Faiyaz Azfer a'l Masud

Faiyaz Azfer a'l Masud Masud Bin Israil Hossain
Islamic university of madinah
+8801788050463
[email protected]

30/11/2024

অন্তরের ব্যাধি, দুঃশ্চিন্তা ও বিষণ্ণতার চিকিৎসা
_______________________________
ইমাম ইবনুল ক্বাইয়িম রহি’মাহুল্লাহ রচিত অসাধারণ সীরাত গ্রন্থ “যাদুল মাআ’দ” এ নবী সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নাহ থেকে অন্তরের ব্যাধি, দুঃশ্চিন্তা ও বিষণ্ণতার জন্য চিকিৎসা হিসেবে মোট পনের (১৫) প্রকার রূহানী চিকিৎসার বিবরণ লিপিবদ্ধ করেছেন। নীচে তা সংক্ষিপ্তভাবে বর্ণনা করা হলো।

(১) তাওহীদে রুবুবীয়াতের উপর পরিপূর্ণ ঈমান আনা।

(২) তাওহীদে উলুহীয়াতের উপর পূর্ণ ঈমান আনা এবং তা বাস্তবায়ন করা।

(৩) তাওহীদুল আসমা ওয়াস-সিফাতের উপর দৃঢ় বিশ্বাস স্থাপন করা।

(৪) আল্লাহ তাআ’লা স্বীয় বান্দার উপর জুলুম করা থেকে সম্পূর্ণ পবিত্র, দৃঢ়তার সাথে এই ঘোষণা দেওয়া এবং কোন কারণ ছাড়াই বান্দাকে শাস্তি দেওয়া থেকে আল্লাহর মহান সত্ত্বার পবিত্রতা ঘোষণা করা।

(৫) বান্দা নিজেকে জালেম (অত্যাচারী বা গুনাহগার) বলে স্বীকার করা।

(৬) আল্লাহর সর্বাধিক প্রিয় বস্তুর মাধ্যমে তথা আল্লাহ তাআ’লার আসমাউল হুসনা এবং মর্যাদাপূর্ণ, পূর্ণ সিফাত (গুণাবলীর) উসীলা দিয়ে তাঁর নৈকট্য অর্জনের চেষ্টা করা। আল্লাহ তাআ’লার আসমা ও সিফাতগুলো যে সমস্ত অর্থ বহন করে, তার মধ্যে সর্বাধিক ব্যাপক অর্থবোধক নাম হচ্ছেঃ الحي القيوم আল-হা’ইয়্যুল ক্বাইয়্যুম (চিরঞ্জীব এবং সকল বস্তুর প্রতিষ্ঠাতা, রক্ষণাবেক্ষণ ও প্রতিপালনকারী।)

(৭) শুধুমাত্র খালিক্ব (আল্লাহর) কাছেই সাহায্য চাওয়া এবং মাখলুক্ব (আল্লাহর কোন সৃষ্টির) অনুগ্রহ থেকে অমুখাপেক্ষী থাকা।

(৮) শুধুমাত্র আল্লাহ তাআ’লার কাছেই (সাহায্য, প্রতিদান, নেয়ামত) আশা করা।

(৯) আল্লাহ তাআ’লার উপর পূর্ণ ভরসা করা, তাঁর কাছেই সব কিছু সোপর্দ করা এবং বান্দা কর্তৃক এই কথার স্বীকারোক্তি প্রদান করা যে, আল্লাহ তাআ’লা তার কপাল ধরে আছেন, অর্থাৎ তার ভাগ্য নিয়ন্ত্রন করছেন। তিনি যেভাবে ইচ্ছা সেভাবেই তার ভাগ্যকে ঘুরিয়ে থাকেন। বান্দার ব্যাপারে আল্লাহর হুকুমই কার্যকর হয় এবং আল্লাহর ফয়সালা ইনসাফ পূর্ণ।

(১০) জীব-জন্তু যেমন দুনিয়ার বাগানে বিচরণ করে, বান্দার উচিত ঠিক তেমনি ক্বুরআনের বাগানে বিচরণ করা, শুবুহাত ও শাহওয়াত (সন্দেহ ও কুপ্রবৃত্তির) অন্ধকারে ক্বুরআন থেকে হিদায়াতের আলো গ্রহণ করা। কোন কিছু হারিয়ে গেলে কিংবা বিপদে পতিত হলে ক্বুরআনের মাধ্যমে প্রশান্তি ও স্বস্তি লাভ করবে এবং ধৈর্য ধারণ করবে। এর মাধ্যমেই তার অন্তরের যাবতীয় ব্যাধি থেকে আরোগ্য লাভ করবে, দুশ্চিন্তা দূর হবে, বিষণ্ণতা ও হতাশা অপসারিত হবে।

(১১) আল্লাহর দরবারে সর্বদা ইস্তেগফার (ক্ষমা প্রার্থনা) করবে।

(১২) আল্লাহর কাছে তাওবা (অনুতপ্ত হয়ে আল্লাহর কাছে প্রত্যাবর্তন) করবে।

(১৩) আল্লাহর পথে জিহাদ করবে।

(১৪) যথাযথ গুরুত্ব ও প্রবল আগ্রহ নিয়ে নামায কায়েম করবে।

(১৫) বিপদাপদ ও মসীবতের সময় বান্দা নিজেকে অসহায় মনে করবে এবং বিপদাপদ সংক্রান্ত সকল বিষয় আল্লাহর দিকেই সোপর্দ করবে।

উৎসঃ যাদুল মাআ’দ।
___________________________

20/11/2024

বিপদ-মসিবতে পঠনীয় গুরুত্বপূর্ণ ৪টি দুআ:

নিম্নে বিপদ-মসিবতে পাঠ করার জন্য ৪টি গুরুত্বপূর্ণ দুআ আরবি টেক্সট, বাংলা উচ্চারণ এবং অর্থসহ প্রদান করা হলো:

✅ ১ নম্বর দুআ:

উম্মে সালমা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, মানুষের ওপর কোনো বিপদ এলে সে যদি এই দুআ পাঠ করে- আল্লাহ তাআলা তাকে তার বিপদের প্রতিদান দেন এবং সে যা কিছু হারিয়েছে তার বদলে তার চেয়ে উত্তম কিছু দান করেন:

إِنَّا لِلَّهِ وَإِنَّا إِلَيْهِ رَاجِعُونَ، اللَّهُمَّ أْجُرْنِي في مُصِيبَتِي، وأَخْلِفْ لي خَيْرًا مِنْها

উচ্চারণ: ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন, আল্লাহুম্মা আজিরনী ফী মুসিবাতী ওয়া আখলিফ-লী খইরম মিনহা
অর্থ: আমরা আল্লাহর জন্য নিবেদিত এবং আমরা তারই নিকট প্রত্যাবর্তনকারী। হে আল্লাহ, আমার বিপদে আমাকে প্রতিদান দান করুন এবং যা হারিয়েছি তার বদলে তার চেয়ে ভালো কিছু দান করুন। [সহিহ মুসলিম]

✅ ২ নম্বর দুআ:

ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিপদের সময় এই দুআটি পাঠ করতেন,

لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ الْعَظِيمُ الْحَلِيمُ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ رَبُّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ رَبُّ السَّمَوَاتِ وَرَبُّ الْأَرْضِ وَرَبُّ الْعَرْشِ الْكَرِيمِ

উচ্চারণ: লা ইলাহা ইল্লাল্লাহুল আযীমুল হালীম, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু রাব্বুল আরশিল আযীম, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু রাব্বুস সামাওয়াতি ওয়াল আরদি ওয়া রাব্বুল আরশিল কারীম।)

