22/05/2020
গল্প
↘️
#ভালোবাসার_উল্টোপিঠে
Part➡️ 01
ভালোবাসার উল্টোপিঠে ঘৃণা থাকে, জানো তো? আমি এখন তোমাকে শুধু ঘৃণাই করি।
"তুমি এমনভাবে কাঁদছো যেন তোমার বাবা তোমাকে জলে ফেলে দিয়েছে। স্টপ ইট ঝিনুক। বিরক্ত লাগছে আমার।
ঝিনুকের দিকে বিরক্তমুখে কথাটা ছুড়ে দিলো রিয়ান।
রিয়ানের কাছ থেকে এমন কথা ঝিনুক একদমই প্রত্যাশা করে নি।তাই ও কান্না থামিয়ে অবাক চোখে রিয়ানের দিকে তাকালো।রিয়ানের চোখে মুখে তখনও বিরক্তির ছাপ।রিয়ান গাড়ির জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে আছে।
কিছুক্ষণ আগেই রিয়ান আর ঝিনুকের বিয়ে হয়েছে। ঝিনুক এখন গাড়ি করে রিয়ানের পাশে বসে রিয়ানের বাড়ির উদ্দেশ্যই যাচ্ছে। ওদের বিয়েটা এরেঞ্জড কাম লাভ ম্যারেজও বলা চলে। দীর্ঘ পাঁচ বছরের সম্পর্ক ছিলো ওদের। যদিও মাঝে একটা বছর কোনো কারনে ওদের কোনো যোগাযোগ ছিলো না। তবে বিয়ের ব্যাপারে রিয়ানের পরিবারই উদ্যোগ নিয়েছে। রিয়ান অফিসে জয়েন করার পর থেকেই ওকে বিয়ের জন্য বলা হলেও ও কিছুতেই রাজি হচ্ছিলো না। অবশেষে রিয়ানের মা ওর বন্ধুদের সাথে কথা বলে ঝিনুকের কথা জানতে পারে। ওদের মাধ্যমেই ঝিনুকের ঠিকানা বের করে বিয়ের ব্যাপারে এগোয়। যদিও রিয়ান প্রথমে রাজি হয়নি।পরে আবার রাজি হয়ে যায়।
মাঝখানের একবছর ওদের কোনো রিলেশন ছিলোনা বলেই হয়তো রিয়ান রাজি হচ্ছিলো না।
এই একটা বছর ঝিনুকের জন্য প্রায় blank.
এক বছর আগেই ঝিনুক আর ওর মায়ের একটা বড়সড় এক্সিডেন্ট হয়। সেই এক্সিডেন্ট এ ঝিনুক বেঁচে গেলেও ওর মা বাঁচতে পারেনি। ঝিনুকও মাথায় খুব আঘাত পায়। শারীরিক আঘাতের সাথেও মাকে চোখের সামনে ওভাবে চলে যেতে দেখে ঝিনুক মেন্টালি বিধস্ত হয়ে যায়।
ওকে এই বছর মানসিক ট্রিটমেন্ট আর কাউন্সিলিং এ রাখা হয়েছিলো। ওর এই একবছরের অনেক কিছুই মনে নেই। এই সময় ওর রিয়ানের কথাও তেমন মনে ছিলো না। তাই ও রিয়ানের সাথে যোগাযোগ করতে পারেনি। কিন্তু ঝিনুক সুস্থ হওয়ার পর রিয়ানের সাথে যোগাযোগ করতে চেয়েও পারেনি। রিয়ান ঝিনুককে নাম্বার থেকে ব্লাক করে দিয়েছে এমনকি ফেসবুক থেকেও ব্লক করে রেখেছে। ওর ফ্রেন্ডস দের সাথে কথা বলার পর জানলো রিয়ান ওর সাথে কথা বলতে চায় না। কিন্তু কেন সেটা ওরাও জানে না।এমনকি ও ঝিনুকের ব্যাপারে কোনো কথা বলতে বা শুনতেও চায়না। ঝিনুক খুব অবাক হয়ে যায়। রিয়ান ওকে প্রচন্ডরকম ভালোবাসতো। হঠাৎ কি এমন হলো যে রিয়ান ওর সাথে কথা বলতেও নারাজ।
ঝিনুক আবারও কিছুটা ভেঙ্গে পড়লেও ওকে সামলে নেয় ওর Psychiatrist নোমান। যার কাউন্সিলিং এ সুস্থ হয়।
নোমানের আরেকটা পরিচয় হলো সে ঝিনুকের বড় ভাই যারিফ এর বন্ধু।
রিয়ানের বাড়ি থেকে বিয়ের প্রস্তাব আসার পর ঝিনুক যেন প্রাণ ফিরে। ওর বিশ্বাস ছিলো রিয়ান ঠিকই ফিরবে।রিয়ান যে ওকে বড্ড ভালোবাসে। ঝিনুক ও তো কম ভালোবাসে নি। ওর ভালোবাসায় তো খুত ছিলো না। ফিরতে তো হতোই রিয়ানকে।
ঝিনুক তখন সবেমাত্র ইন্টার দ্বিতীয় বর্ষে পড়ে। ফেসবুকে পরিচয় হয় রিয়ানের সাথে। টুকটাক কথা থেকে বন্ধুত্ব। তারপর দেখা করা, ফোনে কথা বলতে বলতে সম্পর্কটা কখন যে বন্ধুত্ব ছাপিয়ে ভালোবাসায় রূপান্তর হয়ে গেছে তা দুজনই বুঝতে পারেনি।
ঝিনুকের দুনিয়াটা রিয়ান আর ওর পরিবারকে নিয়েই ছিলো। ঝিনুকের কোনো বন্ধুবান্ধব ছিলো না। ঝিনুকের একমাত্র বন্ধু ছিলো ওর মা। ঝিনুক ওর মায়ের সাথেই সব শেয়ার করতো। এমনকি রিয়ানের কথাও। ঝিনুক কলেজ / ভার্সিটিতে ক্লাস করেই বাসায় চলে আসতো। ক্লাস ছাড়া এক মিনিটও ও কোথাও লেট করতো না।
পড়াশোনা আর রিয়ানকে নিয়ে ভালোই ছিলো ঝিনুক। আর মা তো ওর দুনিয়া ই।
সেই মাকে চোখের সামনে পরকালে পাড়ি জমাতে দেখে ঝিনুক অসাভাবিক আচরন করতে শুরু করে। নিজের মাথায় তো আঘাত ছিলো ই।
রিয়ান ওর খোঁজ না নেওয়ায় প্রথমে ঝিনুক একটু অভিমান করলেও পরে আবার ভাবলো রিয়ান কি করেই বা ওর খোঁজ নিবে।ওরা তো এক্সিডেন্ট এর পর ওদের ঢাকার ফ্লাট ছেড়ে গ্রামের বাড়িতে চলে গেছিলো। সেখানকার ঠিকানা তো রিয়ান জানতো না।রিয়ানের তো ঝিনুকের কোনো রিলেটিভ এর সাথেও যোগাযোগ ছিলো না। রিয়ান তো শুধু ওর মায়ের সাথেই কথা বলতো।রিয়ানের ওর অবধি পৌছানো সম্ভব ছিলো না।
চলবে?
আপনারা পাশে থাকলে নিয়মিত অনেক সুন্দর, মজার মজার গল্প দিব।
Waiting for next part.
↘️
Please comment kore janaben kamon hoise.