05/08/2022
Condition of Education in school and College
bdjournal
শুক্রবার, ০৫ আগস্ট, ২০২২
×
হোম
শিক্ষা
২০২৩ সাল থেকে নবম শ্রেণিতে থাকবে না বিভাগ
জার্নাল ডেস্ক
প্রকাশ : ২৩ ডিসেম্বর ২০২০, ১৭:৪৩
facebook sharing buttontwitter sharing buttonmessenger sharing buttonemail sharing buttonsharethis sharing button
সংগৃহীত ছবি
আগামী মার্চের মধ্যেই প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা স্তরের দশটি বিষয়ের ‘বিষয়ভিত্তিক’ শিক্ষাক্রম চূড়ান্ত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে ‘জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড’ (এনসিটিবি)। এরমধ্যে ২০২২ শিক্ষাবর্ষে প্রাক-প্রাথমিক পার্ট-২, প্রাথমিক স্তরের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণি এবং মাধ্যমিক স্তরের ৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রেণিতে নতুন কারিকুলামের বই (শিক্ষাক্রম বা পাঠ্যবিষয়) পাঠলাভ করবে শিক্ষার্থীরা।
|আরো খবর
জবিতে প্রতি মঙ্গলবার অনলাইন ক্লাসের সিদ্ধান্ত
পাঠ্যপুস্তকই শিক্ষার একমাত্র মাধ্যম নয়
বিদুৎ সাশ্রয়ে অনলাইন ক্লাসের বিপক্ষে জবি শিক্ষার্থীরা
জানা যায়, দশজন শিক্ষাবিদের মতামতের আলোকে ইতোমধ্যে প্রাক-প্রাথমিক থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত বিষয়ভিত্তিক শিক্ষাক্রম (শিখন বিষয়) প্রণয়নের ‘ফ্রেমওয়ার্ক’ (কাঠামো বা রূপরেখা) চূড়ান্ত করেছে এনসিটিবি। এই রূপরেখার আলোকেই নতুন শিক্ষাক্রম প্রণয়ন করা হচ্ছে। এসব বিষয় সমন্বয়ের দায়িত্বে আছেন এনসিটিবি সদস্য (শিক্ষাক্রম) প্রফেসর ড. মশিউজ্জামান।
ড. মশিউজ্জামান বলেন, ‘মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাক্রম প্রণয়নের ফ্রেমওয়ার্ক তৈরির কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। এখন বিষয়ভিত্তিক শিক্ষাক্রম প্রণয়ন করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞ শিক্ষকরা শিক্ষাক্রম প্রণয়ন করছেন। আশা করছি, আগামী মার্চের মধ্যেই ১০টি বিষয়ের ‘বিষয়ভিত্তিক’ শিক্ষাক্রম চূড়ান্ত করা সম্ভব হবে।’
মশিউজ্জামান আরো বলেন, ‘আগামী শিক্ষাবর্ষেই (২০২১) প্রাক-প্রাথমিকের প্রথমবর্ষের শিশুরা নতুন কারিকুলামের বই পাচ্ছে। ২০২২ শিক্ষাবর্ষে শিশুরা প্রাক-প্রাথমিকের দ্বিতীয় বর্ষের নতুন কারিকুলামের বই পাবে। ২০২২ শিক্ষাবর্ষে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণি এবং ৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রেণির শিক্ষার্থীরাও নতুন কারিকুলামের বই পাবে।’
অন্য শ্রেণির শিক্ষাক্রম পরবর্তীতে পরিবর্তন হবে বলে ওই কর্মকর্তা জানান।
এনসিটিবি সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সাল থেকে নবম শ্রেণি থেকে বিভাগ উঠে যাচ্ছে, ২০২৪ সালে মাধ্যমিক স্তরেও বিভাগ থাকবে না। নতুন পাঠ্যসূচিতে নবম ও দশম শ্রেণির সব শিক্ষার্থী একই বই পড়বে, অর্থাৎ বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষায় আলাদা কোন বিষয় থাকবে না। অর্থাৎ সব ধরনের শিক্ষা বা অভিন্ন শিক্ষা নিয়েই শিক্ষার্থীদের মাধ্যমিক শিক্ষার স্তর শেষ করতে হবে। একাদশ শ্রেণি থেকে শিক্ষার্থীরা বিভাগ নির্বাচন করবে।
২০২২ সাল থেকে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের দশটি বিষয় পড়তে হবে। বিষয়গুলো হলো- বাংলা (ভাষা ও যোগাযোগ), তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি), গণিত (গণিত ও যুক্তি), বিজ্ঞান (বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি), সামাজিক বিজ্ঞান (সমাজ ও বিশ্ব নাগরিকত্ব), জীবন ও জীবিকা, পরিবেশ ও জলবায়ু, ধর্ম (মূল্যবোধ ও নৈতিকতা), স্বাস্থ্য শিক্ষা ও সুরক্ষা (শারীরিক-মানসিক স্বাস্থ্য) এবং শিল্প ও সংস্কৃতি। বর্তমানে ওইসব শ্রেণিতে ১২ থেকে ১৪টি বই পড়তে হয়।
