Masuduj Zaman Masud

Masuduj Zaman Masud মানবতার কল্যাণের বার্তা....

02/12/2019

মুসলমানদের বিরুদ্ধে কাফেরদের সাহায্য করার বিধান...!!!

১। কোন মুসলমান যদি কাফেরদের পক্ষ নিয়ে তাদের সাহায্য ও বিজয়ের জন্য মুসলমানদের বিরুদ্ধে লড়াই করে,অথবা যুদ্ধে তাদের সাহায়তা করে কিংবা যখন কাফের মুসলমানদের মধ্যকার যুদ্ধে কাফেরদের সমর্থন জানায়, তবে সে নিশ্চিত কাফের এবং নিকৃষ্টতম কাফের।

সে শুধু মুসলমান হত্যায় জড়িত হয়েছে শুধু এটুকু নয়;

বরং ইসলামের বিরুদ্ধে হকের শত্রুদের আনুগত্য ও সাহায়তা করেছে।

আর এটা সকলের ঐক্যমত্যে সুস্পষ্ট কুফর।

২। ইসলাম ও কুফরের মাঝে চলমান লড়াইয়ে যে বা যারা কাফেরদের পক্ষ অবলম্বন করতে অস্ত্র, ঘাটি, শক্তি বা সম্পদ দিয়ে অথবা সমর্থন জুগিয়ে তাদেরকে সাহায্য করবে, মুসলমান হত্যা বা গ্রেফতারে তাদের ইন্ধন জোগাবে,যে কোনোভাবে এ যুদ্ধে কাফেরদের পক্ষ নিবে, সে কাফের ও মুরতাদ বলে বিবেচিত হবে। মারা গেলে তার জানাযা পড়া যাবেনা।

মুসলমানদের কবরস্থানে দাফন করা যাবেনা।

[সূত্র: অধ্যায়ঃ কতলে মুসলিম, মাআরেফে মাদানি, মাওলানা হুসাইন আহমদ মাদানি ।
সংকলন ও বিন্যাস: মুফতি আব্দুস শাকুর তিরমিজি ]

