11/11/2021
ফিশিং কি? 🔥 ফিশিং হ্যাকিং কি ? 🔥
ফিশিং হলো সোশাল ইঞ্জিনিয়ারিং নামক এক কৌশলের উদাহরণ। এই কৌশলের ফাঁদে পরলে হারাতে পারেন আপনার অনেক মূল্যবান তথ্য। যেমনঃ ফেসবুক অ্যাকাউন্ট এর ইউজার নেম পাসওয়ার্ড, ইমেইল অ্যাকাউন্ট এর ইউজার নেম পাসওয়ার্ড, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, জরুরী ডকুমেন্টস, এটিএম কার্ডের গোপনীয় তথ্য ইত্যাদি।
সহজ কথাই আমরা খাবার এবং বড়শি দিয়ে পুকুর থেকে যে ভাবে মাছ ধরি, খাবার এর লোভে মাছ যেমন ধরা দেই, ঠিক আমরাও কোন না কোন লোভে পরে ফিশিং এর শিকার হয়ে যাই। ফিশিং এমন এক পন্থা যেখানে আপনি নিজে ফাদে পা দিবেন এবং আপনি নিজে আপনার সকল ইনফর্মেশন অন্য জনকে দিয়ে দিবেন কিন্তু আপনি বুঝতে পারবেন না, যখন বুঝবেন ততক্ষণে আপনার আকাশ ভরা তারা হয়া যাবে। 🐸
কিছু বছর আগে ইয়াহু বা আউটলুক ক্লোন হ্যাকের ফলে বিভিন্ন দেশের একলক্ষ ফেসবুক অ্যাকাউন্ট অন্যের হাতে চলে যায়। বাংলাদেশে এই হানাটা খুব একটা বেশি আকার ধারণ করেনি। তবে বর্তমান সময়ে সবচেয়ে ভয়ংকর হয়ে দাঁড়িয়েছে ফিশিং সাইট ব্যবহার করে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট হ্যাক।
ফিশিং সাইট বলতে বোঝায় একটি ওয়েবসাইটের প্রায় হুবহু কপি। তারা প্রকৃত ওয়েবসাইটের যে ওয়েবসাইট লিংক রয়েছে সেটা পুরোপুরি ব্যবহার করতে পারে না (কিছু কিছু ক্ষেত্রে সম্ভব)।
সাধারণত তারা ওয়েবসাইটগুলোর লিংকগুলোকে সামান্য পরিবর্তন করে ব্যবহার করে থাকে। যা সাধারণ দেখায় আমরা এড়িয়ে যাই অথবা খুব একটা নজর দেই না। যেমন www.facebook.com যদি তারা এই লিংকটাকে সামান্য পরিবর্তন করে লিখে ফেলেন www.faceboook.com বা www.facebok.com তাহলে ভালোভাবে নজর না দেয়ার জন্য মানুষ ধোঁকা খেয়ে যাবে।
টার্গেট ব্যক্তির ইনবক্সে সেন্ড করে থাকবে তাদের তৈরি করা ওয়েবসাইট লিংক। ভুক্তভোগী লিংকে ক্লিক করে ফেসবুক (নাম্বার+ইমেইল) ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করলেই সব তথ্য হ্যাকারদের নিকট চলে যায়। অনেক সময় শুধু ক্লিক করার ফলেও অনেক মূল্যবান তথ্য হ্যাকারদের হাতে চলে যায়।
তারপরই শুরু হয় একজন হ্যাকারের বিভিন্ন ধরনের হুমকি ও ব্ল্যাকমেইলের ম্যাসেজ। তথাপি টাকা চাওয়া ব্যক্তিগত ছবি ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি ইত্যাদি।
🤜 ফিশিং থেকে বাঁচতে যা করতে পারেনঃ
১. অপরিচিত কাউকে ফ্রেন্ড তালিকায় যোগ করবেন না।
২. মেসেঞ্জার অথবা ইমেইলে কারো কাছে থেকে পাঠানো কোনো লিংক/পিকচার ফাইল/ সংযোজনকৃত ফাইল ডাউনলোড অথবা ক্লিক করার আগে ভালো করে যাচাই করে নিবেন।
৩. ফেসবুকে দুই স্টেপ অ্যাপ্রোভাল অপশন চালু রাখবেন।
৪. আনঅথোরাইজড লগইন নোটিফিকেশন অন রাখবেন।
৫. অতি উৎসাহিত না হয়ে সোশ্যাল মিডিয়া অথবা বিভিন্ন ওয়েবসাইটে পাওয়া অতি লোভনীয় কোনো বিজ্ঞাপনগুলোতে ক্লিক না করা। ক্লিক করার ব্যাপারে সাবধানতা অবলম্বন করা। যেমনঃ কিছু দিন আগেই স্বপ্ন সুপার শপ এর একটা লিঙ্ক আসছিল, ক্লিক করলেই আইফোন গিফট পাবেন etc. এমন লিঙ্ক থেকে ১০০ হাত দূরে থাকবেন।
৬. অবারন্তর মেইল দেখলে যাচাইন করবেন। তবে কেউ আপনাকে ৳ দিতে চায় বা আপনি লটারী জিতেছেন এ জাতীয় মেইল আসলে নির্দ্বিধায় এড়িয়ে যান। কারণ কারো উপকার না করলে কেউ আপনাকে মাগনা টাকা দিবে না। টাকার গাছ কেউ লাগায়নি, হালাল টাকার কষ্ট করেই আসে, হারাম হলে আলাদা জিনিস! তবুও মানুষ এমন যে, হারাম টাকার ভাগও দিবে না আপনাকে!
৭. কারো দেয়া লিঙ্ক থেকে কোন সাইটে আসলে যদি এমন হয় এই সাইট আপনি আগেও ব্যবহার করছেন এবং আপনাকে সরাসরি এমন পেজে নিয়ে আসা হয় যে আপনাকে লগ ইন করতে হবে তখন অনুগ্রহ করে ইউ আর এল (ওয়েব অ্যাড্রেস ) চেক করে নিন।
৮. কোন এড বা ছবি দেখে অতি উৎসুক হবেন না। ঠান্ডা মাথায় বিবেচনা করে তবেই কিছু করুন।
৯. পর্ন সাইট থেকে ১০০% দূরে থাকুন। পর্ন ওয়েবসাইট-এ হাজার হাজার ফাঁদ থাকে, হতে পারে আপনি কোন একটার শিকার হয়ে গেলেন। পর্ন ওয়েবসাইট-এ বেশির ভাগ সোশাল-মিডিয়ার অ্যাকাউন্ট, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এই গুলা বেশি কম্প্রোমাইস এর শিকার হয়