30/01/2024
#পর্ব৭১৫ #শ্রীমদ্ভাগবতম্ (নিত্যং ভাগবতসেবয়া)◾
❤️❤️👍👍👍
»»»»»মঙ্গলাচরণ««««««
ওঁ অজ্ঞানতিমিরান্ধস্য জ্ঞানাঞ্জনশলাকয়া।
চক্ষুরুন্মীলিতং যেন তস্মৈ শ্রীগুরবে নমঃ ॥
অনুবাদঃ- অজ্ঞতার গভীরতম অন্ধকারে আমার জন্ম হয়েছিল এবং আমার গুরুদেব জ্ঞানের আলোকবর্তিকা দিয়ে আমার চক্ষু উন্মীলিত করেছেন। তাঁকে আমার সশ্রদ্ধ প্রণতি নিবেদন করি।
নমো ওঁ বিষ্ণুপাদায় কৃষ্ণপ্রেষ্ঠায় ভূতলে।
শ্রীমতে ভক্তিবেদান্ত স্বামীনিতি নামিনে॥
নমস্তে সারস্বতে দেবে গৌরবাণী প্রচারিণে।
নির্বিশেষ শূন্যবাদী পাশ্চাত্যদেশ তারিণে॥
অনুবাদঃ- শ্রীকৃষ্ণের চরণাশ্রিত ও একান্ত প্রিয়ভক্ত কৃষ্ণকৃপাশ্রীমূর্তি শ্রীল অভয়চরণারবিন্দ ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদকে আমি আমার সশ্রদ্ধ প্রণতি নিবেদন করি। হে প্রভুপাদ, হে সরস্বতী গোস্বামী ঠাকুরের প্রিয় শিষ্য, কৃপাপূর্বক শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর বাণী প্রচারের দ্বারা নির্বিশেষবাদ ও শূন্যবাদপূর্ণ পাশ্চাত্যদেশ উদ্ধারকারী, আপনাকে আমি আমার সশ্রদ্ধ প্রণতি নিবেদন করি।
শ্রীচৈতন্যমনোহভীষ্টং স্থাপিতং যেন ভুতলে।
স্বয়ং রূপঃ কদা মহাং দদাতি স্বপদান্তিকম্ ॥
অনুবাদঃ- শ্রীল রূপ গোস্বামী প্রভুপাদ, যিনি শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর অভিলাষ পূর্ণ করবার জন্য এই পৃথিবীতে আবির্ভূত হয়েছিলেন, আমি কবে তাঁর শ্রীপাদপদ্মের আশ্রয় লাভ করতে পারব?
বন্দেহহং শ্রীগুরোঃ শ্রীযুতপদকমলং শ্রীগুরু বৈষ্ণবাংশ্চ
শ্রীরূপং সাম্রজাতং সহগণরঘুনাথান্বিতং তং সজীবম্ । সাদ্বৈতং সাবধৃতং পরিজনসহিতং কৃষ্ণচৈতন্যদেবং
শ্রীরাধাকৃষ্ণপাদান সহগণললিতা-শ্রীবিশাখান্বিতাংশ্চ॥
অনুবাদঃ- আমি আমার গুরুদেবের পাদপদ্মে ও বৈষ্ণববৃন্দের শ্রীচরণে আমার সশ্রদ্ধ প্রণতি নিবেদন করি। আমি শ্রীরূপ গোস্বামী, তাঁর অগ্রজ শ্রীসনাতন গোস্বামী, শ্রীরঘুনাথ দাস, শ্রীরঘুনাথ ভট্ট, শ্রীগোপাল ভট্ট ও শ্রীল জীব গোস্বামীর চরণকমলে আমার সশ্রদ্ধ প্রণতি নিবেদন করি। আমি শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য, শ্রীনিত্যানন্দ, শ্রীঅদ্বৈত, শ্রীগদাধর, শ্রীবাস ও অন্য পার্ষদবৃন্দের পাদপদ্মে আমার সশ্রদ্ধ প্রণতি নিবেদন করি। আমি শ্রীমতি ললিতা ও বিশাখাসহ শ্রীমতী রাধারাণী ও শ্রীকৃষ্ণের চরণকমলে আমার সশ্রদ্ধ প্রণতি নিবেদন করি।
