Masudur Rahman

Masudur Rahman আসসালামু আলাইকুম। ''মাসুদুর রহমান ব্লগ'' এ আপনাকে স্বাগতম। এই পেজ বিভিন্ন ব্লগিং ভিডিও দেয়া হবে।

শূন্যে লাফাচ্ছে হরিণ... এক লাফেই তেইশ হাত! আর বাঘ যায় এক লাফে বাইশ হাত। তাহলে অংকের হিসেবে বাঘ কখনও হরিণকে ধরার কথা নয়।ক...
13/03/2024

শূন্যে লাফাচ্ছে হরিণ... এক লাফেই তেইশ হাত!

আর বাঘ যায় এক লাফে বাইশ হাত। তাহলে অংকের হিসেবে বাঘ কখনও হরিণকে ধরার কথা নয়।
কিন্তু বাস্তবে ঘটছে উল্টোটা। বাঘের হাতে হরিণকে কাবু হতে হয়। কিন্তু কেন?

কারণ হলো— হরিণ লাফাতে লাফাতে কখনও কখনও পিছন ফিরে তাকায়, বাঘের চাইতে সে কতোটা এগিয়েছে তা বুঝার জন্য।
আর এটাই হয় সর্বনাশের কারণ। পেছন ফিরতে গিয়ে এক লাফ কমলেই তেইশ হাত পিছনে চলে আসে!
Science Panacea
তাই জীবনের চলার পথে কখনো কখনো শত বাধা বিপত্তি থাকলেও পিছনে তাকাতে নেই। দৃঢ় প্রত্যয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়ার নামই হচ্ছে স্বপ্নের কাছাকাছি পৌঁছানো।

C

অবশেষে  কাকু ঠিক করলো 😀 😜
05/03/2024

অবশেষে কাকু ঠিক করলো 😀 😜

এই নৌকা দুটিকে দেখুন। এখান থেকে বের হতে হলে হয় কারো সাহায্য নিতে হবে কিংবা বর্ষার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। সাহায্য অনিশ্চি...
05/03/2024

এই নৌকা দুটিকে দেখুন। এখান থেকে বের হতে হলে হয় কারো সাহায্য নিতে হবে কিংবা বর্ষার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। সাহায্য অনিশ্চিত, বর্ষা নিশ্চিত। কারন বর্ষণের কাজ আল্লাহর এবং সাহায্যের কাজ মানুষের। অতএব, আপনার দুর্দিনে কেও সাহায্য না করলেও আল্লাহর সাহায্য ঠিকই পাবেন, সময়টা শুধু অপেক্ষার।

ধৈর্য্য ধারণ করুন এবং আল্লাহর ওপর ভরসা রাখুন।
আল্লাহ অবশ্যই পাশে থাকবেন।

আল্লাহ,বলেন তোমরা আমাকে ডাকো,আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেবো।
(সূরাঃমুমিন-৬০)

"জেনে রেখো, আল্লাহর সাহায্য অতি নিকটে!"
(সূরা বাকারা, আয়াত: ২১৪)

বিয়েতে মেয়ের বাড়িতে বরযাত্রী নিয়ে গেলাম ২৪৬ জন।মেয়ের বাবা আড়ালে ডেকে বললেন" বাবা,তোমাদের না ১০০ বরযাত্রী আনার কথা ছিলো? ...
04/03/2024

বিয়েতে মেয়ের বাড়িতে বরযাত্রী নিয়ে গেলাম ২৪৬ জন।মেয়ের বাবা আড়ালে ডেকে বললেন

" বাবা,তোমাদের না ১০০ বরযাত্রী আনার কথা ছিলো? "

বললাম " বাবা আমি পরিবারের ছোট ছেলে।সবার শখ বিয়েতে আসবে।কিকরে না বলি বলুন তো? "

" সে নাহয় ঠিক আছে।আগে থেকে বললে ভালো হতো।এখন ওদেরকে একটু বলে দাও খাবারে সামান্য দেরী হবে।সবার আয়োজন করে একসাথে খেতে দিবো "

" বাবা আপনি টেনশন করবেন না।আমি বলে দিবো "

বিয়েতে আত্মীয়-স্বজন বন্ধুবান্ধব কাউকে আনা বাদ রাখিনি।সবাই তো কাছের মানুষ, কাকে রেখে কাকে বাদ দেই!

