06/05/2023
দর্শক যুবলীগ নেতা মরহুম জামাল হোসাইন এর হত্যাকাণ্ডের এবার টার্গেট কার দিকে।
কুমিল্লার বৃহত্তর দাউদকান্দি বর্তমান তিতাস উপজেলা ১৯৯১ থেকে বর্তমান ২০০২৩।
১৯৯১ সালের সেপ্টেম্বরে তিতাস তৎকালীন বৃহত্তর দাউদকান্দি উপজেলার জিয়ার কান্দি গ্রামে দলীয় কোন দলের জেল ধরে নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হন মরহুম রিয়াজউদ্দিন মোল্লা।
১৯৯৬ সালে মরহুম নুরুজ্জামান চেয়ারম্যানের ছেলে আল ইমাম রমজানের ঈদের তিন দিন পূর্বে নিজ বাড়িতে স্বয়ং কক্ষে গুলি করে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে।
১৯৯৭ সালের পহেলা জুলাই গৌরীপুর বাজারে জিআরকান্দি ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মরহুম নুরুজ্জামান চেয়ারম্যান কে বিনা দুপুরে প্রকাশ্যে গুলি করে ও পিটিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে ঐদিন তার বড় ছেলে শাহ আলম কেউ পিটিয়ে কুপিয়ে আহত করা হয়েছিল।
১৯৯৮ সালে মরহুম নুরুজ্জামান চেয়ারম্যান এর বড় ছেলে শাহ আলম কে গুম করা হয়েছে আজও পর্যন্ত তার কোন খোঁজ খবর হ দিস পাওয়া যায়নি।
১৯৯৮ সালের পহেলা ডিসেম্বর মরহুম নুরুজ্জামান চেয়ারম্যান এর বড়ভাই মরহুম নজরুল ইসলামের একমাত্র বড় ছেলে খোকনকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসকের গোমতা এলাকায় ট্রাক চাপা দিয়ে হত্যা করা হয়। মরহুম নুরুজ্জামান চেয়ারম্যান হত্যাকাণ্ডের ঘটনার পর জিয়ারকান্দি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হন নুরুজ্জামান চেয়ারম্যানের ছোট ভাই মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম।
২০১১ সালের তেশরাই এপ্রিল রাতে আড়াইহাজারে বন্দুকযুদ্ধে রেবের হাতে নিহত হয়েছেন মোঃ শফিকুল ইসলাম।
২০০৮ সালের ২৮ শে জুলাই নিখোঁজ হয়ে একই বছরের একই মাসের ৩০ শে জুলাই দাউদকান্দি তিতাস দিয়ে বয়ে যাওয়া গোমতী নদীতে বাসমান অবস্থায় পাওয়া যায় তিতাস উপজেলা শ্রমিক দলের সভাপতি বদিউল আলম ভুইয়া। গোমতি নদীর কদমতলী এলাকা থেকে হাত পা বাধা অবস্থায় বৌদিউলের মৃতদেহ উদ্ধার করেন পুলিশ।
২০১৪ সালের ক্যাটা বৃদ্ধ হয়ে মারা যান বিএনপি কর্মী রেজাউল করিম সেন্টু। তিতাস উপজেলার হারাই কান্দি গ্রামের স্থানীয় বাহার গ্রুপ ও ইব্রাহিম গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
২০১৫ সালের ২২ শে মে রাতে তিতাস উপজেলার হায়দর কান্দি স্থানীয় বাহার গ্রুপ ও ইব্রাহিম গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে আওয়ামী লীগের সমর্থক শাহ আলম কে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করেছে।
২০১৬ সালের ২৮ শে মে ইউপি নির্বাচনের দিন প্রকাশ্যে দিনে দুপুরে গুলি করে হত্যা করা হয় তিতাস উপজেলা বলরামপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিনকে।
