20/05/2023
বর্তমানে এফিলিয়েট মার্কেটিং পেশা দেশে বিদেশে বেশ জনপ্রিয়। বিশেষ করে যারা ছাত্র ছাত্রী, বেকার অথবা পেশাজীবী অনেকেই পার্ট টাইম জব হিসেবে এফিলিয়েট করছে। তবে চাইলে একে ফুল টাইম জব ধরে একটু বেশি সময় দিয়ে ঘরে বসেই প্রচুর আয় করা সম্ভব।
এফিলিয়েট মার্কেটিং কি?
মার্কেটিং শব্দটির সাথে খুব সম্পৃক্ত হচ্ছে প্রচার, প্রমোশন এবং কেনা-বেচা শব্দ গুলো। তাই এফিলিয়েট মার্কেটিং ও তেমনই কিছু। আপনি যে কোন মার্কেট প্লেস যেমন অ্যামাজন বা অন্য কোন কোম্পানী যারা এফিলিয়েট মার্কেটিং চালু রেখেছে, সেখান থেকে আপনার পছন্দের কোন প্রোডাক্ট লিঙ্ক আপনার কোন সাইট বা ইউটিউব চ্যানেলে এড করলে আর সেই লিঙ্ক ক্লিক করে কেউ যদি সেই প্রোডাক্ট কিনে নেয় তবে আপনি বিক্রিত ওই প্রোডাক্টের দামের উপর নির্দিষ্ট হারে কমিশন পাবেন। এভাবে যত প্রোডাক্ট বা সেবা বিক্রি হবে আপনার আয় ততই বাড়তে থাকবে। প্রোডাক্ট পৌঁছনো বা প্রোডাক্ট সংক্রান্ত কোন দায় দায়িত্ব আপনাকে নিতে হবে না। আপনি কেবল আপনার সাইট বা চ্যানেলের জন্য প্রমোশন করবেন, এসইও করবেন যাতে কাস্টোমার সার্চ দিলে সহজেই আপনার সাইট বা চ্যানেল খুজে পায়। এজন্য আপনার সাইট এবং চ্যানেলে ভালো কনটেন্ট দিতে হবে। এসইও অনুযায়ী আপনাকে যথাযথ কিওয়ার্ড নির্বাচন করে নিতে হবে।
এফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করতে কি কি প্রয়োজন?
বেশ কিছু প্রস্তুতি, কিছু প্রসিডিউর মেনে এফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করতে হয়। আমরা এখন একে একে জানবো প্রতিটি স্টেপ। যারা একদম নতুন তাদের জন্য প্রতিটি স্টেপ পর্যায়ক্রমে আলোচনা করা হবে।
১। সঠিক এফিলিয়েট প্রোডাক্ট নির্বাচন করা
২। প্রোডাক্ট অনুযায়ী সঠিক নিশ গঠন করা
৩। এফিলিয়েট ওয়েবসাইটের জন্য যথাযথ ডোমেইন নির্বাচন করা
৪। প্রয়োজনীয় থিম এবং প্লাগিন সেট করা
৫। নিশ অনুযায়ী যথাযথ এবং ভালো মানের কনটেন্ট লিখা
৬। এনালিটিক্স সেট করা যাতে ওয়েবসাইটের সঠিক ডাটা পাওয়া যায়
১। সঠিক এফিলিয়েট প্রোডাক্ট নির্বাচন করাঃ
যেকোন মার্কেটপ্লেস বা কোম্পানীর বিভিন্ন প্রোডাক্ট বা সেবা থেকে প্রথমেই আপনাকে আপনার পছন্দের এবং যেটি সম্পর্কে আপনি ভালো জানেন বা সঠিক তথ্য আপনার কাছে আছে সেই সব প্রোডাক্ট বা সেবাকে এফিলিয়েট এর জন্য নির্বাচন করুন। কারণ এসব প্রোডাক্ট বা সেবা সম্পর্কে আপনাকে আর্টিকেল লিখতে হবে, এই সংক্রান্ত বিভিন্ন পোস্ট দিতে হবে, সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখতে হবে, ক্লায়েন্ট এর প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে আরও কত কি!
