05/06/2022
বিএনপি কর্তৃক মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনাকে প্রাণনাশের হুমকির প্রতিবাদে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রাজশাহী মহানগরের উদ্যোগে কুমারপাড়াস্থ দলীয় কার্যালয় থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। বিক্ষোভ মিছিলটি নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টে এসে শেষ হয়। বিক্ষোভ মিছিল শেষে সেখানে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মাননীয় মেয়র জননেতা এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন। সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রাজশাহী মহানগরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল। বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রাজশাহী মহানগরের সাধারণ সম্পাদক মোঃ ডাবলু সরকার।
সমাবেশে এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, আমরা জানি বাংলাদেশে একটি স্রোত আছে। সেটিকে রাজনৈতিক কোন স্রোত বলা যাবে না, সেটি একটি মরা স্রোত যার নাম বিএনপি। এই মরা স্রোতটি স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তি। স্বাধীনতার পর থেকেই এই ধারাটি কখনও পশ্চিমাদের আশ্রয়ে, প্রশ্রয়ে ও মদদে আবার কখনও এদেশীয় এজেন্টদের মাধ্যমে নানা রকম অপকর্ম ও অপপ্রচার করে এবং হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করেছে। এই ধারাটি কখনও করেছে মুসলিম লীগ, কখনও জামায়াত ইসলামী, কখনও জাতীয়তাবাদী দল, কখনও হেফাজত ইসলাম সহ নানা নামে, নানা বর্ণে এই মাটি থেকে স্বাধীনতার নেতৃত্বদানকারী দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করতে চায়।
তিনি আরো বলেন, বিএনপি একটি মানসিক বিকারগ্রস্থদের দল। এ দলের নেতারা সবসময় মানসিক ভারসাম্যহীনতায় ভুগে জাতির সামনে আবোল-তাবোল বক্তব্য উপস্থাপন করে। কারা আন্দোলনের ডাক দিয়ে কখনও বলে ঈদের পরে আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে ফেলে দেওয়া হবে। কিন্তু ঈদ আসে, ঈদ যায়, বিএনপি’র আন্দোলন আন্দোলন খেলা শেষ হয় না। জনগণ তাদের এই ফাঁকা বুলি বুঝতে পেরেছে। বিএনপি একটি কোমরভাঙ্গা দল, তারা কোন রাজপথ থেকে আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে গড়ে উঠা দল নয়, তাই জনগণের সাথে তাদের সম্পৃক্ততা নেই।
তিনি আরো বলেন, আমরা লক্ষ্য করে দেখছি তারা রাজনৈতিক জোট গঠন করছে, করতেই পারে। আমরা জোটবদ্ধ ভাবে আন্দোলন করে বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা’র নেতৃত্বে সুষ্ঠু ও সুন্দর ভাবে সরকার পরিচালনা করছি। তবে যতই জোট গঠন করুক না কেন, এক (১) এর পূর্বে যতই শূণ্য (০) যোগ করা হোক না কেন, ফলাফল এক (১) থাকে।
তিনি পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এর উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, লক্ষ্য করে দেখুন আপনাদের পিয়ারের পাকিস্তান তিন ভাগে বিভক্ত হওয়ার কথা বলেছেন। শ্রীলংকার অবস্থা আজকে কি? সারা বিশ্ব পরিস্থিতি আজ নাজুক। এই পরিস্থিতিতে বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ দেশরত্ন শেখ হাসিনার বাংলাদেশ আজও সগৌরবে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে। এর কারণ হলো দেশ ও জাতির প্রতি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অঙ্গিকার, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও জননেত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্ব।
তিনি বিএনপি’র উদ্দেশ্যে বলেন, বাংলাদেশের মাটিতে আর পঁচাত্তর কখনই সম্ভব নয়। কাজেই পঁচাত্তরের কথা যারা ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের অপরাজনীতির কথা বলছেন তাদের প্রতি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলতে চাই, আজকের সমাবেশ দেখে যান। আমরা শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে বিশ্বাসী। যদি শান্তি শৃঙ্খলা বিঘ্ন করে রাজপথে থেকেই তাদের এর দাঁতভাঙ্গা জবাব দেওয়া হবে। আমরা কেন্দ্রের সংকেতের অপেক্ষায় আছি, সংকেত পেলে জনগণকে সাথে নিয়ে আপনাদেরকে ঘরে ঢুকিয়ে দেবো, রাজপথে নামতে দিবো না।
তিনি বেগম খালেদা জিয়া’র উদ্দেশ্যে বলেন, আপনার কুলাঙ্গার ছেলেকে বলে দিন, লন্ডনে বসে ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের রাজনীতি বন্ধ করতে। যদি ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত বন্ধ না করে জনগণের রুদ্ররোষে খাম্বা তারেক এর অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাবে।
সভাপতির বক্তব্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল নেতাকর্মীদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, আগামীতে বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা ঘোষিত প্রতিটি আন্দোলন ও সংগ্রামে ইস্পাত কঠিন ঐক্য নিয়ে বিএনপি-জামায়াতের ষড়যন্ত্রের রাজনীতি রাজপথেই মোকাবিলা করা হবে। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্যে দিয়ে স্বাধীন আমাদের এই দেশ। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব নিয়ে বিএনপি-জামায়াত যতই ষড়যন্ত্র করুক না কেন, আমরা বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা’র নেতৃত্বে তাদের এই ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত জনগণকে সাথে নিয়ে রাজপথেই রুখে দিবো।
