Alone Boy Jahid

Alone Boy Jahid বিভিন্ন প্রকার শিক্ষনীয়, খেলা, বিভিন্ন তথ্য ও বিনোদন ভিডিও পেতে পেইজটি ফলো করে রাখুন। 📚📙⚽🏏🙆‍♀️

14/01/2024

ফাজলামির একটা লিমিট থাকা
দরকার..!😒
- ফেসবুকে জিলাপি রাখছিলাম খাইছে
কেডা..!😤😡

09/01/2024

সময় কারো জন্য থেমে থাকে না🕓

 #হৃদয়হরণী #পর্ব:৫০ #তানিশা সুলতানা   সূর্য মামা মুখ লুকিয়ে আছে। ডিসেম্বরের শুরু। কনকনে শীত নেই তবে হালকা শীত পড়েছে। সূর...
05/12/2023

#হৃদয়হরণী
#পর্ব:৫০
#তানিশা সুলতানা


সূর্য মামা মুখ লুকিয়ে আছে। ডিসেম্বরের শুরু। কনকনে শীত নেই তবে হালকা শীত পড়েছে। সূর্যের আলো নেই বিধায় শীতটা অনুভব করা যাচ্ছে।
বেলা বারোটা ছুঁই ছুঁই। তবুও যেনো মনে হচ্ছে ভোর সাড়ে পাঁচটা।
ছোঁয়ার ঘুম ভেঙে গিয়েছে অনেক আগেই। সাদি ঘুমিয়ে আছে ছোঁয়ার ছোট্ট বুকে। দুই হাতে গভীর আলিঙ্গনে আটকে রেখেছে তাকে। স্বামী রূপী প্রেমিকের ঘুম ভেঙে যাবে বিধায় ছোঁয়া একটু নরছে না। তবে তার অস্বস্তি হচ্ছে। খোঁচা খোঁচা দাঁড়ি এবং সাদির ঘন নিঃশ্বাস তার বুক কাঁপিয়ে তুলছে।
গতকাল রাতের কথা চিন্তা করতেই ছোঁয়া শুকনো ঢোক গিলে। নতুন এক সাদিকে আবিষ্কার করেছে সে। পুরুষ মানুষের দুটো রূপ থাকে? বস্রহীন সাদিকে কল্পনা করতেই বুক কেঁপে ওঠে। সাদির ঘনঘন নিশ্বাস যেনো এখনো ছোঁয়ার কানে বাজছে। আকুলতার সেই কন্ঠস্বর ফিসফিস করে বলা কিছু কথা এবং উম্মাদনা। সব মিলিয়ে পাগল সাদিকে দেখেছে ছোঁয়া।

জিভ দ্বারা ওষ্ঠদ্বয় ভিজিয়ে নেয় ছোঁয়া। ছোট্ট হাত জোড়া চলে যায় সাদির মাথায়। ঘন চুলের ভাজে হাত চালাতে থাকে।
"পঁচা পুরুষ। আপনি অশ্লীল হয়ে যাচ্ছেন। সেটা কি জানেন?
ফিসফিস করে বলে ছোঁয়া।
সাদি শুনতে পায় না। কারণ সে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন।

" আপনার দেওয়া সব ব্যাথা সয্য করে নিবো। যতই অশ্লীল হন মেনে নিবো। শুধু আমার হয়ে থাকেন। আপনার পাগলামির সঙ্গী শুধু আমাকেই করিয়েন।
তাতেই খুশি আমি।

কুদ্দুসকে দ্রুত আনতে হবে। কুদ্দুস চলে আসলে আপনাকে হারানোর ভয় পাবো না আর। আমার টিম স্ট্রং থাকবে।

ছোঁয়ার এসব ভাবনার মাঝে সাদি নরেচরে ওঠে। ছোঁয়া চোখ বন্ধ করে নেয়। খুব জানা আছে এখন চোখ খোলা দেখলে আবারও দুষ্টুমি শুরু করবে। লোকটার হুটহাট এ্যাটার্ক সয্য করতে ছোঁয়া বেশ হিমশিম খেয়ে যায়।

সাদি চোখ খুলে দেখে তার প্রেয়সী চোখ পিটপিট করছে। ঘুমের ভান ধরছে বেশ বুঝতে পারে সাদি। মুচকি হাসে সাদি।
একট জ্বালানোর ইচ্ছে জাগে মনে। আর তখনই মুঠো ফোনটা কর্কশ শব্দে বেজে ওঠে। বিরক্তিতে চোখ মুখ কুঁচকে ফেলে সাদি।
ছোঁয়ার কপালে আলতো করে ঠোঁট ছুঁইয়ে উঠে পড়ে।
বালিশের তলায় থেকে ফোনটা বের করে। স্কিনে মিহি নামটা ভেসে ওঠে।
সাদি বিরবির করে বলে "মিহি কেনো কল করছে"
নামটা ছোঁয়ার কানে পৌঁছায়। ছোঁয়া এক লাফে উঠে বসে। ছো মেরে সাদির হাত থেকে ফোনটা নিয়ে রিসিভ করে কানে দেয়। সাদি গোলগোল চোখে তাকিয়ে থাকে।

ওপাশের মানুষের কথা না শুনেই ছোঁয়া বলে ওঠে
"সরি ফোনের মালিক এখন বউয়ের সাথে রোমাঞ্চ করতে ব্যস্ত।
এতো সকালে কেউ কাউকে কল করে? মেনার্স জানেন না? ছেলেদের নাম্বার দেখলেই কল করতে ইচ্ছে করে? চাপকে একদম গাল ফাঁটিয়ে দিবো আমার বরকে কল করলে।

ওপাশের মানুষটা কিছু বলতে যায় ছোঁয়া তাকে থামিয়ে বলে
" কথা বললে একদম জিভ টেনে ছিঁড়ে দিবো। আমার বরের সাথে চান্স দিতে এসে লাভ নাই। বাবা হতে চলেছে সে। আপনি ফুপি হতে চলেছেন। ভাগিনার বাবার দিকে নজর দিলে আমার কুদ্দুস আপনার চোখ তুলে নিবে। ওয়ার্নিং দিয়ে দিলাম আপনাকে।

এক থালা কথা বলে ছোঁয়া কল কেটে দেয়। এবং জোরে জোরে শ্বাস টানতে থাকে। হুমকি দিতে দিতে হাঁপিয়ে গিয়েছে সে।
সাদি গালে হাত দিয়ে ছোঁয়াকেই দেখছিলো।

"পাঁচ ঘন্টাও তো হলো না এর মধ্যেই প্রেগন্যান্ট? তোমার কুদ্দুস তো দেখি রকেটের গতিতে আসছে।

খানিকটা মজা করেই বলে সাদি।
ছোঁয়া ভেংচি কাটে।
" ঢপ মারলাম। যাতে আপনার মিহি ভয় পায়।

হাসি পেলেও সাদি হাসে না। সিরিয়াস ভঙিতে মাথা নারায়।
হুট করে ছোঁয়ার মনে পড়ে।
"সাদু বলেন তো। আমাদের কুদ্দুস কেমন হবে?

সাদি হাই তুলে বলে
"আধপাগল মায়ের কুদ্দুস ফুল পাগল হবে। আর কেমন হবে?
ছোঁয়া সাদির চুল টেনে দেয়।
" একদম পাগল হবে না। আমাদের কুদ্দুস হবে কমলা লেবুর রসগোল্লা।
কি করে বলবো?

