13/10/2024
ঘুরে আসুন সৌন্দর্যের লীলাভূমি কলমাকান্দার পাতলাবন গ্রামে
কলমাকান্দা উপজেলার রংছাতি ইউনিয়নের পাহাড়ঘেষা গ্রামটিই পাতলাবন। নামেই বৈচিত্র্য নামেই ভিন্নতা। ভারতের মেঘালয় পাহাড়ের কোলঘেষে প্রাকৃতিক নিসর্গে গড়ে উঠা পাতলাবন নামের এই গ্রামটি।
পাহাড়, নদী, বালুচর মিলে এক প্রকৃতির নৈসর্গিক রূপের মিশ্রন পাতলাবন। যাতায়াত দূরাবস্থা আর সম্প্রচার মাধ্যমে দৃষ্টিগোচর হয়নি বলে এখনো অনাবিস্কৃত এ পাতলাবনে এই জায়গাটি। প্রতিটি বিকেল এখানে সবুজ মাঠ আর বালুচরে ভ্রমণ পিপাসীরা ভিড় করে।
বিছানাকান্দির নাম শুনেছি, তার সৌন্দর্যে পাগল হয়ে ছুটে গিয়েছি কিন্তু জন্মভূমি কলমাকান্দার পাতলাবনের আবেদন এখনো সকল জায়গার চেয়ে বেশি।
মেঘালয় পাহাড় থেকে বয়ে আসা নদী মহাদেও এর কূলবর্তী যে অবারিত সবুজ মাঠ, বালুচর, সবুজ ধানক্ষেত মিলে পাতলাবন এই গ্রামটি। সীমান্তে বাংলাদেশ অংশের কিছু কিছু টিলা এতে ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে।
পাশেই আদিবাসী গারোদের বাস। সন্ধ্যা হলেই এখানে আদিবাসীদের সংস্কৃতি, রীতি নীতি, ডোলের মাদল আপনাকে ভিন্ন একটি জাতিসত্তার সাথে পরিচয় ঘটাবে। টিলার উপরে বিলুপ্ত প্রায় মাচাঙ ঘরে তাদের বাস। পাহাড় থেকে নদীতে বয়ে আসা বড় বড় পাথর আর মাচাঙ ঘর এই তাদের ঐতিহ্য।
গারোদের অকৃত্রিম সরলতা, পাহাড়ের নিরবতা, নদীর বহতা, বালুচরের জোছনা আর দুই পাশের গ্রামীণ জনপদ আপনাকে নিটোল চিত্রের সাথে আলাপ করিয়ে দিবে।
সময় আর ঋতুর সাথে পাতলাবনের রুপ বদলায়। বর্ষায় পাহাড়ি ঢল মহাদেও দুকূল ছাপিয়ে দেয় জলে। আর বৈশাখ মাসে সেখানে হাটু জলে নদী ছড়ায় পরিণত হয়। পাহাড়ি ঝর্নাধারা থেকে বয়ে আসা সেই স্বচ্ছ জলে অবগাহনে আনন্দ মিলে। যেখানের স্বচ্ছ জলে ছোট ছোট মাছেরা খেলা করে। ছুটে চলা সে মাছ ধরার মজাই আলাদা। পড়ন্ত বিকেলে ছোট ডিঙায় করে ঘুরে বেড়ানোর সুযোগও রয়েছে।
আধুনিক নাগরিক সুবিধা তথা বিজলির আলো পর্যন্ত পৌঁছায়নি এলাকাটিতে। অজপাড়া গাঁ বলতে যা বুঝায়। কিন্তু অভাব নেই প্রাকৃতিক মুক্ত আলো বাতাস আর নৈসর্গিকতর। তবে আধুনিক শিক্ষার আলোয় আলোকিত পাতলাবন।
আশেপাশে আরো কিছু দেখার মত জায়গা রয়েছে। যেগুলোর মধ্যে ভুবনের টিলা, জাইগিরপাড়া, চাঁদ সওদাগরের চন্দ্রডিঙা, পাহাড়ের পাশদিয়ে সীমান্ত সড়কে মোটর বাইক রাইড সব মিলিয়ে ভালো লাগার মন মাতানো পাতলাবন আপনার ভালো না লেগে পারেই না। তাই পাতলাবনের সৌন্দর্য উপভোগ করতে আর দেরী কেন, চলে আসুন যেকোন সময়।