Life line

Life line �পেজ টি ফলো দিন��

04/07/2023

ইসলামের প্রতিটি কাজই শ্রেষ্ঠ.!💛

23/05/2023

আলহামদুলিল্লাহ
স্বস্তির
বৃষ্টিতে ভিজছে যশোর 🌧️☔
কোথায় কোথায় বৃষ্টি হচ্ছে ??

৹য|রে দেখি ত|রেই ভ|ল্ল|গে-!! 😁🙈৹
06/05/2023


য|রে দেখি ত|রেই ভ|ল্ল|গে-!! 😁🙈

31/12/2022

কেবিন নং ৯০২
………………….
বাবাকে নিয়ে আমরা হাসপাতালের এই কেবিনেই ভর্তি করেছিলাম।
যদিও বাবার আর কেবিনে থাকা হয়নি,
কারন শুরু থেকেই বাবাকে আই সি ইউ তে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল।
ভর্তির দিনই ডাক্তার বলে দিয়েছিলেন,
এখান থেকে বাবার ফিরে আসার আর কোন সম্ভাবনা নেই,যদি না সৃষ্টিকর্তা অবাক কিছু ঘটান।

তারপর থেকে আমরা শুধু অপেক্ষা আর চেষ্টা করেছি বাবাকে ফিরিয়ে আনতে।
বাবা প্রায় ১৫ দিন মৃত্যুর সাথে যুদ্ধ করে হেরে গেলেন।
ডাক্তারদের হিসেব মত যে কোন সময় চলে যাওয়ার কথা বললেও,বাবা ১৫ দিন লাইফ সাপোর্টে বেঁচে ছিলেন।
সন্তান বা আত্মীয় পরিজন হিসেবে চোখের সামনে এই কষ্ট দেখা যায়না।

একটা সময় প্রার্থনা করেছি বাবার জ্ঞান ফিরে আসুক,সুস্থ্য হয়ে যাক,বিনিময়ে আমরা সব কিছু করতে প্রস্তুত।
ঠিক সেই আমরাই শেষের দিকে এসে,বাবার কষ্ট সহ্য করতে না পেরে প্রার্থনা করেছি,বিশ্বাস করেছি,একমাত্র মৃত্যুই বাবাকে এই অসহ্য যন্ত্রনা থেকে মুক্তি দিতে পারে।

ভাবনা আর বিশ্বাসের এই বৈপরীত্য আমি এখনো মানতে পারিনি।
আমরা সহ বাবার ভালোবাসার মানুষগুলো প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ৯০২ নং কেবিনে বসে থাকতাম বাবার জন্য।
এত ভীড়…বসার জায়গা হতো না….
তারপরেও কেউ সেখান থেকে আসতে চাইতো না।
বাবার কারনেই কেবিনটা মিলন মেলায় পরিনত হয়েছিল।

আমরা আট ভাইবোন সহ পরিবারের সবাই কখনও এতদিন একসাথে থাকিনি।
কত আত্মীয় পরিজনের সংগে যে দেখা হয়েছে কতদিন পরে,শুধু মাত্র বাবার কারনেই।

২৭ ডিসেম্বর সকাল থেকেই আমরা বুঝতে পারছিলাম,বাবাকে আর ধরে রাখতে পারবো না।
ঠিক রাত ৮ টার দিকে ডিউটি ডক্টর কেবিনে ফোন করে জানালেন,বাবার হার্ট বিট একদম নেমে যাচ্ছে….
সাথে সাথে আমরা দৌড়ে গেলাম আই সি ইউ তে।
সত্যিই……
বাবার শরীরটা স্তব্ধ হয়ে গেছে।
না ফেরার দেশে চলে গেল আমাদের বাবা।

১২ ডিসেম্বর অচেতন অবস্থায় ভর্তি হয়ে,২৭ ডিসেম্বর ঐ অবস্থাতেই বাবা চির বিদায় নিলেন।
এই কয়দিন অন্তত: আই সি ইউ তে বাবার বেডের সামনে দাড়িয়ে বাবার শ্বাস প্রশ্বাস চলছে কিনা দেখতাম,প্রাণটা আছে এই শান্ত্বনা নিয়ে ভেজা চোখে ফিরে আসতাম।

মনিটরে তাকিয়ে যখন দেখলাম বাবার জীবনটা থেমে গেছে,
কিছু সময়ের জন্য আমি কিছুই শুনতে পাচ্ছিলাম না,দেখতে পাচ্ছিলাম না।

তারপর সকল আয়োজন সম্পন্ন করার পালা…..একাউন্টস,বিল,ডেড বডি,ফ্রিজার ভ্যান……ডেথ সার্টিফিকেট……

আমার বাবা জীবন্ত মানুষ থেকে ডেথ সার্টিফিকেট হয়ে গেল।

আমার দম বন্ধ হয়ে আসছিল বার বার….
বার বার মন খুলে কাঁদতে চেষ্টা করছিলাম….পারছিলাম না,যদি কেউ দেখে ফেলে,ছবি তোলে॥

বাবার ডেড বডিটা যখন হাসপাতালের লিফ্ট দিয়ে নামানো হচ্ছিল….ফ্রিজার ভ্যানে তোলা হচ্ছিল সাদা কাপড়ে মোড়ানো বাবার নিথর শরীর,তখন খুব করে মনে করার চেষ্টা করছিলাম,বাবার সাথে আমার শেষ কি কথা হয়েছিল!!

ভাবতেই তো পারিনি বাবা চলে যাবে,
তাই বাবার সাথে আমার কোন শেষ কথা হয়নি॥

22/12/2022

আলহামদুলিল্লাহ

22/12/2022

একদিন আমার অনেক টাকা হবে আর
সেদিন আমি অনাথ পথ শিশুদের সাহায্য করবো!
ইনশাআল্লাহ

ফজরের নামাজ আর ফজরের বাতাস সবার ভাগ্যে জোটে না, শুধু মাত্র ঈমানদার দের ভাগ্যেই জোটে।"আলহামদুলিল্লাহ"❣️
11/12/2022

ফজরের নামাজ আর ফজরের বাতাস সবার ভাগ্যে জোটে না, শুধু মাত্র ঈমানদার দের ভাগ্যেই জোটে।

"আলহামদুলিল্লাহ"❣️

06/12/2022

আলহামদুলিল্লাহ গোল 4😍🇧🇷😻

এটা সুন্দর
05/12/2022

এটা সুন্দর

হাফ টাইমের আগেই ৪ টা গোল ব্রাজিল মানে আগুন 🇧🇷🇧🇷🇧🇷
05/12/2022

হাফ টাইমের আগেই ৪ টা গোল ব্রাজিল মানে আগুন 🇧🇷🇧🇷🇧🇷

05/12/2022

গোল ব্রাজিল মানে আগুন 🇧🇷

05/12/2022

আজকে ব্রাজিল
হারবে😓 জিতবে❤️

14/11/2022



- || - আ্ঁমি্ঁ কা্ঁর্ঁ -||-🙈🥀🐸

•😾🔪

14/11/2022

🦋- জীবনে হাজার'টা সমস্যার, একটাই সমাধান ‼
🦋- আল্লাহর ভরসা..‼️🤲💖
☺️

শান্তি 🌼🖤
13/11/2022

শান্তি 🌼🖤

11/11/2022

—মুড়ি খাচ্ছি... 🙂

—কারণ 🙄

-উচিত কথার ভাত নাই 😥😒

11/11/2022

°★

"𝙄 𝘼𝙢 চিকনা 🕴️ & 𝙔𝙤𝙪 😊

°★

🇦প্রিয় দল কোন টা🌸🇧🇦🇷🌸🇧🇷🌸
09/11/2022

🇦প্রিয় দল কোন টা🌸🇧

🇦🇷🌸

🇧🇷🌸

09/11/2022

প্রিয় খেলোয়ার🌸🇧🇷🇧🇷

08/11/2022



️E𝐗 এর মান নির্নয় কর–!😌🐸

▫️

05/11/2022

🌸😔

-নারী মানেই পরী যদি সে হয়........ পর্দা ওয়ালী🖤🧕
05/11/2022

-নারী মানেই পরী যদি সে হয়........ পর্দা ওয়ালী🖤🧕

_পরিস্থিতি যেমনই হোক_🙂_যে ভালোবাসে সে কখনো ছেড়ে যায় না _💔
04/11/2022

_পরিস্থিতি যেমনই হোক_🙂

_যে ভালোবাসে সে কখনো ছেড়ে যায় না _💔

তুমি কি আমার হাসি মুখের আবার কারন হবে,😅💔
04/11/2022

তুমি কি আমার হাসি মুখের আবার কারন হবে,😅💔

04/11/2022

🌸

- বিশ্বের সবচেয়ে সুখী মানুষ সে যে অল্পতেই আলহামদুলিল্লাহ বলে..!!🖤🖤

🌸

04/11/2022

তুমি যতো বেশি সততার সাথে কথা বলবে
তত বেশি সম্মানিত হবে !
- হযরত আলী (রাঃ)

~শয়তান যদি আপনার পাশে থাকতো তাহলে ❝আল্লাহ❞🖤লেখা থেকে বিরত রাখতো😢
03/11/2022

~শয়তান যদি আপনার পাশে থাকতো তাহলে ❝আল্লাহ❞🖤
লেখা থেকে বিরত রাখতো😢

31/10/2022

নভেম্বরে যাদের জন্মদিন তাদের খুব তাড়াতাড়ি বিয়ে হওয়ার সম্ভাবনা আছে!

TO DAY IS BEST PHOTO
29/10/2022

TO DAY IS BEST PHOTO


29/10/2022

°
\- মন খারাপ নাকি সময় খারাপ.. 🥺💔

°

29/10/2022

- কখনো কারো prio মানুষ হতে পেরেছেন !