সাদি নিজের চুলে হাত বুলাতে বুলাতে মাথা নারায়।
"আমি ধলা আপনিও ধলা। আপনি করলা আমি প্রচুর মিষ্টি। তো তেঁতো আর মিষ্টি মিলে, ধলা আর ধলা মিলে মোটমাট হয়ে যাবে কমলা কালার হালকা মিষ্টি। আর কমলা লেবুর রসগোল্লা তো অতিরিক্ত মিষ্টি থাকে না। তো আমাদের কুদ্দুস কমলা লেবুর রসগোল্লা হবে।

সাদি পরপর কয়েকবার ঢোক গিলে। ফোঁস করে শ্বাসও টেনে ফেলে এবং হতাশার নিঃশ্বাসও ফেলে। মনে মনে আফসোসও করে নিজের জন্য।
নেহাৎ আল্লাহ তাকে অসীম ধৈর্যশীল বানিয়েছিলো। নাহলে পাগল হয়ে এতোদিনে পাগলা গারদে চলে যেতে হতো।

____

সেলিম মনে মনে বেশ চটে ছিলো এতখন। কিন্তু এখন সে ভয় পেয়ে আছে। ছোঁয়ার জন্মদিন উপলক্ষে বাড়িতে হালকা আয়োজন চলছে। গরুর মাংসর ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রতি বছর সেলিম সবার আগে Wish করে মেয়েকে। কিন্তু এই বছর বেয়াদব ছেলে তার মেয়েটাকে নিয়ে ভ্যানিশ হয়ে গিয়েছে। এবং এই যে দুপুর গড়িয়ে যাচ্ছে এখনো ফেরার নাম নেই। চটবে না?
মেয়েটা তো তারই।
সাদির নামে এক চোট নালিশ দিয়ে ফেলেছে সাজ্জাদের কাছে।
আরেক চোট নালিশ দিতে যাবে তখনই হাসি হাসি মুখ নিয়ে রাজিয়া বাড়িতে ঢুকে পড়ে।
সেলিম পরপর কয়েকবার শুকনো ঢোক গিলে। এই মহিলা এখানে কি করছে?
এখন সাদি চলে আসলে তাকে সিল পাঁটায় তুলে পিষে ফেলবে।
বুরো বয়সে বোধয় তাকে বউ ছাড়া হতেই হবে। তার ডিভোর্সটা কেউ আটকাতে পারবে না।

"ভালো আছো সেলিম?

নাজমা তখনই খুনতি হাতে বেরিয়ে আসে। হাতা কাটা ব্লাউজ এবং ফিনফিনে পাতলা শাড়ি পড়ুয়া এক মহিলাকে দেখে কপালে ভাজ পড়ে নাজমার। কে এই মহিলা?
তখনই পেছন থেকে সাদি বলে ওঠে
" শশুড় মশাই গার্লফ্রেন্ড নিয়ে বাড়িতে চলে এসেছেন? লুকিয়ে বিয়ে করে ফেলেন নি তো?

চলবে

 #হৃদয়হরণী #পর্ব:৪৯ #তানিশা সুলতানা    🅵︎🅾︎🅻︎🅻︎🅾︎🆆︎ ☞︎︎︎➪ Love Dairy ছোঁয়ার মেজাজ তুরঙ্গে। শয়তান বেডা এতো অত্যাচার কেনো ...
05/12/2023

#হৃদয়হরণী
#পর্ব:৪৯
#তানিশা সুলতানা


🅵︎🅾︎🅻︎🅻︎🅾︎🆆︎ ☞︎︎︎➪ Love Dairy

ছোঁয়ার মেজাজ তুরঙ্গে। শয়তান বেডা এতো অত্যাচার কেনো করছে? এই যে কনকনে ঠান্ডা পানি দিয়ে গোছল করিয়েছে।
যাক সেখানে দুঃখ নেই। এমনিতেও কাল গোছল করে নি। আজকে করতেই হতো। একটুখানি উপকারই করেছে। কিন্তু দুঃখটা এখানেই। এখনো কম্বল চাপা দিয়ে ঘুমতে দিচ্ছে না। বসিয়ে রেখেছে। এবং বলেছে কিছুখন অপেক্ষা করতে। এটা কি শাস্তি নয়? সারা রাত জ্বালাতন করে কি মানুষটার মন ভরে নি?
নেহাত ছোঁয়া পণ করেছে কথা বলবে না। নাহলে এতখনে ইচ্ছা মতো কিছু কথা শুনিয়ে দিতো।

সাদি গায়ে শার্ট চাপিয়ে চুলগুলো ঠিকঠাক করে ছোঁয়ার দিকে তাকায়। ছোঁয়া তাকিয়েই ছিলো বিধায় চোখাচোখি হয়ে যায়। এবং ছোঁয়া ভেংচি কেটে চোখ ফিরিয়ে নেয়। সাদি হাসে। বউয়ের রাগ বুঝতে পারছে খুব।

"ঘুমিও না। জাস্ট পাঁচ মিনিট আমি আসছি।

বলেই সাদি দরজার দিকে এগিয়ে যায়। দরজা খুলে দিতেই হুরমুরিয়ে একেক পর একে ফ্লোরে গড়াগড়ি খেয়ে পড়ে যায়। প্রথমে সামির পড়েছে তারওপর আশিক তারপর ইরা। শিপন আর রিমি পড়তে পড়তে নিজেদের সামলে নেয়।
ভাজ পড়ে সাদির কপালে।

সামির চিৎকার করে ওঠে। বেচারা ব্যাথাও পেয়েছে বেশ।

" শা*লা বউ পাইয়া হুশজ্ঞান হারাইছে। কোমরটা আমার ভেঙেই গেছে। এখন বিয়া করমু কেমনে? বউরে ভালোবাসমু কেমনে? বউয়ের সাথে রোমাঞ্চ করমু কেমনে?
সব থেকে বড় কথা এই ভাঙা কোমর ওয়ালা সাইম্যার সাথে মেয়ে দিবে কে?

কোমর ধরে আহাজারি করতে করতে বলতে থাকে। বাকিরা উঠে পড়েছে।
ইরাও বেশ চটে গেছে সামিরের ওপর। একটা লাথি মারে সামিরকে।
"শালা সকাল সকাল ঘুম থেকে ডেকে তুললি সিক্রেট দেখাবি বলে। আর এখন।

ছোঁয়া নিরব দর্শকের মতো দেখে যাচ্ছে।
সাদি দীর্ঘ শ্বাস ফেলে
" দুই মিনিটের মধ্যে সব কয়টা বের হবি এখান থেকে।

সামির এক লাফে দাঁড়িয়ে যায়। মুহুর্তেই তার ব্যাথা গায়েব।
"বিড়াল মেরেছিস মামা? কেমন মজা রে? শান্তি লাগে?

তখনই ছোঁয়া বলে ওঠে
" বিড়াল মারে নি কিন্তু আমাকে আধমরা করেছে। এই সকালে ঠান্ডা পানিতে চুবিয়েছে জানো? আর রাতে তো

ছোঁয়া বাকিটা শেষ করার আগেই সাদি ধমকে ওঠে
"চুপচাপ বসে থাকো। একটা কথা বললে মাথায় তুলে আছাড় মারবো ইডিয়েট।

ছোঁয়া গাল ফুলিয়ে ফেলে। এতো অত্যাচার করে এখন ধমক দেওয়া হচ্ছে?
রিমি বলে ওঠে
"ছোঁয়া পরে বলিও আমায়। কেমন?

সামির ঘোর আপত্তি এতে
" তোরে একা কেন কইবো? আমরা কি রাজাকার? ভুলে যাস না আমি সাদি চাচার জানের দোস্ত। তার বাসরের কাহিনি শোনার পুরোপুরি অধিকার আছে আমার।
ছোঁয়া মামনি তুই আমারে ক

সামির ছোঁয়ার দিকে এগোতে নেয়। সাদি সামিরের কলার টেনে ধরে
"দুই মিনিটের মধ্যে রুম থেকে বের হলে ঐশির সাথে ডেট করার ব্যবস্থা করে দিবে।

ব্যাসস সামির ঠান্ডা। পকেট থেকে ঔষধের প্যাকেট বের করে সাদির হাতে দেয়।

" তোদের কি লজ্জা শরম নেই? বাবার বয়সী বন্ধু বিয়ে করে বাসর করেছে। তোরা দল বেঁধে এসে ডিস্টার্ব করছিস? আমি তো লজ্জায় পুরো লাল হয়ে যাচ্ছি। বের হ সবাই। এক মাসের মধ্যে ওদের ডিস্টার্ব করবি না। প্রাইভেসি দিবি। শিক্ষা দিক্ষা কিচ্ছু নেই তোদের।
গেট আউট হ।

সাদি মুচকি হাসে। বিরবির করে বলে "ড্রামাবাজ একটা"
সামির সবাইকে টেনে বের করে রুম থেকে তারপর নিজেও বের হয়ে যায়। সাদি পূনরায় দরজা বন্ধ করে দেয়। এবং এগিয়ে আসে ছোঁয়ার দিকে। গ্লাসে পানি ঢেলে ছোঁয়ার পাশে বসে।
"ঔষধ খেয়ে নাও

ছোঁয়া জবাব দেয় না। মুখ ঘুরিয়ে বসে থাকে।

" ঔষধ কি খাবে না কি আবার শুরু করবো?

