Riya Jaman

Riya Jaman �Don't judge a book by it's cover �

04/12/2024

একটা সত্যি কথা কি জানেন?
আমাদের মধ্যে না আছে আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা, না আছে ভয়।

এমন একজনের কথা একটু আগে বাসায় বলছিলাম, যে কিনা আমাদের সময়েরই একটা ছেলে।

এই ছেলে ইশার পরপরই ঘুমায়ে যায়, কারণ এটা রাসূলুল্লাহর (সা) সুন্নাহ। আর রাসূলুল্লাহর (সা) সুন্নাহই তার কাছে গাইডেন্স। আর গাইডেন্স ফলো করলেই সে সফল। নইলে তো সে মিসগাইডেড, ব্যর্থ!

এই ছেলে প্রতি রাতে ঘুম থেকে সাড়ে বারোটায় উঠে যায়। ভোর পাঁচটা পর্যন্ত সে চুপিচুপি টানা সলাত করে। কিয়াম করে।
কেন?

কারণ, সে আল্লাহর প্রতি সত্যিই কৃতজ্ঞ।
সে নিজের ভুল আর জাহান্নাম নিয়ে সত্যিই ভীত।
এই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে আর আশ্রয় চাইতে চাইতে সে দুই পা ফুলায়ে ফেলে।
প্রতিদিন।

একটা ট্যুরে ত্রিশদিনের একদিনও তার এই রুটিন মিস হয় নাই। তীব্র মশার প্রকোপেও আল্লাহর প্রতি ভালবাসা তাকে সুন্নাহর অনুসরণ থেকে থামাইতে পারে নাই। কোন পরিস্থিতি আর অজুহাতই তাকে আল্লাহর সাথে কথোপকথনের মিষ্টতা মিস করার দুঃসাহস দেয় নাই।

মনিব নিজে নেমে আসবেন, কথা শুনতে চাইবেন, মাফ করতে চাইবেন, আর এই কথার উপরে ঈমান থাকলে দাস হয়ে সে ঘুমাবে, তা কী হয়?
হয় না।

এই ছেলেটা তাওহীদ "বুঝেছে"।
আল্লাহকে চিনেছে।
সফলতা দেখেছে।

আর আমরা?
আমরা বয়ান দিয়ে, বয়ান শুনেই বিন্দাস!
ঠিক না?

আল্লাহর জন্য বাঁচা!
এতো সস্তা?

11/09/2024

পিতা মৃত্যুশয্যায়। আদরের কন্যাকে ডেকে পাঠালেন। জিজ্ঞেস করলেন—
- মা! রাসূল (সা) কোনদিন মারা গিয়েছিলেন?
- সোমবারে, আব্বাজান।
- আজ কি বার?
- সোমবার।
- আলহামদুলিল্লাহ।
- তার পরনে কি ছিলো?
- তিনটি সাদা কাপড়।
- রাসূল (সা) কতো বছর বয়সে রবের কাছে গিয়েছিলেন?
- ৬৩ বছরে।
- আমার বয়স কতো?
- ৬৩ বছর
- আলহামদুলিল্লাহ।

আবু বকর(রাঃ) প্রচণ্ড খুশি হলেন। বললেন, মনে হচ্ছে আমিও আজ মারা যাবো।
নিজের চাদরের দিকে তাকালেন। বললেন, এ চাদরটি ধুয়ে আরো দুটি কাপড় দিয়ে আমার কাফন দিয়ো।
যেন চাচ্ছেন প্রিয় বন্ধুর সাথে একই সজ্জায় মিলিত হতে। আশ্চর্যের ব্যাপার, উমার (রা)—ও মারা গিয়েছিলেন ৬৩ বছর বয়সে।

উসমান (রা) গৃহবন্দী। যিনি মসজিদে নববী সম্প্রসারণের জন্য অকাতরে অর্থ ব্যয় করেছিলেন তাকে সে মসজিদে সালাত পড়তে দেয়া হচ্ছিলো না। রূমা কূপ ক্রয় করে যিনি সকল মুসলিমের জন্য ওয়াকফ করে দিয়েছিলেন, তার গৃহে পানি সরবরাহ বন্ধ করে দেয়া হলো। উসমান (রা) স্বপ্নে রাসূল (সা), আবূ বকর (রা) আর উমার (রা)—কে দেখলেন। রাসূল (সা) বললেন, উসমান! আমাদের সাথে ইফতার করো।

উসমান (রা) বুঝলেন সময় ঘনিয়ে এসেছে। তিনি রোযা রাখলেন। খুব শক্ত দেখে একটা জামা পরলেন। যাতে হত্যা করার সময় নগ্ন না হয়ে পড়েন। চাইলেন প্রিয় মানুষটার সাথে সিয়াম রাখা অবস্থায় দেখা করতে।

বিলাল (রা) মৃত্যুশয্যায়। অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে আজকেই হয়তো তার শেষ দিন। স্ত্রী আহাজরি করতে করতে বললেন, আহারে! আজ কতোই না কষ্টের দিন। বিলাল (রা) জবাবে বললেন, বরং বলো আজ আনন্দের দিন। কাল আমি মুহাম্মদ (সা) আর তার সাহাবাদের সাথে দেখা করবো।

ইয়ারমুকের প্রান্তরে তীব্র যুদ্ধ হচ্ছে। এক খৃষ্টান যোদ্ধা হঠাৎ মুসলিমদের উদ্দেশ্যে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলো। বললো, কে আছো? আমার সাথে লড়বে!
এক যুবক আবু উবাইদা (রা)—এর কাছে গেলেন। বললেন, আমি নিজেকে আল্লাহর রাস্তায় বিলিয়ে দিতে চাই। এই আল্লাহর দুশমনের সাথে লড়ে অন্তরটা ঠাণ্ডা করতে চাই। আপনি কি আমাকে অনুমতি দিবেন?

