23/08/2022
দ্বীন মানতে গিয়ে আপনাকে একটু চালাক হতে হবে।
উচু নিচু ক্লাস তো শুধু দুনিয়াতে নয়, জান্নাতেও আছে।
আর এই চালাকি আল্লাহ পাক পছন্দও করবেন। জান্নাতে এতে আপনার মর্যাদাও বাড়বে।
চালাকিটা কোথায় দেখাবেন বলি -
১. ইশা ও ফজরের নামাজ জামাতের সাথে পড়ুন। (প্রতি ওয়াক্তই জামাতের সাথে পড়বেন। কিন্তু এই দুই ওয়াক্ত যেন কোন ভাবেই মিস না হয়)
এক হাদিসে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি ইশা ও ফজর জামাতের সঙ্গে পড়ল, সে যেন সারা রাত দাঁড়িয়ে নামাজ পড়ল।’ (মুসলিম, হাদিস : ৬৫৬)
অর্থাৎ ঘুমিয়ে থেকে সারারাত ইবাদতের নেকি পেলেন।
২. কোন ভাবেই কোন ফরজ নামাজের পর আয়াতুল কুরসী পড়া মিস দিবেন না।
হাদিস শরিফে এসেছে, রাসূল (সা.) বলেন-
"যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর আয়াতুল কুরসী পড়বে তার জান্নাতে প্রবেশের মধ্যে কেবল মৃত্যুই একমাত্র বাঁধা।" (সুনানে নাসায়ী, হাদিস: ৯৯২৮)
অর্থাৎ দুনিয়া ও জান্নাতের মধ্যে দূরত্ব শুধুই মৃত্যুর।
৩. রাতে ঘুমানোর আগে সুরা মুলক একবার পড়ে নেন।
এক হাদিসে এসেছে, ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত,
"যে ব্যক্তি প্রতি রাতে তাবারাকাল্লায়ী বিয়াদিহিল মুলক পড়বে, আল্লাহ তাআলা তাকে এই সূরার মাধ্যমে কবরের আযাব থেকে বাঁচিয়ে রাখবেন।’ (সহিহুত তারগিব ২/২৫৩, হাদিস: ১৫৮৯)
৪. তাহাজ্জুদের নিয়তে ঘুমাতে যান।
এক হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, আবু দারদা (রা.) বলেন,
"রাসুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি তাহাজ্জুদের সালাত আদায় করার নিয়তে বিছানায় আসে, কিন্তু তার চোখগুলো নিদ্রা প্রবল হয়ে যাওয়ায় ভোর পর্যন্ত সে ঘুমিয়ে থাকে, তার জন্য তার নিয়ত অনুসারে সওয়াব লেখা হবে, আর আল্লাহর পক্ষ থেকে তার নিদ্রা তার জন্য সদকাস্বরূপ হয়ে যাবে। (সুনানে নাসায়ি, হাদিস : ১৭৮৭)
নিয়ত ঠিক করে ঘুমাতেন যান, আর কি।
৫. সন্তানকে কুরআনের হাফেজ/হাফিজা বানান। এটা মুস্তাহাব আমল। কিন্তু কাল আখিরাতে একজন হাফেজের বাবা হিসেবে আপনার মর্যাদা অনেক বাড়িয়ে দিবে।
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, "যে ব্যক্তি কুরআন পড়বে এবং তার ওপর আমল করবে, তার পিতা-মাতাকে কিয়ামতের দিন একটি মুকুট পরানো হবে, যার আলো সূর্যের আলো অপেক্ষা বেশি হবে। যদি সেই সূর্য তোমাদের ঘরে হয়! সুতরাং যে ব্যক্তি নিজে কুরআনের উপর আমল করে তার সম্পর্কে তোমাদের কি ধারণা?!’ (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ১৪৫৩)
৬. প্রতিদিন দিনে অন্তত ১০০ বার ইস্তেগফার করুন।
মুমিন তো গোনাহ নিয়ে বসে থাকতে পারে না। গোনাহ তো মুমিনের কাছে পাহাড়সম বোঝা।
হাদীস শরীফে ইরশাদ হয়েছে-
التّائِبُ مِنَ الذّنْبِ، كَمَنْ لَا ذَنْبَ لَهُ.
"গুনাহ থেকে তওবাকারী গুনাহমুক্ত ব্যক্তির মত।" (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস ৪২৫০)
আপনার প্রতিদিনের ইস্তেগফার আপনার দৈনন্দিন জীবনে চলার পথকে মসৃণ করবে। অনাগত বিপদকে দূরে সরিয়ে দিবে।
এক সাহাবী নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে জিজ্ঞেস করল-
مَا الْإِيمَانُ؟
ঈমান (-এর আলামত) কী, আল্লাহর রাসূল!
নবীজী উত্তরে বললেন-
إِذَا سَرّتْكَ حَسَنَتُكَ، وَسَاءَتْكَ سَيِّئَتُكَ فَأَنْتَ مُؤْمِنٌ.
"যদি তোমার নেক আমল তোমাকে আনন্দিত করে এবং তোমার গুনাহ তোমাকে ব্যথিত করে (গুনাহ হয়ে গেলে তুমি কষ্টে ভুগতে থাক)। তাহলেই (বুঝবে) তুমি মুমিন। (মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ২২১৬৬)
বিশ্বাস করেন, আপনার এই চালাকিগুলো একবার আল্লাহর কাছে পছন্দনীয় হয়ে গেলে আপনার আমলে ইস্তেকামাত এমনিতেই চলে আসবে। তখন আপনি এগুলোতে এমনভাবে অভ্যস্ত হয়ে যাবেন, একদিন একটা আমল ছুটে গেলে আপনার রাতে ঘুম আসবে না। লেখক - রাজীব হাসান (তাওহীদ)
[Khulna-Masti]