🙂💔

28/10/2022

#বেপরোয়া_ভালবাসা
#লিখনীঃ #মনা_হোসাইন
#পর্বঃ ৪৩

রাত ১ টা বেজে ৪০ মিনিট আদিবার সাথে ঝগড়া করতে করতে কখন যে ঘড়ির কাঁটা এগিয়ে গিয়েছে আদি বুঝতেই পারে নি. তবে এখন আর চোখে খোলে রাখা সম্ভব হচ্ছে না। গতরাতে সে একটুও ঘুমাতে পারেনি। জার্নি করে এসেছে তারউপড় আদিবার চিন্তা তো ছিলই। আদিবা এখনো বক বক করে চলেছে আদি এবার বাধ্য হয়েই বলল,

-"আচ্ছা ঠিক আছে আপনারি জয় হয়েছে। বিড়াল আপনিই মেরেছেন এখন আমরা একটু ঘুমাই..?

আদিবা সোজা উত্তর দিল,
-"আমার ঘুম পায়নি..

-'তা পাবে কেন প্লেনে সারাক্ষন ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে এসেছেন বাসায় এসেও ঘুমিয়েছেন আপনার তো ঘুম পাওয়ার কথা না।

-"আপনার সাথে বিয়ে হয়েছে বলে কী ঘুমাতেও মানা..?

-"জ্বি না আপনার যা খুশি করতে পারেন।

-"বেশ তাহলে আমার এখন গল্প করতে ইচ্ছে করছে চলুন গল্প করি।

-"মানে কী..?

-"আপনিই তো বললেন যা খুশি করা যাবে।

-"আদিবার বাচ্চা এবার কিন্তু বাড়াবাড়ি করছিস। চুপচাপ ঘুমা তানাহলে কানের নিচে এমন মা*রব কেঁদে কূল পাবিনা।

-"কী সর্বনাশ বাসর রাতেই নারী নি*র্যাতন?

-"আদিবা আমাকে একটু ঘুমাতে দে প্লিজ। কাল অফিসে জরুরি মিটিং আছে।

-"আমি কী বাঁধা দিয়েছি নাকি..? ঘুমান যতখুশি ঘুমান।

বলেই আদিবা বিছানা ছেড়ে উঠে গেল। আর কিছু না বলে দরজার দিকে হাঁটা দিল।আদিবার কান্ডে আদি অবাকের উপড় অবাক হচ্ছে।দরজা পর্যন্ত যেতেই আদি বলল,

-"আজব তো ওদিকে কোথায় যাচ্ছিস?

-"বাইরে...

-"এত রাতে বাইরে কোন দুঃখে..?

-"দুখে যাব কেন সুখে যাচ্ছি। আমার একমাত্র জামাই একদিনেই আমার উপড় সব ইন্টারেস্ট হারিয়ে ফেলেছে সেই সুখে বাইরে একা একা হাঁটতে যাচ্ছি।

-"এসব কোন ধরনের কতাবার্থা? আমি কখন বললাম ইন্টারেস্ট হারিয়ে ফেলছি?

-"সব কি মুখে বলতে হয়? আপনি ঘুমান আমি বাইরে যাচ্ছি।

-"ওই দাঁড়া..

আদিবা দাঁড়াল না আদি নিচে নেমে এগুতে এগুতে বলল,

-"তো এখন আমি ঠিক কী কী করলে প্রমাণ হবে বউয়ের প্রতি আমার ইন্টারেস্ট আছে..? একটু আগে যা যা করেছিলাম সেগুলো রিপিট করব?

আদিবা মুখ ভেঙছি কেটে জবাব দিল,

-" একটু আগে যা যা করেছেন,এসব সব ছেলেরাই করতে চায় কার সাথে করছে ব্যাপার না এসব করতে পারলেই হল। ছেলে হয়ে যখন জন্ম নিয়েছেন যখন আপনারো এসব কিছুতে ইন্টারেস্ট থাকবে এটাই স্বাভাবিক। তাইবলে এ থেকে প্রমান হয় না যে আপনার বউয়ের জন্য টান আছে।

আদি চোখ বন্ধ করে নিজেকে রাগ সংযত করার চেষ্টা করে বলল,

-"আচ্ছা তাহলে বল কি করলে প্রমাণ হবে টান আছে?

-"বাইরে চলুন আর আমার সাথে গল্প করুন।

-"খোদা আমাকে ধর্য্য দাও।

আদিবা কিছু না বলেই বাইরে চলে গেল আদি বাধ্য হয়েই পিছু পিছু গেল। বাইরে এসে আদিবা একটা বেঞ্চে বসল আদিও তার পাশে বসেছে।

-"তো এখন বল আমার সাথে তোর কী এমন গল্প করার আছে? জীবনে কোনদিন তো ভাল করে একটা কথা বললি না আজ কী এমন গল্প বলবি বল শুনি।

-"এমন বাঁকা কথা বললে কারোর গল্প করতে ইচ্ছে করবে?যাইহোক আপনি এখানে বসুন আমি একটু ঘুরে আসি।

-"মানে কী? রাতের বেলায় কোথায় যাবি?

-"কোথাও যাব না এখানেই থাকব। আর আপনি বসে বসে আমাকে পাহারা দিবেন।

-"কোন মানে হয়..?

আদিবা আদির কথার পাত্তা না দিয়ে চলে গেল। আদি আদিবার কর্মকান্ড দেখছে আর রাগ নিয়ন্ত্রনের চেষ্টা করছে আদিবা অন্তত কয়েকবার বাসার পুরো বাগান চক্কর দিয়ে ফেলেছে তবুও থামার নাম নেই। আদির ঘুম পেলেও সে ঘুমাতে পারছে না কারন এই মেয়ের বিশ্বাস নেই আদি চোখ বুজলেই এদিক ওদিক চলে যাবে সন্দেহ নেই।

মুটামুটি ঘন্টা খানিক পর আদি উঠে আদিবার কাছে গেল।

-"একটু পরেই ভোর হয়ে যাবে এখন ভিতরে যাই..?

-"উহু...

-"উফফ আদিবা ছোট বাচ্চাদের মত এসব কি হচ্ছে..?

-"আপনি জানেন এখন কী হবে..?

-"কী হবে..?

-"বৃষ্টি নামবে..

-"হুম আকাশে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে সেই জন্যেই বলছি চল ভিতরে যাই...

-"নাহ আজ আমরা বৃষ্টিতে ভিজব।

-"মানে..?

আদিবা হটাৎ করেই কেন যেন মন খারাপ করে ফেলল।হাস্যজ্জল মুখে মূহুর্তেই মেঘ জমেছে..সে অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে নীরব গলায় বলল,

-"আপনি জানেন আমি কত বছর বৃষ্টিতে ভিজিনি..?

আদি উত্তর দিল না কোন কারনে তারও মন খারাপ হয়েছে...

আদিবা একটু থেমে বলল,
-"উত্তর দিলেন না? তারমানে আপনার মনে আছে? সেদিন ভিজেছিলাম জন্যে আপনি পুরো একদিন আমাকে খেতে দিন নি।

আদিও অন্যদিকে মুখ করে জবাব দিল,

-"আমি কোনকিছুই সহজে ভুলি না তাছাড়া বৃষ্টিতে ভেজা কোন যুক্তিসংগত কাজ না। কোন সুস্থ মানুষের বৃষ্টিতে ভেজার ইচ্ছে হতে পারে বলে আমার মনে হয় না।

-"আপনার কী মনে হয় পৃথিবীর সবার পছন্দ অপছন্দ গুলো আপনার মত হবে?

-"নাহ পৃথিবীর সবাইকে আমি আমার সাথে রাখব না। তাই তাদের পছন্দ অপছন্দ নিয়ে আমার ভাবার কিছু নেই কিন্তু যাকে আমার সাথে থাকতে হবে তার পছন্দ অপছন্দগুলো আমার মত হওয়া জরুরি। তাছাড়া আমি কখনো নিজের জন্য কিছু করিনি যা করেছি তোর ভালর জন্যই করেছি...

-"সত্যিই তাই..?

-"অবশ্যই তাছাড়া তুই ভুল বলেছিস তুই কদিন আগেও গ্রামে বৃষ্টিতে ভিজেছিস আমি কিছুই বলিনি।

-"এই ভেজা আর আনন্দে ভেজা কী এক? বৃষ্টিতে ভেজার ইচ্ছেটা অনেক আগেই হারিয়ে গিয়েছে।

-"ক্ষতিকর বিষয়ে ইচ্ছে না থাকাই ভাল।

-"ওহ...

আদিবা পুরো কথা শেষ করার আগেই আকাশ কেঁপে বৃষ্টি শুরু হল তবে আদি কিংবা আদিবা কেউই ভিতরে যাওয়ার ব্যাস্ততা দেখাল না বরং আদিবা খিলখিল করে হেসে উঠল সে আদির হাত ধরে টেনে বাগানের ফাঁকা দিকটায় নিয়ে গিয়ে দাঁড়াল অঝোর ধারায় বৃষ্টি পড়ছে আদি আদিবা দুজনেই ভিজে একাকার। আদিবা আদির হাত ধরে ঘুরে ঘুরে ভিজছে। প্রথম দিকে আদির বিরক্ত লাগলেও আদিবার খুশি দেখে তাকে বাঁধা দিতে ইচ্ছে করল না কিছুক্ষনের মধ্যে তারও ভাল লাগতে শুরু করেছে। হয়ত আদিবা তার সাথে ভিজছে জন্যেই ভাল লাগছে। তাই সেও বেশ অনেক্ষন ভিজল। দেখতে দেখতে সময় কেটে গেল। ভোর হতে আর কিছুক্ষন।

-"আদিবা এবার ভিতরে চল বেশি ভিজলে ঠান্ডা লাগবে..

হটাৎ করেই আদিবা আদিকে জড়িয়ে ধরল আদিবা এমন কিছু করবে আদি ভাবতেও পারেনি সে এক মিনিটের জন্যে থমকে গেল। হাত দুটো কাঁপছে,বুকের ভিতর উতাল পাতাল শুরু হয়েছে। আদি স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে দেখে আদিবা বলল,

-"হাঁটতে ইচ্ছে করছে না কোলে নিন।

আদি কোন জবাব না দিয়ে আদিবাকে কোলে নিয়ে ঘরে গেল। আদিবাকে ফ্রেশ হতে বলে নিজেও গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আসল।



বেচারার বেহাল দশা এতক্ষন ভিজেছে তারউপড় সারারাত না ঘুমানোর ফলে চোখ লাল হয়ে আছে। যাই হয়ে যাক এখন একটু ঘুমাতেই হবে ভেবে আদি যেই বিছানায় গাঁ ছুয়াল সাথে সাথে আদিবা হন্তদন্ত হয়ে ছুটে আসল। আদি উদ্বেগ নিয়ে তাড়াতাড়ি উঠে বলল,

-"কী হয়েছে আদিবা..?

