Tasdid - the path of Hidaya

Tasdid - the path of Hidaya হেদায়েত আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লার পক্ষ থেকে এক বিশেষ নেয়ামত। চলুন হেদায়েত পাওয়ার গল্পগুলো শুনা যাক!

31/01/2025

রাসেল, সেই শহুরে ছেলে যার জীবন ছিলো এক রুটিনে বাঁধা। যে জীবন কখনোও মনের গভীরে একটা প্রশ্ন রেখে যেতে পারেনি, ছিলো শুধুই অবচেতন স্বপ্ন, ক্ষণিকের সুখ, সাময়িক তৃপ্তি। বন্ধুবান্ধব, গানের সুর, প্রেমের মিথ, সিনেমার রঙিন দুনিয়া এসব ছিলো তার জীবনের একমাত্র অর্থ। নামাজ, কুরআন, দ্বীন—এসব তার জীবনের কোনো গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিলো না। শুক্রবার মাঝেমধ্যে নামাজ পড়ত, তাও লোকলজ্জার কারণে। ধর্ম তার কাছে ছিল শুধুই পরিবারের শেখানো কিছু আদর্শ, যা কখনো মন ছুঁয়ে যায়নি।
তার জীবন ছিল অন্য অনেকের মতোই—বন্ধুবান্ধব, আড্ডা, গান, সিনেমা, সোশ্যাল মিডিয়ায় স্ক্রলিং করে রাত পার করা। রাত ১২-১টা বাজলেও ঘুম আসত না, তাই ফোনের স্ক্রিনের আলোই ছিল তার একমাত্র সঙ্গী।
কিন্তু সেদিন রাতটা ছিল অন্যরকম। একটি আয়াত, এক বিপ্লব!
ফেসবুকে স্ক্রল করতে করতে হঠাৎ একটা ভিডিও সামনে এলো—একজন ক্বারী কুরআনের আয়াত তেলাওয়াত করছেন,

"يَا أَيُّهَا ٱلْإِنسَٰنُ مَا غَرَّكَ بِرَبِّكَ ٱلْكَرِيمِ"
"হে মানুষ! কীসে তোমাকে তোমার পরম দয়ালু রবের ব্যাপারে ধোঁকায় ফেলেছে?" (সূরা আল-ইনফিতার: ৬)

রাসেল জানে না কেন, এই আয়াতটা তার মনে কেমন যেন একটা প্রচণ্ড আঘাত হানলো! সে থমকে গেল। স্ক্রলিং বন্ধ করল। আবার শুনল।
আরও একবার শুনল।
আবার… আবার…

একবার নয়, দুইবার নয়, সে প্রায় ১০০ বার শুনল! প্রতিটি শুনবার সঙ্গে সঙ্গে বুকের মধ্যে যেন একটা অদৃশ্য ছুরি ঢুকে যাচ্ছে!

"আমি কেন আমার রবকে ভুলে গেছি?"
"আমি কেন নামাজ পড়ি না?"
"আমি কি সত্যিই এভাবে জীবন কাটিয়ে দেব?"

প্রশ্নগুলো তাকে কামড়ে ধরল! অতঃপর অঝোর কান্নার রাত..

রাসেল কিছু বুঝে ওঠার আগেই তার চোখ দিয়ে পানি পড়তে শুরু করল। প্রথমে ধীরে, তারপর যেন ঝড়ের মতো! কান্নার শব্দ এত বেড়ে গেল যে পাশের ঘরে থাকা মা ছুটে এলো, আতঙ্কিত কণ্ঠে বলল,

— "রাসেল! কী হয়েছে বাবা? কাঁদছ কেন?"

রাসেল কিছু বলার চেষ্টা করল, কিন্তু মুখ দিয়ে কোনো শব্দ বের হলো না। শুধু মাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগল, যেন সে ছোটবেলায় কোনো দুঃস্বপ্ন দেখে মায়ের কাছে আশ্রয় নিয়েছে!

মা বারবার জিজ্ঞেস করছিল, "কী হয়েছে?"
কিন্তু রাসেল জানে না কীভাবে বলবে!
সে শুধু কেঁদেই গেল, কেঁদেই গেল…

অতঃপর, ফজরের আজান ও নতুন রাসেল..