27/11/2019

ইসলাম ও গণতন্ত্র...!
••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••√
ইসলামের সূচনা থেকেই মুসলমানদের ঈমান-আমলকে ধ্বংস করার জন্য ইসলাম ও মুসলমানদের চিরশত্রু ইয়াহুদী-খ্রিস্টান শক্তি একযোগে কাজ করে যাচ্ছে। সহীহ ও শিরকমুক্ত ঈমান নিয়ে কোন মুসলমান কবরে যাবে, এটা তাদের সহ্যের বাইরে। তাই তারা যুগে যুগে মুসলমানদের ঈমানকে শিরক মিশ্রিত করার জন্য নানা ধরণের কূটচাল চালিয়েছে। কখনো প্রত্যক্ষভাবে, যা সাধারণ ও বিশিষ্ট সবাই বোঝে, কখনো পরোক্ষ ভাবে, যা সাধারণ তো দূরের কথা বিশিষ্টদেরও বোধগম্য নয়। তবে যুগের যারা সচেতন আলেম, তারা সব সময় সজাগ থেকেছেন এবং উম্মাহর ঈমান-আমলকে কুফর-শিরকের মিশ্রণ থেকে হেফাযত করার জন্য যার পর নাই চেষ্টা মেহনত করে গেছেন। কারণ তারা জানেন যে, নবীর নিয়াবত আর বিরাসতের গুরুদায়িত্ব তাদের কাঁধে অর্পিত হওয়ায় পরকালে তারা এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসিত হবেন।
বর্তমান যামানায় মুসলমানদের ঈমানকে শিরকমিশ্রিত করার জন্য রাজনৈতিক দর্শনের নামে যে সকল মতবাদ মুসলিম বিশ্বে ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে, তার মধ্যে গণতন্ত্র সবচেয়ে বেশি ক্ষতিকর, যার ব্যাখ্যা সামনে আসছে। এমনি আরেকটি মতবাদ হলো সমাজতন্ত্র। যার মূলমন্ত্র হলো, সমস্ত সম্পদের মালিক রাষ্ট্র বা সরকার। জনগণ শ্রম দিবে এবং এর বিনিময়ে সে অন্ন, বস্ত্র, চিকিৎসা, বাসস্থান ইত্যাদি জরুরী জিনিস পাবে। কিন্তু তারা কোন গাড়ি, বাড়ি, শিল্প কারখানার মালিক হতে পারবে না। এ দর্শনটি যে শরী‘আত বিরোধী সে কথা সকলেই বোঝে। কারণ ব্যক্তি মালিকানা না থাকলে হজ্জ, যাকাতসহ আর্থিক ইবাদতসমূহ কারো উপর ফরয হবে না। ফলে এ সংক্রান্ত আয়াতগুলো অস্বীকার করার দরূন মানুষ কাফের ও বে-ঈমান হয়ে যাবে।
ইসলামের ইতিহাসে বিভিন্ন সময়ে ইয়াহুদী-খ্রিস্টানদের পক্ষ থেকে মুসলমানদেরকে ধর্মান্তকরণের বহু চেষ্টা হয়েছে। সমকালীন উলামায়ে কেরাম তা অনুধাবন করতে সক্ষম হয়েছিলেন এবং তার বিরুদ্ধে যথোচিত ব্যবস্থা গ্রহণ করে উম্মাহর ঈমানকে শিরকের মিশ্রণ থেকে রক্ষা করেছেন। কিন্তু বর্তমানে রাজনৈতিক দর্শনের মোড়কে গণতন্ত্রের নামে মুসলিম উম্মাহকে মুরতাদ বানানোর যে সূক্ষ্ম চেষ্টা চলছে, তার বাস্তবতা বুঝতে না পারায় এ যুগের উলামায়ে কেরামকেও এব্যাপারে বেশি একটা মাথা ঘামাতে দেখা যায় না। অথচ গণতন্ত্র স্পষ্ট কুফরীতন্ত্র। এ ব্যাপারে বিন্দু মাত্র সন্দেহের অবকাশ নেই। যারা সন্দেহ করবে, তাদের ঈমান অবশ্যই ঝুঁকিপূর্ণ।
গণতন্ত্র মূলত একটি ধর্ম। বাদশাহ আকবর যেমন হিন্দু-মুসলমানদেরকে এক করার জন্য দীনে ইলাহী নামক ধর্ম প্রতিষ্ঠা করেছিলো, যা হযরত মুজাদ্দিদে আলফে সানী রহ. এর মেহনতে নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছিলো। অনুরূপভাবে ধূর্ত ইয়াহুদী-খ্রিস্টানরা সমগ্র দুনিয়ার মানুষকে এক করে তাদের তাবেদার বানানোর জন্য ‘গণতন্ত্র’? নামক ধর্ম প্রতিষ্ঠা করেছে। পার্থক্য শুধু এতটুকু যে, বাদশাহ আকবর তার মতবাদের নাম দিয়েছিলো ‘ধর্ম’, আর ইয়াহুদী-খ্রিস্টানরা বাদশাহ আকবরের পরিণতি থেকে শিক্ষা নিয়ে চালাকি করে ধর্ম শব্দটি বাদ দিয়ে দিয়েছে। যেন দীনদার মুসলমানকেও এ ধর্মের ধারাগুলো অতি সহজে গলধঃকরণ করানো যায়। ইসলাম ধর্মে যেমন কোন অনুমোদিত জিনিসকে জায়েয এবং নিষিদ্ধ জিনিসকে হারাম বলে, অনুরূপভাবে গণতন্ত্র নামক ধর্মে অনুমোদিত জিনিসকে আইনসম্মত এবং নিষিদ্ধ জিনিসকে আইনসম্মত নয় বা বে-আইনি বলে। আর এ ধর্মের খোদা হলো, পরাশক্তির কর্ণধারগণ। অবতার হলো, বিভিন্ন দেশের গণতন্ত্রের কাণ্ডারীগণ। আর এর ফেরেশতা হলো, ফৌজ ইত্যাদি। আর ধর্মগ্রন্থ হচ্ছে সংবিধান, যা সার্বিকভাবে বোঝার জন্য এবং তার পক্ষে জনমত তৈরি করার জন্য ইংরেজদের ধর্মনিরপেক্ষ সিলেবাস বিশ্বের অধিকাংশ জায়গায় চালু আছে।
প্রিয় পাঠক! এগুলো শুধু আমাদের মুখের কথা নয়। বরং তার জ্বলন্ত প্রমাণ হলো, নব্বইয়ের দশকের শুরুর দিকে বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল যখন প্রচণ্ড বন্যায় প্লাবিত হয়ে হাজার হাজার লোক মারা যায়, তখন মার্কিন সরকার সাহায্যের জন্য কয়েক জাহাজ সৈন্য পাঠিয়েছিলো। তাদের নাম দিয়েছিলো, ‘অপারেশন সী এঞ্জেল’। যার অর্থ হলো, ‘সামুদ্রিক ফেরেশতার মাধ্যমে সহযোগিতা’। এখন আমাদের কথা হলো, যদি মার্কিনীদের ভাষায় গণতন্ত্র ধর্মই না হত, তাহলে ফেরেশতা এলো কোত্থেকে? হ্যাঁ, গণতন্ত্র নামক এ ধর্মের নির্দিষ্ট কোন উপাসনালয় নেই। সুনির্দিষ্ট সময়ে তার সুনির্দিষ্ট কোন ইবাদত নেই। এতটুকু পার্থক্য। আর একারণেই এটা যে একটা ধর্ম, তা লোকেরা বুঝতে পারে না এবং সহজেই তা গ্রহণ করে।
আরো দেখুন, ইসলামী শরী‘আতে মুরতাদদের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। গণতন্ত্রের ধর্মেও একই নিয়ম। এ মতবাদের সাথে কেউ বিদ্রোহ করলে তার শাস্তিও মৃত্যুদণ্ড। যেমন ধরুন, কিছু খোদাপ্রেমিক ইসলামী শাসনব্যবস্থার দাবিতে কোথাও জড়ো হয়েছে, সরতে চাচ্ছে না, নির্ঘাত তাদের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। কারণ তারা গণতন্ত্রের মুরতাদ।
প্রিয় পাঠক! আপনাদের দরদে দরদী হয়ে আমি বলছি, কবরে ও আখেরাতে কেউ কারো সাহায্যকারী হবে না। আপনারাই বলুন, কেউ যদি হিন্দু কিংবা খ্রিস্টান অথবা ইয়াহুদী ধর্ম গ্রহণ করে বা এ সকল ধর্মের মতবাদে বিশ্বাসী হয় এবং তার মধ্যেই ইহকালীন সফলতা ও পরকালীন মুক্তি খুঁজে বেড়ায়, তাহলে কি সে মুসলমান থাকতে পারে? কিছুতেই না। তাহলে কেউ যদি গণতন্ত্র নামক ভ্রান্ত ধর্ম বিশ্বাস করে তার ধারাগুলোর অনুসরণের মধ্যেই পার্থিব উন্নতি তালাশ করে, তাহলে সে কি করে মুসলমান থাকতে পারে? বড় চিন্তার বিষয়। ঈমান তো শুধু মুখে দাবি করার বিষয় নয়। বরং তা অন্তরে বিশ্বাস করার নাম।
এখানে আমরা ইসলামের সাথে সরাসরি সংঘর্ষপূর্ণ গণতান্ত্রিক কিছু ধারা উল্লেখ করছি, যা বিশ্বাস করলে বিশ্বাসকারীর ঈমান ক্ষতিগ্রস্ত তো হবেই, এমনকি তার ঈমান নষ্টও হতে পারে।
১. গণতন্ত্র বলে, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। ইসলাম বলে, সকল ক্ষমতার উৎস একমাত্র আল্লাহ পাক। তিনি যা ইচ্ছা তাই করতে পারেন।
অপর আয়াতে আছে, আল্লাহ তা‘আলা যাকে ইচ্ছা ক্ষমতার মালিক করেন এবং যার থেকে চান, ক্ষমতা ছিনিয়ে নেন।
২. গণতন্ত্র বলে, অধিকাংশের মতামতেই সিদ্ধান্ত গৃহিত হবে। ইসলাম বলে, অধিকাংশের মতামত সিদ্ধান্তের একটি সূত্র, একমাত্র সূত্র নয়। কুরআনের অসংখ্য আয়াতে আল্লাহ পাক বার বার ঘোষণা করেছেন, অধিকাংশ মানুষই জ্ঞান রাখে না। অধিকাংশ মানুষই মূর্খ। অধিকাংশ লোকেরই বিবেক-বুদ্ধি নেই। অধিকাংশ মানুষই নাফরমান ইত্যাদি। অথচ অধিকাংশ বা ‘মেজরিটি’ই হলো গণতন্ত্রের মূল কথা।
৩. গণতন্ত্র বলে, ‘দেশের সার্বভৌমত্বের মালিক পার্লামেন্ট’। ইসলাম বলে আসমান-যমীনের স্বত্ব একমাত্র আল্লাহর। আসমান-যমীনে যা কিছু আছে, সবকিছুর একচ্ছত্র মালিক একমাত্র আল্লাহ।
