সপ্ন ঘুড়ী

সপ্ন ঘুড়ী স্বপ্ন একটি আশা,একটি প্রেরনা.
স্বপ্ন মানুষকে বাঁচতে শিখায়.
শিখায় মানুষকে মানুষ হতে ।

20/01/2024

আমার শালিকা রুমির বিয়ে হবার পর থেকে আমার কেন যেন মনে হচ্ছে শ্বশুর আব্বা আমাকে তেমন গুরুত্ব দিচ্ছেন না। এর উত্তর খুঁজতে গিয়ে আমি আসল রহস্যটা উদঘাটন করতে পারি রুমির স্বামীর অর্থবিত্ত দ্বারা। কেননা আমি পেশায় একজন সাধারণ হাই স্কুলের শিক্ষক হলেও রুমির স্বামী পেশায় একজন সরকারী ব্যাংকের কর্মকর্তা।

আমার স্ত্রীও বোনের এমন বড় ব্যক্তিত্বের সাথে বিয়ে হওয়ার পর থেকে হিংসায় জ্বলেপুড়ে যাচ্ছে এবং মাঝেমধ্যেই আমাকে আমার অবস্থান নিয়ে হেয় করে। নারীদের এমন বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে আমি আগে থেকেই অবগত হওয়াতে আমার স্ত্রীর এরকম ব্যবহারে আমি কিছু মনে করিনা।

সেদিন সুমি অর্থাৎ আমার স্ত্রী কিছুটা আফসোসের স্বরেই আমার পাশে বসে বলে উঠলো,
– “ কেবল আমিই তোমার সাথে এই কুড়েঘরে সংসার করলাম, অন্য কোনো মেয়ে হলো দুইদিনও থাকতো না। আমার বোনটা যে স্বর্ণ কপাল নিয়ে জন্মেছিল সেটা ওর শ্বশুরবাড়ি দেখলেই বোঝা যায়। আর আমি জন্মেছিলাম এই পোড়া কপাল নিয়ে। ”

সুমির কথা শুনে আমি শুধু মুচকি হাসি কিন্তু কিছুই বলিনা। কারণ মেয়েদের আকাঙ্ক্ষার কোনো শেষ নেই, তাদের যত দেওয়া হবে ততই তারা আফসোসের সাগরে হাবুডুবু খাবে।

রুমির বিয়ের দুমাস পর শীতের ছুটিতে শ্বশুর বাড়িতে বেড়াতে আসি। আমাদের পাশাপাশি রুমির স্বামীসহ ওদের শ্বশুর বাড়ি থেকেও অনেক মেহমান আসে শীতের আমেজ উপভোগ করার জন্য। এত এত মেহমানের খাবার দাবার রান্নার দায়িত্বটা আমার স্ত্রী এবং শাশুড়ি আম্মা বেশ খুশি মনেই সম্পাদন করছেন। কিছুক্ষণ পরপরই আমার শাশুড়ি এসে তার ছোট মেয়ে জামাইকে এটা ওটা জিজ্ঞেস করছেন যে কিছু লাগবে কিনা?

অথচ আমি এবাড়িতে আসার পর আমার দিকে একবারের জন্য মুখ ফিরিয়ে তাকিয়েছেন কিনা তা সন্দেহ! তবুও মনকে এই বলে বুঝ দিচ্ছি যে, নতুন জামাইয়ের প্রতি এটুকু কদরতো থাকবেই। আর আমিতো এই বাড়ির পুরোনো সদস্য, পুরাতন দের বেশি আপ্যায়ন না করলেও হয়। এসব বলে মনকে সান্ত্বনা দেওয়ার মাঝেই আমারা শ্বশুর আব্বা পুনরায় আগুনে ঘি ঢালা রূপে আবির্ভাব হলেন। তিনি বাজার থেকে তার ছোট জামাইয়ের পছন্দের সকল কিছুই কিনে এনেছেন এবং আমাকে শুনিয়ে শুনিয়ে তিনি সবার সামনেই রুমির স্বামীর ব্যপারে গুনগান গাইছেন। তিনি ভেবেছিলেন এতে হয়তো আমি ঈর্ষান্বিত হবো কিন্তু আমিতো আর এতো সহজেই ভেঙ্গে যাওয়ার পাত্র নই।
'
'
এরপর কেঁটে যায় আরো ছয়মাস, কিন্তু সবচেয়ে অবাক করা ব্যপার হলো এই ছয়মাসে আমার শ্বশুর বাড়ি থেকে কেউই আগবাড়িয়ে কল দিয়ে আমার খোঁজখবর নেয়নি। অথচ রুমির বিয়ের আগে আমার শ্বশুর সামান্য কোনো সমস্যার মুখোমুখি হলেও আমার কাছে কল দিয়ে উপদেশ গ্রহণ করতেন নয়তো সাহায্য চাইতেন। আমিও কখনোই তাদেরকে কোনো কাজে অসম্মতি জানিয়ে নিরাশ করতাম না। তবে সুমির সাথে তারা নিয়মিতই কথা বলেন কেননা মেয়ের সাথে কি কথা না বলে থাকা যায়?

বোঝাই যাচ্ছে আমার শ্বশুর আব্বা আমার থেকেও রুমির স্বামীকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন।

আজ বাসায় ফেরার পর হঠাৎই সুমি বেশ উৎকন্ঠা নিয়ে আমার পাশে বসলো। খারাপ কোনো সংবাদ ব্যতীত সচরাচর ওর এমন উৎকন্ঠা দেখা যায় না।

কৌতূহল বসত জিজ্ঞেস করলাম,
– “ কি হলো তোমার? এমন চিন্তিত মুখে বসে আছো কেন? ”

– “ না আসলে আজ মা কল দিয়েছিল। বললো রুমি নাকি ওর স্বামীর সাথে আর ঘর করতে চায় না। মা হাজারবার বুঝিয়েছে কিন্তু ওতো নাছোরবান্দা। ”

আমি অবাক নয়নে সুমির দিকে তাকিয়ে বললাম,
– “ এতো ভালো ঘরে ওর বিয়ে হলো এমনকি ওর স্বামীও একজন সরকারী চাকুরিজীবী তাহলে কি কারণে ও সংসার ছাড়তে চায়? তোমার মতো অভাবে তো আর নেই। তুমিতো আমার মতো এই গরীবের ঘরেও সংসার করে চলেছো। ”

আমার কথায় সুমি বেশ ইতঃস্তত ভঙ্গিতে বললো,
– “ ধুর এসব কথা ছাড়ো এখন। আর কারণটা আমিও ঠিক জানিনা। তুমি একটু বাবাকে জিজ্ঞেস কইরো। ”
আমি আর কিছু না বলে গোসলের প্রস্তুতি নিতে চলে গেলাম।

এর কিছুদিন পর হঠাৎই রুমি ওর শ্বশুর বাড়ি ছেড়ে চলে আসে। মূলত সবার অজান্তেই রুমির স্বামী অন্যত্র এক মেয়েকে বিয়ে করে। আর এই বিষয়টা রুমির পাশাপাশি আমার শ্বশুর শাশুড়িও মেনে নিতে পারেননি। কারণ যেই মেয়ে জামাইকে তারা এত আদর আপ্যায়ন করেছেন সেই লোকই আজ তাদের মেয়েকে ধোঁকা দিয়ে অন্যত্র বিয়ে করেছে, এটা কোনো বাবা মা'ই মেনে নিতে পারবে না।

রুমি ওর স্বামীকে ডিভোর্স দেওয়ার কিছুদিন পরই আমি সুমিকে নিয়ে শ্বশুর বাড়িতে বেড়াতে আসি। আমার শ্বশুর আমাকে দেখে কোনো এক অজানা কারণে মুখ লুকাচ্ছেন। এর পিছনের গল্পটা আমি জানলেও তখন প্রকাশ করলাম না।

