Quran & Sunnah

  • Home
  • Quran & Sunnah

Quran & Sunnah কুরআন ও সুন্নাহভিত্তিক তথ্যের জন্য

24/09/2022

শায়েখ হাসান সালেহ হাফিজাহুল্লাহ। যত শুনি ততই শুনতে মন চায়! আল্লাহ তুমি কবুল করো।
সূরা ফুরকান ৬৩-৭৭।

স্ত্রীর লাশ সামনে রেখে, মসজিদে স্বামীর না বলা কথা..... ⚰️ঢাকার একটি  মসজিদে আসরের নামায শেষ করার পর পরই, ইমাম সাহেব জানা...
29/07/2022

স্ত্রীর লাশ সামনে রেখে,
মসজিদে স্বামীর না বলা কথা..... ⚰️

ঢাকার একটি মসজিদে আসরের নামায শেষ করার পর পরই, ইমাম সাহেব জানালেন জানাজার নামাজ আছে। সবাই যেন একটু অপেক্ষা করি।

হাদিসে আবার জানাজার নামাজ পড়তে
উৎসাহিত করা হয়েছে। জানাজার নামাজ মানে নিজের জন্য একটা সেলফ রিমাইন্ডার।
তাই হঠাৎ মনে হল জানাজাটা পড়েই যাই।

ইমাম সাহেব জানালেন, একজন মহিলা মারা গিয়েছেন। ভদ্রমহিলার স্বামী আপনাদের উদ্দেশ্যে কিছু কথা বলবেন।

একজন সত্তরোর্ধ্ব বয়স্ক লোক।
সাদা পাঞ্জাবি পরা, দাঁড়িগুলোও ধবধবে সাদা।
ভদ্র লোক শুরু করলেন........

আসসালামু-আলাইকুম,
আপনারা হয়ত আমাকে চিনবেন না। আমি এলাকাতে নতুন এসেছি। আমার স্ত্রী আজ সকালে ফজরের নামাজের পর আল্লাহর কাছে চলে গেছেন।

আমরা একসাথে গত ৪৫ বছর ধরে সংসার করছি। একটা ছোট সরকারী চাকরী দিয়ে আমি সংসার জীবন শুরু করেছিলাম।

সারাজীবন চেষ্টা করেছি সৎ থাকার জন্য। আল্লাহর কসম খেয়ে বলতে পারি জীবনে কোনদিন এক টাকা অসৎ ভাবে আয় করিনি।

সৎ থাকার কারণে আয়ও ছিল খুব সামান্য। আমাদের তিন ছেলে এবং দুই মেয়ে ছিল। গ্রামের বাড়িতে বাবা-মাকেও কিছু টাকা পাঠাতে হতো। কখনো কখনো মাস শেষ হওয়ার আগে আমার বেতনের টাকা ফুরিয়ে যেত।

আমার সহকর্মীদের মধ্যে আমিই সবচেয়ে গরীব ছিলাম। কিন্তু আমার স্ত্রীর কারণে আমি এটা কখনোই উপলব্ধি করতে পারিনি। উনি যে কিভাবে সবকিছু ম্যানেজ করতেন একমাত্র উনিই জানেন।
আমার সাধ্যের বাইরে জীবনে কখনো কোনদিন উনি কিছু দাবি করেননি। জীবনে কখনো আমাকে এটা বলেন নি যে, আপনি আমাকে এটা দিলেন না, ওটা দিলেন না।

কখনো আমাকে আমার সামর্থ্য নিয়ে কষ্ট দিয়ে উনি কোনো কথা বলেননি। আজীবন ওনাকে শুধু সন্তুষ্টই দেখেছি।

আমার বাবা-মা মারা যাওয়ার আগের শেষের ৪-৫ বছর আমার সাথেই থাকতেন। আমার স্ত্রী আমার মা-বাবারও যথেষ্ট খেদমত করেছেন। কখনো আমাকে এটা বলেন নি যে, আপনার মা-বাবার খেদমত করা আমার দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না।

