06/11/2024
"৭ নভেম্বর বিপ্লবের মহানায়ক - শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান
৭ নভেম্বর ১৯৭৫,
সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের সর্বস্তরের জনগণ আর সৈনিকদের সম্মিলিত স্বতঃস্ফূর্ত বিপ্লবের মাধ্যমে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার অনন্য গৌরবদীপ্ত এক মহান দিন। দেশের কঠিনতম ক্রান্তিকালে দেশের আপামর জনগণের অনাবিল ভালোবাসা আর প্রত্যাশার স্বপ্নপুরুষ হয়ে নতুনভাবে আবির্ভূত হয়েছিলেন ৭ নভেম্বর বিপ্লবের মহানায়ক দেশের সফলতম রাষ্ট্রনায়ক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বীর উত্তম। এই সেই একই জিয়াউর রহমান, যিনি ২৬শে মার্চ ১৯৭১ এর স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রথম প্রহরে বিপর্যস্ত আর নেতৃত্বহীন জাতির সামনে প্রত্যাশা আর প্রত্যয়ের প্রতীক হয়ে অসীম সাহসে বিদ্রোহী কন্ঠে উচ্চারণ করেছিলেন “We Revolt’’ আর তার পরপরই তারই প্রত্যয়ী কন্ঠে ঘোষিত হয়েছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা। দেশের সকল ক্রান্তিকালে সকল ভয়কে জয় করে সামনে থেকে বারবার নেতৃত্ব দেয়ার এমন অনন্য উদাহরণের নাম জিয়াউর রহমান।
স্বাধীনতার সকল প্রত্যাশাকে ম্লান করে স্বাধীনতা পরবর্তী আওয়ামী শাসনের সীমাহীন অরাজকতা, দখলদারিত্ব, আইন-শৃঙ্খলার লজ্জাজনক অবনতি, স্মরণকালের ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ, ডাস্টবিনে মানুষ আর কুকুরের উচ্ছিষ্ট কাড়াকাড়ি, রক্ষী বাহিনীর নির্মম নির্বিচার হত্যাকাণ্ড, মানুষের সীমাহীন অধিকার হীনতার প্রেক্ষাপটে ১৯৭৫ এর আগস্ট হত্যাকাণ্ডে রাষ্ট্রপতি নিহতের পরবর্তী অস্থিতিশীল বাংলাদেশ সেনা বিদ্রোহ, পাল্টা বিদ্রোহ আর দেশ-বিদেশের ষড়যন্ত্রে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের স্বাধীনতা আর সার্বভৌমত্ব যখন বিপন্ন এবং অস্তিত্ব ঝুঁকিতে ঠিক তখনই দেশের মানুষের জন্য নতুন প্রত্যাশা আর স্বপ্নের সম্ভাবনা হয়ে এসেছিল ৭ নভেম্বর ১৯৭৫ এর সোনালী সকাল । ঐদিন এদেশের মানুষ সম্পূর্ণ এককভাবে নিজেদের শক্তিতে সফল করেছিল সিপাহী জনতার এই অবিস্মর্ণীয় বিপ্লব, দেশের জনগণের এদিন প্রথমবারের মতো উপলব্ধ করেছিল তাদের ভিতরে জমে থাকা অমিত শক্তি, সারা বিশ্ব স্তম্ভিত হয়ে প্রত্যক্ষ করেছে এদেশের সার্বভৌমত্ব আর স্বাধীনতা সুরক্ষায় কতটা সক্ষম এই ঐক্যবদ্ধ জাতি। জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে সিপাহি জনতার অবিস্মরণীয় বিপ্লবের মহাসমীকরনে বাংলাদেশ নামের রাষ্ট্রটি সেদিন শিশুমৃত্যুর কবল থেকে রক্ষা পেয়েছে।
বাংলাদেশের মানুষের এমন অনন্য বিজয়গাঁথাকে দেড় যুগ ধরে বন্দি রাখা হয়েছিল ইতিহাসের আবদ্ধ কূপে । কারন দেশের স্বাধীনতা আর সার্বভৌমত্ব রক্ষার এমন অনন্য ইতিহাস যেন কোন ভাবেই নতুন প্রজন্মের সামনে আসতে না পারে।
