27/03/2024
ছেলেটার নাম ইমদাদ। আমাদের ঘরের কাজে সাহায্য করে!
তাসনিম ওর সাথে লুডু খেলে! আমরা উনো খেলতে বসলে কাজ থেকে ডেকে এনে ওকে আমাদের পাশেই খেলতে বসায়। আমরা যাই খাই, সমান একটা ভাগ তার পাতেও যায়!
আমি অবাক হই!
কারন...
তাসনিমের রাগ বেশি!
কোনদিন ঘুম থেকে উঠে যদি দেখি আমার কলিজা নাই, রাগের চোটে তাসনিম আমার কলিজা ভুনা করে খেয়ে ফেলেছে তাতেও আমি অবাক হবো না!
এই রকম শর্ট টেম্পার একটা মানুষের কাছে এতো অমায়িক ব্যাবহার মোটামুটি অকল্পনীয় ব্যাপার!
কিন্তু পরে অবশ্য আবিষ্কার করলাম এই অতি রাগী মানুষটার সব রাগ, সব ঝাল শুধু আমার উপর! আর কারো উপর না।
একদিন দেখলাম ইমদাদ লুকায় লুকায় তাসনিমের মোবাইল ডাটা অন করে ইউটিউবে ভিডিও দেখছে! আমি মনে মনে ধারনা করলাম আজকে ইমদাদ সাহেবের খবর আছে! যেই মেজাজ সে আমার সাথে দেখায়, সেই মেজাজ ধরে রাখলে নির্ঘাত থাব্রা দিয়ে ইমদাদ সাহেবের কানের পর্দা আজকে ফাটায় দিবে!
কিন্তু কিছুই হলো না। তাসনিম সহজ গলায় বললো – ‘ মোবাইলটা চার্জে লাগায়ে ভিডিও দেখ ’
সত্যি কথা বলতে, ঘরের কাজে যারা সাহায্য করে তাদের সাথে আপন ভাই বোনের মত এতো ন্যাচারাল বিহেভ করতে তাসনিম ছাড়া আমি আর কাউকে দেখি নাই!
ইদানিং তাসনিমের মোবাইলে ইমদাদ সাহেব নিয়মিত গেম খেলে। খেলা শেষে সুন্দর মত মোবাইল ফেরত দিয়ে কাজে যায়। ওর পড়াশুনার জন্য আবার বইও কেনা হয়েছে! ইমদাদ সাহেব যে পড়াশুনায় ফাঁকি দেয় এই বিষয়টা নিয়েও তাসনিম ম্যাডাম নারাজ!!
বাই দ্যা ওয়ে, ইমদাদ নাকি কোনদিন চায়নিজ রেস্টুরেন্টে খায় নাই! তাই গতদিন তার তাসনিম খালামনি তাকে নিয়ে রেস্টুরেন্টে খেতে গেল। তার বাটিতে সুপ উঠিয়ে দিল। একে একে রাইস,ফ্রাইড চিকেন, বিফ সিজলিং...সব!!
আমি পাশে বসে একটা অসাধারণ মুহূর্ত দৃষ্টিবন্দী করলাম।
জীবনে হাজার হাজার সুখী মানুষ দেখছি, কিন্তু ইমদাদ ছেলেটার মত খাবার সামনে নিয়ে কাউকে এতো প্রান খুলে হাসতে দেখি নাই।
© Collected