22/09/2024
বিশ্বের শীর্ষ ধনীরা নিয়মিত বই পড়েন।
বিশ্বের সেরা ধনীরা সামাজিক দৃষ্টিতে সফল মানুষ হিসেবে সমাদৃত। শত ব্যস্ততার মধ্যেও তাঁরা নিয়মিত বই পড়েন। তাঁরা বইয়ের জ্ঞান বাস্তবে প্রয়োগ করেই হয়েছেন পৃথিবীর শীর্ষ সম্পদশালী। শীর্ষ ধনীদের বই পড়ার এমন অভ্যাস নিয়ে লিখেছেন এম এম মুজাহিদ উদ্দীন
বিল গেটস:
বিল গেটস নামটি সারা বিশ্বে সবার কাছে পরিচিত। এ মানুষটিও প্রচুর বই পড়েন। তিনি প্রতি সপ্তাহে অন্তত একটি বই শেষ করেন। বছর শেষে তিনি পড়ে ফেলেন ৫০টির মতো বই। তিনি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি-সম্পর্কিত নন-ফিকশন বই থেকে শুরু করে উপন্যাস ও আত্মজীবনী পড়েন। শুধু নিজে বই পড়ে ক্ষান্ত থাকেন না, বই পড়া শেষে বইয়ের রিভিউ দেন তাঁর নিজস্ব ওয়েবসাইটে। প্রতিবছর তিনি প্রকাশ করেন ওই বছরে তাঁর পঠিত সেরা ১০টি বই। বই পড়া নিয়ে বিল গেটস দ্য নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেছেন, ‘ছোট থেকেই আমার শেখার অন্যতম প্রধান উপায় হলো বই পড়া।’
ইলন মাস্ক:
ইলন মাস্ক বিশ্বের শীর্ষ ধনীদের একজন। কে না চেনেন তাকে! ইলন মাস্কের নিয়মিত অভ্যাসগুলোর মধ্যে অন্যতম বই পড়া। এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, ছোটবেলা থেকে নিয়মিত দিনে ১০ ঘণ্টা বই পড়তেন। তবে ব্যস্ততা বাড়ার কারণে ১০ ঘণ্টা বই পড়া সম্ভব না হলেও প্রতিদিন তিনি নির্দিষ্ট সময় বই পড়েন। তিনি একজন মনোযোগী পাঠক। তিনি মনে করেন, বিশ্বকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য জ্ঞানার্জন অত্যাবশ্যক। তাঁকে একবার জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, কীভাবে তিনি রকেট বানানো শিখলেন? উত্তরে বলেছিলেন, ‘আই রিড বুকস।’
মার্ক জাকারবার্গ:
ফেসবুকের কথা উঠলেই যে নামটি মনে ভেসে ওঠে, তিনি হলেন প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ। তিনি সারা বিশ্বে অসংখ্য মানুষকে স্ক্রিনে আসক্তি করালেও তাঁর সন্তানদের ডিজিটাল গ্যাজেট থেকে দূরে রেখেছেন। এসবের বদলে তিনি সন্তানদের হাতে দিয়েছেন বই। মার্ক জাকারবার্গও বিল গেটসের মতো বইপড়ুয়া মানুষ, যিনি প্রযুক্তি ও যোগাযোগের পেছনে বেশি সময় ব্যয় করলেও প্রতি দুই সপ্তাহে একটা করে বই শেষ করেন। তিনি বই পড়ার জন্য ২০১৫ সালে একটি ক্লাব খুলেছেন। সেখানে তিনি বই নিয়ে আলোচনা করেন।
ওয়ারেন বাফেট:
ওয়ারেন বাফেট গোগ্রাসে বই পড়েন। তিনি ১১ বছর বয়স থেকে সংবাদপত্র, বার্ষিক প্রতিবেদন, অর্থ ব্যবস্থাপনা, বিনিয়োগ, ব্যবসা ও অর্থনীতি প্রভৃতি বই পড়া শুরু করেন। তাঁর জ্ঞানের তৃষ্ণা ব্যাপক। তিনি এত বেশি বই পড়তেন যে তাঁর শহরের যত লাইব্রেরি ছিল, সেগুলো তাঁর কাছে কম মনে হতো। শুধু তা-ই নয়, ৯৪ বছর বয়সী ওয়ারেন বাফেট এখনো প্রতিদিন গড়ে ৫০০ পৃষ্ঠা পড়েন। তিনি প্রতিদিন প্রায় ৬ ঘণ্টা বই পড়ার পেছনে ব্যয় করেন; যেখানে যুক্তরাষ্ট্রে প্রাপ্তবয়স্করা দিনে মাত্র ২০ মিনিট পড়ার পেছনে ব্যয় করেন। তিনি মনে করেন, বই পড়া হলো চক্রবৃদ্ধি সুদের মতো; যত পড়বেন তত জ্ঞান বাড়বে। তিনি বই পড়ার অভ্যাসকে তাঁর সাফল্যের রহস্য হিসেবে মনে করেন।
জ্যাক মা:
আলিবাবার সহপ্রতিষ্ঠাতা জ্যাক মাকে অনেকে অনুপ্রেরণাদানকারী হিসেবে চেনেন। তিনি জীবনে অনেক সমস্যা মোকাবিলা করে সফল হয়েছেন। তাঁর প্রতিদিনের অন্যতম অভ্যাস হলো বই পড়া, নতুন কিছু শেখা। তিনি প্রতিদিন বই পড়েন আরও স্মার্ট হতে এবং নতুন কোনো আইডিয়া খুঁজে পেতে। জ্যাক মা বলেছেন, ‘প্রচুর বই পড়ার ফলে আপনি যেকোনো বিষয়ে ভালো একটি সূচনা করতে পারবেন; যা প্রায় সময় আপনার সহকর্মীরা পারবে না। যাঁরা প্রচুর বই পড়েন, তাঁদের বিভিন্ন বিষয়ে জানার সম্ভাবনা বেশি। আপনি যদি শুরুতে প্রতিদিন ১ ঘণ্টা বা তার বেশি পড়ার অভ্যাস করতে না পারেন, তাহলে ২০ বা ৩০ মিনিট হলেও বই পড়ুন।’
-দৈনিক আজকের পত্রিকা
©এম এম মুজাহিদ উদ্দীন
লেখক: ভাইভা বোর্ডের মুখোমুখি,
মুজাহিদ'স ভাইভা সাজেশন,
ব্যাংকার'স ভাইভা বোর্ড।