
24/10/2023
🟢 #আমন ধানের বাদামী গাছ ফড়িং (বিপিএইচ)/কারেন্ট পোকা দমনে কৃষক ভাইদের করণীয়:
✔️সম্মানিত আমন 🌾ধান আবাদি কৃষক ভাইয়েরা বর্তমানে আমন ধানের সবচেয়ে মারাত্মক ক্ষতিকর পোকা হচ্ছে বাদামী গাছ ফড়িং (বিপিএইচ) বা "কারেন্ট পোকা"
🔰পরিচিতি:- এ পোকাকে কৃষক ভাইয়েরা বিভিন্ন নামে যেমন
-Brown Plant hopper (BPH)
-বাদামি গাছ ফড়িং
-কারেন্ট পোকা
-গুনগুণী পোকা নামে পরিচিত।
#এটি খুবই ছোট আকৃতির🕵️♂️ মারাত্মক ক্ষতিকর পোকা। লম্বায় প্রায় ৪ মি:মি:। দেখতে বাদামি রঙের হয়। তবে বাচ্চা অবস্থায় প্রথমত সাদা রঙের হয়ে থাকে। এরা ধান গাছের গোড়ায় বা খোলে দলবদ্ধ ভাবে অবস্থান করে থাকে। ধানের ক্ষেতে প্রবেশ করলে গায়ে ছিটকে পড়তে দেখা যায়। এরা বাচ্চা থেকে পূর্ণবয়স্ক হতে ৫ বার খোলশ পরিবর্তন করে, তাই গাছের গোড়ায় মৃত খোলসও দেখা যায়।
>>আক্রমণের উপযুক্ত পরিবেশ:
-বাতাস চলাচল করে না
-স্যাঁতস্যাঁতে ও ছায়াযুক্ত জায়গা
-আর্দ্র ও গরম ☀️আবহাওয়া, "গুমট অবস্থায়"🌤️ অথবা
-পানি💧 জমে আছে এমন জমিতে এরা দ্রুত বংশবিস্তার করে।
-এ পোকা ছায়াযুক্ত জায়গায় থাকতে এরা পছন্দ করে।
-দিন ও রাতের তাপমাত্রা ১৮-২৫ ডিগ্রী সে: আর্দ্রতা ৮০% হলে। যে স্থানে ধান গাছ হেলে পড়ে সে সব জায়গায় এদের উপস্থিতি বেশি দেখা যায়।
-অতিরিক্ত ইউরিয়া সারের প্রয়োগ, কুঁশি বেশি হয় এমন জাত অথবা ঘন গাছ 🌾এদের জন্য অনুকূল পরিবেশ।
⚠️ক্ষতির ধরণ:
-সাধারণত কাইচ থোড় থেকে ফুল বের হওয়ার সময় থেকেই এ পোকার আক্রমন বেশি লক্ষ্য করা যায়/আক্রমণ করতে পারে।
#️⃣এরা ধান গাছের গোড়ায় দলবদ্ধ ভাবে আক্রমন করে #দৈনিক তাদের শরীরের ওজনের ১০-২০ গুন পর্যন্ত রস শোষন করতে পারে।
#এতে গাছ দুর্বল,🌾 হলুদ হয়ে যায়, পরে গাছ শুকিয়ে মারা যায়।
-এদের সংখ্যা এতো বেড়ে যায় যে আক্রান্ত খেতে বাজ পড়ার মতো হপারবার্ণ এর সৃষ্টি হয়।
-এদের আক্রমনে মাঠের পর মাঠ ফসল নষ্ট হয়ে যায়। ২০% থেকে ১০০% পর্যন্ত ফসল নষ্ট হয়ে যায়।
-বাচ্চা এবং পূর্ণবয়স্ক উভয় অবস্থায় এরা ক্ষতি করে থাকে।
#️⃣আক্রমণের পূর্বে করণীয়:💬
#দেরিতে/বিলম্বে ধানের চারা রোপন করবেন না।
#যে সব এলাকায় সব সময় বাদামী গাছ ফড়িং(বিপিএইচ)/কারেন্ট পোকার হয় সে সব এলাকায় আগাম জাতের ধান রোপন করলে এদের ক্ষতি থেকে অনেকটা রক্ষা পাওয়া যায়।
#ধানের চারা লাইনে রোপন করতে হবে।
#দশ লাইন পরপর এক লাইন ফাঁকা করে রোপন করতে হবে
#সঠিক দুরত্বে চারা রোপন করতে হবে৷
#এলোমেলো ভাবে চারা রোপন করা যাবে না।
#ঘন করে ধানের চারা রোপন করা যাবে না।
#ক্ষেতের আগাছা ও জমির আইল পরিস্কার রাখতে হবে।
#জমিতে সুষম মাত্রায় ইউরিয়া, ডিএপি, এমওপি (পটাশ) সার প্রয়োগ করতে হবে৷