সত্যি কথা বলতে পেনশনের টাকা পাওয়ার পর হজে নিয়ে যাওয়া ছাড়া আমি উনাকে তেমন কিছুই দিতে পারিনি। তারপরও উনি কোনদিন আমাকে কষ্ট দিয়ে কথা বলেননি।

আমার স্ত্রী একজন নেককার মানুষ ছিলেন। উনি উত্তম আচরণের অধিকারী ছিলেন। আত্মীয়তার হক রক্ষা করেছেন। পরোপকারী ছিলেন, স্বামী-সন্তানদের হক আদায় করেছেন। উনাকে আমি কখনো কোন নামায কাযা করতে দেখিনি, আজীবন পর্দা রক্ষা করে চলেছেন। উনি ধৈর্যশীল ছিলেন এবং অল্পে সন্তুষ্ট ছিলেন।
এক নাগাড়ে কথাগুলো বলে ভদ্রলোক একটু দম নেওয়ার জন্য থামলেন।

এরপর আবার বলতে শুরু করলেন,
আমি আসলে আমার স্ত্রীর হয়ে আপনাদের কাছে মাফ চাওয়ার জন্য এখানে কথা বলছি না। যে নারী ৪৫ বছর ধরে তার স্বামী-সন্তান এবং আত্মীয়দের হক রক্ষা করে চলেছেন তিনি অন্য কারো হক নষ্ট করতে পারেন না।

একজন জান্নাতি নারীর মধ্যে যা যা বৈশিষ্ট্য থাকা প্রয়োজন তার সবই আমার স্ত্রীর মাঝে ছিল। ইনশাআল্লাহ আল্লাহ উনাকে জান্নাত নসিব করবেন।

আমি নিজে জান্নাতে যেতে পারবো কিনা আমি জানি না। আপনারা শুধু এই দোয়া করবেন আমি যেন আমার স্ত্রীর সাথে জান্নাতে একত্রিত হতে পারি।

আর আপনারা সাক্ষী থাকেন আমি আমার স্ত্রীর উপর পুরোপুরি সন্তুষ্ট। আল্লাহ যেন উনাকে মাফ করে দেন।

পুরো মসজিদ ভর্তি মুসল্লী একসাথে বলে উঠল আমিন,আমিন, আমিন।

সাধারণত জানাজার নামাজের আগে মৃতের লোকজন সর্বোচ্চ ৩০ সেকেন্ড থেকে এক মিনিটের বক্তব্য দেন। এই ভদ্রলোক টানা চার-পাঁচ মিনিট তার স্ত্রী সম্পর্কে বললেন।

কোন মুসল্লী এতোটুকু বিরক্তি প্রকাশ করলেন না। সবাই মন্ত্রমুগ্ধের মতো একজন জান্নাতি নারীর কথা শুনলেন।

হাদিসে এসেছে, একজন মুমিন-মুমিনার জীবনে তার রবের তরফ থেকে সর্বোত্তম রিযিক হচ্ছে একজন নেককার স্বামী এবং স্ত্রী। এই ভদ্রলোকের কথা থেকে যেন সরাসরি এই হাদীসের প্রমাণ পেলাম।

মসজিদ থেকে বের হলাম একটা অপূর্ব ভালো লাগা নিয়ে। সুখী মানুষদের কথা শোনার মধ্যেও একটা সুখ আছে।

আল্লাহ সুবহানাহু তাআলা আমাদের সকলকে বুঝার তৌফিক দান করুন।
আমিন।

সংগৃহীত.....

