Bhoot Story 0.5

Bhoot Story 0.5 এখানে রহস্যময় অশরীরিদের ঘটনা, গল্প বা উপন্যাস গুলো লিখিত আকারে উপস্থাপন
করা হয়।

 #পিশাচ_দেবী  ্ব #রানা_মির্জাএরপর প্রায় মাস পেরিয়ে গেল। আকলার জীবন আবার আগের মতো চলতে লাগলো। সেদিন স্বপ্নে দেবী হারমাকে ...
24/08/2023

#পিশাচ_দেবী
্ব
#রানা_মির্জা

এরপর প্রায় মাস পেরিয়ে গেল। আকলার জীবন আবার আগের মতো চলতে লাগলো। সেদিন স্বপ্নে দেবী হারমাকে দেখার পর থেকে এই পর্যন্ত আর তার কোনো অস্তিত্ব তিনি জানান দেননি আকলাকে। গোষ্ঠীর লোকেদের মাঝে যে ফিসফিসানি ছিল পিশাচ দেবী হারমাকে নিয়ে তা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে।

আকলার মন থেকে অবশ্য তিনি গেলেন না। সে দিনের অনেক সময়ই দেবীর কথা ভাবে। এমনকি ঘুমানোর আগেও। এই দেবীর কারণে কী এমন ভয়ংকর কাণ্ড ঘটেছিল এই গোষ্ঠীতে, যে দেবীকে তারা বিতাড়িত করল! এমন কী তার নাম নেয়াও নিষিদ্ধ! কিছুই জানে না আকলা। এই সম্পর্কে ভালো বলতে পারবে গোষ্ঠীর বৃদ্ধরা। কিন্তু তারা বেশির ভাগই মানজা বু এর ঘনিষ্ঠ হওয়ায় এই বিষয়ে কথা বলবেন না।

দেবীকে সেদিন স্বপ্নে নিজের রূপে পুকুরে দেখার পর থেকে কেমন যেন ভয় করতে লাগলো আকলার দেবীকে। এক অজানা অনুভূতি শরীরটাকে কাঁপিয়ে তোলে দেবীর কথা মনে এতেই। দেবীকে সে ভুলে থাকতে চাইছিল। কিন্তু পারছিল না কিছুতেই।

অনেকদিন পর আজ রাতে সে ঘুমানোর আগে বিড়বিড় করে বলতে লাগলো , " হারমা , হারমা , হারমা , হারমা....."

স্বপ্নে আবার সেই মাটির ঘরের সামনের উঠানে দাঁড়িয়ে রয়েছে সে। সামনে ঝোপের কারণে কিছু না দেখা গেলেও আকলা জানে সেখানে একটা পুকুর আছে। তবে আজ সেদিনের মতো জোৎস্না নেই। ঘরের সামনে ঝুলে থাকা হারিকেনের আলোতে চারপাশে তাকালো একবার। নিস্তব্ধ অন্ধকার। এরপর ঘরের ভেতর থেকে অসুস্থ কণ্ঠের একটা গোঙানির শব্দ শুনলো সে। কিছুটা চমকে হারিকেন হাতে নিয়ে ধীরও পায়ে দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকতেই আলোতে , চকিতে শুয়ে থাকা অপরূপ সুন্দর মেয়েটাকে দেখতে পেল। কিছুক্ষণ কোনো কথা বলতে পারলো না আকলা। হারিকেনের আলো ফেলে অপলক ভাবে মেয়েটার মুখের দিকে চেয়ে রইলো। এত সুন্দর মুখ!

ধীরে ধীরে মুখায়বটা পরিচিত লাগতে লাগলো। তার মায়ের মুখ! শুধু মুখের রংটা আরো ফর্সা, চোখগুলো আরো বেশি সুন্দর , মুখ নিখুঁত। আর সবচেয়ে অপরিচিত , বেমানান লাগলো মুখে লেগে থাকা মিষ্টি হাসিটা। সে তার মাকে এত মিষ্টি করে হাসতে কখনই দেখেনি।

মা!

চিনতে পারিস?

আপনি দেবী ? বহুরূপী দেবী ! আমার মায়ের মতো দেখতে।

রূপতো আমার শরীরের অংশ বিশেষ রে। আমার রূপ ইতো তোদের সবার ভেতর রয়েছে। তোদের সবার রূপ আমার ভেতর।

আপনি বাস্তবে আমার সামনে আসেন না , কেন ?

তোরা ডাকলেই আমি আসবো। আমিতো তোদের জন্যই।

কিন্তু ওরা যে বাধা দেয় আপনার নাম মুখে নিতে। বু আর লোকেরা।

ওরা সঠিক পথ রেখে ভুল পথ বেছে নিয়েছে। সহজ পথ ছেড়ে জটিল পথ। সবাই আবার সঠিক পথে চলে আসবে। শুধু শুরু করতে হবে তোকে। তুইই আমাকে আবার তোদের গোষ্ঠীতে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবি। ফিরিয়ে আনতে পারবি হারানো গৌরব।

কিভাবে?

বিনিময়! এর মাধ্যমেই সব মঙ্গল হবে। উপকারের বিনিময়ে উপকার। আমার ক্ষুধা মেটাতে হবে তোদের। আমার যে খুব ক্ষুধা! তোদের গোরস্থানে আমার প্রবেশ নিষেধ। ওখানে আমি যেতে পারি না । গেলেই দুর্বল হয়ে যাই। তোরাই পারবি আমার ক্ষুধা মেটাতে।

এবার চোখ-মুখ শুকিয়ে আসে আকলার। এখানে গোরস্থানের কথা আসছে কেন ! তার মনে পড়ে দেবীর বলা সেই কথা , " যা তোরা মাটিকে খাওয়াস। অথচ মাটির তার প্রয়োজন নেই । প্রয়োজন আমার!"

তার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা অপরূপ নারী মূর্তিকে এই প্রথম ভয়ঙ্কর লাগলো তার কাছে। বুঝতে পারলো কেন এই দেবীকে সবাই পিশাচ বলে। স্বপ্নেও আকলা প্রচুর পানি পিপাসা অনুভব করতে পারল। ইচ্ছা করলো ছুটে পালায়। সে আৎকে দাঁড়িয়ে উঠে চেঁচিয়ে বলে ওঠে :

এ আমি কিছুতেই পারবো না। কেউই পারবে না। কেউই করবে না! এ অন্যায়, অনাচার!

কেন করবে না? এর বিনিময়ে কী এমন জিনিস , ইচ্ছা , চাহিদা আছে তোদের যা আমি মেটাবো না ? তোকে রক্ষা করেছি। তার বিনিময় নাই দিলি। কিন্তু তোকে যদি তোর পিতৃপরিচয় জানিয়ে দেই আমি। তবে ?

আকলা দরজার দিকে মুখ করে দাঁড়িয়ে ছিল। এবার আবার বিছানায় শুয়ে থাকা দেবীর দিকে তাকিয়ে বলল :

আপনি অন্তর্যামী! আপনি জানেন আমি আমার পিতার নাম জানি!

তুই মনে করে দেখতো তোর মা একবারও বলেছিল কিনা যে তোর বাপ মানজা বু ? সে শুধু তোর বাবার ব্যাপারে বলতে গিয়ে এই নামটা নিয়েছিল। মানজা বু যে তোর বাবা তা বলেনি। পুরো কথা শেষ করার আগেই মারা যায়। মনে করে দেখ!

ভাবনায় ফেলে দেয় কথাটা আকলাকে। সে জেদের সঙ্গে বলে :

আমি ঠিক জানি ! তিনিই আমার বাবা। আপনি আমাকে বোকা বানাচ্ছেন।

তোর মা এমন একটা পাথর ছুঁয়ে প্রতিজ্ঞা করেছিল যে তোর বাবার নাম কখনো প্রকাশ করবে না সে। এটাতো তোকে তোর মা অনেক বার বলেছে ? তুই জানিস তোদের গোষ্ঠীর সেই পবিত্র পাথরের প্রতিজ্ঞা কেউই ভাঙে না শত বিপদেও। তোর মাও ভাঙেনি। সে মানজা বু এর নাম এই কারণে নিয়েছিল কারণ তোর পিতার কথা সে ছাড়া আর কেউ জানে না। এটাই সে বলতে চাইছিল।

আর কেউ জানে না!

আর জানে তোর সামনে দাঁড়িয়ে থাকা এই অন্তর্যামী। একবার ভেবে দেখ আমি চাইলেই গোষ্ঠীতে তোর বাবার নাম প্রকাশ করে প্রতিষ্ঠিত করতে পারি। কেউ আর তোকে পিতার পরিচয়হীন বলবে না। তোকে ছোট করে দেখবে না। শরীরের দিকে তাকা। এই উৎলে ওঠা যৌবন আটকে রাখবি কী করে ? তুই জানিস পিতৃপরিচয়হীন কন্যারা মৃত্যুর আগ পর্যন্ত একা থাকবে। না স্বামী , না সন্তান। একা ঘরে কুমারীত্ব নিয়ে ধুকে ধুকে বৃদ্ধ অবস্থায় মরবি। যেমনটা তোদের গোষ্ঠীর অনেক মেয়ের পরিণতি হয়েছে। তুই কী এমনটাই চাস?

আকলার কাছে সব গুলিয়ে যাচ্ছে। দেবীর কথাগুলো এলোমেলো হলেও সত্যি। পরিচয়হীনতার কারণে তাকে কেউ বিয়ে করবে না , সম্মান পাবে না সে , তার বৈধ সন্তান হবে না , চাইলেই একটা সময় জোরপূর্বক তাকে ভোগ করলেও কাউকে বু শাস্তির আওতায় আনবে না। এই নিয়ম! এটাই তার মতো পিতৃপরিচয়হীন মেয়ের জীবনের পরিণতি। এটাকেই মেনে নিতে হয়! ভাবনার মাঝেই সে বুঝতে পারলো তার নিয়ন্ত্রণ নিজের মধ্যে নেই। সে ঝুঁকে দেবীর পা স্পর্শ করল। তার মাথায় তার হাতের স্পর্শ পেতেই ঘুম ভেঙে যায়।

তিন দিন পর , মাঝরাত ।

পিশাচদের বসবাস এই অঞ্চলে প্রায় হাজার বছর ধরে। গোরস্থানটাও শত বছরের পুরনো। এই গোষ্ঠীর পূর্ব-পুরুষেরা বুঝতে পারে পিশাচদের কারণে মৃত্যুর পরেও তারা নিরাপদ না । অনেক সময় দেখা যায় কবর দেওয়ার রাতেই গোরস্থানে পিশাচের আগমন ঘটেছে। ছিন্ন-ভিন্ন করে ছিড়ে লাশটা খেয়ে শুধু হাড্ডিগুলো ফেলে যেত। আবার মাঝেমধ্যে পুরো লাশটা নিয়েই অদৃশ্য হয়ে যেত , কোনো নিরাপদ জায়গায় অবস্থান নিয়ে ক্ষুধা মেটানোর জন্য। কিছু কিছু পিশাচ মায়াবলে লাশ নিয়ে যাওয়ার পর কবরটা আবার আগের মতো করে রাখতো যাতে লাশ চুরির ব্যাপারটা কেউ টের না পায়।

এইসব বিপদ থেকে উদ্ধার পেতে পূর্বপুরুষেরা গোরস্থানটাকে নানান রীতিনীতি করে এমন ভাবে রূপ দিয়েছে , মন্ত্রবলে দীর্ঘদিন সাধনা করে এমন মায়ার বাধা সৃষ্টি করেছে যে পরবর্তীতে আর কোনো পিশাচ এই গোরস্থানে প্রবেশ করতে পারবে না । হয়েছেও তাই। কয় যুগ হবে এই গোরস্থানে কোনো পিশাচের প্রবেশ ঘটেনি। কিন্তু মানুষের প্রবেশ করতে তো দোষ নেই। গোরস্থানটাই তো মানুষেরই!

