মোবাইল
- Home
- Bangladesh
- Dhaka
- মোবাইল
All about mobile and mobile related topics
সময়ের পরিক্রমায় মোবাইল ফোন প্রয়োজনীয় বস্তুতে পরিণত হয়ে পড়েছে। দ্র্বত যোগাযোগের ৰেত্রে মোবাইল ফোন এখন অপরিহার্য। নানান সুবিধা রয়েছে মোবাইল ফোনে। চাইলেই পৃথিবীর যে কোনো প্রান্তের মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারি। প্রযুক্তির এই ব্যাপক উৎকর্ষ একদিকে যেমন সুফল বয়ে এনেছে, তেমনি কিছু অপব্যবহারও হচ্ছে। তবে এর দায়ভার সম্পূর্ণ এর ব্যবহারকারীর।
মোবাইল ফোনের জন্ম ও ইতিকথা:-
মোবাইল ফোন, সেলফোন, মুঠোফোন বা সেল
ুলার ফোন যা-ই বলুননা কেন, এটা যে আমাদের জীবনের কতটা জায়গা দখল করে নিয়েছে সেটা বুঝতে পারবেন যদি একটা মাত্র দিন জিনিসটাকে হাত থেকে দূরে রাখেন। অথচ আমরা অনেকেই এর ইতিহাস সমন্ধে যথেষ্ট জানিনা। আবিস্কারকের নাম বলতে পারেন এমন লোকের সংখ্যাও দেখেছি অনেক কম। আসুন জেনে নিই মোবাইল ফোন আবিস্কার সম্পর্কিত কিছু তথ্য।
প্রথম Cave Radio ধারণার উদ্ভব হয় সেই ১৯০৮ সালে, যেটাকে সেলুলার ফোনের জন্মসূত্র ধরা হয়। যদিও বাস্তবের মোবাইল ফোন এসেছে অনেক দেরিতে। দুই বছর পর ১৯১০ সালে Lars Magnus Ericsson তার গাড়িতে টেলিফোন লাগিয় ফেলেন, ভ্রাম্যমান ফোন হিসেবে এটার নামই প্রথম আসে। যদিও Ericsson-এর ফোনটা ঠিক Radio Phone ছিলোনা। ভদ্রলোক তাঁর গাড়ি নিয়ে দেশময় ঘুরে বেড়াতেন এবং প্রয়োজন হলেই গাড়ি থামিয়ে ফোনের সাথে লম্বা দুইটা তার লাগিয়ে নিতেন, তারপর National Phone Network ব্যবহার করে ফোন করার কাজ সারতেন !!
সমসাময়িক ইউরোপের ট্রেনগুলোতে প্রথম শ্রেনীর যাত্রীরা Radio Telephone ব্যবহারের সুযোগ পেতেন। এই সুবিধা ছিলো বার্লিন থেকে হামবুর্গ পর্যন্ত সীমাবদ্ধ। একই সময় নিরাপত্তার খাতিরে রেডিও টেলিফোন সুবিধা পেতেন বিমানের যাত্রীরাও। এ জাতীয় ফোনের ব্যাপক ব্যবহার হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়। জার্মানী মূলত ব্যাপক প্রচলন ঘটায় । সৈন্যরা যোগাযোগের জন্যে এটাকে ব্যবহার করত।
আমরা যে মোবাইল ফোন কে চিনি তার জন্ম ১৯৭৩ সালে। আজকের বিখ্যাত মোবাইল ফোন নির্মাতা কোম্পানী মটরোলার হাত ধরে যাত্রা শুরু করে সেলুলার ফোন। নাম দেওয়া হয় DynaTAC 8000X। মজার ব্যাপার কি জানেন, এই ফোনটাতে কোনো ডিসপ্লে ছিলোনা। ১৯৭৩ সালের ৩ এপ্রিল মটরোলার কর্মকর্তা Dr. Martin Cooper বেল ল্যাবস-এর কর্মকর্তা Dr. Joels Engel-এর সাথে বিশ্বের ইতিহাসে প্রথমবারের মত মোবাইল ফোনে কথা বলেন। আর মোবাইল ফোনের ইতিহাসের সাথে জড়িয়ে যায় এই দুই বিজ্ঞানী, মটরোলা আর বেল ল্যাবস-এর নাম। অবশ্য Radio Telephone System-এর আবিস্কারক হিসেবে মার্টিন কুপার আর তাঁর গুরু Motorola Portable Communication Products-এর চীফ John F. Michel নাম US Patent-এ (Patent no. 3,906,166) লিপিবদ্ধ হয় ১৭ অক্টোবর ১৯৭৩ সালে।
মোবাইল ফোনের ব্যবহার : মোবাইল ফোনের ব্যবহার বিশ্বকে হাতের নাগালে এনে দিয়েছে। এর সবচেয়ে বড় যে সুবিধা তা হলো দ্র্বত যোগাযোগ। মোবাইল ফোন আবিষ্কার হওয়ার আগ পর্যন্ত দূরের মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হলে টেলিগ্রাফ বা টেলিফোনের সাহায্য নিতে হতো এবং তা ছিল ব্যয়বহুল ও অনেকটা ঝামেলাপূর্ণ। বর্তমানে মোবাইল ফোন কথা বলা ছাড়াও যেসব কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে তা হলো :
ডিজিটাল ক্যামেরা : মোবাইল ফোন ব্যবহার করে ছবি তুলে সেটা সংরৰণ করে রাখা সম্ভব হচ্ছে। প্রয়োজনে অন্য মোবাইলেও পাঠানো যায়। বর্তমান প্রযুক্তির থ্রি-জি এবং ফোর-জি মোবাইলগুলোতে যেসব ডিজিটাল ক্যামেরা সংযুক্ত করা আছে তা দিয়ে অনায়াসে যে কোনো ধরনের ছবি তোলা সম্ভব।
অডিও রেকর্ডার : মোবাইল ফোনের যে কোনো অডিও রেকর্ডও সংরক্ষণ করা সম্ভব। কিছু মোবাইল সরাসরি কথোপকথন রেকর্ড করতে সৰম।
ভিডিও রেকর্ডার : আধুনিক মোবাইল ফোনগুলোতে আনলিমিটেড ভিডিও রেকর্ডিং থাকায় দীর্ঘক্ষণ পর্যন্ত ভিডিও রেকর্ড করা সম্ভব।
মাল্টিমিডিয়া মেসেজিং : মাল্টিমিডিয়া মেসেজিংয়ের (এমএমএস) মাধ্যমে যে কোনো ধরনের ধারণকৃত অডিও বা ভিডিও অন্য মোবাইলে স্থানান্তর করা সম্ভব।
ই-মেইল ব্যবহার : মোবাইল ফোন ব্যবহার করে ই-মেইলের মাধ্যমে যে কোনো স্থানে সহজে বার্তা আদান-প্রদান করা সম্ভব।
ইন্টারনেট ব্যবহার : আধুনিক মোবাইল ফোনগুলোতে ইন্টারনেট সুবিধা থাকছে। এর মাধ্যমে প্রয়োজনীয় অনেক কাজ এখন মোবাইলেই করা সম্ভব হচ্ছে।
ভিডিও গেম সুবিধা : মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বিনোদন এবং সময় কাটানোর উৎস হিসাবে ভিডিও গেমস্ এখন ব্যাপক জনপ্রিয়তা পাচ্ছে।
উপাত্ত পর্যবেক্ষণ : আধুনিক প্রযুক্তির মোবাইল ফোনের মাধ্যমে অনেকেই এখন অফিসের সব তথ্য আদান-প্রদান এবং নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করতে পারেন।
গান শোনা : মোবাইলে গান সংরৰণ সুবিধা থাকায় এমপি থ্রি ও এমপি ফোরের মাধ্যমে যে কোনো গান শোনা যায়। এতে সময়ও কাটে, মনও ভালো থাকে।
টিভি দেখা : নেক্সট জেনারেশন মোবাইল ফোন ব্যবহার করে ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে প্রচারিত অনুষ্ঠানও সরাসরি দেখা যায়।
বারকোড রিডার : কয়েক প্রকার মোবাইল ফোন ব্যবহার করে এখন বিভিন্ন পণ্যের বারকোড পড়া সম্ভব হচ্ছে। ফলে পণ্যের গুণগত মান যাচাই করা যাচ্ছে।
মোবাইল ফোনের অপব্যবহার : মোবাইল ফোনের প্রযুক্তির এই উৎকর্ষের ফলে এর অপব্যবহার হচ্ছে আমাদের সামাজে।
মোবাইল ফোনের মাধ্যমে গ্রাহকদের নানান সুযোগ-সুবিধা দিয়ে প্রচুর মুনাফা লুটছে বহুজাতিক অপারেটর কোম্পানিগুলো। ব্যবসায়িক স্বার্থে তাদের দেওয়া নানা প্যাকেজ সুবিধা নিতে গিয়ে এর অপব্যবহারের দিকটাও বৃদ্ধি পাচ্ছে গ্রাহকদের মধ্যে। কয়েকটি মোবাইল অপারেটর কোম্পানি তরুণ প্রজন্মকে টার্গেট করে বিশেষ ধরনের সিম কার্ড বাজারে ছাড়ে। তাদের বিশেষ প্যাকেজে রাতভর স্বল্প মূল্যে কথা বলার সুযোগ নতুন প্রজন্মের জন্য বিশেষ হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এখন পড়ালেখা ও ঘুম বাদ দিয়ে অনেক তরুণ-তরুণী রাতভর কথা বলছেন।