বিয়ে হয়ে গেলো।বছর ফিরতে স্ত্রীর ডে"লিভা"রি।হসপিটালে আমার রুদ্ধশ্বাস! এ নে"গেটিভ র"ক্তের অভাব।আত্নীয়-স্বজন অনেকের সাথে র"ক্ত মিলে যায়,তারা বাহানা দিয়ে এড়িয়ে গেলো।

রিক্সায় উঠে রওনা হলাম কলেজ গুলোর উদ্দেশ্য।সেখানে র"ক্ত জোগাড় করার সেচ্চাসেবী কমিটির ছেলেমেয়েরা থাকে।ওদের বললে যদি কোনো উপায় হয়!

আমার ছটফটানি দেখে রিক্সাওয়ালা মামা বললো " মামা এতো ঘাবড়াইছেন কেন? কার কি হইছে? "

" র"ক্ত লাগবে।জোগাড় হয়নি, স্ত্রীর ডে"লিভা"রি "

" কি র"ক্ত লাগবো? "

" এ নে"গেটিভ "

" মামা আমার তো এই র"ক্ত। আমার কাছে র"ক্ত নিবেন? "

শেষমেশ রিকশাওয়ালা মামার র"ক্ত দিয়েই স্ত্রীর ডে"লিভা"রি হলো।মাথায় হাত রেখে দীর্ঘশ্বাস ফেলে ভাবলাম, বিয়েতে গোষ্ঠীবদ্ধ হয়ে কাদের নিয়ে গিয়ে খাওয়ালাম?কাদের আপন ভাবতাম?এই বিপদের দিনে আমি একা! কেউ নাই।

রিকশাওয়ালা মামার নাম্বার নিয়ে রাখলাম।বাড়িতে ভালোমন্দ রান্না হলে তাকে ডেকে খাওয়াই।সে আপনজন "

Collect

02/03/2024
বাম পাশ থেকে➪︎১ম জন-টাকা উপার্জন করতে করতে পৃথিবীর সৌন্দর্য দেখতে পাচ্ছে না।।➪︎২য় জন-শুধু শিক্ষা  অর্জন করতে করতে পরিপূর...
01/02/2024

বাম পাশ থেকে
➪︎১ম জন-টাকা উপার্জন করতে করতে পৃথিবীর সৌন্দর্য দেখতে পাচ্ছে না।।
➪︎২য় জন-শুধু শিক্ষা অর্জন করতে করতে পরিপূর্ণ সুন্দরটা দেখতেছে না।।
➪︎৩য় জন-শিক্ষা ও অর্থ উপার্জন দুটা একসাথে করতেছে তাই পৃথিবীর আসল সৌন্দর্য্য উপভোগ করতেছে।।
➪︎৪র্থ জন- শিক্ষা এবং অর্থ কিছু না থাকাতে পুরো পৃথিবী তার জন্য অন্ধের মতো।।
এটাই পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ বাস্তবতা -

13/06/2023

Watch Countdown of Masudur Rahman Vlog

❍ ১ বিঘা = ২০ কাঠা( ৩৩ শতাংশ) ;❍ ১ কাঠা = ৭২০ বর্গফুট (৮০ বর্গ গজ)❍ 1 মাইল = 1.61 কি.মি ;  ❍ 1 কি.মি. = 0..62❍ 1 ইঞ্চি =...
26/05/2023