৪. গণতন্ত্র বলে, পার্লামেন্ট যে কোন সময় যে কোন আইন প্রনয়ণ করার অধিকার রাখে। হোক তা কুরআন বিরোধী।’ এ ব্যাপারে পার্লামেন্ট জবাবদিহিতার ঊর্ধ্বে। সুতরাং এ ধারার আলোকে অধিকাংশ সংসদ সদস্যদের মতামত থাকলে, পার্লামেন্ট মদপান, যিনা, সমকামীতা, আন্তঃধর্ম বিবাহ ইত্যাদিও বৈধ ঘোষণা করতে পারে। ইসলাম বলে, আইন প্রনয়ণের অধিকার একমাত্র আল্লাহর। অন্য আয়াতে এসেছে, আল্লাহ যা করেন এ ব্যাপারে কারো জিজ্ঞাসা করার অধিকার নেই। কিন্তু মানুষ যা করে তার জবাবদিহিতা অবশ্যই তাকে করতে হবে। তো কুরআনের ভাষ্য অনুযায়ী সাধারণ মানুষ তো দূরের কথা, কোন নবী রাসূলও আইন প্রনয়ণের অধিকার সংরক্ষন করেন না। হ্যাঁ, পার্লামেন্ট আল্লাহ প্রদত্ত আইন জনগণের মাঝে বাস্তবায়িত করার পদ্ধতি বের করার অধিকার রাখে। এর চেয়ে বেশি কিছু নয়।
৫. গণতন্ত্র বলে, ‘জনগণের মাঝে কোন জটিল সমস্যা দেখা দিলে তার সমাধানের জন্য প্রথমে তা পার্লামেন্টে উত্থাপন করতে হবে কিংবা গণভোট নিতে হবে।’ ইসলাম বলে, কুরআন হাদীস ও ইজমায়ে উম্মতের মাধ্যমে সিদ্ধান্তকৃত কোন বিষয়ে সমস্যা দেখা দিলে হাক্কানী উলামাদের কাছ থেকে জেনে সে অনুযায়ী আমল করতে হবে। এখানে গণভোট বা মতামতের কোন প্রসঙ্গ নেই। যেমন কুরআনে এসেছে, কোন বিষয়ে মতানৈক্য হয়ে গেলে তার ফয়সালা করাতে হলে তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের দিকে প্রত্যাবর্তন কর।
৬. গণতন্ত্র বলে, ‘জনগণকে সব ধর্মের প্রতি সমান শ্রদ্ধা বজায় রাখতে হবে।’ আরেকটু পরিষ্কার ভাষায় যাকে ধর্মনিরপেক্ষতা বলে। ইসলাম বলে, একজন মুসলমানের জন্য ইসলাম ব্যতীত অন্য সব ধর্ম থেকে আন্তরিকভাবে সম্পর্কচ্ছেদের ঘোষণা দেয়া জরুরী। এর এ অর্থ নয় যে, অমুসলিমদের সাথে শত্রুতা রাখতে হবে বা খারাপ ব্যবহার করতে হবে। অমুসলিমদের অধিকারও আল্লাহ তা‘আলা কুরআনে বর্ণনা করেছেন এবং তাদের সাথেও বাহ্যিকভাবে ভালো ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়েছেন। পবিত্র কুরআনে এসেছে, ‘তোমাদের জন্য ইবরাহীম ও তার সঙ্গীগণের মধ্যে চমৎকার আদর্শ রয়েছে। তাঁরা তাদের সম্প্রদায়কে বলেছিলো, তোমাদের সাথে এবং আল্লাহর পরিবর্তে তোমরা যার ইবাদত কর তার সাথে আমাদের কোন সম্পর্ক নেই। আমরা তোমাদেরকে মানি না। তোমরা এক আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন না করলে তোমাদের এবং আমাদের মধ্যে চির শত্রুতা থাকবে।’
৭. কেউ যদি ধোঁকা বা প্রতারণার মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ টাকা ইনকাম করে, যেমন সুদ বা জুয়ার মাধ্যমে অনেকে ধনী হচ্ছে, এগুলো গণতন্ত্রের ধর্মে সম্পূর্ণ হালাল এবং ঐ ব্যক্তিকে বুদ্ধিজীবী টাইটেল দেয়া হবে। কারণ সে বুদ্ধি খাটিয়ে সাধারণ লোকদের টাকা হাতিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছে। কিন্তু ইসলামী শরী‘আতে এ টাকাগুলো হারাম, এগুলো মূল মালিককে ফেরত দিতে হবে। হাদীস অনুযায়ী এই ব্যক্তি নবীজী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের উম্মতের মধ্যে শামিল নেই এবং ইসলামী আদালত এ ব্যক্তিকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিবে।‌
প্রিয় পাঠক! ইসলামের সাথে সংঘর্ষপূর্ণ গণতান্ত্রিক ধারাগুলোর কিছু আমরা এখানে উল্লেখ করেছি। আশা করি এতুটুকুতেই গণতন্ত্রের বাস্তবতা অনুধাবন করতে পেরেছেন। যেখানে কুরআনের বিরুদ্ধে একটি মাত্র আক্বীদা পোষণ করলে ঈমান থাকে না, সেখানে সরাসরি কুরআন হাদীস বিরোধী এতগুলো ধারা বিশ্বাস করলে কি করে তার ঈমান ঠিক থাকতে পারে?
মোটকথা, গণতন্ত্র ঈমান বিধ্বংসী এক মতবাদ বা ধর্ম। কেউ যদি মনে-প্রাণে এর ধারাগুলোকে বিশ্বাস করে, তাহলে নিশ্চিত তার ঈমান ক্ষতিগ্রস্ত হবে অথবা একেবারেই বিনষ্ট হবে।‍
আমরা যদি আখেরাতের প্রসঙ্গ কিছুক্ষণের জন্য রেখে দিয়ে শুধু মাত্র দুনিয়াবী দৃষ্টিকোণ থেকেও দেখি, তারপরও বলতে হবে, গণতন্ত্র একটি ব্যর্থ সমাজ ব্যবস্থা। এর দ্বারা কোন রাষ্ট্র চলতে পারে না। যে সমাজ ব্যবস্থায় একজন সর্বোচ্চ জ্ঞানী ও একজন রিক্সাচালকের মতামত সমপর্যায়ের মনে করা হয়, তার দ্বারা কোন দেশ তো দূরের কথা, সাধারণ একটি প্রাইমারী স্কুলও চলতে পারে না। স্কুলের হেডমাস্টার কে হবেন? সেকেন্ড মাস্টার কে হবেন? এ জন্য কিন্তু এলাকার লোকদের ভোট নেয়া হয় না। বরং এক্ষেত্রে যদি ভোটের কথা বলা হয় তাহলে বলা হয়, মূর্খ লোকেরা এর কি বুঝবে? এ জন্য তো জ্ঞানী-গুণী ও শিক্ষিত লোকদের কমিটি দরকার। তাহলে দেখুন, যে ব্যবস্থা দ্বারা স্কুলের একজন হেডমাস্টার ও প্রিন্সিপ্যাল নিযুক্ত করা যায় না, তার দ্বারা একজন রাষ্ট্রপ্রধান ও নীতিনির্ধারক কীভাবে নির্বাচিত হতে পারে? একটি দেশ কি একটি প্রাইমারী স্কুল থেকেও কম গুরুত্ব রাখে?
প্রিয় পাঠক! সারকথা হচ্ছে বর্তমান পৃথিবীর অধিকাংশ মুসলমান বুঝে কিংবা না বুঝে, ইচ্ছায় কিংবা অনিচ্ছায় ইসলামের চির দুশমন ইয়াহুদী-খ্রিস্টানদের তৈরি গণতন্ত্র নামক ধর্মের বেড়াজালে আবদ্ধ হয়ে পড়েছে। এহেন পরিস্থিতিতে মুসলমানের অমূল্য সম্পদ ঈমানকে রক্ষা করার জন্য আমাদের কর্তব্য হলো, মনে-প্রাণে এই গণতন্ত্রকে ভুল মনে করতে হবে। এর কুরআন বিরোধী ধারাগুলোকে সরাসরি কুফর জ্ঞান করতে হবে এবং সাধ্যানুযায়ী দীনী দা’ওয়াত ও তা’লীমের জন্য সময় বের করে মানুষের মাঝে ঈমান আমল পরিশুদ্ধ করার জন্য ব্যাপক মেহনত চালাতে হবে। এটিই সে পদ্ধতি, যার মাধ্যমে আল্লাহ তা‘আলা এই সব কুফরীতন্ত্রের জোয়াল আমাদের কাঁধ থেকে নামিয়ে দিয়ে সাচ্চা মুসলমান বানাবেন এবং তামাম কুফর-শিরক ও বিদ‘আত থেকে আমাদের হেফাযত করবেন; ইনশা-আল্লাহ।
একটি সন্দেহের অপনোদন
প্রিয় পাঠক! কারো মনে প্রশ্ন জাগতে পারে যে, গণতন্ত্র কুফরীতন্ত্র হয়ে থাকলে আমাদের আকাবিরে দেওবন্দ কেন এই পদ্ধতি গ্রহণ করেছিলেন? এর উত্তরে আমরা বলব, গণতন্ত্রকে মনে-প্রাণে বিশ্বাস করা আর বাতিলের ভাষা হিসাবে গণতান্ত্রিক পদ্ধতি ব্যবহার করা এক কথা নয়। কারণ তারা গণতন্ত্রের হরতাল, লংমার্চ ইত্যাদির প্রভাব বোঝে এবং এটাকে ভয় পায়। কিন্তু আমাদের আকাবিরগণ গণতন্ত্রকে সর্বদা কুফরীতন্ত্র হিসাবেই বিশ্বাস করতেন। তবে বিভিন্ন সময় দীন-ইসলামকে রক্ষার স্বার্থে বাতিলের ভাষা হিসাবে তাঁরা সাময়িকভাবে এ পদ্ধতি গ্রহণ করেছেন এবং উম্মতের ঐক্যবদ্ধ প্ল্যাটফর্ম তৈরি করে বিভিন্ন কর্মসূচীর মাধ্যমে বাতিলের মুকাবেলা করেছেন।
উল্লেখ্য, যতদিন এ মুসীবত দূর না হবে, ততদিন একান্ত ঠেকায় পড়ে, বড় অনিষ্ট থেকে বাঁচার জন্য তুলনামূলক ভালো লোককে ভোট দিতে চাইলে দেয়ার অবকাশ রয়েছে। তবে আন্তরিকভাবে কখনোই এ মতবাদকে বৈধ মনে করা যাবে না।
ঈমানকে হেফাযতের লক্ষ্যে কথাগুলো নিজে বুঝবো এবং অপরকে বোঝাবো। সেই সাথে লোকদের ঈমান-আমল পরিশুদ্ধ করার জন্য যার যার কর্মক্ষেত্রে যথাসাধ্য চেষ্টা করার পাশাপাশি আল্লাহর দরবারে নিয়মিত দু‘আ করতে থাকবো। আল্লাহ পাক আমাদেরকে সহীহ ঈমান ও হেদায়াতের উপর কায়েম থাকার তাউফীক দান করেন। আমীন।

