Drama world

Drama world Contact information, map and directions, contact form, opening hours, services, ratings, photos, videos and announcements from Drama world, Digital creator, Mymensingh.

11/12/2022

"বখাটে বউ"
(পর্ব-১)
Written by- Sazia Afrin Sapna

পাশের বাসায় নাকি নতুন ভাড়াটিয়া এসেছে। সাথে আছে তাদের হ্যান্ডসাম হাদারাম ছেলে। শুনলাম তার আশপাশ দিয়ে ঘুরঘুর করলেও নাকি সে মেয়েদের দিকে তাকায় না। আর এই সব খবর আমার কাছে পৌছে দেয় আমার রিপোর্টার যুথী।
আল্লাহর কৃপায় আমার বেলকোণ বারান্দা আর তার বেলকোণ বারান্দা মুখোমুখি। দূর্ভাগ্যবসত সে এদিকের জানালার পর্দা সরায় না আর বারান্দার দরজাও খুলে না। সব মিলে আমি জানিই না যে পাশের বাসার ঐ রুমটাতে কেউ থাকে।
গত সপ্তাহে যুথী এসে বললো-
__"জানেন বন্ন আফা পাশের বাসায় মনকয় নতুন ভাড়াট্টি আইচে। একটা হ্যানচাম যুবক পোলাও আছে তাগো।"
__"তুই জানলি কি করে?"
__"দুই দিন ধইরা বৈকালে হেরে ছাদে বইসা থাকতে দেখি। তাই বুঝলাম।"
__"ওহ তাই?"
__"আপ্নে তারে বারান্দায় দ্যাখেন নাই?"
__"না তো।"
__"দ্যাখবেন কি কইরা? হেই ব্যাডা তো কারো দিকে তাকায় না।"
__"তুই জানলি কি করে?"
__"আমি ছাদে কাপড় উঠাইতে গিয়া তারে দেইখা কু কু শব্দ করচি মেলাক্ষণ কিন্তু ব্যাডায় একবারও তাকাইলো না।"
আমি অবাক হয়ে বললাম-
__"কু কু করেছিস কেনো?"
সে লাজুক মুখ করে মুখ নুইয়ে বললো-
__"কু কু হইলো কোকিল পাখির ডাক তাই। ভাবচিলাম পাখি ভাইবা যদি একবার তাকায়।"
ওর কথা শুনে আমি হা করে তাকিয়ে থেকে বললাম-
__"এত দিন জানতাম কুহু কুহু হলো কোকিলের ডাক। আজকেই প্রথম জানলাম কু কু হলো কোকিলের ডাক। তা কোকিল পাখি তুই তার তাকানো নিয়ে পড়েছিস কেনো?"
__"সব খবর আপ্নেরে দিমু তাই।"
__"সব খবর দেয়া হয়েছে এখন তুই যা। আমি দেখছি।"
__"ঐ ব্যাডা মনকয় আপ্নের দিকেও তাকাইবো না।"
__"কে বললো তোকে?"
আমি বড় বড় চোখে তার দিকে তাকাতেই সে বসা থেকে উঠে দাড়িয়ে বললো-
__"কেউ না আফা, আমি যাই কাম আছে।"
কথাটা বলেই সে দ্রুত প্রস্থান করলো। ও ছেলের তাকানো নিয়ে আমার কোনোই মাথা ব্যাথা নেই। তাকে জ্বালিয়ে ভষ্ম করবো ডিসিশন ফাইনাল। আমি আইডিয়া খুঁজতে শুরু করলাম।
অনেক ভেবে ভেবে বের করলাম গান বাজিয়ে জ্বালাবো। আনন্দদায়ক ঘটনা হলো আমি ফুল সাউন্ডে গান বাজাই। কিন্তু তাতেও তার কোনোই প্রতিক্রিয়া নেই। তাই ভাবলাম ডোজ বাড়াতে হবে। আর সে কারণেই নিজেই গান গাওয়া শুরু করলাম। আমি ওদের বেলকোণের দিকে মুখ করে জোরে জোরে গাই-
"মেরি সামনে ওয়ালি খিড়কি ম্য এক চাঁদকা টুকরা রেহতাহ্য। আফসোস হ্য হো হামছে কুচ উখরা উখরা রেহতাহ্য...."

এটা ছেলেদের গান হয়েছে তো কি হয়েছে? গান তো গানই। গান যদি মনের কথা বলে তবে সেটা গাওয়াই যায়।
সকালে উঠে দরজা জানালা খুলে গান শুরু করি। বেকুবটা কানে শুনে না নাকি কে জানে! আমি তো এক রকম চিল্লিয়ে গান গাই। মূলত এটা এক প্রকার ইফটিজিং। আর এটা করতে আমার খুব ভাল্লাগে। কয়েক দিন ধরে খালি গলায় গান গেয়েও যখন ফলাফল পেলাম না তখন মনে হলো খালি গলার গান হয়তো তার ভালো লাগে না তাই সে জানালার পর্দাও হয়তো সরায় না। বাধ্য হয়েই আব্বুকে বললাম-
__"আব্বু আমার একটা হারমোনিয়াম লাগবে।"
আব্বু অবাক চোখে তাকিয়ে বললেন-
__" হারমোনিয়াম কি করবি?"
আমি করুণ অসহায় মুখ করে বললাম-
__"গান গাইবো।"
__"কিহ? কোনো কালেও তো তোকে গান গাইতে দেখিনি হঠাৎ গান গাইবি কেনো?"
__"পাশের বাসার ছেলেটা খালি গলার গান পছন্দ করে না, সে জন্য হয়তো বাইরেও আসে না। তাই হারমোনিয়াম বাজিয়ে গান গাইবো।"
আব্বু মুচকি হেসে বললেন-
__"বলিস কি? ও ছেলে কানে শোনে তো?"
__"কি জানি!"
__"তাকে দেখলি কোথায়?"
__"এখনো দেখিনি, যুথী বললো পাশের বাসায় নাকি হ্যান্ডসাম একটা হিরো এসেছে আর সে নাকি কোনো মেয়ের দিকে তাকায় না।"
আমার কথা শুনে আব্বু যে বেশ খানিকটা অবাক হলেন তা তার চোখ মুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছে। কাজের বুঁয়া খবর দিয়েছে আর সেটা না দেখেই গান শুরু করেছি আবার হারমোনিয়াম কিনেও চাইছি। অবাক না হলে হয়তো আমিই অবাক হতাম। আব্বু বিস্ময়ের দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললেন-
__"না দেখেই গান শুরু করে দিলি আবার হারমোনিয়ামও চাইছিস?"
আমি রেগে গিয়ে বললাম-
__"এতো কথা রাখো তো! কিপ্টার মতো কথা বলো কেনো? একটা জিনিস চাইছি আর সেটা দেবার নামে খোঁজ নাই পুলিশের মতো জেরা করে চলেছো! লাগবে না হারমোনিয়াম।"
__"রেগে যাচ্ছিস কেনো? আমি চাই তোর মিশন সাকসেস হোক। ঠিক আছে আজকেই তোর হারমোনিয়াম পেয়ে যাবি।"
আমি ফিক করে হেসে বললাম-
__"গুড বয় একটা।"
__"এই বয়সে আমাকে বয় বলিস না, তোর মা শুনে ফেললে আমার সাথে নানী গিরি শুরু করবে। তখন আমাকে উদ্ধার করার জন্য কেউ থাকবে না।"
আব্বুর কথা শুনে হাহা করে হেসে ফেললাম। সাথে আব্বুও হাসলেন। আমার বাবা হলেন পৃথিবীর সেরা বাবা। আমার বেস্ট ফ্রেন্ড। আমার সব বখাটেপনাতে আব্বুর প্রশ্রয় আছে। এমন বাবা পাওয়া সৌভাগ্যের ব্যাপার আর আমি নিঃসন্দেহে সৌভাগ্যবতী।

বিকেলে আব্বু হারমোনিয়াম কিনে আনলেন। আমি তো ভীষণ খুশি। এবার দেখি ফলাফল কি আসে!
পরের দিন সকালেই হারমোনিয়াম নিয়ে গান শুরু করলাম। যদিও হারমোনিয়ামের সুর আর আমার গানের সুর সম্পূর্ণ আলাদা তবুও আমি খুব খুশিতে আছি। গান ধরলাম-
"তোমাকে চাই আমি আরো কাছে তোমাকে বলার আরো কথা আছে
বলতে পারি না মুখে তওবা তওবা
দিলে জখম হলো উহু আহা..."