-"কি হয়েছে মানে? আপনি শুয়ে পড়ছেন কোন বুদ্ধিতে?

-"কেন কী হয়েছে? এখন তো তোর গল্প করা শেষ হয়েছে এখন ঘুমাতে অসুবিধে কী?

-"আশ্চর্য তো সকাল হয়ে গিয়েছে দেখতে পাচ্ছেন না?

-"তো সকালে কী ঘুমানো বারণ আমার অফিস দশটায় এখনো ঘুমালে অনেক্ষন ঘুমানো যাবে। একটু না ঘুমিয়ে গেলে কাজে মন বসবে না তুই তো জানিস আংকেল অনে আশা নিয়ে আমাকে দায়িত্ব দিয়েছে যদি তার মান রাখতে না পারি...

-"কার না কার আশা পূরণ করতে গিয়ে নিজের বউকে না খায়িয়ে রাখবেন?

-"মানে?

-"আমি কি সকালে ব্রেকফাস্ট করব না নাকি? আপনি এখন ঘুমালে ব্রেকফাস্ট কে বানাবে..? ভালয় ভালয় এখনী নিচে গিয়ে রান্না করুন।

আদি বেশ অবাক হয়ে তাকাল আদিবার দিকে।

-"এভাবে তাকিয়ে আছেন যে? খেতে চাওয়াও অন্যায় তাই না?

-"আমি তা বলিনি। তুই তো রান্না পারিস।

-"ওহ তারমানে সকালে যা যা বলেছিলেন সব মিথ্যে ছিল? আমাকে কাজ করতে হবে না এসব মিথ্যা ছিল।

আদি উত্তর দিতে পারল না উঠে রান্না ঘরের দিকে হাঁটা দিল।



চলবে...!!

28/10/2022

আগামী 2023 সালের মার্চের 23 তারিখে ১ম রোজা শুরু হবে।

Alhamdulillah.

27/10/2022

ছেলে :: শূনলাম তোর নাকি বিয়ে.?
মেয়ে :: হূম রে.
ছেলে :: ওহ ভালো,তো তর বর কী কাজ করে.?
মেয়ে :: ব্যাংকে জব করে..!!
ছেলে :: বেশ তো বিয়ে করে ফেল
মেয়ে :: তুই কবে বিয়ে করবি
ছেলে :: আমি তো দেবদাস আমার লাইফে
ভাবছি un ম্যারেড থাকবো
মেয়ে :: কেন,কাউকে লাভ করতি নাকি
ছেলে :: হুম করতাম,but সে আর আমার নেই
মেয়ে :: মেয়েটা কে..??
ছেলে :: ছিলো একজন বাদ দে এসব
রাখী ঘূমাবো..!!
মেয়ে :: অন্যদিন রাত ৩টা পযন্ত লাইনে থাকিস
আর আজ ৮টা বাজেই ঘুমাবি..??
ছেলে :: কি করবো কথা বলার মতো তেমন কেউ নেই
মেয়ে :: নেই মানে,আমি আছি তো
ছেলে :: হুম তুই আছিস,but অন্য কারুর sms এর জন্য wt করতে
আর আজ থেকে তো আমি আর অনলাইনেই আসবনা..!!
মেয়ে :: কেনো আসবি না..??
ছেলে :: যানিস খূব কষ্ট হচ্ছে
মনে হয় আমি আর বাচবোনা
মেয়ে :: চূপ করবি,বেশি বক বক করবিনা
ছেলে :: আসলে মন থেকে লাভ করলে
সত্যিই কাদতে হয় রে..!!
মেয়ে :: এই যে হিরু আর কাদতে হবেনা
বললেই তো পারিস আমায় ভালোবাসিস
ছেলে :: হুম ভালোবাসি but বলিনি
তুই যদি আমায় গ্রহন না করিস
মেয়ে :: গ্রহন করবনা কেনো
তূই ও তো আমার মতো মাটির তৈরি মানূষ
ছেলে :: তবও আমি খূব কালো আর তুই অনেক সুন্দর..!!
আর তোর তো বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে
এখন ,ভালোবাসি বললেই কী হবে
মেয়ে :: পাগল আমি সুধূ তোকে লাভ করি
আর অন্য কাউকে না
love u so mc
ছেলে :: সত্যি
মেয়ে :: ^হুম সত্যি সত্যি সত্যি
but তুই আমাকে কথা দে কখনো ছেড়ে
যাবিনা..!!
ছেলে :: আমি তোকে কথা দিলাম
যতদিন বেচে থাকবো
তোকে ছেড়ে কোথাও যাবনা
যত পবলেমই হোক তোকে লাভ করবো
মেয়ে :: ঘুম ধরছে পরে কথা হবে
ছেলে ::hmm ok lv u gd n8

26/10/2022

#বৃষ্টিময়_প্রেম
#পর্বঃ৩১

আকাশ হতে বিন্দু বিন্দু জলরাশি গড়িয়ে পড়ছে আপন গতিতে। মেঘরাশি একেঅপরের সাথে ঝগড়ায় ব্যস্ত, বাতাসের গতিবেগও বাড়ছে ক্রমশ। এরই মাঝে ছাদে দাড়িয়ে আছি পূর্ণ আর আমি। না উনি নিজে নিচে যাচ্ছেন, না আমাকে যেতে দিচ্ছেন। উনার শক্ত হাতের বন্ধনীতে আবদ্ধ আছে আমার ছোট্ট হাতজোড়া। যে দৃঢ় হাতের বন্ধন ছিন্ন করার শক্তি, সাধ্য কোনোটাই আমার নেই!

পূর্ণ শুধুই একদৃষ্টিতে চেয়ে আছেন আমার দিকে। বৃষ্টির মাঝে এভাবে তাকিয়ে থাকার কারণে উনার চোখজোড়া খানিকটা লালচে হয়ে আছে, তবে এই লাল বর্ণটা কি নিছক বৃষ্টির কারণে নাকি অন্য কোন কারণে আমি ঠিক বুঝতে পেলাম নাহ। উনি-আমি কিছু বলার আগেই মেঘদ্বয় ক্ষিপ্ত হয়ে ডেকে উঠলো প্রবল স্বরে। যে গর্জনে ভীষণভাবে কেপে উঠলাম আমি। চোখমুখ খিচে বন্ধ করে দাঁড়িয়ে রইলাম কোনোরকম। বৃষ্টি আমার পছন্দ হলেও বিদ্যুৎ একেবারেই পছন্দ নাহ, খুব ভয় লাগে বিদ্যুৎ চমকালে। কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই পূর্ণ তড়িৎ বেগে টেনে নিলেন আমায়, আলতো করে আমার মাথা চেপে ধরলেন তার বুকে।

ঘটনার আকস্মিকতায় বিস্মিত হয়ে বন্ধ চোখদ্বয় খুলে ফেললাম আমি। বৃষ্টিতে ভিজে উনার সাদা শার্ট গায়ের সাথে লেপ্টে আছে, যার দরুন তার বুকে মাথা রেখে তার শরীরের উষ্ণতা অনুভব করতে পেলাম আমি। উনার কি জ্বর এসেছে নাকি? গা এরকম গরম কেন তার? আমি কিছু জিজ্ঞেস করার আগেই পূর্ণ কোমল কন্ঠে বললেন,

---এত ভয় পাচ্ছিলে কেন তুমি? রিল্যাক্স। আমি আছি না তোমার সাথে? আর কখনো এভাবে ভয় পাবেনা।

উনি মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললেন। এদিকে তার নরম কথায়-আচরণে এতক্ষণের অভিমান ভেঙে চুরমার হয়ে গেলো আমার! তবু কিছু না বলে চুপচাপ উনার সাথে লেগে থেকে তার বুকের মাঝে কম্পনরত ধুকপুক ধ্বনি শুনতে লাগলাম আমি। খানিকবাদে পূর্ণ আবার বললেন,

---কথা বলছোনা কেন আমার সাথে, তুরফা? কিছু বলো। তখন থেকে তুমি একটা কথাও বলোনি আমার সাথে।

যদিও পূর্ণর উপর জমা অভিমান আমার আগেই ধুয়ে গেছে তবুও উনাকে খানিকটা জালাতন করতে উতলা হলো মন! গলায় কৃত্তিম রাগ মিশিয়ে বললাম,

---কেন কথা বলবো আপনার সাথে? আপনি কথায় কথায় আমার উপর রাগ দেখান। আমিও রাগ করেছি আপনার উপর।

---তখন আমার মাথা গরম ছিলো খুব। তোমায় তো একবার বলেছিলাম আমার কাজ আছে তুমি তাও জিদ করছিলে। এজন্য রাগের মাথায় ধমক দিয়েছি।

---কখন কাজ থাকেনা আপনার? যখনই কিছু বলি তখনি শুধু কাজ কাজ আর কাজ!! আমার জন্য তো সময়ই নেই আপনার কাছে। আবার আমাকে খোটাও দিয়েছেন ফাকা বসে আছি বলে। ভার্সিটিতে যাই আগে, অনেকগুলো ছেলেবন্ধু বানাবো আর ওদের সাথে ঘুরতে বেড়াবো। আপনার ফ্রি হওয়ার আশায় থাকলে এ জীবনে আর কোনকিছু করা হবেনা আমার!!