আবু উবাইদা (রা) অনুমতি দিলেন। যুবক রওনা দেবার ঠিক আগে বললেন, হয়তো আমি শহীদ হয়ে যাবো। আপনার কি রাসূল (সা)—কে কিছু বলার আছে?

যুদ্ধের মাঠে আবেগ দেখাতে নেই। তবুও আগুনঝরা যুদ্ধের ময়দানে আবু উবাইদা (রা) কেঁদে ফেললেন। কাঁদতে কাঁদতে বললেন, আল্লাহর রাসূলকে আমার সালাম দিও।
যুবক ময়দানে গেলেন। লড়াই করতে করতে শহীদ হয়ে গেলেন।

মৃত্যু আমাদের কাছে খুব যন্ত্রণাদায়ক। এতোটাই তিক্ততার যে আমরা এটা নিয়ে ভাবতে চাই না। ভুলে থাকতে চাই। তবে সবার কাছে হয়তো মৃত্যু এমনটা না। কারো কাছে মৃত্যু ছিলো রবের দীদার লাভের এক মাধ্যম। প্রিয় নবীকে বহুদিন পর দেখার এক সুবর্ণ সুযোগ। ভালোবাসার মানুষকে দেখার সুযোগ।

একবার এক লোক রাসূল (সা)–এর কাছে আসলো। বললো, হে আল্লাহর নবী! যখন আমি আপনার সাথে থাকি তখন আমার মন প্রচণ্ড খুশি থাকে। কিন্তু যখন আমি আমার পরিবারের কাছে যাই তখন আমি আপনাকে মিস করা শুরু করি। আমার চোখ দুটি আপনাকে দেখতে আকুল হয়ে পড়ে। তাই আমি আপনার কাছে আসি। আপনার দিকে তাকাই। আমার অন্তর ঠাণ্ডা হয়।
কিন্তু এক সময় তো আপনি মারা যাবেন। আর আমিও মারা যাবো। আপনি জান্নাতে নবীদের সাথে উচ্চ পর্যায়ে থাকবেন। আর আমি যদি খুব কষ্ট করে জান্নাতে যেতেও পারি, তবে অনেক নীচু পর্যায়ে থাকবো। হে আল্লাহর নবী! আপনাকে ছাড়া কিভাবে জান্নাত আসলেই জান্নাত হতে পারে!

রাসূল (সা) জবাব দিতে পারলেন না। স্তব্ধ হয়ে রইলেন। জিবরাইল (আ) উত্তর দিতে আসমান থেকে নেমে আসলেন। বললেন—আপনার অনুসারীদের বলুন! মানুষ তো তার সাথেই জান্নাতে থাকবে যাকে সে দুনিয়াতে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসে

10/09/2024

অর্ধেক দ্বীন পূরণ করতে গিয়ে বাকি অর্ধেকটুকুও বিসর্জন দেয়ার ইতিহাস খুবই কমন বর্তমানে।
এটা শুধুমাত্র কুফু মিলিয়ে বিয়ে না করার কারণে হয়ে থাকে।
একজন কনজার্ভেটিভ বা দ্বীনদার ফ্যামিলির গায়রত থাকা মেয়ে বা ছেলে শুধু আবেগে পরেই একজন মর্ডান কাউকে বিয়ে করে ফেলাটা পরবর্তী লাইফের অপমৃত্যু ছাড়া কিছু নয়।
বিয়ের পরে ঠিক চেঞ্জ করে ফেলবে এই চ্যালেঞ্জ অনেক হাস্যকর।
হয়না ব্যাপারটা এমন নয়।
100তে একজন দম্পতি আছে যাদেরকে আল্লাহ কবুল করেছেন।
কিন্তু বাকি গুলো?যা ছিলো তাও শেষ।
কারণ হয় হেরে যায় নাহয় হারিয়ে যায়।
প্রাপ্ত বয়স পর্যন্ত যাকে আল্লাহর ভয় পরিবর্তন করতে পারেনি তাকে আপনি কোন জাদুবলে পরিবর্তন করবেন?
একটা আবেগী প্রতিশ্রুতি আপনার সঞ্চিত ইবাদাত আর পরকালকেই মাটি করছে না কি?
অর্থাৎ হয় সাংঘর্ষিক হয়ে সম্পর্ক রক্তারক্তি হয়
আর নাহয় সে নিজেই দ্বীনদার থেকে বদ্দিন হতে বাধ্য হয়।
কিন্তু পরিবর্তন করে জান্নাতি বানিয়ে ফেলাটা এতোটা সহজ হয়না অন্তত এই জামানায়।
আর কেউ যদি আল্লাহ ভীতি আর রক্ষণশীলতাকে নিজের সত্বায় বহন করে তার জন্যে মর্ডান জীবনসঙ্গীর সীমা লংঘনকে মেনে নেয়া কঠিন।
আর বাটার ফ্লাই এর উরানো দুনিয়াকে তামাশা বানিয়ে ফেলা মানুষটার জন্যে ধার্মিকতা শুধুমাত্র অসামাজিকতা বৈ কিছু নয়।
দুনিয়াকে জয় করা মানুষটার প্রচেষ্টা থাকে তার জীবনসঙ্গী ও দ্বীনদারিতার নামে পরাধীনতার শেকল ভেংগে খুব করে দুনিয়াকে এঞ্জয় করুক।
আর আল্লাহর ভয় বুকে ধারণ করা মানুষটা ক্ষতবিক্ষত হয় ভয়ে যে তার মানুষটা জাহান্নামের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
আর কবুলিয়াত হচ্ছে আরাধনার ব্যাপার।
আর ইবলিশ একজনকে পথভ্রষ্ট করতে এতো বেশী পরিশ্রম দেয় যে পথভ্রষ্ট জীবনসঙ্গী আর ইবলিশ এ দুজনের ডাবল প্রচেষ্টায় একজনের অন্তর থেকে ফাইনালি আল্লাহর ভীতি চলে গিয়ে দুনিয়া প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়।
চলে যায় জায়েজ নাজায়েজ আলাদা করার বিবেক।
বিলুপ্ত হয় গুনাহ করার অনুতপ্ততা।
কমে যায় ইবাদাতের মধুর স্বাদ।
বিনিময়ে সব অনুভূতি পরিবর্তন হয় গুনাহের সাবলীলতায়।
টইটুম্বুর গায়রাত নিয়ে চলা কনজার্ভেটিভ ফ্যামিলির পরহেজগার মানুষ গুলোর শুধু হুজুগে সিদ্ধান্তে এমন পরকাল হারিয়ে ফেলা লানত ওয়ালা পরিবর্তন যেনো আর না হয়।