মোঃ ডাবলু সরকার বিএনপিকে উদ্দেশ্যে করে বলেন, যারা পঁচাত্তরের পুনরাবৃত্তি চান তারা আর কেউ নন, তারা একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা করে তৎকালীন বিরোধী দলের নেতা, আওয়ামী লীগ সভাপতি জননেত্রী শেখ হাসিনা সহ আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছিলো। এরা তারাই যারা সারা বাংলাদেশে স্লোগান দিয়েছিলো আমরা সবাই তালেবান, বাংলা হবে আফগান। এরা তারাই যারা পদ্মাসেতু নিয়ে ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তে মেতে উঠেছিলো। এরা তারাই যারা ৬৩টি জেলায় একসাথে সিরিজ বোমা হামলা করেছিলো। এরা তারাই যারা বাংলা ভাই সৃষ্টি করে ২৪ জনকে হত্যা করে ঝুলিয়ে রেখে উত্তরবঙ্গে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিলো। এরা তারাই যারা বিদ্যুতের জন্য কানশাটে কৃষক সহ সাধারণ মানুষের উপর গুলি চালিয়ে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিলো, সারের জন্য আন্দোলন করলে কৃষকদের উপর গুলি চালিয়েছিলো। এরা আসলে স্বাধীনতা ও সার্বভৌমে বিশ্বাসী না। বাংলাদেশ এগিয়ে যাক, তারা চায় না। বাংলাদেশ দেশরত্ন শেখ হাসিানা’র নেতৃত্বে উন্নত ও সমৃদ্ধির দেশ হিসেবে যখন সারাবিশ্বে পরিচিতি লাভ করেছে তখন তাদের গা জ্বলা শুরু হয়েছে। এরা ক্ষমতায় থাকলে জনগণের টাকা লুটপাট তসরুপ করে বিদেশে পাচার করে দেশের অর্থনৈতিক মেরুদন্ড ভেঙ্গে দেয়। তার প্রমান আমরা দেখেছি তাদের শাসনামলে বাংলাদেশ পাঁচ পাঁচ বার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলো আর বিরোধী দলে থাকলে জ্বালাও পোড়াও করে দেশের অর্থনৈতিক মেরুদন্ড ভেঙ্গে দেওয়ার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়, জানমালের ক্ষতিসাধন করে, আন্দোলনের নামে যানবহনে অগ্নিসংযোগ করে সাধারণ মানুষকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারে- এটাই তাদের রাজনীতি। তাদের এই রাজনীতি থেকে জনগণ মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। দেশরত্ন শেখ হাসিনা’র নেতৃত্বে বাংলাদেশের মানুষ আজ ঐক্যবদ্ধ। তারা উন্নয়ন চায়।
সভায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রাজশাহী মহানগরের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নওশের আলী, রেজাউল ইসলাম বাবুল, ডাঃ তবিবুর রহমান শেখ, যুগ্ম সম্পাদক মোস্তাক হোসেন, আসাদুজ্জামান আজাদ, আহ্সানুল হক পিন্টু, সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাড. আসলাম সরকার, আজিজুল আলম বেন্টু, মীর ইসতিয়াক আহমেদ লিমন, দপ্তর সম্পাদক মাহাবুব-উল-আলম বুলবুল, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক মীর তৌফিক আলী ভাদু, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক ফিরোজ কবির সেন্টু, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম জাহিদ, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক রবিউল আলম রবি, শ্রম সম্পাদক আব্দুস সোহেল, উপ-দপ্তর সম্পাদক পংকজ দে, উপ-প্রচার সম্পাদক সিদ্দিক আলম, সদস্য জহির উদ্দিন তেতু, শাহাব উদ্দিন, আশরাফ উদ্দিন খান, এ্যাড. শামসুন্নাহার মুক্তি, নজরুল ইসলাম তোতা, বীর মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ আব্দুল মান্নান, আতিকুর রহমান কালু, হাফিজুর রহমান বাবু, বাদশা শেখ, মজিবুর রহমান, আলিমুল হাসান সজল, জয়নাল আবেদীন চাঁদ, ইউনুস আলী, মোখলেশুর রহমান কচি, এ্যাড. রাশেদ-উন-নবী আহসান, কে এম জুয়েল জামান, থানা আওয়ামী লীগের মধ্যে রাজপাড়া থানার সাধারণ সম্পাদক শেখ আনসারুল হক খিচ্চু, বোয়ালিয়া (পূর্ব) থানার সাধারণ সম্পাদক শ্যামল কুমার ঘোষ, বোয়ালিয়া (পশ্চিম) থানার সাধারণ সম্পাদক শামসুজ্জামান রতন, মতিহার থানার সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন, শাহ্মখদুম থানার সাধারণ সম্পাদক শাহাদত আলী শাহু, নগর শ্রমিক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওয়ালী খান, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শরীফ আলী মুনমুন, নগর কৃষক লীগ সভাপতি রহমতউল্লাহ সেলিম, সাধারণ সম্পাদক সাকের হোসেন বাবু, নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি আব্দুল মোমিন, সাধারণ সম্পাদক জেডু সরকার, নগর মহিলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সালমা রেজা, সাধারণ সম্পাদক কানিজ ফাতেমা মিতু, নগর যুব মহিলা লীগ সভাপতি এ্যাড. ইসমত আরা, সাধারণ সম্পাদক নিলুফার ইয়াসমিন নিলু, নগর ছাত্রলীগ সভাপতি নূর মোহাম্মদ সিয়াম, সাধারণ সম্পাদক ডাঃ সিরাজুম মুবিন সবুজ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া ও সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু প্রমুখ।