06/09/2023
বন্ধ হয়ে গেল সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুল গোলচত্বর এলাকায় অবস্থিত হোটেল ফুড ভিলেজ প্লাস। উত্তরের ২২ জেলার যাত্রীদের কাছে এটি ফুড ভিলেজ নামেই পরিচিত। উত্তরের সঙ্গে রাজধানীর যোগাযোগের পথে যাওয়া আসায় দূরপাল্লার প্রায় সবকটি জেলার বাসই যাত্রাবিরতি দিত এই হোটেলটিতে।
ইন্টারচেঞ্জ প্রকল্পের কারণে সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে হোটেলটি স্থায়ীভাবে বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।
জানা যায়, মহাসড়কে উন্নয়ন কাজ চলছে। ঢাকা-রংপুর চার লেনের কাজের পাশাপাশি হাটিকুমরুল গোলচত্বর এলাকায় নির্মাণ হবে ইন্টারচেঞ্জ। আর এই ইন্টারচেঞ্জ প্রকল্পের কারণেই বন্ধ হয়ে গেল এই হোটেলটি। এর সঙ্গে বন্ধ হয়ে গেল হোটেলটিকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা চা-পান-সিগারেটের প্রায় ৫০টিরও বেশি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের দোকান। তারা এখন কোথায় যাবেন তা জানেন না। এ ছাড়াও এখন দূরপাল্লার এই বাসগুলো কোথায় যাত্রা বিরতি দেবে এমন প্রশ্নও রয়ে গেছে। হোটেলটি বন্ধ হওয়ায় সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়বেন ঢাকা-পাবনা রুটে চলাচলকারী যাত্রীরা।
হোটেল ফুড ভিলেজ প্লাস সূত্রে জানা যায়, এসআর গ্রুপের একটি প্রতিষ্ঠান হলো হোটেল ফুড ভিলেজ প্লাস। ২০১৩ সালের ২৬ মার্চ প্রতিষ্ঠানটি উদ্বোধন করেন এসআর গ্রুপের চেয়ারম্যান সাবেক সংসদ সদস্য জি.এম সিরাজ। সেদিন থেকে পথচলা শুরু করে ১০ বছর পর আজ বন্ধ হয়ে গেল হোটেলটি।
চেয়ার-টেবিল পেতে হোটেলের সামনে পান-সিগারেট বিক্রি করতেন রফিকুল ইসলাম ও আলাউদ্দিন নামে দুই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। এই ক্ষুদ্র ব্যবসাতেই চলতো তাদের পরিবারের জীবিকা। এখন তারাও যেন অসহায় হয়ে পড়েছেন।
তারা বলেন, উত্তরবঙ্গের সব জেলার গাড়িগুলো এখানে দাঁড়ানোর কারণে যাত্রীরা এই হোটেলে নামতেন। তাদের বেশিরভাগই হোটেলের সামনের দোকানগুলো থেকে পান, সিগারেট, চিপস, পানীয় কেনাকাটা করতেন। এই লাখো মানুষের কাছে ছোট্ট ছোট্ট পণ্য বেচেই চলতো আমাদের জীবিকা। এখন হোটেল বন্ধ হয়ে গেল। আর কোনো বাসও এখানে দাঁড়াবে না। তাই আমাদের এখানে আর ব্যবসা রাখার সুযোগ নেই। এখন জানি না কোথায় গিয়ে নতুন করে কি ব্যবসা করব। হোটেলটা বন্ধ হয়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়লাম আমরা।
এদিকে হোটেলটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় হোটেলের বিভিন্ন পদে কাজ করা প্রায় ৬০০ শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পড়বেন বলে জানিয়েছেন সেখানে কর্মরত শ্রমিকরা। হোটেল ফুড ভিলেজ প্লাসে কাজ করা এক শ্রমিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢাকা পোস্টকে বলেন, এখানে ওয়েটার, সহকারী, বারবিকিউ, চাইনিজ, পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও বাবুর্চিসহ বিভিন্ন পদে প্রায় ৬০০ জন শ্রমিক কাজ করেন। এরা সবাই কর্মহীন হয়ে পড়বেন।