এই টুকু গাইতেই কি যেন শুনলাম। সামনে মুখ তুলে তাকাতেই দেখি কাঙ্ক্ষিত সেই হ্যান্ডসাম হাদারাম দাড়িয়ে আছে। ওয়াও কি ক্যারামতি হারমোনিয়ামের! আমি তো খুশিতে বাকবাকুম। ছেলে পুরাই আগুন আগুন দেখতে। আমি হা করে কিছুক্ষণ চেয়ে থাকলাম। যদিও তার সৌন্দর্যে আমার কিচ্ছু যায় আসে না। সামনের রুমে যে ছেলে থাকবে তাকে জ্বালানোটা হলো আমার প্রতিবেশীগত অধিকার। সে ছেলে কুৎসিত হোক বা হ্যান্ডসাম। সে সামনে দাড়িয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে, আমিও তার দিকে হতবাক হয়ে তাকিয়ে এসব হাবিজাবি ভাবছি। কি ভাবে যে শুরু করবো সেটা ভেবেই কুল কিনারা পেলাম না। আমি যখন কিনারা খুঁজতে ব্যস্ত তখন সে চিৎকার বললো-
__"রোজ সকালে উঠে চিৎকার করেন, পাশে প্রতিবেশীদের যে প্রবলেম হয় সেই সেন্স টুকু নেই আপনার?"
আমি হা করে কিছুক্ষণ তার দিকে চেয়ে থেকে তারপর হা বন্ধ করে বললাম-
__"এসব সেন্স টেন্স আমি সাথে রাখি না। এসব বর্ণর জন্য নয়। এসব কথা বাদ দিয়ে বলুন আপনার নাম কি?"
সে অবাক হয়ে বললো-
__"হোয়াট?"
আমি মুচকি হেসে বললাম-
__"বানান করে বলবো হিরোটা?"
সে রেগে গিয়ে বললো-
__"ফালতু কথা রেখে আপনার এই কা কা বন্ধ করুন। আপনার কা কা আমার কানে এসে আমার ঘুমের প্রবলেম করে।"
আমি মুখ ভেঙচি কেটে বললাম-
__" রাখুন আপনার ঘুমের প্রবলেম। নাম না বললে তো কা কা শুনতেই হবে হ্যান্ডসাম। নাম বলো কুহু কুহু শোনাবো।"
সে আমার কথা শুনে আরো রেগে গিয়ে বললো-
__"বখাটে মেয়ে একটা।"
কথাটা বলে আমাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই সে রুমে ঢুকে ঠাস করে দরজা বন্ধ করে দিলো। মুখের সামনে দরজা বন্ধ করে এতো বড় অপমান বর্ণকে? বর্ণ এর শোধ নিয়েই ছাড়বে। আমি নিজেও আমাকে বখাটেই মনে করি। তাই তার কথায় আই ডোন্ট কেয়ার। আমার সাথে রাগ দেখানো মানেই হলো নিজে ইনভাইট করে বিপদ ডেকে এনে জীবনের সাড়ে বারোটা বাজানো। আমি জোরে জোরে বললাম-
__"বখাটের দেখছো কি চাঁন্দু? তোমার জীবন তেজপাতা বানিয়ে তবেই ছাড়বে বর্ণ।"

আমি গান বন্ধ করলাম না। প্রতিদিন নিয়ম করে আমি গান গাই। নিজেকে আজকাল গায়িকা মনে হয়। কিন্তু ঐ হাদারামটা কিছুতেই সামনে আসে না। সামনে না এলে তো জ্বালানোর সুবিধা হয় না। একদিন বিকেলে যুথী দৌড়ে এসে বললো-
__"বন্ন আফা ঐ বান্দর উপ্রে বইসা আছে।"
আমি অবাক হয়ে বললাম-
__"বানর কোথা থেকে এলো? আমাদের এলাকায় তো কোনো জঙ্গল নেই। নাকি সুন্দরবন থেকে লাফ দিয়ে উত্তরবঙ্গে এলো?"
__"আরে আফা পাশের বাসার ঐ বান্দরডার কথা কইতাছি।"
__"পাশের বাসার ওরা বানর পোষে? ওয়াও দারুণ তো। তাহলে তো একদিন বানর দেখার উছিলায় ওদের বাসায় যাওয়াই যায়।"
__"বান্দর পোষবে ক্যা? হেই ব্যাডা তো নিজেই একটা বান্দর।"
__"মানে? কোন্ পোলা বান্দর ওহ স্যরি বানর?"
__"যে পোলারে গান শুনান হেই পোলার কথা কইতাছি।"
__"ওহ তাই বল। তো তাকে বান্দর বলছিস কেনো?"
__"নাম না জানলে কি কমু কন? আমি তারে হ্যানচাম কইলে তো আপনে মাইন খাইবেন।"
__"হ্যানচাম না, ওটা হ্যান্ডসাম হবে। আর মাইন না, ওটা মাইন্ড হবে।"
__"ঐ হইলো আফা। ইহা বানান মিচতেক।"
__"মিচতেক না মিস্টেক হবে। ইংরেজী পারিস না তাহলে বলতে যাস কেনো? মাথাটা খেয়ে নিলি! যা তো এখন।"
__"আপ্নে উপ্রে যাইবেন না?"
__"যাবো। এখন তুই যা।"

আমি যুথির সাথে কথা শেষ করে ছাদে গেলাম। ছাদে উঠতেই দেখি হিরোটা চেয়ার পেতে বসে থেকে বই পড়ছে। ওহ্! আমার কি যে খুশি লাগছে! তাকে জ্বালাতে আমার ঈদ ঈদ লাগে।
আমি একটা কাশি দিয়ে মুচকি হেসে বললাম-
__"হিরো তোমার নামটা বলো।"
সে চমকে উঠে পেছনে ফিরে তাকালো।
আমি হাসি হাসি মুখ করে বললাম-
__"আমাকে চিনতে পারছো না হিরো? আমি সেই গায়িকা, বর্ণিতা।"
সে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে বললো-
__"চিনেছি।"
__"ভেরী গুড। এখন ঝটপট তোমার নামটা বলে ফেলো।"
__"নাম শুনে কি করবেন?"
__"নাম কাগজে লিখে পানিতে চুবিয়ে সেই পানি খাবো ডার্লিং।"
__"আচ্ছা আপনি আমাকে এতো বিরক্ত কেনো করেন? আমি তো আপনার কোনো ক্ষতি করিনি।"
__"বখাটে ছেলেরা পথে ঘাটে নিরিহ মেয়েদের কেনো বিরক্ত করে? মেয়ে গুলো কি তাদের বাড়িতে গিয়ে ক্ষতি করে এসে ছিল?"
__"আপনি আসলেই একটা যা তা।"
__"কেমন যা তা?"
__"বখাটে যা তা।"
__"ডার্লিং এসব ছেড়ে বলো তোমার নাম কি?"
সে রেগে চোখ লাল করে বললো-
__"একটা মেয়ে হয়ে এসব বলতে আপনার লজ্জা করে না?"
আমি ইনোসেন্ট মুখ করে বললাম-
__"কি বললাম? আর ভাষার গায়ে কি মেল ফিমেল লেখা আছে?"
__"কি সব ভাষা ছিঃ।"
__"এসব ছেড়ে নাম বলো ডার্লিং।"
__"বলবো না।"
কথাটা বলেই সে হনহন করে নিচে চলে গেলো। আর হাসতে হাসতে আমার পেট ব্যাথা হয়ে গেলো। আমি চিল্লিয়ে বললাম-
__"ডার্লিং এমন করে আমার পেট ব্যাথা করে দিলে? তোমার কিন্তু ভালো হবে না, এটা বর্ণর ভবিষ্যৎ বাণী।"