রাত কাটল কান্নায়, অনুশোচনায়, আর অনবরত চিন্তায়!
ফজরের আজান শোনা মাত্রই রাসেল এমন কিছু অনুভব করল, যা আগে কখনো হয়নি—তার মন আনন্দে নেচে উঠল! আজান তাকে যেন ডাকছে!

সে তড়িঘড়ি করে উঠে ওজু করল, আর জীবনে প্রথমবার এমন তাড়াহুড়ো করে মসজিদে দৌড় দিল!

নামাজে দাঁড়ালো…
"আল্লাহু আকবার!"

হঠাৎ যেন এক অদ্ভুত প্রশান্তি নেমে এলো!

কান্না?
হ্যাঁ, সে আবার কাঁদছে! কিন্তু এবার এই কান্নার সঙ্গে আছে এক অদ্ভুত আনন্দ, এক শুদ্ধ অনুভূতি, যেন সে কোনো হারিয়ে যাওয়া ঠিকানায় ফিরে এসেছে!

"আহ, আমার রব! আমি এতদিন কোথায় ছিলাম!"

অতঃপর, নতুন জীবন, নতুন রাসেল...

সেই রাতের পর রাসেল আর আগের মতো নেই!
যে ছেলে দুনিয়ার মায়ায় ডুবে ছিল, সে এখন আল্লাহর কথা ভাবতে ভাবতে ঘুমায়! যে ছেলে নামাজ এড়িয়ে চলত, সে এখন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে, এমনকি তাহাজ্জুদেও ওঠে! যে ছেলে ইউটিউবে গান শুনত, সে এখন কুরআনের তেলাওয়াত শুনে কাঁদে!

আজ কেউ রাসেলকে দেখে চিনতে পারে না!
কেউ জিজ্ঞেস করলে সে হাসে আর বলে—
"আমি তো মৃত ছিলাম, আল্লাহ আমাকে নতুন জীবন দিয়েছেন!"

-রায়হান ইমতিয়াজ রাসেল
মুক্তাগাছা, ময়মনসিংহ।

Tasdid - the path of Hidaya
[আপনার হিদায়েতের গল্প আমাদের কে লিখে পাঠান]

31/01/2025

পাকিস্তানের করাচির এক মহিলা একটি পতিতালয় চালাতেন। রামাদানের এক রাতে তার ছেলে মসজিদে তারাবির নামাজ শেষে দেখল মসজিদের সামনে কেউ ফ্রিতে অডিও সিডি বিলি করছে। সে সেখান থেকে একটা সিডি নিয়ে বাসায় ফিরে এল।

ঐ রাতে সে বাসায় গিয়েই সিডি চালিয়ে শুনতে লাগল। ছেলের রুমের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় সেটা তার মায়ের কানেও গেল। মহিলা বসে বসে শুনতে লাগলেন যতক্ষণ না পুরো আলোচনা শেষ না হয়। শেষ হওয়ার পর তিনি ছেলেকে বললেন, ‘সিডিটা আবার চালাও।’

ছেলে সিডি আবার চালাল। শেষ হওয়ার পর তার মা আবারও বললেন, ‘পুনরায় চালাও।’

এভাবে টানা তিনবার শুনলেন।

‘এই সিডিতে যে লোক কথা বলছে, সে কে?’- মহিলা তার ছেলেকে জিজ্ঞেস করলেন।

‘আমি জানি না। মসজিদের সামনে একজন বিলি করছিল। আমি একটা নিয়ে এসেছি।’- ছেলে জবাব দিল।

পরের রাতে মহিলাও তার ছেলের সাথে মসজিদে গেলেন। তারাবির নামাজ শেষে তিনি ছেলেকে বললেন, তিনি ইমাম সাহেবের সাথে কথা বলতে চান।

ইমাম সাহেব আসার পর মহিলা গিজ্ঞেস করলেন, ‘আপনি কি আমার ছেলেকে এই সিডি দিয়েছিলেন গত রাতে?’

‘হ্যাঁ, কিন্তু কেন জিজ্ঞেস করছেন?’