লেখক: মুফতি মনসূরুল হক
সংকলক :- সোশাল মিডিয়া অ্যাক্টিভিষ্ট...
Zaman Masud

27/11/2019

প্রশ্ন

আমাদের বাজারের মসজিদের সাথে লাগানো একটি পাটের গুদাম ছিল। গুদামের মালিক এই এলাকা থেকে তার ব্যবসা সরিয়ে নেয়ার সময় গুদামটি মসজিদের কল্যাণে ওয়াকফ করে যায়। এরপর মসজিদ কমিটি সেটিকে এক গম ব্যবসায়ীর নিকট গোডাউন হিসেবে ভাড়া দেয়। জুমার দিন মুসল্লি বেশি হওয়া শুরু হলে মসজিদ কমিটি ভাড়াটিয়াকে সরিয়ে গুদামটির দেয়াল ভেঙ্গে মসজিদের সাথে মিলিয়ে দেয়। এক থেকে দেড় বছর সেখানেও নামায হয়। এখন মসজিদের মূল জায়গাতেই তিন তলা ভবন করা হচ্ছে। এমতাবস্থায় মুহতারামের নিকট জানার বিষয় হচ্ছে, এতদিন নামায পড়ার পর এখন ঐ জায়গাটি গুদাম বা দোকান হিসাবে ভাড়া দেওয়া যাবে কি না?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত বিবরণ থেকে বুঝা যাচ্ছে যে, মসজিদ কমিটি গুদামটি অস্থায়ীভাবে নামাযের জন্য ব্যবহার করছিলেন। জায়গাটি স্থায়ীভাবে মসজিদের অন্তর্ভুক্ত করা উদ্দেশ্য ছিল না। তাই ঐ জায়গাটি মসজিদের অন্তর্ভুক্ত হবে না। অতএব উক্ত স্থানটি পুনরায় গোডাউন বা দোকান হিসাবে ভাড়া দেওয়া জায়েয হবে।

-ফাতাওয়া খানিয়া ৩/২৯১; আলবাহরুর রায়েক ৫/২৪৮; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ২/৪৫৫; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৮/১৬০

27/11/2019

প্রশ্ন

মুহতারাম, আমাদের মসজিদের সিঁড়ির নিচের জায়গা বেশ বড়। মসজিদ কমিটির এক প্রাক্তন সদস্য উক্ত স্থানটি ভাড়া নিয়ে আতর-টুপির দোকান বানাতে চাচ্ছেন। যেহেতু তিনি অনেকদিন পর্যন্ত মসজিদ কমিটির সদস্য ছিলেন, তাই বর্তমান কমিটির অনেকেই তার এই প্রস্তাব গ্রহণ করেছেন। মুহতারামের নিকট জিজ্ঞাসা হল, মসজিদের উক্ত অংশে কি দোকান বানানো বৈধ হবে?

উল্লেখ্য, মসজিদের সিঁড়িটি মসজিদের বারান্দা হয়ে উপরে উঠেছে। সিঁড়ির নিচে দোকান বানানো হলে বারান্দাটি ব্যবহার হবে। কারণ ক্রেতারা সেখানে দাঁড়ানো ছাড়া কিছু কিনতে পারবে না।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত দোকানটি চালাতে গেলে যেহেতু বারান্দাটি ব্যবহার হবে। আর মসজিদের বারান্দা মসজিদেরই অংশ, আর মসজিদের কোনো অংশে বেচা-কেনা করা নাজায়েয। তাই উক্ত সিঁড়িঘরে দোকান বানানো জায়েয হবে না।

প্রকাশ থাকে যে, মসজিদ আল্লাহর ঘর। সম্মানিত স্থান। এক হাদীসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-

إِذَا رَأَيْتُمْ مَنْ يَبِيعُ أَوْ يَبْتَاعُ فِي المَسْجِدِ، فَقُولُوا: لَا أَرْبَحَ اللهُ تِجَارَتَكَ.

যখন তোমরা কাউকে মসজিদে বেচা-কেনা করতে দেখ তখন বল, আল্লাহ যেন তোমার ব্যবসা লাভজনক না করেন। -জামে তিরমিযী, হাদীস ১৩২১

অতএব, দোকান বানানোর প্রস্তাবটি মঞ্জুর করা কর্তৃপক্ষের জন্য জায়েয হবে না।

-আলমুহীতুল বুরহানী ৯/১৩৭; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৪/২৭৪; ফাতহুল কাদীর ৫/৪৪৬; আলইসআফ পৃ. ৭৪; মাজমাউল আনহুর ২/৫৯৫

27/11/2019

প্রশ্ন

আমাদের মসজিদের জন্য ওয়াকফকৃত জায়গার পরিমাণ ছিল চার কাঠা। পুরাতন মসজিদ সেই জায়গার উপরেই ছিল। জুমার দিন দেখা যেত মুসল্লিরা মসজিদের ভিতরে জায়গা না হওয়াতে বাইরে কাতার করত। তাই নতুন করে নির্মাণের সময় মেহরাব ও সামনের কাতারের কিছু অংশ ওয়াকফকৃত জায়গা থেকে সামনের দিকে বাড়িয়ে নেয়। যাতে পূর্ণ এক কাতার বেড়ে যায়। বর্ধিত অংশের জায়গা ছিল মানুষ চলাচলের রাস্তার কিছু অংশ। রাস্তা বড় হওয়াতে মানুষ চলাচলে সমস্যা হয় না। কারণ ঐ গলি দিয়ে গাড়ি চলে না। শুধু মানুষ যাতায়াত করে। এখন মুহতারামের নিকট জানতে চাচ্ছি, ওয়াকফকৃত জায়গা অতিক্রম করে মানুষের চলাচলের জায়গায় মসজিদ বাড়ানো ঠিক হয়েছে কি না? বর্ধিত অংশ মসজিদের হুকুমে কি না? ঐ অংশে দাঁড়িয়ে ইমামতি করলে তা সহীহ হবে কি না?

উল্লেখ্য, রাস্তার জায়গার পরিমাণ ছিল আট ফুট। মেহরাবের মধ্যে চলে আসছে সোয়া তিন ফুট।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত বর্ণনা মতে যেহেতু মসজিদে মুসল্লিদের সংকুলান হচ্ছিল না, অপরদিকে মানুষ চলাচলের রাস্তার সীমানায় মসজিদের কিছু অংশ বাড়িয়ে নেয়ার দ্বারা চলাচলেও কোনো সমস্যা হচ্ছে না, তাই সাময়িকভাবে এমনটি করা দূষণীয় হয়নি। কিন্তু যথাযথ কর্তৃপক্ষ থেকে ঐ জায়গাটি মসজিদের জন্য বরাদ্দ হওয়ার আগ পর্যন্ত বর্ধিত অংশটুকু মসজিদের হুকুমে গণ্য হবে না। ইতিকাফকারীগণ সেখানে যেতে পারবে না। অবশ্য ঐ অংশে দাঁড়িয়ে ইমামতি করতে পারবে। একারণে নামাযের ক্ষতি হবে না।

-খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৪২১; ফাতাওয়া খানিয়া ৩/২৯২; জামেউল ফুসূলাইন ১/১৮৮; ফাতাওয়া বায্যাযিয়া ৬/২৬৮

27/11/2019

প্রশ্ন

আমাদের পাশের গ্রামের এক লোকের টাকার প্রয়োজন হলে সে আমার কাছ থেকে তিন মাসের জন্য ১৫ হাজার টাকা নেয় এবং তার সাথে থাকা সাইকেলটি বন্ধক রেখে যায়। আমার এক পরিচিত ব্যক্তি সাইকেলটি দেখে বলে, এটা তো আমার সাইকেল, তুমি কোথায় পেলে? আমি বিষয়টি বললে সে বলে, আমি তাকে সাইকেলটি কয়েকদিন ব্যবহারের জন্য দিয়েছিলাম। তুমি সাইকেলটি আমাকে দিয়ে দাও। ঋণের গ্যারান্টি শেষ হয়ে যাবে বলে তাকে সাইকেলটি দেইনি। জানার বিষয় হল, এভাবে সাইকেলটি বন্ধক রাখা ঠিক হয়েছে কি না? তার মালিক আমার থেকে সাইকেলটি নিয়ে যেতে পারবে কি না? জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