এই বিপ্লব আর সংহতির দিনে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অভিষেকে জন্ম নেয়া জিয়াউর রহমান এ দেশের মানুষকে হতাশ করেননি কখনই। বাকশালের শৃঙ্খলে বন্দী গণতন্ত্র মুক্তি পেয়েছিল তাঁর হাত ধরেই, মত প্রকাশে স্বাধীন হয়েছিল শৃঙ্খলিত সংবাদ মাধ্যম, অন্তহীন দুর্ভিক্ষের বাংলাদেশ দেখেছিল স্বয়ংসম্পূর্ণতা, উষর ফসলহীন জমিতে এসেছিল সবুজের সমারোহ। বেকার যুবকের হতাশার স্থান নিয়েছিল আত্মনির্ভর বৈদেশিক কর্মসংস্থান, অবহেলিত নারী পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়েছিল আত্মমর্যাদায়, পরিণত হয়েছিল কর্মীর সম্পদে । ছাত্র-শিক্ষক-জনতার সহযোগিতায় শতশত মাইলের খাল খনন হয়েছে কৃষি জমিতে সারা বছরের সেচ সংরক্ষণের জন্য, দেশের অর্থনীতিতে যুক্ত হয়েছিল তৈরি পোশাক রপ্তানি আর বৈদেশিক কর্মসংস্থানের মত অনাবিষ্কৃত সম্ভাবনা যা আজও আমাদের অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি, বারডেম হৃদরোগ ইনস্টিটিউট, পঙ্গু ও শিশু হাসপাতালের মত প্রতিষ্ঠানে সেবায় আধুনিকায়ন, শিশু-কিশোরের প্রতিভায় নবজাগরণের সূচনা করেছে নতুন কুড়ি টেলিভিশন প্রতিযোগীতা, আন্তর্জাতিক বিশ্বে সম্মানিত হয়েছে বাংলাদেশ, ইরান ইরাক যুদ্ধের মধ্যস্থতায় আল-কুদস কমিটিতে জিয়াউর রহমান ছিলেন ভ্রাতৃত্বের সেতুবন্ধন, সূচনা হয়েছিল সার্কের, বাংলাদেশ সম্মানিত হয়েছিল জাতীয়সংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য হিসাবে। এসব কিছুরই উজ্জ্বল পটভূমি ছিল ৭ নভেম্বরের বিপ্লব, হয়েছিল এক অসাধারণ রাষ্ট্রনায়কের আবির্ভাব আর অভাবিত জাতীয় ঐক্যের সাক্ষী হয়েছে কোটি কোটি বাংলাদেশী।
দেশের মানুষের নয়নের মনি একজন নির্ভেজাল দেশপ্রেমিক, একজন অমিত সাহসী বীর মুক্তিযোদ্ধা আর একজন প্রশ্নহীন সৎ রাষ্ট্রনায়ক জিয়াউর রহমান আজও স্মৃতিতে ভাস্বর । দেশের জন্য তার ভালোবাসার দায় তিনি শোধ করেছেন এদেশের মাটির সাথে তাঁর শহীদী রক্ত একাকার করে দিয়ে, বিনিময়ে জনতাও তাকে দিয়েছে উজার ভালোবাসা আর অকৃত্রিম সমর্থন, তার অন্তিম বিদায় কে স্মরণীয় করেছে ইতিহাসের বৃহত্তম জানাযায়,
লাখো কোটি শোকার্ত গুনমুগ্ধের ভালোবাসায় নির্ভেজাল অশ্রু বিসর্জনে। বাংলাদেশের ইতিহাসের পাতায় ৭ নভেম্বর আমাদের একক গৌরবের সর্বোচ্চ উদাহরণ, স্বাধীনতা আর সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সেই অবিস্মরণীয় ইতিহাসের ধারাবাহিকতায় আমাদের প্রত্যয়ী অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকুক, নিরাপদ হোক বাংলাদেশ ইতিহাসের উত্তরাধিকারে নব প্রজন্মের অগ্রযাত্রায়।
#৭নভেম্বর
#জিয়া
#জাতীয়বিপ্লবওসংহতিদিবস
#ভাইরাল