আমার কথায় পূর্ণ আচমকাই ছেড়ে দিলেন আমায়। কোনমতে টাল সামলিয়ে দাড়ালাম আমি। এরই মাঝে পূর্ণ তীক্ষ্ণ কন্ঠে বলে উঠলেন,

---কথা বলতে বলেছি তার মানে এই নয় যে যা মন চায় তা-ই বলবে! খুব সাহস বেড়েছে তোমার, তাই না? পা ভেঙে বাসায় রেখে দিবো, বেয়াদব।

---আসছেন আমার পা ভাংতে। শখ কত! আপনি পা ভাংগার আগেই আমি ওদের সাথে পালিয়ে যাবো।

---তুরফা। আমায় রাগিয়ো না বলছি। এখন আমি রেগে কিছু বললে পরে আবার তুমিই কস্ট পাবে।

শক্ত চোয়ালে বললেন উনি। উনার মুখের দিক তাকিয়ে এ মুহুর্তে চুপ করাটাই ভালো মনে করলাম আমি। তাই কথা না বাড়িয়ে তাকে মুখ ভেংচিয়ে চলে আসছিলাম। এমন সময় উনি পেছন থেকে বললেন,

---কেউ রাগ করেছিলো বলে তার জন্য চকলেট নিয়ে এসেছিলাম। সে এখন আমায় রাগিয়ে দিয়েছে তাই এগুলো আমি নিজের কাছেই রাখছি।

চকলেটের কথা শুনে পেছন ফিরে তাকাতেই দেখি পূর্ণর হাতে আমার প্রিয় ডার্ক চকলেট। কত্তদিন খাইনি এটা! খুশি হয়ে উনার কাছে থেকে চকলেট নিতে ধরতেই উনি হাত উচুতে তুলে বললেন,

---এখন নিতে চাচ্ছো কেন? তখন রাগ ভাংগিয়ে নিজে থেকে দিতে চাচ্ছিলাম সেটার তো সুযোগই দিলেনা। উলটো রাগিয়ে দিলে আমায়। এখন এমনি এমনিই কেন দিবো তাহলে তোমায়? ধরতে পারলে দিবো, তাছাড়া নয়।

উনার কথা শুনে মেজাজ খারাপ হয়ে গেলো আমার। আমি কি জানতাম উনি চকলেট আনবেন আমার জন্য? আর দিতেই যখন এসেছে তখন এসব নাটক করার কি আছে! উনি কত লম্বা, তার মধ্যে হাত উচু করে উপরে উঠিয়ে রেখেছেন। আমি তো লাফিয়েও তার উচু করা হাতের নাগাল পাবোনা। তাই জ্বালাময়ী কন্ঠে বললাম,

---দিতে মন চাইলে সরাসরি দিবেন। নাহলে দিবেন নাহ। বৃষ্টির মধ্যে ভিজে আর কোন তামাশা করতে মন চাইছেনা আপনার সাথে আমার।

আমার তীক্ষ্ণ কণ্ঠের বিপরীতে উনি সামান্য হাসলেন। তারপর আমার হাত ধরে টেনে সেহাতের মুঠোয় দিয়ে দিলেন চকলেটটা। হঠাৎই আমার নাক টেনে দিয়ে বললেন,

---ছোট্ট একটা মানুষ হয়ে এত তেজ কোথা থেকে পাও তুমি? আমার উপরও রাগ দেখানো শিখেছো আজকাল! খুব বউ বউ আচরণ লক্ষ্য করা যাচ্ছে তোমার মধ্যে, তুরফা। ব্যাপার কি?

বাকা হেসে বললেন উনি। তার কথার বিপরীতে কোন কথা বললাম নাহ আমি। গরম হওয়া গাল লুকোতে অন্যদিকে তাকালাম। পূর্ণ হাল্কা হেসে নিচে যেতে যেতে বললেন,

---অনেক হয়েছে। এবার জলদি নিচে এসো। কতক্ষণ ধরে বৃষ্টির মধ্যে দাঁড়িয়ে আছো সে খেয়াল আছে? ঠান্ডা লাগলে কি হবে? স্টুপিড।

উনার কথায় বোকা বনে গেলাম আমি। নিজেই আমায় বৃষ্টির মধ্যে দাড়িয়ে রাখলেন এতক্ষণ আবার এখন নিজেই বকছেন বৃষ্টিতে দাঁড়িয়ে থাকার জন্য! খারাপ লোক একটা।

______________

পূর্ণর পিছু পিছু সিড়ি দিয়ে নামতে নামতে হাতে রাখা চকলেটটা নেড়েচেড়ে দেখতে লাগলাম আমি। হঠাৎই মনে পড়লো ছোটবেলার কথা। উনি তখনও আমার জন্য চকলেট আনতেন। পুরনো স্মৃতি মনে হতেই হাসির রেখা চলে এলো ঠোঁটের কোণে। মুচকি হেসে বললাম,

---থ্যাংকিউ, তাজওয়ার ভাইয়া।

আমার ডাকে থমকে গেলেন পূর্ণ। আচমকাই পা থেমে গেলো উনার, যার দরুণ উনার পিঠের সাথে সামান্য ধাক্কা খেলাম আমি। ভাগ্যিস এতক্ষণে আমরা সিড়ি থেকে নেমেছি নয়তো দুজনেই পড়ে যেতাম, মাথায় হাত ডলতে ডলতে ভাবলাম আমি।

এদিকে পূর্ণ অবাক চোখে বললেন,

---এতদিন পর এ নামে ডাকছো যে?

আমি স্মিত হেসে বললাম,

---আসলে আমি সেদিনই অফিসে গিয়ে জেনেছি যে আপনিই তাজওয়ার ভাইয়া। যদিও তখনই কথা বলতে চেয়েছিলাম এ ব্যাপারে। কিন্তু পরে বলবো বলবো করে আর সুযোগই হয়নি।

পূর্ণ চোখে বিস্ময় ঢেলে বললেন,

---তুমি অফিসে গিয়ে জেনেছো মানে? আমাদের বিয়ের দিন শুনোনি আমার পুরো নাম?? তুমি কি বলছো এসব, তুরফা?

উনার কথায় খানিকটা লজ্জাই পেলাম আমি। আসলেই বিয়ের দিন ক্ষুধায় অসস্তিতে আমি কোনকিছুই ঠিকমতো খেয়াল করিনি। একপ্রকার বাধ্য হয়েই বিয়ে করছিলাম যেহেতু তাই কোনমতে কবুল বলে দিয়েছি। এখন এ ব্যাপারে আমি যথেষ্ট লজ্জিত। তাই ভীষণ ইতস্ততভাবে বললাম,

---আসলে বিয়ের দিন শরীরটা ভালো ছিলোনা আমার। আপনি তো দেখেছিলেনই আমার কেমন অবস্থা হয়েছিলো। ওর মধ্যে কি আর খেয়াল করবো বলুন। কোনরকম বিয়ে সেড়ে ফেলার চিন্তায় ছিলাম শুধু আমি।

আমার কথা শুনে পূর্ণ হতাশ দৃষ্টিতে চেয়ে রইলেন। আহত গলায় বললেন,

---অথচ আমাদের বিয়ের সবকিছু আমার মনে আছে। তোমার ক্লান্ত মলিন চেহারা, তোমার কবুল বলা, আমার কবুল বলা। ভেবেছিলাম তুমি ক্লান্ত হলেও বিয়ের ক্ষেত্রে মনোযোগী ছিলে। কিন্তু আমার ধারণাকে তুমি ভুল প্রমাণ করলে। এত খামখেয়ালিপনা কেন তোমার মধ্যে, তুরফা?

পূর্ণর কথার বিপরীতে কি জবাব দিবো আমি তৎক্ষণাত ভেবে পেলাম নাহ। হঠাৎ করেই যেন অপরাধবোধ কাজ করলো নিজের মধ্যে। পূর্ণ তো ভুল কিছু বলেন নি, ভুল আমারই ছিলো। কিন্তু আমি নিজেও ইচ্ছা করে অমনোযোগী ছিলাম নাহ। পরিস্থিতিটাই এমন ছিলো। উনাকে কিভাবে বুঝাবো বুঝতে পারলাম নাহ। তবুও কাচুমাচু করে উনাকে কিছু বলতে যাবো তার আগেই আমায় জোরেশোরে ডাকলেন দাদি। দাদির কন্ঠ শুনে পূর্ণ একবার আমার দিক চেয়ে চলে গেলেন রুমে, আমিও দীর্ঘশ্বাস ফেলে চুপচাপ চলে গেলাম দাদির কাছে।

_________________

কাজিনমহলের সাথে গল্পগুজব করে রাতের খাবার খেয়ে পূর্ণর রুমে চলে আসলাম আমি। দাদি নিজেই আজ পাঠিয়েছেন আমায় উনার রুমে। বেশি মানুষ হয়েছে বিধায় বাকি রুমগুলোই অন্যরা গাদাগাদি করে থাকবে। যাই হোক, রুমে এসে দেখি পূর্ণ বালিশছাড়া চুপচাপ শুয়ে আছেন উপর হয়ে। উনাকে এভাবে দেখে ভ্রু কুচকে গেলো আমার। কি হয়েছে লোকটার? ডিনারেও তেমন কথা বললেন না আজ কারও সাথে, আগে আগে খেয়েই চলে এলেন। আমি ভেবেছিলাম সবসময়ের মতো এবারও উনার কাজ আছে তাই এমন করছেন কিন্তু উনি তো চুপচাপ শুয়ে আছেন রুমে! ব্যাপার কি?

খাটের কোণে গিয়ে পূর্ণর পাশে বসে উনাকে ডাকলাম বার কয়েক। উনি সাড়া দিলেন নাহ। ভাবলাম ঘুমোচ্ছেন তাই উনার মাথার নিচে বালিশ দিয়ে দেওয়ার জন্য তার গলার নিচে হাত দিতেই চমকে উঠলাম আমি। শরীর ভীষণ গরম উনার, জ্বরে যেন পুড়ে যাচ্ছে গা! জ্বরের প্রকোপে তার ফর্সা চেহারা যেন ফ্যাকাশে গেছে। তার এমন অবস্থা দেখে চিন্তায় ভয়ে ঘামছুটে গেলো আমার। কাপা কাপা হাতে উনার মাথায় হাত রেখে কি করবো ভাবতে লাগলাম আমি...

