25/06/2023
রাজশাহীর ঐতিহ্যে মিশে আছে রেশম চাষ।
ইতিহাস ও সময়ের হাত ধরে নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে রাজশাহী সিল্ক বিশ্বব্যাপী একটি ঐতিহ্যের নাম হয়ে উঠেছে। রেশম আবিষ্কারের ইতিহাস বেশ চমকপ্রদ ও কিছুটা রহস্যপূর্ণও বটে। রেশম বা সিল্কের আদিভূমি মূলত চীন দেশে। তুঁত নামের এক ধরনের সবুজ পাতাবিশিষ্ট গাছ থেকে পাওয়া পলু পোকার গুঁটি থেকে প্রক্রিয়াকৃত ও আহরিত সূক্ষ্ম সুতায় তৈরি হয় অনিন্দ-সুন্দর, মসৃণ ও কোমল বস্ত্রসম্ভার নরম মোলায়েম রেশম আঁশ বা সিল্ক। রাজশাহীর সিল্ক সুতা দিয়ে তৈরি শাড়ি এবং অন্যন্য পণ্যগুলি গ্রাহকদের কাছে খুবই জনপ্রিয় এবং দেশ ও দেশের বাইরেও এর ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে।
একমাত্র রাজশাহীতেই উৎপাদিত হয় দেশের সিংহভাগ রেশম পণ্য বা সিল্ক সুতা। বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ডের সদর দপ্তরও রাজশাহীতে। রাজশাহী রেশম কারখানাটি খুঁড়িয়ে চললেও মূলত বেসরকারি উদ্যোগে বিকশিত হয়ে চলেছে রাজশাহী সিল্ক। এককালে রেশম সুতা থেকে শুধু শাড়ি তৈরি হলেও এখন পণ্যের বৈচিত্র্য ও ডিজাইনের বিস্তৃতি ঘটেছে। এখন সব বয়সী ও শ্রেণির মানুষের পরিধান উপযোগী নানা ধরনের রেশম বস্ত্র তৈরি হচ্ছে রাজশাহীর বিভিন্ন কারখানায়।
ঐতিহ্যবাহী সিল্কের জিআই স্বীকৃতি শুধু রাজশাহী নয়, সারা দেশের জন্য গর্বের বিষয় বলে উল্লেখ করে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান বলেন, রাজশাহী সিল্ক বাংলাদেশের গর্ব। এ স্বীকৃতি রাজশাহীর ভাবমূর্তি শুধু দেশেই নয়, বিশ্ব পরিমন্ডলে আরও উজ্জ্বল করেছে। আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলেল রাজশাহীর মর্যাদা বৃদ্ধি পেয়েছে।
তিনি বলেন, জিআই পণ্য হিসেবে এর আগে জামদানি, ইলিশ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের ক্ষীরসাপাত আম স্বীকৃতি অর্জন করে। এরই ধারাবাহিকতায় রাজশাহী সিল্ক পেয়েছে জিআই স্বীকৃতি। ফলে এ পণ্যের প্যাটেন্ট বা ব্র্যান্ড বিশ্ববাজারে বিপণনে নিজেদের পণ্য বলে অন্য কোন দেশ দাবি করতে পারবে না।
মেয়র খায়রুজ্জামান বলেন, ‘রেশম পণ্যের দ্বারা তৈরিকৃত রাজশাহী সিল্কের অরিজিন্যালিটি হিসেবে বাংলাদেশের রাজশাহীকেই মানদন্ড হিসেবে বিবেচনা করবে। এখন থেকে কোনো দেশ সিল্কের এ ব্র্যান্ড সুবিধা নিতে পারবে না।’
জানা যায়, রেশম আঁশের উপাদানে থাকে তুঁত গাছে রেশম পোকার গুটি দ্বারা তৈরিকৃত প্রোটিন এর আবরন; যা সারসিনা নামে ডাকা হয়। যে পদ্ধতিতে প্রাকৃতিক রেশম তৈরি হয় তাকে বলা হয় সেরিকালচার। রেশমই এ শিল্পের মূল উৎপাদন। রেশম পোকা পালনকে স্থানীয় ভাষায় পলুপালন বলা হয়। তুঁত চাষ ও পলুপালনকে একত্রে রেশম চাষ বলে। বর্তমানে বাংলাদেশে মালবেরি পদ্ধতিতে রেশম চাষ হয়। সাধারনত এখান থেকে তিন ধরনের সিল্ক সুতা যেমন তুঁত সিল্ক, ইরি (অথবা ইন্ডি) সিল্ক এবং তসর সিল্ক বা রেশম আঁশ তৈরি করা হয়ে থাকে।