সেই মায়া শক্তিই গোরস্থানকে পিশাচদের থেকে রক্ষা করেছে এতদিন। অনেক পিশাচ অন্যত্র চলে গেছে , মারা গেছে ক্ষুধার্ত হয়ে। আবার তাদের অলৌকিক শক্তির উদারতা অনেক পিশাচকে পূজনীয় করে তুলেছে মানুষের কাছে। তাদের মায়া শক্তি , মানুষের সব চাহিদা পূরণের অলৌকিক শক্তির ব্যবহার অনেক মানুষকেই প্রলুব্ধ করেছে তাদের অনুসারী হয়ে খাবার যোগানের। বিনিময় , বিনিময়, উপকার , উপকার খেলা!

আজ সকালেই মারা গিয়েছিল গোষ্ঠীর ফিরো , আর আনারা এর ৮ বছরের বাচ্চা মেয়েটা সাপের কামড়ে। দুপুরেই সব আয়োজন শেষ করে মানজা বু এর অনুমতি নিয়ে এই গোরস্থানে কবর দেওয়া হয় তার। সেই কবরটাই এখন খুঁড়ছে আকলা হারিকেনের মৃদু আলোতে।

অনেক দিন ধরে এই গোরস্থানে লাশ চুরি হয়না বলে কেউ পাহারায় থাকে না। তবুও কাঁপছে-ঘামছে আকলা , সতর্ক দৃষ্টিতে চার-পাশে তাকাচ্ছে বারবার ।

সেই রাতের পরে আরো একবার স্বপ্নে দেবীর সঙ্গে কথা হয়েছে তার। দীর্ঘ আলাপন শেষে সে সিদ্ধান্ত নেয় যাতে তার পিতার পরিচয় গোষ্ঠীতে প্রতিষ্ঠিত হয় আর তার জীবনটা সহজ হয় সেই পথেই যাবে সে। দেবী হারমা তার উপকার করবেন। কিন্তু বিনিময় লাগবে! সেই বিনিময়ই জোগাড় করছে সে। লাশের কাছে পৌঁছে গেছে সে। ওপরের মাটি সরাতেই কলা পাতা দিয়ে মোড়া লাশটা দেখতে পেল সে।

ভয়ে তার শরীর ঠাণ্ডা হয়ে গেল। এখনো চিন্তা করছে কাজটা কী তার উচিত হচ্ছে কিনা। না, সময় নষ্ট করা যাবে না! মেয়েটার ওজন বেশি না। সহজেই কবরের ওপর তুলে কবরটা আবার মাটি দিয়ে ভরে দিল সে। অনেকটা সময় লাগলো।

এক হাতে হারিকেন নিয়ে পাঁজাকোলা করে লাশটা নেওয়া যাবে না। বাহুর সঙ্গে লম্বালম্বি করে জড়িয়ে লাশটা নেয়ার সাহস হচ্ছে না আকলার। সেক্ষেত্রে লাশটার মাথা থাকবে তার কাঁধে। তার মনে হবে যেকোনো মুহূর্তে লাশটা চোখ খুলে তার ঘাড়ে কামড়ে দেবে বা শক্ত করে তার পিঠটা চেপে ধরবে। যদিও এছাড়া আর উপায় নেই। জঙ্গলের ভেতর ভয়ানক অন্ধকার।

সে ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে কলা পাতা মোরা লাশটা লম্বালম্বি করে বুকের সাথে লেপ্টে নিল। এমন সময়েই লাশটার মুখের ওপর থেকে কলা পাতা সরে যেতেই অস্ফুট একটা আর্তনাদ বেরিয়ে এলো আকলার গলা থেকে। ইচ্ছা করছে লাশটা এখানে ফেলে পালায়। কিন্তু এটা সম্ভব না। হারিকেনটা তুলে কাঁপতে কাঁপতে, দেবী হারমার নাম নিতে নিতে গোরস্থানের পথ পেরিয়ে জঙ্গলের দিকে এগোলো আকলা।

আরুল, মানজা বু এর লাঠিয়াল বাহিনীর লোক। রাতে গোষ্ঠীর লোকদের গুদামগুলো পাহারা দেওয়ার দায়িত্বে রয়েছে সে। এক নতুন ধরনের নেশার জিনিস পেয়েছে কয়দিন আগে। বুড়োর বয়স হলেও এইসব গন্ধ টের পেয়ে যায়। তাই সেটাই কলকেতে নিয়ে আগুন ধরাতে জঙ্গলের এইদিকে চুপিচুপি এসেছে সে। এখনো একটাও টান দেয়নি। এমন সময় মনে হলো একটা মেয়ে লোককে , কোলে একটা বাচ্চাকে নিয়ে জঙ্গলে ঢুকতে দেখলো সে। হাতে হারিকেন! এত রাতে কে যাবে জঙ্গলে ! সে কী ভুল কিছু দেখেছে ! নেশাতো এখনো শুরু করেনি! ঝাপসা আলো!

কলকেটা এক জায়গায় লুকিয়ে রেখে হারিকেন আর লাঠি হাতে নিয়ে সেও ধীরে ধীরে জঙ্গলে ঢুকে গেল অনুসন্ধানের জন্য। ...................................
. . . . . চলবে . . . . ...?

 #নরখাদক #রিমন_হোসেন_ধুমকেতু #পর্ব_০১কাল সারা রাত বৃষ্টি হওয়ার পর রাস্তা ঘাট সব কাঁদা কাঁদা হয়ে গেছে। মেন রোডে গাছ ভেঙ...
23/08/2023

#নরখাদক
#রিমন_হোসেন_ধুমকেতু
#পর্ব_০১

কাল সারা রাত বৃষ্টি হওয়ার পর রাস্তা ঘাট সব কাঁদা কাঁদা হয়ে গেছে। মেন রোডে গাছ ভেঙে রাস্তা ব্লক হয়ে গেছে। মেন রোড দিয়ে কোথাও যাওয়া সম্ভব নয়। এদিকে ভাইয়ের লাশ কিভাবে গ্রামে নিয়ে যাবে এই নিয়ে টেনশনে পড়ে গেলেন খালিদ। সামনে অ্যাম্বুল্যান্সে লাশ! আর পিছনে একটা মাইক্রো গাড়ি করে আত্মীয় স্বজন মিলে প্রায় দশ জনের মতো হবে!
অ্যাম্বুল্যান্সে চালকসহ খালিদের ছোট মামা রয়েছে। চালকের সাথে সহকারী একজন রয়েছে। মাইক্রো গাড়িতে খালিদ তার স্ত্রী, মৃত ভাইয়ের স্ত্রীসহ আরো কয়েকজন কান্না করছে।
রাস্তা ব্লক হওয়ার কারণে গাড়ি আর সামনে যেতে পারবে না। খালিদ নিচে নামলেন। অ্যাম্বুল্যান্স থেকে সহকারী নিচে নামলো। সহকারী বললো,
– স্যার, সামনে এগুনোর কোন ওয়ে নেই। আমাদের ফিরে যেতে হবে!
– কি! আমি কোনভাবেই ফিরে যাবো না। আমার মা গ্রামে আমার ভাইয়ের লাশ দেখতে চেয়েছেন। আমি যে করেই হোক, নিয়ে যাবোই! দেখো আশেপাশে কোনো না কোনো রাস্তা অবশ্যই আছে!
– স্যার, আশেপাশে কোন রাস্তা নেই। কাল রাতে ভয়ঙ্কর বৃষ্টি হয়েছে। সব বন্ধ হয়ে গেছে।
– কত টাকা চাই তোমার?
– এটা টাকার প্রশ্ন নয় স্যার! আপনিও তো দেখছেন।
– আচ্ছা শোনো, ঐ পাশে একটা জঙ্গল আছে। যতদূর সম্ভব ঐ জঙ্গলের পথ ধরে আমরা এই ব্লক অংশ পার হতে পারবো!
জঙ্গলের কথা শুনে সহকারীর চোখ কপালে উঠে গেলো। তার চোখ মুখের রং বদলে গেছে। সব কিছু কালো হয়ে গেছে। সহকারী বললো,
– স্যার, আপনি জানেন ঐ জঙ্গলটা অভিশপ্ত! ওখানে শয়তানদের বাস। ওরা মানুষ মারে। মানুষের মাংস খায়!
– এসব রাবিশ মার্কা কথাবার্তা বাদ দাও। আমি তোমাকে দ্বিগুনেরও বেশি টাকা দিবো।
– যদি জীবনই না বাঁচে তো টাকা দিয়ে কি করবো?
– আমি কিন্তু তোমার নামে কমপ্লেন করবো! ড্রাইভারকে বলো তাড়াতাড়ি স্টার্ট দিতে। আর ভিতরে গিয়ে বসো যাও!
খালিদের কথায় অনেকটা বাধ্য হয়েই সহকারী গাড়ির ভিতরে গিয়ে বসে। আর চালককে বলে, গাড়ি জঙ্গলের পথে নিয়ে যেতে। এই চালক সম্পুর্ণ নতুন। গাড়ি চালানো ছাড়া তেমন কিছুই জানে না। পথ ঘাটও খুব একটা চেনে না। তাই সহকারী হিসেবে সব সময় একজন থাকে। অ্যাম্বুল্যান্স জঙ্গলের ভিতরে ঢুকতেই সহকারী দোয়া দরুদ সব পড়তে লাগলো। কিছু দূর এগিয়ে যাওয়ার পর খালিদ লক্ষ্য করলেন যে, অ্যাম্বুল্যান্সের ছাদের উপর কিছু একটা আছে! হয়তো কোন বনমানুষ জাতীয় কিছু হবে! কিন্তু এই জঙ্গলে বনমানুষ এলো কোথায় থেকে? বন দফতরের লোকদের ব্যাপারটা জানাতে হবে। কিন্তু তার আগে ঐটা যে বনমানুষই নিশ্চিত হতে হবে! খালিদ গাড়ি দ্রুত চালিয়ে অ্যাম্বুল্যান্সের আগে গেলেন। আর অ্যাম্বুল্যান্স থামালেন। সহকারী একটু বিরক্ত হয়ে বললো,
– আবার কি হলো?
– মনে হয় অ্যাম্বুল্যান্সের ছাদের উপর বনমানুষ রয়েছে। দেখতে হবে।
খালিদের কথা শুনে সহকারী ঘাবড়ে গেলো। আর চিৎকার করে বলতে লাগলো,
– স্যার, আপনি গাড়ি থেকে নামবেন না! নামবেন না স্যার! বিপদে পড়বো সবাই। ওটা বনমানুষ না! ওটা একটা শয়তান। ওরা নরখাদক স্যার!
– ধুর মিয়া! তুমি কি পাগল নাকি? এই একটা অ্যাম্বুল্যান্স চাইছি। আর পাগলের প্রলাপ বকা সহকারীসহ গাড়ি দিয়েছে! তোমার নামে আমি গিয়েই কমপ্লেন করবো।
– স্যার, আপনি কমপ্লেন করুন। যা ইচ্ছে তাই করুন। কিন্তু গাড়ি থেকে নামবেন না প্লীজ।
খালিদ গাড়ি থেকে নামলেন। চারপাশে অনেক ঝোপঝাড় আর অন্ধকার! গাড়ি থেকে নামতেই তার পা এক গিঁড়া কাদায় ডুবে গেলো। তিনি মুখে এই ছিঃ ছিঃ বলে পা গাড়ির চাকার উপর রেখে পরিষ্কার করলেন। সহকারী ততক্ষণে নেমে পরেছে। সে বললো,
– স্যার, এখনো কিছু হয়নি! আপনি গাড়িতে উঠে বসুন। আপনাদের বাঁচানো আমার দায়িত্ব।
– তুমি গিয়ে বসো যাও। আমি এখুনি যাচ্ছি।
বলেই খালিদ ফোনের ফ্লাস লাইট জ্বালালেন। ফ্লাস অ্যাম্বুল্যান্সের ছাদের দিকে দেওয়ার সাথে সাথে উনার মোবাইল বন্ধ হয়ে গেলো। আলোও বন্ধ হয়ে গেছে। কিছুই দেখা যাচ্ছে না। চলন্ত গাড়ি থেকে জোৎস্নার আলোয় দেখা গেছিলো। খালিদ বিরক্ত হয়ে বললেন,
– আলো আছে কার কাছে?
গাড়ির ভিতর থেকে খালিদ তার স্ত্রীর ব্যাগ বের করলেন। তার স্ত্রীর ব্যাগে লাইট রয়েছে। তিনি সেই লাইট জ্বালিয়ে অ্যাম্বুল্যান্সের ছাদের উপর দিতেই লাইট অফ হয়ে গেলো। এবার তার ভয় হচ্ছে! কি হচ্ছে এসব?
তিনি তাড়াতাড়ি গাড়িতে উঠতে যাবেন এমন সময় হঠাৎ কেউ তার পিঠে প্রচন্ড জোরে চিমটি কাটলো। তিনি চিৎকার করে উঠলেন। তিনি পিঠে হাত বুলিয়ে দেখেন যে, রক্ত বের হচ্ছে।
খালিদ তাড়াতাড়ি গাড়ির উপর একটা পা রাখলেন। আর সাথে সাথে কেউ তার আরেক পা ধরে জোরে টান দিয়ে মাটিতে ফেলে দেয়। খালিদ জোরে চিৎকার করে উঠেন। ভিতরে থেকে তার স্ত্রী চিৎকার করে বললো,
– কি হয়েছে তোমার?
অ্যাম্বুল্যান্সের ভিতর থেকে সহকারী বললো,
– ঐ শয়তানগুলো এসে গেছে! এবার আমাদের কেউ বাঁচাতে পারবে না! কেউ না!
বলেই সে কাঁদতে লাগলো। তার কান্না দেখে ভয় পেয়ে চালকও কাঁদতে লাগলো। ভিতরে খালিদের ছোট মামাও খুব ভয় পেয়ে যায়। কেউ একজন খালিদের পা ধরে টানছে! আর খালিদ চিৎকার করছে।
হঠাৎ সবাই দেখলো যে, একটা বনমানুষের মতো ছায়া খালিদের উপর ঝাঁপিয়ে পরলো। আর তাকে ছিঁড়ে ফেলতে লাগলো। খালিদের স্ত্রী এই অবস্থা দেখে জ্ঞান হারান। কিছুক্ষণের মধ্যেই খালিদকে ওই জন্তু ছিঁড়ে টুকরো টুকরো করে ফেলে। তারপর খাওয়া শুরু করে। সবার সামনেই।
মাইক্রো গাড়ির দরজা বন্ধ করা ছিলো। অ্যাম্বুল্যান্সেরও দরজা বন্ধ। চালক চিৎকার করে বলতে লাগলো,
– আমি এত তাড়াতাড়ি মরতে চাই না! আমাকে বাঁচাও। বাড়িতে আমার বৌ বাচ্চা আছে!
সহকারী পাশ থেকে ধমক দিয়ে বললো,
– চুপ! না হলে আমরা সবাই মারা যাবো।
চালক চুপ হয়ে গেলো। ঐ কালো বনমানুষের মতো ছায়াটা খালিদকে পুরো খেয়ে ফেলেছে। ওখানে আর এক ফোঁটা রক্তও নেই। সবাই জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিচ্ছে।
মাইক্রো চালক হঠাৎ চিৎকার করে উঠে গাড়ি স্টার্ট দিলো। সবাই চুপ করতে বললো। কিন্তু মাইক্রো চালক চুপ করলো না। গাড়ি স্টার্ট হলো। চালক ফুল স্পিডে টান দেয়। একটু যেতেই একটা গাছের মোটা ডাল এসে গাড়ির উপর পরে। গাড়ি বন্ধ হয়ে যায়। চালক ভয়ে গাড়ি থেকে নেমে দৌড়াতে লাগলো। একটু যেতেই বনমানুষের মতো অনেকগুলো ছায়া তার উপর ঝাঁপিয়ে পরলো। আর বিশ্রী শব্দ করতে করতে তাকেও ছিঁড়ে টুকরো টুকরো করে খাওয়া শুরু করলো।