08/09/2024

পাওলো কোয়েলহো তার ‘দ্য আলকেমিস্ট’ বইয়ে চমৎকার একটা কথা বলেছিলেন। কথাটা ছিল এমন, “তুমি যদি সত্যিকার অর্থেই কোনকিছু অর্জন করতে চাও, তবে পুরো বিশ্বব্রহ্মান্ড তোমাকে তা পাইয়ে দিতে সাহায্য করবে।”

আসলে, জীবনকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য ইচ্ছা শক্তির কোনো বিকল্প নেই। যার জীবনে ইচ্ছে শক্তি নেই তার জীবনে সময় গড়ায় ঠিকই কিন্তু সে সেই স্থানেই থেমে থাকে যেখান থেকে সে যাত্রা শুরু করেছিল।

জানো তো, ইচ্ছা শক্তিদের হতে হয় প্রখর তেজী, তবেই সেই কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবে। আর যদি কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে নাও পৌঁছানো যায় তবুও তার কাছাকাছি একটা স্থানে ঠিকই পৌঁছানো সম্ভবপর হবে।

যেমন ধরো, তোমার ইচ্ছে বহুতলা একটা ভবনের ছাদে একটা ঢিল ছুঁড়ে মারা। এখন তুমি যদি তোমার সর্বশক্তি দিয়ে চেষ্টা করো সেটা যেভাবেই হোক তবে অবশ্যই হতে হবে সৎ ভাবে। তাহলে তুমি সেই ঢিলটা ছাদে কিংবা তার খুব কাছাকাছি জায়গায় পৌঁছাতে পারবে। আর যদি তোমার এই ইচ্ছে শক্তি’ই না থাকতো তবে, না সেটা তোমার ভাবনায় আসতো আর না তা পূরণের সাহস আসতো।

শোনো, আমি বিশ্বাস করি এবং এরা বারবার খেয়াল করে দেখেছি আমার যতটুকু অর্জন বা যা কিছু পেয়েছি, সেটুকুই আমি মন থেকে নিঃস্বার্থভাবে চেয়েছি এবং যতক্ষণ পর্যন্ত তা হয় নি ততক্ষণ চেষ্টা করেছি। একভাবে না হলে অন্যভাবে করেছি। একবার চেষ্টায় ব্যর্থ হলে নতুনভাবে ভাবতে শুরু করেছি। যার জন্য খুলে গেছে নতুন পথ। জ্বলে উঠেছে জয়ের আন্দন রশ্মি।

আর যে কাজগুলো মন থেকে চাই নি। সামান্য হলেও যার ভিতরে অবহেলা ছিল, সে কাজগুলোতে কখনো সফল হতে পারি নি। না খুঁজে পেয়েছি সমাপ্তিটা সুন্দর করার জন্য ভালো কোনো পথ।

এজন্য বলছি, আমাদের সব সময় এমন কাজ করা উচিৎ যা আমারা মন থেকে করতে চাই। যার মধ্যে আছে পজেটিভিটি এবং প্রবল ইচ্ছা শক্তি। তবেই তা আমাদের এবং আশপাশের সব কিছুর জন্য মঙ্গলময় হবে।

06/09/2024

নিজের সময়টুকুই অসাধারণ ভাবে উপভোগ করে নিতে হয় 🦋💙

15/07/2024

কারো দোয়ায় থাকার ব্যাপার আসলেই সুন্দর।আর সে দোয়াটা যদি হয় রহমানের জান্নাতে সাক্ষাৎ করা,তাহলে দোয়ার সৌন্দর্য আরও ফুটে ওঠে।আমি যাদের দোয়া'য় থাকি সত্যিকার অর্থে তারাই আমার কাছের মানুষ।🌸

আমাদের সবার এমন কিছু মানুষ থাকুক।🤍

14/07/2024

আপনি রাস্তা দিয়ে কারো সাথে কথা বলতে বলতে হাটছেন বা গাড়িতে চড়ে বাইরের দৃশ্য দেখতে দেখতে যাচ্ছেন। হঠাৎ আপনার দৃষ্টি থেমে গেলো রাস্তার পাশের একটি কবর দেখে।মুখ থেকে বেরিয়ে গেলো_

"আসসালামু আ'লাইকুম ইয়া আহলাল কুবুর"
অর্থঃ হে কবরবাসী! আপনাদের উপর শান্তি বর্ষিত হোক।

ঠিক সেই সময়ে সেই কবরবাসী ছিলো আযাবের ফেরেশতাদের দখলে যারা মারাত্মক আঘাতে ছিন্ন বিচ্ছিন্ন করে দিচ্ছিলো সেই কবরবাসীর দেহকে। আশ্চর্য! আপনার কয়েক সেকেন্ডর এই দুয়াতে আল্লাহর আরশ থেকে নির্দেশ এলো, তার শাস্তি থামিয়ে দিয়ে তার উপর শান্তি বর্ষিত হলো।