‘এই সিডিতে যিনি কথা বলছেন, তিনি কে?’- মহিলা জিজ্ঞেস করলেন।

ইমাম বললেন, ‘তিনি আমার শিক্ষক। মাওলানা তারিক জামিল।’

‘আপনি কি সত্যি করে আমার একটা প্রশ্নের উত্তর দেবেন?’

‘অবশ্যই! কেন নয়!’

‘আমি যদি আল্লাহর কাছে তাওবা করি, তিনি কি আমার তাওবা কবুল করবেন?’

‘কেন এমন প্রশ্ন করছেন? কী করেছেন আপনি?’

‘একজন পুরুষ বা মহিলা সবচেয়ে নিকৃষ্ট যে পাপ করতে পারে, তারও অনেকগুণ বড় পাপ—আমি এতটাই পাপী।’

ইমাম বললেন, ‘আমি নিজ থেকে কোনো উত্তর দেব না। আমি আপনাকে সেই উত্তর দেব যেটা স্বয়ং আল্লাহ কুরআনে দিয়েছেন,

يَا عِبَادِيَ الَّذِينَ أَسْرَفُوا عَلَىٰ أَنفُسِهِمْ لَا تَقْنَطُوا مِن رَّحْمَةِ اللَّهِ ۚ إِنَّ اللَّهَ يَغْفِرُ الذُّنُوبَ جَمِيعًا ۚ إِنَّهُ هُوَ الْغَفُورُ الرَّحِيمُ

“হে আমার বান্দাগণ যারা নিজেদের উপর যুলুম করেছ তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয় আল্লাহ সমস্ত গোনাহ মাফ করেন। তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।” (সূরাহ যুমার, ৩৯ : ৫৩)

মহিলা বললেন, ‘তাহলে আপনি সাক্ষী থাকুন, আমি আজ এই মুহূর্তে আল্লাহর কাছে তাওবা করলাম।’

পরের রাতে সেই মহিলা মসজিদে এল নামাজ পড়তে। সম্পূর্ণ তারাবি নামাজ শেষ করল। শেষে তিনি চিৎকার করে বললেন, ‘ও আল্লাহ! যদি আমার তাওবা কবুল হয়ে থাকে, তবে আমাকে এক্ষনি আপনার কাছে নিয়ে যান।'সবার দৃষ্টিগোচর হলো কিন্তু কেউই উনাকে কিছু বললেন না।

পরের রাতেও মহিলা মসজিদে এলেন। নামাজ শেষে আবারো চিৎকার করে বললেন, ‘ও আল্লাহ! যদি আমার তাওবা কবুল হয়ে থাকে, তবে আমাকে এক্ষনি আপনার কাছে নিয়ে যান।’

এরপরের রাতেও একই ঘটনা। এরপরের রাত, এরপরের রাত। এভাবে ২৯ রামাদানের রাত এলো, ঐ রাতে তারাবির কুরআন খতম হবে।

তারাবি শেষে কুরআন খতম হলো, ইমাম সাহেব বিশেষ দুআ করলেন। এরপর সবাই একে একে মসজিদ থেকে বেরিয়ে গেল, শুধু একজন ছাড়া...
সেই মহিলা!

তিনি সিজদায় পড়ে আছেন। আল্লাহ মহিলার তাওবা কবুল করে নিয়েছেন, সেই সাথে তাঁর দুআও,তিনি সিজদাহ্তেই আল্লাহর কাছে চলে গেলেন।

আল্লাহ তা'লা কাউকেই ফেরান না যদি মনখুলে আল্লাহর কাছে ফিরতে পারে।

আগামী সপ্তাহ থেকে, আগামী বছর থেকে, হজ্জ করে এসে, সবকিছু একটু গুছিয়ে উঠে জীবনে একটা “ফ্রেশ স্টার্ট” করার আশায় আমরা বসে থাকি। তাওবা করে, পাপকাজ ছেড়ে, একদিন নামাজ-দুআ শুরু করব—এর জন্য শয়তানের দেওয়া আশ্বাসে আমরা বিশ্বাস করে থাকি।অলসতায় আর ফেরা হয় না।

কবরস্থানে গিয়ে যত নতুন কবর দেখেন, এর প্রত্যেকেই হয়তো আপনার আমার মতো এভাবেই একদিন জীবনে “ফ্রেশ স্টার্ট” করার আশায় বসে ছিল। তাদের সেই দিনটা আর কোনোদিন আসেনি।