চলবে.........????
কেমন লাগলো কমেন্ট করে জানাবেন। See less

 #দাড়_কাকের_সংসার #পর্ব_০৪ #লেখক_রাজু_দেদুপুরের টকটকে রোদে বেড়িয়ে পড়লাম একটা সস্তা বাড়ির খোঁজে।মাথার উপর ইলেকট্রিকের তার...
23/08/2023

#দাড়_কাকের_সংসার
#পর্ব_০৪
#লেখক_রাজু_দে

দুপুরের টকটকে রোদে বেড়িয়ে পড়লাম একটা সস্তা বাড়ির খোঁজে।মাথার উপর ইলেকট্রিকের তারে বসে একঝাঁক কাক কা কা করে দিশেহারার মতো উড়ছে।মনে মনে কাক হওয়ার প্রবল ইচ্ছে জাগতে লাগলো।
বেশ কিছুক্ষণ রাস্তায় রাস্তায় হাঁটছি।সব বাড়িওয়ালার একটাই কথা, স্বামী স্ত্রী না হলে ভাড়া দিবে না।এমন সময় ফোনটা বেজে উঠলো।রিসিভ করতেই ফোনের অপরদিক থেকে নিজাম সাহেব বললেন
" কোথায় আছেন মশাই? "
" জি পার্কের মোড়ের কাছাকাছি "
" একবার লাইব্রেরিতে আসতে পারবেন? খুশির সংবাদ আছে "
" কি হয়েছে বলুন তো? "
" সে নাহয় এসেই দেখবেন।আমি সিওর,এসব দেখলে আপনার মাথা চরক গাছে উঠে যাবে "
নিজাম সাহেবের কথায় আমি তেমন গুরুত্বের সাথে নিলাম না।ওনার স্বভাব সবকিছু একটু বাড়িয়ে বলা।আরো দুইটা বাড়িতে খোঁজ করলাম।তাদেরও একই কথা।পরিবার ছাড়া ভাড়া হবে না।একটা বাড়িতে অবশ্য ভাড়া হবে,কিন্তু সেখানে ভাড়ার পরিমানটা অনেক।
দুঃখী মনে নিজাম সাহেবের সপ্তগল্প প্রকাশনীতে গেলাম।তিনি আমাকে দেখে অতি ব্যস্ততার সাথে বই ছাপানোর ঘরে নিয়ে গেলেন।নিজাম সাহেবের কথা সত্যি!এসব দেখে আমি হতভম্ব হয়ে দাড়িয়ে রইলাম।ধরা গলায় বললাম
" ব্যাপার কি নিজাম ভাই? এতো বই একসাথে ছাঁপানো হচ্ছে? "
তিনি গাল ফুলিয়ে হেসে বললেন " আর বলবেন না।দুইদিন থেকে ফোন তোলার সময় হচ্ছে না।শুধু ফ্লপটা ম্যাগাজিনে দিয়েছিলাম।এতেই পাঠকদের পিলে চমকে গেছে।দুই হাজার বই প্রি-অর্ডার হয়েছে "
আমি বাকরুদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম।নিজাম সাহেব বললেন " বুঝলেন অভ্র সাহেব,মনে হচ্ছে আপনাকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হবে না।পারসেন্টেন্স খুব মোটা অঙ্কের'ই পাবেন। চা খাবেন? "
চা খেয়ে নিজাম সাহেবের প্রকাশনী থেকে বেড়িয়ে পড়লাম।রোদ এখন কিছুটা নরম হয়েছে।আমার মনে এখন বিষাদের ছিটেফোঁটাও নেই।ফুটপাত দিয়ে হেঁটে যাচ্ছি এমন সময় দেখলাম সেই কালো গাড়িটি একটা রেস্টুরেন্টের সামনে দাঁড় করিয়ে রাখা।রেস্টুরেন্টটা কাঁচের আবরণ থাকায় ভেতরে কারা বসে আছে সব দেখা যাচ্ছে।সেখানে দেখলাম রেণু ওর বসের সাথে গা ঘেঁসে বসে আছে।শুধু বসেই নেই,রেণুর মাথা ওর বসের কাঁধে রেখেছে।ওরা মনে হয় বিয়ে করে নিয়েছে।রেণু হাসতে হাসতে হঠাৎ বাহিরে তাকিয়ে আমাকে দেখতে পেলো।আমায় দেখে তার বিন্দুমাত্র ভাবান্তর হলো না।বরং ওর বসের হাতে হাত রাখলো।লাল কৃষ্ণচূড়া ফুলে ভর্তি ফুটপাতে আমি আবার হাঁটতে শুরু করলাম।আমার পায়ে পিষে যাচ্ছে কোমল পাপড়িগুলি।পাপড়ি গুলির মতো যদি নিজেকেও পিষে ফেলতে পারতাম তাহলে হয়তো আর কোনো আক্ষেপ থাকতো না।
বাড়ির কাছাকাছি আসতেই একরা মেয়েলি কন্ঠ ভেসে এলো।কেউ একজন আমার নাম ধরে " অভ্র ভাইয়া " বলে ডাকছে।আমি পেছন ফিরতেই একটা রিক্সা আমার সামনে এসে থামলো।রিক্সা থেকে তড়িঘড়ি করে একটা মেয়ে নামলো,তার পরণে শাড়ি।মেয়েটাকে আমি চিনি।উনি টিয়ার বান্ধবীর বোন।রিক্সার ভাড়া দিতে দিতে উনি বললেন
" ভারী অদ্ভুত মানুষ তো আপনি "
" ঠিক বুঝলাম না "
" রিক্সা থেকে কতবার ডাকলাম অথচ আপনি শূন্য দৃষ্টিতে হেঁটে যাচ্ছেন তো যাচ্ছেন "
" আসলে শুনতে পাইনি।কোথায় যাচ্ছেন? "
" আপনার কাছে "
আমি ভ্রু কুঁচকে বললাম " আমার কাছে? "
" হু,আপনার বাসা তো এখানেই তাই না? "
" হ্যা,দুইটা বিল্ডিং পড়েই "
" চলুন তাহলে।আপনার বাসা থেকে ঘুরে আসি।চাইলে চা খাওয়াতে পারি।আমি খুব ভালো চা বানাতে পারি "
এটা বলে মেয়েটা হাঁটতে লাগলো।আমি কিছুটা দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়লাম।মেয়েটার চালচলন কেমন যেন অন্যরকম।কলিংবেল বাজার সাথে সাথে টিয়া দরজা খুললো।মনে হচ্ছে ও দরজার কাছেই দাড়িয়ে ছিলো।আমি দরজার একটু দূরে।মেয়েটাকে দেখে টিয়া আনন্দে উৎফুল্ল হয়ে বললো
" একবার বলাতেই বাড়ি খুঁজে পেলে? আসো ভেতরে আসো "
বলে টিয়া মেয়েটার হাত ধরে টেনে ভেতরে নিয়ে গেলো।ও এতোটাই আত্মহারা যে দরজা বন্ধ করতেও ভুলে গেলো।রুমে গিয়ে শাওয়ার নিলাম।প্রচন্ড মাথা ব্যাথা করছে।উঠে গিয়ে যে চা করে আনবো সেটাও ইচ্ছে করছে না।
কপালে হাত বুলাতে বুলাতে বিছানায় আধশোয়া হয়ে রইলাম। দরজায় মিহি টোকা পড়লো।বুঝলাম মেয়েটা এসছে।টিয়া ঘরে এলে কখনো দরজায় টোকা দেয় না।সোজা ঘরে ঢুকে যে কারনে এসছে সেটা করে।মেয়েটা বললো
" আসবো?"
আমি বসা থেকে দাঁড়িয়ে বললাম " আসুন আসুন "
মেয়েটা ঘরে ঢুকলো।ওনার হাতে চায়ের কাপ।কাপটা আমার হাতে দিতে দিতে ঘরের চারদিক ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে দেখে বললো " লেখকদের ঘর অগোছালো হয় জানতাম,কিন্তু এতোটা অগোছালো সেটা না দেখে বুঝতেই পারতাম না "
কাপটা হাতে নিয়ে বললাম " না মানে,আসলে গোছানোর সময় হয়ে উঠছে না "
" মেঝে তো ছেঁড়া কাগজে ভর্তি।নতুন উপন্যাস লিখছেন নাকি?শুনেছি নতুন উপন্যাস লেখার শুরুতে লেখকরা পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা ছিঁড়ে ফেলে।চা হাতে নিয়ে আছেন কেন? ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে তো "
মেয়েটার কথায় চায়ে চুমুক দিলাম।আশ্চর্য!বহুদিন এতো চমৎকার চা খাইনি।এখনকার মেয়েরা অল্প বয়সে আর কিছু পারুক না পারুক,অসাধারন চা বানাতে পারে।মেয়েটি কপালের ভাজ ফেলে বললো " চা ভালো হয়নি? "
আমি চুমুক দিতে দিতে বললাম " আপনি খুব সুন্দর চা বানাতে পারেন।চা টা অনেক সুন্দর হইছে "
" রোদের মধ্যে হাঁটতে দেখে নিশ্চিত ছিলাম বাড়িতে গেলে আপনার মাথা ধরা শুরু হবে।তাই নিজ দায়িত্বে চা করে নিয়ে এলাম "
আমি কিছু বললাম না।মেয়েটা কিছুক্ষন ঘরের চারদিক চোখ বুলিয়ে চলে গেলো।খানিক্ষন বাদেই টিয়া দৌঁড়ে এসে আমার কোম'ড় জড়িয়ে ধরলো।ওর মতলব বুঝতে আমার দেরি হলো না।নিশ্চয়ই কোনো আবদার নিয়ে এসছে।ওর চুলে হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বললাম
" তোমার বান্ধবীর বাড়িতে যাবে বুঝি?"
টিয়া অবাক হয়ে বললো " তুমি কীভাবে বুঝলা? "
" আমার মন বলেছিলো "
" বাবা মিথ্যা বলবে না।তুমি শুভ্রতা ম্যামকে দেখে বুঝেছো আমি প্রেরণার বাড়িতে যাবো।ঠিক বললাম না? "
" হ্যা "
" আজ প্রেরণার জন্মদিন।তাই ম্যাম নিতে এসছে।বাবা আমি যাই? "
" উনি তোমার ম্যাম? "
" হ্যা,উনি আমাদের গান শেখান।কিছুদিন আগেই স্কুলে এসছে "
আমাকে চুপ থাকা দেখে টিয়া আবার বললো, " বাবা আমি যাবো? "
" তুমি তো অসুস্থ মা "
টিয়া গাল ফুলিয়ে বললো " না বাবা,আমি মোটেও অসুস্থ না "।এটা বলেই টিয়া এক লাফে বিছানায় উঠে দাড়ালো।সেখানে দাঁড়িয়েই দুই হাত কোম'ড়ে গুঁজে বললো " দেখেছো আমি একদম সুস্থ। বাবা যাই না প্লিজ! "
" আরে ব্যাথা পাবে তো।আচ্ছা ঠিক আছে যেও "।টিয়া আনন্দে ইয়াহু বলে চিৎকার করে আমায় জড়িয়ে ধরলো।এরপর বললো
" আমি এখন তাহলে শুভ্রতা ম্যামের সাথে যাচ্ছি।তুমি ঠওক সন্ধায় চলে আসবা "
" আমি কেন? "
" তুমি না গেলে প্রেরণা খুব মন খারাপ করবে।ও নিজেই আসতো,কিন্তু শরীর খারাপের জন্য আসতে পারেনি।দুইদিন থেকে ওর জ্বর।তোমাকে ফোন করেছে তুমি নাকি ধরোনি "
" আমি না গেলে হয় না? "
" বাবা তুমি হয়তো জানোনা প্রেরণা তোমায় অনেক ভালোবাসে।আমাকে বারবার বলে দিয়েছে তোমাকে নিয়ে আসতে। নইলে পড়ে দেখা যাবে ও অসুস্থ শরীর নিয়েই তোমাকে নেওয়ার জন্য হাজির হয়ে যাবে "
" মুশকিলে পড়ে গেলাম "
" তুমি আসবে মানে আসবে।আমি কোনো কথা শুনবো না "
এটা বলে টিয়া চলে গেলো।চা খেয়ে মাথা ধরাটা এখন আর নেই।ড্রয়িংরুমে গিয়ে ম্যাগাজিনের পাতা উল্টেপাল্টে দেখছি। টিয়া ওর ওর ম্যাম ঘর থেকে বেড়িয়ে এলো।টিয়া সবুজ রঙ্গের একটা জামা পড়েছে।ওকে দেখতে সত্যি সত্যিই টিয়া পাখির মতো লাগছে।টিয়া বললো
" বাবা আমাকে সুন্দর লাগছে না? "
ম্যাগাজিনটা টেবিলে রেখে ওর কপালে চু'মু দিয়ে বললাম " আমার মেয়ে পৃথিবীর সবথেকে সুন্দরী মেয়ে "
শুভ্রতা নামের মেয়েটা আমার দিকে একটা চিঠি এগিয়ে দিয়ে বললো " আপনি নাকি প্রেরণার ফোন ধরছেন না? প্রেরণা এটা পাঠিয়েছে আপনাকে দেওয়ার জন্য "
আমি চিঠিটা খুলে পড়লাম।সেখানে লেখা, আঙ্কেল তুমি আমার ফোন কেন ধরছো না? আমি খুব রাগ করেছি।মন খারাপ ও করেছি। যা বলতে ফোন করেছিলাম সেটা হলো টিয়াকে আপুর সাথে পাঠিয়ে দিও।আর তুমি সন্ধায় চলে আসবে।না আসলে আমার খুব মন খারাপ হবে।চিঠিটা পড়ে আমি হাসলাম।এই পিচ্চি মেয়েটা আমাকে বড্ড পছন্দ করে।শুভ্রতা বললো
" আপনি আসবেন তো? "
" হ্যা আসবো "
সন্ধায় প্রেরণার বাড়িতে আসলাম।চারদিকে অসম্ভব সুন্দর লাইটিং করা।বাড়ির ভেতরে ঢুকে দেখলাম বাড়ি ভর্তি লোকজন।এতো লোকের ভিড়ে নিজেকে তুচ্ছ মনে হতো লাগলো।ড্রয়িংরুমের এক কোনে চুপচাপ দাড়িয়ে রইলাম।এতো লোকের মাঝে আমার দমবন্ধ লাগছে।এদের কাউকেই আমি চিনিনা।এতো অপরিচিত কন্ঠের মধ্যে একটা পরিচিত কন্ঠ ভেসে এলো।কোনো এক মেয়ের কন্ঠ। চমকে আশেপাশে তাকালাম।দেখলাম আমার ঠিক কয়েক হাত পাশেই গ্লাস ভর্তি লালজল হাতে নিয়ে রেণু দাড়িয়ে......

#চলবে...........?

পাঠক-পাঠিকাদের কাছে গল্পটা কেমন লাগছে ঠিক বুঝতে পারছি না।সবাই একটু জানাবেন আচ্ছা? ভালোবাসা রইলো সবার প্রতি 💛 See less

 #অশরীরি_সঙ্গী #পর্ব_০২ #লেখা_সিহাব_হোসেনশারমিন গোসল সেরে বের হয়ে আসলো।আজ কেন জানি শারমিনের অনেক ভালো লাগছে।এতদিন যেন ওর...
22/08/2023