রাতে যখন সুমি আর আমি ঘুমানোর প্রস্তুতি নিবো তখন হঠাৎই আমার স্ত্রী বেশ চিন্তিত মুখে বলে ওঠে,
– “ আমার বোনটার সাথে কেন যে এমন হলো বুঝতে পারছি না। ওর ভাগ্যটা আসলেই খারাপ। ”

আমি সামান্য মুচকি হেসে বললাম,
– “ ওতো স্বর্ণের কপাল নিয়ে জন্মেছিল তাই হয়তো এরকম হলো। আর তুমিতো জন্মেছিলে পোড়াকপাল নিয়ে তাই হয়তো এখনও তোমার জীবনে কোনো দূর্ঘটনা ঘটেনি। ”

আমার কথা শুনে স্বভাবতই আমার স্ত্রী মুখে কুলুপ এঁটে চুপ করে রইল। কারণ এমন বাক্যের প্রতিউত্তরে কিছু বলার মতো বাক্য তার মুখে অবশিষ্ট থাকার কথা নয়। এটাই হয়তো এক অন্য রকম বাস্তবতার দৃষ্টান্ত।
(সমাপ্ত)

------------------------------
# সপ্ন ঘুড়ী
------------------------------
গল্পটি ভালো লাগলে শেয়ার করতে পারেন। আর কমেন্টে আপনার মূল্যবান মন্তব্য জানাতে ভুলবেন না।🥰

10/11/2023

আজ অনেক বছর পর আবার নতুন করে লিখতে বসলাম
আজকের গল্পটা আমাদের সমাজেরই।

স্বামীর টাকার ইনকামের উপর নির্ভর করে বাড়ির বউয়ের সাথে শ্বশুরবাড়ির লোকজন কেমন আচরণ করবে।রায়হানের সাথে যখন আমার বিয়ে হয় তখন রায়হান একটা প্রাইভেট কোম্পানিতে বড় পদে জব করতো। যেহেতু, আমাদের নতুন বিয়ে হয়েছিলো সেহেতু; রায়হান প্রতি সপ্তাহে বাড়ি আসতো। বৃহস্পতিবার অফিস শেষে সন্ধ্যার দিকে মহাখালী থেকে বাসে উঠতো আর রাত ১০-১১টার দিকে ময়মনসিংহ এসে পৌঁছাতো। একদিন রায়হানকে আমি মুখফোটে বলেছিলাম,
--তুমি প্রতি সপ্তাহে বাড়ি না এসে আমাকেই তো তোমার কাছে নিয়ে রাখতে পারো।

আমার কথা শুনে রায়হান মুচকি হেঁসে বলেছিলো,
-" আমি যে শুধু তোমার জন্য প্রতি সপ্তাহে বাড়ি আসি সেটা তোমায় কে বললো? বাসায় বাবা-মা আছে ভাই-বোন আছে আমি তাদেরকেও দেখতে আসি। তোমাকে যদি ঢাকায় নিয়ে যায় তবুও কিন্তু প্রতি সপ্তাহে আমি বাড়ি আসবো"

রায়হানের কথা শুনে আমি নিজের কাছে নিজে খুব লজ্জা পেয়েছিলাম। আবার ভয়ও পেয়েছিলাম রায়হান যদি আমার কথায় ভুল বুঝে সেটা নিয়ে।

আমি রায়হানের হাত ধরে বলেছিলাম,
--তুমি আমায় ভুল বুঝো না। আসলে তুমি প্রতি সপ্তাহে এতোটা পথ জার্নি করে আসো তো তাই আমার খুব চিন্তা হয়। মনে নানা রকম ভয় কাজ করে...

রায়হান কখনো শুধু আমার জন্য কোন কিছু কিনে আনে নি। একদিন কথার কথা রায়হানকে বলেছিলাম, আমার একটা নীল শাড়ি লাগবে।
রায়হান পরের সপ্তাহে যখন বাড়িতে আসে তখন দুইটা নীল শাড়ি আনে। একটা আমার জন্য আরেকটা তার ছোট বোনের জন্য। ঈদ আসলে আমার আমার মা-বাবার জন্য রায়হান যে শাড়ি পাঞ্জাবি কিনতো সেইম শাড়ি পাঞ্জাবি তার বাবা-মা'র জন্য কিনতো। আমার ছোট ভাইয়ের জন্য যে ডিজাইনের শার্ট-প্যান্ট কিনতো সেইম শার্ট-প্যান্ট ওর ছোট ভাইকেও কিনে দিতো। আমায় যা কিনে দিতো সেইম জিনিস তার ছোট বোনকে কিনে দিতো।

একবার রায়হানের সাথে শপিং করার সময় আমার একটা জামা খুবই পছন্দ হয়েছিলো। আমি যখন এটা নিতে যাবো তখন রায়হান দোকানদারকে বলেছিলো, সেইম ডিজাইনের সেইম রঙের আরেকটা জামা দিতে। দোকানদার যখন বললো এটা শুধু এক পিস আছে । রায়হান তখন সে জামাটা নিতে আমায় না করেছিলো

আমি আবাক হয়ে রায়হানকে প্রশ্ন করেছিলাম,
-- তুমি এইভাবে কেনাকাটা করো কেন? আলাদা আলাদা ডিজাইনের জিনিস কিনলে কি হয়?

রায়হান হেসে উত্তর দিয়েছিলো,
-" সেইম জিনিস কেনাকাটা করি এজন্যই যাতে আমার পরিবারের কোন সদস্য তোমায় কখনো কথা শুনাতে না পারে। আজ যদি আমার বাবা-মা, ভাই-বোনের জন্য একরকম জিনিস কিনি আর তোমার বাবা-মা, ভাইয়ের জন্য অন্য রকম জিনিস কিনি তাহলে আমার পরিবারের লোক ভাবতেই পারে তোমার বাবা-মাকে দেওয়া কাপড়টা দামী আর তাদের দেওয়া কাপড়টা কম দামী।"

রায়হান একদিকে যেমন ওর বাবা-মা, ভাই-বোনের প্রতি কর্তব্য পালন করতো তেমনি অন্যদিকে আমার প্রতিও খুব দায়িত্বশীল ছিলো। আর আমি নিজেও শ্বশুর-শ্বাশুড়ির কাছে ছিলাম লক্ষ্মী বউমা আর দেবর-ননদের কাছে ছিলাম মনের মতো ভাবী....
---
-------

সময়ের পরিক্রমায় অনেককিছু বদলে যায়। রায়হান যে কোম্পানিতে জব করতো সেটা হুট কিছু সমস্যা জনিত কারণে বন্ধ হয়ে যায়। রায়হান তখন বেকার বাসাতেই থাকে।আর ঐদিকে আমার দেবরের খুব ভালো একটা চাকরি হয়। আমি খুব আশ্চর্য হয়ে লক্ষ্য করলাম বাড়ির প্রতিটা সদস্য আস্তে আস্তে আমার ছোট দেবরের কথা বেশি মূল্যায়ন করতে শুরু করলো। আর আমার স্বামী কিছু বললে সেটা ওরা কানেই নিতো না। রায়হান যদি কোন কাজের সিদ্ধান্ত নিজ থেকে নিতে চাইতো শ্বশুর শ্বাশুড়ি বাঁধা দিয়ে বলতো, " আগে রাকিবকে( আমার দেবর) জিজ্ঞেস করে নে"

ননদীর বিয়ে ঠিক হয়েছে সেটা নিয়ে আমরা সবাই আলোচনায় বসলাম। কত খরচ হতে পারে, ছেলেকে উপহার সামগ্রী কি কি দিবে, ননদীর জন্য কেমন ধরনের গহনা বানাবে সেটা নিয়ে কথা হচ্ছিলো। আমার শ্বশুর আমার স্বামীকে বললো,
~বোনতো শুধু একা রাকিবের না। এটা তো তোরও বোন হয়৷ তাই যা খরচ হবে তোরা দুইভাই সমান সমান দিস।