প্রায় ২০/৩০ বছর পর আজ আপনিও এক অন্ধকার কবরের বাসিন্দা। ক্রমান্বয়ে আপনার উপরেও চলছে আযাবের ফেরেশতাদের মারাত্মক আঘাত। হঠাৎ করেই তারা আঘাত করা বন্ধ করে দিলো। কিছু সময়ের জন্য আপনি সুকুন পেলেন।

আপনার মনে পড়ে গেলো ওই যে সেই দিনগুলোর কথা যেদিন আপনি রাস্তার পাশের কবর দেখে এই ছোট্ট দুয়াটি করে যেতেন। আজ সেভাবেই কোনো এক পথিকের ও আপনার কবর দেখে মায়া হলো, আপনার মতো তিনিও সেই ছোট্ট দুয়াটি পড়ে আপনাকে কিছুক্ষণ এর জন্য আযাব থেকে মুক্তি দিলো।

আপনি যে দুয়া করবেন তা আপনার জন্যও আল্লাহ ফিরিয়ে দিবেন। কেননা, আল্লাহ প্রতিটি ভালো কাজের জন্য পুরস্কার দেন।

প্রতিদিন আমরা এভাবে কত কবর পার করি।অথচ ভুলেই যাই এরাও একদিন আমাদের মতো দুনিয়ায় বিচরণ করতো। দৈনিক রাস্তা পার হতে ততক্ষন কবর দেখে দুয়া করুন, যতক্ষন আপনি কবরের আযাব থেকে মুক্তি পেতে চান।

আল্লাহ আমাদের সবাইকে এই ছোট্ট আমলের তৌফিক দিন।

বিষাদগ্রস্ত এই নগরীতে ফুল হয়ে এসো আমার শহরে..!!
13/07/2024

বিষাদগ্রস্ত এই নগরীতে ফুল হয়ে এসো আমার শহরে..!!

10/07/2024

১. কোনো কাজ শুরু করার সঠিক সময় কোনটা?
২. মানুষের জীবনে সবচেয়ে গুরত্বপূর্ণ কাজ কোনটা?
৩. এবং মানুষের জীবনে সবচেয়ে গুরত্বপূর্ণ মানুষ কে?


বিঃদ্রঃ আপনারা নিজেদের মতো করে উত্তর দিন। আমি কালকে এর উত্তর জানাব। কিন্তু একটা মজার কথা এখনই বলে রাখি। মানুষ ভেদে এর উত্তর আলাদা হবে না বরং আমাদের সবার জন্য এর উত্তর একই।

08/07/2024

-তুমিটা হতে হবে নব্বই দশকের মতো,
-যার নজর থাকবে হাজার জনের মাঝে শুধু আমার দিকে💚

গোধূলির অস্পষ্ট আকাশেযাহাদের আকাঙ্ক্ষার জন্ম— মৃত্যু— সব—পৃথিবীর দিন আর রাত্রির রবশোনে না তাহারা !
30/06/2024

গোধূলির অস্পষ্ট আকাশে

যাহাদের আকাঙ্ক্ষার জন্ম— মৃত্যু— সব—

পৃথিবীর দিন আর রাত্রির রব

শোনে না তাহারা !

খুব গরম অনুভব করছে? কতোদিন AC এর সাহায্য নেবেন? পুরো বাংলাদেশে 300 কোটি গাছের প্রয়োজন। এই তো সবে শুরু 45°C থেকে 49°C থেক...
23/04/2024

খুব গরম অনুভব করছে? কতোদিন AC এর সাহায্য নেবেন?
পুরো বাংলাদেশে 300 কোটি গাছের প্রয়োজন। এই তো সবে শুরু 45°C থেকে 49°C থেকে 55°C থেকে 60°C হতে বেশি সময় লাগবে না।

56°C হলে মানুষের অস্তিত্ব টিকে থাকা মুশকিল হবে। তাই আমাদের এখন থেকে চারা গাছ রোপন করতে হবে; কারণ একটি গাছ মোটামুটি বড়ো হতে পাঁচ থেকে সাত বছর সময় লাগে।
সামনে বৃষ্টির সময় আসছে, অবশ্যই দুটি গাছ লাগাবেন।
গাছই জীবন 🌱🪴🌳🌴

22/04/2024

ছোটগল্পঃ প্রণয়ের উল্টোপিঠ
লেখিকাঃ আনিকা (riya)
ছোটগল্পঃ (এটি দুই পর্বের ছোটগল্প। এখানে একসাথে দেওয়া হয়েছে)

১.
'আমার ডিভোর্স চাই মৌনতা। আমার মা বংশের প্রদীপ চান। তুমি অক্ষম তা তুমি জানো। আমি আমার মায়ের একমাত্র ছেলে। কোনো দিন মায়ের ইচ্ছে অপূর্ণ রাখিনি এই ইচ্ছে ও অপূর্ণ রাখা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। তোমাকে ডিভোর্স লেটার পাঠিয়ে দিবো। সাইন করে দিও। দয়াকরে কোনো সিন ক্রিয়েট করো না। তুমি মায়ের কিংবা আমার ইচ্ছে পূরণ করতে পারবেনা। আমারও একটা বাচ্চা চাই। আমিও বাবা ডাক শুনতে চাই। এখন তুমি আমার পথে কাঁটা হয়ে কেনো থাকতে চাইছো বলোতো। আমার উপর একটু দয়াকরো মৌনতা। সমস্যা তো তোমার। আমার তো নয়। সোমবারে ডিভোর্স লেটার আসবে সাইন করে দিও। আমি সামনের মাসের ২ তারিখ তিথিকে বিয়ে করছি। তোমার দাওয়াত রইলো।'