আল্লাহ তাআলা সবার ঘরে ঘরে এমন কুররাতু আ’য়ুন স্ত্রী দান করুন

10/06/2022

উনি কেমন মহিলা যে, রাতে দো'য়া করে আর
সকালে তার ফল ভোগ করে……!
আমি পৃথিবীর অনেক গুলো রাষ্ট্রের মধ্যে,
কয়েকটি রাষ্ট্র সফর করেছি, এর মধ্যে জর্ডান
সফরের একটা অংশ তুলে ধরছি -
:
আমি আর আমার স্ত্রী যখন জর্ডানে পৌঁছে
গেলাম, তখন তাবলীগ জামায়াতের আমীর সাহেব,
আমাদেরকে তাদের বাসায় নিয়ে গেল, আমরা
দুজনেই ভীষণ অবাক হলাম।
মাত্র দু কক্ষ বিশিষ্ট একটা ঘর, ঘরের মধ্যে এক
পাশে কিছু থালা-বাসন, তরকারির ঝুড়ি, একটা কাঠের উপর
কয়েকটি কাপড়, আর আরাম করার জন্য একটা মাদুর, ও
দুই খানা ইট।
আমার স্ত্রীকে নিয়ে এক কক্ষে আর আমাকে
আরেক কক্ষে নিয়ে গেলো, উনার মোট ছয়টি
মেয়ে, যারা সবাই পরিপূর্ণ পর্দা করে, আর একটা খুব
ছোট ছেলে বাচ্চা কোলে।
ছেলেটির বয়স যখন একদিন, তখনই তার মা, কালো
একটা কাপড় দিয়ে বাচ্চার চোখ বেঁধে দুধ পান
করায়, এখন ওর বয়স এক বছর, ওর যখন দুধ খাওয়ার
নেশা চাপে, তখনই কালো কাপড়টা মায়ের হাতে
তুলে দেয়!!
বোনদের সাথে কিতাবের উপর হাত দিয়ে পড়ার
চেষ্টা করে।
আমার স্ত্রীকে খাবার দেওয়ার পর, তিনি এইসব
দৃশ্য দেখে দোয়া না পড়েই খাবার মুখে দিতে
গেলেন, ৪ বছরের পিচ্চি মেয়ে, আমার স্ত্রীর
হাত চেপে ধরলেন, আর বললেন দোয়া না
পড়লে খাবার খেতে দেবোনা, এইসব দৃশ্য আমি
খুব উপভোগ করছিলাম আর জুতা পায়ে দিচ্ছিলাম,
পিচ্চিটা দৌঁড়ে এসে বললো, চাচা আপনি তো বাম
পায়ের জুতা আগে পায়ে দিছেন, এখন খুলে আবার
ভাল করে দোয়া পড়ে ডান জুতা আগে পায়ে দিন।
আমি চিন্তায় বিভোর হয়ে গেলাম, এটা কেমন মা, যার
৪ বছরের মেয়ে, আমার মতো মাওলানার ভুল
ধরিয়ে দেয়।
আমি আমির সাহেবের সাথে রাস্তায় বের হয়ে
একটা গাড়িতে উঠলাম, ড্রাইভার মাতাল থাকার কারনে
হঠাৎই একসিডেন্ট করে গাড়িটি, এবং আমার চোখের
সামনেই আমির সাহেব ইন্তেকাল করেন।
সবাই মিলে ধরাধরি করে লাশটা নিয়ে এলাম, উনার
স্ত্রী, কন্যা লাশ দেখে দোয়া পড়লেন।
যেখানে আমারই ইচ্ছা করছে চিৎকার করে কান্না
করতে, সেখানে উনার পরিবারের কারোরই কান্নার
আওয়াজ শুনতে পেলাম না।
আমার স্ত্রী এসে হাতে কিছু টাকা ধরিয়ে দিয়ে