মোবাইল ফোনের মাধ্যমে দিন দিন বেড়েছে সাইবার ক্রাইমের ঘটনাও।
মোবাইল অ্যাক্সেসরিজ এবং সার্ভিসিং
২০০০ প্রতিবেদন
মোবাইল বর্তমান সময়ে আর বিলাসদ্রব্য নয় বরং নিত্যপ্রয়োজনের বস্তু। ২০১১ সালের হিসাব অনুসারে, দেশে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ৭ কোটি। ফলে দেশে মোবাইল সেটের সংখ্যাটা কম করে হলেও ৬ কোটি। নিত্যব্যবহারে মোবাইল সেটে সমস্যাও দেখা যায় নানা সময়। একটি মোবাইল সেটের গড় আয়ু ২ বছর। আর চার্জার এবং ব্যাটারি তো কয়েক বছর পর এমনিতেই বদলাতে হয়। এর ফলে মোবাইল সেটের সঙ্গে সঙ্গে মোবাইল অ্যাক্সেসরিজেরও বিশাল বাজার গড়ে উঠেছে এদেশে। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মোবাইল অ্যাক্সেসরিজের সবচেয়ে বড় উৎপাদক চীন। এদেশসহ পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই রাজত্ব করছে চীনের মোবাইল অ্যাক্সেসরিজ। এমনকি নামিদামি ব্র্যান্ডের মোবাইল কোম্পানিগুলো তাদের ব্যাটারি, চার্জারসহ অন্য অ্যাক্সেসরিজ চীন থেকে তৈরি করে।
নিচে বাংলাদেশে ব্যবহৃত বিভিন্ন মোবাইল অ্যাক্সেসরিজের বাজারদর দেওয়া হলো। সেটের মনিটর বা এলসিডি মনিটর নষ্ট হলে নতুন মনিটরের দাম পড়বে ২শ থেকে ৬ হাজার টাকা। মোবাইলের রিবনের দাম পড়বে ১শ থেকে ২ হাজার টাকা। সেটের টাচ স্ক্রিন বা ডিজিটাইজারের দাম পড়বে ৪শ থেকে ৪ হাজার টাকা। ব্র্যান্ডের এবং দামি সেটের ৰেত্রে নির্দিষ্ট স্ক্রিন ব্যবহার করতে হয়। তবে চায়না সেটের ক্ষেত্রে সাধারণ কিছু স্ক্রিন পাওয়া যায়, যা বিভিন্ন মডেলে ব্যবহার করা যায়। মোবাইলের কী-প্যাডের নিচে থাকে কী-প্যাড লজিক। এ লজিক নষ্ট হলে নতুন লজিকের দাম পড়বে ৪শ থেকে ১ হাজার টাকা। মোবাইলের ব্যাটারি সাধারণভাবে কয়েক বছর পরে এমনিই নষ্ট হয়। তাই ব্যাটারির প্রয়োজন হয় সবারই। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সেটের নিজস্ব ব্যাটারির দাম কমপৰে ১ হাজার ২শ টাকা। সাধারণ মডেলের সেটের ব্যাটারি এদেশের বিভিন্ন কোম্পানি আমদানি করে। কিন্তু বিভিন্ন দামি মডেল যেমন ব্লাকবেরি বা অ্যাপলের আই ফোনের ব্যাটারি শুধু ওই কোম্পানিরটিই ব্যবহার করতে হয়। আই ফোনের ব্যাটারির দাম পড়বে ২ হাজার টাকা। ব্র্যান্ড ছাড়া কিছু চায়নিজ মোবাইল ব্যাটারি বাজারে পাওয়া যায়। এদেশের মোবাইল অ্যাক্সেসরিজ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে অনিক টেলিকম, ইমাম টেলিকম, স্কাইসেল, সেফ টেলিকম ইত্যাদি। এরা সাধারণত চীন থেকে ব্যাটারি এবং চার্জার আমদানি করে এদেশে বিক্রি করেন।
এসব অ্যাক্সেসরিজ সেটে সংযুক্ত করতে বা যে কোনো সমস্যায় দরকার মোবাইল সার্ভিসিং। বড় ব্র্যান্ডগুলোর সার্ভিস সেন্টারে গেলে সর্বনিম্ন সার্ভিসিং চার্জ পড়বে ৩শ টাকা। আর ওয়ারেন্টি সুবিধা থাকলে সার্ভিসিংয়ের জন্য কোনো খরচ পড়বে না। অন্যদিকে বিভিন্ন মার্কেটের মোবাইল সার্ভিসিংয়ের দোকানগুলোতে সার্ভিসিংয়ের সর্বনিম্ন চার্জ ১শ টাকা। বিভিন্ন সার্ভিসিংয়ের ধরন অনুযায়ী সার্ভিসিং চার্জ পড়বে ১শ থেকে ১ হাজার টাকা।
মোবাইল ব্যবহারে টিপস
২০০০ প্রতিবেদন
বর্তমান প্রযুক্তির এক বিস্ময়কর আবিষ্কার মোবাইল ফোন। টিভি কিংবা কম্পিউটারের মতো মোবাইল ফোনও এক ধরনের ইলেকট্রনিক ডিভাইস। এ জন্য মোবাইল ফোনে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পারে। তাছাড়া একে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে না পারলেও অনেক সময় সমস্যা হয়। মোবাইল ফোন ব্যবহারে সাবধান এবং সচেতন হলে এ ধরনের সমস্যার হাত থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব। এ রকমই কিছু কৌশল বা টিপস তুলে ধরা হলো।
আইএমইআই নম্বরের মাধ্যমে
মোবাইলের তথ্য জেনে নিন
প্রতিটি মোবাইল ফোনের স্বতন্ত্র আইএমইআই (ওগঊও) নম্বর থাকে। এই আইএমইআই নম্বর দ্বারা জানা যায় মোবাইল সেট কোন ব্র্যান্ডের, কোন মডেলের এবং কোথায় তৈরি হয়েছে। আইএমইআই নম্বর জানতে প্রথমে মোবাইল ফোনে * #০৬ # চাপলে ১৫-১৭ ডিজিটের সিরিয়াল নম্বর বা আইএমইআই নম্বর আসবে। অথবা মোবাইল ফোনের ব্যাটারি খুললে সেটের সঙ্গে স্টিকারে সিরিয়াল নম্বর বা আইএমইআই নম্বর লেখা পাওয়া যাবে।
স্পিকারফোন ব্যবহার করুন
বিশেষজ্ঞদের মতে, কোনোকিছুই মাথার কাছাকাছি থাকা ঠিক নয়। কয়েক ইঞ্চির ব্যবধান দূরত্বে রাখুন আপনার মোবাইল সেট। এক্ষেত্রে এক বা দুই ফুট দূরত্বে রাখা উত্তম। যত দূরে রাখা যায় তত তাপ বা রশ্মির ঝুঁকি কমে। প্রতি দুই ইঞ্চি দূরত্বে থাকা মোবাইল ঝুঁকি কমায় চারগুণ করে। প্রতি চার ইঞ্চি দূরত্বে রাখলে ঝুঁকি কমে ষোলগুণ। অর্থাৎ ‘প্রতিটি মিলিমিটার এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ’।
ব্যবহার করুন একটি ফেরিট গুটিকা (ferrite bead) দ্বারা তৈরি তারযুক্ত হেডসেট। ফেরিট গুটিকা হচ্ছে একটি ক্লিপ যা একটি হেডসেটের তারে লাগানো হয়। সমস্যার কথা হলো, তার নিজেই আপনার কানে রশ্মি/তাপ প্রেরণ করে। এই গুটিকা ডিজাইনই করা হয়েছে যাতে এটি রশ্মি/তাপ চুষে নিতে পারে আর আপনার কান যেন থাকে সুস’। অবশ্য যদি ফোনটি আপনার পকেটে থাকে বা বেল্টের সঙ্গে লাগানো থাকে, সে ক্ষেত্রে রশ্মি/তাপ আপনার শরীরে সরাসরি প্রবেশ করবে। সুতরাং আপনি যদি রশ্মি/তাপ-এর ব্যাপারে চিন্তিত হন, ফোনকে যতটা দূরে সম্ভব রাখা যায় রাখুন এবং নিশ্চিত হন তার আপনার শরীর যেন ছুঁয়ে না থাকে।
ব্লুটুথ কানের পিস ব্যবহার করুন
যদিও একটি বৱুটুথ কানের পিসও রশ্মি/তাপ ছড়ায় কিন্তু এটি ১০০ গুণ কম। আপনি একটি মোবাইল কানে ধরে রেখে তাপ বিকিরণের চেয়ে। ব্লুটুথ শুধু ফিসফিস করে রশ্মি/তাপ বিকিরণ করে আপনার কানে। সমস্যা হলো, অনেকে এটিকে সারাক্ষণ পরে থাকে। সেটা করলে ধীরে ধীরে রশ্মি/তাপ বিকিরণ বিরাট সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