লোকটির জন্য অন্যের সাইকেল বন্ধক রাখা জায়েয হয়নি। কেননা সাইকেলটি তার কাছে আমানত ছিল। আমানতের জিনিস মালিকের অনুমতি ছাড়া বন্ধক রাখা জায়েয নয়। তাই আপনার ঋণগ্রহিতার জন্য অন্যের সাইকেল বন্ধক রাখা বৈধ হয়নি। সুতরাং তার কর্তব্য হল, আপনার থেকে সাইকেলটি নিয়ে তার মালিককে ফেরত দেয়া এবং আমানতের খেয়ানত করার জন্য ঐ ব্যক্তির নিকট ক্ষমা চাওয়া। আল্লাহ তাআলার নিকট তাওবা-ইস্তিগফার করা। আর সাইকেলের মালিক সাইকেলটি নিতে চাইলে যাকে সে দিয়েছিল তার কাছ থেকে নেবে; সরাসরি আপনার থেকে নেবে না।

-আলমাবসূত, সারাখসী ২১/৭৩; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৭/১৫৩; মাজাল্লাতুল আহকামিল আদলিয়্যা, মাদ্দা ৮২৩; শরহুল মাজাল্লাহ, খালিদ আতাসী ৩/১৭৬; রদ্দুল মুহাতার ৬/৪৯৩

26/11/2019

প্রশ্ন

বাংলাদেশ ব্যাংক কলোনি, আর্সিম গেট সংলগ্ন বাজারে আমার একটি মুদি দোকান আছে। ব্যাংকের কর্মকর্তারাই এখানের সাধারণ ক্রেতা। তারা সারা মাস প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি বাকিতে নেয় এবং মাস শেষে বেতন পেয়ে মূল্য পরিশোধ করে। তাদের অন্য কোনো আয় আছে কিনা আমার জানা নেই। শুধু এতটুকু জানি যে, বেতন পাওয়ার পর তারা আমাদের ঋণ আদায় করে। এখন আমার জানার বিষয় হল, তাদের কাছে পণ্য বিক্রি করা এবং মাস শেষে আমাদের ধারণামতে ব্যাংকের বেতন দিয়ে পণ্যের পরিশোধিত মূল্য গ্রহণ করা বৈধ হবে কি? যদি বৈধ না হয় তাহলে কীভাবে তাদের কাছে পণ্য বিক্রি করব? সুন্দর সমাধানে আপনাদের সুমর্জি কামনা করছি।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনি যদি নিশ্চিত হন যে, ব্যাংক কর্মকর্তারা মাস শেষে ব্যাংক থেকে প্রাপ্ত বেতন দিয়েই মূল্য পরিশোধ করে থাকে তবে এমন লোকদের সাথে ক্রয়-বিক্রয় করা থেকে বিরত থাকতে হবে। শরীয়তের দৃষ্টিতে জেনে শুনে এ ধরনের টাকা মূল্য হিসেবে গ্রহণ করা জায়েয নয়। তবে যদি একথা নিশ্চিতভাবে জানা না যায় যে, তারা ব্যাংকের টাকা দিয়েই মূল্য পরিশোধ করছে কিংবা তাদের আয়ের অন্য কোনো মাধ্যমও থাকে তাহলে সেক্ষেত্রে তাদের কাছে পণ্য বিক্রি করতে অসুবিধা নেই এবং তাদের দেওয়া পণ্যমূল্য গ্রহণ করতে শরয়ী বাধা নেই।

-শরহুল হামাবী আলাল আশবাহ ১/৩১০; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলাদ্দুর ৪/১৯২; রদ্দুল মুহতার ৬/৩৮৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩৪২

26/11/2019

প্রশ্ন

আমি একজন ব্যবসায়ী, আমার একটি সমিতি আছে, তার কার্যক্রম নি¤েœ তুলে ধরলাম।

আমার সমিতির ৫০ জন সদস্য আছে। প্রত্যেক সদস্যের কাছ থেকে আমি প্রতি সপ্তাহে দুই কিস্তিতে ১০০০ টাকা নেই। (যার ফলে প্রতি সপ্তাহে আমার কাছে ৫০,০০০/- টাকা জমা হয়) এবং প্রতি সপ্তাহের বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ৫০ সদস্যের নাম লটারী করি, যার নাম লটারীতে ওঠে তাকে একসাথে ৫০,০০০/-টাকা দিয়ে দিই। তার পরের সপ্তাহে যে ব্যক্তি টাকা পেয়েছে তার নাম বাদ দিয়ে বাকি ৪৯ জনের নাম লটারী করি। যার নাম লটারীতে ওঠে তাকে ৫০,০০/- টাকা দিয়ে দিই। এইভাবে ৫০ সপ্তাহে ৫০ জনই আগে বা পরে ৫০,০০০/- টাকা পেতে থাকে এবং যারা টাকা পেয়েছে তারাও ৫০ সপ্তাহ পর্যন্ত প্রতি সপ্তাহে এক হাজার করে টাকা দিতে থাকে। এই সমিতি করার উদ্দেশ্য হল, যারা ছোট ব্যবসায়ী তারা একসাথে ৫০,০০০/- টাকা পেয়ে যাতে ব্যবসায় উন্নতি করতে পারে।

উল্লেখ্য, তাদের টাকা আমার কাছে তিন-চার দিন থাকে, তখন আমি ঐ টাকা দ্বারা ব্যবসা করি এবং সকল সদস্য আমার ব্যবসা করার বিষয়টি জানে এবং এ ব্যাপারে তারা আমাকে কিছু বলে না। এখন আমার জানার বিষয় হল, আমার সমিতির কার্যক্রম শরীয়তসম্মত কি না? শরীয়তসম্মত না হলে কী কারণে শরীয়তসম্মত না- অনুগ্রহ করে জানাবেন। ইনশাআল্লাহ, আমি সেই কারণ দূর করব।

উত্তর

আপনাদের সমিতির প্রশ্নোক্ত কার্যক্রমটি জায়েয। এক্ষেত্রে মূলত সকলের সম্মতিতে একজনকে ঋণ দেওয়া হচ্ছে এবং ঋণের কারণে অতিরিক্ত প্রদানের শর্ত করা হয় না। সুতরাং তা জায়েয; শরীয়তের দৃষ্টিতে এতে সমস্যা নেই।

তবে টাকাগুলো যে দু-চার দিন আপনার নিকট থাকে, ঐসময় যদি তা নিজ কাজে লাগাতে চান তাহলে সদস্যদের অনুমতি নিতে হবে। বিনা অনুমতিতে তা খরচ করা যাবে না। আর একথাও মনে রাখতে হবে যে, যদি এভাবে নিজ কাজে লাগানোর পর টাকার কোনো ক্ষতি হয় তাহলে এর দায়ভার সম্পূর্ণরূপে আপনাকে বহন করতে হবে।

-হাশিয়াতুল ক্বালয়ূবী আলা শরহিল মিনহাজ ২/৩২১; মাজাল্লাতুল বুহুসিল ইসলামিয়্যা ২৭/৩৪৯-৩৫০; ফিকহুন নাওয়াযিল ৩/৩২৫

26/11/2019

প্রশ্ন

গত বছর ডিসেম্বর মাসে আমার ছেলে খুব অসুস্থ হয়ে পড়ে। তখন আমি মান্নত করেছিলাম, আল্লাহ যদি আমার ছেলেকে সুস্থ করে দেন তাহলে আমি আগামী কুরবানীর ঈদে একটি কুরবানী করব। আল্লাহর রহমতে আমার ছেলে এখন সুস্থ। আমার জানার বিষয় হচ্ছে, প্রত্যেক বছর তো আমার উপর কুরবানী ওয়াজিব হয়। এখন আমার কি দুটো কুরবানী করতে হবে, নাকি একটি করলেই চলবে? জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

আগামী কুরবানীর দিন আপনি যদি নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক থাকেন তাহলে আপনাকে দুটো কুরবানী করতে হবে। একটি মান্নতের কুরবানী, অপরটি ঈদুল আযহার কুরবানী।