হে কৃষ্ণ করুণাসিন্ধো দীনবন্ধো জগৎপতে।
গোপেশ গোপিকাকান্ত রাধাকান্ত নমোহস্তু তে॥
অনুবাদঃ- হে আমার প্রিয় কৃষ্ণ! তুমি করুণার সিন্ধু, তুমি দীনজনের বন্ধু, তুমি সমস্ত জগতের পতি, তুমি গোপীদের ঈশ্বর এবং শ্রীমতী রাধারাণীর প্রেমাস্পদ। আমি তোমার পাদপদ্মে আমার সশ্রদ্ধ প্রণতি নিবেদন করি।
তপ্তকাঞ্চনগৌরাঙ্গি রাধে বৃন্দাবনেশ্বরি।
বৃষভানুসুতে দেবি প্রণমামি হরিপ্রিয়ে ॥
অনুবাদঃ- শ্রীমতি রাধারাণী, যাঁর অঙ্গকান্তি তপ্তকাঞ্চনের মতো, যিনি বৃন্দাবনের ঈশ্বরী, যিনি মহারাজ বৃষভানুর দুহিতা এবং ভগবান শ্রীকৃষ্ণের প্রেয়সী, তাঁর চরণকমলে আমি আমার সশ্রদ্ধ প্রণতি নিবেদন করি।
নীলাচল নিবাসায় নিত্যায় পরমাত্মনে ।
বলভদ্র সুভদ্রাভ্যাং জগন্নাথায় তে নমঃ ॥
অনুবাদঃ- পরমাত্মা স্বরূপ যারা নিত্যকাল নীলাচলে বসবাস করেন, সেই বলদেব, সুভদ্রা ও জগন্নাথদেবকে প্রণতি নিবেদন করি।
নমো মহাবদান্যায় কৃষ্ণপ্রেমপ্রদায়তে।
কৃষ্ণায় কৃষ্ণচৈতন্যনাম্নে গৌরত্বিষে নমঃ ॥
অনুবাদঃ- হে মহাবদান্য অবতার! আপনি স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণ, শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুরূপে অবতীর্ণ হয়েছেন। আপনি শ্রীমতি রাধারাণীর অঙ্গকান্তি গ্রহণ করেছেন। আপনি ব্যাপকভাবে শুদ্ধ শ্রীকৃষ্ণপ্রেম বিতরণ করেছেন। আপনাকে আমার সশ্রদ্ধ প্রণতি নিবেদন করি।
বৃন্দায়ৈ তুলসী দেব্যৈ প্রিয়ায়ৈ কেশবস্য চ।
বিষ্ণুভক্তি প্রদে দেবী সত্যবত্যৈ নমাে নমঃ॥
অনুবাদঃ- কেশবপ্রিয়া বৃন্দাদেবী যিনি বিষ্ণু-ভক্তি প্রদান করেন সেই সত্যবতী তুলসী দেবীকে আমি বারবার প্রণাম নিবেদন করি।
বাঞ্ছাকল্পতরুভ্যশ্চ কৃপাসিন্ধুভ্য এব চ।
পতিতানাং পাবনেভ্যো বৈষ্ণবেভ্যো নমো নমঃ ॥
অনুবাদঃ- সমস্ত বৈষ্ণব-ভক্তবৃন্দ, যাঁরা বাঞ্ছাকল্পতরুর মতো সকলের মনোবাঞ্ছা পূর্ণ করতে পারেন, যাঁরা কৃপার সাগর ও পতিতপাবন, তাঁদের চরণকমলে আমি আমার সশ্রদ্ধ প্রণতি নিবেদন করি।
জয় শ্ৰীকৃষ্ণচৈতন্য প্রভু নিত্যানন্দ।
শ্রীঅদ্বৈত গদাধর শ্রীবাসাদি গৌরভক্তবৃন্দ ॥
অনুবাদঃ- শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য প্রভু নিত্যানন্দ, শ্রীঅদ্বৈত আচার্য, শ্রীগদাধর ও শ্রীবাস আদি গৌরভক্তবৃন্দের চরণকমলে আমি আমার সশ্রদ্ধ প্রণতি নিবেদন করি।
"হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে।
হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে॥"
নারায়ণং নমস্কৃত্য নরং চৈব নরোত্তমম্।
দেবীং সরস্বতীং ব্যাসং ততো জয়মুদীরয়েৎ॥
অনুবাদঃ- সংসার-বিজয়ী গ্রন্থ শ্রীমদ্ভাগবত উচ্চারণ করার পূর্বে পরমেশ্বর ভগবান নারায়ণ, সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ নর-নারায়ণ ঋষি নামক ভগবৎ-অবতার, বিদ্যাদেবী সরস্বতী এবং ব্যাসদেবকে আমি আমার সশ্রদ্ধ প্রণতি নিবেদন করি।
নষ্টপ্রায়েম্বভদ্ৰেষু নিত্যং ভাগবতসেবয়া ৷
ভগবত্যুত্তমশ্লোকে ভক্তিৰ্ভবতি নৈষ্ঠিকী॥
অনুবাদঃ- নিয়মিতভাবে শ্রীমদ্ভাগবত শ্রবণ (কীর্তন) করলে এবং ভগবানের শুদ্ধ ভক্তের সেবা করলে হৃদয়ের সমস্ত কলুষ সম্পূর্ণরূপে বিনষ্ট হয়, এবং তখন উত্তম শ্লোকের দ্বারা বন্দিত পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের প্রতি প্রেমময়ী ভক্তি সুদৃঢ়রূপে প্রতিষ্ঠিত হয়।
"ওঁ নমো ভগবতে বাসুদেবায়
ওঁ নমো ভগবতে বাসুদেবায়
ওঁ নমো ভগবতে বাসুদেবায়"
»»»»»»হরে কৃষ্ণ««««««
"শ্রীমদ্ভাগবত"
দশম স্কন্ধ, চতুষষ্টিতম অধ্যায়, অধ্যায়ের নাম:-
(রাজা নৃগ উদ্ধার)
⚜️ শ্রীশুকদেব গোস্বামী পরীক্ষিৎ মহারাজকে বললেন–
সেই দিব্য পুরুষটি উত্তর দিলেন
"এরপর অল্পকালের মধ্যে আমার মৃত্যু হয় এবং যমদূতেরা আমাকে যমরাজের দরবারে নিয়ে যায়। যম আমাকে জিজ্ঞাসা করেন যে, আমি প্রথমে কি করতে চাই-আমার পাপ কর্মফলের জন্য দুঃখ ভোগ কিংবা পুণ্য কর্মফলের জন্য আনন্দ উপভোগ। আমি প্রথমে আমার পাপ কর্মফল ভোগ করতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি এবং তাই আমি একটি গিরগিটির দেহ ধারণ করেছিলাম।" নৃগরাজ তাঁর কাহিনী বর্ণনা করার পরে, তিনি ভগবান শ্রীকৃষ্ণের উদ্দেশ্যে স্তব নিবেদন করেন।
শ্লোক ২৩
পূর্বং ত্বমশুভং ভুঙ্ক্ষ উতাহো নৃপতে শুভম্ ।
নান্তং দানস্য ধর্মস্য পশ্যে লোকস্য ভাস্বতঃ ॥ ২৩ ।॥
অনুবাদঃ- [যমরাজ বললেন- হে রাজন, তুমি কি প্রথমে তোমার পাপের ফল ভোগ করতে চাও, কিংবা তোমার সমস্ত ধর্মকর্মের ফল ভোগ করবে? বাস্তবিকই, তোমার কর্তব্যনিষ্ঠ দানের তথা ফলস্বরূপ আনন্দোজ্জ্বল স্বর্গসুখ ভোগের কোনই অন্ত দেখছি না।
শ্লোক ২৪
পূর্বং দেবাশুভং ভুঞ্জ ইতি প্রাহ পতেতি সঃ ।
