04/05/2023
آدَمُ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ أَبِي سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيُّ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ مَا أَسْفَلَ مِنْ الْكَعْبَيْنِ مِنْ الإِزَارِ فَفِي النَّارِ.
আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেনঃ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ইযারের বা পরিধেয় বস্ত্রের যে অংশ পায়ের গোড়ালির নীচে থাকবে, সে অংশ জাহান্নামে যাবে।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫৩৬২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫২৫৮)
সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৫৭৮৭
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
أَخْبَرَنَا إِسْمَعِيلُ بْنُ مَسْعُودٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا خَالِدٌ وَهُوَ ابْنُ الْحَارِثِ، قَالَ: حَدَّثَنَا هِشَامٌ، عَنْ يَحْيَى، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ، قَالَ: حَدَّثَنِي ابْنُ يَعْقُوبَ، أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا هُرَيْرَةَ يَقُولُ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَا تَحْتَ الْكَعْبَيْنِ مِنَ الْإِزَارِ فَفِي النَّارِ»
আবু হুরায়রা থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ লুঙ্গি ইত্যাদির যে অংশ গিরার নীচে থাকবে, তা দোজখে থাকবে।
সুনানে আন-নাসায়ী, হাদিস নং ৫৩৩০
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
أَخْبَرَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلَانَ، قَالَ: حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ، قَالَ: حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، قَالَ: أَخْبَرَنِي سَعِيدٌ الْمَقْبُرِيُّ، وَقَدْ كَانَ يُخْبِرُ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «مَا أَسْفَلَ مِنَ الْكَعْبَيْنِ مِنَ الْإِزَارِ فَفِي النَّارِ»
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
রাসূলুল্লাহ্(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেছেন: ইযার বা লুঙ্গির যে অংশ গোড়ালির উপরিস্থ গিরার নীচে থাকবে তা দোযখে অবস্থান করবে।
সুনানে আন-নাসায়ী, হাদিস নং ৫৩৩১
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُبَيْدِ بْنِ عَقِيلٍ، قَالَ: حَدَّثَنِي جَدِّي، قَالَ: حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ أَشْعَثَ، قَالَ: سَمِعْتُ سَعِيدَ بْنَ جُبَيْرٍ، عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «إِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ لَا يَنْظُرُ إِلَى مُسْبِلِ الْإِزَارِ»
ইব্ন আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ইযার বা লুঙ্গি ইত্যাদি যে ব্যক্তি নীচে ঝুলিয়ে পরিধান করে, তার প্রতি আল্লাহ্তা'আলা রহমতের দৃষ্টি নিক্ষেপ করবেন না।
সুনানে আন-নাসায়ী, হাদিস নং ৫৩৩২
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
حَدَّثَنَا هَنَّادُ بْنُ السَّرِيِّ، حَدَّثَنَا حُسَيْنٌ الْجُعْفِيُّ، عَنْ عَبْدِ
الْعَزِيزِ بْنِ أَبِي رَوَّادٍ، عَنْ سَالِمِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " الإِسْبَالُ فِي الإِزَارِ وَالْقَمِيصِ وَالْعِمَامَةِ مَنْ جَرَّ مِنْهَا شَيْئًا خُيَلاَءَ لَمْ يَنْظُرِ اللَّهُ إِلَيْهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ " .
সালিম ইবনু ‘আব্দুল্লাহ (রহ) হতে তার পিতা থেকে বর্ণিতঃ:
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) লুঙ্গি, জামা ও পাগড়ী হেঁচড়ানো সম্পর্কে বলেন, যে ব্যক্তি অহংকারবশত এর কোনটি হেঁচড়িয়ে চলে, ক্বিয়ামাতের দিন আল্লাহ তার দিকে তাকাবেন না। [নাসায়ী, ইবনু মাযাহ]
সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ৪০৯৪
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
حَدَّثَنَا حَفْصُ بْنُ عُمَرَ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنِ الْعَلاَءِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ سَأَلْتُ أَبَا سَعِيدٍ الْخُدْرِيَّ عَنِ الإِزَارِ، فَقَالَ عَلَى الْخَبِيرِ سَقَطْتَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِزْرَةُ الْمُسْلِمِ إِلَى نِصْفِ السَّاقِ وَلاَ حَرَجَ - أَوْ لاَ جُنَاحَ - فِيمَا بَيْنَهُ وَبَيْنَ الْكَعْبَيْنِ مَا كَانَ أَسْفَلَ مِنَ الْكَعْبَيْنِ فَهُوَ فِي النَّارِ مَنْ جَرَّ إِزَارَهُ بَطَرًا لَمْ يَنْظُرِ اللَّهُ إِلَيْهِ " .
