you are a successor
Of the traitor Mir Zafar or the butcher Tikka Khan’ footsteps follower
the General Niazi - then will not understand.

At a safe distance, the latest ammunition
Instead of sitting in a secure enclosure,
You would smile a terrible demonic smile-
Seeing the wounded corpses of women and children.
It’s increase your desire of murder.

The cup of wine will be filled with blood,
And the blood bath will be sanctified.
You can dance, as much happy as a German Shepherd
Then you must know-
A Bangladeshi poet hates you with all his heart.

30/06/2024

বোমা বর্ষণের পর

বোমা বর্ষণের পর কী রকম অন্ধকার নামে
বিনিয়ামিন নেতানিয়াহু কিংবা ইয়াহুদা ইয়ামিচি কী করে জানবে?
বোমা বর্ষণের পর জীবিতদের বুক কেমন ধুকপুক করে
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, কিংবা ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট
ম্যাক্রো কী করে জানবে?

কেউ বুঝবে না যতদিন না কানবিদীর্ণ করা শব্দে
শতটন ওজনের কংক্রিট বুকের ওপর ভেঙে পড়ে, স্তূপিকৃত হয়।

যদি ভালো করে তাকাও ফিলিস্তিনের গাজা আর রাফার দিকে
তাহলে কিছুটা অন্তত বুজবে-যদি মানুষের রক্ত
তোমার শরীরে প্রবাহিত হয়। আর যদি বিশ্বাসঘাতক মীর জাফর
কিংবা কসাই টিক্কার উত্তরসুরী জেনারেল নিয়াজির ঔরসে
তোমার জন্ম হয়ে থাকে-তাহলে বুঝবে না।
নিরাপদ দূরত্বে, সর্বাধুনিক গোলাবারুদের
নিরাপাত্তা বেষ্টনিতে বসে বরং হাসবে ভয়ানক পৈশাচিক হাসি।
নারী-শিশুদের ক্ষতযুক্ত লাশ দেখে তোমার জিঘাংসা আরও বাড়বে।

মদের পেয়ালা ভরে নেবে রক্তে, পূতপবিত্রও হবে রক্তস্নানে।
অতি খুশিতে আদুরে জার্মান শেফার্ডের মত যত ডগমগ করো
জেনো রাখ, বাংলাদেশী এক কবি তোমায় মনেপ্রাণে ঘৃণা করে।

28/06/2024

আমি রয়েছি আমাদের ভিটেমাটির পাহারায়
গাজী সাইফুল ইসলাম

এই নির্মমতার কী নাম দেবো?
এই অত্যাচারের বিষাক্ততা কী দিয়ে রুখব?
তোমরা আমার মৃত ভাইয়ের লাশটাও
কবরের দিকে বহন করতে দিচ্ছ না।
এতটুকু ভিটির মাটিটুকুও কেড়ে নিচ্ছ
ঘরবাড়ি উড়িয়ে দিচ্ছে শক্তশালি দূর নিয়ন্ত্রিত বোমায়।
গতকাল ছিল এই বর্বর হামলা শুরুর ২৫১ দিন
এখনও আমি রয়েছি আমাদের ভিটেমাটির পাহারায়
জীবনের ভয়ে পালিয়ে যাওয়া একজন আরবের
স্বভাববিরুদ্ধ।
একজন ফিলিস্তিনি- হিসেবে জন্মমাত্র আমি জানি
আমার ভগ্যের বরাদ্দ, যেদিন তোমরা এখানে এসেছিল
ভিক্ষুকের বেশে, কিচ্ছু ছিল না, দুচোখ আকুতি ছাড়া।
দু’হাতেও ছিল নাÑএকটি ভাঙা স্যুটকেস ছাড়া।
আশ্রয় দিয়েছি, খেতেও দিয়েছি পবিত্র মনে।

মানুষ তো মানুষের কাছেই যায় আশ্রয়ের জন্য।
তোমরাও এসেছ-আমরাও দিয়েছিÑআর এখন
কী অমানবিক প্রতিদান দিচ্ছ। আশ্চর্য, বিস্ময়ও হার মানে
এমন প্রতারণা দেখে, অকৃতজ্ঞ আর কাকে বলে!

কিন্তু তোমরা সে আশ্রয় দানের উপযোগী ছিল না।
দেশ দেশান্তরে উদ্বাস্তু হয়ে বসবাস করছিলে
সেই ছিল উপযুক্ত। শিক্ষা-জ্ঞান অর্থ আহরণ করেছ
তোমাদের টার্গেটও ছিল স্থিরÑজেরুসালেম।
জানি পবিত্র গ্রন্থই তোমাদের কর্ম নির্দিষ্ট করে দিয়েছে
এভাবেই বিশ্বাসঘাতকতা করবে তোমরা
এবং রক্তাক্ত করবে মানুষের মনের মানচিত্র।

Address


Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Gazisaifulskyviews posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Gazisaifulskyviews:

Shortcuts

  • Address
  • Telephone
  • Alerts
  • Contact The Business
  • Claim ownership or report listing
  • Want your business to be the top-listed Media Company?

Share