জানতে চাইলে মতিঝিল সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সৈয়দ হাফিজুল ইসলাম বলেন, ‘পাঠ্যক্রমে পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত ইতিবাচক। কারণ মাধ্যমিক পর্যায়ে উন্নত দেশগুলোর কোথাও বিভাগ বিভাজন নেই। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের এই বিভাজন চাপিয়ে দেয়া উচিত নয়। আমাদের এখানে বিভাগ বিভাজনের কারণে অনেক শিক্ষার্থীই সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে না, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেয়া হয়, যা শিক্ষার্র্থীদের মানসিক বিকাশকে বাধাগ্রস্ত করে। প্রতিষ্ঠানগুলোও তা করেন, অভিভাবকরাও তা করেন। আবার অনেক ক্ষেত্রে বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীরা নিজেদের বেশি মেধাবী ভাবে, যা অন্য শিক্ষার্থীদের মনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এ নিয়ে বৈষম্য সৃষ্টি হয়।’
নতুন পাঠ্যক্রমে প্রাক-প্রাথমিক স্তরকে শিক্ষার প্রস্তুতি, প্রাথমিক স্তরকে ভিত্তি, মাধ্যমিক স্তরকে সামাজিকীকরণ, উচ্চ মাধ্যমিক স্তরকে বিশেষায়নের জন্য প্রস্তুতি এবং উচ্চ শিক্ষাকে বিশেষায়ন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের ১০টি বিষয়কে ‘শিখনক্ষেত্র’ নাম দিয়েছে, এসব বিষয়ের ওপরই রচিত হবে নতুন পাঠ্যক্রম। তিনটি বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে পাঠ্যক্রম রচিত হবে। বিষয়গুলো হলো- উদ্ভাবনী, পারস্পরিক সংযোগ স্থাপন এবং জবাবদিহিতা।
এ ব্যাপারে এনসিটিবি চেয়ারম্যান প্রফেসর নারায়ণ চন্দ্র সাহা বলেন, ‘মাধ্যমিক শিক্ষায় একই ধারায় ১০টি শিখনক্ষেত্র চিহ্নিত করা হয়েছে। দশ শিখনক্ষেত্রকে ধারণ করেই নতুন পাঠ্যক্রমের পাঠ্যবই প্রকাশ করা হবে। এতে বইয়ের সংখ্যা কমবে, তেমনি পাঠ্যক্রম আধুনিকায়ন ও আকর্ষণীয় হবে।’
নতুন পাঠ্যক্রমে সব শিক্ষার্থীর জন্য শিখনক্ষেত্র অভিন্ন থাকছে জানিয়ে এনসিটিবি চেয়ারম্যান বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা যাতে সবক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় যোগ্যতা অর্জন করতে পারে সেজন্য স্তরভিত্তিক উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে স্তরভেদে বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্ব কম বা বেশি দেয়া হয়েছে।’
এনসিটিবি জানিয়েছে, ১০ বিশিষ্ট শিক্ষাবিদের সমন্বয়ে গঠিত ‘কারিকুলাম ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড রিভিশন কোর কমিটির মতামত ও পরামর্শের আলোকে নতুন কারিকুলাম (পাঠ্যক্রম) প্রণয়ণ করা হচ্ছে। শিক্ষাবিদদের মতামতের আলোকেই নতুন পাঠ্যক্রমে কী কী বিষয় থাকবে তার রূপরেখা প্রণয়ন করে এনসিটিবি। এনসিটিবি নিজেদের ওয়েবসাইটে ওই রূপরেখা প্রকাশ করে স্টেকহোল্ডারদের (অংশীজন) কাছ থেকে মতামত নেয়। সবার মতামতের ভিত্তিতে তৈরি পাঠ্যক্রমের বিষয়গুলো এনসিসিতে (ন্যাশনাল কারিকুলাম কো-অর্ডিনেশন কমিটি) উপস্থাপন করা হয়। এনসিসি’র অনুমোদনের ভিত্তিতেই বিষয়ভিত্তিক পাঠ্যক্রম প্রণয়নের কাজ শুরু হয়েছে।
ওই ১০ শিক্ষাবিদের মধ্যে প্রবীণ শিক্ষক নেতা ও ‘জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০’ প্রণয়ন কমিটির সদস্য অধ্যক্ষ কাজী ফারুক আহম্মেদ অন্যতম। তিনি শিক্ষাক্রম পরিমার্জনের বিষয়ে বলেছেন, ‘আমরা পৃথকভাবে নিজেদের মতামত দিয়েছি। শিক্ষানীতির আলোকেই শিক্ষাক্রম আধুনিকায়ন হচ্ছে। তবে আমি বলেছি, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ভিত্তিতে শিক্ষাক্রম হতে হবে। শিক্ষার্থীদের বইয়ের বোঝা কমাতে হবে। এছাড়া আমি বলেছি, জাতীয় শিক্ষানীতি যখন আমরা প্রণয়ন করি তখন অনলাইন শিক্ষাক্রমের ধারণাটি তেমন জোরালো ছিল না। এবার করোনা মহামারীর কারণে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমের প্রয়োজনীয়তা বেড়েছে। এ বিষয়েও মতামত দিয়েছি।’
