যে প্রত্যয়ে যাত্রা ।।
এই সে যশোহর। যার নাম 'জসর' বা এখনও সবার প্রিয়তম নাম যশোর। নাম-যশ, প্রভাব-প্রতিপত্তিতে আদিকাল থেকে নিকট অতীত পর্যন্ত গৌরবময় ঐতিহ্যের জৌলুসে আমাদের সবার যশোর ছিল বড়ই গর্বের। উঁচু স্থান ছিল তার কাব্যে সাহিত্যে ধ্যানে ও জ্ঞানে। মুঘল আমলে ভারত সম্রাট মহামতি আকবর মানসিংহকে পাঠিয়ে ছিলেন। যশোহরের রাজা প্রতাপ আদিত্যের বিরুদ্ধে সমর- শয্যায়। হিউয়েন সাঙের বর্ণনায় মুড়লী রাজধানী থাকার পর
িচয়ে আমরা নন্দিত। বৃহত্তম যশোরের অধীনে ছিল অতীতের খুলনা তথা আজকের খুলনা। ভারতের বনগ্রাম বা বনগাঁ ছিল এই যশোরের ভিতরেই। নীল বিদ্রোহ, কৃষক আন্দোলন, ভাষা আন্দোলন, সর্বোপরি মহান মুক্তিযুদ্ধের পীঠস্থান এই যশোর। চিত্রা, ভৈরব, নবগঙ্গা, মধুমতি, কপোতাক্ষ বিধৌত মাটির রসে সিক্ত যশোর জন্ম দিয়েছে বরেণ্য ব্যক্তিত্বদেরকে। মধু কবি, বিশ্বখ্যাত নৃত্য শিল্পী উদয় শংকর, কালী শংকর, রবি শংকর, শিল্পী এস, এম, সুলতান, সাংবাদিক নিমাই ভট্টাচার্য, বীজগণিতের কে পি বসু, বাঘা যতিন, রায় বাহাদুর যদুনাথ মজুমদার, খান বাহাদুর লুৎফর রহমান, সাহিত্যিক মনোজ বসু, ধীরাজ ভট্টাচার্য, কবি মানকুমারী, মির্জা সাপসিকান, পাগলা কানাই, বিভূতি ভূষণ, বিজয় সরকার, কবি গোলাম মোস্তফা, কবি ফররুখ আহমদ ও কবিরত্ন নাসির উদ্দীন আহমেদ-এরা সবাই আমাদের অহংকার। যশোরের যেমনি অহংকার আছে, গর্ব করার মতো ঐতিহ্য ও আছে। তেমনি বঞ্চনা ও দুঃখের শেষ নেই। যশোরের সমস্যা কি, সমাধান কোন পথে তা তুলে ধরার জন্যই 'যশোরের কাগজ' এর জন্ম। 'যশোরের কাগজ' তার বরেণ্য ব্যক্তিত্বদেরকে, এ মাটির নামী-দামী সন্তানদের বর্তমান প্রজন্মের কাছে পরিচয় করিয়ে দিতে চায়। একই সাথে প্রতিশ্রুতিশীল তরুণদেরকে শিকড় পর্যায় থেকে তুলে আনতে চায় আলোতে। যশোরের কাগজ সকল ধর্মীয় কুসংস্কারের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকবে। যশোরের কাগজ ধর্মীয় মৌলবাদের বিরুদ্ধে জনগণকে সচেতন করতে প্রয়াসী হবে। বাঙালি জাতীয়তাবাদের চিন্তা চেতনায় উদ্বুদ্ধ যশোরের কাগজ মহান মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা বিরোধী সকল অপতৎপরতার বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠবে। মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা-এ প্রশ্নে যশোরের কাগজ আমৃত্যু কোন রকম আপোষে বিশ্বাস করে না। যশোরের কাগজ গৌরবের বিজয় পতাকা টেনে নেবে সকলের সাথে। মাস্তানী, দুর্গন্ধ, অপযশ দূর করবে মহতী ঐতিহ্য ও প্রগতির চেতনায়। বিবেককে শাণিত করবে শিক্ষা, সভ্যতার চিরন্তন পথে।
- রুকুনউদ্দৌলাহ
উপদেষ্টা সম্পাদক।