#অশরীরি_সঙ্গী
#পর্ব_০২
#লেখা_সিহাব_হোসেন

শারমিন গোসল সেরে বের হয়ে আসলো।আজ কেন জানি শারমিনের অনেক ভালো লাগছে।এতদিন যেন ওর শরীর ভার হয়ে ছিলো কিন্তু আজ নিজেকে একদম হালকা লাগছে।শারমিন ড্রেসিং টেবিলের আয়নার সামনে বসে নিজের চুল আছড়াচ্ছিল আর নিজের শরীরে ফুটে উঠা দাগ গুলো দেখলো আর আনমনে হেসে উঠছে।এমন সময় শারমিন অনুভব করলো কেউ একজন ওর পাশে এসে দাড়ালো।ওর কাঁধে কেউ গরম নিঃশ্বাস ফেলছে।নিঃশ্বাসের আওয়াজ স্পষ্ট শারমিনের কানে আসছিলো।শারমিন চোখ বন্ধ করে সেটি অনুভব করছিলো।শারমিন স্বাভাবিক হয়ে হেসে বলে উঠলো
->আমি জানি তুমি রাতে আমার সাথে শারিরীক সম্পর্ক করেছিলে তাই না?আর এখন আবার কি জন্য এসেছো শুনি?আমি যখন ডাকবো তখন আসবে তার আগে না।
কোন আওয়াজ আসলো না কিন্তু শারমিন বুঝতে পারলো ওর পাশ থেকে কিছু একটা সরে গেলো।শারমিনের খুব খুশি লাগছে যে একটা অশরীরীকে নিজের বশে আনতে সক্ষম হয়েছে।সে চাইলে নিজের ইচ্ছামতো ওই অশরীরীকে ব্যবহার করতে পারবে।
শারমিন রুম থেকে বের হয়ে বাড়ির সকলের জন্য খাবার তৈরি করে সবাইকে খেতে দিলো।মায়া এখনো ঘুম থেকে উঠেনি।শারমিন মায়ার নাস্তা নিয়ে ওর রুমে গিয়ে দেখলো মায়া শুয়ে থেকে ফোন টিপছে।শারমিন হেসে বলল
->সারারাত কথা বলেও আমার ননদের শখ মিটে নি তাই না?সব সময় এতো কি কথা বলো হুম?
-উফফ ভাবি তুমি যদি কখনো রিলেশন করতে তাহলে বুঝতে আমরা কি কথা বলি।
->আচ্ছা নাও আমার বুঝতে হবে না।এখনো উঠে তাড়াতাড়ি খেয়ে নাও দেখি।চা ঠান্ডা হয়ে যাবে।
->ভাবি তুমি নাস্তা করেছো?
->না।তোমাদেরটা হলে আমি করবো।
->না ভাবি তোমার নাস্তা এখানে নিয়ে এসো।দুইজন একসাথে নাস্তা করবো।
->আচ্ছা।
শারমিন গিয়ে ওর নাস্তা নিয়ে আসলো।তারপর দুইজন বিছানার ওপর বসে থেকে নাস্তা খেতে শুরু করলো।মায়া চায়ের কাপে চুমুক দিচ্ছে আর শারমিনের গলার দিকে কেমন যেন তাকিয়ে আছে।হঠাৎ মায়া শারমিনকে জিজ্ঞেস করলো
->আচ্ছা ভাবি তোমার গলায় কিসের দাগ ওইটা?দেখে মনে হচ্ছে তোমার গলায় কেউ লাভ বাইট কিস করেছে?
মায়ার কথা শুনে শারমিন ওর গলায় হাত দিলো।তারপর হেসে উঠে বলল
->আমায় লাভ বাইট কিস কে করবে শুনি?এখন কি তোমার ভাই বাসায় আছে নাকি হুম?
->তাও এক কথা।
->আসলে এলার্জি থেকে চুলাকানোর কারনে এমন হয়েছে তাছাড়া কিছু না।জানোই তো আমার এলার্জি আছে।
->আমারো তাই মনে হয়েছিলো তারপরেও কেন যে প্রশ্ন করলাম বুঝলাম না।
->যাক গে ছাড়ো এসব।
শারমিন আর মায়া দুইজন গল্প করতে লাগলো।মায়া বার বার শুধু ওর বয়ফ্রেন্ডের গল্প করছিলো।বেশ কিছু সময় দুইজন গল্প করার পর শারমিন এসে দুপুরে রান্না করলো।দুপুরের খাবার খেয়ে শারমিন ওর ঘরে বসে সেই বই পড়ছিলো।অশরীরি যাতে ওর ইচ্ছার বিরুদ্ধে কিছু করতে না পারে সেটা সে শিখে নিলো।
মায়ার কেন জানি শারমিনে কথা তখন বিশ্বাস হলো না।মায়া ভাবছে ভাবি আবার রাতের বেলা কোন পরপুরুষকে বাসায় নিয়ে আসে না তো?কিন্তু সেটা কি করে সম্ভব হবে।বাড়ির মেইন গেট বন্ধ থাকে আর চাবিও মায়ার মা-বাবার কাছে থাকে।মায়া নিজে নিজেকে বলে উঠলো,,দুর কি সব আজে বাজে কথা ভাবছি আমি।ভাবি এমনটা কখনো করবে না।
রাতের বেলা অন্ধকার রুমে শারমিন বসে আছে।মনে মনে সে ওই অশরীরিকে স্মরণ করছে।হঠাৎ শারমিন রুমের মধ্যে কারো উপস্থিতি টের পেলো।ভাবলো নিশ্চয় সে এসেছে।শারমিন বলল
->এভাবে অদৃশ্য না থেকে আমার সামনে এসো।
শারমিনের কথা শেষ হওয়া মাত্র ওর থেকে কিছুদুর সরে আস্তে আস্তে একটা সাদা অবয়ব স্পষ্ট হতে লাগলো।তারপর যখন সে নিজের আসল রুপে ফিরে এলো তখন শারমিন ওর দিকে তাকিয়ে অবাক হয়ে গেলো।এত সুন্দর কারো চেহারা হতে পারে সেটা ছিলো শারমিনের ধারনার বাইরে।সাদা ধবধবে শরীর।লোমহীন চওড়া বুক।বেশ লম্বা দেখতে এক সুদর্শন যুবক ওর সামনে দাড়িয়ে আছে।শারমিন যেন ওর প্রতি সম্মোহীত হয়ে গেলো।কোমড় হতে হাঁটুর আগ পর্যন্ত সাদা রংয়ের কাপড় পেচানো।কোন অশরীরি যে এমন হতে পারে শারমিন ভাবতে পারছে না।কেন জানি একবারের জন্য মনে হলো এটা আবার কোন খারাপ কিছু নয়তো কিন্তু সে ওই অশরীরির চেহারার মায়ায় সব ভুলে গেলো।শারমিন সম্মোহীত ভাবে ওর দিকে এগিয়ে গেলো।কেমন যেন সে একটা ঘোরের মধ্যে পড়ে গেছে।শারমিন ওকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো।কি নরম মোলায়েম শরীর তার।।শারমিনের সারা শরীরে বিদ্যুৎ খেলে যাচ্ছে।
ওই যুবক বিছানার ওপর শুয়ে আছে।শারমিন যুবকটির বুকের শুয়ে থেকে ওর চেহারার দিকে মু্গ্ধ হয়ে তাকিয়ে আছে।এত সুন্দর চেহারা হতে কখনো চোখ ফেরানো যায় না।শারমিনের মনে হচ্ছে না যে শাওন নামের কেউ ওর জীবনে আছে।মন শুধু বলছে এই যুবক হলো শারমিনের মনের রাজকুমার।শারমিন বলল
->তুমি কোন কথা বলো না কেন?
->আমি শুধু আপনার গোলাম।আপনি আমাকে যে কাজে ব্যবহার করতে চান সে কাজে ব্যবহার করতে পারেন,,,আপনার ইচ্ছার বিরুদ্ধে যাওয়ার সাধ্য আমার নেই।
শারমিন বাঁকা ঠোঁটে হাসলো।তারপর বলল
->ঠিক আছে।রাজকুমার যখন সহজে ধরা দিয়েছে তাহলে তো তাকে আর ফেরানো যায় না।
শারমিন যুবকটির ওপর থেকে উঠে নিজেকে বিবস্ত্র করলো।তারপর নিজের মনের মতো করে যুবকটির সাথে মিলনে আবদ্ধ হলো।একসময় ক্লান্ত শরীরে যুবকটির বুকের ওপর শারমিন ঢলে পড়লো।যুবকটি যেন পাথরের মতো পড়ে আছে।নড়াচড়া কিছু করছে না।শারমিন যুবকটির বুকের ওপর ঘুমিয়ে যায়।
সকালে ঘুম ভাঙ্গার পর শারমিন দেখলো সে উপুড় হয়ে বিছানার ওপর পড়ে আছে।রাতের কথা মনে হতে শারমিন নিজে লজ্জা পেলো।
তাড়াতাড়ি করে সে ওয়াশরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে চলে আসলো।মনে মনে ভাবছে শারীরিক সুখের মতো আর কোন সুখ নেই।দুইদিন ধরে নিজের মনের ভিতর এক অজানা আনন্দের সৃষ্টি হয়েছে।আগে ওর মেজাজ খিটখিটে থাকতো কিন্তু এখন মেজাজ খিটখিটে হওয়া তো দুর ওর শাশুড়ী দুই একটা কথা শুনালেও সে সব হাসি মুখে উড়িয়ে দেয়।এভাবে প্রতিরাতে শারমিন সেই অশরীরির সাথে সম্পর্ক করে যাচ্ছে।
শারমিন ঘরের কাজ করছিলো এমন সময় ওর ফোন বেজে উঠলো।শারমিন ফোন হাতে নিয়ে দেখলো শাওন কল দিয়েছে।ফোন রিসিভ করতে শাওন বলল
->কি ব্যাপার মিসেস শারমিন আপনার কি আমার কথা মনে পড়ে না?
->মনে পড়ে না আবার।সবসময় তোমার কথা মনে পড়ে কিন্তু নিজের স্বামীকে ফোন দিতেও সংকোচ বোধ করতে হয়।
->আসলে আমি ভুল করেছি শারমিন।আমি দুরে থাকলেও তোমার খোঁজ খবর নেওয়া আমার উচিত ছিলো।
->হুমম হয়তো।জানো আমি তোমাকে সত্যি খুব ভালোবাসি কিন্তু তুমি তো কখনো আমায় বুঝতে পারোনি।
->আসলে নিজের স্ত্রীকে কখনো বোঝার চেষ্টা করিনি আমি।তবে আজ থেকে কথা দিচ্ছি তোমায় প্রতিদিন ফোন করবো।তারপর দুইজন মিলে জমিয়ে প্রেম করবো।আমার সাথে রাজি তো প্রেম করতে?
->হুম।রাজি মানে অবশ্যই রাজি।
এভাবে বেশ কিছু সময় কথা বলার পর শারমিন ফোন রেখে দিলো।শারমিন মনে মনে ভাবছে সে এসব করে অনেক বড় অন্যায় করে ফেলেছে স্বামীর সাথে।আর একটু অপেক্ষা করলে কি এমন হতো,,শারমিনের মনে অনুশোচনা হতে লাগলো ওর এই কাজের জন্য।তবে শারমিনের কাছে ব্যাপারটা কেমন যেন রহস্যময় লাগছে।হঠাৎ একটা মানুষের এমন পরিবর্তন হওয়া সত্যি অবাক হওয়ার মতোই।মায়া শারমিনকে দেখে বলল
->আচ্ছা ভাবি তুমি দিন দিন এতো সুন্দর হয়ে যাচ্ছো কি করে?
->আমি কি করে বলবো হুম।
->গায়ের উজ্জলতা যেন বৃদ্ধি পেয়েছে।
->আরে কি সব বলছো,,মা হবো কি করে।তবে এমনটা দেখে আমি অবাক হয়ে যাচ্ছি।
->আরে অবাক হওয়ার কিছু নেই ঠিক ভাবে খাওয়া দাওয়া করলে এমন হওয়া অস্বাভাবিক নয়।
->হুম।
শারমিন রাতের বেলা মনে মনে ভাবছে,,সে যদি ওই অশরীরির সাহায্যে কোন ভাবে শাওনকে দেখতে পেতো তাহলে বেশ ভালো হতো।শারমিন তখনই সেই অশরীরিকে স্বরন করলো।একটু বাদে সে শারমিনের সামনে এসে দাড়ালো।শারমিন তখন বলল
->আমার স্বামী যেখানে আছে,,তুমি আমায় সেখানে নিয়ে চলো।তবে সাবধান আমার স্বামী বা কোন মানুষ যেন আমায় দেখতে না পারে।পারবে?
->হ্যাঁ।
->ঠিক আছে তাহলে আমায় নিয়ে চলো।
তখন সে এসে শারমিনের হাত ধরলো।আর চোখের পলকে শারমিন এমন একটা জায়গায় এসে পড়লো।শারমিন যেখানে দাড়িয়ে আছে সেখানে ওর পিছনে কাঁচের দেয়ালের মতো।আর সামনে তাকিয়ে অনেক গুলো দরজা দেখতে পেলো।মনে হচ্ছে এগুলো একেকটা রুম।শারমিনে কাঁচের ভিতর দিয়ে নিচে তাকাতে ওর জান শুকিয়ে গেছে।দেখে মনে হচ্ছে সে প্রায় কম করে হলেও ৫০ তলার বেশি উচু বিল্ডিং এ দাড়িয়ে আছে।শারমিনের পাশে সেই যুবক বেশ ধরা অশরীরি দাড়িয়ে আছে।শারমিন ওকে বলল
->এখানে শাওন কোথায়?
তখন সে ইশারা করে সামনের দিকে দেখালো শাওন একটা মেয়ের হাত ধরে হেঁটে আসছে।দুইজন খুব ঘনিষ্ঠ ভাবে হাঁটছে।হঠাৎ দুইজন একটা রুম খুলে ভিতরে ঢুকে গেলো।শারমিন ওকে ভিতরে নিয়ে যেতে বলল।শারমিনের কথা অনুযায়ী ভিতরে নিয়ে গেলো।শারমিন ভিতরে ঢুকে যা দেখলো এতে ওর চোখ ছানাবড়া।দেখলো যে শাওন আর মেয়েটি দুইজনে অর্ধন*গ্ন হয়ে আছে।শারমিনের খুব কষ্ট হচ্ছিলো।মেয়েটি শাওনকে বলল
->আমার শেখানো কথা অনুযায়ী তোমার বউয়ের সাথে ঠিক মতো কথা বলছো তো?
->হ্যাঁ সোনা এমন ভাবে কথা বলছি যে কখনো আমার প্রতি ওর সন্দেহ জাগবে না।
->এই না হলে আমার প্রেমিক।
দুইজনে কথা বলা শেষ করে দুইজন শারীরিক সম্পর্ক করতে ব্যস্ত হয়ে পড়লো।শারমিন তাড়াতাড়ি বাড়ি চলে আসলো।আজ বুঝতে পারছে শাওনের ওকে ইগনোর করার কারন। ঠিক মতো কথা না বলার কারন।খুব কষ্ট হচ্ছে ওর।এমন সময় সে যুবক শারমিনের কাছে এগিয়ে এসে শারমিনকে ধাক্কা দিয়ে বিছানায় ফেলে দিলো।এরপর সে শারমিনে ঠোঁটে ঠোঁট মিলিয়ে দিলো।শারমিন নিজেও ওর সাথে সাড়া দিলো।আর দুইজন আবারো মিলনে আবদ্ধ হলো।

চলবে...............??????