আমার স্বামী তখন অসহায়ের মতো বসে মাথা নিচু করে বললো,
- বাবা, আমার বর্তমান অবস্থাটা তো জানোই। আমি কিভাবে এতো টাকা দিবো? আমি যতটুকু পারি এখন দিচ্ছি বাকীটা রাকিব ব্যবস্থা করুক। আমি নাহয় পরে শোধ করে দিবো

আমার দেবর তখন বললো,
-" আমি না হয় সব খরচ দিলাম কিন্তু বাসার সামনে যে ৪ শতাংশ জমি ভাইয়ের নামে আছে সেটা ভাই আমার নামে লিখে দিক।"

দেবরের কথাতে যতখানি না অবাক হয়েছি তার চেয়ে বেশি অবাক হয়েছি যখন দেখলাম আমার শ্বাশুর-শ্বাশুড়ি দেবরের কথাতে সম্মতি দিয়েছে। অথচ সেই দেবরের চাকরির জন্য আমার স্বামী ৮ লাখ টাকা দিয়েছিলো।

নিজের স্বামীর এমন অসহায়ত্ব চেহারাটা আমি সহ্য করতে পারছিলাম না। নিজের রুমে ঢুকে আলমারি থেকে সমস্ত গহনা বের করে শ্বশুর-শ্বাশুড়ির সামনে রেখে বললাম,
-" এইখানে যত গহনা আছে তা দিয়ে নিশ্চয়ই অর্ধেক খরচ বহন করা যাবে। তবুও আমি এইজমি আমার স্বামীকে অন্য কারো নামে লিখে দিতে দিবো না। "

আমার কথা শুনে রায়হান আমার দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে বললো,
-" এই গহনা নিয়ে নিজ রুমে যাও "
দেবরের দিকে তাকিয়ে বললাম,
--লজ্জা করে না বড় ভাইয়ের দূর্বলতার সুযোগ নিতে?
রায়হান তখন আমার গালে একটা থাপ্পড় মারে। আমি গালে হাত রেখে কাঁদতে কাঁদতে বললাম,
-- যে বাবা-মা, ভাইয়ের প্রতি দায়িত্বের এতটুকু অবহেলা করো নি সেই বাবা-মা, ভাইয়ের থেকে প্রতিদান স্বরূপ কি পেলে একটা বার ভেবে দেখো!

এই কথা বলে নিজ রুমে চলে আসি। জানালার গ্রিল ধরে যখন বাহিরের দিকে তাকিয়ে ছিলাম তখন খেয়াল করি রায়হান পিছন থেকে আমায় খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরেছে। বুঝতে পারছিলাম রায়হান খুব কান্না করছে কিন্তু আমি একটারও ওর কান্না থামাতে চেষ্টা করি নি। কাঁদুক, কাঁদলে যদি ভিতরের যন্ত্রণাটা একটু কমে...
|
|
দুই ভাইয়ের মাঝে যখন সবকিছু ভাগাভাগি হয় তখন রায়হান বলেছিলো,
-"মা-বাবা আমার সাথে থাকুক"
আমার শ্বশুর বলেছিলো,
~" নারে, আমরা না হয় রাকিবের কাছেই থাকি।প্রতিমাসে আমাদের যে ঔষধের খরচ সেটা তুই চালাতে পারবি না। এমনিতেই তোর অবস্থা খারাপ"

রায়হান চোখের পানি কোন রকম ভাবে আটকে রেখে আমার শ্বাশুড়ির দিকে তাকিয়ে বলেছিলো,
-" মা, আমার স্ত্রী প্রেগন্যান্ট। তুমি না হয় অন্তত আমাদের সাথে থাকো৷"
তখন আমার আদরের ননদী তার বড় ভাইকে বললো,
~"ভাইয়া তুমি তো দেখছি খুব স্বার্থপর। নিজের বউয়ের সেবার জন্য নিজের মাকে চাকরানী হিসাবে রাখতে চাইছো।"

আদরের ছোট বোনের থেকে এই কথা শুনার পর রায়হান চুপ হয়ে গিয়েছিলো আর অন্য দিকে তাকিয়ে চোখের জল ফেলছিলাম আমি...

রায়হান যেদিন আমায় বাবার বাড়ি দিয়ে আসে সেদিন ও বাসার ভিতর ঢুকে নি। আমাকে গেইটের সামনে দিয়েই চলে গিয়েছিলো। আর যাওয়ার আগে বলেছিলো,
-" যতদিন চাকরি না হবে ততদিন সন্তানের মুখ দেখতেও আসবো না।"

রায়হান চলে যাবার পর এমন কোন রাত নেই যে আমার বালিশ ভিজে নি। জায়নামাজে বসে কত যে চোখের জল ফেলেছি সেটা শুধু আমি আর আমার আল্লাহ জানে...
---
-----

৩বছর পর....

বিকালের দিকে আমার ছেলে রায়ানকে নিয়ে আমি যখন ছাদে খেলছিলাম তখন পাশে দাঁড়িয়ে থাকা রায়হান হঠাৎ বললো,
-"আমি যখন ছোট ছিলাম তখন মা হয়তো আমাকেও নিয়ে এইভাবে খেলতো"

রায়হানের কথা শুনে আমি কিছু বলি নি। আমার চুপ থাকা দেখে রায়হান আমতা-আমতা করে আমায় বললো,
-"সন্তানের কখনোই উচিত না বাবা মায়ের প্রতি রাগ করে থাকা। বাবা মা কত কষ্ট করে সন্তান.."
রায়হানকে আমি থামিয়ে দিয়ে বললাম,
-- সোজাসাপ্টা বলো কি বলতে চাও....
রায়হান মাথা নিচু করে বললো,
- "আমি চাই মা-বাবা আমাদের সাথে থাকুক। আসলে রাকিবের এইখানে বাবা-মা ভালো নেই। শুনেছি রাকিবের বউ বাবা-মা'র সাথে খুব বাজে ব্যবহার করে "

আমি হেসে বললাম,
-- তোমার বাবা মাকে তোমার কাছে রাখতে চাও এতে আমায় জিজ্ঞেস করার কি আছে? তুমি যে প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা তোমার মা-বাবাকে পাঠাও তখন তো আমায় জিজ্ঞেস করো না।তাহলে এখন কেন জিজ্ঞেস করছো?
রায়হান অবাক হয়ে বললো,
-" তুমি জানতে আমি বাবা মাকে টাকা পাঠাই? "
-- আমি যখন জানতে পেরেছি তুমি তোমার বাবা মাকে আমার অজান্তে টাকা দাও তখন আমি একটুও কষ্ট পাই নি। বরং তোমার প্রতি আমার সম্মানটা বেড়ে গিয়েছিলো। আমার খুব গর্ব হতো এটা ভেবে বাবা মা তোমার প্রতি অন্যায় বিচার করলেও তুমি সন্তান হয়ে বাবা মায়ের প্রতি কর্তব্য ঠিক মতই পালন করছিলে।

আমি রায়ানকে কোলে নিয়ে যখন নিচে নামবো তখন রায়হান পিছন থেকে আমার হাতটা যখন ধরলো তখন আমি ওর দিকে তাকিয়ে বললাম,
--তুমি চিন্তা করো না। এইখানে তোমার বাবা মায়ের বিন্দু পরিমাণ অসম্মান হবে না.
- স্বপ্নঘুড়ী

অজানা_অতৃপ্তলেখক_জাহিদনিজের স্তনে কারো হাতের স্পর্শ পাওয়ায় ঘুম থেকে উঠে যায় ইশা। রাত আনুমানিক ১ টা বাজে৷ নিজের ঘরে এক...
21/07/2023