চিঠিটা পড়ে কতোক্ষণ থম মেরে বসে রইলো মৌনতা। দিপ্ত এতোটা পরিবর্তন হয়ে যাবে কখনো ভাবেনি মৌনতা। খাটে হেলান দিয়ে চোখ বুজলো সে। চোখের কোণা বেয়ে পড়লো নোনাজল। এই কি সেই দিপ্ত যে তাকে হাজারো স্বপ্ন দেখিয়েছিলো আজ সব মিথ্যা হয়ে গেলো। বিয়ের প্রথম একবছর ভালো গেলেও। পরবর্তীতে বাচ্চা হওয়া নিয়ে অনেক কথা শুনতে হয়েছে মৌনতাকে। মৌনতা চোখ বুজে হারিয়ে গেলো অতীতে।

_______________

দিপ্তর সাথে পরিচয়টা হয়েছিলো ক্লাস টেনে থাকতে। তখন দিপ্ত কেবল ইন্টারে পড়ে। এক বৃষ্টিমুখর সন্ধ্যায় দেখা হয় তাদের। স্কুলের ড্রেস পরনে দুই বিনুনি করা ছোট মেয়েটাকে দেখে চোখ আটকে যায় দীপ্তর। সেই শুরু। মৌনতার স্কুলের সামনে প্রতিদিন দাঁড়িয়ে থাকতো সে। মৌনতা বুঝতোনা তাকে। প্রতিদিন স্কুল করে মৌনতা যখন ফুচকা খেতো। তখন দিপ্ত তার ঘামে ভেজা শার্টে, গরমে চুবচুবে হয়েও প্রশান্তির হাসি দিতো। এই মেয়েটার শান্ত, নিষ্পাপ মুখটাতে এতো মায়া। এই মেয়েটা একটা পরী। তার পরী। দিপ্ত নাম দিলো মেঘ পরী। মৌনতা প্রথম কয়েকদিন খেয়াল না করলেও পরে খেয়াল করলো একটা ছেলে প্রায়ই তার পিছু নেয়। মৌনতা বরাবরই শান্ত শিষ্ট, ভদ্র মেয়ে। প্রেম, ভালোবাসার পাশ দিয়েও সে যায়না। একদিন ফাঁকা রাস্তায় দিপ্ত মৌনতাকে বলেই ফেললো ভালোবাসার কথা। মৌনতা মানেনি। বাবা,মায়ের একমাত্র সন্তান সে। বাবা কত স্বপ্ন দেখেন তাকে নিয়ে এসব তাকে মানায় না। দিপ্ত নাছোড়বান্দা। তার মৌনতাকে চাই মানে চাই। মৌনতা যখন রাজি হচ্ছিলনা। তখন আত্মহত্যার ভয় দেখায় সে। দিপ্তর কথায় কি ছিলো মৌনতা জানেনা তবে মেনে নিলো তাকে।

২.
এরপর একসাথে ঘুরে বেড়ানো, স্কুল ফাঁকি দেওয়া,
মুভি দেখা, পার্কে বসে বাদাম খাওয়া আরো কত সুন্দর মুহূর্ত। কিশোরী মৌনতা পাগল হয়ে গিয়েছে দিপ্তর প্রেমে। দিপ্তও তাই। মৌনতাকে ছাড়া যেনো সে অচল।
তখন মৌনতা কলেজে পড়ে। দিপ্ত অনার্সে। মৌনতার বাবা দেখে ফেলেন তাদের একসাথে। সেইদিন প্রথম হাত উঠিয়েছিলেন নিজের কলিজার টুকরার উপর। মৌনতার সাথে কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছিলেন তিনি। মৌনতা যখন ভার্সিটি উঠলো তখন বিয়ে আসা শুরু করে তার জন্য। দিপ্তর প্রেমে পাগল মৌনতা বিয়ে করবেনা বলে জানিয়ে দেয়। দিপ্তর তখন চাকুরী নেই। মৌনতার বাবা কখনো একটা বেকার ছেলের সাথে তাকে বিয়ে দিবেন না। এদিকে দিপ্ত সময় চাচ্ছে। অকুল পাথারে পড়লো মৌনতা। একদিকে ভালোবাসা অপরদিকে পরিবার। বয়সও তো থেমে থাকেনা। এরমাঝেই মৌনতার বাবা মারা যান। মৌনতার মা পুরোপুরি ভেঙে পড়েন। পাগল হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। মানুষের অনেক কটুকথা শুনতে হয়েছে মৌনতাকে। অতপর এলো সে শুভক্ষণ। আট বছরের ভালোবাসা পূর্ণতা পেলো তাদের।

প্রথম একবছর সব ঠিক ছিলো। ভালোবাসায় ভরে গিয়েছিলো তাদের সংসার। দিপ্তের পরিবারে তার মা আর বড়বোন। বোনের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। তিনজনের সংসার। দিপ্ত যেনো চোখে হারায় মৌনতাকে। মায়ের বারণ শুনেও ছেলেটাকে বিয়ে করে সে সুখী হয়েছে। শাশুড়ী মায়ের ব্যবহারও খুবই ভালো। দিপ্ত বাসর রাতে মৌনতার কপালে চুমু খেয়ে বলেছিলো,

"যতই বিপদ আসুক কখনো একে অপরকে ছেড়ে যাবোনা। পাশে থাকবো সবসময়।"