২। প্রোডাক্ট অনুযায়ী সঠিক নিশ গঠন করাঃ
প্রোডাক্ট নির্বাচনের পর অবশ্যই আপনাকে প্রোডাক্ট বা সেবা এর সাথে সম্পৃক্ত যথাযথ নিশ নির্বাচন করতে হবে। অর্থাৎ ধরুন আপনি অ্যামাজন থেকে কিছু রান্না করার সামগ্রী এফিলিয়েট করার সিদ্ধান্ত নিলেন। এখন আপনাকে আপনার ওয়েবসাইট যেখানে আপনি এফিলিয়েট লিঙ্কটি দিবেন তার জন্য একটি নিশ নির্বাচন করতে হবে। এখন রান্নার করার সামগ্রীর জন্য আপনার নিশ হওয়া উচিত “Kitchen Tools”, “Kitchen Gadget”,”Cookware” ইত্যাদি। এভাবে বাংলাতেও বিভিন্ন নিশ আছে। নিশ নিতে হবে যতোটা সম্ভম সুনির্দিষ্ট অর্থাৎ আপনি যদি ফ্রাই প্যান বিক্রি করতে চান তবে নিশ দিন Cooking Pan এভাবে।
কিভাবে একটি ভালো ও যথাযথ নিশ নির্বাচণ করতে হয় তা পরবর্তি অন্য আরেকটি আর্টিকেল এ থাকবে আশা করি।
৩। এফিলিয়েট ওয়েবসাইটের জন্য যথাযথ ডোমেইন নির্বাচন করাঃ
আপনার এফিলিয়েট সাইটের ডোমেইনের নাম অবশ্যিই আপনার নিশ এবং প্রোডাক্ট অনুযায়ী হতে হবে। কারণ ডোমেইন নেইম হচ্ছে আপনার সাইটের ইউআরএল (URL)। অর্থাৎ আপনার সাইটের নাম যা ব্রাউজারে দেখাবে। কাসটোমার ঐ ইউআরএল (URL) ধরেই আপনার সাইটে আসবে। তাছাড়া আপনার সাইটের এসইও এর জন্যও ডোমেইন নাম সঠিক ও যথাযথ হওয়া জরুরী। যেমন আপনার নিশ কিচেন টুলস হলে ডোমেইন এর নামেও কিচেন শব্দটি থাকা আবশ্যক। তাহলে ক্লায়েন্টও বুঝবে আপনার সাইটটি কি সংক্রান্ত।
৪। প্রয়োজনীয় থিম এবং প্লাগিন সেট করাঃ
আপনার সাইটটি দেখাতে কেমন হবে, মেনুগুলো কোথায়, কি রঙের হবে, সাইটবারে কি কি থাকবে, ফুটারেই বা কি কি দেখাবে এসব কিছু নির্ভর করে আপনি আপনার সাইটের জন্য কোন থিম নির্বাচন করেছেন।
আর প্লাগিন হচ্ছে পূর্বেই তৈরি করা এমন কিছু কাজ বা সিস্টেম যার মাধ্যমে আপনি আপনার ওয়েবসাইটে নির্ধারিত কিছু সিস্টেম চালু করে নিতে পারেন। যেমন এফিলিয়েট সাইটের জন্য প্রোডাক্ট প্রেজেন্টেশন , লিঙ্ক বিল্ডিং ইত্যাদির জন্য আবার এসইও করার জন্য বিভিন্ন প্লাগিন পাওয়া যায়। এগুলো আমাদের কাজকে আরও সহজ করে দেয়।
পরবর্তিতে প্র্যাক্টিক্যালি এসব কিছু ডিটেইল দেখানোর ইচ্ছে রইলো।
৫। নিশ অনুযায়ী যথাযথ এবং ভালো মানের কনটেন্ট লিখাঃ
কনটেন্ট হচ্ছে ওয়েবসাইটের প্রাণ। আপনার ওয়েবসাইটে এসে ক্লায়েন্ট যদি সহজেই কানেক্ট করতে পারে, যদি তারা আপনার লিখা ভালো ভাবে বুঝতে পারে এবং প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা পায় এবং অনুপ্রানিত হয়ে যদি আপনার দেয়া প্রোডাক্ট লিঙ্কে ক্লিক করে নির্দিষ্ট সাইট থেকে কিছু ক্রয় করে তবেই আপনি কমিশন পাবেন। তাই আপনার কনটেন্ট হতে হবে নির্ভূল, কোন কপি পেস্ট চলবে না আর হতে হবে তথ্যবহুল । এসইও এর ক্ষেত্রেও কনটেন্ট অনেক বড় ভূমিকা পালন করে।
৬। এনালিটিক্স সেট করা যাতে ওয়েবসাইটের সঠিক ডাটা পাওয়া যায়ঃ
আপনার ওয়েবসাইটটি প্রতিদিন বা মাসে কতজন ভিজিট করছে, কোন দেশ থেকে বেশি ভিজিটর আসছে, কোন কোন প্রোডাক্ট বেশি পছন্দ করছে এ ধরনের আরও অনেক কার্যকরী ডাটা পেতে আপনাকে সাইটের জন্য এনালিটিক্স সেট করতে হবে। গুগল এনালিটিক্স ওয়েসসাইটের জন্য দারুণ ভাবে সহায়ক। এখান থেকে প্রতিনিয়ত আপনি প্রয়োজনীয় ডাটা সংগ্রহ করতে পারবেন যা আপনার নিতি নির্ধারণে বড় ভূমিকা রাখবে।
আজকে যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করলাম তার অনেকটাই প্র্যাক্টিক্যালি দেখানোর ব্যাপার তারপরও আপনাদের ব্যাসিক থিউরি গুলো জানাও সমান জরুরি। কিভাবে একটি এফিলিয়েট ওয়েবসাইট করে সেখানে প্রোডাক্ট এড করা যায় এবং কিভাবে এফিলিয়েট লিঙ্ক এর মাধ্যমে ইনকাম জেনারেট করা যায় সব বিষয়ে ভিডিও পাবেন পরবর্তিতে। এখন পর্যন্ত ব্যাসিকটাই আপনারা আত্মস্থ করুন আর এমনিতেও অনেক ভিডিও পেয়ে যাবেন ইউটিউবে। আর কি, মঙ্গল কমনা সবার জন্য।