অর্থ: আল্লাহ ব্যতীত সত্য কোনো উপাস্য নেই। তিনি সুমহান ও পরম সহিষ্ণু।
আল্লাহ ব্যতীত সত্য কোনো উপাস্য নেই। তিনি মহান আরশের মালিক।
আল্লাহ ব্যতীত সত্য কোনো উপাস্য নেই। তিনি আকাশমণ্ডলী, জমিন ও মহান আরশের মালিক। [সহীহ বুখারি, হা/ ৬৩৪৬]

✅ ৩ নম্বর দুআ:
بِسْمِ اللَّهِ الَّذِي لَا يَضُرُّ مَعَ اسْمِهِ شَيْءٌ فِي الْأَرْضِ وَلَا فِي السَّمَاءِ وَهُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ

উচ্চারণ: বিসমিল্লাহিল্লাযী লা ইয়াদুররু মায়া'সমিহী শাইয়ুন ফিল আরদি ওয়ালা ফিস সামায়ি ওয়াহুয়াস সামিউ'ল আ'লিম।
অর্থ: আমি সেই আল্লাহর নামে শুরু করছি, যার নামের বরকতে আসমান ও জমিনের কোনকিছুই কোন অনিষ্ট সাধন করতে পারে না। তিনি সর্বশ্রোতা, তিনি সর্বজ্ঞানসম্পন্ন।

উসমান রা. বর্ণনা করেছেন, "যে ব্যক্তি উপরের দুআটি প্রতিদিন সকালে ও সন্ধ্যায় তিনবার করে পড়বে দুনিয়া ও আখিরাতের কোন কিছুই তাঁর কোন ক্ষতি করতে পারবে না।
[সুননে আবু দাউদ।‌ সহীহ-আলবানি]

✅ ৪ নম্বর দুআ:

حَسْبِىَ اللَّهُ لآ إلَهَ إلّا هُوَ، عَلَيْهَ ثَوَكَّلتُ، وَهُوَ رَبُّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ

উচ্চারণ: হাসবিয়াল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা হুওয়া, আ'লাইহি তাওয়াক্কালতু ওয়া হুয়া রাব্বুল আরশিল আ'যীম।

অর্থ: আমার জন্য একমাত্র আল্লাহই যথেষ্ট যিনি ব্যতীত সত্য কোন উপাস্য নেই। আমি একমাত্র তাঁর উপরই ভরসা করলাম। আর তিনি আরশে আযীমের অধিকারী। [সূরা তাওবাহ: ১২৯]

যে ব্যক্তি প্রতিদিন সকাল ও সন্ধ্যায় উপরের আয়াতটি সাতবার পড়বে দুনিয়া ও আখিরাতের সকল চিন্তা ভাবনার জন্য আল্লাহই তার জন্য যথেষ্ট হবেন।" [আবু দাউদ।‌ সহিহ-আলবানি]

▪️উল্লেখ্য যে, এই হাদিসটি সহিহ-জঈফ হওয়ার ব্যাপারে মুহাদ্দিসগণের মাঝে দ্বিমত রয়েছে। তবে আলবানি রাহ. এটিকে সহিহ হিসেবে সাব্যস্ত করেছেন। সালীম হেলালীও এটিকে ‘আমালুল ইয়াওমি ওয়াল লাইলাহ’ গ্রন্থে সহীহ বলেছেন। শুআইব আরনাবুত যাদুল মাআদ কিতাবে এটিকে সহীহ মাওকুফ বলেছেন।

★ঋতুস্রাব চলাকালীন সময় মহিলারা যেকোনো দুআ, জিকির, তাসবিহ, তাহলিল, ইস্তিগফার, ইসলামি বই-পুস্তক, হাদিসের কিতাব, তাফসির ইত্যাদি পড়তে পারে। এতে শরিয়তে কোন বাধা নেই।
আল্লাহু আলাম।
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
Abdullahil Hadi

14/11/2024

জান্নাত প্রত্যাশীর একটি দিন: (সারা দিনের কর্মনির্ঘণ্ট)
▬▬▬ ◈◉◈▬▬▬
সময়গুলো ক্রমেই অতীতের গর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। একসময় আমাদের জীবন সন্ধ্যা নেমে আসবে। এই ভরা যৌবনের সব রঙ, রস ও গন্ধ মুছে যাবে। কিন্তু তারপরও কি আমাদের অলসতা ও গাফলতির ঘুম ভেঙ্গেছে? আমরা কি সচেতন হয়েছি? পেরেছি কি আখিরাতে জন্য পর্যাপ্ত পাথেয় সংগ্রহ করতে?

উত্তর, অবশ্যই না। ঈমান ও আমলের দুর্বলতা আমাদেরকে গ্রাস করে নিয়েছে। দুনিয়ার রূপ-লাবণ্যে আমরা মুগ্ধ ও পাগলপারা। এভাবেই চলতে চলতে হঠাৎ একদিন সময়ের গতি থেমে যাবে। মৃত্যু দূত আমাদেরকে নির্দিষ্ট সময়ে তুলে তুলে নিয়ে যাবে আমাদের রবের কাছে। তাই এখনই আমাদের সচেতন হওয়া অপরিহার্য।

আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ রা. বলেন: আমি এমন দিনের উপর অনুশোচনা করি যেই দিনের সূর্য ডুবে গেছে, আমার জীবন থেকে একটি দিন কমে গেছে অথচ তাতে আমার আমল বৃদ্ধি পায় নি।”
সত্যিই মানুষের জীবন খুবই সংক্ষিপ্ত কিন্তু কাজের পরিধি অনেক বেশি। তাই আখিরাতের চূড়ান্ত সাফল্য লাভ করতে হলে এই সীমিত সময়কে পরিকল্পিতভাবে কাজে লাগানো আবশ্যক। তাহলে আল্লাহর রহমতে এ অল্প সময়ে বিশাল কল্যাণ অর্জন করা সম্ভব-যার মাধ্যমে আমরা জাহান্নাম থেকে মুক্তি লাভ করে চীর সুখের নীড় জান্নাতে প্রবেশ করার মাধ্যমে জীবনের অভীষ্ট লক্ষে পৌঁছতে পারব বলে আশা করি।
তাই একজন জান্নাত প্রত্যাশী ঈমানদার ব্যক্তির জন্য দ্বীন ও দুনিয়ার সমন্বয়ে সারা দিনের ইবাদত-বন্দেগীর একটি প্রস্তাবিত কর্মনির্ঘণ্ট ও কর্মসূচী পেশ করা হল। কেউ এটি অনুসরণ করলে আশা করা যায়, জান্নাতের পথে চলা তার জন্য অনেক সহজ হবে ইনশাআল্লাহ।

আল্লাহ তাআলা আমাদের সকলকে এটি অনুসরণ করার তাওফিক করুন। আমীন।

◼ ক. রাতে ঘুমাতে যাওয়া থেকে নিয়ে ফজর পর্যন্ত:

১) ঘুমাতে যাওয়ার পূর্বে তাহাজ্জুদের সালাত এবং নফল রোযা রাখার নিয়ত করা।
২) আগেভাগে ঘুমিয়ে পড়া।
৩) ঘুমানের পূর্বে ওযু করা, দুআ ও যিকিরগুলো পাঠ করা। অত:পর ঘুমের আদবগুলোর প্রতি খেয়াল রেখে ঘুমিয়ে যাওয়া।
৪) ফজরের প্রায় আধাঘণ্টা পূর্বে ঘুম থেকে উঠে- ঘুম থেকে জাগ্রত হওয়ার দুআগুলো পাঠ করা। অত:পর মিসওয়াক করার পর ওযু করা বা প্রয়োজন হলে গোসল করে পবিত্রতা অর্জন করা।
৫) তাহাজ্জুদের সালাত আদায় করা। (দু রাকআত দু রাকআত করে ৮ রাকআত পড়া। অত:পর বিতর সালাত আদায় করা)
৬) নফল রোযা রাখার নিয়তে সেহরি খাওয়া।
বি:দ্র: নফল রোযা রাখার শ্রেষ্ঠ পদ্ধতি হল, এক দিন পর এক দিন রোযা রাখা। তা সম্ভব না হলে, সপ্তাহে প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবার- দু দিন, তাও সম্ভব না হলে আরবি মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখ, তাও সম্ভব না হলে মাসের যে কোন দিন তিনটি রোযা রাখা। তিনটি রোযার বিনিময়ে আল্লাহ তাআলা সারা মাস রোযা রাখা সওয়াব দান করবেন।