#বিশেষ করে মাত্রাঅতিরিক্ত ইউরিয়া সার প্রয়োগ করা যাবে না।
#️⃣আক্রমণের পরে করণীয়:
#আক্রান্ত জমিতে ২-৩ হাত পর পর বিলিকেটে/ফাঁকা করে দিয়ে সুর্যের আলো ও বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা করতে হবে
#আক্রান্ত জমির পানি সরিয়ে ফেলতে হবে৷
#আক্রান্ত জাতিতে ইউরিয়া সার প্রয়োগ করা যাবে না।
#আক্রান্ত জমিতে পিজিআর স্প্রে করা যাবে না।
#আক্রান্ত ক্ষেতের ফসল কর্তনের/কাটার পর নাড়া পুড়িয়ে ফেলতে হবে।
#যদি কোন কৃষককের জমিতে বিপিএইচ/কারেন্ট পোকা আক্রমণ করে থাকে তাহলে পরবর্তী মৌসুমে ধানের চারা লাইনে (উত্তর-দক্ষিণ) সঠিক দুরত্বে রোপন করার মানসিক প্রস্তুতি নিতে হবে।
#️⃣আক্রমনের মাত্রা বেশি হলে দ্রুত অনুমোদিত কীটনাশক সঠিক মাত্রা অনুযায়ী স্প্রে করতে হবে।
#পাইমেট্রোজিন+নিতেনপাইরাম) গ্রুপের কীটনাশক যেমন-
#পাইরাজিন/লকডাউন/ওয়ারিয়র/কারেন্টশট/রানমেট ৭০ ডাব্লিউডিজি #এবং
পাইমেট্রিকস/স্পেলেনডর/তড়িৎ/সাবা/রাইজিন/আম্ফান/ পিনাক/ফুলস্টপ/রুথার/সিমটেন/ফড়িং/শিখা/ইউনিশট/ পাহাড়/নাইটেনজিন/কারেন্সি/রাইটার/ইষ্টভেনিশ/ ক্যানবেরা/ইউনিটেন/লকডাউন/গুনগুন/নাইজিন/পেদা টিং টিং/রাউটার ৮০ ডাব্লিউডিজি প্রতি লিটার পানিতে ০.৫ গ্রাম হারে মিশিয়ে স্প্রে করতে পারেন।
#️⃣এসিফেট গ্রুপের কীটনাশক যেমন-
এসাটাফ/টিডফেট/লেন্সার/ফরচুনেট/সিনোফেট/ চ্যালেন্জার/মেগাফেট/মিমফেট/হেসিফেট/হিলফেট/ কুইনফেট/ম্যাপডন/পিলারফেট/ক্রাইফেট/কিলফেট ৭৫ এসপি প্রতি লিটার পানিতে ১.৫ গ্রাম হারে মিশিয়ে স্প্রে করতে পারেন।
#️⃣ক্লোরোপাইরিফস গ্রুপের কীটনাশক যেমন- ডারসবান/ পাইরিফস/ক্লাসিক/সাইরেন/সিমবা/পাইক্লোরেক্স/কিলফস/ হেমলক ২০ ইসি প্রতি লিটার পানিতে ২ মিলি হারে মিশিয়ে স্প্রে করতে পারেন। অথবা
#️⃣একই ক্লোরোপাইরিফস গ্রুপের কীটনাশক
মর্টার/ ডিসপেল/কাছির/ গোলা/নেপচুন/চিতা/ফাসল ফস ৪৮ ইসি প্রতি লিটার পানিতে ২ মিলি হারে মিশিয়ে স্প্রে করতে পারেন।
#️⃣ইমিডাক্লোরোপ্রিড গ্রুপের কীটনাশক যেমন-
ইমিটাফ/ইমপেল/এডমায়ার/টিডো/গেইন/এসিপ্রিড/ জাদিদ ২০ এসএল প্রতি লিটার পানিতে৷ ১ মিলি হারে মিশিয়ে স্প্রে করতে পারেন।
#️⃣আইসোপ্রোকার্ব গ্রুপের কীটনাশক যেমন-
মিপসিন/সপসিন/সানসিন/ওয়াপ্রোকার্ব/স্মুথ/উইন্ড/ ছবি-৭৫ ডাব্লিউপি প্রতি লিটার পানিতে ২.৬ গ্রাম হারে মিশিয়ে স্প্রে করতে পারেন।
#️⃣পাইমেট্রোজিন গ্রুপের কীটনাশক যেমন-
প্লেনাম/পাইটাফ/কোটান/এগ্রিকন/মেট্রোজিন/সাইট্রোজিন/ হপারশট ৫০ ডাব্লিউডিজি প্রতি লিটার পানিতে ০.৫ গ্রাম হারে মিশিয়ে স্প্রে করতে পারেন।
💬🔰✍️
মো: মমিনুল ইসলাম
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা
উপজেলা কৃষি অফিস
গোয়ালন্দ রাজবাড়ী।