তাবদদ্রাক্ষমাত্মানং কৃকলাসং পতন্ প্রভো ॥ ২৪ ॥
অনুবাদঃ- আমি উত্তর দিলাম, "প্রথমে, হে প্রভু, আমাকে পাপ কর্মফল ভোগ করতে দিন, এবং যমরাজ বললেন, "তা হলে পতন হোক।" তৎক্ষণাৎ আমার পতন হল, এবং হে প্রভু, পতন কালে আমি নিজেকে একটি গিরগিটি হয়ে যেতে দেখলাম।
শ্লোক ২৫
ব্রহ্মণ্যস্য বদান্যস্য তব দাসস্য কেশব ।
স্মৃতির্নাদ্যাপি বিধ্বস্তা ভবৎসন্দর্শনার্থিনঃ ॥ ২৫ ॥
অনুবাদঃ- হে কেশব, আপনার দাস রূপে আমি ব্রাহ্মণদের প্রতি ভক্তিপরায়ণ এবং তাঁদের অকাতরে দান করতাম এবং আমি নিয়ত আপনার দর্শনলাভের উৎসুক হয়ে থাকতাম। তাই, এখনও আমার অতীত জীবন আমি বিস্মৃত হইনি।
শ্লোক ২৬
স ত্বং কথং মম বিভোহক্ষিপথঃ পরাত্মা
যোগেশ্বরৌঃ শ্রুতিদৃশামলহৃদ্বিভাব্যঃ ।
সাক্ষাদধোক্ষজ উরুব্যসনান্ধবুদ্ধেঃ
স্যান্মেহনুদৃশ্য ইহ যস্য ভবাপবর্গঃ ॥ ২৬ ॥
অনুবাদঃ- হে সর্বশক্তিমান, এখানে আমার সামনে আমার দু'নয়ন আপনাকে দর্শন করছে, এটা কিভাবে সম্ভব হল? আপনি পরমাত্মা, যাকে মহা-যোগেশ্বরগণ তাঁদের শুদ্ধ- অন্তরে কেবলমাত্র চিন্ময় বেদনয়নের মাধ্যমেই ধ্যান করেন। তা হলে, হে অধোক্ষজ, জাগতিক জীবনের দুঃসহ দুর্বিপাকে আমার বুদ্ধি অক্ষম হয়ে পড়লেও কিভাবে আপনি প্রত্যক্ষরূপে আমার দৃষ্টি গোচর হলেন? যিনি এই পৃথিবীতে তাঁর জড় জাগতিক বন্ধন ছিন্ন করেছেন, কেবলমাত্র তিনিই তো আপনাকে দর্শনে সমর্থ হন।
◾তাৎপর্য- গিরগিটির শরীরের মধ্যে থেকে নৃগরাজ তাঁর পূর্ব জীবন স্মরণ করতে পারছিলেন। আর এখন, শ্রীভগবানকে দর্শন করার সুযোগ পেয়ে, তিনি বুঝতে পারলেন যে, পরমেশ্বর ভগবানের কাছ থেকে তিনি বিশেষ কৃপা লাভ করেছেন।
শ্লোক ২৭-২৮
দেবদেব জগন্নাথ গোবিন্দ পুরুষোত্তম ।
নারায়ণ হৃষীকেশ পুণ্যশ্লোকাচ্যুতাব্যয় ॥ ২৭ ॥
অনুজানীহি মাং কৃষ্ণ যান্তং দেবগতিং প্রভো ।
যত্র ক্বাপি যতশ্চেতো ভূয়ান্মে ত্বৎপদাম্পদম্ ॥ ২৮ ॥
অনুবাদঃ- হে দেবদেব, জগন্নাথ, গোবিন্দ, পুরুষোত্তম, নারায়ণ, হৃষীকেশ, পুণ্যশ্লোক, অচ্যুত, অব্যয়! হে কৃষ্ণ, দয়া করে আমায় প্রস্থানের অনুমতি প্রদান করুন। আমি যেখানেই বাস করি, হে প্রভু, আমার মন যেন সর্বদা আপনার শ্রীচরণে আশ্রয় গ্রহণ করে।