#চলবে

গত পর্বে অনেকেই আমের কথা জানতে চেয়েছিলেন। শরতকালেও কিছু প্রজাতির আম হয়, যার মধ্যে গৌরমতি এক প্রজাতি। আমাদের এদিকে আছে। তাই গল্পে এড করেছিলাম। আর শীতকাল-শরতকালের মধ্যে অনেকে কনফিউজড। বিষয়টা এই ছিলো যে শরতের রাত থেকেই গ্রামাঞ্চলে হালকা হালকা ঠান্ডা পড়তে শুরু করে। শহরে যেটা বুঝা যায়না তবে গ্রামের দিকে প্রকৃতির আসল রুপবদল বুঝা যায়। আশা করি সবাই ক্লিয়ার হয়েছেন।

বড় পর্ব দিয়েছি আজ। সবার গঠনমূলক মন্তব্যের অপেক্ষায় রইলাম। ধন্যবাদ।

26/10/2022

বেপরোয়া_প্রেমঘোর

পর্ব ২

আদি আবারও জিজ্ঞেস করলো—
—'কথা বলছিস না কেন!কার জন্য হাত কে'টেছিস বল?কে তোর এত আপন হয়ে গেলো!উত্তর দে! '

আদিবা কপাল চেপে ব্যথা সহ্য করে নিয়ে বললো,
—'ভাইয়া আমি কেন হাত কা'টতে যাবো বলুন?আপনি কি বলছেন এসব?মাথা কি খারাপ হয়ে গেছে?আমি তো...'

আদিবাকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে আদি আবার চিৎকার করে উঠে বললো,
—'মিথ্যে বলছিস!তোর এত বড় সাহস তুই এখন আমার সামনে মিথ্যে বলছিস। তুই যদি হাত নাই কা'টিস তবে হাত কিভাবে কা'টলো হ্যাঁ?তোর হাতে র'ক্ত কেন তবে?আর এই বিছানায় এত র'ক্ত এলো কোথা থেকে বল?'
—'ভাইয়া আমার কথাটা তো শুনুন। আমাকে আগে বলতে দিন প্লিজ।'

এরই মধ্যে চিৎকার শুনে আদির মা রিয়া চৌধুরী এসে দরজা ধা'ক্কানো শুরু করলো।আদি দাঁত কিড়মিড় করতে করতে গিয়ে দরজা খুলে দিলো।আদির মা ওকে জিজ্ঞেস করলো,
—'কি হয়েছে?এত চিৎকার করছিলি কেন তুই?'
বলতে বলতেই তিনি ঘরের ভেতর ঢুকে আদিবার কপালে ও হাতে র'ক্ত লেগে থাকতে দেখে আঁতকে উঠলেন!
আদিবার কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলেন,
—'কি হয়েছে মা!তোর এই অবস্থা কি করে হলো?আদি তুই কি করেছিস ওর সাথে? '
—'সেটা আমাকে জিজ্ঞেস না করে তোমার আদরের বউমাকে জিজ্ঞেস করো সে কেন বাসর ঘরে বসে অন্য ছেলের জন্য হাত কে'টেছে।'
—'আদি এসব কি বলছিস। ও হাত কা'টতে যাবে কেনো। সে রকম কিছু হলে তো আগেই বলতো আমাদের। '
—' আমার ভয়ে বলতে পারেনি মা। না করতে পারেনি বিয়েতে।কিন্তু দেখো অন্যের জন্য হাত কে'টে ঠিকই আমার বাসর রাতটা ন'ষ্ট করে দিলো।এরপর হয়তো বাকি দিনে পরকীয়া করার ইচ্ছে আছে।'

এ কথা শুনে আদিবা কিঞ্চিত গলা উঁচু করে বলে উঠলো,
—'অনেক বলেছেন মিঃ আদিত্য চৌধুরী। এবার তো একটু থামুন প্লিজ।এত নোংরা ভাবনা আপনি আমাকে নিয়ে ভাববেন আমি কল্পনাও করতে পারিনি।ওয়াশরুমে যখন ফ্রেশ হতে গিয়েছিলাম তখন পানির ট্যাপের সাথে লেগে একটা কাঁচের চুড়ি আমার হাতে বিঁধে গিয়েছিলো আমার হাতে আর সেজন্যই হাত থেকে র'ক্ত পড়ছে আর বিছানার র'ক্তগুলো...'

বাকিটুকু না বলেই সে আদির মার দিকে তাকালো। তিনি হয়তো আদিবার নীরব অসহায়ত্ব বুঝতে পেরেছেন।তিনি চিৎকার করে আদিকে বললেন,
—'আদি তুই কি আদৌ মানুষ? কোনো কিছু না জেনে কিকরে মেয়েটার ওপর এত চোটপাট করলি তুই। কপাল ফে'টে র'ক্ত বের হচ্ছে মেয়েটার। ছি আদি!বাসর রাতে কিনা তুই বউ মা'রার মতো কাজ করলি! সরে যা চোখের সামনে থেকে।এক্ষুনি বের হ! '
—'আরে মা তুমি আমার ওপর রাগ করছো কেন?ও মিথ্যে বলছে মা। হাত তো ওয়াশরুমে যাওয়ার পর কে'টেছে বলছে কিন্তু বিছানায় র'ক্ত তো তার আগে থেকেই ছিলো।'
—'আদি তুই এক্ষুনি এই ঘর থেকে বের হ!বোধবুদ্ধিহীন ছেলে একটা।মিনিমাম কমনসেন্সটুকুও নেই তোর মাঝে।কি অবস্থা করেছিস মেয়েটার।ছি!আমার ভাবতেও লজ্জা লাগছে।তুই আর একটা কথাও না বলে এক্ষুনি ঘর থেকে বের হ। '

আদি আর কি করবে।সে আদিবার দিকে কঠোর চোখে তাকিয়ে মার কথা মেনে ঘরের বাইরে চলে গেলো।আদির মা রিয়া চৌধুরী ঘরের দরজা আঁটকে আদিবাকে ধরে খাটে এনে বসালেন।আদিবার মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন,
—'আমাকে ক্ষমা কর মা।আদির এই আচরণের জন্য আমি দুঃখিত। '
—'চাচি তুমি কেন ক্ষমা চাইছো।এসব বলো না চাচি।উনি হয়তো ভুল বুঝেছে এটা আমি বুঝতে পারছি। আমি কিছু মনে করিনি চাচি।'
—'আমি জানি মা। কিন্তু তুই অনেকটা ব্যথা পেয়েছিস।আদিকে তো চিনিসই।সবসময় তোকে নিয়ে ভয়ে থাকে আর ওর যা রাগ।সেজন্য হয়তো একটু রাগারাগি করে ফেলেছে।তুই কিছু মনে নিস না মা।তুই যা শাড়িটা চেঞ্জ করে আয়।আমি বিছানার চাদরটা বদলে দিচ্ছি। '

আদিবা একটা পাতলা সুতির শাড়ি নিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেলো।আদির মা বেডশিট চেঞ্জ করে দরজা খুলে দেখলো আদি একদম দরজার বাইরেই দাঁড়িয়ে আছে।তিনি বের হতেই আদি জিজ্ঞেস করলো,
—'মা ও তোমাকে বলেছে ও কেন হাত কে'টেছে?'
রিয়া চৌধুরী রেগে গিয়ে বললেন,
—'তুই কি আসলেই গর্দভ আদি?একটা মেয়ের কখন ব্লিডিং হয় তুই বুঝিস না?মেয়েটা যখন পিরিয়ডের ব্যথায় কাতরাচ্ছিলো তখন দেখিসনি?'

আদি মূহুর্তে হতভম্ব হয়ে গেলো।এত বড় ভুল সে কি করে করলো।ভুলভাল ভেবে কিনা সে তার আদিবাকে এতটা আঘাত করলো।এখন কি হবে!আদিবা তার সাথে স্বাভাবিক হতে পারবে তো?আদি তার মাকে বললো,
—'আমি এতবড় ভুল কি করে করলাম মা।এখন কি হবে?ও নিশ্চয়ই অনেক কষ্ট পেয়েছে।আমি এখন ওর সাথে কথা বলবো কোন মুখে।'
—'আমি কি জানি।নিজে বাড়াবাড়ি করেছিস এখন নিজে বোঝ।যা গিয়ে ওর কাটা জায়গাগুলো ব্যান্ডেজ করে দে আর রাগ ভা'ঙ্গা।আমি ঘুমোতে গেলাম।'

এই বলে আদির মা চলে গেলো।আদিও চিন্তিত ভঙ্গিতে মাথা চুলকাতে চুলকাতে ঘরে ঢুকলো।বিছানার ওপর বসে আদিবার অপেক্ষা করতে লাগলো। কিছুক্ষণ পরেই লাল শাড়ি পরে বেরিয়ে এলো আদিবা।মাথার টাওয়েল পেঁচানো। শাওয়ার নিয়েছে সে। আদিবাকে দেখে আদির মনে হলো হুট করে যেন তার হৃৎস্পন্দন বন্ধ হয়ে গেছে।অপলক তাকিয়ে রইল সে সদ্য ফোটা লাল গোলাপটির দিকে

চলবে

26/10/2022

সত্যি ওই best friend গুলা অনেক লাকি ꫰
যার একটা sad post অথবা story দেখে ꫰
তার best friend সাথে সাথে নক দিয়ে বলে ꫰ কিরে কি হইছে কেও কিছু বলছে নাকি তোকে ꫰
আজীবন ভালো থাকুক এমন বন্ধুত্ব গুলা ✌💙💙
m e n t i o n__ur best friend ❤