11/12/2022

#ফুফু_শ্বাশু‌ড়ি
লেখা : শারমিন আক্তার সাথী

পর্ব:১
১!!
_আন্টি আপনার কাঁধের ওখানের থার্ড পেপার দেখা যাচ্ছে।
আন্টি বোধ হয় নিশুর কথার আগা মাথ‌া তেমন কিছু বুঝ‌তে পা‌রে‌নি। তাই কিছুটা উৎসুক চো‌খে নিশুর দি‌কে তা‌কি‌য়ে বলল,
_কী বল‌লে?
_আ‌ন্টি আপনার কাঁ‌ধে মা‌ল্টি কালা‌রের থার্ডপেপারের ফিতা দেখা যা‌চ্ছে।
আ‌ন্টি আড় চো‌খে কাঁ‌ধের ‌দি‌কে তা‌কি‌য়ে কাঁধের কাছ থে‌কে জামাটা ঠিক ক‌রে নিশুর দি‌কে চোখ বড় বড় ক‌রে তা‌কি‌য়ে বলল,
_থার্ড পেপার মা‌নে কী?
_ঐ যেটা ঢাক‌লে ওটা‌কেও আমরা থার্ড পেপার ব‌লি। মর্ডান ইউনি‌কোড ল্যাংগু‌য়েজ।
_ওহ!
_আন্টি একটা কথা জানার ছিল!
_হুম ব‌লো। তার আগে আন্টি আন্টি বলা বন্ধ ক‌রো। আই এ্যাম নট ইউর আন্টি। আমার বয়সও আন্টি‌দের মত না। আই এ্যাম স্টিল ইয়াং।
‌নিশু তীক্ষ্ণ চো‌খে তার দি‌কে তা‌কি‌য়ে মুখ ভেং‌চি কে‌টে ম‌নে ম‌নে বলল,
_কপাল ভা‌লো যে আপনা‌কে দা‌দি ডা‌কি নি। বয়স তো আমার দা‌দির চে‌য়ে বে‌শি ছ‌াড়া কম হ‌বে না। আবার কথায় কথায় ইং‌লিশ মারা‌চ্ছে! হুহ, বু‌ড়ি!
অবশ্য আন্টি নিশুর ভেং‌চি দেখল না। কারণ নিশু বোরকা পরা, হিজাব দি‌য়ে নাম মুখ ঢাকা খা‌লি চোখ দেখা য‌ায়। নিশু আন্টির দিকে খা‌নিকটা ঝু‌কে বলল,
_‌ঠিক আছে আন্টি ডাকব না। ত‌বে আগে বলুন মা‌ল্টিকালা‌রের থার্ড পেপার কোথায় পে‌লেন? আমরা তো পাইনা। কোন ব্রান্ড? দেখ‌তে কিন্তু হে‌ব্বি। তারপর চোখ মে‌রে, ঠোঁট গোল ক‌রে শিশ বাজা‌লো নিশু।
আ‌ন্টি না‌ড়েচ‌ড়ে দাড়া‌লেন। জীব‌নে প্রথম তার ম‌নে হ‌চ্ছে তা‌কে কেউ ইফ‌টি‌জিং কর‌ছে তাও কোন ছে‌লে নয় বরং একটা মে‌য়ে। আন্টি গম্ভীর গলায় বলল,
_তু‌মি তো ভারী বেয়াদপ মে‌য়ে। এমন ক‌রে ছে‌লে‌দের মত ‌চোখ মেরে শিশ দি‌য়ে কেউ কথা ব‌লে?
_যাহ্ বাবা আপ‌নি এখা‌নে বেয়াদ‌পের কী দেখ‌লেন? এমন ভা‌বে কথা বল‌ছেন যে‌নো ব্রান্ড না আপনার সাইজ জি‌জ্ঞেস কর‌ছি। অবশ্য আপনার সাইজ ‌তো পু‌রো বাচ্চা হা‌তির সাইজ। মে‌বি ৪২´´ না‌কি ৪৪´´ তাই না আন্টি?
এবার আন্টি যে ভয়ানক ক্ষে‌পে গে‌লো তা নিশু ভা‌লো ক‌রে বুঝ‌তে পার‌ছে। তাই কথা না বা‌ড়ি‌য়ে চুপচাপ একটু দূ‌রে গি‌য়ে বলল,
_ব্রা‌ন্ডের নামটা বল‌লে ভা‌লো হ‌তো আন্টি!
তারপর আন্টির অগ্নি চোখ উপেক্ষা ক‌রে হাস‌তে হাস‌তে ব্যাংক থে‌কে বের হ‌য়ে গে‌লো।

মা‌সিক (Deposit Premium Scheme ) মানে সহজ ভাষায় DPS লেখা‌তে ব্যাং‌কে এসে‌ছিল। সেখা‌নে কতক্ষন লাই‌নে দা‌ড়ি‌তে থাকতে থাক‌তে চরম বিরক্তিকর পর্যা‌য়ে ‌পৌঁ‌ছে গি‌য়ে‌ছিল। ভাবল বো‌রিং‌নেস কাটা‌তে কিছু করবে। তাই চার‌দিক খেয়াল কর‌তে আন্টির দি‌কে তাকা‌তেই ম‌নেহল আন্টি একটু বে‌শিই ন্যাকা টাইপ আন্টি। কেমন কেমন ভাব ক‌রে চার‌দি‌কে তাকা‌চ্ছে। পর‌নে দা‌মি স্লি‌কের কা‌মিজ, আর প্লাজু, ওড়নাটাও স্টাইল ক‌রে, পিন দি‌য়ে সেট করা। কতক্ষন পর উফ গরম ব‌লে হাত দি‌য়ে মু‌খে ঢ‌ঙ্গি ভ‌ঙ্গি‌তে বাতাস কর‌ছে। অথচ ব্যাং‌কে মাথার উপর বড় বড় দু‌টো ফ্যান ফুল স্পি‌ডে ঘুরছে। নিশু ভাবল ঢ‌ঙি আন্টি‌কে একট‌ু টিজিং করা যাক। যেই ভাবা সেই কাজ।

২!!
ব্যাং‌কের বাই‌রে এসে বলল,
_এখন পার্লা‌রে গি‌য়ে ঝাক্কাস একটা ফে‌সিয়াল দি‌তে হ‌বে। নয়ত বি‌কে‌লে পে‌ত্মির মত দেখা‌বে।

‌বিকা‌লে নিশুকে ‌দেখ‌তে আস‌বে। অন্য কেউ দেখ‌তে আস‌লে নিশুর রনচন্ডীর রূপ নি‌তে দুবার ভাবত না। কিন্তু আজ ওর প্রে‌মিক আহসা‌নের ওর‌ফে আহুর বাবা মা আর প‌রিবা‌রের সবাই দেখ‌তে আস‌বে। সা‌থে এন‌গেজ‌মেন্টও হ‌বে। দীর্ঘ চার বছর আহুর সা‌থে প্রেম করার পর আজ ওদের সম্পর্ক নতুন মোড় নি‌বে। তাই সুন্দর ক‌রে সাজা দরকার। পার্লা‌রে যাবার জন্যই নিশু মূলত বোরকা পরছে। কারণ ফে‌সিয়াল করে ‌বা‌ড়ি ফেরার সময় স্কি‌নে রোদ লাগ‌লে প্রব‌লেম হ‌তে পা‌রে।

পার্লা‌রে গি‌য়ে মু‌খে ফেইস মাক্স লা‌গি‌য়ে এক্সিকিউটিভ চেয়া‌রে আরামদায়ক ভ‌ঙ্গি‌তে শু‌য়ে নিশু ভাব‌ছে, আহুর সা‌থে বি‌য়ে কর‌তে ওকে কম ঝা‌মেল‌া পোহা‌তে হ‌লো ন‌া। আহু‌কে নিশুর প‌রিবার মো‌টেও মান‌তে চাইল না। নিশুর বাবা যখন বলল এ ছে‌লে আমার পছন্দ না। তখন নিশু বাবার সাম‌নে গি‌য়ে কোম‌রে হাত দি‌য়ে জি‌জ্ঞেস করল,
_আহুর ম‌ধ্যে সমস্যা কী? দেখ‌তে সুন্দর, স্মার্ট, উচ্চ শি‌ক্ষিত, ভা‌লো জব ক‌রে, বাবার বিশ‌াল সম্প‌ত্তি আছে। এক কথায় সর্বগুণ সম্পন্ন। ত‌বে আহু‌কে পছন্দ নয় কেন?
_‌নিশুর বাবা বলল, ছে‌লের রু‌চি খারাপ। আর যে ছে‌লের রু‌চি খারাপ তার সা‌থে মে‌য়ে বি‌য়ে দি‌বো না।
_‌কেন কিভ‌া‌বে বুঝ‌লে আহুর রু‌চি খারাপ?
_‌তোর মত বাজখাঁই, গু‌ন্ডী মে‌য়ে‌কে যে ছে‌লে ভা‌লোবাস‌তে পা‌রে তার রু‌চি নিশ্চয়ই খারাপ। যে মে‌য়ে উঠ‌তে বস‌তে ছে‌লে‌দের টি‌জিং ক‌রে, ধ‌রে ধ‌রে ব্যাট দি‌য়ে পেটায়। সে মে‌য়ে‌কে কোন ছে‌লে পছন্দ কর‌ছে মা‌নে সে ছে‌লের রু‌চি ১০০% খারাপ। তাছাড়া ছে‌লেটা অতিমাত্রায় ভদ্র। তোর জন্য এমন ছে‌লে খুঁজ‌বো যে, তোর মত চালাক মে‌য়ে‌কে না‌কে দ‌ড়ি দি‌য়ে ঘুরা‌তে পা‌রে। উঠ‌তে বস‌তে যে তো‌কে শিক্ষা দি‌য়ে দ‌মি‌য়ে রাখ‌তে পার‌বে এমন ছে‌লের কা‌ছে তো‌কে আমি বি‌য়ে দি‌বো। কিন্তু এ ছে‌লে তো পুরাই ভদ্রের বাপ। তুই ওকে উঠ‌তে বস‌তে মার‌লেও বিড়া‌লের মত ব‌সে থাক‌বে কোন টু টা শব্দ কর‌বে না। আমি বাপ হ‌য়ে জে‌নে শু‌নে আমার বাজখাঁই বজ্জাত মে‌য়ের সা‌থে ওমন ভা‌লো ছে‌লের বি‌য়ে দি‌য়ে ছে‌লেটা‌র জীবন কী ক‌রে নষ্ট ক‌রি বল!

