02/01/2022
আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে নারী পুরুষ কেউ ভালো নেই। একটা নির্দিষ্ট বয়সে গিয়ে মেয়েরা চিন্তায় পড়ে বিয়ে নিয়ে, ছেলেরা চাকরি নিয়ে। মেয়ে দেখতে খারাপ হলে যেমন বিয়ের বাজারে রিফিউজ হওয়া তার নিয়তি তেমনি ছেলের চাকরি খারাপ হলে সেও কিন্তু বিয়ের বাজারে রিজিউজ হতেই থাকে হতেই থাকে। একটা মেয়ের জন্মের পর শেখানো হয় পরের বাড়ির দায়িত্ব কাধে নিতে হবে, আর একটা ছেলেকে শিখানো হয় নিজের পুরো গুষ্ঠির দায়িত্ব নিতে হবে। ছেলের যৌবন যায় দায়িত্ব পালনে সক্ষম হতে, মেয়ের যায় বিয়ের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে।
একটা মেয়ে যেমন তার সংসার গোছাতে না পারলে নিন্দিত হয় তেমনি একটি ছেলে নিন্দিত হয় সংসার গোছানোর জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসের যোগান দিতে না পারলে। মা বাচ্চাকে মুখে তুলে না খাইয়ে দিলে যেমন মায়ের বদনাম তেমনি বাচ্চার মুখের খাবারটা এনে দিতে না পারলে বাবার বদনাম। ভরপুর সংসারে যেমন মায়েদের সখ বলে কিছু থাকে না তেমনি কিন্তু বাবাদেরও থাকে না। সন্তান জন্মের পর বাবাদের নতুন জুতা লাগে না, আর মায়েদের লাগে না নতুন শাড়ি।
অমুকের ছেলের বউ সুন্দরী হলে যেমন নিজের ছেলের বউকে পাড়ার লোকে একটু বাকা চোখে দেখে তেমনি অমুকের মেয়ের জামাই ভালো চাকরি করলে নিজের মেয়ের জামাইকে লোকে একটু বাকা চোখেই দেখে। মেয়ের যেমন শ্বশুরবাড়ির লোককে না দেখলে বদনাম তেমনি ছেলেদেরকেও শ্বশুরবাড়ি খালি হাতে যাওয়া বদনাম।
মজার ব্যাপার কি জানেন? একটা মেয়ে নির্দ্বিধায় তার স্বামীর উপার্জিত টাকায় চলতে পারলেও একটা ছেলে তা পারে না। আমরা পারতে দেই না। বউয়ের টাকাকে নিজের টাকা ভাবা আমাদের সমাজে পাপ। একটা মেয়ের জীবন যায় একটা সংসার সুন্দর করে, পরিপাটি করে সাজাতে আর একটা ছেলের জীবন যায় সেই সুন্দর পরিবেশ সাজাতে যাবতীয় যা উপকরণ প্রয়োজন তার যোগান দিতে।
দিন শেষে দীর্ঘশ্বাস ফেলে ছেলেরা বলবে, "কেন যে ছেলে হলাম?" আর মেয়েরা বলবে, "কেন যে মেয়ে হলাম?" এই হলো আমাদের দেশের ছেলে মেয়েদের জীবন ব্যবস্থা যার পুরোটাই ঘুণে ধরা। প্রথম দৃষ্টিতে ছেলেদের স্বাধীন মানুষ বলে মনে হলেও গভীর দৃষ্টিতে ছেলে মেয়ে প্রত্যেকেই একেকটা পশু, তাদেরকে বন্দী করে রাখা হয়েছে সমাজ নামক জেলখানায়, যেই জেলখানায় খাবার হিসেবে দেয়া হয় একগাদা মানসিক চাপ, অমানবিক কিছু চিন্তা, অসহনীয় কিছু নিয়ম আর জীবন নিয়ে দীর্ঘশ্বাস। এই হলো আমাদের জীবন, এই হলাম আমরা!
Collected.