07/07/2024
মামী মুরগীর রানটা মামাতো বোনের পাতে তুলে দিয়ে বললো খা ভাই..পেট ভইরা খা।
এদিকে মুরগীর গলা চিবাতে চিবাতে আমি খেয়াল করলাম মা এক দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। মায়ের চোখ দুটো টলমল করছে। যেনো এক্ষুনি কেঁদে দিবে।
আমি মায়ের দিক থেকে চোখ ফিরিয়ে নিয়ে তাড়াতাড়ি খাবার শেষ করে উঠে গেলাম।মায়ের এই অশ্রু মিশ্রিত দৃষ্টি আমার কাছে নতুন কিছু নয়।বাবার মৃত্যুর পর যখন থেকে নানার বাড়িতে এসেছি আপ্যায়নের বেলা মামির এই মানুষিকতায় আমি অভ্যস্ত হয়ে গেছি।
আগে বাবা বেঁচে থাকতে যখন এই বাসায় আসতাম, বাবা তখন দু-হাত ভরে বাজার নিয়ে আসতো।এই বাড়ির সব লোকের জন্য জামা কাপড় সহ অনেক কিছু নিয়ে আসতো।একটা সময় মামার ব্যবসা খুব খারাপ যাচ্ছিলো,তখন বাবাই প্রায় দেড়টা বছর এই সংসারটার দায়িত্ব নিয়েছিলেন।
তখন মামি আমাদের প্রচুর খেয়াল রাখতেন। খেতে বসলে বেঁচে বেঁচে বড়ো মাছের টুকরো, মুরগীর কলিজা আর রানটাই আমার পাতে তুলে দিতো।আর প্রতি বেলায় আমার জন্য দুধের ছানার সন্দেশতো থাকতোই।আর এখন এই বাড়িতে এলেই নানী মায়ের সাথে বকাবাজি করে।মামিও এখন এলে আর জানতে চায়না আমরা কেমন আছি।মামা বাড়িতে পা রাখা মাত্র জিজ্ঞেস করে কখন বাসায় যাবি।মা সবটা বুঝতে পারে, তবুও বেহায়ার মতো আমায় নিয়ে এই বাড়িতে আসে।শুধুমাত্র নিজের প্রিয় মানুষগুলোকে একটু দেখার জন্য।কিন্তু মায়ের সেই প্রিয়মানুষ গুলোর কাছে আমরা এখন মূল্যহীন।কারণ তারা কখনো আমাদের নয়,বরং আমাদের টাকাকে ভালোবাসতো।বাস্তবে টাকার কাছে ভালোবাসার সম্পর্ক মূল্যহীন।
©সংগৃহীত