ছোঁয়া ছোঁ মেরে সাদির হাত থেকে ঔষধের পাতা নিয়ে নেয়।

"কিসের ঔষধ?

" ব্যাথার।

"দুটো এখানে।

" দুটোই ব্যাথার।

"পিল তো নেই?

"এতো কথা কেনো?

ছোঁয়া ভেংচি কেটে বলে
" আমি ওইসব খাবো না।

"কিন্তু কেনো?

" বললাম না আমার বেবি দরকার।

সাদি কপাল চাপকায়। কোন পূর্ণের ফলে এমন বউ পেয়েছিলো?
"দেখো ছোঁয়া। তুমি এখনো ছোট। আরও কিছুদিন সময় লাগবে আমাদের।

"কে বলেছে আমি ছোট? আঠারো আমার। দাদির বাচ্চা হয়েছিলো চোদ্দ বছরে। সেই হিসেবে আমার বেবি হওয়ার বয়স পেরিয়ে গিয়েছে।

সাদি দীর্ঘ শ্বাস ফেলে।
ব্যাথার ঔষধ ছোঁয়ার হাত থেকে নিয়ে।
" এটা পিল ছিলো।

"ওটা ফেলে দিন। আমি খাবো না। এটা খাবো।

সাদি মাথা নারায়। ছোঁয়া পিলটা খেয়ে নেয়। স্বস্তি নিঃশ্বাস ফেলে সাদি। তানিশা সুলতানা
ছোঁয়ার থেকে গ্লাস নিয়ে টেবিলে রেখে লাইট অফ করে দেয়। এবং ছোঁয়ার পাশে এসে বসে।

" চলো এবার ঘুমিয়ে পড়ি।

ছোঁয়া সাদির দিকে পেছন ফিরে শুয়ে পড়ে।
সাদি পেছন থেকে জাপ্টে জড়িয়ে ধরে ছোঁয়াকে। গলায় মুখ গুঁজে।
"এতো রাগ করতে নেই বউ। তোমারই তো বর তাই না?

চলবে

 #আমি_ফাইসা_গেছি(০২)মুমতাহিনা জান্নাত মৌ কুশান শরবত খাওয়া বাদ দিয়ে শুধু এদিক ওদিক তাকাতে লাগলো।সে সবাইকে কিভাবে শরবত খেত...
03/12/2023

#আমি_ফাইসা_গেছি(০২)
মুমতাহিনা জান্নাত মৌ

কুশান শরবত খাওয়া বাদ দিয়ে শুধু এদিক ওদিক তাকাতে লাগলো।সে সবাইকে কিভাবে শরবত খেতে বারণ করবে সেটাই ভাবছে।
কিন্তু মিসেস চামেলি বেগম কুশানকে এদিক ওদিক তাকানো দেখে বললো,

বাবা খাও শরবত টা।এভাবে এদিক ওদিক কি দেখছো?লজ্জা পাওয়ার কোনো কারণ নাই।

কুশান সেই কথা শুনে বললো,
আসলে আম্মু আমি শরবত বেশি একটা পছন্দ করি না।

ইরা,মিরা,লিরা কুশানের মুখে আম্মু ডাক শুনে বললো,
আম্মু?কে তোর আম্মু হয়?বিয়ে না হতেই আম্মু ডাকছিস?

কুশান তখন চামেলি বেগমের দিকে তাকিয়ে বললো, সরি সরি। ভুল করে মুখ থেকে বের হয়ে গেছে।আসলে আন্টি আমি শরবত পছন্দ করি না।

চামেলি বেগম তখন বললো ঠিক আছে বাবা, কোনো প্রবলেম নাই।তাহলে তুমি অন্য কিছু খাও।এই বলে মিসেস চামেলি বেগম কুশানের হাতে এক বাটি নুডলস তুলে দিলো।

কুশান বাটিটা হাতে নিয়ে নুডুলস গুলো শুধু চামুচ দিয়ে নাড়াচাড়া করতে লাগলো।বাট তার মুখে দেওয়ার সাহস হচ্ছে না কিছুতেই।কে জানে নুডলসের মধ্যেও আবার তোরা পেট খারাপের ঔষধ দিয়েছে কিনা?

এদিকে ইরা, মিরা, লিরা শরবতের গ্লাস হাতে নিয়ে আবার সেগুলো রেখেও দিয়েছে চুপচাপ ।তারা তিনজন ফুসুরফুসুর করে বলছে,
আমরা কিন্তু কেউ কিছুই খাবো না।কে জানে কোন পরিবেশে খাবারগুলো তৈরি করেছে এরা?এসব অস্বাস্থ্যকর খাবার আমাদের হজম হবে না।তাছাড়া মেয়েটার মতিগতি বেশি একটা সুবিধার মনে হলো না।যদি আমাদেরকে বশ করার ঔষধ মিশিয়ে দেয় খাবারে?

মিঃ গোলাপ সাহেব লক্ষ্য করলেন ব্যাপারটা।তখন তিনি ইরা,মিরা,আর লিরার সামনে গিয়ে বললেন,
মা! শরবত টা একটু টেস্ট করো তোমরা। একদম গাছের টাটকা লেবু দিয়ে বানানো।এই বলে গোলাপ সাহেব আবার শরবতের গ্লাস গুলো ওদের হাতে দিয়ে দিলো।
ইরা,মিরা আর লিরা কোনো উপাই না দেখে এক চুমুক করে খেয়েই নিলো শরবত টা।

অন্যদিকে কামিনী চৌধুরীর ডায়বেটিস থাকার কারণে তিনি শরবতের গ্লাসটি অনেক আগেই রেখে দিয়েছেন।

কুশান চামেলি বেগমের সাথে কথা বলতেই এদিকে মিঃ জারিফ চৌধুরী আর শাহিন,মাহিন,তুহিন আর বাকিরা এক গ্লাস করে শরবত খেয়ে আবার আরেক গ্লাস নেওয়ার মতলব করছে।

কুশান তা দেখে চিৎকার করে বললো, বাবা আর খাও না প্লিজ।আর কতই খাবে?

জারিফ চৌধুরী তখন বললো, শরবত টা বেস্ট টেস্টি হয়েছে।একদম তাজা লেবু আর মাল্টা মিশ্রিত শরবতের ঘ্রাণে মৌ মৌ করছে ঘরটা।নে ধর।একটু খেয়ে দেখ তুইও।

কুশান তখন বললো, না খাবো না আমি।তুমি বেশি করে খাও।

এদিকে ইরা, মিরা, লিরা চোখ দিয়ে ইশারা করলো তাদের হাজব্যান্ডদের ,সেই ইশারায় ভয় পেয়ে শাহিন,মাহিন আর তুহিন খালি গ্লাসগুলো টেবিলে রেখে দিলো।তারা আরেক গ্লাস নেওয়ার আর সাহস পেলো না।

কিন্তু জারিফ চৌধুরী আরো এক গ্লাস খেয়ে নিলেন।এই গরমে ঠান্ডা ঠান্ডা শরবত না খেয়ে কি আর থাকা যায়?

কুশান সবার শরবত খাওয়া দেখে মনে মনে দোয়া পড়তে লাগলো। আর বলতে লাগলো,
আল্লাহ কারো যেনো কোনো অসুবিধে না হয়।তা না হলে সবার অবস্থা একদম খারাপ হয়ে যাবে।আর তার সাথে তোরাদের মানসম্মান ও একেবারে ধুলোয় মিশে যাবে।

হঠাৎ জারিফ চৌধুরীর পেটে গুড়ুমগুড়ুম ডাকতে লাগলো। সেজন্য তিনি ভীষণ লজ্জার মধ্যে পড়ে গেলেন।এখন কি করে সবার মধ্য থেকে তিনি ওয়াশরুমে যাবেন?সেজন্য কষ্ট করেই চেপে বসে থাকলেন।

কিন্তু হঠাৎ কুশানের কাজিন সুমন, চামেলি বেগমকে বললেন,
আন্টি, আপনাদের ওয়াশরুম টা কোন দিকে?

চামেলি বেগম হাত দিয়ে ওয়াশরুম টা দেখাতেই মিঃ জারিফ চৌধুরী উঠে দিলেন এক দৌঁড়।কারণ তিনি আর থাকতে পারছিলেন না।
এদিকে জারিফ চৌধুরী কে এভাবে দৌঁড়ানো দেখে কামিনী চৌধুরী বললেন,
এই তোমার কি হয়েছে?এভাবে দৌঁড়াচ্ছো কেনো?