(গল্প সম্পূর্ণ কাল্পনিক।গল্পটাকে কেউ অন্য ভাবে নিবেন না।পড়তে থাকলে বাকিটা বুঝতে পারবেন।বাস্তবের সাথে গল্পের কোন মিল নেই।যাদের ভালো লাগবেনা এড়িয়ে যাবেন কেউ বাজে মন্তব্য করবেন না)
নতুন পর্ব পোস্ট করার পর সবার আগে টাইমলাইনে পেতে পেজটিতে ফলো দিয়ে রাখুন।।

 #পিশাচিনী  #পর্ব_০২+০৩শীতের দিনে গায়ে পানি দেয়াতে প্রচন্ড শীত করছে আমার। রাগে দুঃখে কান্না করতে ইচ্ছা করছে আমার। কিন্তু...
22/08/2023

#পিশাচিনী

#পর্ব_০২+০৩

শীতের দিনে গায়ে পানি দেয়াতে প্রচন্ড শীত করছে আমার। রাগে দুঃখে কান্না করতে ইচ্ছা করছে আমার। কিন্তু ছেলে মানুষ কিভাবে কান্না করি? তাই কান্নাটা দমিয়ে রেখে ওয়াশরুমে যেয়ে একবারেই গোসল করে ফ্রেশ হয়ে বের হলাম। তারপর সোজা চলে গেলাম নাস্তার টেবিলে। আমি একটা চেয়ার টেনে তাতে বসে পড়লাম। তারপর নাস্তা করতে শুরু করলাম। রিত্ত বললো,
- ভাইয়া সকাল বেলা গায়ে পানি ঢেলে দিলে কেমন লাগে?
- দেখ রিত্ত মেজাজ খারাপ করাবি না। এমনিতেই মেজাজ খারাপ আছে কিন্তু...
- আমার কথা শুনলে তো আর এই পরিস্থিতে পড়তে হতো না। সেই সকাল থেকে তোমাকে ডাকছি কিন্তু কিছুতেই তুমি উঠলে না। আর তাই তোমার এই না ওঠার ফলাফলটা কি হলো? নীলা আপুরা এসে গায়ে পানি ঢেলে দিলো। তারপর তুমি সুড়সুড় করে উঠে গেলে হিহিহিহি
আমার এই বোনটার টিটকারী মার্কা কথা শুনে শরীর পুরা জ্বলে গেলো। সারাক্ষন ওর কাজ একটাই। আর তা হলো আমাকে জ্বালানো। কিন্তু এখন আমি ওকে কিছুই বললাম না। আর ওকে কিছু না বলারও কারন আছে, আমি মনে মনে ঠিক করলাম আমার ভেজা কাঁথা বালিশ গুলো সব রিত্তকে বলবো ছাদে নিয়ে যেয়ে শুকাতে। যে ভাবা সেই কাজ। আমি অনেক মিষ্টি করে রিত্তকে বললাম,
- রিত্ত তুই আমার অনেক লক্ষীটি একটা বোন।
রিত্ত প্রচন্ড অবাক হয়ে হা করে আমার দিকে তাকিয়ে থাকলো। আমার কাছ থেকে এমন একটা কথা ও আশা করেনি। তাই আমাকে বললো,
- ভাইয়া তোমার শরীর ঠিক আছে তো?
- হ্যাঁ অবশ্যই ঠিক আছে। কেনো থাকবে না?
- ঠিক যদি থেকে থাকে, তাহলে এমন ভুল ভাল বকতেও ক্যান? এই কথাটা তো জীবনেও আমাকে বলো নাই।
- আরে গাধী এটা ভুলভাল না। এটা তোর প্রতি আমার ভালোবাসা।
- এটা কোথাকার পাম ছিলো ভাইয়া?
- এটা মোটেও পাম না ঠিক আছে? আর আমি যে তোকে কতটা ভালোবাসি এটা আমি প্রকাশ করতে চাইনা। আচ্ছা যাই হোক যেটা বলছিলাম। আমাকে একটা হেল্প করবি আপু?
- এএএ এই তো এতক্ষন পর আসল কথাটা বের হয়ে আসছে। আমাকে দিয়ে কাজ করানোর জন্য এত কিছু বলা তাই না?
- একটা চড় দিবো তোর। ক্যান আমি কি তোকে ভালোবাসি না?
- হ্যাঁ হ্যাঁ অনেক ভালোবাসো। আচ্ছা বাদ দাও। কি কাজ করতে হবে সেটা বলো।
- বলছিলাম কি, আমার ভেজা কাঁথা বালিশ কম্বল গুলো একটু ছাদে শুকাতে দিয়ে আসবি? আর না শুকালে তো রাতে আমি ঘুমাতে পারবো না।
আমার কথা শুনে আমার বোনটা যেনো আকাশ থেকে পড়লো। তারপর বললো,
- ওরে আল্লাহ এটা আমি পারবো না। তোমার কাজ তুমি করো। আর আমার কথা শুনে তখন উঠলে তো আর এমনটা হতো না।
- রিত্ত বোন আমার তুই না কত ভালো লক্ষী একটা মেয়ে? বিকালে তোকে অনেক গুলো চকলেট এনে দিবো। কাজটা করে দে না আপু?
- ভাইয়া আমি সেই ছোট টি নেই যে চকলেট খাবো। আর শোনো নিজের কাজ নিজে করতে হয় বুঝলে? এত বড় হয়ে গেছো এখনো বুঝো না? কবে তুমি বুঝবা আল্লাহ!
আমাকে জ্ঞান দিয়ে রিত্ত উঠে মায়ের কাছে চলে গেলো। আমি রেগে গিয়ে রিত্তকে বললাম,
- ওই তুই কি আমার বোন না ডাইনী?
- ডাইনী হতে যাবো কেনো? আমি তো তোমার বোন। আর আমি ডাইনী হলে তো তুমি হইতা রাক্ষস। কিন্তু তুমি যখন রাক্ষস না তখন আমিও ডাইনী না। এখন ওখানে বসে না থেকে ঐ গুলো রোদে শুকাতে দাও।
আল্লাহ এইটা কি আমার বোন? আমার মত একটা ইনোসেন্ট ছেলের এমন পাজি একটা বোন ক্যামনে দিলা আল্লাহ? যাই এখানে আর বসে না থেকে ঐগুলো রোদে শুকাতে দেই। না হলে রাতে আর ঘুমানো হবে না। আর আম্মুকে বলবো কিন্তু বলেও কোনো লাভ নেই। বললেই নিজের অনেক গুলো কাজের কথা শুনিয়ে দিবে। তার থেকে নিজের কাজ নিজেই করি।
নাস্তা শেষ করে রুমে চলে এলাম। তারপর কাঁথা বালিশ নিয়ে সোজা ছাদে চলে গেলাম। আরো কিছু থেকে গেছে। সব এক সাথে নিয়ে যাওয়া যাচ্ছে না। অর তাই এক এক করে নিয়ে যেতে হবে। ছাদে যেয়ে ঐ গুলো শুকাতে দিলাম। তারপর পিছনে ফিরে দেখি বাকি গুলো রিত্ত নিয়ে চলে এসে। আমি ওকে দেখে বললাম,
- তোকে এসব আনতে কে বলেছে হুম? আমার কাজ আমি নিজে করতে পারবো।
- কচু করতে পারবা তুমি। তুমি যেভাবে শুকাতে দিছো এটা দুইদিনেও শুকাবে না। আমি জানি তো এমনটাই করবা। এখন যাও আমাকে কাজ করতে দাও।
আমি ছাদে রাখা রিত্তর দোলনার উপর যেয়ে বসলাম। আমরা দুই ভাই বোন যতই ঝগড় করি না কেনো? আমরা একে অপরকে প্রচন্ড ভালোবাসি। কেউ কাউকে ছাড়া থাকতেই পারি না। আর আমার বোনটা আসলেই লক্ষী একটা বোন। আমি রিত্তকে বললাম,
- রিত্ত তোর কাজ শেষ হলে আমার জন্য এক মগ কফি বানিয়ে আনিস তো।
- আচ্ছা ঠিক আছে। কিন্তু ভাইয়া তুমি নিচে যাবে না? নাকি এখানেই থাকবা?
- রোদে বসে থাকতে ভালোই লাগছে তো। আর তাছাড়া শীতকালের রোদটা একটু মিষ্টিই হয়।
- তাহলে রোদ খেয়েই থাকো না? কফি খাওয়ার দরকার কি?
- এত কথা বলিস ক্যান? তোকে যেটা বলছি সেটা কর।
রিত্ত চলে গেলো। আর আমি বসে দোলনায় দোল খেতে লাগলাম। একটু পরেই কফি দিয়ে গেলো আমার বোনটা। রোদে বসে কফি খেতে খুবই ভালো লাগছে। তারপর কফি খাওয়া শেষ করে মগটা ছাদের উপর রেখে দিলাম। তারপর দোলনার উপর পা উঠিয়ে চোখ বুজে শুয়ে থাকলাম।