❍ ১ বিঘা = ২০ কাঠা( ৩৩ শতাংশ) ;
❍ ১ কাঠা = ৭২০ বর্গফুট (৮০ বর্গ গজ)
❍ 1 মাইল = 1.61 কি.মি ;
❍ 1 কি.মি. = 0..62
❍ 1 ইঞ্চি = 2.54 সে..মি ;
❍ 1 মিটার = 39.37 ইঞ্চি
➲ ৬ফুট = ১ ফ্যাদম
➲ ১ বর্গহাত = ১গন্ডা
➲ ২০গন্ডা = ১ছটাক
➲ ১৬ছটাক = ১কাঠা
➲ ২০কাঠা = ১বিঘা
➲ ১৪৪বর্গইঞ্চি = ১বর্গফুট
➲ ৯ বর্গফুট = ১ বর্গগজ
➲ ৪৮৪০বর্গগজ = ১একর
➲ ১০০শতক = ১একর
➲ ৬৪০একর = ১বর্গমাইল
➲ ২৪৭ একর = ১বর্গকিমি
➲ ১০০০০বর্গমি = ১০০এয়র
➲ ১মিটার = ৩৯.৩৭ইঞ্চি
➲ ১২ইঞ্চি = ১ফুট
➲ ৩ফুট = ১গজ
➲ ৭.৯২ ইঞ্চি = ১ লিংক
➲ ২৫ লিংক = ১ রড
➲ ৪ রড = ১মাইল
➲ ১০ চেইন = ১ফার্লং
➲ ৮ ফার্লং = ১মাইল
➲ ৯ বর্গফুট = ১বর্গগজ
➲ ১৬০০বর্গগজ = ১বিঘা
➲ ৮০বর্গগজ = ৭২০বর্গফুট = ১কাঠা
➲ ১মিলিয়ন=১০লক্ষ
➲ ১কোটি=১০মিলিয়ন
➲ ১বিলিয়ন=১০০কোটি
➲ ১ট্রিলিয়ন=১লক্ষ কোটি
➲ ১৭৬০গজ=১মাইল
➲ ১ইঞ্চি=২.৫৪সে.মি.
➲ ১ মাইল=১.৬১ কি.মি.
➲ ০.৬২মাইল = ১ কি.মি.
➲ ১৬ আউন্স = ১পাউন্ড
➲ ২৮ পাউন্ড = ১কোয়ার্টার
➲ ৪কোয়ার্টার = ১ হন্দর
➲ ২০হন্দর = ১বৃটিশ টন
➲ ১০০কিলোগ্রাম = ১কুইন্টাল
➲ ১০০০কিলোগ্রাম = ১মেট্রিক টন
➲ ১পাউন্ড = ০.৪৫৩৬কেজি
➲ ১কেজি = ২.২পাউন্ট=১.০৭সের
➲ ১সের = ০.৯৩কিলোগ্রাম
➲ ৫বর্গগজ = ১ছটাক
➲ ৪০ কেজি =১ মন
|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
❍ ১ পক্ষ = ১৫ দিন;
❍ ১ মাস = ২ পক্ষ
❍ ১ মাস = ৪ সপ্তাহ;
❍ ১ মাস = ৩০ দিন
❍ ১ ঋতু = ২ মাস = ৪ পক্ষ = ৮ সপ্তাহ = ৬০ দিন
❍ ১ বছর = ১২ মাস = ২৪ পক্ষ = ৩৬৫ দিন = ৫২ সপ্তাহ
❍ ১ অধিবর্ষ = ৩৬৬ দিন
❍ ১ যুগ = ১২ বছর ;
❍ ১ অর্ধযুগ = ৬ বছর;
❍ ১ অর্ধ-শতাব্দী = ৫০ বছর ;
❍ ১ শতাব্দী = ১০০ বছর
❍ ১ কুড়ি = ২০টি
❍ ১ রিম = ২০ দিস্তা = ৫০০ তা
❍ ১ ভরি = ১৬ আনা ;
❍ ১ আনা = ৬ রতি
❍ ১ গজ = ৩ ফুট = ২ হাত
❍ ১ কেজি = ১০০০ গ্রাম
❍ ১ কুইন্টাল = ১০০ কেজি
❍ ১ মেট্রিক টন = ১০ কুইন্টাল = ১০০০ কেজি
❍ ১ লিটার = ১০০০ সিসি
❍ ১ মণ = ৪০ সের
❍ 1 কে.জি = 2.20 পাউন্ড ;
❍ 1 সের = 0.93 কিলোগ্রাম
❍ 1 মে. টন = 1000 কিলোগ্রাম ;
❍ 1 পাউন্ড = 16 আউন্স
❍ 1 গজ= 3 ফুট ;
❍ 1 একর = 100 শতক
❍ 1 বর্গ কি.মি.= 247 একর

১ মিলিয়ন(Million) = ১০০০ হাজার= ১০ লক্ষ = ১,০০০,০০০ = ১+৬ শূন্য
১ বিলিয়ন(Billion) = ১০০০ মিলিয়ন = ১০০ কোটি= ১,০০০,০০০,০০০ = ১+৯ শূন্য
১ ট্রিলিয়ন(Trillion) = ১০০০ বিলিয়ন = ১ লক্ষ কোটি