◼ খ. ফজরের পর থেকে নিয়ে সূর্যোদয় পর্যন্ত:

৭) ফজরের আযান হলে আযানের জবাব দেয়া।
৮) ঘরে ফজরের দু রাকআত সুন্নত আদায় করা।
৯) অত:পর মসজিদে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হওয়ার দুআ পাঠ করা এবং মসজিদে যাওয়ার মর্যাদা ও ফযিলত মনের মধ্যে জাগ্রত রেখে আগেভাগে মসজিদে যাওয়া।
১০) মসজিদে প্রবেশের দুআ পাঠ করত: ডান পা আগে রেখে মসজিদে প্রবেশ করা এবং যথাসম্ভব ১ম কাতারে ঈমামের ডানপাশে সালাতের জন্য অবস্থান নেয়া।
১১) ঘরে ফজরের সুন্নত না পড়ে থাকলে মসজিদে তা আদায় করা। অন্যথায় বসার পূর্বে দু রাকআত তাহিয়াতুল মসজিদ (দুখুলুল মসজিদ) আদায় করা।
১২) অত:পর কুরআন তিলাওয়াত, যিকির, ইস্তিগফার, দুআ ইত্যাদি পাঠরত অবস্থায় ফজরের ফরয সালাতের অপেক্ষা করা।
১৩) ফজরের সালাতের ইকামত হলে তাকবীরে তাহরিমা সহকারে অত্যন্ত ভয়-ভীতি, বিনয়, নম্রতা ও একাগ্রতার সাথে ফজরের সালাত শেষ করা।
১৪) সালাত শেষ করার পর যথাস্থানে বসা অবস্থায় সালাত পরবর্তী দুআ ও যিকিরগুলো পাঠ করা। অত:পর সেখানে বসেই সূর্য উদিত হওয়া পর্যন্ত সকালের আযকার সহ বিভিন্ন ধরণের দুআ, যিকির, তাসবীহ, তাহলীল, ইস্তিগফার কুরআন তিলাওয়াত ইত্যাদি ইবাদতে লিপ্ত থাকা।
১৫) সূর্য উদিত হওয়ার ১৫/২০ মিনিট পর দু রাকআত সালাতুল ইশরাক আদায় করা। (এভাবে করলে একটি পূর্ণ হজ্জ ও উমরার সওয়াব অর্জিত হয় আল হামদুলিল্লাহ)
১৬) অত:পর আল্লাহর জমিনে আল্লাহর দেয়া জীবিকা উপার্জন এবং তার নির্দেশের আলোকে দিন কাটানোর নিয়তে মসজিদ থেকে বের হওয়া। বের হওয়ার সময় মসজিদ থেকে বের হওয়ার দুআ পাঠ করত: বাম পা আগে রেখে মসজিদ থেকে বের হওয়া।

◼ গ. সূর্য উদিত হওয়ার পর থেকে নিয়ে সারাদিন:

এরপর দুনিয়াবি কাজ-কারবার করার পাশাপাশি সাধ্যানুযায়ী আল্লাহ ইবাদত-বন্দেগী করা।

এ ক্ষেত্রে কয়েকটি নির্দেশনা নিম্নরূপ:

১৭) পাঁচ ওয়াক্ত সালাত যথাসময়ে জামায়াতের সাথে আদায় করা। মহিলারা তাদের ঘরে যথাসময়ে আওয়াল ওয়াক্তে (সালাতের ১ম সময়ে) সালাত আদায় করবে। আর পুরুষরা মসজিদে গিয়ে তাকবীরে তাহরিমা সহকারে ১ম কাতারে সালাত আদায় করবে।
১৮) ফরয সালাতের আগে-পরের সুন্নতগুলো গুরুত্ব সহকারে আদায় করা।
১৯) যোহর সালাতের প্রায় এক বা দেড় ঘণ্টা পূর্বে সালাতুয যোহা (চাশত/আওয়াবীন) এর সালাত আদায় করা।
এর পরিমাণ হল, সর্ব নিম্ন ২ রাকআত। তবে দু রাকআত দু রাকআত করে ৮ রাকআত পড়া অধিক উত্তম।
২০) সারা দিনে কমপক্ষে এক পারা কুরআন তিলাওয়াতের চেষ্টা করা (এতে এক মাসে এক খতম হবে ইনশাআল্লাহ)।
সেই সাথে কুরআনের কিছু অংশের তরজমা ও তাফসীর পড়া।
২১) আমলের নিয়তে কমপক্ষে ২/৩ টা হাদিস পাঠ করা। এ ক্ষেত্রে ঈমান, আমল, তাকওয়া, ইখলাস ইত্যাদি বৃদ্ধির জন্য রিয়াযুস সালেহীন এবং সহীহ তারগীব ওয়াত তারহীব গ্রন্থদ্বয় অধিক উপযোগী। তবে ইচ্ছা ও আগ্রহের ভিত্তিতে অন্যান্য হাদিসগুলোও (যেমন সহীহুল বুখারী, মুসলিম ইত্যাদি) পাঠ করা যেতে পারে।
২২) কিছু আর্থিক দান করা বা কোন গরিব মানুষকে খাবার খাওয়ানো। (পরিমাণে অল্প হলেও নিয়মিত অব্যাহত রাখা আল্লাহর নিকট খুবই পছন্দনীয় আমল)
২৩) কোনও রোগী দেখতে যাওয়া।
২৪) কোথাও মৃত ব্যক্তির জানাযা হলে তাতে অংশ গ্রহণ করা এবং দাফন প্রক্রিয়ায় শরিক হওয়া।
২৫) নিকটাত্মীয় বা দীনী ভাই ও বন্ধুদের সাথে দেখা করা এবং তাদের খোঁজ-খবর নেয়া। (সহীহ হাদিসে বলা হয়েছে, কোন ব্যক্তি একদিনে উপরোক্ত চারটি কাজ করলে মহান আল্লাহ তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন)
২৬) একাকী বা কাউকে সঙ্গে নিয়ে কবর যিয়ারত করতে যাওয়া। (একই কবরস্থান প্রতিদিন নিয়ম করে যিয়ারত করা ঠিক নয় বরং মাঝে-মধ্যে করা যেতে পারে)
২৭) লোকজনের মাঝে দাওয়াতি কাজ করা। এলাকার বেনামাযী ও গাফেল লোকদেরকে দ্বীনের পথে আহ্বান করা, অমুসলিমদের মাঝে দাওয়াতি কাজ করা, কাউকে পাপকর্ম বা শরিয়ত বিরোধী কাজ করতে দেখলে শক্তি ও প্রভাব-প্রতিপত্তি থাকলে তাতে বাধা দেয়া, তা সম্ভব না হলে মুখে নিষেধ করা। তাও সম্ভব না হলে উক্ত অন্যায় ও পাপকর্মকে অন্তরে ঘৃণা করা। এটি ন্যূনতম ঈমানের চিহ্ন।
২৮) মানুষের সাথে আচরণের ক্ষেত্রে উত্তম চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ ঘটানো। যেমন: হাসিমুখে লোকদের সাথে দেখা করা, সালাম বিনিময় করা, সুন্দর ও মিষ্টি ভাষায় কথা বলা, বিনয় ও ভদ্রতা সুলভ আচরণ করা, মানুষের উপকারে অগ্রগামী থাকা, দ্বীনের কাজে সর্বাত্মকভাবে সহযোগিতা করা ইত্যাদি।
২৯) অলসতা পরিত্যাগ করে জীবিকা উপার্জনে কষ্ট পরিশ্রম করা, পিতামাতার সেবা করা, স্ত্রী ও সন্তানদের সাথে সুন্দর ও অভিভাবক সুলভ আচরণ করা এবং তাদেরকে দীনী তরবিয়ত (দ্বীন সম্পর্কে জ্ঞান দান করে তার উপর চলার জন্য প্রশিক্ষণ) দেয়া।

