29/07/2023
"জিয়াউর রহমানের ৫ বছরের শাসনে প্রতি মাঘের শেষে বর্ষণ হয়েছিলো কি না তার হিসাব কেউ রাখেনি।তবে এই ৫ বছরে কোন প্রাকৃতিক দূর্যোগ হয়নি। অতি বর্ষণের বন্যা না,খরা না,জলোচ্ছ্বাস না।
দেশের কাপড়ের অভাব কিছুটা দূর হলো। দ্রব্যমূল্য লাগামছাড়া হলো না।বাংলাদেশের নদীতে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়তে লাগল।
বাংলাদেশের মানুষ মনে করতে লাগলো, অনেক দিন পরে তারা এমন একজন রাষ্ট্রপ্রধান পেয়েছে যিনি সৎ। নিজের অথবা আত্মীয়স্বজনের জন্যে টাকাপয়সা লুটপাটের চিন্তা তার মাথায় নেই।বরং তার মাথায় আছে দেশের জন্য চিন্তা।তিনি খাল কেটে দেশ বদলাতে চান।
জিয়া মানুষটা সৎ ছিলেন তাতে কোন সন্দেহ নেই। লোক দেখানো সৎ না, আসলেই সৎ। তার মৃত্যুর পর দেখা গেলো জিয়া পরিবারের কোন সঞ্চয় নেই।বাংলাদেশ সরকার জিয়া পরিবারের সাহায্যে তখন এগিয়ে এলো। বাংলাদেশ সরকার যা করলো তা হলো:-
১. জরুরি ভিত্তিতে ১০ লক্ষ টাকা নগদ মঞ্জুরি
২. এক টাকা দামে ঢাকায় অভিজাত এলাকায় জিয়া পরিবারের কাছে বিশাল একটা বাড়ি বিক্রি।
৩. ২৫ বছর হওয়ার আগপর্যন্ত জিয়াউর রহমানের দুই ছেলে তারেক রহমান ও কোকুর সমস্ত খরচ বহন + মাসিক ১৫শ টাকা ভাতা প্রদান।
৪. সরকার বেগম জিয়া ও দুই পুত্রের দেশে ও দেশের বাইরে সমস্ত খরচ বহন করবে
৫. সরকার জিয়া পরিবারকে একটা গাড়ি + ড্রাইভার + পেট্রোল খরচ দেবে।
৬. বাসায় একটা টেলিফোন + টেলিফোন খরচ সরকার বহন করবে।
৭. বাড়িতে বিদ্যুৎ, পানি ও গ্যাসের খরচ সরকার বহন করবে
৮. খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত সহকারী ও ৫ জন ভৃত্যের খরচ সরকার বহন করবে।
এইগুলো জিয়ার মৃত্যুর পরের ব্যবস্থা।তার আগে ফিরে যাই। অর্থনৈতিক ভাবে অতি সৎ একজন মানুষ পেয়ে দেশের মানুষ অনেক আনন্দিত হলো। মূল কারণ অর্থনৈতিক ভাবে এমন সৎ রাষ্ট্রপ্রধান তারা আগে কখনো দেখেনি।
বুদ্ধিজীবী এবং কবি-সাহিত্যিকরা জিয়াকে, বিশেষ করে তার খালকাটা কর্মসূচিকে সমর্থন জানালেন। কবি শামসুর রাহমানকে এক খালকাটা উৎসবে লাল টাই পড়ে ঘুরে বেড়াতে দেখা গেলো। সংবাদমাধ্যমগুলি জিয়াউর রহমানের সততার গল্প প্রচার করতে শুরু করলো। যেমন:- এই মানুষটার দুইটা মাত্র শার্ট। ওনি যখন বিদেশ যান,তখন আলাদা বিমানে যান না। সাধারণ যাত্রীবাহী বিমানে যান। বিমানে খাবার খান না। সাধারণ টিফিন ক্যারিয়ারে খাবার নিয়ে যান".....
বই:- 'দেয়াল'
লেখক:- হুমায়ূন আহমেদ