07/09/2022
গর্ভবতী স্ত্রীর যত্নে একজন আদর্শ স্বামীর করণীয়গুলো কী কী?
করণীয় বললে আসলে অনেক কিছুই। প্রথম কথাই হলো স্ত্রীকে হাসিখুশি রাখার চেষ্টা করতে হবে। ছোটবেলা এই ব্যাপারটা টেলিভিশনে দেখে খানিকটা অবাক হয়েছিলাম। এটার প্রয়োজনীয়তাটা কি? পরে বড় হয়ে বিভিন্ন কিছু পড়ে ব্যাপারটা বুঝতে পারি। গর্ভাবস্থায় প্রসূতি যা কিছু অনুভব করে সবকিছুর প্রভাব তার গর্ভের সন্তানের উপর পড়ে। বাচ্চা আসলে গর্ভে থেকে মায়ের অনেক অনুভূতি অনুভব করতে পারে। মা যখন আনন্দিত বাচ্চাও গর্ভে আনন্দিত হয়, মা কষ্ট পেলে বাচ্চাও সে কষ্টটা অনুভব করে। এছাড়াও আমাদের শরীরের কিছু আভ্যন্তরীন ব্যবস্থা আছে। মানুষ যখন আনন্দিত হয় তখন শরীরে একধরণের হরমোন নিঃসৃত হয়, আবার কষ্ট পেলে অন্য ধরণের। আনন্দ সংক্রান্ত হরমোন শরীরের জন্য উপকারী আর কষ্টজনিত হরমোন ক্ষতিকর। যে জিনিস মায়ের জন্য ক্ষতিকর সেটা তার গর্ভের সন্তানের জন্যও ক্ষতিকর। তাই সন্তান গর্ভে থাকা অবস্থায় মা যদি হাসিখুশি না থাকে শারীরিক-মানসিক সমস্যা নিয় সন্তান জন্মগ্রহণের সম্ভবনা বেড়ে যায়।
স্ত্রীকে সবসময় মানসিক সাপোর্ট দিতে হবে। সন্তান যখন গর্ভে থাকা তখন মায়ের শরীরে নানা ধরণের পরিবর্তন আসে যেগুলো তার জন্য খুব একটা স্বস্তিদায়ক নয়। এছাড়াও সন্তান ধারণের কারণে নানা ধরণের হরমোন মায়ের শরীর উৎপন্ন করে। তার শরীর মোটা হয়ে যায়, ফাটা দাগ দেখা যায়, খাবারের রুচি কমে যায়, বমি হয়। এসকল কারণে প্রসূতি সবসময় মানসিকভাবে ও শারীরিকভাবে ভালো বোধ করে না। এসময় তার জন্য পুরো পরিবারের মানসিক সাপোর্ট খুব জরুরি।
প্রসূতির খাবার খুব গুরুত্বপূর্ণ। সুস্থ সন্তান পেতে হলে তাকে পুষ্টিকর খাবার দাবার দিতে হবে। তার পুষ্টিকর খাবার দাবার তো গর্ভের সন্তানের মুখে দেয়া সম্ভব না। ওটা মা'কেই খাওয়াতে হবে। একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সাথে সবসময় যোগাযোগ রাখতে হবে। তার পরামর্শমতো খাবার, ভিটামিন সহ যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
সন্তান হবার পরেও মায়ের যত্নের ব্যাপার রয়ে যায়। সন্তান তো হয়ে গেলো। কিন্তু সন্তান ধারণের কারণে তার শরীরে নানা ধরণের পরিবর্তন ঘটে গেছে। এসময় বাচ্চার যত্নের জন্য তার ঘুম কম হয়, সিজারিয়ান বাচ্চা হলে অপারেশনের ধকল তো আছেই। এছাড়া সে লক্ষ্য করে তার আগের সৌন্দর্য আর নেই। পরিবারের সবার মনোযোগ তার থেকে তার সন্তানের দিকে বেশি। আরো কিছু শরীরবৃত্তীয় ব্যাপার তো আছেই। ফলে সে একধরণের ডিপ্রেশনে ভুগতে শুরু করে। এসব ছাড়াও সে আরো কিছু সমস্যায় ভোগে, যেমনঃ কোমরের সমস্যা, যোনীপথে রক্তপাত, প্রস্রাবের সমস্যা, চুল পড়ে যাওয়া, ওজন কমে যাওয়া, বাচ্চাকে দুধ খাওয়ানোর সমস্যা। এসকল সমস্যাই গুরুত্বের সাথে নেয়া এবং সমাধানের চেষ্টা করা খুব জরুরি।
যা বললাম তা আমার পড়াশুনা এবং বাস্তব অভিজ্ঞতার মিশেল থেকে বললাম। কারো সচেতনা এই লেখাটা পড়ে সামান্য বৃদ্ধি পেলেও ধন্য বোধ করবো।
Collected from
নাঈমুল আরিফ