◼ ঘ. সন্ধ্যা থেকে নিয়ে ঘুমাতে যাওয়া পর্যন্ত:

৩০) আসর সালাতের পর থেকে নিয়ে সূর্যাস্তের মধ্যে সন্ধ্যার দুআ ও যিকিরগুলো পাঠ করা।
৩১) কোনও মসজিদে আলেমদের দরস/আলোচনা থাকলে বা কোথাও ভালো কোন আলেমের ওয়ায/বক্তৃতা থাকলে তা শুনতে যাওয়া অথবা কোন হক্কানি সুন্নতের অনুসারী আলেমের নিকট ইলম শিক্ষা ও দীনী বিষয়ে জানার জন্য গমন করা। অন্যথায় মোবাইল মেমরী বা ইন্টারনেট থেকে নির্ভরযোগ্য বড় আলেমদের আলোচনা শোনা।
৩২) নফল রোযা থাকলে সূর্য ডুবার পর ইফতার করা। তারপর মাগরিব সালাতের জন্য মসজিদে গমন করা এবং মাগরিবের আযান ও সালাতের মধ্যবর্তী সময়ে দু রাকআত নফল পড়ার চেষ্টা করা যদি সুযোগ থাকে। (যদিও অত্যন্ত দুর্ভাগ্য যে, আমাদের সমাজের অধিকাংশ মসজিদে এ সুযোগ নাই)
৩৩) মাগরিব ও ইশার সালাতের মধ্যবর্তী সময় কিছু নফল সালাত আদায় করা। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ সময়টকুকুকে মানুষ অবহেলায় কাটিয়ে দেয় বলে নফল সালাত আদায়ে উৎসাহিত করেছেন।
৩৪) দীনী জ্ঞানার্জনের জন্য নির্ভরযোগ্য ও ভালো আলেমদের লিখিত বই-পুস্তক পাঠ করা।
৩৫) সারা দিনের কর্মকাণ্ড নিয়ে আত্ম সমালোচনা করা এবং ভুলত্রুটির জন্য আল্লাহর নিকট তওবা-ইস্তিগফার করা।
৩৬) অত:পর ইশার সালাতের পর একান্ত দরকার না হলে বা স্ত্রীর সাথে সময় কাটানো ছাড়া দুনিয়াবি কথা না বলে যথাসম্ভব তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়া।
আল্লাহ তাআলা আমাদের সময়ে বরকত দান করুন এবং দিনরাতের পুরোটা সময়কে উপকারী ও সৎকর্মে অতিবাহিত করার তাওফিক দান করুন। আমীন।
▬▬▬ ◈◉◈▬▬▬
লেখক: আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল মাদানী
abdullahilhadi

14/11/2024

▪প্রশ্ন-১: কোন আলেমের নিকট ইলম শিখব?
▬▬▬▬✪✪✪▬▬▬

উত্তর:
নবীদের রেখে যাওয়া আদর্শের কাণ্ডারি হল একমাত্র আলেমগণ। তারাই ইলমে নববীর উত্তরসূরি। আলেমগণই সবচেয়ে বেশী আল্লাহকে ভয় করে থাকে । দীনের জ্ঞানার্জন করতে হলে আমাদেরকে তাদের শরণাপন্ন হওয়ার জন্য মহান আল্লাহ নির্দেশ প্রদান করেছেন। কিন্তু কীভাবে জানবো সেই প্রত্যাশিত আলেম কে যার নিকট থেকে ইলম অর্জন করলে বা যার আদর্শকে ফলো করলে আমরা দীনের উপর অটুট থেকে আমাদের অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছুতে সক্ষম হব?
হ্যাঁ, সেই আদর্শ আলেমে রব্বানীর পরিচয় পেতে আমাদেরকে নিন্মোক্ত মৌলিক বৈশিষ্ট্যগুলো খেয়াল করতে হবে:

✅ ১) যিনি বক্তৃতা, লিখনি, সভা, সমাবেশ, আলোচনা, মাহফিল সর্বত্র সবচেয়ে বেশী তাওহীদের প্রতি গুরুত্ব দিবেন এবং শিরক থেকে সাবধান করবেন। এটিই নবী-রসূলগণের প্রধানতম কাজ ছিল।
✅ ২) যিনি ছোট-বড় সকল সুন্নতকে সম্মান করবেন।
✅ ৩) যিনি ইলম অনুযায়ী আমল করার চেষ্টা করবেন, মানুষকে সে দিকে আহবান করবেন এবং এ পথে ধৈর্য ধারণ করবেন।
✅ ৪) যিনি হেকমত ও উত্তম পন্থায় হকের কথা বলবেন এবং তার উপর অবিচল থাকবেন।
✅ ৫) যিনি সকল প্রকার শিরক ও বিদয়াত থেকে মানুষকে সতর্ক করবেন।
✅ ৬) যিনি মানুষকে সালাফে-সালেহীনের আদর্শের আলোকে দ্বীন-ইসলাম মেনে চলার প্রতি উদ্বুদ্ধ করবেন।
✅ ৭) যিনি কুরআন-হাদিসের দলীলের আলোকে কথা বলবেন এবং বিশেষ কোন মাযহাব, দল, মতবাদ, ইমাম, পীর বা অন্য কারো কথা কুরআন-সুন্নাহর বিপরীত প্রমাণিত হলে তা পরিত্যাগ করে দলীলের দিকে ফিরে আসতে কোনরূপ দ্বিধা করবেন না।
মহান আল্লাহ যেন আমাদের দীনের সঠিক ইলম অর্জন করে দুনিয়া ও আখিরাতে চূড়ান্ত সাফল্য দান করেন এবং উভয় জগতে ফিতনা ও বিপর্যয় থেকে হেফাজত করেন আমীন।
আল্লাহ সবচেয়ে ভালো জানেন।

▪ প্রশ্ন-২ : অনেক আলেমের লেকচার শুনে বুঝতে পারি না তাদের মানহাজ কি? তাদের লেকচার কি শোনা যাবে?
উত্তর:
মুক্তিকামী ও সত্যান্বেষী মানুষের জন্য আবশ্যক হল, যথাসম্ভব নির্ভরযোগ্য ও আকীদা-মানহাজে (বিশ্বাস ও নীতিতে) সালাফে-সালেহীনের আদর্শের অনুসারী আহলুল ইলম বা দ্বীন সম্পর্কে গভীর জ্ঞান রাখেন এমন আলেমদের বক্তব্য শোনার বা তাদের লিখনি পড়ার। কোন সন্দেহ পূর্ণ ও অজ্ঞাত ব্যক্তির বক্তব্য শোনা বা লিখুনি পড়া উচিৎ নয়। কেননা, এমন লেখক ও বক্তারা সুন্দর সুন্দর কথার ফাঁকে বিষ ঢেলে দেয় কিন্তু সাধারণ পাঠক/শ্রোতারা বুঝে উঠতে পারে না।