26/10/2022

হাতে_রেখো_হাত
পর্ব ৪

এইচ এস সি রেজাল্ট প্রদান করা হয়েছে। সর্বোচ্চ নাম্বার পেয়ে পাস করেছে আবরাজ। ছেলেটা খুশি হবে নাকি দুঃখী হবে ঠিক বুঝতে পারছে না। অরিতা সব সময় বলতো ওর ভাইকে বেস্ট রেজাল্ট করতে হবে। তেমনি রেজাল্ট করেছে ছেলেটা। তবে সে সংবাদ অরিতার কানে পৌছালো না। বেশ মনোকষ্ট নিয়ে এক গুচ্ছ বেলি ফুল কিনে নিলো ছেলেটি। অরিতা কে গনক*বর দেওয়া হয়েছে। ক*বরস্থানের কাছে আসতেই মৃদু শীর শীর বাতাস এসে ওকে স্পর্শ করে গেল। এক মুহুর্তেই জন্য অনুভব হলো ঐ স্পর্শ যেন অরিতার ছোট ছোট হাতের স্পর্শ। মেয়েটি প্রায় সময় মাথায় হাত বুলিয়ে দিতো ওকে। আর চোখ বন্ধ করে বোনের দেওয়া ভালোবাসা গ্রহন করতো আবরাজ। দীর্ঘ সময় এভাবেই পার হয়ে গেল। কয়েকটা কাকের কা কা ধ্বনি তে ওর ধ্যান ভাঙে। হাসে, কষ্টের হাসিই বটে। কব*রের পাশে এসে ফাঁকা ঢোক গিলে। অরিতার জন্য দোয়া, প্রার্থনা করে সাথে প্রার্থনা করে সকল ক*বর বাসীর জন্য। ফুলটা ক*বরের পাশে রেখে মাটিতে হাত বুলায়। কাল রাতে বেশ বৃষ্টি হয়েছিলো। তাই মাটি ভেজা। ছেলেটার বুক ধক করে উঠলো। অরিতার ঠান্ডার সমস্যা ছিলো। আজ ও কি ঠান্ডা লেগে গেলো ওর? অরির কি কষ্ট হচ্ছে ঠান্ডায়? মেয়েটা বৃষ্টা আসলেই ভাই ভাই করে চেঁচাতে। কাল ও কি চেঁচিয়েছে অরি? হাজারো জল্পনা কল্পনা এসে ভর করে মস্তিষ্কে। চোখ দুটোর কোণ ভেজা নোনা জলে। আবরাজের ইচ্ছে হয় হাউমাউ করে কাঁদতে।ক*বরে হাত বুলাতে বুলাতে বলে
" বোন এই বোন কেমন আছিস তুই? কষ্ট হচ্ছে খুব। বৃষ্টিতে ভিজে ঠান্ডা বাঁধিয়েছিস নিশ্চয়ই। তোর অভাগা ভাইয়ের সাধ্য হলো না তোকে রক্ষা করার। আল্লাহর কাছে কতো বার বললাম আমার বোনটা কে নিয়ে নিও না। কিন্তু তিনি তোকে ও নিয়ে গেল। বেলি ফুল তোর খুব পছন্দের তাই না? দেখ একদম তরতাজা ফুল এনেছি। খুশি তো তুই? এই অরি, শুনতে পাচ্ছিস তুই তোর ভাই সর্বোচ্চ নাম্বার পেয়ে পাস করেছে। তোর সেরা ভাই, অরি বোন আমার। আমি বাঁচতে পারছি না। শক্তি নেই আমার মাঝে। "

আবারো আর্তনাদে ভেঙে পরে ছেলেটি। সব পরিস্থিতি তে কঠোর থাকার শক্তি এখন আর নেই ওর।পরিবারের প্রতিটি সদস্যকে হারিয়ে একদম ই ভেঙে পরেছে ছেলেটা। চোখের পানিতে শুকিয়ে যাওয়া মাটির মাঝে আবারো দাগ উঠে। কাঁধে কারো স্পর্শ পায়। ছেলেটার দিকে তাকিয়ে লোকটা বললেন " শান্ত হও বাবা। শান্ত হও, জীবনটা কে এতো ঠুনকো ভেবো না। সৃষ্টিকর্তা প্রতিটি মানুষকে একটি লক্ষ্য দিয়ে পাঠান। তোমাকে ও পাঠিয়েছেন এমন এক লক্ষ্য দিয়ে। "

" আপনি? "

" কব*রস্থান দেখা শোনা করি আমি। পাশেই ছিলাম, রোজ অনেক মানুষ কান্না করে এখানে। তবে তোমার আর্তনাদ শুনে না এসে পারলাম না।

বৃদ্ধ লোকটি শ্বাস ফেললেন। ভারী গরম এক নিশ্বাস।
তারপর বললেন " তোমার বোন হয়? "

আবরাজ উঠে দাঁড়ালো। কব*রটা আরেক বার দেখে বলল " হ্যাঁ। আমার বোন কে দেখে রাখবেন। মেয়েটা বড্ড ভীতু প্রকৃতির। "

চোখ মুছে এলোমেলো পায়ে ক*বরস্থান থেকে বের হলো আবরাজ। বৃদ্ধ লোকটি ভাষাহীন নির্বিকার। এমন ভালোবাসা খুব কম ই দেখেছেন তিনি। ভালোবাসার কোনো সীমা নেই। অন্তত অসীম এই প্রক্রিয়া সর্বত্র ছড়িয়ে রয়েছে।

ক*বরস্থান থেকে বেরোলেই একটা মসজিদে আছে। নামাজ পড়ে মসজিদেই অবস্থান করলো আবরাজ। বিগত মাস দুয়েক ধরে এখানেই থাকছে ছেলেটা। দুপুরে নামাজ শেষ করে খাবার খাওয়ার জন্য বের হয়েছে। তখনি চোখে পরে একটা মেয়েকে। মুখে মাক্স লাগিয়ে ছুটছে। দেখে মনে হচ্ছে পেছনে কোনো লোক লেগেছে। আবরাজ নিজেকে দমিয়ে রাখতে পারলো না। ছুটে গেল ঐ মেয়েটির দিকে। একটু দূরে এসে হাপাচ্ছে মেয়েটি। আবরাজ ওহ হাপাচ্ছে। পেছন ঘুরে ওকে দেখে বলল " কি চাই? "

" আপনি এভাবে ছুটছিলেন কেন? কেউ তাড়া করেছে আপনাকে?"

" ওহ হো এর জন্য এসেছেন? "

" হ্যাঁ। "

মাক্সটা খুলে ফেললো মেয়েটি। নির্লিপ্ত তাকিয়ে রইলো আবরাজ। অনেক সুন্দরী না হলে ও বলা চলে বেশ মায়াবী মেয়েটি। বয়স বেশি হলে আঠারো হবে।

আবরাজের কাছে এসে দাঁড়ালো মেয়েটি। ভালো করে পরখ করে বলল " সৈয়দ আবরাজ? "

অচেনা মেয়েটার মুখে নিজের নাম শুনে চমকালো বেশ। মেয়েটা দারুন এক হাসি উপহার দিয়ে হাত বাড়ালো। হাতের দিকে এক পলক তাকালে ও হাত মেলালো না আবরাজ। মেয়েটি তাঁতে বিন্দু মাত্র অপমান বোধ করলো না। বরং অধর কোণে হাসি রেখেই বলল " আপনাকে আমি চিনতে পেরেছি এখন। "

" আমাকে? "

" এইচ এচ সিতে সর্বোচ্চ নাম্বার পেয়েছেন তাই না? "

" হ্যাঁ। "

" আমি ও এইচ এস সি ব্যাচ। তবে আপনার মতো এতো ভালো নাম্বার পাওয়া হলো না। তবে বোর্ড পর্যায়ে প্রথম হয়েছি। দৌড়াচ্ছিলাম কারন আমি সেনাবাহিনীতে জয়েন হতে চাই। কিছু দিন পূর্বে একটি ঘটনা ঘটে গেলো জানেন নিশ্চয়ই। আমার মন সেই দিন থেকে সেনাবাহিনীতে জয়েন করার জন্য উতলা হয়ে রয়েছে। দেশের পরিস্থিতি দিন দিন তলিয়ে যাচ্ছে। কোন দিন পুরো দেশটাই লুট হয়ে যাবে জানতে ও পারবে না কেউ। আমি চাই আমার দেশকে ভালোবাসতে,ভালো রাখতে। তাই এই পদে জয়েন হতে চাচ্ছি। "

থমকে গেছে আবরাজ। মেয়েটির কথা শুনে ভেতর থেকে ভালো লাগা কাজ করলো। মনে মনে কিছু একটা সিদ্ধান্ত নিলো। মুখের সামনে তুরি বাজাতেই চমকে উঠলো ছেলেটি। মেয়েটি বলল " উইল ইউ ফ্রেন্ড? "

হেসে সম্মতি প্রদান করলো আবরাজ। বহু দিন পর ভেতর থেকে শান্তি অনুভব হচ্ছে। মেয়েটির সাথে কথা বলে জানতে পারলো মেয়েটির নাম সীরাত। পুরো নাম সিদ্রাতুল সীরাত।

সীরাত বেশ ফ্রেন্ডলি কথা বলে। আবরাজ হেসে বলল
" আপনার নাম টা বেশ ইউনিক? "

সরস হাসলো মেয়েটি। এক পলক তাকিয়ে বলল
" আপনার নাম টা আরো বেশি ইউনিক। বাই দ্যা ওয়ে আমরা আপনি করে কেন বলছি? সেম ব্যাচ সেম এইজ ওহ তাহলে তো তুমি করেই বলা যায়। "

আবরাজ ও সম্মতি জানালো। কথা বলতে বলতে আসরের আজান পরে গেল। আবরাজকে বিদায় জানালো মেয়েটি। যাওয়ার পূর্বে বলল " খুব ভালো হলো তোমার সাথে পরিচয় হয়ে। পরে দেখা হবে। মসজিদে থাকছো তাই না? " "

" হ্যাঁ। "

" আচ্ছা বাই। "

মৃদু হাসলো আবরাজ। সীরাত চলে গেল লম্বা লম্বা পা ফেলে।

অনেকক্ষণ ধরেই মসজিদের বাইরে অপেক্ষা করছেন ভদ্রলোক। লম্বা দেহ চওড়া বুক। মুখের ভঙ্গিমা শক্ত। আবরাজকেই দেখেই উঠে এলেন। প্রথমে খেয়াল করে নি আবরাজ। পা ধোয়ার সময় দেখতে পেল।
" আসসালামু আলাইকুম। "

" ওয়ালাইকুম আসসালাম। কেমন আছিস বাবা? "

" ভালোই। "

" বাড়ি যাবি না? "

" কোন বাড়ি? "

" আমার বাড়ি। তোর চাচি অপেক্ষায় আছে। "

" যাবো না আমি। চাচিকে অপেক্ষা করতে বারণ করবেন। "

" আবরাজ, বাবা রাগ করিস না তুই। ছোট সময়ের ঘটনা নিয়ে কেউ মন খারাপ করে থাকে? "