-বাদায়েউস সানায়ে ৪/১৯৪; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৬০; আলবাহরুর রায়েক ৮/১৭৫; রদ্দুল মুহতার ৩/৭৩৭

26/11/2019

প্রশ্ন

চার বছর আগে আমার ভাই আমার বিয়ের সময় আমাকে আড়াই ভরি স্বর্ণালংকার দিয়েছিল- বিয়ের গিফট হিসাবে। কিছুদিন আগে পারিবারিক একটা বিষয়কে কেন্দ্র করে তার সঙ্গে আমার সম্পর্ক খারাপ হয়। তখন থেকে সে আমার কাছে তার দেওয়া স্বর্ণালংকারগুলো ফেরত চাচ্ছে এবং আমাকে চাপ দিচ্ছে। যেহেতু সে অলংকারগুলো আমি আমার স্ত্রীকে দিয়ে দিয়েছি তাই তার থেকে সেগুলো ফেরত নিয়ে ভাইকে দেওয়া কঠিন। মুহতারামের নিকট আমার জিজ্ঞাসা হল, ঐ অলংকারগুলো আমার ভাইকে ফেরত দেওয়া কি আবশ্যক?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার ভাইয়ের জন্য অলংকারগুলো ফেরত চাওয়া বৈধ হবে না এবং সে চাইলেও আপনি তা ফেরত দিতেও বাধ্য নন।

-কিতাবুল আছার, ইমাম আবু ইউসুফ, বর্ণনা ৭৪৮; কিতাবুল আছল ৩/৩৫৭, ৩৬৭; আলমাবসূত, সারাখসী ১২/৫৫; ফাতাওয়া খানিয়া ৩/২৭২; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৪/৩৮৭

26/11/2019

প্রশ্ন

আমার প্রশ্ন হল, মেয়েদের চুল ছোট করা কি জায়েয? প্রয়োজনে চুলের অগ্রভাগ কাটা বৈধ হবে কি? নাকি চুল কখনোই কাটা যাবে না?

উত্তর

হাঁ, প্রয়োজনে মহিলাদের চুলের অগ্রভাগ কাটতে পারবে। তবে এত বেশি পরিমাণ কাটা যাবে না, যার ফলে পুরুষের বাবরি চুলের মত হয়ে যায়। তদ্রƒপ বিজাতীয় নারীদের মত কোনো ফ্যাশন কাটিংও জায়েয নয়। হাদীসের মধ্যে এ ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা এসেছে। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত-

لَعَنَ رَسُولُ اللهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ المُتَشَبِّهِينَ مِنَ الرِّجَالِ بِالنِّسَاءِ، وَالمُتَشَبِّهَاتِ مِنَ النِّسَاءِ بِالرِّجَالِ.

নারীর সাদৃশ্য গ্রহণকারী পুরুষদের উপর এবং পুরুষের সাদৃশ্য গ্রহণকারী নারীদের উপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অভিসম্পাত করেছেন। (সহীহ বুখারী, হাদীস ৫৮৮৫)

অন্য এক হাদীসে এসেছে- مَنْ تَشَبّهَ بِقَوْمٍ فَهُوَ مِنْهُمْ.

যে ব্যক্তি ভিন্ন জাতির সাদৃশ্য অবলম্বন করবে সে তাদের অন্তর্ভুক্ত হবে। (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৪০২৭)

-হাশিয়াতুত তাহতাবী আলাদ্দুর ৪/২০৩; রদ্দুল মুহতার ৬/৪০৭; ইমদাদুল আহকাম ৪/৩৫৪

26/11/2019

#ফতোয়া জিজ্ঞাসা/মাসায়েল - ০০২
#বিষয়: পুরুষের জন্য রুপার আংটি ছাড়া অন্য কোনো আংটি ব্যবহার বৈধ কি না?
প্রশ্নঃ
মুহতারামের নিকট আমার জানার বিষয় হল, পুরুষের জন্য রুপার আংটি ছাড়া অন্য কোনো আংটি যেমন ইমিটেশন, তামা ইত্যাদি ব্যবহার বৈধ কি না?
উত্তরঃ
পুরুষগণ রুপার আংটি ছাড়া অন্য কোনো বস্তুর আংটি ব্যবহার করতে পারবে না। আর রুপার আংটিও এক মিছকাল তথা সাড়ে চার মাষা, যা গ্রামের ওজনে ৪.৩৭৪ গ্রাম হয়- এর কম হতে হবে। হাদীস শরীফে এসেছে, আবদুল্লাহ ইবনে আমর রা. বলেন-

أَنّ النّبِيّ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ رَأَى عَلَى بَعْضِ أَصْحَابِهِ خَاتَمًا مِنْ ذَهَبٍ، فَأَعْرَضَ عَنْهُ، فَأَلْقَاهُ وَاتّخَذَ خَاتَمًا مِنْ حَدِيدٍ، فَقَالَ: هَذَا شَرّ، هَذَا حِلْيَةُ أَهْلِ النّارِ، فَأَلْقَاهُ، فَاتّخَذَ خَاتَمًا مِنْ وَرِقٍ، فَسَكَتَ عَنْهُ.

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক সাহাবীকে স্বর্নের আংটি পরিহিত অবস্থায় দেখে তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলেন। এরপর তিনি লোহার আংটি বানালেন। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এটা তো আরো মন্দ। এটা তো জাহান্নামীদের অলঙ্কার। অতপর তিনি সেটিও ফেলে দিয়ে রুপার আংটি পরলেন। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিরব রইলেন। -মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ৬৫১৮

অবশ্য লোহা, তামা ইত্যাদির উপর যদি রুপার প্রলেপ থাকে তাহলে পুরুষগণ সে আংটি পরিধান করতে পারবে।
তথ্য সূত্রঃ ফতাওয়া খানিয়া ৩/৪১৩; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৯; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩৩৫; রদ্দুল মুহতার ৬/৩৬০; মাজমাউল আনহুর ৪/১৯৭; মিরকাতুল মাফাতীহ ৮/৩৫৩
[ ফতোয়া বিভাগ : মারকাযুদ দাওয়াহ আলইসলামিয়া ঢাকা ]

26/11/2019

#ফতোয়া জিজ্ঞাসা/মাসায়েল - ০০১
#বিষয়: প্রাণীর ছবিবিশিষ্ট কাপড় পরিধান করা এবং এধরনের বিভিন্ন পণ্য ক্রয়-বিক্রয় ও ব্যবহারের শরয়ী বিধান কী?
প্রশ্নঃ
আমি কলেজে পড়ি। আমার বন্ধুদের অনেককেই বিভিন্ন প্রাণীর ছবিবিশিষ্ট কাপড় পরতে দেখা যায়। তারা খুব আগ্রহের সাথে এ ধরনের কাপড় কিনে পরিধান করে এবং এতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। এছাড়াও বাজারে বিভিন্ন পণ্যের গায়ে প্রাণীর ছবি থাকে যেমন মগ, গ্লাস, প্লেট ইত্যাদি। বন্ধুদের অনেকেই এসকল পণ্য ব্যবহার করে এবং বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গিফট করে। হুজুরের কাছে জানার বিষয় হল, প্রাণীর ছবিবিশিষ্ট কাপড় পরিধান করা এবং এধরনের বিভিন্ন পণ্য ক্রয়-বিক্রয় ও ব্যবহারের শরয়ী বিধান কী? মাসআলাটির সমাধান জানালে খুবই উপকৃত হব।
উত্তরঃ
প্রাণীর স্পষ্ট ছবিবিশিষ্ট কাপড় পরিধান করা শরীয়তসম্মত নয়। উম্মুল মুমিনীন আয়েশা সিদ্দিকা রা. বলেনÑ
دَخَلَ عَلَيّ رَسُولُ اللهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ وَأَنَا مُتَسَتّرَةٌ بِقِرَامٍ فِيهِ صُورَةٌ، فَتَلَوّنَ وَجْهُهُ، ثُمّ تَنَاوَلَ السِّتْرَ فَهَتَكَهُ، ثُمّ قَالَ: إِنّ مِنْ أَشَدّ النّاسِ عَذَابًا يَوْمَ الْقِيَامَةِ، الّذِينَ يُشَبّهُونَ بِخَلْقِ اللهِ.
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার নিকট আসলেন। তখন আমি একটি পাতলা চাদর দিয়ে নিজেকে আবৃত করে রেখেছিলাম, যাতে ছবি আঁকা ছিল। (এটা দেখে) তিনি রাগান্বিত হলেন। অতপর তিনি চাদরটি নিয়ে ছিঁড়ে ফেললেন এবং বললেন, কিয়ামতের দিন কঠিন আযাব ভোগকারীদের মধ্যে তারাও থাকবে, যারা আল্লাহর সৃষ্ট প্রাণীর মত আকৃতি অঙ্কন বা নির্মাণ করে। (সহীহ মুসলিম, হাদীস ২১০৭)
এছাড়া ঘরে কোনো প্রাণীর দৃশ্যমান ছবি রাখাও শরীয়তে নিষিদ্ধ। সুতরাং প্রাণীর স্পষ্ট ছবিবিশিষ্ট কাপড়, মগ, গ্লাস ইত্যাদি ব্যবহার এবং ক্রয়-বিক্রয় থেকে বিরত থাকা জরুরি।
তথ্য সূত্রঃ আলজামেউস সাগীর পৃ. ৬৮; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/৫৮; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/২০৩; আলবাহরুর রায়েক ২/২৭; রদ্দুল মুহতার ১/৬৪৭
[ ফতোয়া বিভাগ : মারকাযুদ দাওয়াহ আলইসলামিয়া ঢাকা ]