জারিফ চৌধুরীর কি আর উত্তর দেওয়ার সময় আছে?তিনি ওয়াশরুমে ঢুকেই দরজা লাগিয়ে দিলেন।

এদিকে সুমন চিল্লায়ে বলতে লাগলো, আংকেল আমাকে আগে যেতে দিন।আমার খুব অসুবিধা হচ্ছে,এই বলে সুমন কাঁদতে লাগলো।

এতো বড় একজন জোয়ান পোলাকে কাঁদতে দেখে লুতফা চৌধুরী বললো, এ বাবা কি হয়েছে তোর?এভাবে কাঁদছিস কেনো?
সুমন তখন কাঁদতে কাঁদতে বললো,
মা আমার খুব পেট ব্যাথা করছে।আমাকে এখুনি ওয়াশরুমে যেতে হবে।

হঠাৎ লুতফা চৌধুরী খেয়াল করলেন তার ও পেটের মধ্যে কেমন যেনো করছে?এরকম কেনো হচ্ছে তার?তিনি তো বেশি কিছু খান নি।

অন্যদিকে শাহিন মাহিন আর তুহিন বউ দের ভয়ে এতোক্ষণ চুপ করে থাকলেও এবার আর চুপ করে থাকতে পারলো না।তারা এক দৌঁড়ে তোরাদের বাড়ির পিছনের বাঁশ ঝাড়ে চলে গেলো।

এদিকে ইরা, মিরা, লিরাও ওদের পিছু পিছু চলে গেলো আর ডাকতে লাগলো, কি হয়েছে তোমাদের?এভাবে দৌঁড়ে এলে কেনো?

শাহিন তখন তার পেট চেপে রেখে বললো, তোমরা যাও প্লিজ এখান থেকে।আমাদের এমারজেন্সি একটা কাজ আছে।

ইরা তখন বললো এখানে আবার তোমাদের কিসের ইমারজেন্সি কাজ?

শাহিন এবার আর উত্তর দিলো না।কারন তার উত্তর দেওয়ার সময় নাই এখন।সেজন্য সে ওদের সবার সামনেই বেল্ট খুলতে লাগলো।

ইরা তা দেখে চিৎকার করে বললো, এই এই কি করছো?

শাহিন তখন ধমক দিয়ে বললো তোমরা সবাই যাবে প্লিজ।এতো প্রশ্ন কেনো করছো?

শাহিনের ধমক শুনে ইরা ভ্যাঁ ভ্যাঁ করে কাঁদতে লাগলো আর বললো তুমি আমায় বকলে?

তুহিন তখন আর না লুকিয়ে বললো, আমাদের না এখন ভীষণ হাগু পাচ্ছে।তোমরা যদি দাঁড়িয়ে থেকে আমাদের হাগু করা দেখতে চাও তাহলে দাঁড়িয়েই থাকো।যতসব আবালের দল।সারাক্ষণ পিছে পিছে শুধু ঘুরঘুর করে।একটু শান্তিমতো হাগতেও দিচ্ছে না তারা।
লাস্টের কথাগুলো তুহিন বিড়বিড়িয়ে বললো।কারণ জোরে বললে তার আজকে খবর ছিলো।

--ওয়াক!থু,থু,থু।এই চলো চলো।এই বলে ইরা মিরা লিরা নাকে মুখে কাপড় দিয়ে সেখান থেকে চলো গেলো।

কিন্তু তারা হঠাৎ তিনজনই খেয়াল করলো তাদের পেট টাও কেমন যেনো ব্যাথা করছে।কিন্তু তারা ভাবলো এমনি হয় তো এরকম করছে।
কিন্তু ইরা তখন হাসতে হাসতে বললো,
এদের হাগু করা দেখে তো আমারও হাগু পাচ্ছে।

মিরা তখন বললো, আমারও।

লিরা তখন বললো কি বলছিস কি?It's very strange.Iam having the same problem.

এই বলে তিন বোন তোরাদের পাশের বাড়িতে চলে গেলো।

কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখে বাথরুমে কে যেনো আগেই চলে গেছে?ইরা,মিরা লিরার তো আর তর সইছে না।সেজন্য তারা তিনজন যার যেদিকে মন চায় সেদিকেই চলে গেলো।

এদিকে জারিফ চৌধুরী এখনো বের হন নি ওয়াশ রুম থেকে।সুমন আর লুতফা চৌধুরী কে সেজন্য তোরাদের পাশের বাসার ওয়াশ রুমে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

কামিনী চৌধুরী সবার এরকম অবস্থা দেখে গোলাপ সাহেব কে বললেন,
সত্যি করে বলুন আপনারা খাবারে কি মিশিয়েছেন?আপনাদের দেওয়া নাস্তা খেয়ে সবার এরকম অবস্থা কেনো হলো?

গোলাপ সাহেব সেই কথা শুনে রাগ হয়ে বললো, মুখ সামলিয়ে কথা বলুন।কি বলছেন কি এসব?আমাদের খাবার খেয়ে এরকম হয়েছে মানে টা কি?

কামিনী চৌধুরী গোলাপ সাহেবকে উচ্চস্বরে কথা বলা দেখে বললো,
দোষ করেছেন আবার চোখ রাঙ্গিয়ে কথাও বলছেন?আপনাদের খাবারে ভেজাল আছে দেখেই তো বলছি।

কুশান এবার কথা বলে উঠলো।আর কামিনী চৌধুরী কে বললো,
আম্মু মাথা ঠান্ডা করো।তুমি হাই প্রেশারের রোগী আম্মু।এতো উচ্চস্বরে তোমাকে কথা বলতে নিষেধ করেছে ডক্টর।

কামিনী চৌধুরী সেই কথা শুনে বললো,
তুই চুপ থাকতে বলছিস কুশান?সবার কি হাল হয়েছে দেখছিস না?তোর আব্বু এখনো ওয়াশরুম থেকেই বের হয় নি।

কুশান তখন বললো এতে এনাদের কি দোষ?হয় তো এদের সবার পেটে আগে থেকেই প্রবলেম ছিলো । এজন্য এমনটা হয়েছে।আমিও তো এই খাবারই খেয়েছি কই আমার তো কিছু হলো না।তাছাড়া দেখো না সনিয়া এখনো খেয়েই যাচ্ছে, ওর ও তো কিছু হচ্ছে না।

সনিয়া হলো কুশানের আরেক কাজিন।সুমনের বোন।সনিয়া নাস্তা খাওয়া শেষ করে যেই শরবতের গ্লাসে হাত দিয়েছে ঠিক তখনি কুশান ওর হাত থেকে শরবতের গ্লাস টা কেড়ে নিয়ে বললো, আর কতই খাবি সনিয়া?রেখে দে।বাসায় যাবো এখন আমরা।

সনিয়া তখন বললো আমি তো শরবত খাই নি ভাইয়া।একটু খাই।

কুশান তখন ফিসফিসিয়ে বললো চুপ থাক বোন।তুই আর আমি হলাম একমাত্র সাক্ষী। এই বলে কুশান তার পকেট থেকে একটা একশো টাকার নোট বের করে সনিয়ার হাতে দিয়ে বললো সবাইকে বলবি তুই ও সবকিছুই খেয়েছিস।তবুও তোর কিছুই হয় নি।

সনিয়া একশো টাকার নোটটা কুশানের হাত থেকে নিয়ে হেসে হেসে বললো আচ্ছা বলবো।
সনিয়া হলো টাকার পাগল।তাকে এক দুইটা নোট দিলেই চুপ করে রাখা যায়।

সবার এ অবস্থা দেখে তোরা তার আম্মুকে বললো,আম্মু সবার জন্য স্যালাইন বানাও।আর আব্বুকে ডাক্তার ডেকে আনতে বলো।

চামেলি বেগম তোরার কথা শুনে তাকে টেনে নিয়ে ঘরের মধ্যে গেলো।আর বললো,সত্যি করে বল দেখি তুই আবার শয়তানি করে খাবারে কিছু মিক্সড করিস নি তো?

তোরা সেই কথা শুনে বললো,আমি আবার কখন কি মিক্সড করতে গেলাম?