আল্লাহর কাছে তাওবা করার জন্য কোনো এপয়েন্টমেন্ট লাগে না। তাঁর কাছে যেকোনো সময় যাওয়া যায়। আল্লাহ আমাদেরকে দ্রুত তাঁর দিকে প্রত্যাবর্তনের সুযোগ দিন। আমীন।

[লেকচার-তারিক জামিল,বই: কাল আবার পাখিরা আকাশে উড়বে]

- Tasdid - the path of Hidaya
[আপনার হেদায়েত পাওয়ার গল্প আমাদের লিখে পাঠান]

[এক]রঙিন দুনিয়ার রাজপুত্র:রেদোয়ান! নাম শুনলেই বন্ধুদের চোখে ভাসত এক বিলাসী জীবনের প্রতিচ্ছবি। যার হাতে ছিল দামি ঘড়ি, শখে...
29/01/2025

[এক]
রঙিন দুনিয়ার রাজপুত্র:
রেদোয়ান! নাম শুনলেই বন্ধুদের চোখে ভাসত এক বিলাসী জীবনের প্রতিচ্ছবি। যার হাতে ছিল দামি ঘড়ি, শখের বাইক, যার ফোনের ব্র্যান্ড শুনলে ছেলেরা আফসোস করত, আর গিটার বাজালে মেয়েরা মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকত। কিন্তু তার দুনিয়া এত কিছুর জন্য ছিল না, তার দুনিয়া ছিল 'ক' নামের একটি মেয়ে। যার হাসির জন্য সে রাত জাগত, যার চাওয়ার জন্য সব উজাড় করে দিত!

- 'ক' বললে দামী গিফট? → সে এনে দিত!
- 'ক' বললে কোথাও ঘুরতে যাব? → রেদোয়ান পাগলের মতো ছুটে যেত!
- ‘ক’ বললে, "তুমি না গেলে আমি অন্য কোথাও ভর্তি হবো না!" → সে নিজের ক্যারিয়ার জলাঞ্জলি দিয়ে একই কলেজে ভর্তি হল!..
সে ভাবত, “ভালোবাসা মানে সবকিছু ত্যাগ করা, নিজেকে বিলিয়ে দেওয়া!"
কিন্তু সে জানত না, “ভালোবাসা মানে কখনো কখনো নিজের ধ্বংস ডেকে আনা!"

[দুই]
প্রেমের পিঠে ছুরি:
একদিন এক বন্ধু বলল,
"ভাই, ‘ক'-এর কিছু দেখলে তোর শরীর ঠাণ্ডা হয়ে যাবে!"
রেদোয়ান হাসল, "আরে ভাই, ‘ক’ আমার জান, ওর ব্যাপারে আমার মনে কোনো সন্দেহ নাই!"
বন্ধু ফোনটা সামনে ধরল।
ভিডিও প্লে হল…
‘ক’! ..
কিন্তু তার সঙ্গে রেদোয়ান নেই! তারই এক বন্ধু,
তারই বিশ্বাসের দেয়ালে আজ ফাটল ধরেছে! আলিঙ্গন, অন্তরঙ্গতা, প্রতিটা মুহূর্তে বিশ্বাসঘাতকতার আগুন জ্বলছে! হাত কাঁপছে, চোখ জ্বলছে, বুকের ভেতর যেন আগ্নেয়গিরি ফেটে পড়ছে! এই ছিল তার ভালোবাসার পরিণতি? ..
ছুটে গেল ‘ক’ এর কাছে।
কথা বলতে পারছিল না, শুধু ভিডিওটা দেখাল! ‘ক’ ঠোঁটের কোণে তাচ্ছিল্য, "এটা তার নয়, এটা মিথ্যা, এটা নাকি এডিট করে বানানো" রেদোয়ানের মনে হল, এই মেয়ে যেন তার চেনা কেউ নয়! তারপর ব্রেকআপ। তারপর কয়েকদিন পর খবর এলো— ‘ক’ বিয়ে করছে!
আর কাকে?
ঠিক সেই ছেলেটাকে! এবার রেদোয়ানের জন্য অপেক্ষা করছিল এক -অন্ধকার গহ্বর!