আল-‘আলা ইবনু ‘আব্দুর রহমান (রহ) হতে তার পিতার সুত্র থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন, আমি আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) কে লুঙ্গি পরিধানের স্থান সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, তুমি এ বিষয়ে সম্যক অবগত লোকের কাছেই এসেছো। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মুসলিমের পরিধেয় লুঙ্গি-পাজামা নলার মধ্যভাগ পর্যন্ত থাকবে, তবে টাখনুদ্বয় পর্যন্ত রাখলেও কোন গুনাহ হবে না। কিন্তু টাখনুদ্বয়ের নীচে গেলে তা জাহান্নামের আগুনে যাবে। যে অহংকারবশে নিজের লুঙ্গি হেঁচড়িয়ে চলে, আল্লাহ তার প্রতি ভ্রূক্ষেপ করবেন না।
সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ৪০৯৩
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
وَحَدَّثَنِي أَبُو بَكْرِ بْنُ خَلاَّدٍ الْبَاهِلِيُّ، حَدَّثَنَا يَحْيَى، - وَهُوَ الْقَطَّانُ - حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ الأَعْمَشُ، عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ مُسْهِرٍ، عَنْ خَرَشَةَ بْنِ الْحُرِّ، عَنْ أَبِي ذَرٍّ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " ثَلاَثَةٌ لاَ يُكَلِّمُهُمُ اللَّهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ الْمَنَّانُ الَّذِي لاَ يُعْطِي شَيْئًا إِلاَّ مَنَّهُ وَالْمُنَفِّقُ سِلْعَتَهُ بِالْحَلِفِ الْفَاجِرِ وَالْمُسْبِلُ إِزَارَهُ " .
وَحَدَّثَنِيهِ بِشْرُ بْنُ خَالِدٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدٌ، - يَعْنِي ابْنَ جَعْفَرٍ - عَنْ شُعْبَةَ، قَالَ سَمِعْتُ سُلَيْمَانَ، بِهَذَا الإِسْنَادِ وَقَالَ " ثَلاَثَةٌ لاَ يُكَلِّمُهُمُ اللَّهُ وَلاَ يَنْظُرُ إِلَيْهِمْ وَلاَ يُزَكِّيهِمْ وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ " .
আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, তিন ব্যক্তির সাথে কিয়ামাতের দিন আল্লাহ তা’আলা কথা বলবেন না। (১) যে ব্যক্তি কোন কিছু দান করে খোঁটা দেয়; (২) যে ব্যক্তি মিথ্যা কসম করে দোকানদারী করে এবং (৩) যে ব্যক্তি টাখ্নুর নীচে ঝুলিয়ে পোশাক পরিধান করে।
বিশ্র ইবনু খালিদ (রাঃ) ..... শু’বাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, আমি সুলাইমানকে এ সানাদে হাদীসটি বর্ণনা করতে শুনেছি। তিনি বলেছেন, তিন ব্যক্তির সাথে আল্লাহ তা’আলা কথা বলেবেন না, তাদের প্রতি তাকাবেন না, তাদের (গুনাহ থেকে) পবিত্র করবেন না। আর তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। (ই.ফা. ১৯৬; ই.সে. ২০২-২০৩)
সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ১৯৫
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
آدَمُ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ زِيَادٍ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ يَقُوْلُ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَوْ قَالَ أَبُو الْقَاسِمِ صلى الله عليه وسلم بَيْنَمَا رَجُلٌ يَمْشِي فِي حُلَّةٍ تُعْجِبُه“ نَفْسُه“ مُرَجِّلٌ جُمَّتَه“ إِذْ خَسَفَ اللهُ بِه„ فَهُوَ يَتَجَلْجَلُ إِلٰى يَوْمِ الْقِيَامَةِ.
আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ অথবা আবুল কাসিম বলেছেনঃ এক ব্যক্তি আকর্ষণীয় জোড়া কাপড় পরিধান করতঃ চুল আচঁড়াতে আচঁড়াতে পথ চলছিল; হঠাৎ আল্লাহ তাকে মাটির নীচে ধ্বসিয়ে দেন। ক্বিয়ামত অবধি সে এভাবে ধ্বসে যেতে থাকবে। [মুসলিম ৩৭/১০, হাঃ ২০৮৮, আহমাদ ১০০৪০] আধুনিক প্রকাশনী- ৫৩৬৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫২৬০)
সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৫৭৮৯
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
سَعِيدُ بْنُ عُفَيْرٍ قَالَ حَدَّثَنِي اللَّيْثُ قَالَ حَدَّثَنِي عَبْدُ الرَّحْمٰنِ بْنُ خَالِدٍ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ سَالِمِ بْنِ عَبْدِ اللهِ أَنَّ أَبَاه“ حَدَّثَه“ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ بَيْنَا رَجُلٌ يَجُرُّ إِزَارَه“ إِذْ خُسِفَ بِه„ فَهُوَ يَتَجَلَّلُ فِي الأَرْضِ إِلٰى يَوْمِ الْقِيَامَةِ.
تَابَعَه“ يُونُسُ عَنْ الزُّهْرِيِّ وَلَمْ يَرْفَعْه“ شُعَيْبٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ.
حَدَّثَنِي عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا وَهْبُ بْنُ جَرِيرٍ أَخْبَرَنَا أَبِي عَنْ عَمِّهِ جَرِيرِ بْنِ زَيْدٍ قَالَ كُنْتُ مَعَ سَالِمِ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ عَلٰى بَابِ دَارِهৃ فَقَالَ سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ سَمِعَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم نَحْوَهُ.
আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ এক লোক তার লুঙ্গি পায়ের গোড়ালির নীচে ঝুলিয়ে পথ অতিক্রম করছিল। এমন সময় তাকে মাটির নীচে ধ্বসিয়ে দেওয়া হল। ক্বিয়ামত অবধি সে মাটির নীচে ধ্বসে যেতে থাকবে। ইউনুস, যুহরী থেকে এ হাদীস এভাবেই বর্ণনা করেছেন। কিন্তু ‘শুআয়ব একে মারফূ’ হিসাবে যুহরী থেকে বর্ণনা করেননি। (আ.প্র. ৫৩৬৫, ই.ফা. ৫২৬১)
জাবীর ইবনু যায়দ (রাহ.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি সালিম ইবনু ‘আবদুল্লাহ্ ইবনু ‘উমারের সঙ্গে তাঁর ঘরের দরজায় ছিলাম, তখন তিনি বলেন, আমি আবূ হুরায়রা (রাঃ) -কে বলতে শুনেছি যে, তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে এ রকমই বলতে শুনেছেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫৩৬৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫২৬২)
সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৫৭৯০
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ، قَالَ أَنْبَأَنَا شُعْبَةُ، قَالَ أَخْبَرَنِي عَلِيُّ بْنُ مُدْرِكٍ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا زُرْعَةَ بْنَ عَمْرِو بْنِ جَرِيرٍ، يُحَدِّثُ عَنْ خَرَشَةَ بْنِ الْحُرِّ، عَنْ أَبِي ذَرٍّ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " ثَلاَثَةٌ لاَ يَنْظُرُ اللَّهُ إِلَيْهِمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَلاَ يُزَكِّيهِمْ وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ " . قُلْتُ مَنْ هُمْ يَا رَسُولَ اللَّهِ فَقَدْ خَابُوا وَخَسِرُوا فَقَالَ " الْمَنَّانُ وَالْمُسْبِلُ إِزَارَهُ وَالْمُنْفِقُ سِلْعَتَهُ بِالْحَلِفِ الْكَاذِبِ " . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ وَأَبِي هُرَيْرَةَ وَأَبِي أُمَامَةَ بْنِ ثَعْلَبَةَ وَعِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ وَمَعْقِلِ بْنِ يَسَارٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي ذَرٍّ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ্ তা’আলা কিয়ামাতের দিবসে তিন শ্রেণীর লোকের প্রতি ভ্রুক্ষেপ করবেন না, তাদেরকে পবিত্র করবেন না, উপরন্তু তাদের জন্য রয়েছে ভয়ানক শাস্তি। আমরা প্রশ্ন করলাম, হে আল্লাহর রাসূল। এরা কারা? এরা তো ব্যর্থ ও ধ্বংস হল। তিনি বললেনঃ (তারা হল) উপকার করার পর তার খোঁটাদানকারী, পায়ের গোড়ালির নিচে কাপড় পরিধানকারী এবং নিজের পণ্যদ্রব্য মিথ্যা শপথ করে বিক্রয়কারী।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২২০৮)
ফুটনোটঃ
ইবনু মাসঊদ, আবূ হুরাইরা, আবূ উমামা ইবনু সা’লাবা, ইমরান ইবনু হুসাইন ও মা’কিল ইবনু ইয়াসার (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন, আবূ যার (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটি হাসান সহীহ্।
জামে' আত-তিরমিজি, হাদিস নং ১২১১
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
أَخْبَرَنَا بِشْرُ بْنُ خَالِدٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ، عَنْ شُعْبَةَ، قَالَ: سَمِعْتُ سُلَيْمَانَ بْنَ مِهْرَانَ الْأَعْمَشَ، عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ مُسْهِرٍ، عَنْ خَرَشَةَ بْنِ الْحُرِّ، عَنْ أَبِي ذَرٍّ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: " ثَلَاثَةٌ لَا يُكَلِّمُهُمُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ يَوْمَ الْقِيَامَةِ، وَلَا يُزَكِّيهِمْ وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ: الْمَنَّانُ بِمَا أَعْطَى، وَالْمُسْبِلُ إِزَارَهُ، وَالْمُنَفِّقُ سَلْعَتَهُ بِالْحَلِفِ الْكَاذِبِ "
আবূ যর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: কিয়ামতের দিন তিন প্রকার ব্যক্তির সাথে আল্লাহ্তা’আলা কথা বলবেন না এবং তাদেরকে গুনাহ থেকে পবিত্র করবেন না, বরং তাদের জন্য থাকবে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। তাদের একজন ঐ ব্যক্তি, যে দান করে পরে খোঁটা দেয়; দ্বিতীয় ব্যক্তি, যে ইযার বা লুঙ্গি ইত্যাদি লটকিয়ে চলে; তৃতীয় ব্যক্তি যে মিথ্যা শপথ দ্বারা পণ্য চালায়।
সুনানে আন-নাসায়ী, হাদিস নং ৫৩৩৩
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
মানুষ যেসব কাজকে লঘু মনে করে অথচ আল্লাহর নিকটে সেগুলো খুবই গুরুতর, তন্মধ্যে টাখনুর নিচে কাপড় পরিধান করা একটি। অনেকের কাপড় এত লম্বা যে, তা মাটি স্পর্শ করে। কেউবা আবার পরিধেয় বস্ত্র পিছন থেকে মাটিতে টেনে বেড়ায়। টাখনুর নিচে এভাবে কাপড় ঝুলিয়ে পরা হারাম। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«ثَلَاثَةٌ لَا يُكَلِّمُهُمُ اللهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ، وَلَا يَنْظُرُ إِلَيْهِمْ وَلَا يُزَكِّيهِمْ وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ» قَالَ: فَقَرَأَهَا رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ثَلَاثَ مِرَارًا، قَالَ أَبُو ذَرٍّ: خَابُوا وَخَسِرُوا، مَنْ هُمْ يَا رَسُولَ اللهِ؟ قَالَ: «الْمُسْبِلُ، وَالْمَنَّانُ، وَالْمُنَفِّقُ سِلْعَتَهُ بِالْحَلِفِ الْكَاذِبِ»
“তিন প্রকার লোকের সাথে আল্লাহ তা‘আলা ক্বিয়ামতের দিন কথা বলবেন না, তাদের দিকে তাকাবেন না এবং তাদেরকে পবিত্র করবেন না; বরং তাদের জন্য রয়েছে মর্মন্তুদ শাস্তি। তারা হলো-টাখনুর নিচে কাপড় (অন্য বর্ণনায় লুঙ্গী) পরিধানকারী, খোঁটাদানকারী (অন্য বর্ণনায় এসেছে, যে খোঁটা না দিয়ে কোনো কিছু দান করে না) ও মিথ্যা কসমের মাধ্যমে পণ্য বিক্রয়কারী”।[1]