" মন খারাপ নেই চাচা। যদি তেমনি হতো তাহলে আমি বা বাবা লিগ্যাল অ্যাকশন নিতাম। এর কিছুই যেহেতু করি নি সেহেতু আপনারা নিশচিন্তে থাকতে পারেন। "

মন খারাপ হলো লোকটির। তিনি আবরাজের কাঁধে হাত রেখে বললেন " সময়ের সাথে সাথে মানুষ পরিবর্তন হয়। আমরা নিশ্চয়ই তদের ভালোবাসি। "

" মাফ করবেন চাচা। দেড়ি হয়ে যাচ্ছে। আমি নামাজে যাবো। "

আনিসুল সাহেব আর কথা বাড়ালেন না। আবরাজ নামাজে গেলে তিনি ও গেলেন। নামাজ শেষে বললেন
" অরির জন্য খারাপ লাগছে। তবে ভাগ্যে হয়তো এটাই ছিল। তোর চাচি অসুস্থ। তাই আসতে পারে নি। কখনো যদি মনে হয় সব ভুলে.... " থামলেন তিনি। গলায় আটকে আসে কথা। আবরাজ মৌন রইলো পুরোটা সময়।

রাতে ফোন করলো সীরাত। " ঘুমাচ্ছিলে তুমি? "

" না। "

" আমার কিছু জানার ছিল। "

" কোন বিষয়ে? "

" তোমার নানা বাড়ির বিষয়ে। "

" কেউ নেই। " সীরাত বুঝলো এ বিষয়ে কথা বলার উপযুক্ত সময় নয় এখন। তাই ফোন রেখে দিলো মেয়েটি। আবরাজ আকাশে দিকে তাকিয়ে। বড় চাঁদ উঠেছে। হাসি হাসি মুখ করে তাকিয়ে আছে যেন। অরি চাঁদ দেখতে ভালোবাসতো। এখনো কি চাঁদ দেখে না অরি? আগের মতো রাতের ঘুম বিসর্জন দিয়ে নির্লিপ্ত চাহনিতে?

চলবে...

26/10/2022

চিত্ত_চিরে_চৈত্রমাস

পর্বঃ চার

নিরব রাস্তা তুমুল চিৎকারে সরব হলো। আশেপাশের মানুষ গুলো আকষ্মিক ঘটনার হতভম্বতা কাটিয়ে ছুটে আসলো মেয়ে গুলোর কাছে। বাহারও থমকে দাঁড়ানো নিশ্চল পা গুলো কোনোমতে টেনে নিয়ে এসে দাঁড়ালো মাটিতে লুটিয়ে পড়া চেরির পানে। ছোট্টো মেয়েটা কেমন করে যন্ত্রণায় হামাগুড়ি দিচ্ছে! পাশেই চিত্রা তার বা'হাত ধরে লাফাচ্ছে। মেয়েটার বা'হাতটাও বিধ্বস্ত প্রায়। অহি কাকে জড়িয়ে ধরবে ভেবে পেলো না। ছোট্টো চেরি গাল ধরে চিৎকার করে কাঁদছে, চিত্রা নিজের বা'হাত ধরে লাফাচ্ছে, হুট করে সুন্দর মুহূর্তটা কেমন ভয়ঙ্কর হয়ে উঠলো! এলাকার মানুষ খবর পাঠালো চিত্রাদের বাড়ি। চিত্রা নিজের জ্ব*লন্ত হাতটা নিয়েই নিচে বসে পড়লো। চিৎকার করতে করতে জ্ঞান হারিয়ে ফেলা চেরিকে ডান হাত দিয়ে অনবরত ধাক্কানো শুরু করলো। সাথে তার তুমুল আহাজারি। ছোট্টো চেরি নিবিড়, নিস্তব্ধ হয়ে পড়ে রইলো।

চিত্রা কিংবা চেরি কাউকে ধরলো না অহি। বরং ছুটে গেলো তার থেকে পাঁচ হাত দূরের বিশাল দোকানটার দিকে। তার ছুটে যাওয়াটা যেন এ মুহূর্তে আরেক অপ্রত্যাশিত কাজ। বাহার চেরিকে কোলে তোলে নিলো আর চিত্রার হাত ধরে টেনে তুললো। লোকটা বোধহয় এ প্রথম এতটা হতভম্ব হয়েছে। মুখ দিয়ে কথাও বের হচ্ছে না। কোনো মতে চিত্রাকে ধমকে বললো,
"উঠো তো, এখানে বসে থাকলে কোনো সমাধান হবে না, উঠো দ্রুত। তুমি না অনেক সাহসী? উঠো। চেরির অবস্থা কিন্তু খারাপ।"

চিত্রার বা'হাতটা কেমন যেন অবশ হয়ে গিয়েছে ততক্ষণে। তবুও মস্তিষ্ক তার সচল। চেরির কথা সেই সচল মস্তিষ্কের নিউরনে ঝড় তুললো। চিত্রাও উঠে দাঁড়ালো। ক্রন্দনরত মুখ খানা নিয়ে অসহায়ের মতন প্রশ্ন করলো বাহারকে,
"আমার চেরি ঠিক হয়ে যাবে তো, বাহার ভাই?"

বাহার কেবল ক্রন্দনরত মেয়েটার মুখের দিকে তাকালো। চিত্রাদের বাড়িতে এসেছে পুরো বারোমাস সম্পন্ন হলো কিন্তু এভাবে মেয়েটাকে বোধহয় দেখা হয় নি। কখনো তাকানোর প্রয়োজনই বোধ করে নি। আজ কিঞ্চিৎ মায়া হচ্ছে মেয়েটার জন্য। নিজেরও পুরোটা হাত ঝলসে গেছে, তবুও মেয়েটার চিন্তা সব ছোটো বোনের জন্য। হয়তো এই আচরণটার জন্য ই এত মায়া লাগছে।

তন্মধ্যেই ছুটে এলো অহি। হাতে তার বড় বড় দু'টি পানির বোতল। সে ব্যতিব্যস্ত হাতে একটা পানির বোতল বাহারের দিকে এগিয়ে দিয়ে কোনো মতে বললো,
"বাহার ভাই, চেরির মুখে হসপিটাল না যাওয়া অব্দি পানিটা ঢালতে থাকবেন। আমি চিত্রাকে নিয়ে পরের রিকশায় আসছি। পানি ঢালা থামাবেন না কোনো মতে।"

এই মুহুর্তে এসে অহির চিত্রার প্রতি এতটা ভালোবাসায় বাহার মুগ্ধ। মুগ্ধতা কাটিয়ে বাহার পানির বোতলটা নিয়ে ধপ করে উঠে বসলো রিকশায়। অহি চিত্রাকে সাবধানে টেনে পরের রিকশায় উঠলো। নিজের হাতে থাকা দ্বিতীয় বোতলটার মুখের ঢাকনাটা খুলেই চিত্রার হাতে অনবরত পানি ঢালতে লাগলো। দু'টো রিকশাই গন্তব্য ধরলো হসপিটালের। অহি চিত্রার হাতে পানি ঢালছে আর স্বান্তনার স্বরে বলছে,
"কিছু হবে না তোর, ভয় পাচ্ছিস না তো? এই যে অহি আপা আছি তো তোর সাথে। কোনো ভয় নেই তোর।"

আহ্লাদে আর যন্ত্রণায় চিত্রার কান্নারা আরও শব্দ তুললো। অহি কেবল ব্যাথাতুর চোখে ছলছল তাকিয়ে রইলো। বোন গুলো যে তার প্রাণ। এভাবে সুন্দর ফুল গুলোর মূর্ছে যাওয়া টা যে সে মানতে পারছে না।

(৯)

হসপিটালের করিডোরে কত মানুষের আনাগোনা! সরকারি হসপিটালে তুলনামূলক ভাবে ভিড়টা একটু বেশিই থাকে। হৈ চৈ, ভিড়ে পরিপূর্ণ করিডোরে একটা আতঙ্কিত পরিবার দাঁড়িয়ে আছে। বুকের ভিতর তাদের ঝড়ের তীব্রতায় হাহাকার করে উঠছে। একেকটা মানুষ যেন পাথর হওয়ার উপক্রম। চেরির মা কাঁদতে কাঁদতে দিশাহারা প্রায়, বড় চাচীও কাঁদছে। কেবল কাঁদছেন না চিত্রার মা। মুখ-চোখ তার শক্ত, কঠিন। মা জাতির মুখ-চোখ এতটা কঠিন সচারাচর হয় না তবে এই ভদ্রমহিলার হয়েছে। বরাবরই সে একটু শক্ত প্রজাতির মানুষ। খুব সহজে সে নেতিয়ে যান না। নারীজাতি স্বভাবসুলভ কোমল হয় কিন্তু চিত্রার মা ঠিক উল্টো। সে বার বার ধমকে ধমকে ছোটো জা'কে চুপ থাকতে বলছেন। এমন করলে যে অসুস্থ হয়ে যাবে।

তৃষাণ আর দিহান ও কাঁদছে। বোনদের তারা খুব বেশিই ভালোবাসে। তুহিন ছোট ভাইদের স্বান্তনার স্থল হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

ঔষুধের জন্য যে তুমুল ছোটাছুটি হচ্ছে সেটা করছে বাহার। চেরির বাবা প্রবাসী, তিনি বছরের এক-দু'বার ছুটিতে আসেন। উনাকে এখনো কিছু জানানো হয় নি। চিত্রার বাবা ডিউটিতে ছিলেন, তাকে জানানো হয়েছে সে আসছেন। আফজাল সওদাগর শহরের বাহিরে গিয়েছিলেন ব্যবসায়িক কাজে। আর তুহিন যেহেতু সবাইকে ভরসা দিচ্ছে তাই এই ঔষুধের দায়িত্ব টা পড়লো বাহারের কাঁধে। বাহার কোনো রূপ অবহেলা না করে তার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।

চেরিকে আর চিত্রাকে আলাদা আলাদা থিয়েটারে নেওয়া হয়েছে। ওদের অবস্থা ভীষণ গুরুতর। তবে অহিকে সিফট করা হয়েছে একটা কেবিনে কারণ ভয়ানক এই পানীয়ের কিঞ্চিৎ ছিঁটে অহির ডান হাতের কিছু কিছু জায়গায় পড়েছে। তখন বোনদের জন্য অনুভব ততটা না করলেও হসপিটালে আসার পর জ্বলে যাচ্ছিলো। অতঃপর তারও চিকিৎসা শুরু হলো।

প্রায় ঘন্টা খানেক পেরুতেই ছুটে এলো নুরুল সওদাগর। চোখেমুখে লেপ্টে থাকা উৎকণ্ঠা। শরীরে জড়ানো আইনের পোশাক। এসেই প্রথম দফায় প্রশ্ন ছুঁড়লো,
"চেরি, অহি কেমন আছে? ঠিক আছে ওরা?"