- ঐ হারামি কুত্তা শয়তান তোর ফোন অফ ক্যান?
উপরের মিষ্টি গালি গুলো আমার পিছন থেকে কেউ একজন বললো। তারপর চোখ খুলে পিছনে তাকিয়ে দেখি নীলা শাম্মী আর জুলি পেত্নিটা দাড়িয়ে আছে। নীলা আর শাম্মীকে দেখে বললাম,
- হারামি পেত্নি শাকচুন্নি কুত্তি তোদের দুইজন কে এখন চিবিয়ে খাইতে ইচ্ছা করছে। তোদের জন্য আমার কাঁথা বালিশ ভিজে গেছে।
- আরে রাখ তোর কাঁথা বালিশ। তোর ফোন অফ ক্যান শালা? (বললো জুলি)
- আমার ফোন অফ ক্যান সেটা কি তোদের বলতে হবে নাকি? আমার ফোন, আমি অফ রাখবো কি অন রাখবো সেটা আমার ব্যাপার। তোদেরকে কেনো বলতে যাবো?
আমার কথা শুনে নীলা আমাকে ধমাধম কয়েকটা কিল ঘুসি মেরে বললো,
- শালা ফইন্নি মুখে খুব খই ফুটতেছে না? যেটা বলি সেটার উত্তর না দিয়ে আরেকটা বলিস তোর সাহস তো কম না?
- সাহসের দেখছিস কি তুই?
পাশ থেকে শাম্মী বললো,
- নীলা জুলি হারামিটাকে ধরে রাখ তো আমি আবার পানি আসতেছি।
- ওই ওই কুত্তি দাড়া, পানি আনতে হবে না। আমি বলছি।
- এই তো গুড বয় বল বল?
- সকাল বেলা তোরা ভিজিয়ে দিয়ে গেলি আর সেই রাগেই তো আমি ফোন অফ করে রাখছি। তোরা জানিস সকালে কি সুন্দর একটা রোমান্টিক স্বপ্ন দেখছিলাম আমি। আর তোরা এসে আমার সেই রোমান্সের মাঝে পানি ঢেলে দিলি।
আমার কথা শুনে পাশ থেকে জুলি বললো,
- তা দোস্ত তুই কার সাথে রোমান্স করছিলি রে স্বপ্নে?
জুলির কথা শুনে পাশ থেকে নীলা বললো,
- কার সাথে আবার? আমাদের সাদিয়ার সাথে ছাড়া ও আর কার সাথে স্বপ্নে রোমান্স করতে পারে? সারাক্ষন সাদিয়ার কথা ভাবলে স্বপ্নে তো সাদিয়াকেই দেখবে তাই না?
- ওই তোরা আমার কথা কি বলছিস রে?
কথাটা শুনে আমরা সবাই তাকিয়ে দেখি সাদিয়া। সাদিয়াও চলে এসেছে কাউকে না পেয়ে। কিন্তু সাদিয়ার দিকে তাকিয়ে চোখ ফেরাতে পারছি না আমি। একটা নীল স্যালোয়ারে ওকে একদম নীল পরীর মত লাগছে। অসম্ভব সুন্দর লাগছে। ইচ্ছা করছে ছুটে যেয়ে সাদিয়াকে জড়িয়ে ধরি। তারপর ওর সুন্দর গালটাতে একটা চুমু খাই। আমাকে এমন হা করে তাকিয়ে থাকতে দেখে আমার কানের কাছে ফিসফিস করে নীলা বললো,
- হারামি এভাবে তাকাস না। বদহজম হয়ে যাবে তো।
আমাদের কাছে এসে সাদিয়া বললো,
- কি রে তোরা আমাকে নিয়ে কি কথা বলছিলি?
- কি কথা আর বলবো? তোর রোমিও স্বপ্নে তোর সাথে রোমান্স করছিলো। আর সেটাই কথা হচ্ছিলো আমাদের। (বললো শাম্মী)
- আমার রোমিও মানে কি?
- তোর রোমিও মানে তোর রোমিও। মাহাবুর শালা তোকে নিয়ে নাকি একটা রোমান্টিক স্বপ্ন দেখছিলো। (বললো জুলি)
- দেখ জুলি একদম আজাইরা কথা বলবি না।
- আজাইরা কথার কি হলো? আমরা সবাই জানি মাহাবুর তোকে পছন্দ করে। (বললো নীলা)
- দেখ নীলা মাহাবুর আমাদের বেষ্ট ফ্রেন্ড। আমরা সবাই খুব ভালো বন্ধু। আর সারা জীবন বন্ধু হয়েই থাকতে চাই। আর বন্ধুর সাথে রিলেশনে যাওয়া, এটা আমার পছন্দ না। আর এটা আমি অনেক বলেছি তোদের। তার পরেও কেনো এমন মজা করিস?
এতক্ষন চুপচাপ সবার কথা শুনছিলাম। এবার আমি সাদিয়াকে বললাম,
- কিন্তু সাদিয়া আমি তোকে সত্যিই অনেক ভালোবাসি রে।
- দেখ দোস্ত, ভালো আমিও তোকে বাসি। তাও নিজের জীবনের থেকে বেশি ভালোবাসি কিন্তু সেটা শুধু মাত্র বন্ধুর প্রতি ভালোবাসা। আমি তোকে বন্ধু ছাড়া আর কিছুই ভাবতে পারিনা, এটা তুই কেনো বুঝিস না?
- আমি বুঝিনা আর বুঝতে চাইও না। আমি তোকে ভালোবাসি আর তোকেই বউ করে আপন করে পেতে চাই।
- এটা কখনোই সম্ভব না।
- কেনো সম্ভব না সাদিয়া?
সাদিয়া আমার কথার উত্তর না দিয়ে, নীলা শাম্মী আর জুলিকে উদ্দেশ্য করে বললো,
- নীলা শাম্মী জুলি দোস্ত তোরা এই গাধাটাকে একটু বোঝা না? আমি গেলাম রে বিকালে দেখা হবে।
এটা বলেই সাদিয়া চলে গেলো। আর আমি মলিন মুখে দোলনার উপর বসে পড়লাম। আমার পাশে নীলা বসতে বসতে বললো,
- দোস্ত মন খারাপ করিস না রে।
আমি নীলাকে জড়িয়ে ধরে বললাম,
- দোস্ত সাদিয়া কেনো বোঝে না আমি ওকে অনেক ভালোবাসি? আমি ওকে ছাড়া কিছুই ভাবতে পারি না।
- আসলে সাদিয়া বন্ধুত্বটাকে শুধুমাত্র বন্ধুত্বই রাখতে চাই। অন্য কোনো সম্পর্কের রুপ দিতে চাই না। রিলেশনে গেলে, প্রেম করলে এক সময় ব্রেকাপ হওয়ার সম্ভবনা থাকে। আর একবার ব্রেকাপ হলে কথাবার্তা বা যোগাযোগ থাকে না বা রাখতে চাই না। কিন্তু আমরা সবাই তো খুব ভালো বন্ধু। আমরা তো কেউ কারো সাথে কথা না বলে থাকতে পারবো না। আর এসব চিন্তা করেই হয়তো সাদিয়া তোকে বার বার ফিরিয়ে দেয়।
- মাহাবুর দোস্ত, নীলা ঠিকই বলেছে। (বললো শাম্মী)
- কিন্তু আমি...
আমাকে কথা বলার মাঝ পথে থামিয়ে দিয়ে জুলি বললো,
- দোস্ত এসব কথা এখন বাদ দে। আমরা আছি তো। আমরা দেখবো কিছু করতে পারি কিনা।
জুলির কথা বলা শেষে নীলা বললো,
- উফফ আমরা যে জন্য তোর কাছে আসছি, সেই কথাটা বলতেই তো ভুলে গেছি।
- মানে? কি কথা দোস্ত?
- আমি জুলি আর শাম্মী ঠিক করছি আমরা ঘুরতে যাবো। পিকনিক বলতে পারিস। আমরা ফ্রেন্ডরা সবাই মিলে যাবো। তাই তোকে বলতে আসছি। সাদিয়াকে বলা হয়নি। আর নাজমুল আর রাফিকেও না।
- নাজমুল আর রাফিকে না বললেও চলবে। আমরা যা বলবো হারামি দুইটা তাই ই মেনে নিবে হিহিহি। (বললো জুলি)
- কিন্তু এই শীতের দিনে ঘুরতে যাওয়া? উফফ আমি পারবো না দোস্ত। (বললাম আমি)
পিশাচিনী
"লেখাঃ- Mahabur Rahman"
পর্ব":-০৩