অজানা_অতৃপ্ত
লেখক_জাহিদ

নিজের স্তনে কারো হাতের স্পর্শ পাওয়ায় ঘুম থেকে উঠে যায় ইশা। রাত আনুমানিক ১ টা বাজে৷ নিজের ঘরে একা শুয়ে ছিলো ইশা। তখনই ঘটে এই ঘটনা। পুরো রুম অন্ধকার থাকায় লোকটির মুখ ও শরীর কিছুই ভালো ভাবে দেখতে পারছিল না ইশা। আর সামনে দাঁড়িয়ে থাকা লোকটি যেনো খুবই শান্ত ভাবে ইশার স্তন নিয়ে খেলা করছে। প্রথমে ইশা কিছুটা ইতস্ততবোধ করলেও ধীরে ধীরে যেনো এই স্পর্শটা ইশার খুব ভালো লাগছে.... কেমন যেনো পাগল করে তুলছে তাকে... তাই ইশা চাইতেও যেনো বাধা দিতে পারছে না....আসতে আসতে লোকটি ইশার স্তন বাদ ছেড়ে পুরো শরীরে হাত বুলিয়ে দেখতে লাগলো.... ইশা যেনো একটু পর পর শিহরিত হয়ে উঠছে...বার বার কেঁপে উঠতে লাগলো...
লোকটি ইশার নিম্নাঙ্গের কাপড় টান দেওয়ায় ইশা বুঝতে পারে লোকটি তার সাথে যৌন সঙ্গম করতে চাচ্ছে.... যেই ইশার সাথে সঙ্গম করতে যাবে তখনই ইশা যেনো কিছুটা জ্ঞানে আসতে লাগলো.... এতক্ষন সে নিজের জ্ঞান এ না থাকার কারণে তার মনে একবারের জন্য প্রশ্ন উঠেনি এত রাতে একজন পুরুষ কিভাবে তার রুমে আসবে... কয়েকদিন পর ইশার বিয়ে তার বয়ফ্রেন্ড বিপ্লব এর সাথে... বিপ্লব হয়তো মজা করার জন্য তাকে না বলে তাদের বাসায় আসতে পারে... কিন্তু দরজা জানালা তো ভিতর থেকে লাগানো তাহলে এই রুমে বিপ্লব বা অন্য কেউ কেনো আসবে... লোকটি তখনো সেখানেই দাঁড়িয়ে আছে...
ইশা ভাবলো কে এই লোক... আমার রুমে কি করছে...ইশা এইভেবে তার পিছনে থাকা বেড সুইচ টা অন করে.... এবং যেই সামনে তাকায় দেখে যে তার এখন রুম সম্পুর্ন ফাঁকা.... কেউ নেই তার রুমে... কিন্তু একটু আগেই যেসব হলো ইশার সাথে সেসব কি ছিলো তাহলে? ভাবতেই যেনো ইশা খুব ভয় পেয়ে যায়... তার শরীর ঘামতে থাকে... এটা এমনিতেই শীতের মৌসুম... ইশার কপাল বেয়ে পানি পড়তে থাকে....সে ভাবল এটা কোনো অশরিরী নয়তো... পাশের রুমেই তার বাবা মা ঘুমিয়ে আছে... চিৎকার দিলে হয়তো এখনই উঠে আসবে....কিন্তু সব চেয়ে বড়ো কথা হচ্ছে এটা যদি আমার বিভ্রান্তি হয়ে থাকে তাহলে সবাই আমাকে নিয়ে উপহাস করবে কেনো না ইশা একজন ডাক্তার... তার কাছে অশরিরী বলতে কিছুই হয় না... আর মাত্র কয়েকদিন পর সে নিজেই নিজের হবু স্বামী বিপ্লবের সাথে একটা ছোট্ট ক্লিনিক খুলতে যাচ্ছে... বিপ্লব নিজেও একজন ডাক্তার... তাদের রিলেশনটা 2 বছর আগে শুরু হয়েছে....যখন তারা মেডিকেলে সেকেন্ড ইয়ার এ পড়ে... ইশা পড়াশুনায় খুবই তৃক্ষ মেধা সম্পন্ন ছিল... কিন্তু ক্লাসের বাহিরে সে কারো সাথে একটা কথাও বলত না... সবসময় যেনো মন মরা হয়ে থাকতো.... কিন্তু বিপ্লব মনে মনে ইশা কে খুব ভালোবাসতো.. যদিও অনেকবার ইশা বিপ্লব কে রিজেক্ট করে দিয়েছিলো.. কিন্তু বিপ্লব ও ছিলো নাছোর বান্দা... ইশার পিছে ফেবিকলের মতো লেগে ছিল... ফলশ্রুতিতে সব গল্পের শেষের মতো একসময় ইশা বিপ্লব এর কাছে পটে যায়...
এদিকে(বর্তমানে) ইশা রুমে কাউকে না পেয়ে কিছুটা হতভম্ব হয়ে যায়.. তাই এতক্ষন ভাবনার জগতে ডুবে ছিলো...তার ভাবনার বিচ্ছেদ ঘটে একটা অদ্ভূত রকমের বিড়াল এর আওয়াজ এর মাধ্যমে.. ঘাড় ঘুরিয়ে একটু নিচে তাকাতেই দেখলো কালো কুচকুচে রঙের একটা বিড়াল ইশার দিকে তাকিয়ে আছে.... বিড়াল টার সারা শরীর প্রচণ্ড কালো হলেও চোখ গুলো যেনো অনেক লাল জলজলা.... মনে হচ্ছে তার চোখে আগুন জ্বলছে... একা একটা রুমে এই রকম পরিবেশ যেনো যে কাউকে ভয় পাইয়ে দিবে... ইশাও যেনো এর উর্ধ্বে নয়... তাই তো বাধ্য হয়েই একটা চিৎকার দিলো "মাআআআআআআ" বলে... চিৎকার দিয়েই দরজার দিকে দৌড় দিলো..... দরজা খুলতেই সামনে ওর মা বাবা কে পাওয়ায় দুই হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে ইশা....ইশার মা কি হয়েছে জানতে চাইলে ইশা সবকিছু বলে.... ইশার মা বাবা দুইজনই ইশার রুম দেখার জন্য আসে... কিন্তু তারা সেই লোকটি কিংবা সেই বিড়ালটির কোনো টিকে খুজে পায় না.. জানালাও লাগানো... তাই তারা এক প্রকার নিশ্চিত হয়ে যায় যে তাদের মেয়ে দুঃস্বপ্ন দেখেছে...
ইশার মা বাবা ইশা কে বুঝিয়ে চলে গেলো... রুমে শুধু বসে রইলো ইশা....চারদিকে আবার নিজের দু চোখ বুলিয়ে নিলো.... মন দিয়ে সব কিছু দেখতে লাগলো... ইশা নিজেও বুঝে নিলো যে এটা শুধু তার দুঃস্বপ্ন ছাড়া কিছুই ছিলো না... তাই সে নির্বিঘ্নে আবার শুয়ে পড়লো....