অবশ্য, যারা তাদের আকীদা ও মানহাজ (বিশ্বাস ও নীতি-আদর্শ) গোপন রাখে সময়ের ব্যবধানে তা অবশ্যই প্রকাশিত হয়ে যায়। কেউ তার বিশ্বাস ও নীতি-আদর্শ স্থায়ীভাবে গোপন রাখতে পারে না।

বর্তমানে বহু মানুষ ইউটিউবে বক্তার সুর, কণ্ঠ, বাগ্মিতা বা বাকপটুতা দেখে মুগ্ধ হয় তার ভক্ত হয়ে যায় এবং অন্ধের মত তাকে অনুসরণ করতে থাকে। পরে দেখা যায়, তার আকীদা-বিশ্বাস ও রীতি-মানহাজ ত্রুটিপূর্ণ। কিন্তু অন্ধভক্তি ও গোঁড়ামির কারণে সেখান থেকে ফিরে আসা কঠিন হয়ে যায়।
তাই হেদায়েত ও সঠিক দ্বীন অর্জন করতে হলে অবশ্যই নির্ভরযোগ্য বিশুদ্ধ আকীদা ও মানহাজের অনুসারী আহলে ইলম থেকে জ্ঞানার্জন করার চেষ্টা করতে হবে।
তবে মনে রাখা আবশ্যক, পৃথিবীতে কোন মানুষই ১০০% নির্ভূল নয়। হকপন্থী মানুষের পরিচয় হল, যখনই তার ভুল ধরিয়ে দেয়া হয় বা তাকে সংশোধনী দেয়া হয় তখন দ্বীনের স্বার্থে ব্যক্তিগত মান-সম্মান ও পদমর্যাদার দিকে না তাকিয়ে নিজেকে দ্রুত সংশোধন করে নেয়।
প্রবাদ রয়েছে:
"ভুল করা দোষণীয় নয়; দোষণীয় হল, ভুল থেকে ফিরে না আসা।"

আল্লাত তাআলা আমাদেরকে হকপথের সন্ধান দিন এবং হকের উপর আমরণ অবিচল থাকার তওফিক দান করুন। আমীন।
▬▬▬▬✪✪✪▬▬▬
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
লিসান্স, মদিনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার। সউদী আরব

13/11/2024

কাউকে কুকুর, গাধা কিংবা শুকর বলা
==================================

সাঈদ ইবনুল মুসাইয়্যেব رحمه الله এবং ইবরাহী আন নাখয়ী رحمه الله বলেন,
لا تقل لصاحبك يا حمار ، يا كلب ، يا خنزير ، فيقول لك يوم القيامة : أتراني خلقت كلبا أو حمارا أو خنزيرا
তুমি তোমার সাথীকে বলনা, ওহে গাধা, এই কুকুর, হে শুকর। তাহলে কিয়ামতে আল্লাহ তোমাকে বলবেন, তুমি কি আমাকে দেখেছ যে, আমি তাকে কুকুর বানিয়েছি, গাধা বানিয়েছি কিংবা শুকর বানিয়েছি!
( মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বাহ -২৮২-২৮৩/৫ )

শাঈখ উসাইমীন رحمه الله বলেন,
কাউকে হে কুকুর বলে সম্মোধন কিংবা হে গাধা বলে সম্মোধন করা বৈধ নয়। কারণ আল্লাহ সুবহানাহু বলেছেন,

وَلَقَدْ كَرَّمْنَا بَنِىٓ ءَادَمَ وَحَمَلْنٰهُمْ فِى الْبَرِّ وَالْبَحْرِ وَرَزَقْنٰهُم مِّنَ الطَّيِّبٰتِ وَفَضَّلْنٰهُمْ عَلٰى كَثِيرٍ مِّمَّنْ خَلَقْنَا تَفْضِيلًا

আমি তো আদম সন্তানকে মর্যাদা দান করেছি, স্থলে ও সমুদ্রে তাদের চলাচলের বাহন দিয়েছি; তাদেরকে উত্তম জীবনোপকরণ দান করেছি এবং যাদেরকে আমি সৃষ্টি করেছি, তাদের অনেকের উপর তাদেরকে যথেষ্ট শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছি।
( সূরা বনী ইসরাইল-৭০)

With Masud Bin Israil Hossain – I'm on a streak! I've been a top fan for 4 months in a row. 🎉
11/11/2024

With Masud Bin Israil Hossain – I'm on a streak! I've been a top fan for 4 months in a row. 🎉

হে আল্লাহ আমাকে লাঞ্ছনা হতে আগলে রাখিও এবং আমাকে ও একথা বলার তাওফীক দান করিও যে,ইয়া আল্লাহ আমি জানতাম  নিশ্চয়ই আপনি  আমা...
29/10/2024

হে আল্লাহ আমাকে লাঞ্ছনা হতে আগলে রাখিও এবং আমাকে ও একথা বলার তাওফীক দান করিও যে,
ইয়া আল্লাহ আমি জানতাম নিশ্চয়ই আপনি আমাকে কখনোই লাঞ্ছিত করবেন না ,,,,। আমিন ইয়া রব।

25/10/2024

জীবন যুদ্ধে পরাজিত?
_______________________________
আল্লাহ তাআ’লা বলেন,
فَاَمَّا مَنۡ تَابَ وَ اٰمَنَ وَ عَمِلَ صَالِحًا فَعَسٰۤی اَنۡ یَّکُوۡنَ مِنَ الۡمُفۡلِحِیۡنَ
“তবে যে ব্যাক্তি তাওবা করে এবং ঈমান আনে আর নেক আমল করে, আশা করা যায় সে সাফল্য অর্জনকারী লোকদের অন্তর্ভুক্ত হবে।” সূরা আল-ক্বাসাসঃ ৬৭।
_______________________________
যারা অলসতা, উদাসীনতা বা অনেক বেশি গুনাহ-খাতার দ্বারা জীবনের মূল্যবান সময় ও সুযোগ নষ্ট করে ফেলেছেন, আপনারা হতাশ হবেন না। যতক্ষণ পর্যন্ত শ্বাস নিতে পারছেন, আল্লাহর দিকে ফিরে আসার জন্য ততক্ষণ পর্যন্ত আপনার সুযোগ বাকী আছে। জীবনের বাকি সময়কে ইলম অর্জন এবং নেক আমলে ব্যয় করুন। ইন শা আল্লাহ অতীতের জীবনের ভুল-ত্রুটির জন্য কাফফারা হয়ে যাবে। এনিয়ে তাবেয়ীদের মধ্যে সবচেয়ে জ্ঞানী এবং নেককার একজন আলেমের উপদেশ শুনুন।
_______________________________
মদীনা ইসলামিক ইউনিভার্সিটির সম্মানিত প্রফেসর, ফযীলাতুশ-শায়খ আব্দুর রাজ্জাক্ব বিন আব্দুল মুহসিন আল-আব্বাদ হা’ফিজাহুল্লাহ বলেন,
“ইমাম আবু নুয়াই’ম রহি’মাহুল্লাহ রচিত ‘আল-হিলইয়া’ নামক কিতাবে সুন্দর একটি ঘটনা বর্ণিত হয়েছে।