ব‌াবার কথা শু‌নে নিশু এমন ভা‌বে হা করল যে, ম‌নে হয় ওর আল‌জিব্বাহ্ পর্যন্ত দেখা যায়। নিশু রা‌গে হুংকার দি‌য়ে বলল,
_তু‌মি আমার বাবা হ‌য়ে আমা‌কে এমন বল‌তে পারলে?
_বাবা ব‌লেই বল‌তে পারল‌াম। নয়ত বা‌হি‌রের লোক বল‌লে তুই এতক্ষ‌নে তা‌কে নাকা‌নি চুবা‌নি খাওয়া‌তি।
_তু‌মি আমার বাবা না‌মের শত্রু।
_‌সে যাই বলিস আহুর সা‌থে আমি তোর বি‌য়ে দিবো না।
_‌বি‌য়ে দিবা না।
_নাহ্।
_ত‌বে শোন বি‌য়ে না দি‌লে আমি বাসা থে‌কে পা‌লি‌য়ে গি‌য়ে আহু‌কে বি‌য়ে করব। তারপর তিনমাস পর এসে বলব বাবা তু‌মি নানা হ‌বে। তখন মজা বুঝ‌বে!

‌মে‌য়ের কথা শু‌নে নিশুর বাবা নিজামউদ্দী‌নের প্রেশার হাই হ‌য়ে গে‌লো। উনি জানে ‌নিশু যা ব‌লে তা ক‌রে দেখায় তাই কোন উপায় না পে‌য়ে বি‌য়েতে মত দি‌লেন।

‌নিশু পার্লার থে‌কে বের হ‌য়ে টুকটাক কিছু শ‌পিং ক‌রে বাসায় চ‌লে গে‌লো।

৩!!
সন্ধ্যার পর নিশু শা‌ড়ি প‌রে ল‌ক্ষ্মীমন্ত মে‌য়ে সে‌জে পাত্র প‌ক্ষের সাম‌নে গে‌লো। আহু হা ক‌রে তা‌কি‌য়ে থাকল কতক্ষন। নিশুর দুলাভাই আহু‌কে নিশুর পা‌শে বসা‌লো ছ‌বি তোলার জন্য। সবাই দুজনার জু‌টির বেশ প্রশংসা করল। আহু মৃদু স্ব‌রে বলল,
_‌নিশু তোমা‌কে খুব সুন্দর লাগছে।
_তাহ‌লে গা‌লে একটা চু‌মো খাও।
_কী বল‌ছো এসব! বড়রা শুন‌লে কী ভাববে!
_‌তোমার মত হাদারাম বয়‌ফ্রেন্ড যে‌নো কা‌রো কপা‌লে না জু‌টে। চার বছ‌রের প্রেমে নি‌জে থে‌কে জ‌ড়ি‌য়েও ধর‌লে না। চারটা বছর পু‌রো ওয়েস্ট।
_‌বি‌য়ে হ‌লে তারপর।
‌নিশু কিছু বল‌তে নি‌বে তখন একজন বলল,
_কী ফুসুর ফুসুর হ‌চ্ছে দুজনার ম‌ধ্যে হুমম! এমন কা‌রো কথায় নিশু চোখ তু‌লে তা‌কি‌য়ে মুখ হা হ‌য়ে গে‌লো। ম‌নে হ‌চ্ছে চোখ দু‌টো খু‌লে বাই‌রে পড়‌বে। কারণ যে কথা বল‌ছে সে আর কেউ নয় ব্যাংকের সে আন্টি। নিশু ম‌নে ম‌নে বল‌ছে,
_এই মা‌ল্টিকালার মালটা এখা‌নে কী কর‌ছে? আমাকে চি‌নে ফেল‌লে তো ক্যাচাল হ‌য়ে যা‌বে।
তখন পাস থে‌কে নিশুর শ্বাশু‌ড়ি বলল,
_‌বৌমা ওনি তোমার ফুফু শ্বাশু‌ড়ি।
‌নিশু ফুফু শ্বাশু‌ড়ি নাম শু‌নে ভির‌মি খাবার জোগার হ‌লো।

চল‌বে______

গ‌ল্পের কা‌হিনী, চ‌রিত্র সম্পূর্ণ কাল্প‌নিক। ভুলত্রু‌টি ক্ষমা সুন্দর দৃ‌ষ্টি‌তে দেখ‌বেন।