আমার  জন্ম জামালপুর জেলার এক অজপাড়াগাঁয়ে। ১৪ কিলোমিটার দূরের শহরে যেতে হতো  পায়ে হেঁটে বা সাইকেলে চড়ে। পুরো গ্রামের ...
11/04/2023

আমার জন্ম জামালপুর জেলার এক অজপাড়াগাঁয়ে। ১৪ কিলোমিটার দূরের শহরে যেতে হতো পায়ে হেঁটে বা সাইকেলে চড়ে। পুরো গ্রামের মধ্যে একমাত্র মেট্রিক পাস ছিলেন আমার চাচা মফিজউদ্দিন। আমার বাবা একজন অতি দরিদ্র ভূমিহীন কৃষক। আমরা পাঁচ ভাই, তিন বোন। কোনরকমে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটতো আমাদের।

আমার দাদার আর্থিক অবস্থা ছিলো মোটামুটি। কিন্তু তিনি আমার বাবাকে তাঁর বাড়িতে ঠাঁই দেননি। দাদার বাড়ি থেকে খানিকটা দূরে একটা ছনের ঘরে আমরা এতগুলো ভাই-বোন আর বাবা-মা থাকতাম। মা তাঁর বাবার বাড়ি থেকে নানার সম্পত্তির সামান্য অংশ পেয়েছিলেন। তাতে তিন বিঘা জমি কেনা হয়। চাষাবাদের জন্য অনুপযুক্ত ওই জমিতে বহু কষ্টে বাবা যা ফলাতেন, তাতে বছরে ৫/৬ মাসের খাবার জুটতো। দারিদ্র্য কী জিনিস, তা আমি মর্মে মর্মে উপলব্ধি করেছি- খাবার নেই, পরনের কাপড় নেই; কী এক অবস্থা !

আমার মা সামান্য লেখাপড়া জানতেন। তাঁর কাছেই আমার পড়াশোনার হাতেখড়ি। তারপর বাড়ির পাশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হই। কিন্তু আমার পরিবারে এতটাই অভাব যে, আমি যখন তৃতীয় শ্রেণীতে উঠলাম, তখন আর পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ থাকলো না। বড় ভাই আরো আগে স্কুল ছেড়ে কাজে ঢুকেছেন। আমাকেও লেখাপড়া ছেড়ে রোজগারের পথে নামতে হলো।

আমাদের একটা গাভী আর কয়েকটা খাসি ছিল। আমি সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ওগুলো মাঠে চরাতাম। বিকেল বেলা গাভীর দুধ নিয়ে বাজারে গিয়ে বিক্রি করতাম। এভাবে দুই ভাই মিলে যা আয় করতাম, তাতে কোনরকমে দিন কাটছিল। কিছুদিন চলার পর দুধ বিক্রির আয় থেকে সঞ্চিত আট টাকা দিয়ে আমি পান-বিড়ির দোকান দেই। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দোকানে বসতাম। পড়াশোনা তো বন্ধই, আদৌ করবো- সেই স্বপ্নও ছিল না !

এক বিকেলে বড় ভাই বললেন, আজ স্কুল মাঠে নাটক হবে। স্পষ্ট মনে আছে, তখন আমার গায়ে দেওয়ার মতো কোন জামা নেই। খালি গা আর লুঙ্গি পরে আমি ভাইয়ের সঙ্গে নাটক দেখতে চলেছি। স্কুলে পৌঁছে আমি তো বিস্ময়ে হতবাক ! চারদিকে এত আনন্দময় চমৎকার পরিবেশ ! আমার মনে হলো, আমিও তো আর সবার মতোই হতে পারতাম। সিদ্ধান্ত নিলাম, আমাকে আবার স্কুলে ফিরে আসতে হবে।

নাটক দেখে বাড়ি ফেরার পথে বড় ভাইকে বললাম, আমি কি আবার স্কুলে ফিরে আসতে পারি না ? আমার বলার ভঙ্গি বা করুণ চাহনি দেখেই হোক কিংবা অন্য কোন কারণেই হোক কথাটা ভাইয়ের মনে ধরলো। তিনি বললেন, ঠিক আছে কাল হেডস্যারের সঙ্গে আলাপ করবো।