একদা হাসান আল-বসরী রহি’মাহুল্লাহ একজন বৃদ্ধ লোককে দেখতে পেলেন যে, তিনি তার ইবাদতের ব্যপারে অলস এবং উদাসীন। তিনি তাকে জিজ্ঞেস করলেন, “আপনি কত বছর বয়সে উপনীত হয়েছেন?” উত্তরে লোকটি বললো, “৬০ বছর।” হাসান আল-বসরী রহি’মাহুল্লাহ তাকে জিজ্ঞেস করলেন, “আপনি কি বুঝতে পারছেন না যে, আপনি একটা সফরে আছেন আর সেই সফরের শেষ সময়ে পৌঁছে গেছেন?”
এই কথা শুনে লোকটি ভীত হয়ে বললো, “ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউ’ন।”
হাসান আল-বসরী রহি’মাহুল্লাহ তাকে জিজ্ঞেস করলেন, “আপনি কি এই কথাটির তাফসীর (অর্থ বা ব্যখ্যা) জানেন?” লোকটি বললো, “এর অর্থ কি?”
শায়খ আব্দুর রাজ্জাক্ব বিন আব্দুল মুহসিন আল-আব্বাদ হা’ফিজাহুল্লাহ বলেন, “বর্তমান সময়ে অনেক লোক বিভিন্ন সময়ে “ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন” এই দুআটি বলে কিংবা পড়ে, কিন্তু তাদের অনেকেই এর অর্থ ও তাফসীর জানেনা।

যাই হোক, প্রখ্যাত তাবেয়ী বিদ্বান হাসান আল-বসরী (মৃত্যু ১১০ হিজরী) রহি’মাহুল্লাহ বলেন, “ইন্না লিল্লাহ” এই কথার অর্থ হচ্ছে, আমি আল্লাহর একজন বান্দা। আর “ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউ’ন” এই কথার অর্থ হচ্ছেঃ আমি আল্লাহর কাছে ফিরে যাবো। সুতরাং আপনি যদি জেনে থাকেন যে, আপনি আল্লাহর একজন বান্দা এবং আপনাকে আল্লাহর কাছে ফিরে যেতে হবে, তাহলে আপনি এটাও জেনে রাখুন, (দুনিয়ার জীবনে আপনি কি আমল করছেন সেই ব্যাপারে) আল্লাহ আপনাকে প্রশ্ন করবেন। সুতরাং আপনি আল্লাহকে কি জবাব দেবেন সেই ব্যাপারে প্রস্তুতি গ্রহণ করুন।

হাসান আল-বসরী রহি’মাহুল্লাহর এই সুন্দর এবং গুরুত্বপূর্ণ উপদেশ শুনে লোকটির অনুধাবন হলো এবং তার উদাসীনতার জন্য লজ্জিত হলো। তিনি বুঝতে পারলেন যে, তার নিজেকে সংশোধন করা উচিত। একারণে তিনি হাসান আল-বসরী রহি’মাহুল্লাহকে প্রশ্ন করলেন, “আমার এই দুরবস্থা থেকে নিজেকে সংশোধন করা এবং মুক্তির উপায় কি?”
হাসান আল-বসরী রহি’মাহুল্লাহ বললেন, “মুক্তির উপায় সহজ। আপনি আপনার বাকী জীবনে নেক আমল করুন তাহলে আপনার অতীত জীবনের খারাপ কাজ ক্ষমা করে দেওয়া হবে। আর আপনি যদি বাকী জীবনে খারাপ আমল করেন, তাহলে আপনি আপনার আগের ও পরের খারাপ কাজের পরিণতি ভোগ করবেন।”
📘 আল-হিলইয়াতুল আওলিয়া, আবু নুআ’ইম আল-আসফাহানী রহি’মাহুল্লাহ।
_______________________________
এ ব্যাপারে সরাসরি একটি হাদীসও বর্ণিত হয়েছে। আবু যার্র রাদিয়াল্লাহু আ'নহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ বলেছেন,
مَنْ أَحْسَنَ فِيمَا بَقِيَ غُفِرَ لَهُ مَا مَضَى وَمَنْ أَسَاءَ فِيمَا بَقِيَ أُخِذَ بِمَا مَضَى وَمَا بَقِيَ
“যে ব্যক্তি তার বাকী জীবনে ভালো আমল করবে, তাহলে তার জীবনের আগের গুনাহসমূহ মাফ করে দেওয়া হবে। আর যে ব্যক্তি তার বাকী জীবনে খারাপ আমল করবে, তাহলে তার জীবনের আগের এবং পরের সমস্ত গুনাহর জন্য তাকে পাকড়াও করা হবে।”
📘 আল-মাজমূ আল-আওসাতঃ ৬৮০৬, শায়খ আলবানী হাসান বলেছেন, সহীহ আত-তারগীবঃ ৬৫১৩।
_______________________________
ইয়া রাব্বুল আলামীন
তুমি আমাদের পরের জীবনকে পূর্বের জীবনের চাইতে উত্তম বানিয়ে দাও আ-মীন ওয়ামা তাওফীক ইল্লাহবিল্লাহ।

আল্লাহর পথে ফিরে আসুন।
13/07/2024

আল্লাহর পথে ফিরে আসুন।

জুমুয়ার দিনের গুরুত্ব ও তাৎপর্য এবং করণীয়:জুমার দিন শুধু এই উম্মতের বৈশিষ্ট্য : হজরত আবু হুরায়রা রা: থেকে বর্ণিত, নবীজ...
12/07/2024

জুমুয়ার দিনের গুরুত্ব ও তাৎপর্য এবং করণীয়:

জুমার দিন শুধু এই উম্মতের বৈশিষ্ট্য : হজরত আবু হুরায়রা রা: থেকে বর্ণিত, নবীজী সা: বলেন, আমাদের পূর্ববর্তী উম্মতকে জুমার দিন সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা অজ্ঞ রেখেছেন। ইহুদিদের ফজিলতপূর্ণ দিবস ছিল শনিবার। খ্রিষ্টানদের ছিল রোববার। অতঃপর আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে দুনিয়ায় পাঠালেন এবং জুমার দিনের ফজিলত দান করলেন। সিরিয়ালে শনি ও রোববারকে শুক্রবারের পরে রাখলেন। দুনিয়ার এই সিরিয়ালের মতো কেয়ামতের দিনও ইহুদি খ্রিষ্টানরা মুসলমানদের পরে থাকবে। আমরা উম্মত হিসেবে সবার শেষে এলেও কেয়ামতের দিন সব সৃষ্টির আগে থাকব (মুসলিম-১৪৭৩)।

জুমার দিন দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ দিন : হজরত আবু হুরায়রা রা: থেকে বর্ণিত, নবীজী সা: বলেছেন, পৃথিবীর যত দিন সূর্য উদিত হবে তার মধ্যে শ্রেষ্ঠ দিন হলো শুক্রবার। এ দিনে আদম আ:-কে সৃষ্টি করা হয়েছে এবং জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়েছে। এ দিনেই তাঁকে জান্নাত থেকে বের করা হয়েছিল। সর্বশেষ কেয়ামত সংঘটিত হবে শুক্রবার দিনে (মুসলিম-৮৫৪)।

সপ্তাহের সেরা দিন : রাসূলুল্লাহ সা: বলেন, জুমার দিন দিবসসমূহের মধ্যে শ্রেষ্ঠ এবং তা আল্লাহর নিকট অধিক সম্মানিত (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১০৮৪)।

গুনাহ মাফের দিন : রাসূলুল্লাহ সা: বলেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করে উত্তম পোশাক পরিধান করবে এবং সুগন্ধি ব্যবহার করবে, যদি তার নিকট থাকে। তারপর জুমার নামাজে আসে এবং অন্য মুসল্লিদের গায়ের ওপর দিয়ে টপকে সামনের দিকে না যায়। নির্ধারিত নামাজ আদায় করে। তারপর ইমাম খুতবার জন্য বের হওয়ার পর থেকে সালাম পর্যন্ত চুপ করে থাকে। তাহলে তার এই আমল পূর্ববর্তী জুমার দিন থেকে পরের জুমা পর্যন্ত সব সগিরা গুনাহের জন্য কাফ্ফারা হবে (আবু দাউদ, হাদিস : ৩৪৩)।

অনেক মুহাদ্দিসীন গণ এই হাদীসকে সবচেয়ে ফজিলত পূর্ণ হাদিস বলেছেন!!