11/12/2022

#বদনা_নসিব😑
#রিমঝিম_রিমা
পর্ব___১
কিছুদিন আগে বলতে ৭\৮ মাস আগে কোচিং ক্লাস শেষ করে বাসায় যাচ্ছি তো এমন সময় দেখি একটা বাড়ির সামনে গাছেতে খুব সুন্দর ফুল হইছে।অবাক করা বিষয় হলো এক গাছে বিভিন্ন কালারের ফুল। যেমন বেগুনি, হালকা মিস্টি, সাদা, লাল, আর একটা অনেক গুলো কালারের মিশ্রন। তো এইভাবে নানা রকম কালারে ফুলে গাছটা ভরা। আমি পরে আপনাদের পিক তুলে দেখাবোনে😊।
।।।।।।
তো ফুল দেখে লোভ সামলাতে পারলামনা। গেইটের কাছে দাড়োয়ান আংকেল ছিলোনা বিধায় ফুরুত করে ভিত্রে ঢুকলাম। আহহহ কি ভালো লাগছে দেখতে। 😁
সমস্যা হলো একটাই গাছটা আমার থেকেও বড়ও😭। যদি আমি আরও একটু লম্বা হতাম তাহলে ঠিক নিতে পারতাম। একটা ঠিকঠাক লম্বা ছেলে ফুল গুলো খুব সহজেই পেরে আনতে পারবে😶।
তো আমার স্কুল ব্যাগ টাইপ হওয়ায় ব্যাগ আর নিচে রাখতে হলোনা।
।।।।।।।।।।
এখন আমি নানা ভাবে টেকনিক খাটাচ্ছি যে কিভাবে ফুলগুলো পারবো। ......
ব্যাংগের মতো লাফাইতাছি ইচ্ছা মতো🐸। আর ভাবতাছি ক্যান যে আরও বেশি কইরা ছোডোবেলায় হরলিক্স, কমপ্লান খাইলাম না তাই আজ এই দশা😑। তবে হুম আমি আমার পোলাপাইনরে হরলিক্স আর কমপ্লান দুইডাই দরকার পড়লে মিক্সড কইরা খাওয়ামু। 😁 বাহ নিজের এই ভাবনা নিয়া ততক্ষনে গৌরব হইতেছিলো খুব। ..........
আমার পিছনে যে কেউ আইসা দাড়াইছে আমি তা খেয়ালি করিনাই...তখনো আমি ফুল পারার জন্য লাফাইতে ব্যাস্ত🤗।
কেউ একজনঃ কি হচ্ছে এখানে??
আমিঃ (না বুইঝা) চোক্ষে দেখছ না কি করি?? কানা নাকি??
কেউ একজনঃ হু দেখছি তো। তা লাফিয়েই কি যাবে??
আমিঃ ধুরো বিরক্ত করিস নাতো বাল ফুল পারতে দে( আসলে আমি আমার কোচিং এর এক ফ্রেনড রে বুঝছিলাম আসলে ওয়োতো ওই রাস্তা দিয়া যায় ভয়েস টাও প্রায় ওমনি, আর ওই মগাডায়ও আমারে তুমি কইরাই বলে তাই অতো খেয়াল করিনাই😭)।
কেউ একজনঃআচ্ছা তা ফুল পারছোই যখন এ বাড়ির মালিকের কাছ থেকে পারমিশন নিয়েছো??
আমিঃ (ফুল এর দিকে হা করে তাকিয়ে থেকে) পারমিশন ক্যান নিমু তুই জানছ এইটা আমার শশুর বাড়ি😎....( আসলে আমি গল্পে এমন পড়ছিলাম নায়কে জিগায় আর নাইকা না জাইনাই এমন উওর দেয় পরে দেখা যায় ওইডা নায়ক টাই ছিল তো আমি ভাবলাম এইডা তো নাটক না আসল জিবন, যদি টের পাইতাম যে এইডা জীবন না গীবন.....😑)।
কেউ একজনঃ আচ্ছা এই বাড়ির বউ তারমানে?? তা তোমার সামী দেখতে কেমন??
আমিঃ হেব্বি নাইস। অহন অফ যা। জালাইস নাতো।
কেউ একজনঃ অকে🤐
আমার হঠাৎ খেয়াল আইলো আমি ওমনে না লাফাইয়া ওরেইতো কইতে পারি তাইলেইতো আমি আমার সোনা মানিক ফুলগুলা পাইয়া যামু😘। যেই ভাবা সেই কাজ। আরও একবার আমার টেলেন্ট কে নিজে নিজে বৃওি পাওয়াইয়া ওর দিগে না তাকাইয়া ফুলের দিকে হাত ইশারা কইরা দেখাইয়া বললাম......
আমিঃ কথা কম কইয়া আমারে ওই ফুল গুলা তারাতারি পাইরা দে তো। আমাকে তারাতারি যেতে হবে। আমার সামি আমার পথ চেয়ে বসে আছে🙈🙈।(বেশি কইয়া ফালাইছিলাম🥵)
হাসির শব্দ যাইয়া আল্লাহর ওয়াস্তে পিছন ফিরা চাইলাম। ওমা...🤤 এ কেডা এ দেহি আরেকটা পুলা। কেমন ডা লাগে😣। এই পোলায় যদি কইয়া দেয় বাড়ির মালিকরে তাইলে আমারে তো হাত পা বাইন্ধা পুলিশে দিবে। কি করমু অহন আমি😓
আমিঃ ইয়েএএ মানে দেখেন আমি আসলে দেখছিলাম 😁
ছেলেটিঃ কি দেখছিলেন🤔
(পোলাডায় দেখতে কিঊট আছিলো আর হেব্বি লম্বা পা হইতে মাথা পরযন্ত একবার চাইলাম দেখি একটা লং ট্রাউজার পড়া, টি শার্ট, হালকা চাপ দাড়ি, গায়ের রং ফরসা, চুলগুলা কপালে বিছানো। বাহ ভালাই দেখতে🤔। তয় আমি এইসব দেহার কারন আছে যদি ভালো প্যান্ট শার্ট পড়া থাকতো তাইলে বুঝতাম যে এডা এই বাসার মানুষ তাইলে আমার অন্য নাটক কইরা এইখান থিকা কাইটা পড়তে হইতো। কিন্তু এখন অন্য কিছু করতে হইবো।)
আমিঃ শুনেন যা দেখছেন ভুলে যান। বিনিময়ে আমি আপনাকে টাকা দিবো😎।
ছেলেটিঃ ওহ তাই বুঝি?? তা কত টাকা দিবে??
আমিঃ ৭০ টাকা😊।
ছেলেটিঃ হ্যা..😯??
আমি ভাবছিলাম যে ছেলেটাকে হয়তো টাকার পরিমান বেশি বইলা ফেলছি তাই অবাক হইছে। .
কতক্ষন পর দেখি মিটু মিটু হাসে। আর আমারতো গা ডা জলতাছে।
তারপর দিলাম ৭০ না না ভালা পাইয়া আরও ৫ টাকা বেশি দিলাম ৭৫ টাকা দিলাম। দয়ালু গিরি দেখাইলাম😁।
।।।।।।।।।।।।
এরিমধ্য দারোয়ান আইসা পরলো।
আমিতোঃ😰।
দারোয়ানঃ আরে ছোটা বাবা তুমি এখনো বাইরে যে বাসায় যাও।
(মানে উনি ওই ছেলেটার সাথে এমন ভাবে কথা বলছিলো যে আমার যা বুঝার আমি বুঝে নিছি। আর এই বড়লোক পোলার গাছের ফুল চুরি করতে আইসা ওর মুখ বন্ধের জন্য ওরেই ঘুষ দেই তাও আবার ৭৫ টাকা!!!😥😓😰😭😭😭)
দারোয়ান আংকেল কে পাঠিয়ে দিছে তারপর আমার দিকে তাকাইয়া বলতেছে.....
ছেলেটিঃ তা ম্যাডামজি.... কি যেনো বলছিলে...??
আমিঃ🥺🥺🥺 আ.. স..লে আমি ফুল চুরি করতে আসিনাইতো😔
ছেলেটিঃতাহলে??😏
আমিঃ (কি বলবো কি বলবো... হঠাৎ) বাহ বাহ বাহ এই গাছের পাতা খুব সুন্দর। আহারে ময়লা পরছে( মুছতে মুছতে... তারপর কইতাছি) আসলে আমি উইইইইই দূর থেকে দেখলাম যে ময়লা পাতায় তাই ভাবলাম ইকটু মুছে দিয়ে যাই😁
ছেলেটিঃ🤣🤣😂😂😆😄
আমি আর কিতা কইতাম আল্লাহরে ডাকতাছি যে কেমনে বাইর হমু কোন কুক্ষনে যে এই বাড়িতে ঢুকছিলাম😓।
আবার বললো ছেলেটি.....
তা এটা আপনার শশুর বাড়ি বুঝি??
আমি শুইন্না বিশ্বাস করেন আপুরা শকড হইয়া ছেলেটার দিকে তাকাইলাম আমি যা বুঝার বুঝছি। 😭😭। আমার দিকে আগাইতে আগাইতে বলতেছে আর আমি মুভির নাইকাগো মতো পিছাইতাছি।
ছেলেটা আবারো বলতেছেঃ তা এইবাড়ির ছেলে কে তা কি তুমি জানো??
আমিঃ(মনে মনে) আমার জানার দরকার নাই, তুই সর ফহির😑।
ছেলেটিঃ এইবাড়ির একমাত্র ছেলে আমি... তাহলে কি আমি তোমার.....
আমিঃ(শুনতে চাইনা)🙊🙊😷😷।
ছেলেটিঃ পিছোচ্ছ ক্যানো?? তুমি না বললে আমি তোমার জন্য ওয়েট করতেছি?? কি হলো এখন সরছো ক্যানো।
আমিঃ( মনে মনে বলতেছি) সরতাছি কি সাধে হারামজাদা লুইচ্চা পোলা। কি করিযে এখন😞... ইউরেকা পাইছি।
ছেলেটা প্রায় আমার কাছাকাছি চইলা আসছে এরি মধ্য....
আমিঃ স্ট্যাচু....( বইলাই দিলাম ভো দৌড়। এক ঝলক চাইছিলাম দেখি অবাক হইয়া তাকাইয়া আছে। থাকুক গা আমার কি আমিতো কাইটা পড়ছি এই অনেক😁)
।।।।।।।।।।
।।।।।।।।।
এই বদনা নসিব কাহিনিডা আমার সাথে ঘটছে। 😑
চলবে.....