রেশম বোর্ড ও কারখানা সূত্র অনুযায়ী, ‘উদ্ভিদের পাতা খেয়ে পোকা, ঢেলে দেয় সোনার টাকা’-রেশম নিয়ে প্রচলিত এ প্রবাদের সঙ্গে পরিচিত বাংলার প্রায় সবাই। আমের পাশাপাশি এই রেশম বা সিল্ক্ক উৎপাদনে বিখ্যাত হওয়ার সুবাদে রাজশাহী সারা বিশ্বে সুপরিচিত ‘রেশমনগর’ বা ‘সিল্কসিটি’ নামে আন্তর্জাকি বাণিজ্য পণ্য হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে। প্রায় দেড় যুগ পর ২০১৮ সালে এই সিল্কসিটির একমাত্র সরকারি রেশম কারখানাটি ফের চালু হয়। নতুন করে উদ্দীপনা দেখা দেয় চাষি ও শ্রমিকদের মধ্যে। গত বছরের এপ্রিলের দিকে ভৌগোলিক নির্দেশক বা জিআই পণ্য (জিওগ্রাফিক্যাল ইন্ডিকেশন্স) হিসেবে নিবন্ধিত হওয়ার পর রাজশাহী সিল্কের গুরুত্ব বেড়েছে আরও এবং সেই সঙ্গে বেড়েছে উদ্দীপনাও।
১৮৭০-এর দশকের এক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, রাজশাহী সিল্ক শাড়ির মূল উপকরণ রেশম কাপড়। প্রাচীন কাল থেকেই বাংলায় রেশমের চাষাবাদ হয়। তা থেকে কাপড় প্রস্তুত করত বাংলার সাধারণ জনগণ। ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলার দেওয়ানি লাভের পর নবান মুর্শিদকুলী খাঁর সৃষ্ট জমিদারি অঞ্চল গুলোকে জেলায় রূপান্তর করে ১৭৮৬ সালে। এর ফলে রাজশাহী জেলা হয়ে ওঠে। কারণ, সে সময় বা তার আগে থেকেই রাজশাহী ও তার আশেপাশের অঞ্চল রেশম চাষের জন্য বিখ্যাত হয়ে উঠেছিল। তবে কবে নাগাদ এই রেশম চাষ বাঙলায় শুরু হয় তা নিশ্চিত ভাবে বলা যায় না।
তবে তৎকালীন সময়ে রাজশাহীতে রেশম শিল্পের বিকাশে কর্মসংস্থান ঘটেছিল প্রায় আড়াই লাখ মানুষের। কিন্তু ১৯০১ সালে এই সংখ্যা ৪১ হাজারে এবং ১৯২১ সালে মাত্র ৬০০ জনে নেমে আসে। এই শিল্পের এমন বিপর্যয় বাংলার তৎকালীন সরকারকেও উদ্বিগ্ন করে তোলে। পরে ১৯০৮ সালে সরকার রেশমশিল্পকে পুনরুজ্জীবিত করতে প্রথমবারের মতো দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপ নেয়। যার অংশ হিসেবে রেশমপোকা চাষের জন্য রাজশাহীতে একটি বিভাগ চালু করা হয়। যার নাম করণ করা হয় ‘রাজশাহী রেশম উন্নয়ন বোর্ড’ হিসেবে।
রাজশাহী রেশম বোর্ডে নিয়োজিত রেশম পোকাচাষি শফিকুল ইসলাম টিটু বলেন, সুতা বের করতে হলে আধা ঘণ্টা গরম পানিতে গুটি সিদ্ধ করতে হয়। আট থেকে দশটি গুটির মাথা এক করে সুতা তৈরির মেশিনে দিলে একটি সুতা তৈরি হয়। একটি গুটি থেকে অন্তত ৫০০ মিটার সুতা তৈরি হয়। সুতা তৈরির কাজটি মূলত দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে নারী শ্রমিকরা করে থাকেন।
রেশম বোর্ডের তাঁতি সানোয়ার হোসেন বলেন, বাংলাদেশে বছরে চার থেকে পাঁচটি রেশম মৌসুম থাকে গুটি উৎপাদনের জন্য। আবহাওয়ার ওপর নির্ভর করে একটি রেশম মৌসুম ৩০ দিন পর্যন্ত স্থায়ী হয়। রেশম চাষের প্রধান মৌসুম হচ্ছে-চৈত্র, জ্যৈষ্ঠ এবং অগ্রহায়ণ মাস।
রাজশাহী রেশম উন্নয়ন বোর্ডের ম্যানেজার ও উৎপাদন কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, বর্তমানে রাজশাহী রেশম কারখানা মাসে এক টন সুতা উৎপাদন করছে। এতে প্রায় এক হাজার ২০০ গজ কাপড় তৈরি হচ্ছে। কারখানার শো-রুমে শাড়ি মিলছে সাড়ে পাঁচ হাজার টাকাতে। চাদর ও ওড়না মিলছে দুই হাজার টাকার মধ্যে। পাঞ্জাবি ও শার্টের পিস মিলছে ৮০০ টাকা গজ হিসেবে।