পরের দিন সকালে ইশার ঘুম ভাঙল বিপ্লব এর ফোনে.... এটা যেনো এখন রুটিন হয়ে গেছে... রোজ সকালে ইশার ঘুম ভাঙানোর দায়িত্বটা যেনো বিপ্লব নিজেই নিয়েছে..... ইশা পাশে থাকা ফোন টা তুলতেই বিপ্লব বলতে লাগলো
- কি করে আমার জানু টা....
- এইতো বিছানায় শুয়ে শুয়ে চাঁদ দেখি
- এই তোমাদের বাসার ছাদ ফুটো হয়ে গেছে নাকি.? নাহলে বিছানায় বসে চাঁদ কিভাবে দেখো
- আরে বোকা আমি তো মজা করেছি... তাছাড়া এই দিনের বেলায় চাঁদ কোথায় পাবো আমি?
- ওহ তাই তো... হাহাহাহা
- থাক আর হাসতে হবে না... কি বলবে বলো আমার ফ্রেশ হতে হবে
- চলো না আজ আমরা দেখা করি... কতদিন হয়ে গেলো দেখা করি না... শুধু ফোনে কথা বলে সময় পার করে দিই
- কিহ.. পরশু দিন ও তো দেখা করলাম.. আর আগামীকাল কাল ই তো আমাদের বিয়ে... ওহ বুঝেছি.... আবার দুষ্টামি করার শখ জেগেছে বুঝি....
- দেখেছো আমাদের মনের কতো মিল... আমি কি বুঝাতে চেয়েছি তুমি বুঝে ফেলেছ..
- ঠিক আছে আসবো. এখন বাই...
বলেই ইশা ফোনটা কেটে দিলো... ফ্রেশ হয়ে খাবার খেয়ে নিয়ে বেরিয়ে পড়লো যেখানে বিপ্লব আর ইশা রোজ দেখা করে আসছে.... ইশা দের কোনো গাড়ি নেই তাই ইশা রিকশা ব্যবহার করছে.... পার্কের সামনে নামতেই দেখে বিপ্লব দাঁড়িয়ে আছে.. দুই জনে মিলে ভিতরে গিয়ে বসে গল্পগুজব করছে...
হঠাৎ করে ইশা নিজের ভিতর কিছুটা অস্থিরতা অনুভব করতে থাকে.. নিজের ভালোবাসার মানুষ, নিজের হবু স্বামীর সাথে সদ্য হাসি খুশি করা মেয়েটা যেনো নিমেষেই কিছুটা অস্থিরতা অনুভব করছে.... এই অস্থিরতা কিসের চাইতেও যেনো মনে করতে পারছে না ইশা... বিপ্লব ইশার এই দিক টা খুব ভালো ভাবে লক্ষ করলো... সে কিছুই না বলে শুধু ইশার এমন দশা দেখে যাচ্ছে.... হঠাৎ একজন পথ ভিক্ষুক এসে বিপ্লব এর সামনে বলল "স্যার গো কয়ডা টাহা দেন... আজ দুই দিন ধইরা কিছু খাই না"..... বিপ্লব নিজের মানিব্যাগ থেকে ১০০ টাকার একটা একটা নোট বের করে দেয়... কিন্তু এদিকে ইশা সামনে দাঁড়িয়ে থাকা এই লোকটিকে এক নজরে দেখেই যাচ্ছে.... তার যেনো চোখের পাতা পড়ছেই না...মনে হচ্ছে ইশা যেনো এই লোকটিকে কত না দিন ধরে চিনে... ইশা দেখলো সামনে দাঁড়িয়ে থাকা লোকটির চেহারা হঠাৎ করে খুবই বীভৎস হয়ে গেলো.... মনে হচ্ছে মুখের মাংস গুলো যেনো কোনো জীব জন্তু খুবলে খুবলে খেয়েছে... শরীরের চামড়া কুঁচকে গেছে খুব... চোখের কোঠোর যেনো বেরিয়ে গেছে.... ইশা আর সহ্য করতে না পেরে অজ্ঞান হয়ে যায়...এবং বিপ্লব এর সামনেই মাটিতে লুটিয়ে পরে.... বিপ্লব ভাবলো হয়তো সামনে দাঁড়িয়ে থাকা ভিক্ষুক কে দেখে ভয় পেয়ে গেছে... তাই বিপ্লব ভিক্ষুকটিকে চলে যেতে বললো
বিপ্লব তাড়াতাড়ি করে ইশা কে তুলে নিজের গাড়িতে শুয়ালো... ইশাদের বাড়িতে নিয়ে যেতেই নিজের মেয়েকে অজ্ঞান অবস্থায় দেখে ইশার বাবা মা যেনো খুবই চমকে গেলো.... কিন্তু বিপ্লব তাদের শান্তনা দেওয়ার জন্য বললো যে ইশা শুধু মাত্র ফ্রাস্টেশন এ পরে জ্ঞান হারিয়েছে... এই বলে বিপ্লব নিজের বাসায় চলে গেলো... কোনো না আগামী কাল ই তাদের বিয়ে... অনেক প্রস্তুতি এখনও বাদ আছে...
পরের দিন দুই পরিবারের মাঝে যেনো খুশির পাহাড় নেমে আসে... আজ ইশা আর বিপ্লবের বিয়ে.... বাহিরের সবাই বিপ্লব এর সাথে কথা বলছে আর এদিকে ঘরের ভিতর ইশা বসে আছে.. রুমে কেউ নেই... যেখানে ইশার সবচেয়ে বেশি খুশি হওয়ার কথা সেখানের ইশা কিছুটা মন মরা... ধীরে ধীরে বিয়ে খুব ভালো ভাবে সুসম্পন্ন হলো....
ইশা কে বিপ্লবের বাড়িতে আনা হলো.. বিপ্লবের ছোটো ভাই বোনেরা সবাই মিলে ইশা কে বাসর ঘরে বসালো .. এদিকে বিপ্লব ওর বন্ধুদের সাথে কথা বলছে... বন্ধুদের ধাক্কা আর ধমক খাওয়ার অনেকক্ষন পর বিপ্লব গিয়ে বাসর ঘরে ঢুকলো... বিপ্লব বাসর ঘরে ঢুকেছে দেখে ইশা কিছুটা নরেচরে বসলো....
বিপ্লব খাটে বসে যেই ইশার ঘোমটা সোরালো অমনি চার পাশ টা কেনো জানি কেঁপে উঠলো... মনে হলো তাদের রুমে যেনো ভূমিকম্প হচ্ছে... ইশা আর বিপ্লব যেনো খানিকটা চমকে উঠলো.. ইশা ভয় পেয়ে বিপ্লবকে জড়িয়ে ধরলো... বিপ্লব ভাবলো হয়তো বাহিরে চিৎকার চেঁচামেচির জন্য এমন টা হয়েছে.. তাই নিজেও ইশাকে জড়িয়ে ধরলো.... কিন্তু এবার যা হলো তা কারোই প্রত্যাশা করার মত ছিলো না....বিপ্লব এর ঘরের সব জিনিস পত্র আপ্নাআপনি নরতে লাগলো.. রুমের ভিতর প্রচণ্ড বেগে বাতাস বইতে লাগলো.... মনে হচ্ছে এই বুঝি তারা দুজনেই উড়ে যাবে...