ঠিক এই মুহূর্তে প্রশ্নটা স্বাভাবিক হলেও বাহারের ভীষণ ভাবে কানে লাগলো। প্রশ্নটা কেমন যেন খচখচ শব্দ তুললো সন্দেহের ঝুড়ি খানায়।

"ওদের খবর জানায় নি এখনো। বাবা, চিত্রারও বা'হাতটার বেশ বাজে অবস্থা।"

বাবার প্রশ্নের উত্তরটা তুহিন বেশ বুদ্ধিমানের মতন দিলো। বাবাকে যেন স্মরণ করিয়ে দিলো চিত্রাও ভুক্তভোগী। নুরুল সওদাগর কিছুটা বিব্রত হলেন। অতঃপর প্রহর গুনলেন কিছু ভালো খবরের।

বাড়ি থেকে চাঁদনীর অনবরত ফোন আসছে। ফুপুকে তার কাছে রেখে আসা হয়েছে। মেয়েটারও তো এখন প্রায় গর্ভকালীন শেষ সময়। এতটা চাপ হয়তো ওর শরীরও নিতে পারবে না।

অবশেষে টান টান উত্তেজনা এবং অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে বেরিয়ে এলো ডাক্তার। সব হুড়মুড় করে উঠে দাঁড়ালো। ডাক্তারের সম্মুখে এসে দাঁড়ালো, তবে প্রশ্ন করার সাহস হলো না কারো। মনের মাঝে ভয় গুলো আকাশ ছুঁয়েছে।

ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে প্রশ্নটা প্রথম বাহারই করলো,
"ওদের কী অবস্থা? কতটুকু ক্ষতি হয়েছে?"

হাতের গ্লাবস খুলতে খুলতে বয়স্ক ডাক্তার ভয়ে মুখিয়ে থাকা পরিবারটার দিকে দৃষ্টি দিলেন। খুব স্বাভাবিক কণ্ঠে বললেন,
"আমরা প্রাথমিক পর্যায়ের চিকিৎসা দিয়ে ফেলেছি। কেমিক্যাল টা পরার পর আপনারা পানি দেওয়াতে অনেকটা রক্ষা হয়েছে। এ*সি*ড পরার পর একমাত্র পানি দিলেই এটার প্রকোপ অনেকটা কমে যায়। তবে,ছোটো বাচ্চাটার শ্বাসনালী আর ডান গালটার অবস্থা ভালো না। শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে ওর। লাইফ সাপোর্টে রাখা আছে। আর যে মেয়েটার বা'হাত পুড়েছে ওর এতক্ষণ জ্ঞান না থাকলেও এখন জ্ঞান ফিরেছে। ওর হাতের অবস্থাও ভালো না। আপনাদের সাথে দেখা করতে চাচ্ছে। অবস্থা বলা যায় তত সুবিধার না। আর যার ছিঁটকে এসে অল্প স্বল্প লেগেছে তাকে পুরো চিকিৎসায় দেওয়া হয়েছে। সে এখন ঘুমের ইনজেকশনের কারণে ঘুমিয়ে আছে।"

চেরির মায়ের হাউমাউ করে কান্না বাড়লো। প্রতিটি প্রাণ যেন এমন একটা খবরে আহত হলো। চেরি আর চিত্রাই ঐ বাড়ির প্রাণ, তাদের অস্বাভাবিক এমন ঘটনায় সবারই প্রাণ ঝরে যাওয়ার উপক্রম।

নুরুল সওদাগর ততক্ষণে তার পুলিশ টিমকে খবর জানিয়ে দিয়েছে। এমন একটা ঘটনা যে-ই করেছে, তাকে বাঁচতে দেওয়া হবে না।

চেরির মা কাঁদতে কাঁদতে যখন ক্লান্ত প্রায় মুনিয়া বেগম ছুটে গেলেন নিজের মেয়ের কাছে। ডাক্তার তো বলেছে মেয়েটার জ্ঞান ফিরেছে, কথা বলতে চায়। মেয়েটাকে অবশ্যই সাহস দিতে হবে।

মুনিয়া বেগমের পিছে পিছে তুহিন,দিশান,তৃষাণ সবাই ই গেলো। এমনকি এতক্ষণের কাঁদতে কাঁদতে ক্লান্ত হওয়া চেরির মা অবনী বেগমও গেলেন নিজের বড় জা'য়ের হাত ধরে। সওদাগর বাড়িটা এমনই, এখানে আমি তুমি বলে কিছু নেই, এখানে সবাই মিলে আমরা। নারী মহলে কথা কাটাকাটি, কিঞ্চিৎ রেষারেষি থাকলেও বাড়ির বাচ্চাদের প্রতি সবাই সহনশীল, নমনীয়। এক রকমের ভালোবাসা প্রতিটা সন্তানের জন্য।

চিত্রার অনবরত শ্বাস নেওয়ার ভঙ্গি বলে দিচ্ছে মেয়েটা কতটা অসহনীয় ব্যাথায় কাতরাচ্ছে। মুনিয়া বেগম এসেই মেয়ের ডান হাতটা চেপে ধরলেন। এতক্ষণের শক্ত, দৃঢ় মানবী মেয়ের অসহায়ত্ব দেখে ঝরঝর করে কেঁদে দিলেন। মুঠোয় রাখা মেয়ের হাতটা পরম স্নেহে কতক্ষণ আদর করে দিলো। খুব যত্নে চুমু এঁকে দিলো।

চিত্রা কোনোরকমে উচ্চারণ করলো,
"আমার চেরি কেমন আছে, আম্মু?"

অবনী বেগম এগিয়ে এলেন। এতক্ষণ তার মুখে যে ভয়াবহ কান্নাটা ছিলো, এখন সেটা গিলে ফেলেছে। চিত্রার মাথায় হাত বুলিয়ে ক্ষীণ স্বরে বললেন,
"সবাই ভালো আছে। তুই চিন্তা করিস না। সুস্থ হয়ে উঠ।"

চিত্রা ছোট চাচীর দিকে তাকালো। ঠোঁট ভেঙে তার কান্না এলো। ছোট চাচী যে খুব সাবধানে মিথ্যে কথা বলার প্রয়াস চালিয়েছে সেটা বুঝতে তার বাকি রইলো না।

তন্মধ্যেই চিত্রার কক্ষে হুড়মুড় করে প্রবেশ করলো চিত্রার বাবা নুরুল সওদাগর। এসেই মেয়ের দিকে তাকিয়ে কর্কশ কণ্ঠে জিজ্ঞেস করলেন,
"তোমার কলেজের সামনে নাকি কোন বখাটে ছেলের সাথে আজ ঝামেলা করেছো? এটা কি সত্যি!"

এমন ভয়াবহ সময়ে এই প্রশ্নটা যেন নেহাৎ ই বেমানান মনে হলো। চিত্রা কেবল ফ্যালফ্যাল করে তার বাবার দিকে তাকিয়ে রইলো। এই মুহূর্তটাতে বোধহয় সে বাবার স্নেহ ছাড়া কিছুই প্রত্যাশা করে নি।

নুরুল সওদাগর স্থান,কাল, পাত্র ভুলে চেঁচিয়ে উঠলো। ধমকে বললো,
"তুমি নিজেই যেচে বিপদ ডেকেছো, তোমার সাথে ভুক্তভোগী ঐ নিষ্পাপ দুটি মেয়েও। তোমাকে বার বার বলেছি সাবধান হও নি। সব জায়গায় দেখিয়ে গেছো নিজের দস্যিপনা। খুব সম্ভবত আজ সকালে যে ছেলের সাথে ঝামেলা করেছো সে-ই এ কাজটা করেছে। নিজে যেচে বিপদ এনেছো এবার ভুগতে থাকো। আমার তো আফসোস হচ্ছে ঐ মেয়ে দু'টির জন্য। পুড়লে তুমি একাই পুড়তে, ওদের তো দোষ ছিলো না।"

কক্ষে অবস্থানরত প্রতিটি মানুষ অবাক হয়ে নুরুল সওদাগরকে দেখে গেলো। বাবার এমন উক্তি আদৌও সাজে! তাও মেয়ের এ অবস্থায়?

নিরবতাকে আরেক ধাপ অবাক করে কেবিনের দরজায় দাঁড়িয়ে থাকা বাহার ভাই বলে উঠলো,
"এমন বাবার মেয়ের কেবল পুড়ে যাওয়া না, মরে যাওয়া উচিৎ।"

বাহারের কথায় মিষ্টি হাসলো চিত্রা। বা'চোখের কোণ বেয়ে গড়িয়ে পড়লো অশ্রুবিন্দু। কাঁপা কণ্ঠ, মুখে হাসি নিয়ে সে বললো,
"আমিন।"

নিরবতা বাড়লো। বিষাদ বাড়লো। চিত্রা অনুভব করলো, শরীরে পরা এ*সি*ডও বোধহয় এত জ্বালায় নি যতটা বাবার কথা জ্বালিয়েছে। চামড়া পু*ড়ে যাওয়ার জ্বালার চেয়ে হৃদয় পু*ড়ে যাওয়ার ব্যাথা বেশি। চামড়ায় প্রলেপ লাগানো যায়, হৃদয়ের গতি কী? কেবল ক্ষত বয়ে বেড়ানো ছাড়া!

#চলবে

Address

Lalmonirhat
5001

Telephone

+8801733017639

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Life line posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Life line:

Videos

Share