03/06/2024
৪ বছরের রিলেশনের পর বিয়ে হয়েছিল আমাদের। দুই বছর যেতে না যেতেই আমাদের ডিভোর্সের ব্যাপারে কথা চলতেছে। 😅
ডিভোর্সের কারণ তার ছেলে বেস্ট ফ্রেন্ড। বিয়ের আগে থেকে ওর বেস্ট ফ্রেন্ডকে আমি পজিটিভই নিতাম। বিয়ের পর একবছর পর্যন্তও পজিটিভ ছিল আমার কাছে। সবাই বলেনা যে ছেলে মেয়ে কখনো বেস্ট ফ্রেন্ড হতে পারেনা। যেটা হয় সেটা লুচ্চামি। আমি এটা আগে বিশ্বাস করতামনা। কিন্তু এখন…
ওর আমি অনেক কেয়ার নিতাম, সম্মান করতাম, জীবনের থেকেও ভালোবাসতাম। সেজন্যই সে আমারে বিয়ে করেছে। আমি চাকুরী করি একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে আর সে চাকুরী করে নার্সিং জবে একটা হাসপাতালে (সিক্রেট রাখলাম নাম)। তার বেস্ট ফ্রেন্ডকে নিয়ে আমি জেলাস হতামই মাঝে মাঝে। যখন দেখতাম ওরে নিয়ে সে পোস্ট দিতো, আমার কাছে প্রসংশা করতো। আমি একদিন সরাসরি বলছিলাম তোমার বেস্টফ্রেন্ড এর সাথে মেলামেশা আমার পছন্দ না। এসব নিয়ে ঝগড়া করে আমার সাথে যোগাযোগ ছিলোনা একমাস প্রায়। সে এমনভাবে তার ফ্রেন্ডকে নিয়ে বলতো যেন সে ফেরেশতা। ঝগড়ার পর অনেক রিকুয়েস্টের পর সব ঠিক হয়। মাঝে মাঝে তার বেস্ট ফ্রেন্ডের সাথে বাইকে ঘুরতে যেত এসব অবশ্য শেয়ারও করতো ডে পোস্টে। আমি ভাবছি যা করুক করুক। বিয়ের পর ঠিক করে নেবো। ওর বেস্ট ফ্রেন্ড আবার ওর কলেজ ফ্রেন্ড ছিলো। এখন জবও করে একসাথে। বিয়ের আগে একবার সে নার্সিং পরীক্ষার জন্য ঢাকায় গিয়েছিল। আমি বললাম কার সাথে যাচ্ছো। বলছিল তার বান্ধবীদের সাথে। তারপর অনেকদিনপর দেখতে পারি তার ফ্রেন্ডের একটি পিক ওর মেসেঞ্জারে। যেখানে সে ছেলের কাধে মাথা রেখে শুয়ে আছে ট্রেনে, কেবিনে কোলে শুয়ে আছে। এসব দেখে আমার পায়ের নিচে মাটি ছিলোনা বুঝতেছিলাম। তর্ক করছিলো মাথা কাধে রেখে, কোলে রেখে গেছে তো কি হইছে। আমাকে লজিক দেখাইলো ঘুম চলে আসায় এমনটা হতেই পারে পারে ব্লা ব্লা। তো আমি বললমাম তাহলে ঔসময় আমাকে মিথ্যা বলছিলা কেন বান্ধবীর সাথে যাচ্ছো। পরে সে স্বীকার করলো আর মাফ চাইলো আর এমন হবেনা। অনেক ভুল করছে ব্লা ব্লা। তারপর অনেক কিছুর পর বিয়ে হলো আমাদের। এখানে একটা ভালো লাগার ব্যাপার আছে। ওর ইচ্ছে ছিল খুব কম টাকায় কাবিন করে বিয়ে করবে। আমাদের দুজনের পরিবারই স্বাবলম্বী। কেউ থেকে কেউ কম না। তার কথাতেই এক লাখ টাকার নগদ কাবিনে আমাদের বিয়ে হলো। ওর ভালো দিকগুলোর শেষ নাই। একটাই সমস্যা ওর বেস্ট ফ্রেন্ড নিয়ে। ওর ফ্রেন্ডদের সাথে চলাফেরা আমার পছন্দ হয়না। সেজন্য আমাকে টক্সিক বলে, বলে আমি নাকি আপডেটেড না। 😅