যে বলে, ‘আমার টাখনুর নিচে কাপড় পরা অহংকারের প্রেক্ষিতে নয়’ তার এ সাফাই গাওয়া গ্রহণযোগ্য নয়। টাখনুর নিচে কাপড় পরিধান করা অহংকার বশেই হোক আর এমনিতেই হোক, শাস্তির ধমকি তাতে রয়েছেই। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«مَا أَسْفَلَ مِنَ الكَعْبَيْنِ مِنَ الإِزَارِ فَفِي النَّارِ»
“টাখনুর নিচে কাপড়ের যেটুকু থাকবে তা জাহান্নামে যাবে”।[2]
এ হাদীসে অহংকার ও নিরহংকারের মধ্যে কোনো পার্থক্য করা হয় নি। আর জাহান্নামে গেলে শরীরের কোনো অংশবিশেষ যাবে না; বরং সমগ্র দেহই যাবে। অবশ্য অহংকার বশে যে টাখনুর নিচে কাপড় পরবে তার শাস্তি তুলনামূলকভাবে কঠোর ও বেশি হবে। এ কথাই রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণীতে এসেছে,
«مَنْ جَرَّ ثَوْبَهُ خُيَلاَءَ، لَمْ يَنْظُرِ اللَّهُ إِلَيْهِ يَوْمَ القِيَامَةِ»
“যে ব্যক্তি অহংকার বশে তার লুঙ্গি মাটির সাথে টেনে নিয়ে বেড়াবে, কিয়ামত দিবসে আল্লাহ তা‘আলা তার প্রতি দৃষ্টি দিবেন না”।[3] বেশি শাস্তি এ জন্য হবে যে, সে এক সঙ্গে দু’টি হারাম কাজ করছে। [এক. টাখনুর নিচে কাপড় পরা। দুই. অহংকার প্রদর্শন।]
বস্তুত পরিমিত পরিমাণ থেকে নিচে ঝুলিয়ে যেকোনো বস্ত্র পরিধান করাই ‘ইসবালের আওতাভুক্ত এবং তা হারাম। ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বর্ণিত হাদীসে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«الْإِسْبَالُ فِي الْإِزَارِ، وَالْقَمِيصِ، وَالْعِمَامَةِ، مَنْ جَرَّ مِنْهَا شَيْئًا خُيَلَاءَ، لَمْ يَنْظُرِ اللَّهُ إِلَيْهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ»
‘লুঙ্গি, জামা ও পাগড়ীতে ইসবাল (ঝুলিয়ে পরা) রয়েছে। এগুলো থেকে যেকোনো একটিকে কোনো ব্যক্তি অহংকার বশে টেনে-ছেঁচড়ে নিয়ে বেড়ালে কিয়ামত দিবসে আল্লাহ তার প্রতি সদয় দৃষ্টি দিবেন না”।[4]স্ত্রীলোকদের জন্য পায়ের সতরের সুবিধার্থে এক বিঘত কিংবা এক হাত পরিমাণ ঝুলিয়ে দেবার অবকাশ আছে; কেননা বাতাস বা অন্য কোনো কারণে সতর খোলার ভয় থাকলে অতিরিক্ত কাপড়ে তা বহুলাংশে রোধ হবে। তবে সীমালংঘন করা তাদের জন্যও বৈধ হবে না। যেমন বিয়ে-শাদীতে পরিহিত বস্ত্রের ক্ষেত্রে মেয়েদের সীমালংঘন করতে দেখা যায়। সেগুলো পরিমিত পরিমাণ থেকে কয়েক বিঘত এমনকি কয়েক মিটার লম্বা হয়। অনেক সময় পেছন থেকে তা বয়ে নিয়ে যেতেও দেখা যায়।
>
[1] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১০৬; মিশকাত, হাদীস নং ২৭৯৫।
[2] সুনান নাসাঈ, হাদীস নং ৫৩৩০; মুসনাদে আহমদ, হাদীস নং ২০১৮০।
[3] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৩৬৬৫; সহীহ মুসলিম; মিশকাত, হাদীস নং ৪৩১১।
[4] সুনান আবু দাউদ; সুনান নাসাঈ; মিশকাত, হাদীস নং ৪৩৩২।
عَنْ أَبِي ذَرٍّ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ قَالَ: «ثَلَاثَةٌ لَا يُكَلِّمُهُمُ اللَّهُ، وَلَا يَنْظُرُ إِلَيْهِمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ، وَلَا يُزَكِّيهِمْ، وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ» قُلْتُ: مَنْ هُمْ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَدْ خَابُوا وَخَسِرُوا؟ فَأَعَادَهَا ثَلَاثًا، قُلْتُ: مَنْ هُمْ يَا رَسُولَ اللَّهِ خَابُوا وَخَسِرُوا؟ فَقَالَ: «الْمُسْبِلُ، وَالْمَنَّانُ، وَالْمُنَفِّقُ سِلْعَتَهُ بِالْحَلِفِ الْكَاذِبِ – أَوِ الْفَاجِرِ