কিন্তু এই শীতের দিনে ঘুরতে যাওয়া? উফফ আমি পারবো না দোস্ত। (বললাম আমি)
আমার কথা শুনে নীলা আমার কাছে এসে বললো,
- হারামি একটা লাত্থি দিমু তোরে, যাবি না মানে? তোর যাইতে হবে আর এটাই শেষ কথা।
- আচ্ছা তোরা কি পাগল? এই শীতের মাঝে কি কেউ ঘুরতে যায়?
- আরে দোস্ত শীত কই? এখন তো আর বেশি শীত নাই। আর কয়েকটা দিন পরেই তো সবাই পিকনিকে যাবে। আমরা না হয় দুইদিন আগেই গেলাম। (বললো জুলি)
জুলির কথা শেষ হতে না হতেই শাম্মী বললো,
- মাহাবুর দোস্ত তুই এমন করছিস ক্যান? রাজি হয়ে যা। আর চল সামনের সপ্তাহে আমরা ঘুরে আসি।
- আরে শাম্মী এই বলদটারে এত রিকোয়েষ্ট করার কি আছে? শালা না গেলে ওরে বাইন্ধা নিয়া যামু না? (বললো নীলা)
আমি বুঝতে পারছি, পেত্নি গুলোর মাথায় যখন একবার ঘোরার ভূত চেপেছে তখন যাবেই। আমি যতই না না করি কোনো কাজ হবে না। আর তাই আমি বললাম,
- ওকে ওকে ফাইন, আমি যাবো। কিন্তু সাদিয়া যাবে তো আমাদের সাথে?
আমার কথা শুনে জুলি বললো,
- সাদিয়া যাবে না মানে? সাদিয়ার বাপ যাবে।
- পেত্নি সাদিয়ার বাপেরে দিয়া কি করবো? সাদিয়া যাবে কিনা সেটা বল।
- দোস্ত চিন্তা করিস না সাদিয়া আমাদের সাথে যাবে। (বললো শাম্মী)
- তাহলে যেতে আমার কোনো সমস্যা নেই।
আমার কথা শুনে নীলা বললো,
- দেখছিস তোরা শালা কত্ত বড় হারামি? আমাদের থেকে সাদিয়া ওর কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ন।
নীলার কথা শেষ হতে না হতেই আমি নীলাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বললাম,
- আরে আরে দোস্ত রাগ করছিস ক্যান? তোরা তো সবাই আমার কলিজা। তোদেরকে অনেক ভালোবাসি আমি।
- হারামি ছাড় আমারে। আর খবরদার একটুও পাম দেয়ার চেষ্টা করবি না।
আমার কাছ থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে নীলা কথা গুলো বললো। আমি শাম্মী আর জুলির কাছে যেয়ে বললাম,
- আচ্ছা দোস্ত তোরা বল তো আমি কি পাম দিচ্ছি? আমি তোদেরকে ভালোবাসি না?
- হুম অনেক বাসিস এবার এটা বাদ দে। আচ্ছা নীলা তো আমরা যাচ্ছি কোথায়? (বললো শাম্মী)
- যাচ্ছি কোথায় সেটা তো আমি এখনো জানিনা। তবে সবাই মিলে এক সাথে হয়ে ঠিক করবো কোথায় যাওয়া যায় ওকে?
জুলি বললো,
- ওকে ওকে জানাইস। আচ্ছা তোরা কি এখানে থাকবি? নাকি বাড়িতে যাবি? আমি বাড়িতে যাচ্ছি।
- আমরাও থাকবো না। চল এক সাথে যাই। ওকে দোস্ত তুই তাইলে থাক পরে তোরে জানাবো। (বললো নীলা)
নীলা শাম্মী আর জুলি চলে গেলো। আর আমিও কফির মগটা নিয়ে ছাদ থেকে নেমে এলাম। তারপর রিত্তর রুমে এসে শুয়ে পড়লাম। শুয়ে শুয়ে ফোনে গেম খেলছি। ঠিক তখনই রুমে রিত্ত চলে এলো। আমাকে ওর রুমে দেখে ভূত দেখার মত চিল্লাই উঠে বললো,
- ভাইয়া তুমি আমার রুমে শুয়ে আছো কেনো?
- তো কি হইছে? জানিস না আমার বিছানা চাদর সব ছাদের উপর? তো খালি খাটের উপর কি ঘুমানো যায়? এখন যা বিরক্ত করিস না আমি ঘুমাবো। আর ছাদের উপর থেকে ঐগুলো নিয়ে এসে সব কিছু ঠিক করে রাখিস।
আমার কথা শুনে রিত্ত কান্না করতে করতে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো আম্মুর কাছে। আর আমিও ফোন রেখে শুয়ে পড়লাম। তারপর কখন যে ঘুমিয়ে গেছি মনে নেই। তারপর ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে খেয়ে বাড়ি থেকে বের হলাম। আনমনে রাস্তা দিয়ে হেটে চলেছি। ঠিক তখনই আমার কাছে দৌড়াতে দৌড়াতে রাফি আর নাজমুল এলো। আমি ওদেরকে দেখে বললাম,
- কি রে তোদেরকে দৌড়ানি দিলো কে?
- আমাদেরকে দৌড়ানি দিবে কে? (হাফাতে হাফাতে বললো রাফি)
- তোদেরকে দৌড়ানি না দিলে এভাবে দৌড়াচ্ছিস ক্যান তোরা?
আমার কথার উত্তরে নাজমুল বললো,
- আরে দোস্ত তোকে দেখেই তো তোর কাছে দৌড়ে আসলাম।
- তো আমাকে দেখে দৌড়ে আসার কারন কি বল তো?
রাফি বললো,
- আমি আর নাজমুল গেছি নীলাদের বাড়িতে। নীলা ফোন করে আসতে বলেছে। তো আমরা গেছি। যেয়ে দেখি নীলা শাম্মী জুলি আর সাদিয়া বসে গল্প করছে। আমরা যাওয়ার সাথে সাথে বলে সামনের সপ্তাহে সবাই মিলে নাকি পিকনিকে যাবে। আর তাই আমাদেরকেও যেতে হবে। আর ওরা বললো তুইও নাকি যাচ্ছিস আর তাই তো তোর কাছে ছুটে আসা।
- ওরে গাধা রে গাধা, সবাই গেলে তো আমাকেও যেতে হবে তাই না?
- হুম সেটা অবশ্য ঠিক। আচ্ছা দোস্ত তুই এখন যাচ্ছিস কোথায়? (বললো নাজমুল)
- কোথায় আর যাবো? বাজারের দিকে যাচ্ছি, যাবি তোরা?
- হুম যাবো চল। (বললো রাফি)
তারপর নাজমুল আর রাফিকে নিয়ে বাজারের দিকে গেলাম একটু ঘুরতে। সারা বিকাল ঘোরাঘুরি করে সন্ধ্যার দিকে বাড়িতে আসলাম। বাড়িতে এসে আমার রুমে এসে দেখি, আমার রুমটা খুব সুন্দর করে গুছিয়ে রেখেছে আমার বোনটা। আমি খাটের উপর বসতে বসতে রিত্তকে ডাক দিলাম। আমি ডাকার কিছু সময় পরেই ও আমার রুমে চলে এলো। তারপর বললো,
- ভাইয়া ডাকছো?
- হুম এই নে তোর জন্য চকলেট এনেছি।
আমার হাত থেকে চকলেট গুলো নিয়ে আমার গালে একটা চুমু দিয়ে বললো,
- ভাইয়া তুমি আমার ভালো ভাইয়া, সুইট ভাইয়া। লাভ ইউ।
- হইছে হইছে এবার যা।
পাগলি বোনটা চকলেট গুলো নিয়ে নাচতে নাচতে রুম থেকে চলে গেলো। আমার একমাত্র আদরের ছোট বোন রিত্ত। ওর এই হাসি মাখা মুখটা দেখলে আমার পৃথিবীর সব থেকে সুখি মানুষ মনে হয়।
- শাপলা কি হলো তোমার? তোমার এই অবস্থা কে করেছে? আমি এখনি গাড়ি বের করছি তোমাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।