জীবনে আমি ওর কোন কিছুর অভাব রাখিনি। অনেক ভালোবাসতাম। সে আমার খুব সখের, খুব প্রিয় মানুষ। তাই সবকিছু সহ্য করে মেনে নিয়ে চলতাম। ওর সাথে থাকলেই দুনিয়ার সব ভুলে যেতাম। কোনকিছু আর মনেই থাকতোনা। কিন্তু ১৫ দিনের মধ্যে দুটো ঘটনার কারণে আজ আমরা আলাদা হওয়ার পথে। ডিভোর্সের কথাবার্তা চলতেছে। ঘটনা দুটোই ওর বেস্ট ফ্রেন্ড নিয়ে। ওর ফ্রেন্ড ওরে কি গিফ্ট করছে জানেন? একটি ঘরি, ফেমিনিন ওয়াশ, পিংক লেডি সিক্রেট সোপ, ব্রা, প্যাডস। মানে ব্যাপারটা কেমন লাগবে একমাত্র আমার মত ছেলেরা বুঝবে। শুধু কল্পনা করুন আপনার বউকে তার ফ্রেন্ড এসব গিফট করেছে আর আপনি কি করতেন তখন। এসব নিয়ে অনেক ঝগড়া হইছে। সে বলে এসব দেওয়ায় কি এমন হইলো। এই কথা বলায় আমি হাত দিয়ে আয়না ভেঙে ফেলি। তারপর সে ঠান্ডা হলো আর সিদ্ধান্ত নিলো এগুলো ফেরত দিয়ে দিবে। বেশদিন হয়ে গেলো ফেরত দেয়নি। পরে আমি সব ফেলে দিছি। তাকে বুঝিয়ে বলছি ওর ফ্রেন্ডের সাথে যেন কোন যোগাযোগ না রাখে। অনেক বুঝিয়েছি। বলছে আর রাখবেনা। আমি বলছিলাম যদি দেখি তাহলে খবর আছে। সে সাথে সাথে চেইত্যা বলে কি খবর করবা? তালাক দিবা? সে বলে, ১০ লাখ কাবিন ডিজার্ব করি আর মাত্র ১ লাখে বিয়ে বসছি দেইখা তুমি স্বস্তা মনে করো আমাকে। আমি অবাক হয়ে গেলাম। কই থেকে কি বলে। শুধু একটাই বলছি আমাকে হারাবা সারাজীবনের জন্য আমার অবাধ্য হইলে। সে ও চুপ হয়ে যায়। চলতে লাগলো সুন্দরভাবেই। তার কয়েকদিন পর ওর বান্ধবীর বিয়েতে যায় সে। সেখানে আমি যাই বিয়ের দিন । সে একদিন আগে গেছে। ওর বান্ধবীর ভাইয়ের সাথে পরিচয়ে ফেবুতে যুক্ত হওয়া হয় আমার। বিয়েতে ওর ফ্রেন্ডরে দেখছিলাম। আমার বউকে দেখছি তাকে এড়িয়ে চলতে। বিয়ে থেকে আসার বেশ কয়েকদিন পরে বউয়ের বান্ধবীর ভাইয়ের আইডিতে গায়ে হলুদের একটা ভিডিও পাই। ভিডিওতে দেখতে পাই আমার বউকে পেছন থেকে পেটে টাইট করে জড়িয়ে ধরে শুন্যে রেখে গলায় আর মুখে হলুদ লাগাচ্ছে তার বেস্ট ফ্রেন্ড। অনেক ধৈর্য্য ধরে চুপ থেকে বাসায় যেয়ে ওর ফোন নেই জোর করে। বলে কি হইছে। বলছি চুপ করে দেখো। তারপর ওর ফ্রেন্ডরে ওর আইডি থেকে এই ভিডিওর লিংক দিয়ে বলি দোস্ত অনেক মজা হইছে ঐদিন তাইনা। সে বলে, দিনটা ভুলার মত না। তোর জামাই তো তোরে ঠিকমত খাইতে পারেনা। সাথে লজ্জার ইমোজি দিছে। ভিডিও কল দিছি আর আমাকে দেখেই কেটে দিছে।
এরপর থেকে যে ঝামেলা হইছে সেটা আর থামেনাই। ডিভোর্সের কথা বলছি আমি। আমারে ঔ ১ লাখ টাকার কথা শুনায়। রাগে বলছি আরো ৪ লাখ ম্যানেজ করে দিয়ে দিবোনে তোমারে। তাহলে ৫ লাখ কাবিন হবে। সেই থেকে মাফ চেয়েই যাচ্ছে। কিন্তু আমি এখন পাথর হয়ে গেছি এসবের জন্য। আর পারতেছিনা। কি সিদ্ধান্ত নিবো বুঝতেও পারছিনা। এক মাস হলো আলাদা হয়ে গেছি। ডিভোর্স দিবো দুই পরিবারই জানে। তারা আলোছনায় বসতে চাইছে অনেকবার। আমি বসিনাই। আমি এখন সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগতেছি। কি করবো বুঝতেছিনা।