22/08/2024
৫ আগস্টের স্বাধীনতার পর অনেকের অনেক প্রতিক্রিয়া ছিলো।
আর আমি বাসায় এসে বলেছিলাম, আমি এবার একটু ঘুমাবো।
আগের রাতগুলো বাসায় থাকতে পারিনি। পালিয়ে থেকেছি। নিজের বিছানায় শুয়ে শুয়ে মনে হয়েছিলো, স্বাধীন দেশে এবার আমার আরামের ঘুম হবে। ডিবির গাড়ি আর আমার ঘুম কেড়ে নিতে পারবে না।
আমি ভুলে গেছিলাম, ভারত নামের অসভ্য, বর্বর আর নৃশংস দেশ যাদের প্রতিবেশি, তাদের কপালে আর যাই থাকুক, শান্তির ঘুমটা নাই।
অতঃপর আবার আমাদের ঘুম চলে গেল।
ফেনীতে পানি বাড়ার খবর দেখি আর আমার বিছানা তত নরক হয়ে উঠতে থাকে, চিৎকার করে আল্লাহকে বলতে ইচ্ছা করে, আর কোন দেশ ছিলো না? এমন নোংরা একটা দেশকেই কেন প্রতিবেশি হিসেবে পাইতে হলো?
তবে হাজার বছরের পুরনো রাতও শেষ হয়। এই যে সুবহে সাদিকের আলো ফুটে উঠছে বাইরে, ফেনীর সাথে জেগে আছে সারা বাংলাদেশ।
এইটাই আমাদের শক্তি।
না, আমরা বড় দেশ না। আমাদের পরমানু বোমা নাই। আমাদের অনেক অনেক অস্ত্র নাই। তবে আমাদের না ঘুমানো মানুষেরা আছে।
দেখেন, ফেনি ডুবতেছে, কুমিল্লা ডুবতেছে, অথচ ঢাকা, রাজশাহী, রংপুর বা খুলনা, সবগুলো মানুষ জেগে আছে। কাদের সাথে খেলতে এসেছেন, হিসাব আছে?
যাদের কেউ এই মুহূর্তে মিছিল করছে, কেউ ফান্ড রেইজ করছে, কেউ বা ঐ রাতেই রওনা দিয়ে ফেলেছে ফেনী। আর বাকিরা তাহাজ্জুদ পড়ছে, ফজর পড়ছে, রবের দরবারে দুয়া করতেছে, আমার ভাই বোনদের রক্ষা করো মাবুদ, ভারতকে তুমি ধ্বংস করো।
এই যে আমাদের এই দৌড়ে যাওয়া, আমাদের এই দোয়া, আমাদের এই না ঘুমানো, এগুলোই আমাদের শক্তি। এসবের বলেই তো আমরা টিকে আছি। আপনারা আমাদের ৫৭ জন অফিসার মেরে ফেলেছেন, আমাদের সবগুলো নদীতে বাঁধ দিয়েছেন আমাদের ভোটের অধিকার কেড়ে এবার আমাদের পানিতে ডুবিয়ে দিলেন।
কী ভাবছেন? আমরা হেরে যাবো?
উহু। আমরা হারবো না। আমরা জেগে থাকবো। আপনারা আমাদের উপর রাত চাপাবেন, আমরা সেই রাত কেটে সুবহে সাদিকের আলো আনবো।
আপনাদের প্রতিটা জুলুম, প্রতিটা অন্যায়ের প্রতিশোধ আমরা নেবো, আজ না পারি, কাল নেবো।
আমরা ফিরে আসবো। যতবার ডুবাইয়া মারার চেষ্টা করবেন, আমরা ততবার ফিরবো। ফেলানী যেমন ফিরেছে, আবরার যেমন একজন থেকে এক কোটি হয়ে গেছে, আমরাও আপনাদের বিরুদ্ধে সেভাবেই ফিরবো।
কখনও রাতের মিছিল হয়ে ফিরবো, কখনও ভোরের জায়নামাজ হয়ে ফিরবো, ফিরতে আমাদের হবেই।
যেই বাচ্চা ছেলেটা আজ বুক পর্যন্ত পানিতে ডুবে শুধু মাথাটা উঁচু করে আছে, এই বাচ্চা ছেলেটা একদিন বড় হবে। আজ পানিটা গলা পর্যন্ত আছে। বড় হলে সেই পানি নেমে আসবে হাটুতে।
তারপর এই ছেলেটাই বুকে আগুন আর চোখে ইনকিলাবের নেশা দিয়ে আপনাদের ঐ বর্ডার ছিন্নভিন্ন করে দেওয়ার লক্ষ্যে ছুটবে। আর বলবে,
তুম রাত লিখো,
হাম চাঁদ লেখেঙ্গে
তুম জমিন পে জুলুম লিখ দো
আসমান পে ইনকিলাব লিখখা জায়েগা
সাব ইয়াদ রাখা জায়েগা
সাবকুছ ইয়াদ রাখ্খা জায়েগা...
আপনারা যেভাবে আমাদের ঘুম হারাম করলেন, আমরাও আপনাদের তিন প্রজন্মকে শান্তিতে ঘুমাইতে দেবো না। এ আমাদের ওয়াদা। আমাদের রক্তের ওয়াদা। আমাদের ইনকিলাবের ওয়াদা।
পিন্ডির থেকে ইনকিলাব এনেছি।
দিল্লির থেকেও আমরা ঠিক ইনকিলাব আনবো।
ইনকিলাব জিন্দাবাদ।
Post copied from Sadiqur Rahman Khan ভাই।