বললেন, ভাবী ভাইয়ের দাফনের ব্যবস্থা করতে
বলেছে দ্রুত।
আমি সবকিছু এনে দেখি, আমার স্ত্রী একাএকা কান্না
করছে, আমাকে দেখে জড়িয়ে ধরে ভীষণ
জোরে জোরে কান্না শুরু করে দিলো, আমি
তার মুখ চেপে ধরে আওয়াজ বন্ধ করলাম, বললাম
কি হয়েছে??
আমাকে বললো ওগো আমাকে ক্ষমা করো,
তোমার উপযুক্ত স্ত্রী আজও হতে পারিনি, ঐ
দেখ, ভাইয়ের পরিবারের সবাই নামাজে দাঁড়িয়ে কান্না
করছে, আল্লাহর কাছে তার মাগফেরাত কামনা
করছে।
ওগো এতো ধৈর্যশীল পরিবার ও কি এখনো
আছে।
আমি আমার স্ত্রীকে সান্ত্বনা দিয়ে বাহিরে এসে,
লাশের বাকিটুকু কাজ সমাধান করলাম।
রাতের বেলায় হঠাৎই ঘুম ভেঙ্গে গেলো
কান্নার শব্দে, আস্তে আস্তে উঠে গিয়ে শুনি,
ভাবী সাহেবা তার ছয় মেয়েকে নিয়ে তাহাজ্জুদ
সালাতে কান্না করছে।
কি অবাক করা বিষয় এই ৪ বছরের বাচ্চা মেয়েও
মায়ের সাথে সমানে দোয়া করে যাচ্ছে,
মনোযোগ দিয়ে দোয়া করা শুনতে লাগলাম,
এতো দারুণ দোয়া যে, শুনতে শুনতে কখন যে,
আমার চোখের পানি দাড়ি ভিজে মাটিতে পড়ছিল, তা
নিজেও জানিনা, আল্লাহর কাছে বললেন, তার বিয়ের
উপযুক্ত মেয়েকে যেন আল্লাহ দ্রুতই কোন
ব্যবস্থা করে দেন……
আর ও বললেন ইয়া আল্লাহ আমাদেরকে উত্তম
রিযিক দান করো।
আমি ফজরের সালাতের পরে একটু ঘুমিয়ে পড়লাম,
ঘুম থেকে উঠে শুনি, শহরের নাম করা তিন জন
হুজুর প্রচুর পরিমাণে মোহরানা নিয়ে, তার তিন
মেয়েকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছে।
উনি রাজি হওয়ায়, দুপুরে বিয়ে।
আমার খুব কান্না চলে আসলো, উনি কেমন রমনী,
যে কিনা রাতের বেলায় দোয়া করতেই ভোর
বেলায় ফল পায়!
সুবহানআল্লাহ!!
[দাঈ মাওলানা তারিক জামিল (দাঃবাঃ) লেকচারের অনুবাদ]
আপনি যত বড় বিপদ আপদ সমস্যায় জর্জরিত হউন না
কেন আল্লাহর কাছে সাহায্য চান।
আপনি অত আল্লাহ ভীরু দ্বীনদার না হলেও
আল্লাহ আপনাকে ফিরিয়ে দিবেন না।
দোয়া কবুল হওয়ার জন্য তাহাজ্জুদ পড়ে আল্লাহর
কাছে দোয়া করুন।
দোয়া কবুল হওয়ার এর চেয়ে পাওয়ারফুল কোন
আমল নেই।
তাহাজ্জুদ আদায়কারীর দোয়া আল্লাহ অবশ্যই কবুল
করেন।
নিয়মিত তাহাজ্জুদ পড়ার অভ্যাস করুন।
বিপদ আপদ সমস্যা দূর হয়ে যাবে ইন-শা-আল্লাহ।