আবূ যার (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ কিয়ামাতের দিন আল্লাহ তিন প্রকার লোকের সাথে কথা বলবেন না, তাদের প্রতি (রাহমাতের নজরে) দেখবেন না এবং তাদেরকে পবিত্র করবেন না, আর তারা কঠিন শাস্তি ভোগ করবে। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! এরা কারা? নিঃসন্দেহে এরা ব্যর্থ ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) একথাটা তিনবার বললেন, আর আমিও তাঁকে প্রশ্ন করলাম, হে আল্লাহর রাসূল! এরা কেমন লোক? এরা তো ব্যর্থ ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিনি বললেনঃ (১) যে ব্যক্তি টাখনুর নীচে কাপড় ঝুলিয়ে রাখে; (২) যে ব্যক্তি দান করে খোঁটা দেয় এবং (৩) যে ব্যক্তি মিথ্যা বা ধোঁকাপূর্ন কসম করে পণ্য বিক্রি করে। [সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৪০৮৭]
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «مَا أَسْفَلَ مِنَ الكَعْبَيْنِ مِنَ الإِزَارِ فَفِي النَّارِ»
হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, টাখনুর নিচের যে অংশ পায়জামা বা লুঙ্গি দ্বারা ঢাকা থাকে তা জাহান্নামে যাবে। {বুখারী, হাদীস নং-৫৭৮৭, ৫৪৫০}
حَدَّثَنَا حَفْصُ بْنُ عُمَرَ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ مُدْرِكٍ، عَنْ أَبِي زُرْعَةَ بْنِ عَمْرِو بْنِ جَرِيرٍ، عَنْ خَرَشَةَ بْنِ الْحُرِّ، عَنْ أَبِي ذَرٍّ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ " ثَلاَثَةٌ لاَ يُكَلِّمُهُمُ اللَّهُ وَلاَ يَنْظُرُ إِلَيْهِمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَلاَ يُزَكِّيهِمْ وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ " . قُلْتُ مَنْ هُمْ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَدْ خَابُوا وَخَسِرُوا أَعَادَهَا ثَلاَثًا . قُلْتُ مَنْ هُمْ يَا رَسُولَ اللَّهِ خَابُوا وَخَسِرُوا فَقَالَ " الْمُسْبِلُ وَالْمَنَّانُ وَالْمُنْفِقُ سِلْعَتَهُ بِالْحَلِفِ الْكَاذِبِ " . أَوِ " الْفَاجِرِ " .
আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ ক্বিয়ামতের দিন আল্লাহ তিন প্রকার লোকের সাথে কথা বলবেন না, তাদের প্রতি (রহমাতের নজরে) দেখবেন না এবং তাদেরকে পবিত্র করবেন না, আর তারা কঠিন শাস্তি ভোগ করবে। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! এরা কারা? নিঃসন্দেহে এরা ব্যর্থ ও ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একথাটা তিন বার বললেন, আর আমিও তাঁকে প্রশ্ন করলাম, হে আল্লাহর রাসূল! এরা কেমন লোক? এরা তো ব্যর্থ ও ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তিনি বললেনঃ(১) যে ব্যক্তি টাখনুর নীচে কাপড় ঝুলিয়ে রাখে; (২) যে ব্যক্তি দান করে খোঁটা দেয় এবং (৩) যে ব্যক্তি মিথ্যা বা ধোঁকাপূর্ণ কসম করে পণ্য বিক্রি করে।
সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং৪০৮৭
হাদিসের মান সহীহ্
عَنِ الْمُغِيرَةِ بْنِ شُعْبَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «يَا سُفْيَانَ بْنَ سَهْلٍ، لَا تُسْبِلْ فَإِنَّ اللَّهَ لَا يُحِبُّ الْمُسْبِلِينَ»
মুগীরা ইবনে শোবা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে সুফিয়ান ইবনে সাহল! পরিধেয় বস্ত্র (গোছার নিচে) ঝুলিয়ে পরো না। কারণ আল্লাহ তা‘আলা এভাবে পরিধেয় বস্ত্র ঝুলিয়ে পরিধানকারীদের পছন্দ করেন না। [সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-৩৫৭৪]