একটি ‘ফাঁপা টিউব’ কানের পিস ব্যবহার করুন
এটি অন্যান্য সাধারণ তারের কানের পিসের মতোই, পার্থক্য হলো শেষ ছয় ইঞ্চির মতো অংশটুকু যা কানের কাছেই, একটি ফাঁপা টিউব। ড. ডেভিড কার্পেন্টারের (আলবানি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য ও পরিবেশ ইনস্টিটিউটের ডিরেক্টর) ভাষায়, ‘আপনি শব্দটুকু পাচ্ছেন বায়ুর মাধ্যমে। আপনাকে রেডিওফ্রিকোয়েন্সি প্রবাহের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে না।’
কম তাপ/রশ্মি বিকিরণকারী ফোন ব্যবহার করুন
ফোনের তাপ/রশ্মি বিকিরণ মাপা হয় নির্দিষ্ট শোষণ মাত্রার ওপর ভিত্তি করে, যাকে বলা হয় SAR (Specific Absorption Rate)। ফোন নেয়ার আগে SAR যাচাই করে নিন এবং যেটি কম মাত্রায় পাবেন সেটিকেই বেছে নিন।
একটানা কম সময় কথা বলুন
মোবাইল ফোন ব্যবহারে পুরুষের প্রজনন ক্ষমতা কমে যায়। মোবাইল চালু করে প্যান্টের পকেটে রাখলে পুরুষের শুক্রাণুতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলে এবং তা কমে প্রায় অর্ধেক হয়ে যায়। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়ার।
সংবাদ মাধ্যমটির বরাতে জানা গেছে, মোবাইল ফোন ব্যবহারে প্রজনন ক্ষমতা হ্রাস পায় এ বিষয়টি নিয়ে সমপ্রতি সাতটি দেশের গবেষকরা গবেষণা চালিয়েছেন। আমেরিকা, চীন এবং অস্ট্রেলিয়ার গবেষকরা জানিয়েছেন, চালু থাকা মোবাইল ফোন প্যান্টের পকেটে হলে তা শুক্রাণু তৈরির পরিমাণ কমিয়ে দেয়।
নোবেলজয়ী মার্কিন গবেষক ডেভরা ডেভিস জানিয়েছেন, ‘বাবা হতে চাচ্ছেন এমন যুবকদের ক্ষেত্রে দেখা গেছে চার ঘণ্টা মোবাইল ফোন ব্যবহার করলে তার শুক্রাণু অর্ধেক হয়ে যায়। তিনি আরো জানিয়েছেন, শুক্রাণুর ওপর মোবাইল ফোনের বিকিরণ প্রয়োগ করলে শুক্রাণু দুর্বল, চিকন এবং সাঁতারে অক্ষম হয়ে পড়ে। আর মোবাইল ফোন হলো এক ধরনের স্বল্প কম্পাঙ্কের তরঙ্গ প্রেরক যন্ত্র। এ তরঙ্গের অন্য নাম মাইক্রোওয়েভ। অন্যদিকে ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক দল জানিয়েছে, মোবাইল ফোনের ব্যবহার মারাত্মক টিউমারের সৃষ্টি করে। এ জন্য একটানা মোবাইল ফোনে কথা না বলাই ভালো।
আরো কিছু টিপস
আমরা অনেকেই মোবাইলে টেলি ব্যাংকিং বা কলিং কার্ড ব্যবহার করি, যেখানে প্রতিবারই একই ডায়াল নম্বর, অ্যাকাউন্ট বা কোড নং, কোনো অপশন সিলেকশন, আইডিডি নম্বর ইত্যাদি এন্ট্রি করতে হয়। আমরা সামান্য চেষ্টা করেই মোবাইলে ওপরের সব সেটিংস সেভ করে রাখতে পারি। এতে আমাদের অনেক সময় বেচে যাবে। তবে অবশ্যই এক্ষেত্রে আপনাদের মোবাইল ব্যবহারের ব্যাপারে সতর্ক হতে হবে।
সব মোবাইলেই যে স্টার/প্লাস সাইন থাকে তাকে পরপর দুবার বা তিনবার চাপলে p সাইন আসবে। এই p Pause বা waiting time-এর কাজ করবে। প্রতিটি p-এর জন্য ৫ সেকেন্ড পরের ডায়াল দেরি করবে। কোন অপশনের জন্য কতটুকু সময় দরকার তা আগে যাচাই করে পরে ততটা p যোগ করুন। চেক করে মোবাইলে কন্ট্রাক্ট নামে সেভ করুন তাহলে আপনাকে বারবার ডায়াল করতে হবে না। ভবিষ্যতে কোনো নম্বর বা কোড বদলাতে হলে এডিট করে শুধু সে অংশটুকু আপডেট করুন।
যেমন: Exchange No-8004333, Option 2 for English, Pin no.1234567890, IDD NO-0088017122365 #
এক্ষেত্রে আমরা 8004333p2p1234567890 # এভাবে যে কোনো নামে সেভ করে রাখতে পারি। p-এর সংখ্যা অবশ্যই বাস্তবে যাচাই করে নির্ধারণ করবেন।
নিচে আরো কিছু টিপস দেওয়া হলো যা আশা করি মোবাইল গ্রাহকদের কাজে লাগবে-
* নতুন মোবাইল সেট কিনলে বা নতুন সংযোগ নিলে মোবাইল সেটটিতে প্রথম কয়েকদিন বেশি বেশি চার্জ দিন। এতে দেখবেন ব্যাটারির স্থায়িত্ব বাড়বে।
* ফুয়েল স্টেশন, হসপিটাল, পেট্রোল পাম্প, মসজিদ ইত্যাদি জায়গায় মোবাইল সেট অফ রাখুন।
* ধুলোবালি যে কোনো ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতির জন্যই ক্ষতিকর। তাই মোবাইল ফোনের সঙ্গে সবসময় কাভার ব্যবহার করবেন।
* মোবাইল ফোনের সেটের জন্য অন্য মোবাইল ফোনের চার্জার ব্যবহার করা ঠিক না।
* গাড়ি চালাতে চালাতে মোবাইল ফোনে কথা বলা সড়ক দুর্ঘটনার একটি অন্যতম কারণ। তাই এ অভ্যাস এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন। প্রয়োজন হলে রাস্তার পাশে গাড়ি থামিয়ে কথা বলতে পারেন। আর তাও যদি সম্ভব না হয় তাহলে হ্যান্ডস ফ্রি এয়ারফোন ব্যবহার করুন।
* বিজ্ঞানীদের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, মোবাইল ফোনের অতিরিক্ত ব্যবহার মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের কারণ হতে পারে। যদিও এ বিষয় নিয়ে মোবাইল কোম্পানিগুলোর সঙ্গে বিজ্ঞানীদের বিতর্ক রয়েছে, তথাপি সাবধানতার জন্য আপনি হ্যান্ডস ফ্রি ইয়ার ফোন ব্যবহার করতে পারেন।
* দামি সেট তো বটেই, অন্য যে কোনো মূল্যমানের সেট নিয়েই রাতে পথচলা উচিত নয়। কারণ আজকাল ছিনতাইকারীদের বিশেষ নজর থাকে পথচারীর মোবাইলে সেটের প্রতি।
* মোবাইল ফোনের ব্যাটারি ব্যবহারের ক্ষেত্রে অবশ্যই সাবধান থাকবেন। কেননা ব্যাটারি খারাপ হলে কিংবা ভালো কোনো কোম্পানির তৈরি না হলে তা সেটের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
* মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে গিয়ে যদি আপনার হাত থেকে পড়ে যায় তাহলে সঙ্গে সঙ্গে মোবাইল ফোন বন্ধ করুন এবং আবার তা চালু করুন।
* মোবাইল ফোনে পানি লাগলে বা বৃষ্টিতে ভিজে গেলে তাৎক্ষণিকভাবে সেটটি অফ করে দিন, সিমকার্ড খুলে ফেলুন, ব্যাটারি খুলে ফেলুন, প্রয়োজনে কেসিংও খুলে ফেলুন এবং শুকনো কোনো কাপড় বা টিসু দিয়ে ডিসপ্লে মনিটর, সার্কিট ব্যাটারি, কী প্যাড, কেসিং ইত্যাদি খুব ভালোভাবে মুছে শুকিয়ে ফেলুন।