◾তাৎপর্য- শ্রীল বিশ্বনাথ চক্রবর্তী ঠাকুর এই শ্লোকের ভাষ্য প্রদান করেছেন-শ্রীভগবানের কৃপা লাভ করে নৃগরাজের বিশ্বাস আরও দৃঢ় হয়েছিল, তাই দাস্যের মর্যাদা লাভ করে তিনি যথাযথভাবে ভগবানের নাম কীর্তন করার মাধ্যমে তাঁর বন্দনা করেছিলেন এবং প্রস্থানের জন্য ভগবানের অনুমতি প্রার্থনা করেছিলেন। তাঁর প্রার্থনার মূল ভাব ছিল এরকম-'আপনি দেবদেব, দেবতাদেরও ঈশ্বর, এবং জগন্নাথ, জগতের নাথ, তাই কৃপা করে আমারও প্রভু হোন। হে গোবিন্দ, যে কৃপাদৃষ্টি আপনি গাভীদের মোহিত করার জন্য প্রয়োগ করেন, সেই একই কৃপাপূর্ণ দৃষ্টি দিয়ে আমাকে আপনার নিজ সম্পদ করে নিন। আপনি তা করতে পারেন কারণ আপনি পুরুষোত্তম, ভগবানের পরম রূপ। হে নারায়ণ, যেহেতু আপনি জীবের মূল স্বরূপ, তাই আমি অসৎ জীব হলেও কৃপা করে আমার সহায় হোন। হে হৃষীকেশ, কৃপা করে আমার ইন্দ্রিয়গুলি আপনারই নিজের সম্পদ করে নিন। হে পুণ্যশ্লোক, এখন আপনি নৃগ উদ্ধারকরূপে খ্যাত হয়েছেন। হে অচ্যুত, কৃপা করে আমার মন থেকে কখনও হারিয়ে যাবেন না। হে অব্যয়, আপনি কখনই আমার মনে ক্ষীণ হবেন না।"
শ্লোক ২৯
নমস্তে সর্বভাবায় ব্রহ্মণেহনন্তশক্তয়ে ।
কৃষ্ণায় বাসুদেবায় যোগানাং পতয়ে নমঃ ॥ ২৯ ॥
অনুবাদঃ- বসুদেব পুত্র শ্রীকৃষ্ণ, আপনাকে আমি বারম্বার আমার প্রণতি নিবেদন করি। আপনি সকল জীবের উৎস, পরম ব্রহ্ম, অনন্ত শক্তিরাশির অধিকারী, যোগের সকল পন্থার অধীশ্বর।
◾তাৎপর্য- শ্রীল শ্রীধর স্বামী মন্তব্য করেছেন যে, ব্রহ্মন্-অর্থাৎ পরম সত্য-যিনি সমস্ত কর্তব্যকর্ম সম্পাদন করা সত্ত্বেও তাঁর অনন্ত শক্তির কোনও হ্রাসবৃদ্ধি বা পরিবর্তন হয় না। নৃগরাজ এখানে তাঁকে প্রণাম নিবেদন করছেন। সেই অতীত কাল হতে ভগবান কিভাবে সকল সৃষ্টিকার্য সাধন করা সত্ত্বেও অপরিবর্তনীয় রূপে নিয়ে বিরাজ করতে পারেন, সেই প্রশ্নে পাশ্চাত্যের দার্শনিকেরা বিহ্বল হয়েছেন। শ্রীধর স্বামী উল্লেখ করছেন যে, এখানে অনন্ত-শক্তয়ে শব্দটির মাধ্যমে এই সন্দেহের উত্তর প্রদান করা হয়েছে, যা শ্রীভগবানকে 'অনন্ত শক্তির অধিকারী' রূপে বর্ণনা করছে। এইভাবে শ্রীভগবান তাঁর অনন্ত শক্তিরাশির মাধ্যমে, তাঁর মূল প্রকৃতির পরিবর্তন না করে, অসংখ্য ক্রিয়াকর্ম সাধন করতে পারেন। জীবনের পরম লক্ষ্য এবং নিত্য আনন্দময় রূপের অধিকারী শ্রীকৃষ্ণকে নৃগরাজ আবার তাঁর প্রণাম নিবেদন করেছেন।
"হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে।
হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে॥"
"হরে কৃষ্ণ"🌷🌷🌷🙏🙏🙏🥰🥰🥰