পরদিন দুই ভাই আবার স্কুলে গেলাম। বড় ভাই আমাকে হেডস্যারের রুমের বাইরে দাঁড় করিয়ে রেখে ভিতরে গেলেন। আমি বাইরে দাঁড়িয়ে স্পষ্ট শুনছি, ভাই বলছেন আমাকে যেন বার্ষিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগটুকু দেওয়া হয়। কিন্তু হেডস্যার অবজ্ঞার ভঙ্গিতে বললেন, সবাইকে দিয়ে কি লেখাপড়া হয় ! স্যারের কথা শুনে আমার মাথা নিচু হয়ে গেল। যতখানি আশা নিয়ে স্কুলে গিয়েছিলাম, স্যারের এক কথাতেই সব ধুলিস্মাৎ হয়ে গেল। তবু বড় ভাই অনেক পীড়াপীড়ি করে আমার পরীক্ষা দেওয়ার অনুমতি যোগাড় করলেন। পরীক্ষার তখন আর মাত্র তিন মাস বাকি। বাড়ি ফিরে মাকে বললাম, আমাকে তিন মাসের ছুটি দিতে হবে। আমি আর এখানে থাকবো না। কারণ ঘরে খাবার নেই, পরনে কাপড় নেই- আমার কোন বইও নেই, কিন্তু আমাকে পরীক্ষায় পাস করতে হবে।

মা বললেন, কোথায় যাবি ? বললাম, আমার এককালের সহপাঠী এবং এখন ক্লাসের ফার্স্টবয় মোজাম্মেলের বাড়িতে যাবো। ওর মায়ের সঙ্গে আমার পরিচয় আছে। যে ক’দিন কথা বলেছি, তাতে করে খুব ভালো মানুষ বলে মনে হয়েছে। আমার বিশ্বাস, আমাকে উনি ফিরিয়ে দিতে পারবেন না।

দুরু দুরু মনে মোজাম্মেলের বাড়ি গেলাম। সবকিছু খুলে বলতেই খালাম্মা সানন্দে রাজি হলেন। আমার খাবার আর আশ্রয় জুটলো; শুরু হলো নতুন জীবন। নতুন করে পড়াশোনা শুরু করলাম। প্রতিক্ষণেই হেডস্যারের সেই অবজ্ঞাসূচক কথা মনে পড়ে যায়, জেদ কাজ করে মনে; আরো ভালো করে পড়াশোনা করি।

যথাসময়ে পরীক্ষা শুরু হলো। আমি এক-একটি পরীক্ষা শেষ করছি আর ক্রমেই যেন উজ্জীবিত হচ্ছি। আমার আত্মবিশ্বাসও বেড়ে যাচ্ছে। ফল প্রকাশের দিন আমি স্কুলে গিয়ে প্রথম সারিতে বসলাম। হেডস্যার ফলাফল নিয়ে এলেন। আমি লক্ষ্য করলাম, পড়তে গিয়ে তিনি কেমন যেন দ্বিধান্বিত। আড়চোখে আমার দিকে তাকাচ্ছেন। তারপর ফল ঘোষণা করলেন। আমি প্রথম হয়েছি ! খবর শুনে বড় ভাই আনন্দে কেঁদে ফেললেন। শুধু আমি নির্বিকার- যেন এটাই হওয়ার কথা ছিল।

বাড়ি ফেরার পথে সে এক অভূতপূর্ব দৃশ্য। আমি আর আমার ভাই গর্বিত ভঙ্গিতে হেঁটে আসছি। আর পিছনে এক দল ছেলেমেয়ে আমাকে নিয়ে হৈ চৈ করছে, স্লোগান দিচ্ছে। সারা গাঁয়ে সাড়া পড়ে গেল ! আমার নিরক্ষর বাবা, যাঁর কাছে ফার্স্ট আর লাস্ট একই কথা- তিনিও আনন্দে আত্মহারা; শুধু এইটুকু বুঝলেন যে, ছেলে বিশেষ কিছু একটা করেছে। যখন শুনলেন আমি ওপরের কাসে উঠেছি, নতুন বই লাগবে, পরদিনই ঘরের খাসিটা হাটে নিয়ে গিয়ে ১২ টাকায় বিক্রি করে দিলেন। তারপর আমাকে সঙ্গে নিয়ে জামালপুর গেলেন। সেখানকার নবনূর লাইব্রেরি থেকে নতুন বই কিনলাম।