* মোবাইল ফোন পরিষ্কারের জন্য কখনই কোনো ক্লিনিং লিকুইড বা রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করবেন না। এতে করে মোবাইলের কেসিং ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
* প্রয়োজন না থাকলেও অটো কি লক ব্যবহারের অভ্যস্ত হোন, এতে করে আপনি অ্যাক্সিডেন্টাল কল ও মিস অপারেশন থেকে রক্ষা পাবেন।
* সাধারণত চেষ্টা করবেন বুক পকেটে মোবাইল ফোন না রাখার।
* অন্যান্য বৈদ্যুতিক সামগ্রীর মতো মোবাইলের ক্ষেত্রেও অত্যধিক তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই এ ব্যাপারে যথাসম্ভব সতর্কতা অবলম্বন করুন।
* যে কোনো প্রয়োজনে ব্যাটারি খোলার আগে অবশ্যই মোবাইল ড়ভভ করুন।
* বিভিন্ন ধরনের তেলের ডিপো কিংবা রাসায়নিক কারখানার খুব কাছে মোবাইল ফোন ব্যবহার উচিত নয়।
* ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য পণ্য যেমন- প্রেস মেকার, হিয়ারিং এইড ইত্যাদি মোবাইল ফোনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তাই যারা এসব পণ্য ব্যবহার করেন তারা মোবাইল ফোন ব্যবহার এড়িয়ে চলুন।
* সিমকার্ড/রিমকার্ড স্কেচ করবেন না, কখনই অতিরিক্ত টেম্পারেচার ও ম্যাগনেটিক ফিল্ডের কাছাকাছি রাখবেন না।
* আপনার মোবাইল ফোন যদি কোনো কারণে হারিয়ে যায় বা চুরি হয় তবে তা সঙ্গে সঙ্গে আপনার সার্ভিস প্রোভাইডারকে জানান। এর ফলে আপনার মোবাইল ফোন অপব্যবহার রোধ করা সম্ভব হবে।
* কথা বলার সময় কখনই মোবাইল ফোনকে কানের সঙ্গে সজোরে চেপে রাখবেন না।
* মোবাইল সেটের যে কোনো সমস্যায় অবশ্যই অভিজ্ঞ সার্ভিস সেন্টারের পরামর্শ নিন।
* মোবাইল ফোনে যদি কোনো পিনকোড বা ফোনকোড ব্যবহার করেন তাহলে তা অবশ্যই আলাদা কোনো জায়গায় লিখে রাখবেন। কেননা মোবাইল পর পর তিনবার ভুল পিনকোড প্রবেশ করালে ফোনটি লক হয়ে যাবে।
* সাধারণত বাচ্চারা মোবাইলের ব্যাপারে অতি উৎসাহী হয়ে থাকে। তাই সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে তারা যেন সেটটি ধরলেও হাত থেকে ফেলে দেওয়া কিংবা অন্য কোনো প্রকার অঘটন ঘটানোর সুযোগ না পায়। তবে তাদের কি টেপার সুযোগ না দেওয়াই ভালো।
* আপনি যদি আপনার প্রিয় সেট অনেকদিন ধরে ব্যবহার করতে চান, তাহলে আপনার উচিত হবে যতটা সম্ভব কম টেপাটেপি করা বিশেষ করে অতিরিক্ত গেমস খেলার অভ্যাস মোটেই ভালো নয়। এতে আপনার আদরের সেট দুর্বল হয়ে যাবে অতি তাড়াতাড়ি।
* আপনি যখন আপনার টাইট জিন্স প্যান্টের পকেটে মোবাইল সেটটি রাখবেন, তখন আপনার উচিত হবে লক করে রাখা। নইলে যে কোনো সময় চাপ লেগে অহেতুক কোনো নম্বরে কল হয়ে আপনার টাকা কাটা যেতে পারে।
বিজ্ঞাপন বাজারে মোবাইল
২০০০ প্রতিবেদন
এশিয়ার অন্য অনেক দেশের তুলনায় বাংলাদেশের বিজ্ঞাপন বাজার অপেক্ষাকৃত ছোট। তবে এ খাতটি দ্র্বতগতিতে প্রসারিত হচ্ছে। ভারত, চীন, ইন্দোনেশিয়ার তুলনায় আমাদের দেশের বিজ্ঞাপন বাজার এখনো ছোট কিন্তু দক্ষিণ এশিয়ার বিজ্ঞাপন বাজারে অন্যতম সম্ভাবনাময় দেশ বাংলাদেশ। এক্ষেত্রে সব থেকে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে এ দেশের মোবাইল অপারেটর কোম্পানি ও টেলিভিশন চ্যানেল। প্রিন্ট মিডিয়ার বিজ্ঞাপনেরও বড় উৎস এখন মোবাইল কোম্পানিগুলো। দেশের সামগ্রিক অর্থনীতির সঙ্গে সঙ্গে এদেশের মিডিয়ার বিজ্ঞাপনের খাতকেও সমৃদ্ধ করেছে এ টেলিকমিউনিকেশন খাত। ২০০৮-এর হিসাবে দেখা যায় বাংলাদেশের মোট বিজ্ঞাপন বাজারের পরিধি প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা। শীর্ষ ১৫ বিজ্ঞাপন দাতা কোম্পানি এর প্রায় ৬৫ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করে। বর্তমানে দেশের পত্রিকা এবং টিভি চ্যানেলগুলোতে এককভাবে সবচেয়ে বেশি টাকার বিজ্ঞাপন দেয় মোবাইল অপারেটর কোম্পানিগুলো। মিডিয়ার বিজ্ঞাপন সংশ্লিষ্ট এক সূত্র থেকে জানা যায়, বর্তমানে দেশের এক একটি টিভি চ্যানেল মোবাইল অপারেটর কোম্পানির কাছ থেকে ৩ থেকে ৪ কোটি টাকার বিজ্ঞাপন পায়। অন্যদিকে দেশের প্রিন্ট মিডিয়া মোবাইল অপারেটরদের কাছ থেকে বছরে প্রায় ২০০ কোটি টাকার বিজ্ঞাপন পায়। অর্থাৎ সব মিলিয়ে দেশের বিজ্ঞাপন খাতে ৫০০ থেকে ৬০০ কোটি টাকার জোগান আসে মোবাইল অপারেটর কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে। বাংলাদেশের মোবাইল অপারেটরদের মধ্যে বিজ্ঞাপন খাতে ব্যয় করে যথাক্রমে গ্রামীণফোন ২৩ শতাংশ, বাংলালিংক ১২ শতাংশ, রবি ১২ শতাংশ, এয়ারটেল ১০ শতাংশ, সিটিসেল ৪ শতাংশ এবং টেলিটক ১.১০ শতাংশ। অন্যদিকে এই একই খাতে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে গড় ব্যয় হয় ৫ শতাংশ, পাকিস্তানে ২ শতাংশ, চীনে ২ শতাংশ এবং শ্রীলঙ্কায় ১.২ শতাংশ।
এদেশের বিজ্ঞাপন বাজারে অনেক বহুজাতিক কোম্পানি ভিনদেশি বিজ্ঞাপনের বাংলা ডাবিং ব্যবহার করে। এৰেত্রে মোবাইল কোম্পানির ভূমিকা প্রশংসনীয়। মোবাইল অপারেটরদের প্রায় সব বিজ্ঞাপনই এদেশের মডেল ও কলাকুশলীদের ব্যবহার করে তৈরি। ফলে মিডিয়ার পাশাপাশি এদেশের মডেল, বিজ্ঞাপন নির্মাতা সংস্থাও লাভবান হচ্ছে। অন্যদিকে দেশের বিদেশি বিনিয়োগের সিংহভাগই এখন মোবাইল কোম্পানিগুলো থেকে আসে।
২০১০ সালে মোট বিদেশি বিনিয়োগের ৬০ শতাংশই এসেছে এ খাত থেকে। বর্তমানে দেশের রাজস্ব আয়েরও ১০ শতাংশ আসে মোবাইল কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে। এ ছাড়া মোবাইল অপারেটর ছাড়াও মোবাইল সেট, অ্যাক্সেসরিজ কোম্পানিগুলোর বিজ্ঞাপনও বর্তমানে মিডিয়ার বিজ্ঞাপন বাজারকে সমৃদ্ধ করছে।
পরিশেষে বলা যায়, দেশের মিডিয়া, বিজ্ঞাপন শিল্পে জড়িত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান সবার জন্যই মোবাইল অপারেটর কোম্পানিগুলোর বিজ্ঞাপন একটি সহায়ক ভূমিকা পালন করছে। দেশের সম্ভাবনাময় বিজ্ঞাপন বাজারের বিকাশকে ত্বরান্বিত ও সমৃদ্ধ করছে মোবাইলের বিজ্ঞাপন।
অপরাধীর অবস্থান শনাক্ত করতে
মোবাইল নেটওয়ার্ক
২০০০ প্রতিবেদন