২০১৬ সালের নভেম্বরের ৮ তারিখ সকালে কুমিল্লায় হাজিরা দিতে যাওয়ার পথে গৌরীপুর বাস স্ট্যান্ড মরে গুলি করে ও নৃশংস ভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয় জিয়ার কান্দি ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও তিতাস উপজেলা যুবলীগের যুগ্ন আহবায়ক মনির হোসেন সরকার এবং তার সাথে ঢাকা মহিউদ্দিন নামের এক যুবককে।
২০১৭ সালের পহেলা এপ্রিল দাউদকান্দির গৌরীপুর জিয়ারকান্দি গোমতি ব্রিজের দক্ষিণ পার্শ গৌরীপুর হোমনা সড়কে নৃশংসভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয় মরহুম মনির চেয়ারম্যান হত্যাকান্ডের দুই আসামী মোহাম্মদ আলী ও আবু সাঈদ নামের দুই যুবককে।
২০১৫ সালের ১৫ই মে কুমিল্লা উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি ও তিতাস উপজেলা জগতপুর গ্রামের ইকবাল হোসেনের ছেলে দুই পক্ষের সংঘষে ছাত্রলীগ নেতা মোঃ মাসুম সরকারক নিহত হন।
২০১৮ সালের ২৬ শে মার্চ রাতে এলোপাতাড়ি গুলি করে হত্যা করা হয় আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ হাজী মনিরকে। তিনি জগতপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন।
২০২২ সালের ৬ ডিসেম্বর দুপুরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয় মানিকান্দি গ্রামের সাবেক চেয়ারম্যান আবু মোল্লার ছেলে যুবলীগের নেতা মোঃ জহিরুল ইসলাম কে।
২০২৩ সালের ৩০শে এপ্রিল রাতে এশার নামাজ পড়তে যাওয়ার পথে ভাড়া বাসার সামনেই তিতাস উপজেলা যুবলীগের যুগ্ন আহ্বায়ক জামাল হোসেনকে দাউদকান্দি উপজেলার গৌরীপুর পশ্চিম বাজার বোরখা পড়ে তিনজন গুলি করে নৃশংসভাবে হত্যা করে।
প্রিয় বৃহত্তর দাউদকান্দি এলাকাবাসী আপনাদের নিকট প্রশ্ন ১৯৯১ সন থেকে ২০২৩ পর্যন্ত যতগুলো হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। এই হত্যাকাণ্ডগুলোর স্বীকার যারা হয়েছেন এবং তাদেরকে যারা হত্যা করেছেন সকলেই কিন্তু আওয়ামী লীগের রাজনীতি অথবা বিএনপির রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন।
আওয়ামী লীগের কাউকে হত্যা করেছেন আওয়ামী লীগেরই কেউ না কেউ অথবা বিএনপি'র কাউকে হত্যা করেছেন বিএনপি' দলের কেউ না কেউ।
অথবা আওয়ামী লীগের কেউ না কেউ হত্যা করেছেন বিএনপি'র কাউকে হতে পারে বিএনপি'র কেউ হত্যা করেছেন আওয়ামী লীগের কাউকে।
কিন্তু অপরাজনীতির ফলে তিতাস দাউদকান্দি এলাকার অনেক যুবক অনেক তরুণ অনেক নেতা অকালে প্রাণ হারিয়েছেন এটাই সত্য।