চামেলি বেগম তখন বললো,
তাহলে যে পাত্রপক্ষই আসে সবাই কিছু না কিছু সমস্যায় ভোগে কেনো?
একদিন খাবারে লবণ বেশি হয়,কোনোদিন আবার শরবতের মধ্যে চিনির বদলে শুধু লবণ থাকে।সেদিন পানির মোটর নষ্ট হয়ে গিয়েছিলো।যার জন্য কেউ খাবার খেয়ে হাত ধোয়ার জন্যও পানি পায় নি।আর আজ সবাই দৌঁড়ে দৌঁড়ে শুধু বাথরুমে যাচ্ছে।

তোরা তার মায়ের প্রশ্নের কোনো উত্তর না দিয়ে নিজেই স্যালাইন বানাতে গেলো।
এদিকে মিঃ জারিফ চৌধুরী হাঁপাতে হাঁপাতে ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে বললো,
কেউ একটু এক গ্লাস স্যালাইনের পানি দিবে আমাকে?

কামিনী চৌধুরী সেই কথা শুনে বললো, তোমার আসলেই লজ্জা শরম নাই।এতোকিছুর পরও আবার ওনাদের হাতের খাবার চাচ্ছো?

জারিফ চৌধুরী তখন বললো,ওনাদের খাবার খেয়ে এমন হয় নি আমার।আসলে আমি বাড়ি থেকে আসার সময় ফ্রিজে রাখা দই এর হাড়া টা শেষ করে এসেছি।সেজন্য মনে হয় এমন হয়েছে।
কামিনী চৌধুরী সেই কথা শুনে জারিফ চৌধুরীর কাছে গিয়ে বললো, তোমাকে না দই খেতে বারণ করেছি?তারপরেও চুরি করে কেনো খেয়েছো দই?

জারিফ চৌধুরী তখন বললো এখন তর্ক করার সময় নাই গিন্নী।আগে আমাকে বাঁচাও আগে।এই বলে জারিফ চৌধুরী চিৎকার করে আবার ওয়াশ রুমে চলে গেলো।
এদিকে তোরা স্যালাইনের পানি নিয়ে এসে দেখে জারিফ চৌধুরী আবারও ওয়াশরুমে চলে গিয়েছে।

এবার ইরা মিরা লিরা হাঁপাতে হাঁপাতে এলো।আর বললো মা আমাদের বাঁচাও।আমরা তো শেষ হয়ে গেলাম।এই বলে তিন বোন মেঝেতেই শুয়ে পড়লো।

কামিনী তার মেয়েদের এমন অবস্থা দেখে বললো, ও আল্লাহ, কি হবে এখন?আমার মেয়েরা এমন করছে কেনো?নিশ্চয় এরা খাবারে কিছু মিশিয়েছে।

কামিনী চৌধুরী তখন চিৎকার করে শাহিন, মাহিন আর তুহিন কে ডাকতে লাগলো।

ইরা তখন হাঁপাতে হাঁপাতে বললো,মা, ওদের অবস্থাও খারাপ।ওরা তো পাশের এক বাঁশের ঝাঁড়ে গিয়ে বসে আছে।

কামিনী চৌধুরী সেই কথা শুনে বললো, ছিঃ ছিঃ ছিঃ। কি লজ্জাজনক ব্যাপার?মানসম্মান তো একেবারে ধুলোয় মিশে গেলো।

তোরা এবার ইরা,মিরা,লিরার কাছে স্যালাইনের পানি নিয়ে আসলে তারা রাগ করে ফেলে দিলো গ্লাসগুলো।
আর চিৎকার করে কুশানকে বললো,
কুশান তুই এভাবে দাঁড়িয়ে আছিস কেনো?দেখছিস না আমাদের অবস্থা?শিঘ্রই ডাক্তার ডেকে আন।

চামেলি বেগম সেই কথা শুনে বললো, আপনারা প্লিজ শান্ত হন।সবাই ইনশাআল্লাহ ঠিক হয়ে যাবেন।তোরার আব্বু ডাক্তার আনতে গেছে।

এবার মিসেস লুতফা চৌধুরী আর সুমন গোঙরাতে গোঙরাতে এলো।আর এসেই একটা বিছানায় দুইজনই ধপাস করে শুয়ে পড়লো।
তোরা তখন তাদের কে এক গ্লাস স্যালাইনের পানি খেতে বললো।লুতফা আর সুমন স্যালাইনের কথা শোনামাত্র ঢকঢক করে খেতে লাগলো।আর বললো,আল্লাহ এ যাত্রায় বাঁচিয়ে দাও। আর খাবো না বাসি ভাত।আল্লাহ বাঁচাও আমাদের।

কামিনী চৌধুরী সেই কথা শুনে বললো, তোরা বাসি ভাত আবার কখন খেলি?

লুতফা তখন বললো, বুবু, আমি সুমন আর সনিয়া আসার সময় মাংস দিয়ে বাসি ভাত খেয়ে এসেছিলাম।সেজন্যই হয় তো এরকম সমস্যা হচ্ছে।

কামিনী তখন বললো তোদের সবার যে কি হয়েছে কিছুই বুঝছি না।তোরা বুঝতে কেনো পারছিস না সহজ ব্যাপার টা।বাসি ভাত খেয়ে পেট খারাপ হয় নি তোদের।এ বাড়ির অস্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে এরকম হয়েছে।

লুতফা সেই কথা শুনে বললো, জানি না কিছু আমি।আগে আমাকে ভালো করো বুবু।এই বলে মাও বেটা চোখ বন্ধ করে শুয়ে থাকলো।

এবার শাহিন,মাহিন আর তুহিন ও ক্লান্ত শরীর নিয়ে রুমে প্রবেশ করলো।
তোরা তখন ওদের তিনজনকেই স্যালাইনের পানি দিলো।
শাহিন,মাহিন,তুহিন ও স্যালাইনের পানি খেয়েই শুয়ে পড়লো বিছানায়।

কামিনী চৌধুরী তখন চিৎকার করে বললো, এই তোমরা সবাই এভাবে শুয়ে পড়লে কেনো?বাড়ি যাবে কখন?চলো আমরা বাড়ি যাই।আর এক মুহুর্ত থাকতে চাই না এ বাড়িতে।
কিন্তু শাহিন,মাহিন,তুহিন একদম নেতিয়ে পড়েছে।সেজন্য কেউ কোনো উত্তর দিলো না।

কামিনী বেগম তখন কুশানের উপর রাগ দেখিয়ে বললো,তুই এভাবে হাবলু দের মতো দাঁড়িয়ে থেকে কি দেখছিস?তোর জ্ঞান বুদ্ধি কবে হবে বল তো?সবাই কে ধরে ধরে গাড়িতে ওঠা।

কুশান যেই তার দুলাভাইদের ওঠাতে লাগলো তখনি
জারিফ চৌধুরী হঠাৎ ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে বললো, আমি আজ আর বাড়ি যেতে পারবো না।এখানেই বোধ হয় আজ থাকতে হবে আমাকে।আমার শরীরে আর কোনো শক্তি নাই।এই বলে তিনিও ধপাস করে শুয়ে পড়লেন।

কিছুক্ষন পর গোলাপ সাহেব ডাক্তার নিয়ে আসলেন।আর ডাক্তার সকল কে চেকাপ করে ঔষধ দিলেন।তোরা,মিসেস চামেলি বেগম আর গোলাপ সাহেব সবার বেশ খাতির যত্ন করলেন।তাদের সবাইকে ঔষধ খাওয়ালেন।বিপদে পড়ে সবাই আর কোনো কথা না বলে চুপচাপ খেয়ে নিলো ঔষধ। কারণ তাদের সুস্থ হওয়া দিয়ে কথা।সবাই ঔষধ খেয়ে আবার রেস্ট নিলো।

সবাই যখন মোটামুটি সুস্থ হলো তখন কামিনী চৌধুরী সবার উদ্দেশ্যে বললো,সত্যি করে বলো দেখি এবার?এখানে আসার আগে কে কে পেট খারাপ নিয়ে এসেছিলে?আর কার কার পেট ভালো ছিলো?তাহলেই প্রমান হয়ে যাবে।

সুমন তখন বললো, চাচি আমার আগে থেকেই একটু পেটে প্রবলেম ছিলো।
শাহিন বললো,আম্মা আমার পেট তো ভালোই ছিলো।মনে হয় এই বাড়ির খাবার খেয়েই পেটে এরকম প্রবলেম হয়েছে।

কুশান তখন বললো কিন্তু দুলাভাই আমি আর সনিয়াও তো এই খাবারই খেয়েছি।কই আমাদের তো কিছু হলো না?