প্রতি কদমে এক বছরের রোজা রাখা ও তাহাজ্জুদ পড়ার সওয়াব লাভ !
সুবহানাল্লাহ!!

নবীজী সা: ইরশাদ করেছেন,

روى الإمام أحمد في مسنده من حديث أوس بن أبي أوس عن النبي صلى الله عليه وسلم قال: "إِذَا كَانَ يَوْمُ الجُمُعةِ، فَغَسَلَ أحَدُكُمْ رأسهُ واغْتَسَلَ ثم غدا أو ابتكرَ، ثم دنَا فاسْتَمَعَ وأنْصَتَ كانَ له بكلِّ خُطْوة خَطاها كَصِيام سنةٍ وقيامِ سَنَةٍ.

যে ব্যক্তি জুমার দিনে উত্তমরূপে গোসল করে আগে আগে মসজিদে যায় এবং বাহনে না চড়ে হেঁটে যায়। ইমামের কাছাকাছি বসে মনোযোগ দিয়ে ইমামের আলোচনা শোনে, অনর্থক কাজ না করে, তবে তার প্রতি কদমের বিনিময়ে আল্লাহ তায়ালা এক বছর সিয়াম ও কিয়ামের সাওয়াব দান করেন (তিরমিজি-হাদিস : ৪৫৬)।

শুক্রবার মুসলমানদের ঈদের দিন : রাসূলুল্লাহ সা: ইরশাদ করেন, এই দিন অর্থাৎ জুমার দিনকে আল্লাহ তায়ালা মুসলমানদের জন্য ঈদের দিন বানিয়েছেন (সহিহ ইবনে মাজাহ-৯০৮)।

কবরের আজাব থেকে নাজাত : হাদিস শরিফে এরশাদ হয়েছে, কোনো মুসলমান শুক্রবারে রাতে কিংবা দিনে ইন্তেকাল করলে আল্লাহ তায়ালা তাকে কবরের আজাব থেকে রক্ষা করবেন (তিরমিজি-১০৭৪)।

ফজিলতপূর্ণ এই দিনের বিশেষ কিছু আমলের কথা হাদিস শরিফে বর্ণিত হয়েছে। এখানে কয়েকটি আমলের কথা উল্লেখ করা হলো।

১. প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতে আদায় করা ফজিলতপূর্ণ। এর মধ্যে শুক্রবারে ফজরের নামাজ জামাতে আদায় করা বেশি ফজিলতপূর্ণ। হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, আল্লাহর কাছে সর্বশ্রেষ্ঠ নামাজ হলো শুক্রবারের ফজরের নামাজ। যা জামাতের সাথে আদায় করা হয় (সিলসিলাতুস সহিহা-৪/৯১)।

২. গোসল করা।

৩. উত্তম পোশাক পরিধান করা।

৪. সুগন্ধি ব্যবহার করা।

এই তিনটি বিষয় একত্রে হাদীসে বর্ণিত হয়েছে:—

যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করে উত্তম পোশাক পরিধান করবে এবং সুগন্ধি ব্যবহার করবে, যদি তার নিকট থাকে। তারপর জুমার নামাজে আসে এবং অন্য মুসল্লিদের গায়ের ওপর দিয়ে টপকে সামনের দিকে না যায়। নির্ধারিত নামাজ আদায় করে। তারপর ইমাম খুতবার জন্য বের হওয়ার পর থেকে সালাম পর্যন্ত চুপ করে থাকে। তাহলে তার এই আমল পূর্ববর্তী জুমার দিন থেকে পরের জুমা পর্যন্ত সমস্ত সগিরা গুনাহর জন্য কাফ্ফারা হবে।-(আবু দাউদ, হাদিস : ৩৪৩)

৫. আগে আগে মসজিদে যাওয়া : এই দিনের গুরুত্বপূর্ণ আমল হচ্ছে আগে আগে মসজিদে যাওয়া। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন,

قال الله تعالى: (يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا نُودِي لِلصَّلاةِ مِنْ يَوْمِ الْجُمُعَةِ فَاسْعَوْا إِلَى ذِكْرِ اللَّهِ وَذَرُوا الْبَيْعَ ذَلِكُمْ خَيْرٌ لَكُمْ إِنْ كُنتُمْ تَعْلَمُونَ، فَإِذَا قُضِيَتِ الصَّلَاةُ فَانتَشِرُوا فِي الْأَرْضِ وَابْتَغُوا مِن فَضْلِ اللَّهِ وَاذْكُرُوا اللَّهَ كَثِيرًا لَّعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ)

‘হে মুমিনগণ! জুমার দিনে যখন নামাজের আজান দেয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে দ্রুত ছুটে যাও এবং বেচাকেনা বন্ধ করো। এটা তোমাদের জন্য উত্তম যদি তোমরা বোঝো’ (সূরা জুমা, আয়াত : ৯)।

لما رواه أبو هريرة رضي الله عنه، عن النّبي عليه الصّلاة والسّلام أنّه قال: (من اغتَسَل يومَ الجُمعةِ غُسلَ الجنابةِ ثمَّ راح فكأنَّما قرَّب بدنةً، ومن راح في السَّاعةِ الثَّانيةِ فكأنَّما قرَّب بقرةً، ومن راح في السَّاعةِ الثَّالثةِ فكأنَّما قرَّب كبشاً أقرنَ، ومن راح في السَّاعةِ الرَّابعةِ فكأنَّما قرَّب دجاجةً ومن راح في السَّاعةِ الخامسةِ فكأنَّما قرَّب بيضةً، فإذا خرج الإمامُ حضرت الملائكةُ يستمعون الذِّكرَ)

রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, জুমার দিন মসজিদের দরজায় ফেরেশতারা অবস্থান করেন এবং ক্রমানুসারে আগে আগমনকারীদের নাম লিখতে থাকেন। যে সবার আগে আসে সে ওই ব্যক্তির মতো যে একটি মোটাতাজা উট কোরবানি করে। এরপর যে আসে সে ওই ব্যক্তি যে একটি গাভী কোরবানি করে। এরপর আগমনকারী ব্যক্তি মুরগি দানকারীর মতো। তারপর ইমাম যখন বের হন তখন ফেরেশতাগণ তাদের লেখা বন্ধ করে দেন এবং মনোযোগসহকারে খুতবা শুনতে থাকেন (বুখারি, হাদিস : ৯২৯)।

৬. সূরা কাহাফ তেলাওয়াত করা :
روى الحاكم من حديث أبي سعيد الخدري رضي الله عنه: أن النبي صلى الله عليه وسلم قال: "مَنْ قَرَأَ سُورَةَ الْكَهْفِ يَوْمَ الْجُمُعَةِ أَضَاءَ لَهُ مِنَ النُّورِ مَا بَيْنَ الْجُمُعَتَيْنِ.
আবু সাঈদ খুদরি রা: থেকে বর্ণিত, রাসূল সা: বলেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন সূরা কাহফ পাঠ করবে, তার জন্য দুই জুমা পর্যন্ত নূর উজ্জ্বল করা হবে (আমালুল ইয়াওমী ওয়াল লাইল, হাদিস : ৯৫২)।

৭. বেশি বেশি দরুদ শরিফ পাঠ করা : এই দিনের আরেকটি আমল হচ্ছে নবীজীর ওপর বেশি বেশি দরুদ পাঠ করা। এই মর্মে রাসূল সা: বলেন,