কিন্তু যেই গ্রুপ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটিয়েছেন হত্যাকাণ্ডে জড়িত এমন কাউকে কি দল থেকে বহিষ্কারের মাধ্যমে শাস্তি প্রদান করা হয়েছে নাকি যারা হত্যাকাণ্ড করেছেন তাদেরকেই শক্তি হিসেবে রাজনীতিবিদরা তাদের পিছনে দাঁড় করিয়ে রাজনৈতিক শক্তি বৃদ্ধির মাধ্যমে ক্ষমতার মসনদে বসে আছে? যদি কোন রাজনীতিবিদ কোন হত্যাকারীকে তার পিছনে রেখে রাজনীতি কর্মকান্ড চালিয়ে যান তাহলে ওই রাজনীতিবিদ কখনোই ভালো কোন রাজনীতিবিদ হতে পারে না কেননা কোন হত্যাকারীকর সাথে সুসম্পর্ক রাখা মানুষগুলো কখনোই ভালো মানুষ হতে পারে না।
আল্লাহতালা পবিত্র কোরআনে বলেছেন যে ব্যক্তি একটা মানুষকে হত্যা করে সে যেন সারা পৃথিবীর মানুষকে হত্যা করল আর যে ব্যক্তি একটা মানুষকে বাঁচিয়ে দিল সে যেন সারা পৃথিবীর মানুষকে বাঁচিয়ে দিল। যেই সন্ত্রাসীরা একে অপরকে হত্যা করেন আর এই সন্ত্রাসীদেরকে যারা ছায়া দেন এমন রাজনীতিবিদরা তারা নিজেরাই সবচেয়ে বড় সন্ত্রাস আসুন এই সন্ত্রাসদের অপরের রাজনীতি নির্মূলে সাধারন জনগণ ঐক্যবদ্ধ হই।
তা না হলে এমন চলমান হত্যাকাণ্ড একটার পর একটা গর্তেই থাকবে প্রতিদিনই কোন না কোন সন্তান অকালে তার বাবাকে হারিয়ে এতিম হতে হবে প্রতিদিনই কোন না কোন যুবতী বোন অকালেই তার স্বামীকে হারিয়ে বিধবার পোশাক পরিধান করতে হবে প্রতিদিনই কোন না কোন অসহায় পিতা-মাতার চোখের পানি জোড়বেন তাদের কলিজার টুকরা সন্তানদের অকালে হারিয়ে।
প্রিয় এলাকাবাসী আপনারা দেখবেন বড় বড় রাজনীতিবিদদের কোন এরকম হত্যাকাণ্ডের স্বীকার হওয়া লাগে না বরং যেই রাজনীতিবিদরা এমন খুন-খারাবিতে জড়িত সন্ত্রাসীদের পিছনে নিয়ে রাজনীতি করেন তাদের সাথে ঠিক তাদের সাথেই ওই পিছনে থাকা নেতাদের কাউকে না কাউকে হত্যা করেন তাদের পিছনে থাকা অন্য কোন না কোন নেতাকে দিয়ে। শুধু তাই নয় যদি কোন হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে ওই মামলা দ্বিতীয় নিজেদের সুবিধামতো ব্যবহার করেন রাজনীতিবিদেরা। নিজেদের স্বার্থ হাসিলে প্রতিপক্ষকে দাবিয়ে দিতে হত্যাকাণ্ডে জড়িত নেই এমন কাউকে আসামি করেন এবং হত্যাকাণ্ডে জড়িত আছে এমন কাউকে মামলায় না জড়ানো ঘটনা ঘটে।
সর্বোপরি রাজনীতিবিদরা এ সমাজে প্লেয়ার হিসেবে অবস্থান নিয়ে আছে আর ফুটবল হিসাবে ব্যবহার করছেন জামালের মত লোক থেকে শুরু করে ১৯৯১ সালের মরহুম রিয়াজ উদ্দিন মোল্লার মত মানুষেরা একের পর এক প্রাণ হারাতেই থাকবেন। যুবলীগ নেতা জামাল হোসেনের হত্যাকাণ্ডের বিষয়টির সত্য প্রকাশ করায় পরবর্তী টার্গেটে নাকি আমিও আছি এমন তথ্যই পাওয়া যাচ্ছে। সকলে দোয়া করবেন আমার জন্য আমার কোন দল নেই বল নেই বাড়ির জোর নেই টাকা পয়সা নেই আছে সৎ সাহস সত্য প্রকাশের আছে মানুষের পাশে থাকার অদম্য ইচ্ছা আছে দোয়া আর ভালোবাসা। দোয়ার ভালোবাসা ছাড়া দেবার মত আমার কাছে আর কোন কিছুই নাই তাই আপনাদের সকলকে দোয়া আর ভালবাসা দিয়ে বিদায় নিতে চাই। ভালো থাকবেন সবাই।