আমার জীবনযাত্রা এখন সম্পূর্ণ বদলে গেছে। আমি রোজ স্কুলে যাই। অবসরে সংসারের কাজ করি। ইতোমধ্যে স্যারদের সুনজরে পড়ে গেছি। ফয়েজ মৌলভী স্যার আমাকে তাঁর সন্তানের মতো দেখাশুনা করতে লাগলেন। সবার আদর, যত্ন, স্নেহে আমি ফার্স্ট হয়েই পঞ্চম শ্রেণীতে উঠলাম। এতদিনে গ্রামের একমাত্র মেট্রিক পাস মফিজউদ্দিন চাচা আমার খোঁজ নিলেন। তাঁর বাড়িতে আমার আশ্রয় জুটলো।

প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে আমি দিঘপাইত জুনিয়র হাইস্কুলে ভর্তি হই। চাচা ওই স্কুলের শিক্ষক। অন্য শিক্ষকরাও আমার সংগ্রামের কথা জানতেন। তাই সবার বাড়তি আদর-ভালোবাসা পেতাম।

আমি যখন সপ্তম শ্রেণী পেরিয়ে অষ্টম শ্রেণীতে উঠবো, তখন চাচা একদিন কোত্থেকে যেন একটা বিজ্ঞাপন কেটে নিয়ে এসে আমাকে দেখালেন। ওইটা ছিল ক্যাডেট কলেজে ভর্তির বিজ্ঞাপন। যথাসময়ে ফরম পুরণ করে পাঠালাম। এখানে বলা দরকার, আমার নাম ছিল আতাউর রহমান। কিন্তু ক্যাডেট কলেজের ভর্তি ফরমে স্কুলের হেডস্যার আমার নাম আতিউর রহমান লিখে চাচাকে বলেছিলেন, এই ছেলে একদিন অনেক বড় কিছু হবে। দেশে অনেক আতাউর আছে। ওর নামটা একটু আলাদা হওয়া দরকার; তাই আতিউর করে দিলাম।

আমি রাত জেগে পড়াশোনা করে প্রস্তুতি নিলাম। নির্ধারিত দিনে চাচার সঙ্গে পরীক্ষা দিতে রওনা হলাম। ওই আমার জীবনে প্রথম ময়মনসিংহ যাওয়া। গিয়ে সবকিছু দেখে তো চক্ষু চড়কগাছ ! এত এত ছেলের মধ্যে আমিই কেবল পায়জামা আর স্পঞ্জ পরে এসেছি ! আমার মনে হলো, না আসাটাই ভালো ছিল। অহেতুক কষ্ট করলাম। যাই হোক পরীক্ষা দিলাম; ভাবলাম হবে না। কিন্তু দুই মাস পর চিঠি পেলাম, আমি নির্বাচিত হয়েছি। এখন চূড়ান্ত পরীক্ষার জন্য ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে যেতে হবে।

সবাই খুব খুশি; কেবল আমিই হতাশ। আমার একটা প্যান্ট নেই, যেটা পরে যাবো। শেষে স্কুলের কেরানি কানাই লাল বিশ্বাসের ফুলপ্যান্টটা ধার করলাম। আর একটা শার্ট যোগাড় হলো। আমি আর চাচা অচেনা ঢাকার উদ্দেশে রওনা হলাম। চাচা শিখিয়ে দিলেন, মৌখিক পরীক্ষা দিতে গিয়ে আমি যেন দরজার কাছে দাঁড়িয়ে বলি: ম্যা আই কাম ইন স্যার ? ঠিকমতোই বললাম। তবে এত উচ্চস্বরে বললাম যে, উপস্থিত সবাই হো হো করে হেসে উঠলো।

পরীক্ষকদের একজন মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজের অধ্যক্ষ এম. ডাব্লিউ. পিট আমাকে আপাদমস্তক নিরীক্ষণ করে সবকিছু আঁচ করে ফেললেন। পরম স্নেহে তিনি আমাকে বসালেন। মুহূর্তের মধ্যে তিনি আমার খুব আপন হয়ে গেলেন। আমার মনে হলো, তিনি থাকলে আমার কোন ভয় নেই। পিট স্যার আমার লিখিত পরীক্ষার খাতায় চোখ বুলিয়ে নিলেন। তারপর অন্য পরীক্ষকদের সঙ্গে ইংরেজিতে কী-সব আলাপ করলেন। আমি সবটা না বুঝলেও আঁচ করতে পারলাম যে, আমাকে তাঁদের পছন্দ হয়েছে। তবে তাঁরা কিছুই বললেন না। পরদিন ঢাকা শহর ঘুরে দেখে বাড়ি ফিরে এলাম। যথারীতি পড়াশোনায় মনোনিবেশ করলাম। কারণ আমি ধরেই নিয়েছি, আমার চান্স হবে না।