[তিন]
নেশা, পতন, মৃত্যুর ছায়া:
বুকের ভেতর হাহাকার, মাথার ভেতর ঘূর্ণিঝড়,
যার জন্য জীবনটা সাজাল, সে এখন পরের ঘর!
নেশার গ্লাসে সুখ খুঁজতে লাগল। ক্লাব, পার্টি, সিগারেট, মদ—সব এক হয়ে গেল! দিন চলে যায়, রাত গলে যায়, চোখের নিচে কালো দাগ বাড়তে থাকে। বন্ধুরা প্রথমে দুঃখ দেখাল, তারপর বলল, "ভাই, জীবন এনজয় কর, মেয়ে তো কত আসবে!"..
কিন্তু রেদোয়ানের জীবন আর আগের মতো ছিল না! নেশায় নেশায় শরীর ক্ষয়ে গেল, ছয় মাসের মধ্যে মানুষটা যেন জীবন্ত কঙ্কাল! একদিন রাতে বুকে প্রচণ্ড ব্যথা হল, ঘাম ঝরতে লাগল, আর কিছু মনে নেই…

জ্ঞান ফেরার পর দেখল, সে হাসপাতালের সাদা বিছানায় শুয়ে আছে। বন্ধুরা প্রথম দু'দিন এলো, তারপর হারিয়ে গেল। বাবা একবারও দেখতে এল না, রাগ করে বলল, "নিজেই নিজের জীবন শেষ করেছিস, আমার দেখার কিছু নেই!" শুধু পাশে ছিল মা… আর ছোট্ট বোন। ..
একদিন জানালার দিকে তাকিয়ে বুঝতে পারল—"যাদের জন্য জীবন উজাড় করেছিলাম, তারা আমাকে ভুলে গেছে! আর যাদের ভালোবাসাকে আমি পাত্তা দেইনি, তারা এখনও আমার জন্য কাঁদছে!"

[চার]
অন্ধকার থেকে আলোর পথে:
হাসপাতাল থেকে ফিরে আসার কয়েকদিন পর বিকেলে সে বসে ছিল বাসার নিচে। ঠিক তখনই, তাবলিগের কয়েকজন এসে বলল, "ভাই, মসজিদে আসেন, নামাজ পড়ি, আল্লাহর ঘরে আসেন!".
রেদোয়ান কেন জানি উঠে দাঁড়াল। কতদিন পর… মসজিদের সাদা মেঝেতে পা রাখল! মাগরিবের পর এক আলেম বলছিলেন—"মানুষ দুনিয়ার ধোঁকায় পড়ে কীভাবে ধ্বংস হয়, কীভাবে গুনাহের সাগরে ডুবে যায়…" প্রতিটা শব্দ হৃদয়ে আঘাত করছিল! মনে হচ্ছিল, এ তো আমারই গল্প! সেদিন চল্লিশ দিনের তাবলিগে নাম লেখাল।

[পাঁচ]
কান্নার জোয়ার ও হেদায়েত:
তাবলিগের দিনগুলো ছিল তার জীবনের সবচেয়ে বড় শিক্ষা। দিনের পর দিন দ্বীনের কথা শুনল, রাসূল (সা.)-এর জীবন জানল, কেঁদে কেঁদে আল্লাহর কাছে নিজের ভুলগুলোর জন্য ক্ষমা চাইতে লাগল। রাতে সবাই যখন ঘুমাত, সে তখন তাহাজ্জুদের নামাজে দাঁড়িয়ে বলে, “হে আল্লাহ, আমি তোমার দ্বারে ফিরে এসেছি! আমাকে আর হারিয়ে যেতে দিও না!” ..
সে বুঝতে পারল, আসল সুখ তো আল্লাহর পথে, নেশায় না, মেয়েদের প্রেমে না, দুনিয়ার লোভে না! তারপর থেকে সে আর আগের রেদোয়ান নেই! নেশার জায়গায় এখন তাসবিহ, গিটার ফেলে দিয়ে কুরআনের আয়াত মুখস্থ করছে।

[ছয়]
নতুন এক সূর্যোদয়:
আজ রেদোয়ান এক নতুন মানুষ। আগের সেই বিলাসী জীবন, গিটার, প্রেম, দুনিয়ার মোহ—সব পিছনে ফেলে এসেছে। এখন সে আল্লাহর রাস্তায় সময় দেয়, মানুষকে দ্বীনের দাওয়াত দেয়। সে দ্বীনের পথে একজন দাঈ!
তার জীবনের লক্ষ্য বদলে গেছে!