11/12/2022

#প্রেমনগর
পর্বঃ১
লেখাঃনীলাদ্রিকা নীলা
ইদানীং আফতাফ চৌধুরী তার পুত্রদের নিয়ে খুব চিন্তিত হয়ে রয়েছেন। আফতাফ চৌধুরীর তিন পুত্র। আকাশ চৌধুরী, মেঘ চৌধুরী, রৌদ্র চৌধুরী। তিন পুত্রই দেখতে মাশাল্লাহ মারাত্মক সুদর্শন। বড় ছেলে আকাশ চৌধুরী পেশায় একজন ডাক্তার। বয়স ছাব্বিশ ছুঁই ছুঁই। শুধুমাত্র পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত থাকায় ছাত্রজীবনে প্রেম করার সময় পায়নি। মেডিকেলের অনেক সুন্দরী তরুণীরা তার পিছু পিছু ঘুরেছে। এমনকি এখনো তার বাড়িতে মেয়ের বাবারা তার সাথে বিয়ে দেয়ার জন্য বাড়িতে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে আসেন। অতিরিক্ত বিয়ের প্রস্তাব সামলাতে সামলাতে আফতাফ চৌধুরী হিমশিম খান। রোজ রোজ বিভিন্ন মেয়ের বাড়ি থেকে টেলিফোন আসে৷ কিন্তু আকাশের মতামত ছাড়া তো আর বিয়ের দিকে এগোনো যায় না। বহু নারী আকাশের মন জয় করার জন্য পাল্লা দিয়ে উঠেছে। কেউ কেউ আকাশের রুপের পাগল আর কেউ কেউ তার উজ্জ্বল ক্যারিয়ারের। তাদের একটাই লক্ষ্য আকাশের সাথে প্রেম করা।
আকাশ রুগী দেখার জন্য চেম্বারে এসে বসলো। মধ্য বয়স্ক এক ভদ্রলোক একটা অল্পবয়সী মেয়েকে নিয়ে চেম্বারের ভিতরে এসে বসলেন। উনার শুকনো মুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছে উনি উনার মেয়েকে নিয়ে খুবই চিন্তিত।
সব গুলো রিপোর্ট দেখে আকাশ বলে উঠল, সব কিছু তো নরমালই আছে।
মেয়েটা আকাশের দিকে তাকিয়ে খিলিখিল করে হাসতে হাসতে বললো,আমার কোনো সমস্যা নেই তো! আপনি শুধু শুধু সময় নষ্ট করছেন।
ভদ্রলোকঃ আমার মেয়ে অহনা রুমের ভিতর একা একাই নিজের সাথে কথা বলতে থাকে।সব সময় অদ্ভুত আচরণ করে। ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে পড়ছে। সারাদিন বই নিয়ে পড়ে থাকে।পড়াশোনা ছাড়া কিচ্ছু বোঝে না!কতবার বলেছি একটু বাহিরের হাওয়া বাতাস লাগা। কিন্তু কারো কোনো কথাই শোনে না।
আকাশঃ হুম বেশি পড়াশোনার চাপেই হয়তো এমনটা হয়েছে।
ভদ্রলোকঃ বাড়ি থেকে ওকে এখন বিয়ে দেওয়ার কথা বলছে। রোগ বেড়ে গেলে যদি আর কেউ পাগলী ভেবে বিয়ে না করে৷
আকাশঃ দেখুন ওরকম পড়াশোনা আমিও করেছি। আমাদের দেখতে হবে ওর আচরণের ধরনটা কেমন। তারপর সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। আপাতত ওকে কয়েকদিন পড়াশোনা থেকে দূরে রাখতে হবে। আমরা উনাকে হাসপাতালে এডমিট করছি৷
অহনাঃ উফ বাবা! আমার বান্ধুবিরা আমাকে বলেছে একটা প্রেম করতে। তাহলে নাকি আমি পড়াশোনা থেকে একটু দূরে থাকব। প্রেম নিয়ে ব্যস্ত থাকবো। হিহিহি আমি তো একটা প্রেম করার চেষ্টাই করছি! হাহাহা। আচ্ছা বাবা আমি যদি অনেক গুলো প্রেম করে ফেলি তাহলে আমি অনেক ব্যস্ত থাকবো তাইনা!
ভদ্রলোকঃ দেখুন হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে যাচ্ছে আমার মেয়ে! আপনি আমার মেয়েকে ভালো করতে পারলেন না?
আকাশঃ আমি কোনো কাজে ব্যর্থ হইনা। ভরসা রাখুন।
অহনা হাসতে হাসতে বললো, বাবা ডাক্তারটা খুব হ্যান্ডসাম তাইনা! আমার সাথে চলবে? আমি উনার সাথেই প্রেম করবো৷ করবোই করবো! আচ্ছা ডাক্তার, প্রেম কিভাবে করে?
অহনার বাবা এবার কান্নায় ভেঙে পরলেন। টেবিলের ওপর বারি দিতে দিতে হাউমাউ করে কান্না শুরু করে দিলেন৷ উনার কান্নার শব্দে দুইজন নার্স ভিতরে চলে এলো। অহনা খিল খিল করে হেসেই যাচ্ছে৷
অহনার বাবাঃ দেখছেন তো ওর অবস্থা! দেখলেন তো!এসব জানাজানি হলে ওকে আর কে বিয়ে করবে চাইবে। অবস্থা তো যা খারাপ হওয়ার তা তো হয়েই গেলো। বাড়িতে ওর মা ওর চিন্তায় বার বার জ্ঞান হারাচ্ছে।
আকাশঃ আচ্ছা শান্ত হন৷ কাঁদবেন না। আপনার মেয়ের দায়িত্ব আমি নেব৷
এই কথা শোনার সাথে সাথে অহনার বাবার মুখ উজ্জ্বল হয়ে যায়। শুকনো মুখে হাসি ফুটে ওঠে। কারণ দায়িত্ব নেওয়ার কথাটায় উনি ভেবে নিয়েছেন ডাক্তার আকাশ চৌধুরী তার মেয়ে অহনাকে বিয়ে করবেন। মেয়েকে নিয়ে গিয়ে তিনি হসপিটালের একটা কেবিনে ভর্তি করালেন। আর বাড়িতে ফোন করে অহনার মাকে বললেন, অহনার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে। ফোনে কথা বলার সময় একজন নার্স এই বিষয়ের সবটা শুনে ফেললো। আর সাথে সাথে সে গিয়ে হসপিটালের ম্যানেজারকে এই সংবাদটা দিয়ে দিলো৷
ম্যানেজার সাহেব ডাক্তার আকাশ চৌধুরীর বাড়িতে ফোন করলেন।
ম্যানেজারঃ স্যারতো একজন মানসিক রোগীকে বিয়ে করছেন। স্যারকে আটকান।
আফতাব চৌধুরীঃ কিহ! আমাদের না জানিয়েই বিয়ে করছে!
পাশেই আকাশের মা মনিরা বেগম দাঁড়িয়ে ছিলেন। তিনি চেচিয়ে বললেন, কে বিয়ে করছে!
আফতাব চৌধুরীঃ তোমার বড় ছেলে নাকি তার হসপিটালেরই একটা রোগীকে বিয়ে করছে।
আকাশের মা চিল্লিয়ে বলছেন, এইসব হয়েছে তোমার জন্য! কবে থেকে বলছি ছেলের বিয়ে দেও। বিয়ে দেও! আমার কথা শুনলে আজ এই দিন দেখতে হতো না।
আফতাব চৌধুরীঃ চুপ করো তুমি!তোমার ছেলেরা তো কখনোই কোনো কথা শোনে না। শুনবে কিভাবে! লাই লাই দিয়ে তো ছেলেদের মাথায় তুলে ফেলেছো।
মনিরা বেগমঃ একদম আমার ছেলেদের নামে উল্টো পাল্টা কিছু বলবে না বলে দিলাম।
ওপর পাশ থেকে চেচামেচির আওয়াজ শুনে ম্যানেজার সাহেব তাড়াতাড়ি কলটা কেটে দিলেন। আকাশের বিয়ে নিয়ে প্রেমনগরের চৌধুরী মহল এখন খুবই উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে।
আফতাব চৌধুরীর মেজো পুত্র মেঘ চৌধুরী। ভার্সিটির বায়োলজি ডিপার্টমেন্টের খুবই অ্যাকটিভ ছাত্র।বয়স সবে চব্বিশ। তার সুন্দর চেহারা আর আকর্ষনীয় বডির প্রতি ভার্সিটির প্রতিটি মেয়ের নজর। বাইক নিয়ে যখন সে ক্যাম্পাসের ভিতরে ঢোকে, প্রতিটা মেয়ে তখন হা করে ড্যাবড্যাবিয়ে চেয়ে থাকে। চোখে সানগ্লাস,গালে খোঁচা খোঁচা দাঁড়ি আর মায়া মায়া ভরা হাসিটা দেখলে মেয়েদের বুকে ঝড় উঠে যায়। ল্যাবে ব্যস্ত থাকার সময় মেঘের মোবাইল ফোন বেজে উঠল। মেঘ একটু সাইডে গিয়ে কলটা রিসিভ করে।