26/11/2019

নিষিদ্ধ খাবারের কোড তালিকা
═════════════════
যে সমস্ত খাবারের প্যাকেটের গায়ে নিম্মলিখিত কোড নাম্বারগুলো (এডিটিভ) থাকবে ঐ সমস্ত খাবার থেকে সবাই বেঁচে থাকিঃ
E-100, E-110, E-120, E-140, E-141, E-153,
E-160, E-163, E-210, E-213, E-214, E-234,
E-250, E-252, E-270, E-280, E-320, E-322,
E-325, E-326, E-327, E-334, E-335, E-336,
E-337, E-422, E-430, E-431, E-432, E-433,
E-434, E-435, E-436, E-440, E-470, E-471,
E-472, E-473, E-474, E-475, E-476, E-477,
E-478, E-479, E-480, E-481, E-482, E-483,
E-487, E-491, E-492, E-493, E-494, E-495,
E-535, E-542, E-550, E-570, E-572, E-573,
E-631, E-635, E-640, E-655, E-904, E-905, E-920,

লেখক: মুফতী মনসূরুল হক দা.বা.
শাইখুল হাদীস এবং প্রধান মুফতী
জামি'আ রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদরাসা
মোহাম্মাদপুর ঢাকা

25/11/2019
যোগব্যায়াম ও মেডিটেশনে অহংবোধ তৈরী হয়''===============================এতো দিন ধরে সবাই এটা জেনে আসছিলো, যোগব্যায়াম ও মেড...
23/11/2019

যোগব্যায়াম ও মেডিটেশনে অহংবোধ তৈরী হয়''
===============================
এতো দিন ধরে সবাই এটা জেনে আসছিলো, যোগব্যায়াম ও মেডিটেশনের অন্যতম দর্শন হলো অহঙ্কবোধ ঝেটিয়ে বিদায় করা। কনভেনশনালি ইয়োগা ও মেডিটেশনের ভিত্তি হলো 'নিজ' (সেলফ) বলে কিছু নেই। 'সেল্ফনেস'কে 'সেল্ফলেস' (নি:স্বার্থ) এ পরিণত করাই ইয়োগা/মেডিটেশনের উদ্দেশ্য।
কিন্তু সর্বশেষ গবেষণায় দেখা গেছে, ইয়োগা ও মেডিটেশনের ফলে আত্মহংকার ও আত্মমুগ্ধতা (নার্সিজম) বাড়ে বৈ কমেনা। সাইকোলজি ফিল্ডের নামজাদা জার্নাল 'সাইকোলজিক্যাল সাইন্স' এ গত মাসে প্রকাশিত গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, ইয়োগা ও মেডিটেশন অহংঙ্কবোধ (ইগোইজম ) বাড়িয়ে দেয়।
গবেষণাটিতে ৯৩ জন ইয়োগা শিক্ষার্থীকে ১৫ দিন ধরে তাদের 'self enhancement' পর্যবেক্ষণ করা হয়। প্রথমত, তাদের জিজ্ঞাসা করা হয় 'ইয়োগা ক্লাসের অ্যাভারেজ স্টুডেন্টদের তুলনায় তারা কেমন?', দ্বিতীয়ত, তাদের 'আত্মমুগ্ধতাসূচক' (নারসিস্টিক) প্রবণতা মূল্যায়ন করা হয় 'আমি আমার ভাল কাজগুলোর জন্য বিখ্যাত হব' কথাটা তাদের জন্য কতটুকু প্রযোজ্য, এই স্টেটমেন্টের দ্বারা। তাদের 'আত্মমর্যাদাবোধ' যাচাইয়ের জন্য 'এই মুহূর্তে, আমার সুউচ্চ আত্মমর্যাদাবোধ আছে' এই কথার সাথে সহমত পোষণ করে কিনা জানতে চাওয়া হয়।
উপরের তিনটি প্রশ্ন ইয়োগা শিক্ষার্থীদের তাদের ইয়োগা ট্রেনিং শেষ করার ১ ঘন্টা পরে জিজ্ঞাসা করা হয়। এসেসমেন্ট শেষে দেখা গেলো এদের 'self-enhancement' লেভেল লাস্ট ২৪ ঘন্টা ইয়োগা না করা অবস্থা থেকে উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি।
একইভাবে ১৬২ জন 'মেডিটেশন' শিক্ষার্থীর উপর 'self-enhancement' লেভেল পর্যবেক্ষণের স্টাডি করা হয়। 'এই স্টাডির অ্যাভারেজ অংশগ্রহণকারীর তুলনায় আমি পক্ষপাত দোষ থেকে মুক্ত' এই স্টেটমেন্টের সাথে তারা নিজেরা নিজেদের কিভাবে মূল্যায়ন করে, এই প্রশ্ন রাখা হয়। ফলাফল একই, ইয়োগার ক্ষেত্রে যে ফলাফল দেখা গেছে মেডিটেশনের ক্ষেত্রেও একই, 'self-enhancement' লেভেল উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি।
ইয়োগা ও মেডিটেশন কেবল 'self-enhancement' বাড়ায় না, এর ফলে মানুষ 'নার্সিজম'এ ও ভোগে। চোখ বন্ধ করে ধ্যান করা, নিজেকে আলাদা নির্জন জায়গায় কল্পনা করা মূলত 'আত্ম নিমগ্নতা' (self absorption) বাড়ায় যা প্রকারান্তে সেল্ফলেসনেস বৃদ্ধি করে। এতে করে অন্যকে নিয়ে ভাবনার চেয়ে নিজেকে নিয়ে ভাবনা বাড়ে ও নিজেকে বাকিদের থেকে আলাদা ভাবার প্রবণতা তৈরী হয়। ২০১৬ সালে 'সেলফ এন্ড আইডেন্টিটি' নামক জার্নালে প্রকাশিত গবেষণায় দেখা গেছে মেডিটেশনের মাধ্যমে যেখানে এম্প্যাথি (সহমর্মিতা) বাড়ার কথা ছিল সেখানে উল্টা 'আত্মমগ্নতা' বা 'নার্সিজম' বেড়ে যায়।
সুতরাং দেখা গেলো, ইয়োগা বা মেডিয়েশনের ফলে মানুষের সাইকোলজিতে বড় ধরণের পরিবর্তন আসে। এসবের প্র্যাক্টিস যারা করে তারা 'নিঃস্বার্থপরতা' ও 'সহমর্মিতা'র মতো গুরুত্বপূর্ণ দুটো মানবীয় গুণাবলী হারিয়ে ফেলে, সাথে সাথে 'আত্মমুগ্ধতা', 'অহঙ্কবোধ' ও স্বার্থপরতা'র মতো মারাত্মক কিছু বদগুণে আক্রান্ত হয় ।
https://eprints.soton.ac.uk/420273/
https://www.tandfonline.com/doi/full/10.1080/15298868.2016.1269667?fbclid=IwAR2gc2mFvfpgxS4nlJPnXjsze80iL4JtWZjfv9jvYMAHEW5cGbcKTCPrCuI&
লেখকঃ Saifur Rahman

Gebauer, Jochen, Nehrlich, A.D., Stahlberg, D., Sedikides, Constantine, Hackenschmidt, D., Schick, D., Stegmaie, C.A., Windfelder, C.C., Bruk, A. and Mander, J.V. (2018) Mind-body practices and the self: yoga and meditation do not quiet the ego, but instead boost self-enhancement. Psychological Scie...

