03/05/2024
আমার প্রিয় ভাই বোনদের জন্য এই পোস্ট ...
জানুয়ারিতে যখন সকল স্যোসাল প্রজেক্টের দায়িত্ব ছেড়ে দেই নতুন লিডারশীপ এর হাতে। তখন আমাকে অনেকেই জিগ্যেস করেছিলেন যে নতুন দায়িত্বশীলরা কি প্রস্তুত? আমার উত্তর ছিলো : ইনশাআল্লাহ 🤲
আজকের বিয়ে বাড়ি - Biye Bari প্রজেক্টের কাজগুলো ও রামাদানের Shoraikhana - সরাইখানার ইফতার আয়োজন বা জাদুর স্কুল বা সিলেট ওয়ান্ডার ওমেন বা ২৬৩ প্রজেক্টের যেকোনো প্রজেক্ট! সকল প্রজেক্টের ভিন্ন ভিন্ন দায়িত্বশীলরাই নিজেরা মিলে সবকিছু ম্যানেজ করে নিচ্ছেন।
আমরা সম্পুর্ণ ভলান্টারি একটা প্ল্যাটফর্ম। এখানে কিভাবে কাজ হয় তার একটা জলন্ত উদাহরণ হলো বিয়ে বাড়ি - Biye Bari। আপনি পেইজে গেলে দেখতে পারবেন আমাদের একেকজন ভাই বোন একেকটা জিনিস নিজেরাই দিয়ে দেন আর এর মাধ্যমে সবকিছু ম্যানেজ হয়ে যায়। ভলান্টিয়াররা নিজেরা কাজ করে সবকিছু সুন্দরভাবে সম্পন্ন করে নেন।
স্বপ্ন ছিলো, এমন একটা প্ল্যাটফর্ম তৈরি করার। যাতে আমি মারা যাবার পরও যেনো সকল কাজগুলো চলতে থাকে। সবাই মিলে একসাথে যেকোনো ভালো কাজ সম্পাদন যেনো করতে পারেন এমন একটা প্ল্যাটফর্ম। করোনার সময়ে শুধু ক্রাউড ফান্ডিং করা হয়। পরবর্তীতে ক্রাউড ফান্ডিং বাদ দিয়ে হয়, যাতে কেউ কোনো ঝামেলা তৈরির সুযোগ না পায়।
আমরা চাইনা এতো কষ্টের প্ল্যাটফর্ম নিয়ে কেউ কথা বলার কোনো সুযোগ পাক। নারীদের ক্লাস করানো নিয়ে অনেক গালি খেতে হয়। অনেকে মনে করে খেয়ে দেয়ে কাজ নেই তাই নারীদের স্কিল ডেভেলপমেন্ট ট্রেনিং দেয়ানো হচ্ছে। মজার বিষয় হচ্ছে ছেলেদের জন্যও সেইম ব্যবস্থা আছে।
এসব মানুষের কথা হচ্ছে মেয়েদের শিক্ষা হচ্ছে বেকার! অপচয় করতেছি আমরা! কষ্টের বিষয় হচ্ছে অর্ধেক জনশক্তিকে আপনি পিছিয়ে রেখে কখনোই উন্নয়ন সম্ভব নয়! তাই আমরা এসব কথাগুলো কানেই নেইনা। গালি দিতে চাইলে দুইটা বেশি গালি দিয়ে দিয়েন, সমস্যা নেই। অনেক কিছুই বলার থাকে, কিন্তু বলিনা। কারণ সময়ই নেই।
এতোদিনে এতো এতো চ্যালেঞ্জিং সময় পার করতে হয়েছে যে, পার্মানেন্ট অসুস্থতা পেয়ে গেছে। ডাক্তার চাচার পরামর্শ হচ্ছে মোবাইল একেবারে অফ করে দেয়া! কথা বলা বন্ধ করে দেয়া এক বছরের জন্য। কিন্তু কি করবো? মাথায় এতো এতো নতুন নতুন আইডিয়ায় প্রতি নিয়ত কিলবিল করে, আর ভিতরে ফিল হয় যে যেকোনো সময় আল্লাহর কাছে চলে যাবো সময় নেই। তখন নিজেকে দূরে রাখতে পারিনা।
অসুস্থতার (পার্মানেন্ট গর্দানে ব্যাথা) কারণে এখন বেশি সময় কম্পিউটার এ বসাও সম্ভব হয়না। এই কন্টেন্ট লিখতেও ব্রেইক নিয়ে নিয়ে লিখতে হচ্ছে। আমি নাকি ব্রেইনের উপর অতিরিক্ত বেশি জুলুম করে ফেলেছি। আমি জানি যে কাজ করতে হলে গালি খেতে হবে, কিন্তু এটাও জানি যে যেদিন আমি মারা যাবো তখন সকলের চোখ দিয়ে আমার জন্য পানি বের হবে। কারণ আপনি যদি মন থেকে কিছু করেন, ন্যাচার তা ফিরত দিবেই। আমার এই দোয়াটাই প্রয়োজন।
গত কয়েকবছর এ আমেরিকায় মায়ের সাথেও ১০ ১২ বার এর বেশি কথা বলার সুযোগ হয়নি। রিসেন্টলি সেই সুযোগ হচ্চে। গতকাল মা বলতেছিলেন যে, উনার কষ্ট হচ্ছে আমি দেশে একেবারে একা! ব্লাড রিলেটেড কেউই নাই! এটা নিয়ে উনি টেনশনে। আমি বললাম তোমার ছেলের ভাই বোনের অভাব নেই, তাই টেনশন না করতে।
সত্যি হচ্ছে আমার প্রত্যেকটা ভাই বোন, যাদের সাথেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি তাদেরকে নিজের জান থেকে বেশি ভালোবাসি। আমার দোয়াতে সবসময় এই ভাই বোনেরা থাকেন। আমি জানি তাদেরও জান আমি, আর এটাই আমার দেশে পড়ে থাকার মূল কারণ। যেদিন তারা প্রস্তুত হয়ে যাবে তখন মরে গেলেও টেনশন থাকবেনা। আরেকটা বিষয় হচ্ছে আমি সবাইকে অনেক বেশি শাসন করে থাকি, তাই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। এসব জিনিস করেছি যাতে আমার ভাই বোনেরা আপডেট করতে পারে নিজেদেরকে। কেউই কাইন্ডলি বেজার হইও না। আমি সবাইকেই ভালোবাসি।
মজার বিষয় হচ্ছে আজকে এতো হাতি পরিমাণ কন্টেন্ট লিখার উদ্দেশ্য হচ্ছে এটা আমার ভাই বোনদেরকে জানানো যে এখন আমি মারা গেলেও শান্তি পাবো ইনশাআল্লাহ। আজকে শান্তি ফিল হচ্ছে বিয়ে বাড়ি - Biye Bari : Project 04 এর কাজগুলো দেখে। এতো অসাধারণভাবে সবাই সবকিছু ম্যানেজ করতেছেন। যেসব ভাই বোনেরা এখন দেশে নেই, সবাই আপনাদের কাজ দেখে আপনাদের উপর গর্ব করছেন। আপনাদের সবাইকে শুকরিয়া ও কৃতজ্ঞতা আমাকে ভাই বানানোর জন্য এবং আমাদের পরিবারের অংশ হওয়ার জন্য। আল্লাহ আমার ভাই বোনদেরকে নেক হায়াত ও শান্তির জীবন দান করুন। আমিন 🤲
- আয়ান মুমিনুল হক