22/10/2024
একজন শ্রমিক-বান্ধব উজ্জ্বল তারকা শিল্পপতি ( A worker- friendly shining Star Industrialist):
জিএমএস এ যোগদান করার পর প্রথম ঈদের নামাজ শেষে বাসায় এসে ফোন হাতে নিয়ে কাকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে ফোন দেব ... ভাবতে ভাবতেই জিএমএস এর শ্রদ্ধেয় প্রিয় এমডি স্যারের ফোন ... কল রিসিভ করতেই “ বাবা রিপন , ঈদ মোবারক ... তোমার আব্বা আম্মা ও বাসার সবাইকে আমার পক্ষ থেকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে দিও” ... বাসায় কিভাবে এসেছি ... কোন সমস্যা হয়েছে কিনা নানান খোঁজখবর নিলেন ।এত বড় একজন শিল্পপতি ঈদের দিনে আমাকে ফোন করে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ... আমার সুদীর্ঘ চাকুরী জীবনে এরকম অভিজ্ঞতা প্রথম। আমি অনেক আবেগ-আপ্লুত হয়েছিলাম ।সচরাচর আমরাই ঈদের দিন এমডি স্যার বা ডিরেক্টর / ইডি স্যারদের ফোন করে ঈদের শুভেচ্ছা জানাই । পরে এক কলিগকে ফোনে বিষয়টা জানালাম । আমার কলিগ বলল , এমডি স্যারের এটা দীর্ঘ দিনের অভ্যাস । ঈদের দিন সকালে জিএমএস এর সকল ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে স্যার ফোন করে ঈদের শুভেচ্ছা জানান । জিএমএস এর শ্রদ্ধেয় সদ্যপ্রয়াত মাননীয় এমডি স্যার জনাব গোলাম মোস্তফা স্যারের এরকম অনেক অনেক ভালো গুণাবলী ছিল যেগুলো সকলের জন্য উজ্জ্বল অনুস্মরণীয় উদাহরণ হয়ে থাকবে ।
এমডি স্যার যখন ফ্যাক্টরিতে গাড়ি নিয়ে ঢুকতেন তখন গাড়ির সামনে কোন শ্রমিক কর্মকর্তা থাকলে কখনই স্যারের ড্রাইভার হর্ন বাজাত না। স্যারের নিষেধ ছিল যেন তার গাড়ির হর্নের শব্দে কোন শ্রমিক বিরক্ত না হয়। শ্রমিক কর্মকর্তাদের বেতন, বোনাস, বাৎসরিক ইঙ্ক্রিমেন্ট সহ সকল সুযোগ-সুবিধা দিতে কখনই বিলম্ব করেন নাই। স্যার আমাদের সবাইকে বাবা বলে ডাকতেন ... বাবা রিপন ... বাবা অমুক …বাবা তমুক। একজন নতুন যোগদান করা শ্রমিক থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ কর্মকর্তা ... সবাইকে স্যার অনেক ভালোবাসতেন, স্নেহ করতেন, সম্মান দিতেন.... শুধু মানুষ হিসেবে না ... জিএমএস এর পরিবারের একজন সদস্য হিসেবে। এমডি স্যারের উপস্থিতি ...সেটা তার বাসায় হোক বা হেড অফিসে অথবা ফ্যাক্টরিতে ... স্যারের উপস্থিতি ও কিছু কথা সকলের জন্য ছিল অন্যরকম এক অনুপ্রেরণা , অন্যরকম এক কর্মশক্তি। Bestseller এর কোয়ালিটি হেড জহির ভাই বাৎসরিক কোয়ালিটি মিটিং এ Politeness and Humbleness এর উদাহরণ দিতে গিয়ে এমডি স্যারের একটা ঘটনা প্রায়শই উল্লেখ করেন । জহির ভাই প্রথম যখন জিএমএস এ এসে Bestseller এর কোয়ালিটি হিসেবে ( তখন তিনি Bestseller এর কোয়ালিটি হেড হননি ) এমডি স্যারের সাথে দেখা করতে তার রুমে যান তখন এমডি স্যার নিজের চেয়ার থেকে উঠে এসে করমর্দন করে জহির ভাইয়ের হাত ধরে চেয়ারে বসান। এত বড় একজন শিল্পপতি অথচ কতই না অমায়িক নম্র আচরণ!
এমডি স্যার সকল বিভাগের জিএম দের বলতেন, বিশ্ব বাজারে টেক্সটাইল রিলেটেড কোন লেটেস্ট টেকনোলজির মেশিন আসলে সেটা যেন আমরা জিএমএস এ নিয়ে আসি। এইজন্য জিএমএস এর সকল বিভাগে লেটেস্ট টেকনোলজির সকল মেশিন রয়েছে যেগুলো জিএমএস এর উৎপাদন সক্ষমতা অন্য যেকোন ফ্যাক্টরির চেয়ে অনেকগুণ বাড়িয়েছে । ১৯৯৯ সাল থেকে কঠোর পরিশ্রম ও মেধা দিয়ে আজ পর্যন্ত এমডি স্যার প্রায় ৩০ হাজার লোকের বিশাল কর্মসংস্থানের বিশাল ফ্যাক্টরি বানিয়েছেন। জিএমএস এর এমডি জনাব গোলাম মোস্তফা শুধু একটি নাম নয় তিনি নিজেই ছিলেন বাংলাদেশের জন্য , বাংলাদেশের টেক্সটাইল সেক্টরের জন্য একটা বড় ইন্সটিটিউট। তার ইন্তেকালে বাংলাদেশ হারিয়েছে একজন উজ্জ্বল তারকা শিল্পপতি , জিএমএস হারিয়েছে তার দীর্ঘদিনের প্রিয় আস্থাশীল অভিভাবক । তার পরকালের যাত্রায় ইহকালে আমাদের মাঝে তার যে শূন্যতা সৃষ্টি হল তা পূরণ হওয়ার নয়। 🥲🥲
মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করছি আল্লাহ যেন আমাদের সকলের প্রিয় এমডি স্যার জনাব গোলাম মোস্তফা স্যারের সকল গুনাহখাতা মাফ করে তার কবরের জীবন ও আখেরাতের জীবন সহজ করে দেন , কবরকে জান্নাতের টুকরা বানিয়ে দেন এবং পরকালের জীবনে জান্নাতুল ফেরদাউস দান করেন।আমিন ।
Repontex