বাসর ঘরে ইশাকে বিপ্লব জড়িয়ে ধরতেই চারপাশটায় কেমন জানি বাতাস বইতে লাগলো...ভূমিকম্পের মতো রুমটা দুলতে লাগল... ঘরে থাকা আসবাবপত্র গুলো যেনো কাঁপছে... এসব দেখে ইশা সহ্য করতে না পাড়ায় ইশা বিপ্লব কে জড়িয়ে ধরা অবস্থায় অজ্ঞান হয়ে গেলো... বিপ্লব কিছুটা আন্দাজ করতে পেরেছে যে এসব কোনো স্বাভাবিক বিষয় নয়... এর পিছে অবশ্যই কোনো অশরীরির হাত রয়েছে... তাই সে ইশা কে বিছানায় শুয়ে রেখে রুমের এই অবস্থার কারণ খুঁজে বেরোনোর জন্য দাঁড়িয়ে পড়ে.. আর অমনি এই কোলাহল পুরনো রুম যেনো ঠান্ডা শান্ত হয়ে যায়... বিপ্লব কিছুটা ঘাবড়ে যায়... কি হচ্ছে এসব... তাই সে ভাবলো ইশা কে একটু ডাকুক যে রুম টা শান্ত হয়ে গিয়েছে.... বিপ্লব ইশার গায়ে হাত দিয়ে যেই ডাকতে যাবে অমনি সেই আগের মতো পরিবেশ এর সৃষ্টি হয়ে গেলো রুমে.... বিপ্লব এবার ভয়ে কিছুটা পিছে চলে... এবং সে বুঝতে পারে যে ইশাকে স্পর্শ করলেই ওই অশরীরি খেপে রেগে যায়.... ইশার কাছে যেতে যেনো বিপ্লব ভয় পাচ্ছে.. এদিকে ইশাও অজ্ঞান হয়ে বিছানায় পড়ে আছে... তাই বিপ্লব কোনো উপায়ান্তর না পেয়ে বাহিরে চলে যায়... বিয়ের দিন হওয়ায় সবাই তখনো বাহিরে মজা করছে.....বিপ্লব এর একটা ফ্রেন্ড আছে শাকিল .. খুব মেধাবী.... যেকোনো রহস্য যেনো তার কাছে অমৃত সাধের মতো... রহস্যের মূল যতক্ষন না পর্যন্ত খুঁজে বের করবে সে যেনো কোনো কাজে মন বসাতে পারে না.... বিপ্লব ভাবল শাকিল যদি কেউ তাকে সাহায্য করতে পারে তাহলে সেটা হলো স্বয়ং আল্লাহ এবং শাকিল.... কেনো না এই যুগের দরবেশ বাবা কবিরাজ বলতে কিছুই নেই সব ভণ্ড.... শাকিল ও বিপ্লবের এর বিয়েতে এসেছে... তাই তাকে খুঁজে পেতে বিপ্লব এর বেশি দেরি হলো না... যেখানে সবাই নাচানাচি করছে সেখানে শাকিল কিছুটা দূরে একটা বেঞ্চের সামনে দাঁড়িয়ে কি যেনো ভাবছে... বিপ্লব গিয়ে শাকিল কে বললো
- শাকিল কি ভাবছিস.. সবাই তো খুব আনন্দ করছে.. তুই এখানে কেনো?
- জানি তোরা আমার এই রহস্যের প্রতি এত প্রেম দেখে আমাকে নিয়ে উপহাস করিস.. তবুও আমি এই রহস্যের কথা বলতে একদম পিছু পিছু পা হবনা... জানি এবারও হাসবি... তবুও বলছি দোস্ত আমি কেনো জানি এখানে কোনো অশরীরির অস্তিত্ব টের পাচ্ছি...
বিপ্লব মনে মনে ভাবছে তার মানে শাকিল সত্যি একজন রহস্যময় মানুষ.... নাহলে ও কোনোদিন ও এই অশরীরির কথা জানতে পারতো না.. ওর প্রতি বিপ্লবের যেনো অগাধ বিশ্বাস জন্মালো... তাই বিপ্লব শাকিলকে সবকিছু খুলে বললো... শাকিল বললো বিপ্লবকে বললো
- তাহলে আমাদের সর্বপ্রথম জানতে হবে ওই অশরীরি কেনো তোদের কাছে এসেছে আর কি চায় তোদের কাছে... যদি এসব বিষয়ে জানতে পারি তাহলে ওকে হারাতে আমার খুব সহজ হবে...
- কিন্তু ওর ব্যাপারে জানবো কি করে?
- শুন তুই বললি না তুই ইশা ভাবীকে রোমাঞ্চ এর জন্য স্পর্শ করলেই ও ক্ষেপে উঠে...
- হুম তাই তো দেখলাম...
- শোন এখন তুই ইশা ভাবীর সাথে রোমাঞ্চ শুরু করবি আর আমি পাশের রুমে থাকবো যেই ভিতরে ওই অশরীরি চলে আসবে তুই কিছু একটা দিয়ে শব্দ করবি আর আমি চলে যাব ভিতরে.. আর ওকে কিছুক্ষণের জন্য আটকে ওর ফিরে আসার কারণ জানবো...
- ভাই তাড়াতাড়ি আশিস নাহলে কিন্তু ভাই আমি বউয়ের আদর পাওয়ার আগেই উপরে চলে যাবো...
- তুই আমার উপর বিশ্বাস রাখ তোর কিছুই হবে না... এখন তাড়াতাড়ি চল ভোর হওয়ার আর কিছুক্ষণ বাকি...
রাত প্রায় ৪ টা বাজে.... সবাই এখন হৈচৈ করা বাদ দিয়ে রুমে হয়তো শুয়ে পড়েছে এখন সব কিছু ঠান্ডা.. এখন কাজটা খুব সহজ হবে.. বিপ্লব আর শাকিল চলে গেলো রুমের ভিতর... শাকিল পাশের রুমে লুকিয়ে পড়ে... এদিকে বিপ্লব গিয়ে দেখে ইশা এখনো অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছে... তাই ওকে কিছুক্ষণ ডাকাডাকির পরেও না উঠার কারণে পাশের ডেসিং টেবিল এর উপর থাকার পানির গ্লাস টা হাতে নিয়ে ইশার মুখের উপর কয়েক ফোটা পানি ছিটিয়ে দিতেই ইশা উঠে পড়ে... বিপ্লব কিছু না ভেবেই ইশার ঠোঁটে নিজের ঠোঁট ডুবিয়ে দেয়.... ইশাও বিপ্লব কে কোনো বাঁধা না দিয়ে নিজের বাহুডরে জড়িয়ে নেয়.... দুজনেই যেনো বার বার শিহরিত হচ্ছিলো... ঠিক তখনই আগের মতো রুমের বায়ু চাপ বাড়তে লাগলো... গরম বাতাস চারপাশে বইতে লাগলো.... সব জিনিস পত্র গুলো দুলতে লাগলো... ইশা আবারো ভয় পেয়ে গেলো... কিন্তু বিপ্লব কিছুটা শক্ত মনোবল নিয়ে ইশা কে জড়িয়ে ধরে আছে.. কারণ তার সত্যটা জানতেই হবে... হঠাৎ ইশা এবং বিপ্লব রুমে কারো রাগে ফুসফুস করার আওয়াজ শুনতে পেলো... বিপ্লব তবুও ইশাকে জড়িয়ে ধরে আছে.... হঠাৎ চারপাশ টা কেমন জানি শান্ত হয়ে গেলো... জিনিস পত্র গুলো কাঁপাকাপি করা বন্ধ হয়ে গেলো... গরম বাতাস এর পরিত্রাণ হতে লাগলে লাগলো... বিপ্লব কিছু বোঝার আগেই ইশা আবার বিপ্লব কে জড়িয়ে ধরলো... বিপ্লব ভাবলো হয়তো ইশাও তাকে ভালোবেসে জড়িয়ে ধরেছে... কিন্তু আস্তে আস্তে যখন নিজের বুকে চাপ বাড়তে লাগলো তখন বিপ্লব বুঝতে পারলো যে এটা কোনো সাধারণ মানুষের শক্তি দ্বারা হবে না.. মনে হচ্ছে ইশা বিপ্লব এর বুকের সকল হাড় ভেঙে ফেলবে... বিপ্লব এর বুঝতে বাকি রইলো না যে সেই অশরীরি এখন ইশার গায়ে... বিপ্লব চাইতেও যেনো নিজেকে ছাড়াতে পারছে না... এদিকে বিপ্লব এর দম যাওয়ার উপক্রম হয়েছে... অনেক চেষ্টার পর বিপ্লব নিজেকে ছাড়াতে সক্ষম হয়েছে... কিন্তু যেই ছাড়া পেয়ে পাশের রুমে দৌড় দিবে তার আগেই ইশা বিপ্লব কে এমন জোরে একটা ধাক্কা দেয় যে বিপ্লব সোজা উড়ে দেয়ালের সাথে আঘাত পায়.. বিপ্লব এর মাথা ফেটে রক্ত পড়তে থাকে... প্রচণ্ড রক্ত বের হওয়ায় বিপ্লব বুঝতে পারে সে অজ্ঞান হয়ে যাবে... কিন্তু পাশের রুমে থাকা শাকিল এর কথা যেনো এতক্ষন মনেই ছিলো না.. তাই অনেক কষ্টে দাঁড়িয়ে পাশে থাকা গ্লাস টা সজোরে আঘাত দিয়ে ভেঙে ফেলে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে.. আর সেই শব্দে পাশের রুমে থাকা শাকিল দৌড়ে এই রুমে চলে আসে.... শাকিল এসে দেখে যে বিপ্লব মাটিতে পড়ে আছে... তবে উঠার বেশ চেষ্টা করছে... সে বিপ্লব এর দিকে আর দৃষ্টি না দিয়ে ইশার দিকে তাকাতেই বুঝে যে সেই অশরীরি এখন ইশার ভিতর বিরাজ করছে.... শাকিল মনে মনে কিছু শব্দ উচ্চারণ করার সাথে সাথে যেনো ইশা চিৎকার দেয়.. আর বিপ্লব শাকিল কে বলতে থাকে
- তুই আমাকে আটকাতে পারবি না আমায়... আমি ওকে মেরে ফেলবই... যে আমার ইশার কে পেতে চাইবে তাকেই আমি মেরে ফেলব... ইশা শুধু আমার....
- তুমি এখানে কেনো এসেছ? আর কেই বা তুমি...
হঠাৎ এর মাঝেই ফজরের আজান সবার কানে ভেসে উঠলো... ইশা কেমন জানি একটা ঝাকুনি দিয়ে মেঝের উপর অজ্ঞান হয়ে লুটিয়ে পড়ল... বিপ্লব অনেক কষ্টের পর উঠে দাঁড়ায়.... এবং ইশা কে তুলে বিছানায় শুয়ে দেয়.... নিজের মাথায় লেগে থাকা রক্ত পরিষ্কার করে যাতে অন্য কেউ এসব এর ব্যাপার না জানতে পারে.... বিপ্লব এবং শাকিল দুইজনই বাহিরে আসে... বিপ্লব শাকিল কে বললো