মাওলানা তারিক জামীল এর জবানে.....
”একজন দ্বীনদার নারীর গল্প”

আমাদের সকলের ভালোবাসার মানুষটি কেমন ছিলেন?________________::আল্লাহ তাআ’লা বলেন- “(হে নবী!) নিশ্চয়ই আপনি মহান চরিত্রের অধ...
07/06/2022

আমাদের সকলের ভালোবাসার মানুষটি কেমন ছিলেন?
________________
:
:
আল্লাহ তাআ’লা বলেন-
“(হে নবী!) নিশ্চয়ই আপনি মহান চরিত্রের অধিকারী।” [সুরা ক্বলমঃ ৪]
:
:
তিনি আরো বলেন-
“যারা আল্লাহ ও শেষ দিবসের প্রতি আশা রাখে এবং আল্লাহকে অধিক পরিমাণে স্মরণ করে, নিশ্চয়ই তাদের জন্যে আল্লাহর রাসুলের মধ্যে উত্তম আদর্শ রয়েছে।” [আহজাবঃ ২১]
তিনি আরো বলেছেন - “নবী (আপনি) মুমিনদের কাছে তাদের নিজেদের চাইতে বেশি আপন।” [সুরা আহজাবঃ ৬]
:
:
নবী সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণিত হাদীসের উপর ভিত্তি করে তিনি দেখতে কেমন ছিলেন, তাঁর ব্যক্তিত্ব কেমন ছিলো, তিনি কিভাবে জীবন পরিচালনা করতেন, ঘর থেকে শুরু করে ব্যক্তি, পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয়ভাবে তাঁর আদর্শ কেমন ছিলো এমন তাঁর জীবনের ছোট-বড় যাবতীয় খুটিনাটি বিষয়ের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা নিয়ে ইমাম তিরমিযী রাহিমাহুল্লাহ সুন্দর একটি বই লিখেছিলেন। বইটির নাম হচ্ছে “শামাইলুন নাবিয়্যি”। বইটি “শামায়েলে তিরমিযী” নামেও পরিচিত। বইটি বাংলা ইংরেজীসহ বিভিন্ন ভাষাতে অনুদিত হয়েছে, আপনারা সংগ্রহ করতে পারেন। “শামাইলুন নাবিয়্যি” বই থেকে নবীজির কিছু বর্ণনা পেশ করা হলো।
:
----------------------------
:
:
(১) নবী সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম দেখতে কত সুন্দর ছিলেন, এ সম্পর্কে জাবির ইবনে সামুরা রাদিয়াল্লাহু আ’নহু বলেন, “একবার আমি চাঁদনী রাতে নবী সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লামকে দেখলাম। অতঃপর, আমি একবার নবী সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লামের দিকে তাকালাম, আর একবার চাঁদের দিকে তাকালাম। তখন তিনি লাল বর্ণের পোশাক পরিহিত অবস্থায় ছিলেন। আমার কাছে তাঁকে চাঁদের চেয়ে অনেক বেশি সুন্দর মনে হলো।” তিরমিযী ও দারেমী। উল্লেখ্য, প্রত্যেক নবীই তাঁদের যুগের সবচাইতে সুন্দর, শক্তিশালী ও আমানতদার ব্যক্তি ছিলেন, এটা নবীদের বৈশিষ্ট্য।
(২) আমাদের প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম খুব লম্বাও ছিলেন না, আবার খুব বেটেও ছিলেন না বরং, তিনি ছিলেন মাঝারি উচ্চতার। তাঁর দেহের গড়ন ছিলো সুঠাম আকৃতির, অর্থাৎ তিনি সুস্বাস্থ্যের অধিকারী ছিলেন। তার উভয় বাহু এবং পা ছিলো মাংসল। তাঁর অংগ-প্রত্যংগের জোড়াগুলো ছিলো মজবুত।