ধানমন্ডি ১১ নম্বর রোড ধরে রাত ১০টার সময় হেঁটে ঘরে ফিরছিলেন সোহেল (ছদ্মনাম)। হঠাৎ তার সামনে উপস্থিত হয় এক ছিনতাইকারী। সে অস্ত্র দেখিয়ে ছিনিয়ে নেয় মানিব্যাগ, গলার সোনার চেইন এবং মোবাইল। ছিনতাইকারীকে সবকিছু দিয়ে একেবারে খালি হাতে কোনো রকমে প্রাণ নিয়ে বাসায় ফেরেন সোহেল। এক ঘণ্টা পর থানায় গিয়ে জিডি করে আসেন। এর দুদিন পর থানা থেকে খবর পান তার মোবাইলসহ ছিনতাইকৃত মাল পাওয়া গেছে। তিনি যে কোনো সময় গিয়ে নিয়ে আসতে পারেন।
মোবাইল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে অপরাধীর অবস্থান শনাক্ত করা একেবারেই সহজ ব্যাপার। তবে বলা বাহুল্য, এ সহজ কাজটি কোনো সাধারণ মানুষের পৰে সম্ভব নয়। কারণ এ ব্যাপারে সহযোগিতা নিতে হয় মোবাইল কোম্পানির। আর কোনো মোবাইল কোম্পানিই তার গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তা রক্ষার খাতিরে অন্য কারো কাছে কোনো তথ্য দেয় না। কেবল আইনশৃঙ্খলা রৰার স্বার্থে এ কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিগণকে তারা সহযোগিতা করে। তারা সহযোগিতা করে থাকে পুলিশকে। কারণ অপরাধী ধরা পুলিশের কাজ। মোবাইল কোম্পানির নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে তাদের সহযোগিতা নিয়ে পুলিশ অপরাধীর অবস্থান শনাক্ত করে থাকে। এক্ষেত্রে মোবাইল কোম্পানিগুলো যে প্রযুক্তি ব্যবহার করে তার নাম জিএসএম/জিপিএস প্রযুক্তি। পুলিশ কীভাবে মোবাইল নেটওয়ার্কের সাহায্য নিয়ে সে কাজটি করে তা জানতে চাওয়া হয় ধানমন্ডি থানার সাব ইন্সপেক্টর মীর শরিফুল হকের কাছে। তিনি বলেন, ‘এৰেত্রে প্রত্যৰভাবে আমাদের সহযোগিতা করে থাকে মোবাইল কোম্পানিগুলো। তারা তাদের প্রযুক্তির মাধ্যমে আমাদের জানিয়ে দেয় অপরাধী এই মুহূর্তে কোথায় অবস্থান করছে। আমরা তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী যথাস্থানে পৌঁছে যাই এবং তাকে ধরি।’
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মোবাইল কোম্পানি সরাসরি সন্ত্রাসীর অবস্থান বলে দেওয়া ছাড়াও আরো নানাভাবে অপরাধী ধরতে সাহায্য করে থাকে। উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে সোহেলের ঘটনাটি। সোহেলের মোবাইল ছিনতাইকারীকে কীভাবে ধরা হয় সে কাহিনী বলতে গিয়ে এসআই শরিফুল হক বলেন, ‘এক্ষেত্রে আমরা সামান্য কৌশল অবলম্বন করি। মোবাইল ছিনতাই করার পর ছিনতাইকারী সাধারণত ভেতরে থাকা সিম ফেলে দেয়। সিম ফেলে দিলেও মোবাইল কোম্পানির কাছে ওই নম্বরে যে ফোন ব্যবহার হয়েছে তার একটি ক্রমিক সংখ্যার (আইএমইআই নম্বর) রেকর্ড থাকে। সেই ক্রমিক সংখ্যার ফোনে এখন কোন সিম ব্যবহার করা হচ্ছে তা মোবাইল কোম্পানি সহজেই বলে দিতে পারে। এভাবে আমরা সেই ফোনটির বর্তমান ব্যবহারকারীর নাম, ঠিকানাসহ বিস্তারিত তথ্য পেয়ে যাই। এরপর তো মোবাইল কোম্পানির মাধ্যমে তার অবস্থান বের করা কোনো ব্যাপারই নয়। সে বাংলাদেশের যে প্রান্তেই থাকুক না কেন সে জায়গার থানা থেকে তার ঠিকানায় পুলিশ পাঠিয়ে তাকে গ্রেফতার করা সম্ভব। তবে ছোট অপরাধী যেমন ছিনতাইকারীদের ৰেত্রে বেশিরভাগ সময়ই তাকে প্রথমে ফোন করা হয়, থানায় এসে ধরা দিতে বলা হয়। বলে দেয়া হয় সমস্ত মাল ফিরিয়ে দিতে। পুলিশের পরিচয় পেয়ে সাধারণত তারা ফিরিয়ে দেয়।’
মোবাইল কোম্পানি সূত্রে জানা যায়, কোনো অপরাধী যদি ভ্রমণের ওপর থাকে তবে তার পিছু নিয়ে ধরার জন্যও মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের ব্যবস্থা রয়েছে। এক্ষেত্রে একটি জিপিএস ট্র্যাকিং মেশিন থাকে পুলিশের হাতে। যার স্ক্রিনে দিকনির্দেশক বা একটি ইন্ডিকেটর থাকে। সেটি সরাসরি নির্দেশ করে অপরাধীর ব্যবহারকারী ফোনটি এই মুহূর্তে ঠিক কোন দিকে অবস্থান করছে। ট্র্যাকিং মেশিনটিতে একটি সাউন্ড ইন্ডিকেটরও থাকে। ট্র্যাকিং মেশিনটি মোবাইলটির যত কাছাকাছি হতে থাকে সাউন্ড ইন্ডিকেটরটি তত দ্র্বত শব্দ করতে থাকে। এ থেকে বোঝা যায় সে এ মুহূর্তে কত কাছে অবস্থান করছে। অতঃপর তাকে পাকড়াও করা হয় এবং অবশ্যই এ ব্যাপারে যাবতীয় সহযোগিতা নিতে হয় মোবাইল কোম্পানির কাছ থেকে। কারণ মোবাইল বন্ধ থাকলেও মোবাইল কোম্পানিগুলো মোবাইলের আইএমইআই নম্বর দিয়ে সহযোগিতা করে থাকে। কারণ আইএমইআই নম্বর সব সময় সিগন্যাল দিতেই থাকে। যদি মোবাইলটি অপরাধীর কাছে থাকে তবে সেটিই পুলিশকে তার কাছে নিয়ে যায় আইএমইআই সিগন্যালের মাধ্যমে। এভাবেই মোবাইল নেটওয়ার্কের সাহায্যে ধরা পড়ে একজন অপরাধী।
বেকারত্ব হ্রাসে মোবাইল
বিভিন্ন মন্ত্রণালয় নানা সময় বলে থাকে, তাদের জনবল ঘাটতি রয়েছে। জনবলের অভাবে তারা ঠিকমতো কাজ করতে পারছে না। একদিকে তারা বলছে তাদের জনবলের অভাব অন্যদিকে বেকারত্ব বাংলাদেশের একটি বড় সমস্যা। প্রতিবছর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করে বের হওয়া ছাত্র-ছাত্রীদের একটি বড় অংশ কর্মসংস্থানের অভাবে বেকার হয়ে পড়ে। বেকারত্বের এই বিপুল সমস্যার সামান্য হলেও সমাধান হয়েছে মোবাইল কোম্পানিগুলোর মাধ্যমে। বাংলাদেশে মোবাইল কোম্পানিগুলো কাজ শুরু করার পর থেকে নানাভাবে এর সঙ্গে জড়িত হয়েছে উচ্চশিক্ষিত থেকে স্বল্পশিক্ষিত মানুষ। বিভিন্ন ধরনের পরিচালক, ব্যবস্থাপকের পদ থেকে শুরু করে মোবাইল বিল পেয়ার এবং পার্টস বিক্রেতার মতো পেশায় জড়িত রয়েছেন তারা। বিভিন্ন মোবাইল কোম্পানির সূত্র অনুযায়ী সারাদেশে সব মিলিয়ে প্রায় ১০ লাখ লোক মোবাইল সংক্রান্ত পেশায় জড়িত রয়েছেন সরাসরি। এছাড়া পরোক্ষভাবে মোবাইল পেশার সঙ্গে জড়িতের সংখ্যা এর প্রায় দ্বিগুণ।
দেশের সাধারণ মানুষের হাতে
ইন্টারনেট সেবা তুলে দিতে চাই
মেহবুব চৌধুরী, চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার, সিটিসেল
সাপ্তাহিক ২০০০ : বাংলাদেশে টেলিকমিউনিকেশনের বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আপনার মন্তব্য কী?