তিনি বলেন, ২০০৫ সালে এক কেজি সুতার দাম ছিল এক হাজার টাকা। বর্তমানে সেই সুতার দাম কেজিপ্রতি সাড়ে ৭ হাজার টাকা। বর্তমানে রেশম উন্নয়ন বোর্ড নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে সাড়ে তিন হাজার টাকা কেজি দরে দেশি রেশম সুতা বিক্রি করছে বেসরকারি কারখানা মালিকদের কাছে।
রাজশাহীর ঐতিহ্যে মিশে আছে রাজশাহী সিল্ক (রেশম)। রাজশাহী নামটি শুনলেই চলে আসে রাজশাহী সিল্কের নাম। একে অপরকে আলাদা করার কোনো সুযোগ নেই। সুপ্রাচীনকাল থেকেই রাজশাহীর আবহাওয়া রেশম চাষের জন্য অনুকূলে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার ১৯৭১ সালের পর নতুন করে আলোর মুখ দেখতে শুরু করে রেশম শিল্প। রেশম শিল্পকে সমৃদ্ধ করার জন্য ১৯৭৪ সালে রাজশাহীতে প্রতিষ্ঠা করা হয় রেশম গবেষণা ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। ১৯৭৭ সালে বাংলাদেশ সেরিকালচার বোর্ড প্রতিষ্ঠার পর রাজশাহী সিল্ক ফ্যাক্টরি এ বোর্ডের কাছে হস্তান্তর করা হয়। কারখানাটিতে ১০০টি রিলিং মেশিন, ২৩টি শক্তিচালিত ও ১০টি হস্তচালিত তাঁত স্থাপন করে কার্যক্রম শুরু করা হয়। ১৯৭৪ থেকে ১৯৮০ সাল নাগাদ ১০০টি রিলিং মেশিনকে ২০০টিতে ও ২৩টি শক্তিচালিত তাঁতকে ৪৩টিতে উন্নীত করা হয়। ৮০’র দশকের শেষ দিকে তিন হাজার হেক্টর এলাকাজুড়ে তুঁত চাষ হতো। মূলত এ সময়টিই এ অঞ্চলে রেশম উৎপাদনের স্বর্ণযুগ হিসেবে বলা হয়।
রাজশাহী সিল্কের ইতিহাস প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর বিভাগের শিক্ষক ড. আমিরুল ইসলাম কনক বলেন, রাজশাহী সিল্কের সাথে রাজশাহী নামটি এমনভাবে মিশে আছে যে এদের একেক থেকে অন্যকে পৃথকভাবে কল্পনা করা যায় না। রেশমের শহর রাজশাহীর প্রাচীন জনপদের নাম মহাকালগড়।
তিনি বলেন, বাংলার রেশম বস্ত্র ছিল দিল্লির শাহজাদী এবং বেগমদের পরম আদরের কাঙ্খিত বস্তু। রেশম উৎপাদনের আধিক্য, উন্নতমান, সহজলভ্য, বাণিজ্যিক সম্ভাবনা ইত্যাদি বিবেচনা করে ওলন্দাজ বণিকগণ স্থানীয় অধিবাসীদের মাধ্যমে এই কারখানাগুলো নির্মাণ করেন।
পাবনার ঈশ্বরদীর রূপপুর থেকে আসা সাব্বির হোসেন নামের এক যুবক জানান, সিল্কের পাঞ্জাবি কিনতে এসেছেন। রাজশাহী অঞ্চলের মানুষ হিসেবে সিল্কের পোশাকই তাদের বেশি পছন্দ। তাই এলাকার জনপ্রতিনিধির জন্য সিল্কের পাঞ্জাবি কিনতে রাজশাহীতে এসেছেন। অ্যান্ডি সিল্কের ন্যাচারাল কালারের পাঞ্জাবি খুঁজছিলেন তিনি।
ধুপিয়ান সিল্কের একটু ভারী কাপড়ের পাঞ্জাবিগুলো বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সাধারণত মানুষ পরে থাকেন। নিজের সহকর্মীদের জন্য এই পাঞ্জাবি কিনতে সিরাজগঞ্জ থেকে একজন সরকারি কর্মকর্তা রাজশাহীতে এসেছেন। তিনি একসঙ্গে ১০টি পাঞ্জাবি কিনেছেন। এসব পাঞ্জাবির কোনো কোনোটির দাম সাড়ে ১০ হাজার টাকা।
সপুরা সিল্কের ব্যবস্থাপক সাইদুর রহমান জানান, সিল্কের ওপর কাজ করা শাড়ি সাড়ে ৬ হাজার থেকে ১৯ হাজার টাকায় বিক্রি করছেন। আর রেশম সুতার থ্রিপিস বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৪ হাজার থেকে ১৯ হাজার টাকায়। হাতের কাজ করা একেকটি পাঞ্জাবি সাড়ে ১০ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাঞ্জাবির জন্য বিখ্যাত হচ্ছে তাদের অ্যান্ডি সিল্ক, যেগুলোর দাম সাত থেকে আট হাজার টাকা। সিল্কের আদিযুগ থেকেই বলাকা সিল্ক জনপ্রিয়। এই সিল্কের শাড়ি ১০ হাজার থেকে ১৬ হাজার টাকা ও পাঞ্জাবি ৭ থেকে ৮ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
