21/06/2022
হার্ট ফেইলিউর কাকে বলে?
উত্তর : সাধারণত বিভিন্ন রকম হার্টের রোগ যখন অগ্রবর্তী পর্যায়ে চলে যায়, তখন হার্ট ফেইলিউর তৈরি হয়। যেমন একিউট মায়োকার্ডিয়াল ইনফেকশনের পরে হার্টের মাংসপেশিগুলো যদি দুর্বল হয়ে পড়ে, যাদের হার্টের পাম্পিং একশন কমে যায়, ৪০ ভাগের নিচে নেমে যায়, তখন রোগীর বেশ কিছু লক্ষণ দেখা দেয়। যেমন রোগীর শ্বাসকষ্ট হয়, পায়ে পানি আসে, পেটে পানি আসে, রোগী রাতের বেলা শুতে পারে না। শুলেই তার ফুসফুসে পানি জমে যায়। একে আমরা বলি পারকসিজনাল নকটারনাল ডিসনিয়া। এই রোগীগুলোকে আমরা ক্লাসিফাই করি হার্ট ফেইলিউর হিসেবে। শুধু যে হার্ট অ্যাটাকের পরে হার্ট ফেইলিউর বাড়ে তা নয়, রোগীর যদি ভাল্ভে সমস্যা থাকে, হার্টের মধ্যে জন্মগতভাবে কোনো ফুটা থাকে, অথবা ভাইরাল ইনফেকশনের পরে রোগীদের হার্টের পাম্পিং একশন দুর্বল হয়ে যেতে পারে। একে আমরা বলি ডায়লেটেড কার্ডিওমায়োপ্যাথি। এরপর অনেক সময় গর্ভাবস্থা, ও গর্ভাবস্থার পরবর্তী ছয় মাসের মধ্যে, নারীদের হঠাৎ করে শ্বাসকষ্ট শুরু হয়ে যেতে পারে। তাদেরও এ রকম ডায়লেটেড কার্ডিওময়োপ্যাথি তৈরি হয়। একে আমরা বলি প্যারিপারটাম কার্ডিওমায়োপ্যাথি। সে ক্ষেত্রেও তাদের হার্টের পাম্পিং খুব কমে যায়। গর্ভাবস্থায় ও সন্তান জন্মদানের ছয় মাসের মধ্যেও বৃদ্ধি পেতে পারে। তাই ডায়ালেটেট কার্ডিওমায়োপ্যাথি, পেরিপাটাম কার্ডিওমায়োপ্যাথি, ভাল্ভুলার কার্ডিওমায়োপ্যাথি, যাদের ভাল্ভের সমস্যা থাকে- এ রকম বিভিন্ন কারণে হার্ট ফেইলিউর হতে পারে।
হার্ট ফেইলিউরের কারণ কী?
উত্তর : হার্ট আসলে একটি মাংসপিণ্ড। এর সংকোচন ও প্রসারণের মাধ্যমে রক্ত সারা শরীরে পরিবহন হয়। এখন যদি কোনো কারণে এই মাংসপিণ্ডের কার্যক্ষমতা কমে যায়, তখন হার্ট ফেইলিউর হয়। ইসকেমিক হার্ট ডিজিস হলো আমাদের দেশের একটি প্রচলিত কারণ, হার্ট ফেইলিউরের ক্ষেত্রে। ইসকেমিক হার্ট ডিজিস মানে হলো হার্টের রক্তনালিতে ব্লকজনিত হৃদরোগ। এই ব্লক হলে হার্টের মাংসপেশিতে অক্সিজেনের পরিবহন কমে যায়। এতে হার্টের মাংসপেশির কার্যক্ষমতা কমে আসে। তখন হার্ট অ্যাটাক বা বিভিন্ন সমস্যার কারণে মাংসপেশি ধ্বংস হয়ে যায়।
হার্ট যেমন সারা শরীরে রক্ত পরিবহন করছে, তার কাজের জন্য নিজেরও তো শক্তি দরকার, তাকে যে রক্তনালি পরিবহন করে, সেই রক্তনালি যদি সরু হয়ে যায় বা বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে হার্ট ফেইলিউর হয়।
এ ছাড়া হার্টের পেশিগুলোর নিজস্ব কিছু কারণ থাকে। পেশিগুলো সরাসরি রোগে আক্রান্ত হতে পারে। একে আমরা বলি মায়োকার্ডাইটিস বা কার্ডাইটিস বা মায়োপ্যাথি। এসব রোগের কারণে দেখা যায় হার্টের পেশিগুলো ঠিকমতো কাজ করে না। যখন পেশি কাজ করবে না, তখন হার্ট ফেইলিউরের দিকে যাবে।
এ ছাড়া হার্টের চারটি ভাল্ভ থাকে। এই ভাল্ভগুলো একমুখী রক্তপ্রবাহের জন্য কাজ করে থাকে। যখন দেখা যায়, ভাল্ভগুলোতে সমস্যা হয়, তখন ভাল্ভগুলো দিয়ে রক্ত যেতে পারে না, বিপরীতমুখী রক্ত আসে, তখন হার্টের ভেতর রক্ত জমে যায়। এর জন্য হার্ট ফেইলিউর হতে পারে। তাহলে দেখা যাচ্ছে, ভাল্ভের সমস্যা, হার্টের রক্তনালির সমস্যা, পেশির নিজস্ব সমস্যার কারণে, হার্ট ফেইলিউর হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এ কারণগুলোই প্রচলিত।