(৩) তাঁর গায়ের রঙ ছিলো অতিশয় সুন্দর গৌর বর্ণের, রক্তিমাভ। তিনি ধবধবে সাদাও ছিলেন না, আবার বেশি তামাটে বর্ণেরও ছিলেন না। সাহাবীরা বলেছেন, তাঁর চেহারা চাঁদের চাইতেও বেশি সুন্দর ছিল।
(৪) তাঁর চুল ছিলো ঈষৎ ঢেউ খেলানো ও সামান্য কোঁকড়ানো। চুলগুলো লম্বা হলে তাঁর বাবড়ি দুকানের লতি পর্যন্ত ঝুলানো থাকতো। তিনি কখনো চুলে সিথি করতেন এবং চুলে তেল দিতেন।
(৫) তার চোখের ভ্রুগুলো ছিলো স্পষ্ট ও কালো, কিছুটা বাঁকানো ও একটা থেকে আরেকটা পৃথক। তার দুই ভ্রুর মাঝখানে একটা রগ ছিলো, যা তিনি রেগে গেলে ফুলে যেতো এবং মুখ লাল হয়ে যেত, যা থেকে স্পষ্ট বোঝা যেত যে, তিনি রাগন্বিত হয়েছেন। তিনি চোখে সুরমা দিতেন এবং আমাদেরকেও সুরমা দিতে উতসাহিত করেছেন।
(৬) তার দাঁতগুলো ছিলো চিকন ও উজ্জ্বল বর্ণের, এবং তাঁর সামনের দুটি দাতের মাঝে কিঞ্চিত ফাঁক ছিলো। তিনি কথা বলার সময় মনে হতো তার সামনের দাঁত থেকে যেন নূর বের হচ্ছে।
(৭) তাঁর চেহারা বা মুখমন্ডল ছিলো চাঁদের মতো উজ্জ্বল, কিছুটা প্রশস্ত। চোখের শুভ্রতার মধ্যে রক্তিম রেখাগুলো স্পষ্ট দেখা যেত। তাঁর নাক ছিলো চেহারার সাথে মানানসই রকমের তীক্ষ্ণ ও উন্নত। তাঁর দাঁড় ছিলো ঘন ও ভরপুর। ইব্রাহীম আ’লাইহিস সালাম এর সাথে তাঁর চেহারার বিশেষ মিল ছিলো।
(৮) তিনি সামনের দিকে একটু ঝুঁকে হাটতেন, মনে হতো যেন উঁচু জায়গা থেকে নিচে অবতরণ করছেন। হাঁটার সময় মাটিতে পা ফেলতেন মৃদুভাবে, পাতলা পদক্ষেপে কিন্তু দ্রুত গতিতে।
(৯) তাঁর দুই কাঁধের মাঝামাঝি জায়গায় ‘মোহরে নবুওত’ বা সর্বশেষ নবুওতের সীল ছিলো। যা কবুতরের ডিমের মতো বড় লাল গোশতের টুকরা এবং সেটা পশম দ্বারা ঢাকা ছিলো এবং চারপাশে তিল ছিলো।
(১০) তিনি কুমারী পর্দানশীল নারীদের চাইতে বেশি লজ্জাশীল ছিলেন।
(১১) তিনি যখন কারো দিকে তাকাতেন তখন সর্বশরীর ফিরিয়ে তাকাতেন। প্রায়ই দৃষ্টি নিচু করে রাখতেন। আসমানের চাইতে জমীনের দিকেই তাঁর দৃষ্টি বেশি নিবদ্ধ থাকতো। স্বভাবত লাজুকতার দরুণ তিনি কারো দিকে পূর্ণ দৃষ্টিতে তাকাতেন না। পথ চলার সময় সংগীদের আগে দিতেন (এবং নিজে পেছনে থাকতেন)। কারো সাথে সাক্ষাত হলে তিনিই আগে সালাম দিতেন।
(১২) নবী সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম যেই দিন মক্কা থেকে হিজরত করে মদীনায় প্রবেশ করেন, সেইদিন সেখানকার প্রতিটি জিনিস জ্যোতির্ময় হয়ে যায়। তারপর যেই দিন তিনি মৃত্যুবরণ করেন, সেইদিন আবার সেখানকার প্রত্যেকটি বস্তু অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে যায়। সাহাবারা তাঁর দাফন-কার্য সমাপ্ত করে হাত থেকে ধূলা না ঝাড়তেই সাহাবাদের মনে পরিবর্তন এসে যায়। [তিরমিযীঃ ৩৬১৮, ইবনু মাজাহঃ ১৬৩১, হাদীসটি সহীহ।]
