08/06/2024
৬ অক্টোবর ২০১৯।
রাত ৮.১৩।
বুয়েট শেরেবাংলা হলের ১০১১ নাম্বার কক্ষে ঘুমাচ্ছিলো একটা ছেলে। একই ব্যাচের তানিমসহ তিনজন এসে তাকে ঘুম থেকে ডেকে তোলে।
-- বড় ভাইয়েরা তোকে ডাকছে। ২০১১ তে আয়।
-- কেনো?
-- গেলেই দেখতে পাবি।
-- কখন যাওয়া লাগবে?
-- এখনই। তোর ল্যাপটপ এটা?
-- হ্যাঁ।
-- মোবাইলটাও দে।
--কেনো?
-- দিতে বলছি তাই দিবি। ভাইরা বলছে।
মোবাইল, ল্যাপটপ এবং ছেলেটাকে নিয়ে তারা রওনা দিলো ২০১১ নাম্বার রুমের উদ্দেশ্যে। এই ছেলেটা কোন সাধারণ ছেলে ছিলো না। বুয়েটের EEE বিভাগে ২০১৮ সালে ভর্তি হওয়া এই ছেলের নাম আবরার ফাহাদ রাব্বি। অসাধারণ মেধাবী এই ছেলে ঢাবি 'ক ইউনিট' ভর্তি পরীক্ষায় ১৩ তম হয়েছিলো। চান্স পেয়েছিলো ঢাকা মেডিকেলেও। বড় ভাইদের ডাকে ২০১১ নাম্বার রুমের দিকে পা বাড়ানো আববার তখনো জানতো না, "অনন্ত মহাকালে এই যাত্রা, অসীম মহাকাশের অন্তে"।
আবরারের অপরাধ ছিল তাদের চোখে মারাত্মক! ভারতের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে স্ট্যাটাস দিয়েছে সে। আবরারেরই রুমমেট মিজানের সন্দেহ, "আবরার শিবির করে।" তাই বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের আজ এই আয়োজন। কক্ষে ঢোকার পরই মোবাইল আর ল্যাপটপ চেক করা শুরু করে তারা। তেমন কোন প্রমাণ না পেয়ে রুমে থাকা রবিন ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে।
-- এদিকে আয়। চশমা খোল।
আবরার চশমা খোলার পর রবিন প্রচন্ড জোরে তার গালে কয়েকটি চড় মারে। হাত দিয়ে গাল চেপে বসে পড়ে আবরার। এরই মধ্যে মোরশেদ কাঠের তৈরি শক্ত ক্রিকেট স্ট্যাম্প নিয়ে আসে। ইফতি প্রথমে রবিনের মতোই গায়ের জোরে থাপ্পড় মারে আবরারকে। এরপর হাতে তুলে নেয় ক্রিকেট স্ট্যাম্প। পিঠে, পায়ে, পায়ের তালুতে, হাতে সর্বশক্তিতে মারতে থাকে। প্রচণ্ড শক্তিতে মারার কারণে কয়েক বাড়ি দেওয়ার পরই স্ট্যাম্প ভেঙে দুই টুকরা হয়ে যায়। আবরার ততক্ষণে চিৎকার দিতে দিতে লুটিয়ে পড়েছে মেঝেতে। সেই চিৎকার শুনে আশেপাশের রুমের জানালা ভয়ে দ্রুত বন্ধ হয়ে যায়। এহতেসামুল, রাব্বি ও তানিম আরেকটি নতুন স্ট্যাম্প নিয়ে আসে। এবার অনিক স্ট্যাম্প হাতে তুলে নেয়। একাধারে মাটিতে লুটিয়ে থাকা আবরারের সারা শরীরে আঘাত করতে থাকে। প্রায় ৫০ থেকে ৬০টি আঘাত করে অনিক নিজেই ক্লান্ত হয়ে পড়ে। মেঝেতে পড়ে কাতরাতে থাকে আবরারের শরীর। সঙ্গে সঙ্গে মুজাহিদ ও শামিম স্কিপিং রোপ (মোটা দড়ি) দিয়ে মারতে শুরু করে। আবরার তখন বাঁচার জন্য আকুতি-মিনতি করে কিন্তু তাতে কারো মন গলেনি। কারো মধ্যেই মনুষ্যত্ব ফিরে আসেনি। বরং জীয়ন এগিয়ে এসে অনিক থেকে.. ©️
শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন ছাত্রলীগের হৃদয় কাঁপানো বর্বরতা।।