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি সম্প্রতি একাধিক অনুষ্ঠানে বলেছেন, ‘পাঠ্যক্রমের পুরো পর্যালোচনা হচ্ছে। নতুন পাঠ্যক্রম মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ভিত্তিতে প্রণয়ন করা হবে। খুব শিগগির চূড়ান্ত একটি রূপরেখা প্রকাশ করা হবে। সেখানে সব ধরনের শিক্ষায় বিজ্ঞান, মানবিক, ব্যবসায় শিক্ষা- এই বিভাগগুলো নবম-দশম শ্রেণিতে আর রাখছি না। সব শিক্ষার্থী সব ধরনের শিক্ষা নিয়ে স্কুলের ১০টি বছর শেষ করবে।’
শিক্ষাবিদরা বলেছেন, বর্তমানে মাধ্যমিক শিক্ষার স্তরে বিভাগ-বিভাজন না থাকায় ছাত্রছাত্রীদের বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও তথ্য-প্রযুক্তি, ভাষা, গণিত, সামাজিক বিজ্ঞান, ইতিহাস, ভূগোল ও সাহিত্য সবই পড়তে হবে। এর ফলে এতদিন যারা বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী হয়েও খুব বেশি সাহিত্য পড়ত না তাদের এখন সাহিত্য, ইংরেজি ও বাংলা ভাষা, গণিত, ভূগোল, সামাজিক বিজ্ঞান, দর্শন পড়তে হবে। এতে মাধ্যমিক স্তর উত্তীর্ণ হওয়ার সময় প্রত্যেক শিক্ষার্থী অন্ততপক্ষে সব রকমের জ্ঞান নিয়ে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে প্রবেশ করবে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ‘জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০’ প্রণয়ন কমিটির সদস্য সচিব ও জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক প্রফেসর শেখ ইকরামুল কবির বলেন, ‘শিক্ষানীতিতেই বলা আছে, প্রাথমিক স্তরে হবে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত, মাধ্যমিক শিক্ষার স্তর হবে নবম থেকে একাদ্বশ শ্রেণি পর্যন্ত। কিন্তু এর কোনটিই বাস্তবায়ন হয়নি। সেটি বাস্তবায়ন হলে পরীক্ষা এমনিতেই কমে যেত, স্কুলভিত্তিক মূল্যায়ন প্রক্রিয়াও শুরু হতো। বর্তমানে পঞ্চম শ্রেণিতে যে সমাপনী পরীক্ষা হচ্ছে সেটি হওয়ার কথা অষ্টম শ্রেণিতে, আর অষ্টম শ্রেণি যে পরীক্ষা হচ্ছে সে হওয়ার কথা মাধ্যমিক স্তরে। এগুলোও বাস্তবায়ন হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘শিক্ষানীতির বিকল্প হিসেবে যদি কোন কিছু করা হয়, সে বিষয়ে সরকারের একটি রুপরেখা প্রকাশ করা উচিত। তা না হলে নানারকম বিভ্রান্তি সৃষ্টি হবে।’
পাঠ্যক্রমে পরিবর্তনকে স্বাভাবিক বিষয় উল্লেখ করে এই শিক্ষাবিদ বলেন, ‘সময়ের প্রয়োজনে পাঠ্যক্রমে পরিবর্তন আনতে হয়। কিন্তু সেটা কীসের ভিত্তিতে হবে? সেটি কোন গাইডলাইন বা শিক্ষানীতির আলোকে হবে, নাকি এমনিতেই হবে?’ সূত্র: দৈনিক সংবাদ
বাংলাদেশ জার্নাল/এনএইচ
facebook sharing buttontwitter sharing buttonmessenger sharing buttonemail sharing buttonsharethis sharing button
শিক্ষা | আরও খবর
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারে মাউশির জরুরি নোটিশ
জবি'র স্থগিত শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি-সম্পাদকের বিরুদ্ধে জিডি
অধ্যক্ষ স্বপনকে নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করলে কঠোর ব্যবস্থা: এনইউ ভিসি
ভারতে ইন্টার্নশিপে যাচ্ছেন বাকৃবির শিক্ষার্থীরা
আইএসইউ এর আয়োজনে বরিশালে উচ্চশিক্ষা শীর্ষক সেমিনার
সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের যোগদান
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে নতুন সচিব ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক
ঢাকা কলেজে নতুন অধ্যক্ষ
সম্পাদক : শাহজাহান সরদার
প্রকাশক : আনোয়ার হোসেন খান
যোগাযোগের ঠিকানা: রূপায়ন খান প্লাজা, লেভেল-৭, বাড়ি-৫০০/এ,
সড়ক-৭, ধানমন্ডি, ঢাকা-১২০৫। ফোন: ০২-২২৩৩৬২১০৭,
মোবাইল: +৮৮ ০১৭০৫৪০৭০৮০ (নিউজ রুম) ই-মেইল:
(নিউজ) [email protected], [email protected];
(অফিস) [email protected].
© স্বত্ব বাংলাদেশ জার্নাল ২০২২
Developed by :