29/11/2024
আমার মা
মায়ের হৃদয় স্পন্দন থেকে আমি আমার হূদয়স্পন্দন পেয়েছি। মাতৃদুধই প্রথম রক্ষা করেছে আমার জীবন। ছোটবেলায় আমার জান গড়ে উঠেছে মায়ের কোলে। মায়ের স্নেহময় লালনে পথিবীতে বিকশিত হয়েছে আমার জীবন। মায়ের মুখ থেকেই আমি ভাষা পেয়েছি, শিখেছি কথা বলতে। আমার মা আমার জীবনের পরম আশ্রয়। সুখে-দুঃখে, বিপদে-আপদে মা-ই আমার একান্ত সহায়। তাই আমার মা-ই আমার সবচেয়ে প্রিয়জন।
×
Ezoic
আমি আমার বাবা-মার একমাত্র সন্তান। তাই ছেলেবেলা থেকেই আমি মা-ঘেঁষা। আমার মা আমকে খুব ভালবাসেন। তিনি খুব ভােরে উঠে সংসারের কাজে হাত দেন। তিনি রােজ সকালে আমাদের সবার জন্য নাশতা তৈরি করেন। স্কুলে যাওয়ার সময় দরকারি বইপত্র ব্যাগে নিলাম কিনা, জামাকাপড় ঠিকমতাে পরলাম কিনা, সেদিকে তিনি খুবই খেয়াল রাখেন। তিনি স্কুলে পড়াতে যাওয়ার পথে আমাকে স্কুলে পৌছে দেন এবং ফেরার পথে আমাকে স্কুল থেকে নিয়ে আসেন।
দুপুরে, বিকেলে ও রাতে তিনি আমাদের জন্য নানা রকম মজাদার খাবার রান্না করেন। আমি যেতে ভুলে গেলে কিংবা খেতে না চাইলে তিনি বুঝিয়ে শুনিয়ে আদর করে আমাকে খাওয়ান। আমার মা খুবই শান্ত, ধীরস্থির ও নরম মনের মানুষ। তিনি সাধারণত কখনােই আমাকে বকাবকি করেন না। কোনাে ভুল করলে তিনি সেটা ধরিয়ে দেন। লেখাপড়ার ব্যাপারে মা সব সময় আমাকে সাহায্য করেন। তবে, কখনাে বাড়তি চাপ দেন
ক্লাসে প্রথম হওয়ার জন্য মুখ বুজে লেখাপড়া কিংবা প্রাইভেট শিক্ষকের ওপর নির্ভরতা তার পছন্দ নয়। বরং লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলা, সংস্কৃতিচর্চা, মেলামেশা, আচার-ব্যবহার মিলিয়ে নিজেকে মার্জিত মানুষ হিসেবে গড়ে তােলাই তার পছন্দ। তাই তিনি আমাকে গান গাওয়া, ছবি আঁকা, আবৃত্তি চর্চায় উৎসাহ দেন। আমাদের আত্মীয়-পরিজনদের আনন্দবেদনায় মা সবসময় তাদের পাশে থাকার চেষ্টা করেন। আমিও মাঝে মাঝে মায়ের সঙ্গে বিভিন্ন জায়গায় যাই। আমার অসখ হলে মা খুব উদ্বিগ্ন ও অথর হয়ে পড়েন। একবার আমার জ্বর হয়েছিল। মা তখন সারা রাত আমার পাশে জেগে ছিলেন।
×
Ezoic
আমার মা খুব চমৎকার রাঁধেন। প্রায়ই তিনি আমার পছন্দের খাবার তৈরি করেন। আমার বন্ধুদেরও তিনি মাঝে মাঝে দাওয়াত করে খাওয়ান। আমার জন্মদিন পালনে তার উৎসাহ ও আয়ােজনের অন্ত থাকে না।আমার মায়ের গানের গলা খুব সুন্দর। ঘরােয়া কাজের সময়ে প্রায়ই তিনি গুনগুন করে গান করেন। সে সময়টা আমার খুব ভাল লাগে। আমি পরীক্ষায় ভালাে করলে মা আমাকে বই উপহার দেন। কিন্তু কখনাে পরীক্ষায় খারাপ করলে তিনি আমাকে বকেন না। বরং আমার ভুলগুলাে শুধরে দেন। দুর্বোধ্য বিষয় ভালােভাবে বুঝিয়ে দেন। আমার মা কেবল আমাকে নয় তার ছাত্রছাত্রীদেরও খুব ভালবাসেন।
আমার মায়ের সুন্দর বাচনভঙ্গি, পড়ানাের সহজাত ক্ষমতা, তার অসীম স্নেহ ও আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্বের জন্য তার ছাত্রছাত্রীরা সবাই তাকে ভালবাসে, শ্রদ্ধা করে। এটা দেখে আমার খুব ভালাে লাগে। মায়ের জন্য আমার গর্ব হয়। তাই আমি সবসময় চেষ্টা করি মাকে অনুসরণ করতে যাতে আমিও মায়ের মতাে সবার ভালবাসা পেতে পারি। আমার মা-ই আমার অস্তিত্বের শেকড়। তাই তিনিই আমার সবচেয়ে প্রিয় মানুষ, প্রিয় ব্যক্তিত্ব।