হঠাৎ তিন মাস পর চিঠি এলো। আমি চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হয়েছি। মাসে ১৫০ টাকা বেতন লাগবে। এর মধ্যে ১০০ টাকা বৃত্তি দেওয়া হবে, বাকি ৫০ টাকা আমার পরিবারকে যোগান দিতে হবে। চিঠি পড়ে মন ভেঙে গেল। যেখানে আমার পরিবারের তিনবেলা খাওয়ার নিশ্চয়তা নেই, আমি চাচার বাড়িতে মানুষ হচ্ছি, সেখানে প্রতিমাসে ৫০ টাকা বেতন যোগানোর কথা চিন্তাও করা যায় না !

এই যখন অবস্থা, তখন প্রথমবারের মতো আমার দাদা সরব হলেন। এত বছর পর নাতির (আমার) খোঁজ নিলেন। আমাকে অন্য চাচাদের কাছে নিয়ে গিয়ে বললেন, তোমরা থাকতে নাতি আমার এত ভালো সুযোগ পেয়েও পড়তে পারবে না ? কিন্তু তাঁদের অবস্থাও খুব বেশি ভালো ছিল না। তাঁরা বললেন, একবার না হয় ৫০ টাকা যোগাড় করে দেবো, কিন্তু প্রতি মাসে তো সম্ভব নয়। দাদাও বিষয়টা বুঝলেন।

আমি আর কোন আশার আলো দেখতে না পেয়ে সেই ফয়েজ মৌলভী স্যারের কাছে গেলাম। তিনি বললেন, আমি থাকতে কোন চিন্তা করবে না। পরদিন আরো দুইজন সহকর্মী আর আমাকে নিয়ে তিনি হাটে গেলেন। সেখানে গামছা পেতে দোকানে দোকানে ঘুরলেন। সবাইকে বিস্তারিত বলে সাহায্য চাইলেন। সবাই সাধ্য মতো আট আনা, চার আনা, এক টাকা, দুই টাকা দিলেন। সব মিলিয়ে ১৫০ টাকা হলো। আর চাচারা দিলেন ৫০ টাকা। এই সামান্য টাকা সম্বল করে আমি মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজে ভর্তি হলাম। যাতায়াত খরচ বাদ দিয়ে আমি ১৫০ টাকায় তিন মাসের বেতন পরিশোধ করলাম। শুরু হলো অন্য এক জীবন।

প্রথম দিনেই এম. ডাব্লিউ. পিট স্যার আমাকে দেখতে এলেন। আমি সবকিছু খুলে বললাম। আরো জানালাম যে, যেহেতু আমার আর বেতন দেওয়ার সামর্থ্য নেই, তাই তিন মাস পর ক্যাডেট কলেজ ছেড়ে চলে যেতে হবে। সব শুনে স্যার আমার বিষয়টা বোর্ড মিটিঙে তুললেন এবং পুরো ১৫০ টাকাই বৃত্তির ব্যবস্থা করে দিলেন। সেই থেকে আমাকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। এস.এস.সি পরীক্ষায় ঢাকা বোর্ডে পঞ্চম স্থান অধিকার করলাম এবং আরো অনেক সাফল্যের মুকুট যোগ হলো।

আমার জীবনটা সাধারণ মানুষের অনুদানে ভরপুর। পরবর্তীকালে আমি আমার এলাকায় স্কুল করেছি, কলেজ করেছি। যখন যাকে যতটা পারি, সাধ্যমতো সাহায্য সহযোগিতাও করি। কিন্তু সেই যে হাট থেকে তোলা ১৫০ টাকা; সেই ঋণ আজও শোধ হয়নি। আমার সমগ্র জীবন উৎসর্গ করলেও সেই ঋণ শোধ হবে না!

(অর্থনীতিবিদ ড. আতিউর রহমানের নিজের ভাষায় তাঁর জীবন কথা)

দলিল সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য।
06/02/2023

দলিল সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য।

07/12/2021
17/10/2019

Address

Dhaka

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Masudur Rahman posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Masudur Rahman:

Videos

Share