উষা সিল্ক নামে আরেকটি প্রতিষ্ঠানে গিয়েও জানা গেল, নতুন বছরের শুরুতে সিল্কের পোশাকের চাহিদা বেড়েছে। সেখানেও ক্রেতাদের ভিড় দেখা গেছে। প্রতিষ্ঠানের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) জহুরুল ইসলাম বলেন, আগের চেয়ে এবার সিল্কের সব ধরণের কাপড়ের চাহিদা অনেক বেশি। তবে সবচেয়ে বেশি চলে সিল্কের থ্রিপিস, পাঞ্জাবি ও শাড়ি।
জানতে চাইলে রাজশাহী রেশম উন্নয়ন বোর্ডের সদস্য (অর্থ ও পরিকল্পনা) ড. এমএ মান্নান বলেন, রেশমের উন্নয়নে সরকারিভাবে দেশে ১৩৫ কোটি টাকার কয়েকটি প্রকল্প চালু রয়েছে। সুতার চাহিদা মেটাতে প্রতি বছরই তুঁতগাছ লাগানো হচ্ছে। কয়েক বছরের মধ্যেই রেশম সুতার উৎপাদন বাড়বে। তখন দেশি সুতাতেই শতভাগ রেশম তৈরি হবে।
জিআই পণ্য রাজশাহী সিল্কের একটি বড় অর্জন হিসেবে দেখছেন বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক (ডিজি) আব্দুল হাকিম। তিনি বলেন, রেশম বা সিল্ক একটি উৎকর্ষ ও মূল্যবান পণ্য হলেও এটি রাজশাহী তথা বাংলাদেশের একটি ঐতিহ্যও বটে। বাংলার রেশম পণ্যের ইতিহাস অত্যন্ত সমৃদ্ধ ও যার সুনাম বিশ্বব্যাপী বিস্তৃত ছিল এককালে। রাজশাহী তথা বাংলাদেশের রেশম বস্ত্র রপ্তানি হতো দেশের গন্ডি পেরিয়ে ইউরোপ ও পৃথিবীর অন্য দেশেও রপ্তানি হচ্ছে।
ঐতিহ্যবাহী রাজশাহী সিল্ক বা রেশম শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে বর্তমান সরকারের নানা পদক্ষেপের বিষয়ে এক প্রশ্নে বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ডের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও রাজশাহী-২ সদর আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, রাজশাহী মানেই রাজশাহীর রেশম। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে বন্ধ হয়ে যাওয়া রাজশাহী রেশম কারখানা অনেক কষ্টে চালু করেছি।
তিনি বলেন, রেশম শুধু রাজশাহীরই নয়, সমগ্র বাংলাদেশের ঐতিহ্য। রেশম শিল্পকে লাভজনক শিল্পে পরিণত করতে ও এর ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখতে আমাদের যা করা প্রযোজন তাই করতে হবে।
প্রসঙ্গত, অষ্টাদশ শতাব্দী থেকে ঊনবিংশ শতাব্দী পর্যন্ত বিশেষত রেশমের সুতা তৈরির ক্ষেত্রে উত্তরবঙ্গের একমাত্র বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবে রাজশাহীর বোয়ালিয়ার খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে। বোয়ালিয়ায় তখন বিস্তৃত এলাকাজুড়ে তুঁতের চাষ করা হতো। মূলত রেশম ব্যবসার কারণেই সম্ভবত অষ্টাদশ শতাব্দীর প্রথম দিকে এ শহরে ওলন্দাজরা তাদের বাণিজ্যিক কুঠি তৈরি করে। এটিই ছিল এ শহরের সর্বপ্রথম বড় পাকা স্থাপনা। পরবর্তী সময়ে রবার্ট ওয়াটসন অ্যান্ড কোম্পানি এ অঞ্চলে বলতে গেলে একচেটিয়া রেশম ও নীলের কারবার পরিচালনা করে। এই কোম্পানি বৃহত্তর রাজশাহীসহ এর আশপাশের এলাকায় ব্যবসায়ের উদ্দেশ্যে ১৫২টি রেশম ও নীলকুঠি স্থাপন করেছিল।
তথ্য সূত্র :স্বদেশ প্রতিদিন
সোমবার, ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