23/11/2019

যোগব্যায়াম (ইয়োগা) নিয়ে কিছু কথা.....
==========================
পত্রিকা ও ফেসবুকের মারফত জানা গেলো আজ [[২১শে জুন, যেদিন এই পোস্ট লেখা হয়েছিলো - সত্যকথন ]] আন্তর্জাতিক যোগ দিবস। 'ইয়োগা' বা 'যোগ' সম্পর্কে অনেকেরই পরিষ্কার ধারণা নেই। সংক্ষেপে, ইয়োগা শব্দের অর্থ হলো মিলিত হওয়া, অনেকে এর অর্থ 'পুনর্মিলন'ও করে থাকে।
ইয়োগা মূলত একটা ধর্মীয় বিষয়, হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের উপাসনা করার একটি পদ্ধতি। প্রাচীন হিন্দু ধর্মীয় গ্রন্থগুলোতে ইয়োগা সম্পর্কে ব্যাপক আলোচনা আছে। ইয়োগার মাধ্যমে মূলত এমন একটা বিষয় কল্পনা করা হয় যার অর্থ 'return of the many to the One'. ইয়োগার মাধ্যমেই 'আত্মা ও প্রকৃতি' 'শিব ও শক্তি' ও 'রাম ও সীতা'র পুনর্মিলন হয়েছে বলে বিশ্বাস করা হয়।
প্রাচীন 'বেদ' গ্রন্থে ইয়োগা শব্দ অনেক ব্যবহৃত হয়েছে। এই গ্রন্থে ইয়োগার নিয়মকানুন লিপিবদ্ধ না থাকলেও 'আসন' গেড়ে নির্দিষ্ট দেহভঙ্গিতে দিনের পর দিন, মাসের পর মাস বসে মন্ত্র আওড়ানোর নিয়মকানুন বর্ণিত আছে। তখনকার সাধকরা 'ইয়োগা' শব্দ ব্যবহার না করেই অনুরূপ ভঙ্গিতে প্রচন্ড ভক্তি সহকারে সাধনা করতো। ঋগ্বেদের মন্ত্রগুলোতে ইয়োগা শব্দের ব্যবহার দেখা যায় এবং ঋষিরা সাধকদের স্বর্গীয় শক্তি প্রাপ্তির জন্য ইয়োগা সাধনার উপদেশ দিতো। যুযুর্বেদেও ঋগ্বেদের মতো ইয়োগা সম্পর্কিত রেফারেন্স দেয়া আছে। অথর্বেদ হলো যোগব্যায়ামের দিকনির্দেশনা সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ রেফারেন্স। অথর্বেদ সর্বপ্রথম আট চক্র ও নয় দরজা'র ধারণা দেয়, যা হলো ইয়োগার সর্ব প্রাচীন পাঠ।
রামকে মনে করো হয় সর্বোচ্চ যুগি (যিনি ইয়োগা প্র্যাক্টিস করেন) এবং রামায়ণ হলো practical Yoga manual. রামায়ণের পরে মহাভারত হলো দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ Yoga manual. ভাগবদ গীতা যা মহাভারতের একটি অংশ, কৃষ্ণ ও অর্জুনের আলাপচারিতা সংবলিত পুরো আঠারো চ্যাপ্টার জুড়েই ইয়োগা নিয়ে আলোচনা। এমনকি প্রত্যেকটা চ্যাপ্টারের শিরোনামও ইয়োগা দিয়ে শুরু করা। ভগবদ গীতাতে প্রাচীন গ্রন্থগুলোর ইয়োগা সম্পর্কিত বিষয়গুলোকে সুন্দর করে বিভিন্ন শ্রেণীতে বর্ণনা করা হয়েছে যেমন, কর্ম যোগ, ভক্তি যোগ, জানা যোগ, ধ্যান যোগ ইত্যাদি। মাথা ও ঘাড় খাড়া করে সোজা হয়ে বসার প্রদ্ধতিটা গীতাতে বর্ণনা করা আছে। গীতার ৬ নম্বর চ্যাপ্টারের ১২ ও ১৩ নম্বর শ্লোকে 'ধ্যান যোগ' নিয়ে লেখা আছে,
“Sitting there on his seat, making the mind one pointed and restraining the thinking faculty and the senses, he should practice Yoga for self purification (V.12)”.
“Let him hold the body, head and neck erect and still, gazing at the tip of his nose without looking around (V.13) ”.
বর্তমানে যোগব্যায়ামের বেসিক নিয়ে যা বলা হয়, তা মূলত গীতা থেকে উদ্ধৃত। গীতা থেকে উদ্ধৃত নিম্নোক্ত শ্লোকগুলো পড়লেই বিষয়টা বুঝে আসবে।
Yoga is skill in action “The one fixed in equanimity of mind frees oneself in this life from vice and virtue alike. Therefore, devote yourself to Yoga. Work done to perfection is verily Yoga''.(Chapter Two. 50).
The Yogi is one who has controlled his senses. “The Yogi, having controlled them (the senses) sits focused on Me, as the Supreme Goal. His wisdom is constant whose senses are under subjugation”. (Chapter Two 61).
A Yogi is a man who rises above the duality of action and non-action “He who sees action in inaction and inaction in action, he is wise among men, he is a Yogi and accomplisher of everything”. (Chapter Four 18).
The Yogi is not attached to the fruits of action “Abandoning the fruit of action, the Yogi attains peace born of steadfastness; impelled by desire, the non-Yogi is bound, attached to fruit”. (Chapter Five 12).
আধুনিক যোগব্যায়ামের 'আসন' ও 'মন্ত্র' মূলত প্রাচীন গ্রন্থগুলো থেকে নেয়া। 'Hatha Yoga Scriptures' নামে বিভিন্ন ঋষিদের কম্পাইলেশন থেকে জানা যায় সনাতনীদের প্রভু 'শিব' যোগব্যায়ামের মোট ৮৪টি 'আসন' বর্ণনা করেছেন। এর মধ্যে ৩২ টি আসনকে ঋষি ঘেরান্ডা নির্বাচন করেছেন যা আপনারা যারা নিয়মিত যোগব্যায়াম করেন তাদের কাছে সুপরিচিত যেমন, পদ্ব্যাসন, ভদ্রাসন, মুক্তাসন, বজ্রাসন, স্বাস্তিকাশান ইত্যাদি।
মূলবক্তব্য হলো, ইয়োগা বা যোগব্যায়াম একটি ধর্মীয় আচার এবং এর চর্চা প্রাচীন কাল থেকেই হয়ে আসছে। প্রাচীনকালের ঋষি মুনিরা স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য যোগব্যায়াম করতো না, তারা মূলত তাদের ধর্মীয় গ্রন্থগুলোতে বর্ণিত পদ্ধতি অনুযায়ী উপাসনা করতো যেই পদ্ধতির নাম ছিল 'ইয়োগা'।
লেখকঃ Saifur Rahman

Address

Digreer Char, Umedpur, Shibchar
Madaripur

Opening Hours

Monday 06:00 - 21:00
Tuesday 06:00 - 21:00
Wednesday 06:00 - 21:00
Thursday 09:00 - 17:00
Friday 09:00 - 21:00
Saturday 06:00 - 21:00
Sunday 06:00 - 21:00

Telephone

+8801950403028

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Masuduj Zaman Masud posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Masuduj Zaman Masud:

Share



You may also like