দিপ্ত তার কথা রাখেনি। বিয়ের ছয়মাসের মাথায় প্রেগন্যান্ট হয়ে যায় মৌনতা। চারিদিকে খুশির আমেজ। দিপ্তকে যখন বলেছিলো তখন সে কি খুশি ছেলেটার। সারা এলাকা মিষ্টি বিতরণ আরো কত শত পাগলামি। তবে বিপত্তি ঘটে তিনমাসের মাথায়। সিঁড়ি থেকে পড়ে মিসক্যারেজ হয়ে যায় মৌনতার। ডাক্তার বলেদিলেন মা হওয়ার সম্ভবনা ক্ষীণ মৌনতার। সেই আসল রূপ দেখানো শুরু করলো দিপ্ত আর তার মা। মৌনতা কখনো কল্পনাও করেনি তার দিপ্ত, তার আট বছরের ভালোবাসা এতো খারাপ।এতো নিষ্ঠুর। শুরু হলো মধুর প্রণয়ের উল্টোপিঠ।
শাশুড়ী মায়ের নতুুন রূপে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলো সে। উঠতে বসতে খোঁটা, কলঙ্কিনী, কালসাপ আরো কত কথা শুনতে হয়েছে তাকে। দিপ্ত সব দেখেও ভাবলেশহীন। তার যেনো কিছুই যায় আসেনা। কথা বলা কমিয়ে দিয়েছে। কেবল রাতে প্রয়োজনীয় সময়টুকু কাছে টেনে নিয়ে জান, প্রাণ বললেও সকালে সেই আগের মতো।

একদিনের একটা ঘটনা মনে পড়লে আজো শিউরে উঠে মৌনতা।

৩.
তরকারিতে বেশি লবণ হয়ে গিয়েছে দেখে মৌনতার শাশুড়ী প্লেটটা ছুঁড়ে ফেললেন তার দিকে। দিপ্ত বাড়ি নেই। ইচ্ছে মতো কথা শুনিয়ে একটা চড় মারলেন তার গালে।
'বেয়াদব, অসভ্য। আমার ছেলের মাথাটা খেয়েছে। বাজা মেয়ে মানুষ। এই তুই তো মা হতে পারবিনা। তাহলে তুই তো মেয়ে জাতেই পড়িসনা। যেই তোর মা দেখছে আমার ছেলে সরকারি চাকুরি করে অমনি বিয়েটা দিয়ে দিলো। তুই মরতে পারিস না অলক্ষী। তোর মরা বাপে তো বেঁচে গেলো।'

'মা, আমার বাবার সম্পর্কে কিছু বলবেন না দয়াকরে।'

আসমা বেগম রেগে গেলেন মুহূর্তে।
'তোরে যদি আজ এই বাড়ি থেকে বের না করছি তো আমিও আসমা না।'

মৌনতা ছুটে গেলো ঘরে। আর কত সহ্য করবে সে। সেও তো একটা মানুষ।

রাতে যখন দিপ্ত ফিরলো তখন ইনিয়েবিনিয়ে ছেলেকে রাগিয়ে দিলেন আসমা। এমনিতেই মাত্র অফিস থেকে ফিরেছে। তার উপরে পারিবারিক এসব কথায় মাথা খারাপ হয়ে গেলো দিপ্তর। ঘরে গিয়ে ডাকলো মৌনতাকে। মৌনতা ঘুমিয়ে গিয়েছিলো। দিপ্তর ডাকে ঘুম ভাঙলো তার। চোখ মুছে যেই কিছু বলতে যাবে তার আগেই একটা চড় পড়ে তার গালে। মুহূর্তেই হতভম্ব হয়ে যায় মৌনতা। তারপর বেল্ট দিয়ে ইচ্ছে মতো দিপ্ত মেরেছে তাকে। মৌনতা টু শব্দটি করেনি। একসময় জ্ঞান হারায় সে। দিপ্ত ক্লান্ত হয়ে বেরিয়ে যায় ঘর থেকে। পরের দিন মৌনতা চলে আসে বাবার বাড়ি। মৌনতার মা মেয়ের দশা দেখে পুলিশ কেস করতে চান তবে মৌনতা না করে দেয়। এর পরেরদিন এসেই দিপ্ত হাতে পায়ে ধরে তাকে নিয়ে যায়। একটুও নির্যাতন কমেনি মা,ছেলের। মৌনতার মর্জি না থাকলেও দিপ্ত মিলিত হতো তার সাথে। সে যেনো ভোগের পণ্য মাত্র। এভাবে শ্বশুড় বাড়িতে ঝামেলা হয় সে বাপের বাড়ি চলে আসে। আবার দিপ্ত এসে নিয়ে যায়। বিগত কয়েকটা মাস এমনই চলছে। পাড়া-প্রতিবেশীদের কটু কথায় আর কান দেয়না মৌনতা। এইবার যখন এলো আর দিপ্ত তাকে নিতে আসেনি। প্রায় চারমাস সে বাবার বাসায় তবে দিপ্ত আসেনি। এবার আসার আগে ঝগড়া লেগে মৌনতার শাশুড়ী তার হাতে গরম তেল ঢেলে দেয় কিন্তু দিপ্ত মায়ের বিরুদ্ধে একটা কথাও বলেনি। সেই রাগে চলে আসে মৌনতা।

এবারও ভেবেছিলো দিপ্ত আসবে। না, দিপ্ত আসেনি। একমাস, দুইমাস, তিনমাস, চারমাস কেটে গেলো। দিপ্ত আসেনি। এসেছে দিপ্তর হৃদয় ক্ষত-বিক্ষত করা চিঠি।

চোখের পানিটা মুছে নিজের পেটে হাত বুলায় মৌনতা। দিপ্ত কি জানে এখানে দিপ্তর সন্তান বেড়ে উঠছে ।

________________

৪.
'মা, দীপ্ত ডিভোর্স চায়।'

মেয়ের কথা শুনে চমকে উঠলেন মর্জিনা। এ কোন পরিস্থিতির সম্মুখীন হলেন তিনি!