(১৩) নবী সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম সূর্যগ্রহণ দেখলে ভীত হয়ে পড়তেন, আর নামাযে দাঁড়িয়ে যেতেন যে, হয়তোবা কেয়ামত সংঘটিত হতে যাচ্ছে এই ভয়ে। [ফাতহুল বারীঃ ২/৫৪৫।]
(১৪) নবী সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম যদি রাতের তাহাজ্জুদ নামায কোন কারণে, যেমন যদি ঘুমিয়ে পড়তেন বা মাথা ব্যাথা করছিল, তাহলে তিনি দিনে বার রাকাত (কাযা) আদায় করে নিতেন। [মুসনাদে আহমাদঃ ৬/৯৫।]
(১৫) নবী সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম কখনো কোন খাবারের সমালোচনা করতেন না। তাঁর খাবার পছন্দ হলে যেইভাবে রান্না হতো, খেয়ে নিতেন। আর খেতে রুচি না হলে রেখে দিতেন। কিন্তু খাবারকে খারাপ বলতেন না। [সহীহ মুসলিমঃ ৫২২২।]
(১৬) নবী সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম যখন খুতবাহ বা ভাষণ দিতেন, তখন বক্তব্যের গুরুত্ব ও ভাব-গাম্ভীর্যের কারণে তাঁর দুই চোখ লাল হয়ে যেত। তাঁর কন্ঠ উঁচু হয়ে যেত, আর তাঁর ক্রোধ বেড়ে যেত। [সহীহ মুসলিম, মিশকাতঃ ১৪০৭, জুমার খুৎবা অনুচ্ছেদ।]
(১৭) নবী সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম প্রত্যেকটি জুমুয়া’হর খুতবাতে মিম্বরে উঠে কুরআনের ৫০ নাম্বার সুরা, সুরাতুল ক্বফ তেলাওয়াত করতেন। তিনি জুমুয়া’হর খুতবাতে সুরা ক্বফ এতোবার তেলাওয়াত করেছেন যে, একজন মহিলা সাহাবী রাদিয়াল্লাহু আ’নহা বর্ণনা করেছেন, তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লামের জবান থেকে সুরা ক্বফ শুনতে শুনতে মুখস্থ করে ফেলেছিলেন। [সহীহ মুসলিমঃ ৮৭২, নাসায়ীঃ ৯৪৯।]
(১৮) জান্নাতের সবচাইতে উচু স্তরের নাম হচ্ছে ‘ওয়াসীলাহ’, শুধুমাত্র একজন ব্যক্তি তা অর্জন করতে পারবেন। আর সেই ব্যক্তি হচ্ছেন আমাদের নবী সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম। [তিরমিযীঃ ৩৬১২, মিশকাতঃ ৫৭৬৭, হাদীসটি সহীহ।]
(১৯) তিনি ছিলেন - ‘খাতামুন নাবিয়্যিন’, নবীগণের মোহর বা সর্বশেষ নবী। তিনি ছিলেন মানুষের মাঝে প্রশস্ত হৃদয়ের অধিকারী ও দানশীল, বাক্যালাপে সত্যবাদী, কোমল হৃদয়ের অধিকারী এবং সংগী-সাথী ও বন্ধুদের সাথে সম্মানের সাথে বসবাসকারী। যে কেউ তাঁকে প্রথমবারের মতো দেখেই প্রভাবান্বিত হয়ে পড়ত। যে ব্যক্তি তাঁর সাথে মিশত এবং তাঁর সম্পর্কে অবহিত হতে সে তাঁর প্রতি বন্ধুভাবাপন্ন হয়ে যেত। তাঁর প্রশংসাকারী বলতো, তাঁর আগে বা পরে তাঁর মতো আমি আর কাউকে দেখিনি। তাঁর উপর আল্লাহর করুণা ও শান্তি বর্ষিত হোক।
(২০) চাঁদের বছর অনুযায়ী দুনিয়ার জীবনে তিনি ৬৩ বছর হায়াত পেয়েছিলেন। তিনি ৪০ বছরে নবুওতপ্রাপ্ত হন। এরপর মক্কায় ১৩ বছর মানুষকে আল্লাহর দ্বীনের দিকে, কালিমা ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহা’র দিকে দাওয়াত দেন। মক্কার মুশরিকরা যখন তাঁকে হত্যা করার ষড়যযন্ত্র করছিলো, তখন তিনি মক্কা থেকে হিজরত করে মদীনাতে চলে যান। সেখান থেকে তিনি জীবনের বাকি ১০টি বছর আল্লাহর দ্বীনের জন্য উৎসর্গ করেন।