- কিরে কিছু জানতে পারলি
- যত টুকু জানতে পারলাম যে ওই অশরীরির সাথে ইশার কোনো অতীতের সম্পর্ক অবশ্যই আছে... তোর আগে ওটা জানতে হবে নাহলে ওই অশরীরি কে হারানো অসম্ভব....
- ওর সাথে ইশার আবার পুরোনো অতীত কিভাবে থাকবে....
- সেটাই তো তোর জানতে হবে... আর শুন আজকের ভিতর যদি ওকে হারাতে না পারি তাহলে হয়তো তুই ইশা কে আর কোনোদিন নাও পেতে পারিস...
এই বলে শাকিল চলে গেলো..... বিপ্লব ভাবতে লাগলো কি এমন অতীত থাকতে পারে ইশার... ইশার অতীত তো শুধু আমি ছিলাম... যাইহোক সেটা জানতেই হবে আমার... বিপ্লব চলে গেলো ইশার কাছে... দেখে ইশা জেগে উঠেছে....বিপ্লব কিছু বলার আগেই ইশা বিপ্লব কে জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করে দিলো.... আর বলতে লাগলো...
- এসব কি হচ্ছে বিপ্লব.... আর কেনোই বা হচ্ছে আমার খুব ভয় লাগছে...
- ইশা তোমার জীবনে এমন কি কোনো অদ্ভূত ঘটনা ঘটেছিল যেটার জন্য তোমাকে বা অন্যকে ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়েছে...
- না... এমন কিছু তো হয়নি...
- ইশা মনে করার চেষ্টা করো.. নাহলে অনেক বড় প্রবলেম হয়ে যাবে
- কিছু ঘটেনি.... তবে হ্যাঁ একটা ছেলে আমাকে খুব ভালো বাসতো.... কিন্তু
- কিন্তু কি ইশা... বলো...
- আমি যখন কলেজে ভর্তি হই... তখন নতুন একটা শহরে শিফট হয়ে যাই সবাই মিলে... আমি যখন স্কুলে যেতাম একটা ছেলে রোজ আমাকে একটা ব্রিজের উপর দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখত... প্রথম কয়েকদিন আমি বিষয়টা কে খুব স্বাভাবিক ভাবে নেই. কিন্তু যখন এসব রোজ হচ্ছিল তখন আমি বুঝতে পারি যে ছেলেটা আমাকে পছন্দ করে..... আমিও কোনো প্রকার কথা না বলে চলে যেতাম যেতাম.... কিন্তু একদিন যখন আমি বাসায় আসতে ছিলাম তখন ওই ছেলেটা আমাকে প্রপোজ করে বসে তখন আমি ওকে রাগের বসে একটা থাপ্পড় মেরে বসি... আর বলি যে কোনোদিন যেনো আমার সামনে না আসে.... সেদিন এর পর থেকে আমি যখন কলেজে যেতাম তখন থেকে ওই ছেলেটাকে দেখতাম না.... আসতে আসতে যখন দিন অতিবাহিত হতে লাগলো.. তখন কেনো জানি আমার মনে কিছু টা আশঙ্কা জাগতে লাগলো... তার কয়েকদিন পর আমি ওর এক বন্ধু কে যখন জিজ্ঞেস করি তখন ও বলে যে ওই ছেলে টা নাকি আত্মহত্যা করেছে.... এই ঘটনা শুনার পর যেনো আমি মানসিক ভাবে ভেঙে পড়ি...একজন অপরিচিত . কোনো কাজেই যেনো মন বসাতে পারি না....সবসময় মনমরা হয়ে থাকতাম আর তখনি তোমার সাথে আমার দেখা হয়....
- হুমম এবার বুঝতে পারলাম... ওই ছেলেটা তার ভালবাসার টানে আবার ফিরে এসেছে শুধু তোমাকে নিয়ে যেতে.... কিন্তু আমি এটা হতে দিবো না...
বিপ্লব শাকিল কে ফোন দিয়ে সবকিছু খুলে বললো.... শাকিল বললো তোরা দাড়া আমি এখনই আসছি...কিছুক্ষণের মধ্যে শাকিল উপস্থিত হল.... এসেই বললো
- শোন আমাদের যদি ওকে একেবারে তারাতে হয় তাহলে ওই ব্রিজ টার কাছে যেতে হবে... যেখানে ও সবচেয়ে বেশি দুর্বল ছিলো ইশার প্রতি.. তার আগে বলছি তোরা দুইজন এই দুইটা তাবিজ 1হাতে বেঁধে নাও. যাই হোক এটা হাত থেকে খুলবে না.. এখনি আমরা ওখানে যাবো... চলো..সবাই মিলে ফ্যামিলি কার করে সেই জায়গায় উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলো.... যেখানে ইশা আগে থাকতো.... যেতে প্রায় সন্ধ্যা হয়ে গেলো... দিনের বেলা থাকায় তাড়াতাড়ি করে যেতে পেরেছে সবাই.... কিন্তু যেই আসতে আসতে রাত ঘনিয়ে আসলো ঠিক তখনই একটা গাড়ি যেনো এসে বিপ্লব দের গাড়িতে ধাক্কা মারলো.... এতে ইশা, বিপ্লব এবং শাকিল সবাই মিলে একটা খাদে পড়ে গেলো... শাকিল প্রচণ্ড ব্যথা পাওয়ায় অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরনের কারণে অজ্ঞান হয়ে গেলো... কিন্তু বিপ্লব কিছু টা জ্ঞানে থাকায় ও ইশাকে গাড়ি থেকে বের করে উপরে আসতে লাগলো...
রাত প্রায় 8 টা বাজে... সম্পূর্ন রাস্তা ফাঁকা... তার উপর জনমানবহীন এলাকা.. চারদিকে ঘুটঘুটে অন্ধকার.. বিপ্লব ইশাকে নিয়ে রাস্তার উপর উঠে আসে... আর তখনি কেমন জানি চারদিকে বাতাস বইতে থাকে.... ঝড়ের আবির্ভাব এর মতো.... চারদিকে বাতাস শো শো শব্দ করছে.. হঠাৎ বিপ্লব সামনে কারো উপস্থিতি টের পায়... সামনে একজন যুবক দাঁড়িয়ে আছে.... তার মুখের দিকে তাকাতেই ভয়ে আতকে উঠে বিপ্লব... ভয়ে যেনো বিপ্লব এর গলা শুকিয়ে যায়.... কি বীভৎস তার চেহারা.... চোখের সামনে এই রকম দৃশ্য কেউ প্রত্যাশা করবে না...
হঠাৎ অশরীরি টি বিপ্লবের গলা চেপে ধরলো... এবং ভূমি থেকে শূন্যে ভাসালো.. বিপ্লব বুঝতে পারছে না শাকিল এর তাবিজ হাতে থাকা সত্বেও কিভাবে এই অশরীরি তাকে স্পর্শ করতে পারছে... বিপ্লব নিজের হাতের দিকে তাকাতেই বুঝতে পারে যে সেই তাবীজ টি আর তার হাতে নেই... সেই গাড়ি ধাক্কা খাওয়ার সময় সেটি হাত থেকে পড়ে গেছে....হঠাৎ অশরীরিটির হাতের নখ গুলো অনেক লম্বা ধারালো আকার ধারণ করলো.. বিপ্লব বুঝতে পারলো তার মৃত্যু অনিবার্য..... অশরীরি যেই নিজের হাতের নখ বিপ্লব এর বুকে ঢুকিয়ে দিবে তার আগেই হঠাৎ ইশা উঠে এসে সেই অশরীরির ও বিপ্লব এর সামনে দাঁড়ায়...ইশা খুবই কান্না জড়িত কন্ঠে বলে
- তুমি দয়া করো... আমার স্বামী কে মেরো না.... ও তোমার কি বা ক্ষতি করেছে... তোমাকে তো থাপ্পড় আমি দিয়েছিলাম যেই কষ্টে তুমি আত্মহত্যা করেছো শাস্তি দিলে তুমি আমাকে দেও... কিন্তু তুমি যেটা চাচ্ছো সেটা সম্ভব না... তুমি মরে গেছ... এখন একজন জীবিত মানুষ এর সাথে একজন আত্মার মিলন কোনোদিন ও সম্ভব নয়...
এতক্ষন পর যেনো সেই সেই অশরীরি নিজের ভয়ঙ্কর চেহারা পাল্টে কিছু টা স্বাভাবিক রূপ নিয়ে শান্ত গলায় বললো
- আমি তো তোমাকে ভালোবাসতাম ইশা.... ভেবেছিলাম তোমাকেই জীবন সাথী করব.... সেদিন তোমাকে অনেক সাহস করে নিজের মনের কথা জানিয়েছিলাম... ভেবেছিলাম তুমি রাজি হয়ে যাবে... আর সেদিন আমার খুশির ঠিকানা থাকবে না.... কিন্তু তুমি যখন আমায় থাপ্পড় মারলে তখনো আমি কোনো কষ্ট পাইনি.. কিন্তু যখন বললে তোমার সামনে যেনো কোনোদিন না যাই.. তখন আমি বুঝলাম তোমায় রোজ একবার করে দেখা ছাড়া আমার বেঁচে থাকা অসম্ভব.... কিন্তু দেখো তোমার প্রতি আমার ভালোবাসা এতই গভীর ছিল যে আমি মরার পর ও তোমার ভালোবাসার টানে ছুটে এসে ছিলাম... কিন্তু তুমি যখন চাচ্ছো তখন চলে যাচ্ছি.... তোমাদের মাঝে আর আসব না... ভালো থেকো তোমরা....
বলতেই সেই অশরীরি যেনো হাওয়ায় মিলিয়ে যেতে লাগলো.... বালির ধুলিকনার মতো সেই জায়গায় বাতাসে উড়তে লাগলো... ইশা বিপ্লব কে টেনে তুললো... দুইজন দুইজনকে জড়িয়ে ধরলো.... আকাশের দিকে আনমনে তাকিয়ে আছে দুইজন.... দোয়া করছে সেই আত্মার মাগফিরাত এর জন্য.... আর মুক্তি পেয়ে গেলো একটা ভালোবাসায় পাগল হওয়ায আত্মা..... যে ভালোবাসার টানে মরার পরেও ছুটে এসেছিল নিজের ভালোবাসার মানুষের কাছে...
এমন সুন্দর সুন্দর গল্প পড়তে চাইলে সাথে থাকুন . ......সমাপ্তি.......