'দীপ্তকে বাড়িতে ডেকে আমি বুঝিয়ে বলবো।'
'আল্লাহর দোহায় লাগে মা। তুমি এমন করবেনা।'
'তোর মাথা ঠিক আছে মৌন। পেটে যে একজন বেড়ে উঠছে সে খেয়াল কি আছে। বাবা ছাড়া সন্তান কি করে বড় করবি তুই!'
'তোমার মেয়ের উপর ভরসা নেই তোমার। দীপ্ত আমাকে ছেড়ে দিতে চাইছে আমি কেন তার পথের বাঁধা হবো মা। সে আমাকে কখনো ভালোবাসেনি। আমি ওঁর সাথে থাকতে চাইনা মা।'

মর্জিনা বেগম আর কথা বাড়ালেন না।

_______________

ডিভোর্স লেটারে সাইন করার সময় একটুও কাঁদেনি মৌনতা। যে ভালোবাসার মর্যাদা দিতে জানেনা তার জন্য চোখের পানি ফেলবেনা বলেই মনস্থির করে সে। অফিসিয়ালি ডিভোর্স হয়ে গিয়েছে তাদের। মৌনতা এখন দীপ্তের প্রাক্তন। মৌনতা মৃদু হাসে। জানালার ধারে দাঁড়িয়ে তার কানে কেবল একটি কথাই বাজে প্রাক্তন।

পাঁচমাসে পেটটা ফুলে উঠেছে অনেকটুকু। মৌনতা পেটে হাত দিয়ে আবারো মৃদু হাসে। নরম কন্ঠে বলে,
'সোনা। আমিই তোর মা আবার আমিই তোর বাবা।'

আজ দীপ্তর বিয়ে। তিথি নামের মেয়েটাকে অনেক কমই দেখেছে মৌনতা। চিকন, ছিপছিপে গড়ন। দীপ্তর মামাতো বোন। মৌনতার কেনো যেন মনে হতো তিথি দীপ্তকে পছন্দ করে। নারী মনের শঙ্কাই সঠিক হলো। সময় বুঝে তিথি নামের মেয়েটা ছিনিয়ে নিচ্ছে তার সংসার।

৫.
আজ দীপ্তর বিয়ে। কি সুন্দর করে সাজানো হয়েছে চারপাশ। মৌনতা অবাক চোখে তাকিয়ে রয়। না, মৌনতার একটুও খারাপ লাগছেনা। হাতে করে সুন্দর একটা উপহার নিয়ে এসেছে সে। দীপ্তের বিয়ে পড়ানো শেষ। সোফায় নতুন বৌয়ের পাশে বসে আছে সে। মৌনতা দূর থেকে এক নজর দেখলো। তার বুকে মনে হচ্ছে কেউ তীর ছোড়ে মেরেছে। মুখে হাসি ফুটিয়ে মৌনতা এগিয়ে গেলো দীপ্তর সামনে। উপস্থিত সবাই হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে আছে। দীপ্ত অবাক দৃষ্টিতে খানিকক্ষণ পর্যবেক্ষণ করলো মৌনতাকে। উঁচু পেটটা দেখে মাথায় হাজারো প্রশ্নের ছড়াছড়ি। মৌনতাকে টেনে নিয়ে গেলো নিজ ঘরে।

'মৌনতা এসব কি!'
'দেখতেই তো পাচ্ছো আবার প্রশ্ন কেনো।'

ঠাট্টা করে বললো মৌনতা। রাগে মাথা কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে দীপ্তর। পাশ থেকে কাঁচের পানির জগটা তুলে আছাড় মারলো সে। চিৎকার করে বললো,
'হেয়ালি করবেনা আমার সাথে। তুমি প্রেগন্যান্ট আমাকে জানাও নি কেন?'
'প্রয়োজনবোধ করিনি।'
'আমার বাচ্চা ও। কেনো এমন করলে মৌনতা।'
'একদম চিৎকার করবেনা। তুমি দাওয়াত করেছো আমি এসেছি। নিজের চোখে দেখলাম তোমার নতুন বউ। সুখে থেকো। আমি আসি।'
'তুমি কোথাও যাবেনা। আমার ভালোবাসার কি কোনো মূল্য নেই।'

কথাটা শোনা মাত্র হো হো করে হেসে উঠে মৌনতা। কে কি বলে!

'ভেবেছিলাম আজ তোমার এতো খুশির দিনে তোমাকে কিছু বলবোনা। তবে তুমি বাধ্য করলে। ভালোবাসা! আদোও তুমি বুঝো ভালোবাসা কি? তুমি আমার আটবছরের ভালোবাসা ছিলে দীপ্ত। দুইবছরের সংসার। অথচ আমার একটা অক্ষমতা কতোটা পরিবর্তন করে দিয়েছে তোমায়। তোমরা মা, ছেলে মিলে কি করোনি আমার সাথে। আমার শরীরের প্রতিটা জায়গায় তোমার মারের চিহ্ন। এই তোমার ভালোবাসা। একটা সন্তান! একটা সন্তানই কি সব। আমি কিছুনা। তুমি আসলে একটা বিশ্বাসঘাতক। আমি কখনোই তোমার প্রেয়সী ছিলাম না। আমি ছিলাম তোমার মোহ।'

'মৌনতা তুমি আমায় ভুল....