মেহবুব চৌধুরী : বর্তমানে বাংলাদেশে মোবাইলের গ্রাহক সংখ্যা প্রায় ৭ কোটি। এটা আমি মনে করি আরো বাড়বে। বাংলাদেশে ৬টি মোবাইল কোম্পানি আছে। এই ৬টি কোম্পানির গ্রাহক সংখ্যা ১০ কোটিতে উন্নীত করতে পারবে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ১০ কোটি গ্রাহক থাকতেই পারে। এই হলো ভোক্তার দিক থেকে কথা। এরপর যদি নেটওয়ার্ক কাভারেজের কথা বলতে হয় তাহলে বলব বর্তমান ৬টি কোম্পানি সারাদেশে নেটওয়ার্ক কাভারেজ করতে সক্ষম এবং দুই-একটি ছাড়া সব কোম্পানিরই সারাদেশে নেটওয়ার্ক কাভারেজ আছে। এদিক থেকে গ্রাহক ধরতে কোনো সমস্যা বর্তমানে থাকার কথা নয়। তবে আমি যে সমস্যাটার কথা বলব সেটা হলো বর্তমানে ১টি মোবাইল কোম্পানি ছাড়া কোনো কোম্পানিই লাভের মুখ দেখছে না। এটি একটি শঙ্কার কথা। এ বিষয় নিয়ে শুধু মালিক পৰকেই ভাবলে হবে না। যারা রেগুলেটরিতে আছেন তাদেরও ভাবতে হবে। এ কোম্পানিগুলো কেন লাভের মুখ দেখছে না তা খুঁজে বের করতে হবে। বর্তমানে যে অবস্থা চলছে তাতে ভোক্তাদের জন্য ভালো কিন’ কোম্পানিগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এভাবে লোকসান দিতে দিতে দুই-একটি কোম্পানি যদি বন্ধ হয়ে যায় তাহলে কিন্তু পরিস্থিতি বদলে যেতে পারে। এক বা একাধিক কোম্পানি বন্ধ হলে ভোক্তাদেরও ভোগান্তির সীমা থাকবে না। এভাবে চলতে থাকলে তা দেশের অর্থনীতির জন্য ভালো ফল বয়ে আনবে না। এছাড়া এখানে সিটিসেল ছাড়া সব কোম্পানিতে বিনিয়োগকারী বিদেশি। বিনিয়োগকারী যদি লাভের মুখ না দেখে তাহলে তারা ভবিষ্যতে থ্রিজি প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হবে না। শুধু পোশাকিভাবে যদি ঢাকা ও চট্টগ্রামে থ্রি জি প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু হয় তাহলে কিন্তু দেশের কোনো উপকারে আসবে না। দেশের সাধারণ মানুষকে যদি আমরা হাইস্পিড ইন্টারনেট সুবিধা না দিতে পারি তাহলে তো গ্রামীণ অর্থনীতির কোনো পরিবর্তন সম্ভব নয়।
২০০০ : এবারের প্রস্তাবিত জাতীয় অর্থ বাজেট ২০১১-১২ নিয়ে আপনার কোম্পানির অবস্থান ও মতামত কী হবে?
মেহবুব চৌধুরী : আমি প্রথমেই ধন্যবাদ জানাই অর্থমন্ত্রীকে সিমের ওপর ৮শ টাকা কর কমিয়ে ৬শ টাকা করার প্রস্তাব করার জন্য। তবে আমরা চাই এ কর পুরোপুরি তুলে নেয়া হোক। গত কয়েক বছর ধরেই আমরা এ বিষয়ে সরকারের সঙ্গে কথা বলে আসছি। এটা গ্রাহকের দেওয়ার কথা থাকলেও কোম্পানির মার্কেটিং পলিসির কারণে কোম্পানিকেই এ টাকা পরিশোধ করতে হচ্ছে। আমি আশা করব মোবাইল সেক্টরের উন্নয়নের স্বার্থেই সিমের ওপর থেকে এ কর পুরোপুরি প্রত্যাহার করা হবে। এরপর যেহেতু এ টাকা আমাদের নিজেদের দিতে হচ্ছে সেহেতু এটাকে কোম্পানির ব্যয় হিসাবে ধরার জন্যও আমরা সরকারের কাছে আবেদন করেছি। দেখা যাক সরকার শেষ পর্যন্ত কী সিদ্ধান্ত নেয়।
২০০০ : ভিওআইপি ব্যবসা সম্পর্কে আপনার কোম্পানির অবস্থান কী?
মেহবুব চৌধুরী : প্রথমেই আমি সাংবাদিক বন্ধুদের অনুরোধ করব, ভিওআইপি শব্দটাকে না-বোধক অর্থে ব্যবহার না করার জন্য। কারণ ভিওআইপি একটি টেকনোলজি। এখন দেখতে হবে টেকনোলজিটা ব্যবহার হচ্ছে কীভাবে। বৈধভাবে নাকি অবৈধভাবে। আমরা সব সময় সব অবৈধ কল টার্মিনেশনের বিপক্ষে। অবৈধ কল টার্মিনেশনকে বন্ধ করে নতুন নীতিমালার মাধ্যমে রাজস্ব বণ্টনের নীতির ভিত্তিতে প্রাইভেট সেক্টরে কল টার্মিনেশন ব্যবসা সম্প্রসারণে সরকার চিন্তা করতে পারে।
২০০০ : সম্প্রতি লাইসেন্স নবায়ন নিয়ে একটা জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে।
মেহবুব চৌধুরী : লাইসেন্স নবায়নের জন্য ৪টি অপারেটরের ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ১৪ হাজার কোটি টাকা করে। এত টাকা দেওয়ার মতো সামর্থ্য কোনো কোম্পানির নেই। আমরা এটা নিয়ে অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি আমাদের আশ্বস্ত করেছেন এ ফির পরিমাণ কিছুটা কমানো হবে। তাছাড়া এত টাকা একবারে দেওয়াও সম্ভব নয়। এটা নিয়েও আমরা কথা বলেছি। দেখা যাক সরকার আমাদের জন্য কী করে?
২০০০ : বাংলাদেশে থ্রিজি, ফোরজি প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু হবে কবে?
মেহবুব চৌধুরী : পত্রপত্রিকার মাধ্যমে জানতে পেরেছি টেলিটক বাংলাদেশে থ্রিজি প্রযুক্তি আমদানি করতে যাচ্ছে। এজন্য তারা চীনের সঙ্গে একটি ঋণচুক্তিও করেছে। বাংলাদেশে যে কোনো প্রযুক্তির আমদানিকে আমরা সাধুবাদ জানাই। টেলিটক একটি সরকারি কোম্পানি হওয়ায় তাদের অনেক সীমাবদ্ধতা আছে। তারপরও আমি আশা করব এ প্রযুক্তির মাধ্যমে টেলিটক গ্রামীণ পর্যায়ে শিক্ষা বিস্তারে ভূমিকা রাখবে। এরপর বিটিআরসি আমাদের আশ্বস্ত করেছে, থ্রিজি প্রযুক্তি ব্যবহারে টেলিটকের ওপর যেসব কন্ডিশন নির্ধারিত হবে সেই আলোকে ভবিষ্যতে বেসরকারি কোম্পানিগুলোও এ প্রযুক্তি ব্যবহারের লাইসেন্স পাবে।
২০০০ : এখনো যত্রতত্র নামে-বেনামে সিম বিক্রি হচ্ছে। এটা কীভাবে বন্ধ করা যেতে পারে?
মেহবুব চৌধুরী : নতুন সিম বিক্রির ব্যাপারে বিটিআরসি আমাদের যেসব কন্ডিশন দিয়েছে আমরা তা পুরোপুরি পালন করতে বদ্ধপরিকর। তবে আপনি যে অভিযোগ করেছেন তা অসত্য নয়। আমরা যেসব কাগজপত্র নিয়ে সিম বিক্রি করি সেগুলো সঠিক কিনা তা নিরীক্ষা করার মতো সামর্থ্য আমাদের নেই। প্রযুক্তির ব্যবহারই এসব সমস্যার সমাধান দিতে পারে। জাতীয় পরিচয়পত্র যদি সরকারি ডাটাবেজের মাধ্যমে পরীৰা করার সুযোগ থাকত তাহলে তো এ সমস্যা থাকত না।
২০০০ : আপনার কোম্পানির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?
মেহবুব চৌধুরী : আমাদের কোম্পানির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ইন্টারনেট নিয়ে। ভয়েসকল অবশ্যই থাকবে তবে গ্রামের সাধারণ মানুষদের হাতে ইন্টারনেট সুবিধা তুলে ধরাই হবে আমাদের প্রধান লৰ্য। ইন্টারনেটের মাধ্যমে সাধারণ মানুষ ব্যবসা-বাণিজ্য করতে পারবে, জমি বিক্রির সময় দলিলটা দেখে নিতে পারবে, কৃষিকাজে কৃষিবিদের পরামর্শ নিতে পারবে- তবেই না দেশ উন্নতির দিকে যাবে।
-সাক্ষাৎকার গ্রহণে আসাদ জোবায়ের
অবৈধ পন্থায় সিম বিক্রি করা হলে তাদের
বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে
রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু, মন্ত্রী, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়
সাপ্তাহিক ২০০০ : বাংলাদেশে টেলিকমিউনিকেশনের বর্তমান অবস্থান ও ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন কী?
রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু : বাংলাদেশের টেলিকমিউনিকেশন অনেকটাই এগিয়ে গেছে। বিশ্বের উন্নত দেশের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাংলাদেশও এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশে বর্তমান টেলিকমিউনিকেশনের অবস্থার যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় এ খাত লুটপাটের স্বর্গভূমিতে পরিণত হয়েছিল। সেই জায়গায় আমরা স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতা আনতে সক্ষম হয়েছি। টেলিকমিউনিকেশন খাতকে সরকার যথেষ্ট গুরুত্ব সহকারে দেখছে। এ খাতে আগে যে লুটপাট হতো তা কঠোর হস্তে দমন করা হয়েছে।
২০০০ : বর্তমান সরকারের সময়েও অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসা চলছে-
রাজিউদ্দিন আহমেদ : বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসা রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা করে চালনা করা হতো। হাওয়া ভবনের ছায়ায় কারা কীভাবে অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসা করেছে তা দেশবাসী জানে। অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসা করে যারা হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে তাদের অনেকেই বিদেশে পালিয়ে গেছে। কেউবা জেলে রয়েছে। আমরা সরকার গঠন করার পর অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসা বন্ধ করে দিয়েছি। এখন নিয়ম মেনেই এ ব্যবসা করা হচ্ছে। আমরা ভিওআইপি ব্যবসা উন্মুক্ত করার কাজ শেষ পর্যায়ে নিয়ে এসেছি। ভিওআইপি ব্যবসা অচিরেই উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।
২০০০ : কিন্তু গোয়েন্দা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে সরকারি মদদে কেউ কেউ অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসা করছে।
রাজিউদ্দিন আহমেদ : এ রকম কোনো প্রতিবেদন আমার কাছে আসেনি। সরকারি মদদে কেউ কেউ অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসা করছে এ ধরনের তথ্য সঠিক নয়। যারা করছে তারা লুকিয়ে বা চুরি করে করছে। তাদের ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা রৰাকারী বাহিনীর সদস্যরা তৎপর রয়েছে।
২০০০ : সিম বিক্রির ওপর বড় ধরনের কর আরোপ করার পরও যত্রতত্র সিম বিক্রি হচ্ছে। এটা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে কীভাবে?
রাজিউদ্দিন আহমেদ : অপরাধ দমন করার জন্যই সিম বিক্রির ওপর করারোপ করা হয়েছে। অর্থাৎ যত্রতত্র সিম পাওয়া গেলে অপরাধীরা তা কিনে সহজেই ব্যবহার করতে পারে। এখন ঝুড়িতে করে সিম বিক্রি করা হয় না। অবৈধ পন্থায় সিম বিক্রি করা হলে তাদের বির্বদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
২০০০ : মোবাইলের প্রযুক্তি আরো কী কী ভাবে কাজে লাগানো যেতে পারে?
রাজিউদ্দিন আহমেদ : মোবাইল এখন সবচেয়ে প্রয়োজনীয় জিনিস হয়ে দাঁড়িয়েছে। মোবাইল ছাড়া এখন যোগাযোগ করা দুরূহ ব্যাপার। অর্থাৎ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের মধ্যে মোবাইল অন্যতম। সব জিনিসের ভালো-মন্দ দিক আছে। মোবাইলের পক্ষে- বিপক্ষে নানা যুক্তি আছে। প্রযুক্তির দিক বিবেচনা করলে মোবাইলের অপরিহার্যতা অনস্বীকার্য। এ প্রযুক্তিকে আরো কী কী ভাবে কাজে লাগানো যায় তা নিয়ে কাজ করা দরকার।
এদেশের টেলিকম খাত এখনো বেশ সম্ভাবনাময়। গ্রামাঞ্চলে এখনো প্রসারের ব্যাপক সুযোগ রয়েছে। এই খাতের প্রবৃদ্ধির পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী উচ্চ শুল্ক এবং করসমূহ কমিয়ে সরকার সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে পারে। দেশজুড়ে নেটওয়ার্ক কাভারেজ নিশ্চিত করে আমরা সত্যিকারের ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়তে বাংলাদেশ সরকারকে সাহায্য করার ব্যাপারে আশাবাদী।
২০০০ : এবারের প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট নিয়ে আপনার কোম্পানির অবস্থান ও মতামত কী হবে?
ক্রিস টবিট : ২০১১-১২ অর্থবছরের বাজেটে মোবাইল ফোন সিমকার্ডের ওপর বাংলাদেশ সরকারের ট্যাক্স কমানোর সিদ্ধান্ত আমরা বিবেচনায় রেখেছি। এই সিদ্ধান্তের ফলে সমগ্র দেশে, বিশেষত গ্রামাঞ্চলে মোবাইল ফোনের ব্যবহার বৃদ্ধি পাবে বলে আমরা আশা রাখছি। এই যোগাযোগনির্ভর যুগে অর্থনীতির সামগ্রিক উন্নয়নে মোবাইল প্রযুক্তি অত্যন্ত গুর্বত্বপূর্ণ।
২০০০ : আপনার কোম্পানির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?
ক্রিস টবিট : এয়ারটেলের লৰ্য হচ্ছে কোটি মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের মাধ্যমে সবচেয়ে প্রিয় ব্র্যান্ড হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হওয়া। গ্রাহকদেরকে আন্তর্জাতিক মানের প্রযুক্তি, উন্নত সেবা এবং গ্রহণযোগ্য ট্যারিফ প্রদানের লৰ্যে আমরা প্রতিদিন নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। বাংলাদেশের টেলিকম শিল্পে সর্বোচ্চ অবস্থানে নিজেকে দেখতে চায় এয়ারটেল।
২০০০ : ভিওআইপি ব্যবসা সম্পর্কে আপনার কোম্পানির অবস্থান কী?
ক্রিস টবিট : ভিওআইপি ব্যবহার নিয়ে আমরা রেগুলেটর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রৰা করছি। পলিসি অনুযায়ী, বাংলাদেশ সরকার এবং রেগুলেটর কর্তৃপক্ষের সব নীতিমালা মেনে চলবে এয়ারটেল।
২০০০ : চলমান সেবা ছাড়াও ভবিষ্যতে আর কী ধরনের সেবা পেতে পারে গ্রাহক?
ক্রিস টবিট : গ্রাহকদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে এয়ারটেল বেশ কিছু নতুন ভ্যালু অ্যাডেড সার্ভিস চালু করবে। আমাদের নতুন কিছু সেবার মধ্যে রয়েছে মেরিটাইম রোমিং ও এয়ারলাইন রোমিং, জব অ্যালার্ট, ম্যাটরিমনি সার্ভিস, ভেসেল ও ভেহিকেল ট্র্যাকিং প্রভৃতি। ভবিষ্যতে আরো বেশ কিছু আকর্ষণীয় সেবা চালু করা হবে।
২০০০ : বাংলাদেশে থ্রিজি, ফোরজি প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু হবে কবে?
ক্রিস টবিট : সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকার আশ্বাস দিয়েছে এ বছরের মধ্যেই থ্রিজি মোবাইল প্রযুক্তির লাইসেন্স দেওয়া হবে। বাংলাদেশ সরকারের ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য এটি একটি বিশাল পদক্ষেপ হবে। তবে লাইসেন্স প্রদানের পদক্ষেপ অবশ্যই বাস্তবসম্মত হতে হবে। কারণ এই খাতে ইতিমধ্যে ব্যাপক পরিমাণে কর আরোপ করা হয়েছে।
-সাক্ষাৎকার গ্রহণে সোহাগ আশরাফ
নিত্য নতুন সেবা গ্রাহকদের কাছে পৌঁছে দেওয়াই বাংলালিংকের প্রধান উদ্দেশ্য
ইফতেখার আজম সাফিন, কমিউনিকেশন্স অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার, মার্কেটিং, বাংলালিংক
সাপ্তাহিক ২০০০ : বাংলাদেশে টেলিকমিউনিকেশনের বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আপনার মন্তব্য কী?