- ধ্রুব আমাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার দরকার নেই। আমি বাঁচবো না। তুমি তো দেখতেই পাচ্ছো আমার পেটের নাড়িভুড়ি বের করা। সারা শরীর ক্ষতবিক্ষত। আমার কথা বাদ দাও আর তুমি এখান থেকে পালিয়ে যাও ধ্রুব প্লিজ?
ধ্রুব ভালো করে খেয়াল করে দেখে, শাপলার সারা শরীর ক্ষতবিক্ষত। পেটের নাড়ি ভুড়ি কেউ টেনে বের করে ফেলেছে। মনে হচ্ছে কোনো হিংস্র পশুর কাজ এটা। শাপলা আবারো অনেক কষ্টে ধ্রুবকে বললো,
- ধ্রুব তুমি প্লিজ তাড়াতাড়ি এখান থেকে পালিয়ে যাও। নয়তো ও ও তোমাকেও মেরে ফেলবে।
ধ্রুব প্রচন্ড অবাক হয়ে শাপলাকে বললো,
- কে মেরে ফেলবে? আর তুমি কার কথা বলছো?
- ঐ আত্মাটা। ও এই বাংলোতে থাকে। আর ঐ আত্মাটাই আমার এই অবস্থা করছে। এবার তোমাকেও মেরে ফেলবে ও। তুমি যাও এখান থেকে।
এটা বলতে বলতেই শাপলা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লো। আর ধ্রুব শাপলাকে বুকে জড়িয়ে ধরে কান্না করতে লাগলো। হঠাৎ ধ্রুব একটা গোঙানির আওয়াজ শুনতে পেলো। তারপর ঘুরে পিছনে তাকিয়ে দেখে একটা খুবই বিভৎস্য আর ভয়ংকর একটা মহিলা হামা গুড়ি দিয়ে ধ্রুবর দিকে এগিয়ে আসছে। মহিলাটার মুখের সামনে চুল গুলো ঝুলে পড়েছে। সেই চুলের ফাক দিয়ে দেখা যাচ্ছে ওর ভয়ংকর চেহারাটা। মুখের এক পাশে লম্বা করে একটা কাটা দাগ। আর সেই কাটা জায়গা থেকে রক্ত পড়ছে। আর ওর হাতে কেমন যেনো ফোসকা পড়া। আর কি বোটকা গন্ধ বের হচ্ছে। ধ্রুব ঐ হামা গুড়ি দিয়ে আসা মহিলাটাকে দেখে বুঝতে পেরেছে, ওর শাপলাকে ঐ ই মেরেছে। আর ও একটা আত্মা। খুবই ভয়ংকর একটা আত্মা। ধ্রুব শাপলাকে রেখে উঠে দাড়ালো। আর ধ্রুবকে উঠতে দেখে ঐ আত্মাটাও একটা ভয়ংকর হাসি দিয়ে উঠে দাড়ালো। তারপর এগিয়ে আসতে লাগলো ধ্রুবর দিকে। ধ্রুবও দৌড়ে বাংলোর বাইরে বেরিয়ে গেলো। তারপর দৌড়াতে থাকলো। দৌড়াতে দৌড়াতে একটা নির্জন জাগায় এসে দাড়ালো। দাড়িয়ে হাফাতে লাগলো। হঠাৎ পিছন থেকে কেউ একজন একটা কুৎসিত হাত ধ্রুবর কাঁধের উপর রাখলো। আর ধ্রুবও আস্তে আস্তে পিছন ফিরে তাকালো।
আ আ আ আ প্রচন্ড জোরে একটা চিৎকার দিয়ে উঠলাম আমি। আমার চিৎকার শুনে পিছন থেকে সবাই খিল খিল করে হেসে উঠলো। আর আমার বুকের হার্টবিট যেনো কয়েক গুন জোরে লাফাতে লাগলো। তারপর হাসতে হাসতে নীলা আমাকে বললো,
- হারামি ভিতুর ডিম, এত ভয় পাস তো ভূতের মুভি দেখিস ক্যান?
- হারামি পেত্নি শাকচুন্নি তুই আমার পিঠে হাত রাখলি ক্যান? আমি তো ভাবছি মুভির ধ্রুবর মত আমার কাঁধের উপরও কোনো আত্মা হাত রেখেছে। এবার আমি শেষ। এখন তো ইচ্ছা করতেছে তোরে ধরে পানিতে চুবায়।
আমার কথা শুনে নীলা হাসতে হাসতে বললো,
- আমরা এসে দেখি তুই ভূতের মুভি দেখছিস। মুভিটা এতটাই মনোযোগ দিয়ে দেখছিস যে আমরা কখন তোর রুমে এসে তোর পাশে এসে বসেছি, সেটা তুই খেয়ালই করিস নি। তাই ভাবলাম তোকে একটু ভয় দেই। আর তাই তোর কাঁধে হাত রাখছি, শীতে হাত ঠান্ডা থাকায় তুই ভাবছিস যে কোনো ভূতের হাত, আর এটা ভেবে চিল্লানি দিছিস হিহিহি।
নীলার কথা শেষ হতে না হতেই সাদিয়া বললো,
- দোস্ত যাই বলিস? তোকে ভয় দেখিয়ে আমরা কিন্তু সেই রকম মজা পাইছি হিহিহি।
- ফইন্নি রাখ তোর মজা। তোরা কি করতে আসছিস সেটা বল?
- আরে গাধা আমরা যে পিকনিকে যাচ্ছি শুক্রবারে আর সেটা তোকে বলতে আসছি। (বললো শাম্মী)
- তা কোথায় যাচ্ছি? সেটা ঠিক করেছিস?
আমার কথা শুনে নীলা বললো,
- হুম সব ঠিক করেছি। আমরা যাচ্ছি মধুপুর সাদিয়াদের বাংলো বাড়িতে। ওখানে যেয়ে আমরা থাকবো।
সাদিয়া বললো,
- মাহাবুর দোস্ত কোনো চিন্তা নেই। আব্বু ওখানকার কেয়ার টেকার কে সব বলে দিছে। আমাদের যা যা লাগবে সব কিছু ওখানে পাবো আমরা। সো সামনের শুক্রবারে আমরা যাচ্ছি।
- মোটেও না। আমি তোদের বাংলো বাড়িতে যাবো না। অন্য কোথায় যদি যাস তাহলে আমি আছি।
জুলি বললো,
- ওরে গাধা ভিতুর ডিম, তুই কি ভেবেছিস? তোর এই ভূতের সিনেমার মত ঐ বাংলো বাড়িতেও ভূত আছে?
- ভূত থাকুক আর পেত্নি থাকুক আমরা যাচ্ছি আর এটাই ফাইনাল। (বললো নীলা)
সাদিয়া বললো,
- আচ্ছা মাহাবুর তুই কি ছেলে না? নাকি মেয়ে?
- পেত্নি একটা লাত্থি দিবো তোর। আমি ছেলে না তো কি মেয়ে?
- আমার না কেনো জানি মনে হয় তুই মেয়ে। কিন্তু ভুল করে ছেলে হয়ে গেছিস। নয়তো মেয়েদের মত এত ভয় কেউ পাই? আমরা চারটা মেয়ে যেতে ভয় পাচ্ছি না আর তুই ছেলে হয়ে যেতে ভয় পাচ্ছিস?
সাদিয়ার কথাটা শুনে সবাই হেসে উঠলো। আমি ওদেরকে একটা ধমক দিয়ে বললাম,
- ওরে বলদের দল আমি তো যেতে চাচ্ছি না শীতের ভয়ে, ভূতের ভয়ে নাকি?
- শীতের ভয়ে কি ভূতের ভয়ে সেটা আমরা ভালো করেই জানি হিহিহি। (বললো শাম্মী)
- হারামি তোদের পেত্নি মার্কা হাসি বন্ধ কর। আমি তো যাচ্ছি তাই না? এত হাসার কি আছে বুঝলাম না। আচ্ছা তোরা যে আসলি নাজমুল আর রাফি এলো না?
- ওদেরকে তো বলি নি যে আমরা তোর কাছে যাচ্ছি। বললে ঠিকই চলে আসতো। (বললো জুলি)
নীলা বললো,
- ওকে খাচ্চর তুই তাইলে ভূতের মুভি দেখ? আমরা যাই এখন।
এটা বলেই পেত্নির দলেরা চলে গেলো। ওরা চলে গেলে আমি ল্যাপটপ টা রেখে দিলাম। মুভিটা দেখার মুডটাই নষ্ট করে দিছে, তাই আর দেখলাম না।
চলবে................ See less

Address

Jamgram, Kahalu, Bogura
Rajshahi

Telephone

+8801580564412

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Bhoot Story 0.5 posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Bhoot Story 0.5:

Share