ইরা,মিরা লিরা তখন কুশান কে ধমক দিয়ে বললো,
আমরা তো ভালো মানুষ ই এসেছিলাম।কিন্তু আমাদের সবার এমন হাল কেনো হলো?
আর তুই আমাদের বাড়ির ছেলে হয়ে সেই থেকে এই বাড়ির পক্ষে কথা বলছিস?তোর হয়েছে টা কি কুশান?

শাহিন তখন বললো তুই আবার এই বাড়ির মেয়েকে পছন্দ করে ফেলেছিস নাকি?
মাহিন বললো,কি রে কথা বলিস না কেনো?তোর কি মেয়ে পছন্দ হয়েছে?

কুশান তার দুলাভাইদের প্রশ্নে বোবার মতো চুপ হয়ে রইলো।সে কি উত্তর দেবে ভেবে পাচ্ছিলো না।সে চিন্তা করতে লাগলো যদি সে হ্যাঁ বলে তাহলে তোরার সাথে তার বিয়ে হয়ে যাবে।আর তোরাকে বিয়ে করা মানে জেনে শুনে বিষ পান করা।অন্যদিকে যদি সে না বলে তাহলে তোরার সাথে তার বিয়ে হবে না।কিন্তু তবুও তো তোরা তার পিছু ছাড়বে না।আবার সেই আগের মতো ঘুরঘুর করবে। আর সারাদিন শুধু বিয়ে করো বিয়ে করো বলে ঘ্যানঘ্যান করবে।এখন কি করা যায়?
কুশান তখন ভাবলো হ্যাঁ ই বলি।বিয়ের পর হয় তো তার পাগলামি কিছু টা হলেও কমবে?তাছাড়া আমাদের বাড়িতে এতোগুলো মানুষের মধ্যে সে খারাপ ব্যবহার করতে পারবে না কিছুতেই।আর আজকের এই পাত্রী দেখতে আসাকে সারপ্রাইজড হিসেবে রাখা যাবে।তা না হলে এই ঘটনাকে ইস্যু করে নিশ্চিত আজ আবার তার মাথা ফাটিয়ে দেবে।

তুহিন কুশানকে চুপচাপ থাকা দেখে বললো,নীরাবতাকে কি সম্মতির লক্ষ্মণ ধরে নিবো শালাবাবু?

কুশান তো এবার আরো বেশি সুযোগ পেয়ে গেলো।এমনিতেও তো সে তার আর তোরার সম্পর্কের কথা জীবনেও বলতে পারতো না।এই সুযোগে কুশান বলেই ফেললো, হ্যাঁ,মেয়ে আমার পছন্দ হয়েছে।

কুশানের কথা শুনে ইরা,মিরা আর লিরা একসাথে বলে উঠলো কি?এতো কিছুর পরও তুই বলছিস তোর মেয়ে পছন্দ হয়েছে?

কুশান তখন আবারও বললো হ্যাঁ হয়েছে।

তোরা তখন হঠাৎ তার রুম থেকে বের হয়ে এসে বললো,আপনার পছন্দতেই তো আর হবে না বিয়ে।আমারও একটা নিজস্ব মতামত আছে।

তোরার কথা শুনে সবাই অবাক।এই মেয়ে বলে কি এসব?
কুশান তখন বললো কি মতামত?

তোরা তখন বললো, আমার আপনাকে পছন্দ হয় নি।আর আপনাদের ফ্যামিলিকেও না।আপনাদের ফ্যামিলিতে বউ হয়ে যাওয়ার বিন্দুমাত্র ইচ্ছা নাই আমার।

মিসেস চামেলি বেগম আর গোলাপ সাহেব সেই কথা শুনে তোরার কাছে এগিয়ে গিয়ে বললো, মা কি বলছিস এসব?

--হ্যাঁ আমি ঠিকই বলছি।আমি এই ছেলেকে বিয়ে করবো না।

কামিনী চৌধুরী তোরার কথা শুনে হঠাৎ তোরার কাছে এগিয়ে এসে বললো,
তোমার সাহস দেখে আমি অবাক হয়ে যাচ্ছি।তুমি আমাদের বাড়ির ছেলেকে রিজেক্ট করে দিলে?আজ পর্যন্ত এমন কোনো মেয়ের জন্ম হয় নি যে আমার ছেলেকে অপছন্দ করবে।আর এমন কেনো পরিবারের সৃষ্টি হয় নি যে আমাদের পরিবারের সাথে আত্নীয়তা করতে চায় না।যেখানে আমরা তোমাকে রিজেক্ট করবো সেখানে তুমি আমাদের মুখের উপর না করে দিলে?
আমার না ভীষণ জানতে ইচ্ছে করছে ঠিক কি কারণে আমাদের পরিবারকে তুমি অপছন্দ করছো?আর কি কারনে কুশান কে পছন্দ না তোমার?

কুশান তার মায়ের এমন প্রশ্ন শুনে ঢোক গিলতে লাগলো।সে মনে মনে ভাবলো এ কোন নতুন ঝামেলার সৃষ্টি করলো তোরা?সে এখন কি উত্তর দেবে?ভুল করে যদি তাদের রিলেশনের কথা বলে ফেলে?তখন কি হবে তার?

চলবে,
কেমন লাগলো আজকের পর্ব অবশ্যই জানাবে সবাই।

 #হৃদয়হরণী #পর্ব:৪৮ #তানিশা সুলতানা "তুমি আমার শখের নারী ছোঁয়া। আমি তোমাকে ভীষণ ভালোবাসি। বক্স খুলে সেটার ভেতর থেকে লকেট...
02/12/2023

#হৃদয়হরণী
#পর্ব:৪৮
#তানিশা সুলতানা

"তুমি আমার শখের নারী ছোঁয়া। আমি তোমাকে ভীষণ ভালোবাসি।

বক্স খুলে সেটার ভেতর থেকে লকেট ওয়ালা একটা চেইন বের করতে করতে বলে সাদি।
ছোঁয়ার কপালে ভাজ পড়ে।

" বাই এনি চান্স আপনি কি আমাকে আগে থেকেই ভালোবাসতেন?

মৃদু হাসে সাদি। খাটের এক কোণায় গিয়ে বসে। ইশারায় ছোঁয়াকেও বসতে বলে। ছোঁয়াও সাদির পাশে বসে।

"তোমাকে আমি কবে থেকে ভালোবাসি জানি না। তবে বউ বানানোর স্বপ্ন দেখেছি অনেক আগে থেকেই। নিজের স্বপ্নটার কথা শেয়ার করেছিলাম তোমার বাবার কাছে। তিনি নাকোচ করে দেন। এবং স্পষ্ট গলায় বুঝিয়ে দেয় তোমার আর আমার মধ্যে ঠিক কতেটা দুরত্ব রয়েছে।
আমিও বুঝে গিয়েছিলাম। এবং তোমার থেকে দুরত্ব বজায় রেখেই চলতাম। নিজেকে গুছিয়ে নেওয়ার জন্য বন্ধুত্ব করেছিলাম মিহির সাথে।
বন্ধুত্ব ছিলো বা তার থেকেও কিছুটা বেশি৷
হয়ত আমার চাওয়াটা সত্যি ছিলো তাই তুমি আজকে আমার।

ভেংচি কাটে ছোঁয়া। লোকটা তাকে আগে থেকেই ভালোবাসে। অথচ কি নাটকটাই না করলো। একটুও ভালোবাসা দেখাতো না।
সাদি লকেটা খুলে। তার ভেতরে দুটো নাম লেখা। একটা " দিয়া এবং অপরটা ছোঁয়াদ"
নাম দেখে ছোঁয়ার কুঁচকানো ভ্রু আরও কুঁচকে যায়। সে এক লাফে দাঁড়িয়ে যায়।

"আমার ছেলের নাম আমি কুদ্দুসই রাখবো। ছোঁয়াদ কখনোই রাখবো না।

সাদি দীর্ঘ শ্বাস ফেলে
" ছোঁয়া পাগলামি করে রাতটা নষ্ট করিও না।

"আর আপনি যে আমার ছেলের নাম নষ্ট করছেন।

সাদি হতাশ বুঝে যায় তার আধপাগল বউ মানবে না।
" ঠিক আছে ডাক নাম কুদ্দুস থাকবে। স্কুল কলেজে ছোঁয়াদ দেবো।

ছোঁয়া এটা মানতেও নারাজ। তাই দারুণ তেজে আবারও বলে ওঠে
"একদম না।
স্কুল কলেজেও কুদ্দুস থাকবে।

হার মানে সাদি।
" ঠিক আছে। আপাতত কাছে এসো।

"কাছে যাবো তার আগে আপনি কান ধরে বিশ বার উঠবস করবেন।

" কিন্তু কেনো?