কেউ জিজ্ঞেস করে, "ভাই, এত বদলে গেলে কীভাবে?"
সে হেসে বলে, "আমি অন্ধকারে ছিলাম, আল্লাহ আমাকে আলোতে এনেছেন!"
- মো: রেদোয়ান হোসাইন
লাকসাম, কুমিল্লা

Tasdid - the path of Hidaya
[আপনার হিদায়ার গল্প আমাদের লিখে পাঠান]

27/10/2024

নব্য দ্বীনে ফেরার পরে একটা সময় আসে যাকে আমি বলি ডিপ্রেশ্ড পিরিয়ড। এই রানিং টাইমটি খুবই মারাত্মক। এই সময় টাতে দ্বিনে ফেরা এভ্রি সিঙ্গেল পারসোনকে নিজের মানুষিকতার সাথে প্রচন্ড যুদ্ধ করতে হয়।

শয়তান এই সময়টাকে বাজে ভাবে কাজে লাগায়, এই পিরিয়ডে সবচেয়ে বেশি প্রব্লেম ফেইস করতে হয় যারা জেনারেল থেকে দ্বীনে ফিরে এসেছে তাদের। দ্বীনে ফিরতে হলে পূর্বের সবকিছু ফেলে আসতে হয়। রেন্ডম ফ্রেন্ডসার্কেল, জাহিলিয়াতের সকল কার্যক্রম ইভেন আমার মতো কারো কারো পূর্বের অনেক প্রিয়জনকে আল্লাহর জন্য ছেড়ে দিতে হয়।

এইখানেই এসে ঝামেলাটা বাধে, শয়তান এই ডিপ্রেশ্ড পিরিয়ডে এইগুলা হাতিয়ার হিসেবে ব্যাবহার করে। স্বাভাবিক ভাবেই দ্বীনে নতুন অবস্থায় সঙ্গ দেওয়ার কেউ-ই থাকে না। আর পূর্বের জাহেলিয়াতের লং-টার্ম জার্নির কত স্মৃতি কত আবেগ কত ভালোবাসা কত বন্ধুবান্ধব কত প্রিয়জনের সাথে কাটানো প্রতিটা মুহুর্ত মাথায় এসে ভিড়তে থাকে।

এই আমার কথাই ধরুন, আমার পূর্বের প্রিয়জনদের কথা এখনো স্মরণ হলে আমার খারাপ লাগে। কিছুদিন আগেও একা একাই কান্না করতাম। কিন্তু যে জিনিসগুলো আল্লাহর জন্য কুরবানি দিতে হয় সেগুলার প্রতি মায়া রেখে আদৌও কোনো লাভ নেই।

সো যারা নব্য দ্বীনে ফিরেছেন, হেদায়েত পেয়েছেন আল্লাহর ওয়াস্তে দাত কামড়ে লেগে থাকুন। হয়তো আপনার এই পিরিয়ড নাও আসতে পারে। আর আসলেও ডিপ্রেশনে চলে যাইয়েন না। আল্লাহ কে সাথী বানান, আল্লাহর জন্য সব কিছু করছেন এটাই আপনার আঁকড়ে ধরার বস্তু। অফলাইন অনলাইন দ্বীনি ভাইদের সাথে যুক্ত থাকুন, বোনেরা দ্বীনি বোনদের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করুন। আলেমদের মজলিসে বসুন, বই পড়ুন। এই সময়টা দ্রুতই আসে আবার দ্রুতই চলে যায়।

আর জানেন তো যা কিছু আল্লাহর জন্য ছেড়েছেন কোরবানি করেছেন তার বদৌলতে আল্লাহ - "শীঘ্রই তোমার প্রতিপালক তোমাকে এত দিবেন যে যার ফলে তুমি খুশি হয়ে যাবে।" [আদ-দুহা-৫]


#দ্বীনে_ফেরার_গল্প

18/09/2024

Address

Dhaka

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Tasdid - the path of Hidaya posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Share