28/02/2023
----------------------------------------------------------
ক্ষতিকারক চুক্তির কারণে বিদ্যুৎ না নিলেও আদানির পকেট ভরাতে হবে বাংলাদেশের জনগনকে!
----------------------------------------------------------
জালিয়াতির দায়ে অভিযুক্ত ভারতের গৌতম আদানির সাথে গোপন চুক্তি করে হাসিনার সরকার বাংলাদেশে ১৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করতে যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঐ চুক্তির ফলে লাভের ভাগ গৌতম আদানির, আর লোকসানটা হবে বাংলাদেশের! জ্বি হ্যাঁ, আদানির সাথে এমনই এক গোপন চুক্তি করেছে হাসিনার সরকার!
#এই চুক্তি অনুযায়ী ভারত সরকারকে প্রদেয় আদানি পাওয়ারের করের বোঝা আগামী ২৫ বছর পর্যন্ত বহন করবে, অর্থাৎ বাংলাদেশের জনগর ভারতে ১ বিলিয়ন ডলার কর দিতে হবে। অথচ ভারতীয় কোম্পানিটি তার সরকারের কাছ থেকে ঐ কর ইতোমধ্যে ছাড় পেয়েছে। অর্থাৎ চুক্তিটি এমনভাবে সাজানো হয়েছে, যেখানে আদানি ভারত সরকারকে ট্যাক্স দেবে না, অথচ সেই ট্যাক্স বাংলাদেশকে দিয়ে যেতে হবে।
#এই চুক্তির ফলে বাংলাদেশ আগামি ২৫ বছর পর্যন্ত আদানির কাছ থেকে ১৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কিনতে বাধ্য! বিদ্যুৎ না কিনলেও ক্যাপসিটি দিতে হবে ২৫ বছর পর্যন্ত, অর্থাৎ প্রায় ১ লক্ষ ১০ হাজার কোটি টাকা, যা তিনটি পদ্মা সেতুর খরচ!
#চুক্তি অনুযায়ী, প্রয়োজন না হলেও কমপক্ষে ৩৪ শতাংশ মানে ৫৪৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আনতেই হবে। এই পরিমান বিদ্যুৎ না আনলে জরিমানা গুনতে হবে বাংলাদেশকে।
#অন্য সোর্স থেকে যে দামে বিদ্যুত কেনে, তার তিন গুণ দাম দিতে হবে আদানিকে!
#এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য যে কয়লা ব্যবহার করা হবে, সেখানে ২৫০ ডলারের কয়লার জন্য বাংলাদেশকে দিতে হবে ৪০০ ডলার হারে!
#গোপন এই চুক্তি বাংলাদেশ পক্ষ থেকে বাতিলও করতে পারবে না। ২৫ বছর পর্যন্ত ঘানি টানতে হবে।
#এখন এটা মোটামুটি পরিষ্কার যে, আদানির সাথে শেখ হাসিনার সরকার বিদ্যুৎ কেনার যে চুক্তিটা করেছে এটা বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী চুক্তি। মানে ক্ষতিগ্রস্থ হবে বাংলাদেশ।
#খবরে লেখা হয়েছে, এই ক্ষতিকারক চুক্তিটি ভালো করে না পড়েই বাংলাদেশের কর্মকর্তারা সই করেছিল, অর্থাৎ যে কাগজ দিয়েছে আদানি, সেটাই ভালো করে যাচাই বাছাই না করে সই করে দিয়েছে বাংলাদেশের পিডিবির অফিসাররা! ভারতীয় কংগ্রেস তাই প্রশ্ন করেছে, বাংলাদেশকে ঐ চুক্তি সই করতে মোদি চাপ দিয়েছিল কি না?
যত দিন যাচ্ছে চুক্তির মধ্যে গোপন অনেক গোপন শর্ত বেরিয়ে আসতেছে। অবাক করা একটা বিষয়, যেখানে বলা হচ্ছে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২৫ হাজার মেগাওয়াট, যেখানে চাহিদা হচ্ছে সর্বোচ্চ ১২০০০ মেগাওয়াট, সেখানে কেনো আদানি থেকে ১৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কিনতে হবে উচ্চ মূল্যে? হিসাবটা কি? ভাগ বাটোয়ারা কি রকম
এই গোপন চুক্তির সাথে জড়িত কারা?
-------------------------------
আদানির সাথে ঐ চুক্তি সই করেছিল পিডিবির সচিব পদে কর্মরত মিনা মাসুদুজ্জামান নামে বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের ২০তম ব্যচের এক উপসচিব, যার বাড়ি গোপালগঞ্জ। সেদিন ঐ চুক্তি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিল না বিদ্যুৎ মন্ত্রী বা সচিব, কেবল একজন জয়েন্ট সেক্রেটারি উপস্থিত ছিল। কেনো মন্ত্রী সচিব অনুপস্থিত ছিল? ভবিষ্যতের দায় এড়াতেই কি? কিন্তু এভাবে কি দায় এড়ানো যায? ভারতের সাথে এই অসম চুক্তি করার এখতিয়ার কি ছিল ঐ পিডিবি সচিবের? থাকলে কোন্ আইনে- পিডিবি আইনে? নাকি পিপিআর আইনে? এগুলো পরীক্ষা করে দেখতে হবে।
তখন আরও যারা ঐ চুক্তির সাথে জড়িত ছিল তাদের মধ্যে বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব ডঃ আহমদ কায়কাউস অন্যতম, যিনি পরে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব হন।
পিডিবির চেয়ারম্যান ছিলেন খালেদ মাহমুদ, বর্তমানে বারাকা পাওয়ারের স্বাধীন পরিচালক। তিনি এখন ঐ চুক্তির বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি নন। খালেদ মাহমুদ বলেন, 'আমি এ বিষয়ে কথা বলতে আগ্রহী না। বুঝতেই পারছেন, এখন সময়টা ঝুঁকিপূর্ণ।'
এতে জড়িত ছিল বিদ্যুৎ বিভাগের মন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু, যিনি এখনও চুক্তিতে খারাপ কিছু দেখছেন না।
আরও জড়িত ছিল, জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক এলাহী চৌধুরী, যিনি বলছেন চুক্তিটি গোপন, এটি প্রকাশ করা যাবে না।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আদানির সাথে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের করা ঐ গোপন চুক্তিটি বাংলাদেশের জনগনের স্বার্থবিরোধী- অর্থাৎ রাষ্ট্রবিরোধী।