"এতোদিন চোরকির মতো আমাকে আপনার পেছনে দৌড় করানোর জন্য।
আপনি জানেন আপনি আমাকে কতোটা পিছিয়ে দিয়েছেন? বিয়ের দিন থেকেই যদি আমরা কাছাকাছি থাকতাম তাহলে এতোদিনে কুদ্দুস আমাদের কোলে চলে আসতো। এবং কুদ্দুসীকে আনার প্ল্যানিং শুরু করে দিতে পারতাম।

" কুদ্দুসী আবার কে?

"মেয়ের নাম কুদ্দুসী রাখবো। দিয়া থাকবে ভালো নাম। ডাক নাম কুদ্দুসী।

সাদি দুই হাত জোর করে বলে
"মাপ কইরা দে বোইন। তুই বের হ আমার রুম থেকে। আমাকে একটু শান্তি দে।

ছোঁয়া ভেংচি কাটে।

" আমাকে আজকে বের করে দিলে আপনার চুলের কসম। আমি চলে যাবো গ্যাব্রিয়েল এর কাছে। ২০ বছর পরে দশটা বাচ্চা নিয়ে তবেই ফিরবো আপনার কাছে।

হতাশ সাদি। কথাবার্তা ছাড়া কান ধরে উঠবস করতে থাকে। ছোঁয়া কাউন্ট করতে থাকে। গুনে গুনে বিশবার কান ধরে শেষ হলে ছোঁয়া এগিয়ে গিয়ে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে সাদিকে। সাদিও আগলে নেয় ছোঁয়াকে।
ছোঁয়া সাদির পানজাবির বোতাম খুলে লোমশযুক্ত বুকে ছোট ছোট চুমু খায়।
এবং ফিসফিস করে বলে
"কথা দেন

সাদি ছোঁয়ার মাথায় চুমু খেয়ে জবাব দেয়
" কি কথা দিবো?

"অল্প অল্প করে চুমু খাবেন। রাক্ষসের মতো নিঃশ্বাস বন্ধ করে দিবেন না।

দাঁতে দাঁত চেপে ছোঁয়াকে ছেড়ে দেয় সাদি। এই বলদ কি কোনো দিনও মানুষ হবে না?
ছোঁয়া এক পলক তাকায় সাদির দিকে।
" এভাবে দাঁত কটমট করবেন না। দাঁত ভেঙে গেলে কুদ্দুস এবং কুদ্দুসী আপনাকে বাবা না ডেকে নানা ডাকবে।

রাগতে গিয়ে রাগ করতে পারে না সাদি। কি বলবে একে? স্বভাব তো এমনই। রাগ করলেই কি ম্যাচুউর হয়ে যাবে? কখনোই না।
ছোঁয়া হাত টেনে কাছে নিয়ে ওষ্ঠদ্বয় চেপে ধরে নিজের পুরুষালী ওষ্ঠদ্বয় দ্বারা।
দুই হাতের বেসামাল স্পর্শ এবং পুরু ওষ্ঠের অত্যাচারে অস্থির ছোঁয়া। ছাড়া পাওয়ার জন্য ছটফট করতে থাকলেও শখের পুরুষ একটুও ছাড় দেয় না ছোঁয়াকে।

অতিষ্ঠ হয়ে সাদির চুল গুলো মুঠোয় পুরে নেয় ছোঁয়া। সাদি ছেড়ে দেয়। এবং কড়া গলায় জানিয়ে দেয়
"আজকে কোনো রকমে বাঁদরামি করলে চলে যাবো মিহির কাছে মাইন্ড ইট।
ব্যাস ছোঁয়া রানী একদম সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে। চুল গুলো ছেড়ে দেয়। এবং নিজেই সাদির ওষ্ঠদ্বয় ছুঁয়ে দেয় নিজ ওষ্ঠদ্বারা।

__

ফজরের আজান দিয়েছে বেশ কিছু খন আগে৷ ইতোমধ্যে পাখির কিচিরমিচির শুরু হয়ে গিয়েছে। ছোঁয়া এখনো মুখ গোমড়া করে বসে আছে। মূলত সে সাদির পাশে শুবে না। এক ঘন্টা যাবত এভাবেই বসে আছে। সাদি শুয়ে শুয়ে দেখছে অভিমানী বউটাকে।

বউ রেগে নেই। তবে অভিমান করেছে সাথে ভয়ও পেয়েছে মনে হয়। সাদি ঠিক আন্দাজ করতে পারছে না। আন্দজ করবে কি করে? কথাই তো বলছে না। শেষ কথা বলেছিলো গভীর স্পর্শের মুহুর্তে। মস্তিষ্কে চাপ দিয়ে সাদি মনে করে ছোঁয়া শেষ কথা কি বলেছিলো। বলেছিলো "আজ না প্লিজ। কিন্তু সাদি ছোঁয়ার কোনো কথা শোনে নি৷ আসলে শুনতে পারে নি। নিজেকে দমিয়ে রাখতেও পারে নি।
পাশে শখের নারী সে আবার বউ বত্রিশ বছরের পাকাপোক্ত যুবক হয়ে নিজেকে দমাতে সক্ষম হয় নি।
অবশ্য এর জন্য সাদি অনুসূচনাও হচ্ছে না। তানিশা সুলতানা এতোদিন অনেক জ্বালিয়েছে৷ জ্বালিয়ে পুরিয়ে ছাই করে দিয়েছে। আজ নাহয় সাদি একটু জ্বালালো।

"ছোঁয়া একটু ঘুমিয়ে নাও।
ভালো লাগবে।

এটা নিয়ে চার বার বললো সাদি। তবুও ছোঁয়ার কোনো সারা নেই। একটু নরেচরে বসে ছোঁয়া। শরীরে এখনো শারি পেঁচিয়ে আসে।
বিরক্তর চরম পর্যায়ে চলে যায় সাদি। এক লাফে উঠে পড়ে। ছোঁয়া চমকে তাকায় সাদির দিকে। লোকটা উঠছে কেনো?
ছোঁয়া কিছু বুঝে ওঠার আগেই সাদি পাজা করে কোলে তুলে নেয় ছোঁয়াকে। মৃদু চিৎকার করে ওঠে ছোঁয়া। চোখ মুখ খিঁচে বন্ধ করে গলা জড়িয়ে ধরে সাদির।

সাদি বাঁকা হাসে
" ঘুমবে না। তো কি করার?
চলো গোছল সেরে নেই।

চোখ দুটো বড়বড় করে মেলে ছোঁয়া। লোকটা আজকে এতোটা জ্বালাচ্ছে কেনো? ডিসেম্বরের শুরু। প্রচন্ড শীত। এই শীতে এখন গোছল? মরেই যাবে ছোঁয়া। লোকটার এতো অত্যাচারে ছোঁয়া মরে নি বলে এখন ঠান্ডা পানি দিয়ে মারতে চাইছে?
পাষাণ লোক।

চলবে

 #হৃদয়হরণী  #পর্ব:৪৭ #তানিশা সুলতানা ছোঁয়া এখনো কাচুমাচু হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। সে ভয় পেয়ে গেছে খাট ভাঙাতে। খাট তো বেশ মজবুত। ...
29/11/2023

#হৃদয়হরণী
#পর্ব:৪৭
#তানিশা সুলতানা

ছোঁয়া এখনো কাচুমাচু হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। সে ভয় পেয়ে গেছে খাট ভাঙাতে। খাট তো বেশ মজবুত। তাহলে ভাঙলো কি করে?
সাদি কি বেশি ভাড়ি হয়ে গিয়েছে? না কি অন্য কোনো ব্যাপার?
নিশ্চয় সাদি ভারি হয়ে গিয়েছে বেশি। বাই এনি চান্স সাদি যদি ছোঁয়ার ওপরে পড়তো। তাহলে ছোঁয়ার কি অবস্থা হতো?
এতোখনে নিশ্চয় পটল তুলতো।
শুকনো ঢোক গিলে ছোঁয়া। ভয়ার্তক দৃষ্টি তাকায় সাদির মুখ পানে। বেচারা বিরক্তিতে নাক মুখ কুঁচকাচ্ছে। নিশ্চয় ছোঁয়াকে এভাবে পিঁসে ফেলতে না পেরে বিরক্ত সে।