ছোটু : দাদু পড়তে মন চাচ্ছেনা, একটু টিভি দেখবো?দাদু : টিভি থাক দাদুভাই, তুমি আমার সাথে গল্প করো।ছোটু: আচ্ছা দাদু আমাদের প...
29/03/2023

ছোটু : দাদু পড়তে মন চাচ্ছেনা, একটু টিভি দেখবো?

দাদু : টিভি থাক দাদুভাই, তুমি আমার সাথে গল্প করো।

ছোটু: আচ্ছা দাদু আমাদের পরিবার কি সারাজীবন সাতজনেরি থাকবে?

মানে আমি, বোন, তুৃমি, দাদি, বাবা-মা আর আমাদের বিড়াল ছানা ক্যাটি।

দাদু : এবার আমরা একটা কুকুর কিনবো তখন আমরা আটজন হয়ে যাবো।

ছোটু : কুকুরটা তো বিড়াল ছানাটিকে মেরে ফেলবে, তখন আমরা আবার সাতজন হয়ে যাবো।

দাদু : তুমি বিয়ে করে আনলে তখন আমরা আবার আটজন হয়ে যাবো।

ছোটু : কিন্তু বোন বিয়ে করে চলে গেলে আমরা আবার সাতজন হয়ে যাবো।

দাদু : তোমার ছেলে-মেয়ে হলে আমরা আট-নয়জন হয়ে যাবো।

ছোটু : কিন্তু তুমি আর দাদী মারা গেলে আমরা আবার সাতজন হয়ে যাবো।

দাদু : হারামজাদা তুই যা গিয়ে টিভি দেখ। 🤥

16/01/2023

শুনেছি বহুদিন তুমি আলতা পড়োনা,
সুরের মূর্ছনায় ভিজোনা,

চোখের তলায় পড়োনা কাজল,
বহুদিন গোলাপ হয়নি হাতবদল,

খোপাখোলা অবাধ্য চুলে,
কবে কোন ভুলে, গেলে চলে,
কেমন হতো; আজ দেখা হলে?

ভোরের সূর্যোদয়ে, বলদেখি নির্ভয়ে
কাছে এলে ঠোঁটের কিনারায়
হৃদয় কি বিরহে পুড়ায়?

আসমানী জালালী কৈতর,
উসমানী আত্মার ভিতর,
নিশানী অবচেতন আত্মভোলা
কথাটি আজো না হলো বলা!

আলতা পড়ো, খোপায় পড়ো বেলী
টিপ পড়ো, গান করো নিরিবিলি
কাজল রাঙা চোখে
অশ্রু ফেলো দুখে।

আমার আমি, সুখ পেয়েছি, জীবন গেছে মরে
কোথায় তুমি, কোন অভিমানে, আছো দূরে...

লেখা : ১৪ জানুয়ারী, ২০২৩।

Address

Dhaka

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when সপ্ন ঘুড়ী posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to সপ্ন ঘুড়ী:

Videos

Share

Category