ফোন রিসিভ করার সাথেই...
মনিরা বেগমঃ সর্বনাশ হয়ে গেছে বাবা! তুই তাড়াতাড়ি বাড়ি চলে আয়।
মেঘঃ কেন মা কি হয়েছে? ড্যাড কি কিছু করেছে?
মনিরা বেগমঃআরে না! আকাশ নাকি তার হসপিটালেরই এক রোগীকে বিয়ে করে ঘরে আনছে।
মেঘঃ হাহাহা....মা তুমি এসব কি বলছো। ভাইয়া এমন কাজ কখনোই করবে না। সো রিলাক্স থাকো। মা আমি একটু ল্যাবে কাজ করছি।তোমার সাথে এই বিষয়ে পরে কথা বলবো৷ এখন রাখি মাই ডিয়ার সুইট মাদার।
মনিরা বেগমঃ হ্যালো হ্যালো......ধ্যাত কেটে দিয়েছে।
মনিরা বেগম এবার ছোট পুত্র রৌদ্র চৌধুরীকে ফোন করলেন৷ রৌদ্র চৌধুরী দেখতে যেমন স্মার্ট তেমনি কথাবার্তাতেও বেশ স্মার্ট। তার রুপ আর কথার জাদুতে কয়েক সেকেন্ডের মধ্য যেকোনো অতি রূপবতী নারীও পটে যায়। বয়স মাত্র একুশ বছর। ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছে৷ এখনো পর্যন্ত কোনো প্রেম না করলেও মেয়েদের সাথে তার মেলামেশা প্রচুর। কিন্তু কেউ তার মনে জায়গা করে নিতে পারেনি। ফ্রেন্ড সারকেল নিয়ে হ্যাং আউট করার সময় মনিরা বেগম তাকে কল করেছেন৷ রিং হয়েই যাচ্ছে কিন্তু রিসিভ করছে না। এভাবে কয়েকবার দেওয়ার পর রৌদ্র চৌধুরী যখন পকেট থেকে ফোন বের করে সেলফি ওঠাতে যাবে তখনই মায়ের কল আসছে দেখে সাথে সাথে সেটা রিসিভ করলো।
রৌদ্রঃ উম্ম সরি মামমাম ফোন সাইলেন্ট ছিল তাই দেখতে পাই নি৷ এখন আদেশ করুন আমার মাতা আমায় কি করতে হবে!
মনিরা বেগম এবার কড়া হয়ে ধমক দিলেন,কোথাই তুই! এক্ষুনি বাড়ি আয়৷
রৌদ্রঃকেন মা কি হয়েছে!
মনিরা বেগমঃ তোর ভাই তো কান্ড বাধিয়ে ফেলেছে। বাড়িতে গন্ডগোল চলছে। আকাশ হসপিটালের একটা রোগী মেয়েকে বিয়ে করে নিয়ে আসছে।
রৌদ্রঃ ওয়াট!ভাইয়াকে কিছু বলোনি?
মনিরা বেগমঃ বলার সুযোগ আর পেলাম কই। ফোনে তো ওকে পাচ্ছিনা। নিশ্চয়ই আমার ভয়ে বিয়ের খবরটা গোপন রাখতেই ফোন বন্ধ করে রেখেছে।
রৌদ্রঃ ওকে ওকে। আমি আসছি।টেনশন নিও না।
আকাশের ফোনে চার্জ নেই। বাহিরের কিছু কাজ সেড়ে,দুপুরের খাবার খেয়ে আবার চেম্বারে এসে বসলো। আর ফোনটা চার্জে লাগিয়ে দিল। নার্সটা চেম্বারের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে বললো,স্যার আসবো?
আকাশঃ হ্যা এসো ।
নার্সঃ স্যার আপনি কি সত্যি সত্যি বিয়ে করছেন?
নার্সের কথা শুনে আকাশের চোখ কপালে উঠে যায়।
আকাশঃ আমি বিয়ে করছি মানে! কি বলছো এসব!
নার্সঃ স্যার তখন যে রোগীটা এডমিট হলো যাকে আপনি দায়িত্ব নেয়ার কথা বললেন।
আকাশঃওহ হো আমি কি বিয়ে করার কথা বলেছি নাকি! আমি তো ওকে সুস্থ করার দায়িত্ব নিতে চেয়েছি।
নার্সঃ কিন্তু উনার বাবা যে উনার বাড়িতে ফোন করে বললেন আপনার সাথে উনার বিয়ে।আপনি উনার দায়িত্ব নিয়ে নিয়েছেন। আর এটা শুনে তো আমিও...
আকাশঃ কি আমিও?
নার্সঃ ম্যানেজার সাহেবকে বলে দিয়েছি।
আকাশঃ আর ম্যানেজার আমার বাড়িতে ফোন করে সবটা জানিয়ে দিয়েছেন তাই তো!
নার্সটা এবার মাথা নিচু করে উত্তর দিল, না মানে আসলে স্যার, আপনার বাবাই তো সব সময় এখানের সব খবর উনাকে জানাতে বলেন।
আকাশঃ হুম জানি। বাবা এই কাজ আগেও করেছে। ঠিকাছে তুমি যাও এখান থেকে৷ খুব ভালো গন্ডগোল বাঁধিয়ে দিয়েছো। নাউ জাস্ট গেট আউট!
নার্সটা তড়িঘড়ি করে চেম্বার থেকে বেড়ি গেল। আর আকাশ কাপালের ওপর দুই হাত দিয়ে বসে রইলো। কারণ বাড়িতে এখন এটা নিয়ে তিঁল থেকে তাল হয়ে যাচ্ছে।
মেঘ চৌধুরী ল্যাব থেকে বের হতেই নীলা এসে মেঘের হাত ধরে ফেললো৷
নীলাঃ এ্যাই কোথায় যাচ্ছিস? তোর সাথে আমার কিছু কথা আছে।
মেঘঃ এসব কি করছিস হাত ছাড়! এখানে এভাবে কেউ দেখে ফেলবে। আর আমাকে যেতে হবে। তোর কথা আমি পরে শুনবো।
নীলাঃ আজ বিকালটা তুই আমাকে সময় দে না। প্লিজ।
মেঘঃ উফ! আমাকে এক্ষুনি প্রেমনগর যেতে হবে।
নীলাঃ প্রেমনগর মানে!
মেঘঃ তোর মাথা! প্রেমনগর মানে আমার বাড়ি। বাড়িতে একটা বিষয় নিয়ে গন্ডগোল চলছে। আমাকে গিয়ে সামলাতে হবে৷ আসছি।
নীলা ভ্রু কুচকে মেঘের চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে।
সময় রাত ৮ টা। আকাশ চেম্বারে বসে আছে। বাড়িতে যাওয়ার সাহস পাচ্ছে না। হঠাৎ মনে হলো অহনাকে একবার দেখে আসা উচিত। নিজের চিন্তায় ওর ব্যপারটা মাথা থেকেই বেড়িয়ে গেছে। অহনার কেবিনে গিয়ে দেখলো। সে বেডে বসে আছে আর তার সামনে বসা কাকে যেন সে বলছে।
অহনাঃ না আমি আগে প্রেম করবো তারপর বাকিসব কিছু...
অহনার বাবা তখনই কেবিনের ভিতরে ঢুকতে গিয়ে আকাশকে এখানে দেখে বলে উঠলেন,ওইতো আমাদের জামাইবাবা! যাও বাবা ভিতরে যাও।অহনার খালাতো বোন এসেছে।
গ্রাম থেকে আসা অহনার খালাতো বোন তুলি এদিকে ফিরে চিল্লিয়ে বলে ওঠে,দুলাভাই!
এটা শুনে আকাশ জিব্বাহতে ছোট করে একটা কামড় দিল। অহনাকে দেখতে এসে আকাশ এক রকম লজ্জাজনক অবস্তুয়াতেই পড়ে যায় ।
আকাশ কি করবে বুঝতে পারছেনা। অহনার বাবা বিয়ের ব্যাপারটা বাড়িতে সবাইকে জানিয়ে দিয়েছেন। বিয়ের প্রস্তুতিও নাকি নেয়া শুরু হয়ে গেছে৷ উনি মেয়েকে তাড়াতাড়ি বিয়ে দিয়ে শশুড়বাড়ি পাঠাতে পারলেই হাঁফ ছেড়ে বাঁচেন। মেয়ে যে দিন দিন পাগল হয়ে যাচ্ছে।কথায় কথায় প্রেম প্রেম করে। শেষে চরিত্রের দোষ ভেবে যদি আর কেউ বিয়ে না করে! অহনার বাবা আকাশের হাত ধরে বলছেন,তুমি আমাকে অনেক বড় বিপদের হাত থেকে বাঁচালে বাবা। বিয়েটা যত তাড়াতাড়ি সেরে নেবে ততই ভালো। আমি এখন আসি৷ বাড়িতে সব আয়োজন ঠিকঠাক হচ্ছে কিনা দেখতে হবে।
আকাশ কিছু না বলে মুখে জোর করে একটু হাসি এনে মুচকি হাসার চেষ্টা করলো।
চলবে......