সামির বেশ আরাম করে হাই তুলছে। তার মনের মধ্যে খুশির প্রজাপতি গুলো পাখা মেলে উড়ছে।
শিপন এবং আকাশও মজা ওড়াতে প্রস্তুত।

"ভাই বলছি কি
তোর বউটা এখনো ছোট। একটু বড় হওয়ার চান্স দে। তুই যেভাবে খাট ভেঙেছিস তাতে তো মনে হচ্ছে ছোঁয়াকে

আশিক বাকি কথা শেষ করতে পারে না। তার আগেই সামির বলে ওঠে
" নাহহহহহহ
ছোঁয়া আমার ছোট বোন। তার সাথে এরকম অন্যায় আমি হতে দিতে পারি না। সেলিম চাচা আমাকে দায়িত্ব দিয়েছে ছোঁয়াকে সুরক্ষিত রাখার।

সাদি কপাল চাপকে হাত মুষ্টি বন্ধ করে নেয়। মনে মনে নিজেকে বেশ কয়েকটা গালিও দিয়ে ফেলেছে ইতোমধ্যে। কেনো এসেছিলো হনুমানের দলকে এখানে? বাসর ঘর না সাজালে কি বাসর হয় না? অবশ্যই হয়।

শিপন বলে ওঠে
"সামির চল আমরা ছোঁয়াকে নিয়ে চলে যাই। সেলিম চাচা তার আদরের মেয়েকে সবার আগে বার্থডে উইশ করবে তো।

সাদি এবার ক্ষেপে ওঠে
" বুঝেছি বাসর করতে হলে বউ নিয়ে বনবাসে যেতে হবে আমার।

সাদির কথাটায় বেশ মজা পায় সামির। সাদির পিছে হাত দিয়ে বেশ ভাব নিয়ে বলে
"সেখানেও পেছন পেছন চলে যাবো ভাই।

সাদি চোখ পাকিয়ে তাকায় সামিরের দিকে। সামির এক গাল হেসে শার্টের কলার ঠিক করে
" ঐশির সাথে আমার বিয়েটা দিয়ে দে। তোর ভাঙা খাটের কসম আর জীবনেও জ্বালাবো না তোদের।

এতোখনে ছোঁয়া মুখ খুলে। সে মাথার ঘোমটা ফেলে বলে ওঠে
"সামির ভাইয়া তুমি কিন্তু ঠিক করছো না। এর দায় যে আমার ঘাড়ে এসে পড়বে সেটা জানো তুমি?
আমাকে চুমু খাবে না। এমনকি ঘরেও নেবে না বজ্জাত লোক।
তোমরা ওনার পেছনে লেগো না।

চোখ বড় বড় হয়ে যায় সকলের। রিমি হেসে ফেলে। মেয়েটা একদমই বাচ্চা।
সামির সাদিকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে এগিয়ে যায় ছোঁয়ার দিকে।
" সাদি চাচা চুমুও খায়?
কোথায় চুমু খায়? হাতে? না কি গালে?

ইরা সামিরের পিঠে থাপ্পড় মেরে বলে
'কি রে তোর না ছোট বোন হয়।

"সর বা*ল
কথায় কথায় টাচ করবি না। আমার শরীরের একটা ভার্জিনিটি আছে। আমি চাই আমার সব ভার্জিনিটি সব ঐশি নষ্ট করুক।।
তুই ছুঁবি না।

ইরা ভেংচি কেটে চুল টেনে দেয় সামিরের।
সামির ইরাকে ধাক্কা দিয়ে সরায়
" আপাতত ছোঁয়া আমার বন্ধুর বউ। আমার হক আছে ওদের রোমাঞ্চের ঘটনা শোনার।

রিমি বলে ওঠে
"তাহলে তো তোর হক আছে ওদের বাসর ঘরে বসে থাকার।

" আয় তোরে একখান চুমু খাই। এতখনে আসল কথা মনে করাই দিছোস। বন্ধুর বাসর ঘরে আমি থাকমু।

সাদির ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যাচ্ছে।
সে দীর্ঘ শ্বাস ফেলে বলে
"ইটস ওকে
তুই থাক বাসর ঘরে

বলেই সে ছোঁয়ার হাত ধরে টানতে টানতে সকলের চোখের পলকে বেরিয়ে যায়। এবং পাশের রুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেয়।
সামির বেচারার বুঝতে পাক্কা দুই মিনিট সময় লাগে কি হলো?
যখন বুঝতে পারে তখন চিল্লায়ে বলে ওঠে " বন্ধু আমারে ছাড়া রুম লক করিস না। আমি তোদের ডিস্টার্ব করবে না। শুধু একটু দেখবো"

কে শোনে কার কথা। সকলে হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাচ্ছে।
সামির সাদি যে রুমে ঢুকেছে সেই রুমের দরজার সামনে বসে আহাজারি করতে থাকে।
"বন্ধুরে অন্যায় করিস না। আমি একটা ভোলাভালা পোলা। আমারে না নিলে তোর শশুড়কে কল করবো আমি"

সাদি জবাব দেয়
"হুম দে
আমার শশুড় আর তুই নাগিনী ডান্স কর গিয়ে। আপাতত বিরক্ত করিস না"

"তোর নাম আমি ইতিহাসের পাতায় লিখতে চাইছিলাম চাচা। তোর মেশিন নিয়ে বই লিখতে চাচ্ছিলাম। তুই এতো বড় অন্যায় করিস না।

ছোঁয়া বড়বড় চোখ করে সাদির দিকে তাকিয়ে আছে। সাদি সাউন্ড বক্স চালিয়ে দিয়েছে। সামিরের বকবকানি আপাতত শোনার মুড নাই। সামির যে এক দুই ঘন্টার মধ্যে থামবে না এটা সাদির জানা।

ছোঁয়া রিনরিনিয়ে বলে
" আপনার ওয়েট কতো?

সাদি বিছানা চাদর ঠিক করতে করতে জবাব দেয়।
"৮০

ছোঁয়া শুকনো ঢোক গিলে। খাট যে এমনি এমনি ভাঙে নি এতোখনে পাক্কা কনফার্ম হয়ে গেলো।
সাদি এক পলক তাকায় ছোঁয়ার মুখপানে। বুঝে যায় বোকা প্রেয়সীর মনোভাব
" তুমি ভয় পেয়ো না। আমার ওজনের প্রভাব তোমার ওপর পড়বে না।
ছোঁয়া যেনো লজ্জা পেলো। মাথা নিচু করে ফেলে।

ঘড়ির কাটা টিকটিক শব্দে জানান দেয় রাত বারোটা বেজে গিয়েছে। সাদির প্রেয়সীর জন্মদিন চলে এসেছে।
সাদি পকেট থেকে একটা ছোট্ট বক্স বের করে ছোঁয়ার সামনে হাঁটু মুরে বসে পড়ে

"আমি না গুছিয়ে প্রপোজ করতে পারি না। কবিতা লিখে মনোভাব প্রকাশ করতে পারি না। সোজাসাপ্টা ভাষায় বলছি তোমাকে আমি ভালোবাসি। ভীষণ ভালোবাসি।
তুমি আমার হৃদয়হরণী। তোমাকে ছাড়া আমার একটা মুহুর্ত চলে না। তোমাকে ছাড়া আমি আমাকেই ভাবতে পারি না।
সারাজীবন আমার হয়ে থেকো হৃদয়হরণী।

ছোঁয়া সাদির হাত থেকে বক্সটা হাতে নেয়। সাদির হাত ধরে তাকে তোলে।
" শুভ জন্মদিন শখের নারী। সারাজীবন এরকমই থেকো। আমার আধ-পাগলা বউ হয়ে আমাকে রাঙিয়ে দিও।

ছোঁয়া মুচকি হেসে মাথা রাখে সাদির বুকে। এরকম একটা রাত চেয়ে এসেছে ছোঁয়া। এমনটাই কল্পনা করে গিয়েছে সব সময়। অবশেষে স্বপ্ন সত্যি হয়ে গেলো?

"হৃদয়হরণী মানে কি সাদু?

" হৃদয় মানে জানো তো? হরণী মানে হরণ করা বা দখল করা।
যে তোমায় হৃদয়টা দখল করে বসে আছে তাকেই হৃদয়হরণী বলে।

চলবে

Address

Dhaka

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Alone Boy Jahid posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Videos

Share