وروى البيهقي في سننه من حديث أنس: أن النبي صلى الله عليه وسلم قال: "أَكْثِرُوا الصَّلاَةَ عَلَيَّ يَوْمَ الْجُمُعَةِ وَلَيْلَةَ الْجُمُعَةِ، فَمَنْ صَلَّى عَلَيَّ صَلاَةً صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ عَشْرًا
অন্য হাদীসে এসেছে:তোমরা এই দিন আমার ওপর অধিক পরিমাণে দরুদ পাঠ করো। কেননা তোমাদের দরুদ আমার সম্মুখে পেশ করা হয়ে থাকে (আবু দাউদ, হাদিস : ১০৪৭)।

৮. মসজিদে এসে জিকির, তেলাওয়াত ও ইবাদত ভিন্ন অপ্রয়োজনীয় অন্য কোনো কথা না বলা : হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, নবীজী সা: বলেছেন, জুমার নামাজের খুতবার সময় তুমি যদি তোমার সাথিকে চুপ থাকতে বলো, তবে এটাও তোমার অনর্থক কাজ হবে (বুখারি-হাদিস : ৯০৬)।

৯. বিশেষ করে দোয়ার গুরুত্ব দেয়া : জুমার দিনের গুরুত্বপূর্ণ বিশেষ একটি আমল হচ্ছে দোয়ার প্রতি মনোনিবেশ করা। জাবের ইবনে আবদুল্লাহ রা: থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সা: বলেন, জুমার দিনের ১২ ঘণ্টার মধ্যে একটি বিশেষ মুহূর্ত এমন আছে যে, তখন কোনো মুসলমান আল্লাহর নিকট যে দোয়া করবে আল্লাহ তা কবুল করেন (আবু দাউদ, হাদিস : ১০৪৮)।
অধিকাংশ মুহাদ্দিসীন গণ সেই সময়টার কথা বলতে গিয়ে আসর থেকে মাগরিব উল্লেখ করেছেন।
মাগরিবের পূর্ব ক্ষণে সবাই আমরা দুয়ার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ।

আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে আমল করার তাওফিক দান করুন।
بارك الله فيكم

"সাকীনা" কি?প্রশ্ন: "সাকীনা" কি? এটি যারা কুর'আন তিলাওয়াত করে তাদের উপর নাকি নাজিল হয়। এক হাদিসে বলা হয়েছে, এক সাহাবি কু...
12/07/2024

"সাকীনা" কি?

প্রশ্ন: "সাকীনা" কি? এটি যারা কুর'আন তিলাওয়াত করে তাদের উপর নাকি নাজিল হয়। এক হাদিসে বলা হয়েছে, এক সাহাবি কুর'আন তিলাওয়াত করছিলেন। এই সময় 'সকীনা' নাজিল হল। এটি কি ফেরেশতা ছিল? এ বিষয়ে যদি জানাতেন তাহলে উপকৃত হতাম।।

উত্তর :
সাকীনা শব্দের অর্থ: শান্তি, প্রশান্তি, স্বস্তি ও সান্ত্বনা।
কুরআনে ও হাদিসে এই ‘সাকীনা’ শব্দটি বহু স্থানে ব্যবহৃত হয়েছে। যেমন:

- প্রখ্যাত সাহাবী বারা ইবনে আযেব রা. হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ‘‘একদা একটি লোক সূরা কাহাফ পাঠ করছিল। তার পাশেই দু টো রশি দিয়ে একটি ঘোড়া বাঁধা ছিল।
ইতোমধ্যে লোকটিকে একটি মেঘে ঢেকে নিলো। মেঘটি লোকটির নিকটবর্তী হতে থাকলে ঘোড়াটি তা দেখে চমকাতে আরম্ভ করল। অতঃপর যখন সকাল হল তখন লোকটি রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম–এর দরবারে হাজির হয়ে উক্ত ঘটনা বর্ণনা করল। তা (শুনে) তিনি বললেন, ‘‘ওটি সাকীনা বা প্রশান্তি ছিল, যা তোমার কুরআন পড়ার দরুন অবতীর্ণ হয়েছে।’’ (সহীহ আল বুখারী ও সহীহ মুসলিম)

- এ ছাড়াও আল্লাহ কুরআনে বলেছেন,
هُوَ الَّذِي أَنزَلَ السَّكِينَةَ فِي قُلُوبِ الْمُؤْمِنِينَ لِيَزْدَادُوا إِيمَانًا مَّعَ إِيمَانِهِمْ
“তিনি মুমিনদের অন্তরে সাকীনা (প্রশান্তি) অবতীর্ণ করেন, যাতে তাদের ঈমানের সাথে আরও ঈমান বেড়ে যায়।” (সূরা আল ফাতহ: ৪)

● ইবনে আব্বাস রা. বলেন, সাকীনা অর্থ: الرحمة দয়া এবং الطمأنينة শান্তি, প্রশান্তি, নিশ্চিন্ততা, আস্থা ইত্যাদি।
● কাতাদা রহ. বলেন, الوقار তথা গাম্ভীর্য, সম্মান, শ্রদ্ধা, সহনশীলতা ইত্যাদি।
(তাফসির ইবনে কাসির)

অর্থাৎ এটি এক প্রকার মানসিক প্রশান্তি, স্বস্তি, সান্ত্বনা, স্থিরতা ও সহনশীলতা যা আল্লাহ তায়ালা বান্দার অন্তরে ঢেলে দেন। এর ফলে যত ভয়-ভীতি ও বিপদাপদ আসুক না কেন সে হাহুতাশ করে না, অস্থির হয় না, ভেঙ্গে পড়ে না বরং মানসিকভাবে শক্তি ও সাহস খুঁজে পায়। যার কারণে মহান আল্লাহর প্রতি তার ঈমান আরও বৃদ্ধি পায়। সেই সাথে তাঁর প্রতি আস্থা ও নির্ভরতা হয় আরও সুদৃঢ়।
আল্লাহু আলাম।

উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ সেন্টার, সৌদি আরব

30/06/2024
29/06/2024

জনৈক ব্যক্তি তার এক (মুসলিম) ভাইয়ের সাথে সাক্ষাতের জন্য অন্য গ্রামে রওয়ানা হয়। পথে আল্লাহ তার জন্য অপেক্ষমান একজন ফেরেশতা নিযুক্ত করেন। যখন সে তার কাছে আসল তখন (ফেরেশতা) তাকে জিজ্ঞেস করল, কোথায় যাচ্ছ? সে বলল, আমি এই গ্রামে আমার ভাইয়ের সাথে সাক্ষাতের জন্য যাচ্ছি। ফেরেশতা আবার জিজ্ঞেস করল, তুমি যেখানে যার কাছে যাচ্ছ, সেখানে বা তার কাছে তোমার কোন স্বার্থ বা সম্পদ আছে কি যার কারণে তুমি সেখানে যাচ্ছ? লোকটি বলল, না আমি সেখানে যাচ্ছি এজন্য যে, আমি তাঁকে আল্লাহর জন্য ভালবাসি। ফেরেশতা বলল, আমি আল্লাহর পক্ষ থেকে তোমার নিকট দূত হিসাবে প্রেরিত হয়েছি, এই শুভ সংবাদ নিয়ে যে, নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাকে এরূপ ভালোবাসেন, যেরূপ তুমি আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে অমুক ব্যক্তিকে ভালোবাস’।

— [সহীহ মুসলিম : ২৫৬৭]।

29/06/2024

"
দুঃখ লুকিয়ে রাখা গোপনীয়তা বজায় রাখার শামিল

; কারণ তা প্রকাশ করলে শত্রু আনন্দিত হয়, এবং ভালবাসার মানুষ (শুভাকাঙ্ক্ষীরা) কষ্টানুভব করে।"
— ইমাম ইবনুল জাওযী রাহিমাহুল্লাহ।
— [সাইদুল খাতের : ১/২৭৪]।

Address

GODAGARI
Rajshahi
6300

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Faiyaz Azfer a'l Masud posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Faiyaz Azfer a'l Masud:

Videos

Share