11/12/2022

#হলিডে



#পর্ব_১

নীরা প্রায় হাঁপাতে হাঁপাতে এসে দাঁড়ালো।

পার্কিং লটের এই নিরিবিলি জায়গাটা নিশ্চয় পায়জামা ঠিক করার জন্য উপযুক্ত। তাড়াহুড়ো করে বেরুতে গিয়ে সে উল্টো পায়জামা পড়ে চলে এসেছে! এখন একটানে পায়জামা খুলবে, দ্বিতীয় টানে পায়জামা পড়ে ফেলবে ব্যস... কাজ ফুরুৎ...

অাশেপাশের কোথাও থেকে একটা অাওয়াজ অাসছে।কেউ একজন কি ব্যাথা ট্যাথা পেয়েছে??

নীরা সামনে এগিয়ে গেলো। একজন স্যুট টাই পরিহিত ভদ্রলোক উহ্ অাহ্ করছেন! তাঁর হাত কেঁটে গেছে। গলগল করে রক্ত পড়ছে।রক্তে নীল স্যূটের বেশিরভাগই মাখামাখি।মেঝেতে পরে অাছে কিছু এলোমেলো কাগজপত্র। বেশিরভাগেই রক্ত!

কিন্তু লোকটা কাটা হাত নিয়ে অাহাম্মকের মত ফাইল ঘেটে কিছু একটা গাড়ির অাশেপাশে খুঁজছেন! নীরা বিব্রত এবং বিরক্ত হয়ে এগিয়ে গেলো!

লোকটা কাতর ভঙ্গিতে ছুটে এলো,

-----অামি ল্যাফ্টহ্যান্ডার। ডানহাতে কিছুই পারিনা।অাপনি কি অামার হাতটা বাঁধতে সাহায্য করবেন?? তাঁর ডানহাতে সাদা কাপড়ের ছোট্ট টুকরা!

নীরা মনে মনে লোকটাকে অকথ্য একটা গালি দিলো।হাত কেটেছে অনেকখানি, এই ছোট্ট কাপড়ে কিচ্ছু হবেনা।

নীরা ভদ্রলোকের টাইটা একটানে খুলে নিয়ে কাঁটা হাতটায় চেঁপে ধরে বাঁধলো।রক্তের তোড়ে নীরার হলুদ জামাও মেখে গেছে।ভদ্রলোক ও মাই গড, ও মাই গড বলে গোঙানোর মত অাওয়াজ করছেন।হাতটা বেঁধে দিয়ে নীরা ভদ্রলোকের মেঝেতে পড়ে থাকা ফাইল গুলো কুড়িয়ে গাড়িতে তুলে রাখলো..! লোকটা খুঁড়িয়ে হাটতে হাটতে কাউকে ফোন করে নিলো একটা।

-----অনেকটা গভীর কেটেছে, অাপনার হাত! স্টিচ লাগবে! হাসপাতালে যান।

-----অামি একা যেতে পারবোনা।অাপনি কি অামায় সাথে করে নিয়ে যাবেন?? অাপনি কি ড্রাইভিং জানেন ম্যাডাম??

বলতে বলতে ভদ্রলোক নীরার হাত চে্পে ধরলেন।নীরার দুহাত রক্তে মাখামাখি।

ভদ্রলোকের টাই গলে কাটা হাত দিয়ে টপ টপ করে রক্ত পড়ছে।অার কিছুক্ষণ থাকলে এই ব্যাটা নির্ঘাত রক্ত শূন্য হয়ে মারা যাবে।এতবড় একটা লোক এমন করে হাত কাটলো কিভাবে??অাশেপাশে তো ছুড়ি কাঁচি কিছুই নেই!

নীরা দীর্ঘশ্বাস ফেললো!

-----অামি ড্রাইভিং জানি না।অাসুন অাপনাকে রিক্সা করে নিয়ে যাই.... নীরা ভদ্রলোকের হাত ছাড়িয়ে নেবার চেষ্টা করলো। এ'কি ভদ্রলোকের বুকের ভেতর শার্টেও রক্ত, অারও কেটেছে নাকি??

নীরা ভয়ার্ত চোখে তাঁকালো।ভদ্রলোক ঢুলুঢুলু চোখে তাকিয়ে অস্পষ্ট কণ্ঠে বললেন,

-----ম্যাডাম, অামার শরীরের অারও বিভিন্ন জায়গায় কেটে অাছে। অাপনি দয়া করে অামায় অাশেপাশের একটা হাসপাতালে নিয়ে চলুন।

বলেই লোকটা বা হাতে নীরার কাঁধ চেপে ভর করে হাটতে চাইলো।

একরাশ বিরক্তি অার উৎকণ্ঠা নিয়ে নীরা লোকটাকে নিয়ে হাসপাতালে রওনা হলো।

হাসপাতালে এসে অবধি দু-ঘন্টা নীরা বসে অাছে।এরা যেতে দিচ্ছে না। বলছে, রোগীর ডিটেল বলে ফরম ফিলাপ করে কিছু এডভান্স করতে। নীরার সাথে এগারোশো পঞ্চাশ টাকা ছিলো, ড্রেসিং মেডিসিনে পুরো টাকাটাই সে দিয়ে দিয়েছে।সাথে টাকা নেই।নীরা অপেক্ষা করছে নিয়ে অাসা লোকটা হয়তো, টাকার ব্যাপারে কিছু বলে তাঁকে বিদায় দিবে। কিন্তু সেই লোক অজ্ঞান! কেবিনে দুতিনবার উঁকি মেরে দেখেছে সে।

নীরা মনে মনে লোকটাকে অারেকটা ভীষণ ভয়াবহ গালি দিলো। লোকটার জন্য অাজ তাঁর অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে।

দুপুর ১২টা থেকে তাঁর শরবত ভ্যানে বসার কথা। এখন বাজছে দেড়টা। তাঁরমানে বেঁচাকেনার পুরোটাই মাটি। দুপুর রোদে শরবত যতটা চলে, পরে অার ততটা নয়। অাজ বাবা নিশ্চয় তাঁর থেকে ডাবল বেঁচবে।নীরাদের শরবতের ভ্যান মোট তিনটা।বাকি দুটোই তাঁর বাবার তত্বাবধানে অাছে।

তবে

নীরা বসে ঢাকা ইউনিভার্সিটির ভূগোলও পরিবেশ বিদ্যা ভবন বরাবর গেটের সামনে। সবসময়ই বাবার দুটো ভ্যান থেকে তাঁর ব্যবসা ভালো হয়।

এখন অাবার এডমিশন টেস্ট চলছে।১২টা থেকে দুটোর মধ্যেই প্রায় তিনহাজার টাকার বেচাকেনা করতে পারতো সে.....

নীরা দীর্ঘশ্বাস ফেললো।

-----অাপনার রোগীর জ্ঞান ফিরেছে.. ৪০৬ না???

অাপনার রোগী যণ্ত্রনা করছে।একে নিয়ে বিদেয় হোন এখনি।

বয়স্ক একজন নার্স এসে প্রায় নাক কুঁচকে কথাটা বলল।

নীরা উঠে দাঁড়ালো।লোকটা অাবার কি ঝামেলা বাঁধিয়েছে???

নীরার যেতে হলো না, হাতে গলায় বেন্ডেজ নিয়ে ভদ্রলোক চেঁচাতে চেঁচাতে এগিয়ে অাসছেন।

------এটা কোনো পরিবেশ হলো?? এরকম করে এরা রোগীদের রাখে!! ভালো মানুষই অসুস্থ হয়ে পড়বে!!

অাপনি দেখে দেখে এই হাসপাতালেই অানলেন??

নীরা ভদ্রলোকের হাত চেঁপে ধরে টেনে নিয়ে বাইরে এলো।

------অামার দু-হাজার টাকা খরচ হয়েছে।টাকাটা দিন , অামি চলে যাবো অাপনার জন্য অামার যথেষ্ট ক্ষতি হয়েছে।

------এরকম একটা বাজে হাসপাতালে এনে দু-হাজার টাকা?? বলতে বলতে ভদ্রলোক নীরার হাতে দু-হাজার টাকার দুটো নোট গুঁজে দিলো।

নীরা ঠান্ডা গলায় বলল,

-----অাপনার সাথে তাড়াহুড়ো করে অাসতে গিয়ে, পার্কিং সাইটে অামার পায়জামা ফেলে এসেছি।অাপনি গাড়ি অানতে গেলে, সেটা খুঁজে নিয়ে এসে ফেরত দিবেন।

অামি এতক্ষণ অধর্নগ্ন হয়ে শুধু জামা পড়ে অাপনার চিকিৎসা করেছি।একটা ধন্যবাদ দিন অামায়!

ভদ্রলোক ধন্যবাদ দিলেন না। নীরা হাসপাতাল ছেড়ে বাইরে এলো।অাজ অার শরবতের ভ্যানে যাবেনা সে! সোজা বাসায়.....রক্তারক্তি জামা পাল্টাতে হবে!

Address

Mymensingh

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Drama world posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Drama world:

Share


Other Digital creator in Mymensingh

Show All