(২১) জীবনের শেষের দিকে তাঁর কিছু (প্রায় ২০টির মতো) চুল পেকে সাদা হয়ে গিয়েছিলো। এটা দেখে আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আ’নহু একদিন বললেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ! আপনিতো বার্ধক্যে পৌঁছে গেছেন। রাসুলু্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, “সুরা হুদ, সুরা ওয়াকিয়া, সুরা মুরসালাত, সুরা নাবা, সুরা তাকবীর, এ ধরণের সুরাগুলো আমাকে বৃদ্ধ করে দিয়েছে।”
এই সুরাগুলোতে বর্ণিত কিয়ামতের ভয়াবহতা, আখেরাতের কঠিন হিসাব-নিকাশ, জাহান্নামের কঠোর শাস্তি ইত্যাদি বিষয়ের ভীতিকর ও মর্মস্পর্শী বর্ণনা রাসুলু্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম-কে দ্রুত বৃদ্ধ করে দিয়েছিলো।
:
:
এই পৃথিবীতে বসবাসকারী এবং ভবিষ্যতে আগমনকারী সমস্ত মানুষের মাঝে শ্রেষ্ঠ, সমস্ত নবী এবং রাসূলদের সর্দার, ‘রাহমাতুল্লিল আলামীন’, জগতবাসীদের জন্যে রহমত স্বরূপ, মুহাম্মাদ, রাসুলু্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম এর চরিত্র সৌন্দর্য বর্ণনা করা এবং তাঁর যথাযথ প্রশংসা লিখা আমাদের মতো মানুষের জন্যে সত্যিই কঠিন একটা ব্যপার। তাঁর ব্যপারে আমাদের কি করণীয়, সে ব্যপারে স্বয়ং আল্লাহ সুবহা’নাহু তাআ’লা আমাদেরকে শিক্ষা দিয়েছেন - “নিশ্চয় আল্লাহ ও তাঁর ফিরেশতাগণ নবীর প্রতি সালাত-দরুদ পেশ করেন। হে মুমিনগণ! তোমরাও তাঁর প্রতি সালাত পেশ করো এবং তাঁকে যথাযথভাবে সালাম জানাও।” [সুরা আহজাবঃ ৫৬]
:
:
আসুন আমরা সকলেই পড়ি-
__________
:
:
“আল্লাহুম্মা সাল্লি আ’লা মুহাম্মাদিওঁ-ওয়া আ’লা আলি মুহা’ম্মাদ, কামা সাল্লাইতা আ’লা ইব্রাহীমা ওয়া-আ’লা আলি ইব্রাহীম, ইন্নাকা হা’মীদুম মাজীদ। আল্লাহুম্মা বারিক আ’লা মুহাম্মাদিওঁ-ওয়া-আ’লা আলি মুহাম্মাদ, কামা বারা-কতা আ’লা ইব্রাহীমা ওয়া-আ’লা আলি ইব্রাহীম, ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ।”

▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂
সংগৃহীত (তোমরা তোমাদের পালনকর্তার অভিমূখী হও এবং তাঁর আজ্ঞাবহ হও)

15/05/2022

Address


Telephone

+8801727034631

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Quran & Sunnah posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Quran & Sunnah:

Videos

Shortcuts

  • Address
  • Telephone
  • Alerts
  • Contact The Business
  • Videos
  • Claim ownership or report listing
  • Want your business to be the top-listed Media Company?

Share