ইফতেখার আজম সাফিন : বাংলাদেশে টেলিযোগাযোগ খাত নিয়ে টেলিকমিউনিকেশন সার্ভিস প্রোভাইডারগুলোর বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সরকারের সঙ্গে কথা হয়েছে। আপনারা এবারের বাজেটেও এর একটি চিত্র দেখে থাকবেন। এবার সিমট্যাক্সের ওপর ২শ টাকা করে কর কমানো হয়েছে। এ বিষয়টি তিন/চার বছর ধরে সরকারের কাছে তুলে ধরা হয়েছিল। আপনি যদি যোগাযোগ খাত অর্থাৎ টেলিযোগাযোগের সুবিধা তৃণমূল পর্যায়ে গ্রামবাংলার ঘরে ঘরে পৌঁছাতে চান সিমট্যাক্স থাকলে তা কখনই সম্ভব হবে না। আমাদের দেশে এখনো যাদের হাতে মোবাইল পৌঁছায়নি তাদের অধিকাংশই হচ্ছে গ্রামবাংলার সাধারণ মানুষ। আমাদের কাছ থেকে সরকার রেভিনিউ শেয়ারিং নামে ৫ শতাংশ হারে একটি সমুদয় টাকা নিয়ে থাকে। আপনি লক্ষ্য করে দেখবেন উন্নত বিশ্বে, যদি আমি পাকিস্তানের উদাহরণ দেই তবে সেখানে ইউনিভার্সেল সার্ভিস নামে একটি নির্দিষ্ট অর্থ মোবাইল অপারেটরদের কাছ থেকে সে দেশের সরকার নেয়।
ধরুন পঞ্চগড়ে একটি মোবাইল বিটিএস বসাতে হবে। সে ক্ষেত্রে আমাদের দেশের মোবাইল কোম্পানিগুলোর নিজস্ব অর্থায়নে এটি করতে হয়। কিন্তু পাকিস্তানে যদি কোথাও একটি বিটিএস বসাতে হয় তবে ইউনিভার্সেল নামে সরকার ওই যে টাকা নিয়েছে তা থেকে একটা পরিমাণ দিয়ে সহায়তা করবে। কিন্তু এসব আমাদের দেশে কল্পনাই করা যায় না। তবু সব প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও মোবাইল কোম্পানিগুলোর প্রযুক্তির ক্ষেত্রে অনেক এগিয়ে গেছে। দেরিতে হলেও আমাদের দাবিগুলো সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় মেনে নিচ্ছে। ভবিষ্যতের কথা যদি বলি তবে বলতে হয়, দিনে দিনে এটি ভালোর দিকে যাচ্ছে। এখন সরকার অপারেটরদের কথা শুনছে।
২০০০ : এবারের প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট ২০১১-১২ নিয়ে আপনার কোম্পানির অবস্থান ও মতামত কী হবে?
ইফতেখার আজম : বাজেট সম্পর্কে যে বিষয়টি বলতে হয় তা হচ্ছে, আমাদের অনেক দিনের প্রত্যাশা ছিল যে সিমট্যাক্স কমে যাবে। সেই সিমট্যাক্স ৮শ টাকা থেকে ২শ টাকা কমিয়ে ৬শ টাকা করা হয়েছে। এটা খুবই পজিটিভ। সে ক্ষেত্রে আমরা সরকারকে সাধুবাদ জানাই। আমরা চাই আগামী দিনে এই ট্যাক্স আরো কমে যাবে, যাতে আমরা মোবাইলকে মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে পারি।
২০০০ : বাংলালিংকের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?
ইফতেখার আজম : বাংলাদেশে বাংলালিংক আছে, সাধারণত ব্যবসায়িক কার্যক্রমে আছে। কিন্তু আমাদের মূল যে উদ্দেশ্য তা হচ্ছে সেবা। টেলিযোগাযোগের মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষের কাছে সেবা পৌঁছে দেয়াই আমাদের মূল লক্ষ্য। আমরা গ্রামবাংলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের সঙ্গে শহরের মানুষের অর্থাৎ সবার সঙ্গে সবার যোগাযোগ সহজ করে দিতে সব ধরনের কাজ করে যাচ্ছি এবং ভবিষ্যতেও করব।
২০০০ : ভিওআইপি ব্যবসা সম্পর্কে আপনার কোম্পানির অবস্থান কী?
ইফতেখার আজম : আগে ভিওআইপি ব্যবসা নিয়ে কি হয়েছে সে কথা বাদ। বর্তমানে যদি দেখতে চান, ভিওআইপি বন্ধ করার জন্য আমরা নিউটিসলিউশন নামে একটি ডিভাইস বিটিআরসিতে স্থাপন করেছি। এটি বিশ্বের একটি বহুল পরিচিত ডিভাইস। এর মাধ্যমে প্রতিদিন গড়ে ছয় থেকে আট হাজার নম্বর যারা অবৈধভাবে ব্যবসা পরিচালন ও ব্যবহার করছে তার একটি লিস্ট চলে আসে। আমাদের সিম ব্যবহার করে যদি কেউ অবৈধ ব্যবসা করে আমরা সেই মুহূর্তে সে সিমটি বন্ধ করে দেই। সেই সঙ্গে সরকারের কাছে আমাদের দাবি ছিল ভিওআইপিকে বৈধ করে দেওয়া। উন্নত বিশ্বে ভিওআইপি এখন বৈধ। তবে এটা বলতে হবে যে বাংলালিংকের কোনো সিম ভিওআইপি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত নয়। যদি পাওয়া যায় তবে তা সঙ্গে সঙ্গে বন্ধ করে দেওয়া হবে।
২০০০ : চলমান সেবা ছাড়াও ভবিষ্যতে আর কি ধরনের সেবা পেতে পারে গ্রাহক?
ইফতেখার আজম : আমরা বাংলালিংকের পক্ষ থেকে প্রতিনিয়ত উন্নত ও আধুনিক সেবা দেওয়ার চেষ্টা করে থাকি। আপনি এখনো যদি দেখতে চান তাহলে মোবাইলের মাধ্যমে রেমিটেন্স আনা, মোবাইলের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা, মোবাইলের মাধ্যমে কৃষি সেবা এ ধরনের অনেক কিছু একের পর এক আমরা অত্যাধুনিক সার্ভিস প্রদান করছি। আগামীতেও আমাদের চেষ্টা থাকবে। উন্নত বিশ্বে যে ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয় তা দেশের গ্রাহকদের মাঝে প্রদান করাই বাংলালিংকের উদ্দেশ্য। আমাদের কৃষি জিজ্ঞাসা বিষয়ক যে সার্ভিসটি রয়েছে তা বিশ্বের মোবাইল অপারেটরদের মধ্যে প্রথম।
২০০০ : বাংলাদেশে থ্রিজি, ফোরজি প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু হবে কবে?
ইফতেখার আজম : থ্রিজি, ফোরজি প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু হবে কবে, এটা আসলে সরকারই বলতে পারে। আপনারা হয়তো দেখে থাকবেন এখনো সরকারের পক্ষ থেকে টুজি লাইসেন্সের যে রিনিউয়াল নিয়ে কথা চলছে তা চূড়ান্ত হয়নি। এ বিষয় নিয়ে সরকার আলোচনায় বসার কথা বলেছে। সমপ্রতি আমাদের চারটি মোবাইল অপারেটরের সিইও অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন। তিনি বলেছেন, এ বিষয়টি আশু সমাধান করা হবে। যত দিন না টুজি লাইসেন্স নবায়নের ঝামেলা শেষ হয় তত দিনে থ্রি বা ফোরজি নিয়ে কল্পনা করা ঠিক হবে না।
২০০০ : মোবাইলের অপব্যবহার বন্ধে কী ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার?
ইফতেখার আজম : বর্তমানে যেটা হচ্ছে তাহলো মোবাইল ক্রাইম। এছাড়া ছিনতাই, অপহরণ এসব কাজে মোবাইল ব্যবহার করা হচ্ছে। অনেক সময় ফোন করে প্রতারণা করা হয়। এ প্রতারণার হাত থেকে গ্রাহকদের সতর্ক করতে আমরা পত্র-পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে থাকি। আমাদের কাস্টমার কেয়ার সেন্টারে এ বিষয়ে গ্রাহকদের সচেতন করা হয়। এসএমএস-এর মাধ্যমেও সবাইকে জানিয়ে দেওয়া হয়।
২০০০ : এখনো যত্রতত্র নামে-বেনামে সিম বিক্রি হচ্ছে। এটা কীভাবে বন্ধ করা যেতে পারে?
ইফতেখার আজম : অন্য অপারেটরদের কথা না বলি। বাংলালিংক সম্পর্কে আমি বলব, সরকারের বিধিনিষেধ মেনেই আমরা এখন পর্যন্ত সিম বিক্রির চেষ্টা করছি। একটা বিষয় ভেবে দেখুন, সিম কিনতে গেলে ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি ও ছবি দিতে হয়। যদি গ্রামের কেউ সিম কিনতে চায় তবে তাকে এগুলো সংগ্রহ করতে অনেক কষ্ট হয়। সে ক্ষেত্রে আমরা বিক্রেতাদের বলেছি ভোটার আইডি কার্ডের একটি ছবি এবং যে সিম কিনবে তার একটি ছবি তুলে আমাদের একটি শর্টকোর্ডে এমএমএস করে দেবে। এটি সেন্ট্রাল ডাটা বেজের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে।
Address
Dhaka
Website
Alerts
Be the first to know and let us send you an email when মোবাইল posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.