'উঁহু, কোনো কথা নয়। কোনো ভুল বুঝিনি আমি। আমাকে ভালোবাসলে তুমি কখনো অন্য মেয়েকে বিয়ে করতে পারতেনা। স্বচ্ছ আয়না একবার ভেঙে গেলে আর যেমন জোড়া লাগেনা ঠিক তেমনি তোমার প্রতি আমার বিশ্বাসে ফাটল ধরেছে। পাগলের মতো চাইতাম তোমাকে। কতোটা বোকা আমি তাইনা। মায়ের বিরুদ্ধে গিয়েও তোমাকে বিয়ে করলাম। অথচ তুমি। থাক সেসব কথা। বিয়ে তো করলে বৌ নিয়ে সুখে থেকো সেই দোয়া করি। আমি না হয় তোমার সাথে কাটানো মুহূর্তগুলোকে দুঃস্বপ্ন ভেবে ভুলে যাবো। এই নাও তোমার উপহার। দয়াকরে আমার জীবনে কোনো অশান্তি সৃষ্টি করার চেষ্টা করোনা।'

মৌনতা বেরিয়ে এলো সকল বন্ধন ছিন্ন করে। পিছনে ফেলে এলো একটা তিক্ত অতীত। দীপ্ত হতভম্ব হয়ে আল্ট্রাসনোগ্রাফির রিপোর্টটার দিকে তাকিয়ে রইলো নির্নিমেষ।

৬.
কেটে গিয়েছে পাঁচটা বছর। ঢাকা মেডিকেলের সামনের রাস্তায় এদিক-ওদিক দৌঁড়াচ্ছে দীপ্ত। হাতে ঔষধের লম্বা লিস্ট। হঠাৎ পরিচিত একটা মুখ দেখে থমকে দাঁড়ালো সে। এগিয়ে গেলো সেই পরিচিত মুখটার কাছে। মেয়েটার কোলে বছর পাঁচেকের একটা মেয়ে। কি মায়াময় মুখ। দুইটা বেণী করা। মুখটায় যেনো পুরোই দীপ্তর অবয়ব।

মৌনতা ঢাকা এসেছে অনেকবছর পর। প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষিকা সে। মা, মেয়েকে নিয়ে রাজশাহী থাকতো এতোদিন।ঢাকায় এসেছিলো একটা কাজে। দীপ্তির হঠাৎ জ্বর আসায় হাসপাতালে আসা।

'মৌনতা।'

ডাকটা শুনে কিঞ্চিৎ চমকায় মৌনতা। সেই তিক্ত পরিচিত ডাক। আস্তে আস্তে চোখের সামনে আসে সেই মুখ। বিশ্বাসঘাতকের মুখ।

'কেমন আছো মৌনতা?'
'ভালো।'

দীপ্তি ড্যাবড্যাব করে দীপ্তের দিকে তাকিয়ে আছে। শত কষ্টের মধ্যে থেকেও ছোটমেয়েটার ড্যাবড্যাব চাহনি দেখে মৃদু হাসলো দীপ্ত। হাসতে সে ভুলে গেছে প্রায়।

'আমাকে জিজ্ঞেস করবেনা কেমন আছি?'
'ভালোই তো থাকার কথা। তা হসপিটালে কেনো? তোমার বউ প্রেগন্যান্ট বুঝি?'
'তিথির ক্যান্সার ধরা পড়েছে। ছয়মাস ধরে হাসপাতালেই আছি।'
'ওহ্। তোমার মা কেমন আছেন?'
'মা দুই বছর আগে গাড়ি এক্সিডেন্টে মারা গেছেন।'

খবরটা শুনে একটু খারাপ লাগলো মৌনতার। যতই হোক এককালে মা বলে ডেকেছিলো। দীপ্তি দূরে আচারওয়ালা দেখে বললো,
'মাম্মা, দীপ্তি আচার খাবে।'

ছোটমেয়েটার নাম দীপ্তি শুনে অবাক হয় দীপ্ত। অবাক চোখে তাকিয়ে আছে মৌনতার দিকে। মৌনতা মেয়ের গালে চুমু খেয়ে বলে,
'মাম্মা বাসায় গিয়ে বানিয়ে দিবো সোনা। এগুলো ভালোনা নোংরা।'

ছোট দীপ্তি মাথা নাড়ায়। মায়ের কথা সে সব সময় শুনে। মুখে বলে,
'আচ্ছা।'
'আমার কোলে একটু দিবে মৌনতা?'

দীপ্ত অসহায় গলায় অনুরোধ করে মৌনতাকে। মৌনতা আরো শক্ত করে চেপে ধরে দীপ্তিকে। যদি দীপ্ত নিয়ে যায় তার কলিজার টুকরাকে। দীপ্ত তা দেখে মৃদু হাসে।

'থাক দেওয়া লাগবেনা। চিন্তা করোনা আমি তোমার মেয়েকে কেড়ে নিবোনা।'

হাফ ছেড়ে বাঁচে মৌনতা। তবে দিপ্তের দিকে ভালো করে তাকায় সে। লোকটা আগের চেয়ে শুকিয়ে গেছে। সেই উজ্জ্বলতা এখন আর নেই। চোখের নিচে কালোদাগ। কত রাত ঘুমায়না কে জানে!

'জানো মৌনতা আমার শাস্তি আমি পেয়েছি। বিয়ের পরে চারবার মিসক্যারেজ হয় তিথির। এরপরে মা মারা যান। সেই শোক কাটিয়ে না উঠতেই তিথির ক্যান্সার ধরা পড়ে।'

মৌনতা চুপচাপ শুনছে। সে আর কি বলবে।

'আমাকে ক্ষমা করে দিও মৌনতা।'
'আমি তোমাকে ক্ষমা করতে পারবো কিনা জানিনা তবে তোমার প্রতি আমার কোনো অভিযোগ নেই।'
'আমার মাকেও ক্ষমা করে দিও।'
'তোমার মাকে আমি অনেক আগেই ক্ষমা করে দিয়েছি। আজ আসি। ভালো থেকো।'

চলে আসে মৌনতা। দীপ্তি তখনও দীপ্তর দিকে ঘাড় ঘুরিয়ে তাকিয়ে।

দীপ্ত দীর্ঘশ্বাস ফেলে। আজ হয়তো তার একটা সুন্দর সংসার হতে পারতো!

(সমাপ্ত).....

😊🖤
18/06/2023

😊🖤

Address

Jessore

Opening Hours

09:00 - 17:00

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Riya Jaman posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Videos

Share