Eye of Law

Eye of Law "Eye of Law" is an organisation that aims to spread legal awareness among the grand mass of BD. Welcome to Eye of Law!

Our goal is to foster legal awareness across Bangladesh by providing accessible information and resources. We’re dedicated to empowering individuals with the knowledge they need to understand their rights and responsibilities. Follow us for updates, insights, and guidance on navigating the legal system and staying informed about important legal issues. Together, we can make legal knowledge more ac

cessible to everyone. Join us in our mission to spread awareness and build a more informed community!

31/10/2024

সম্প্রতি রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ১৩ বছরের গৃহকর্মী কল্পনার সাথে ঘটে যাওয়া পৈশাচিক নির্যাতনের ঘটনা সম্পর্কে আমরা সকলেই অবগত। আমাদের সমাজে প্রতিনিয়ত শিশু নির্যাতনের এরকম অনেক ঘটনা হয়ে থাকে যা লোকচক্ষুর আড়ালেই থেকে যায় কিংবা কার্যকর আইনি কাঠামো ও প্রয়োগের অভাবে অপরাধীরা রেহাই পেয়ে যায়। আধুনিক যুগে যেখানে সারা বিশ্বে শিশুদের সুরক্ষা ও সুস্থ্য পরিবেশে বিকাশ নিশ্চিত করা হয়েছে সেখানে শিশুদের প্রতি এধরণের বর্বরতা মোটেও কাম্য নয়।

চলুন বাংলাদেশে প্রচলিত শিশু নির্যাতন প্রতিরোধমূলক আইন অনুযায়ী শিশুদের প্রতি শারিরীক ও মানসিক নির্যাতনের শাস্তি কী তা জেনে নেই :
১। শিশু নির্যাতন আইন ২০১৩
এই আইন মোতাবেক ১৮ বছরের নিচে সকলকে শিশু হিসেবে বিবেচনা করা হবে।
শিশু নির্যাতন, শোষণ ও অবহেলার অপরাধে পরিস্থিতি বিবেচনা করে কারাদন্ড ও জরিমানার বিধান রয়েছে।

২. নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ ( সংশোধিত ২০০৩)
এই আইনের ধারা ৯(১) অনুযায়ী শিশু ধর্ষণের শাস্তি হলো মৃত্যুদন্ড অথবা যাবৎজীবন কারাদণ্ড
এছাড়া ধারা ৯(৪) (ক) মোতাবেক ১৬ বছরের কোন শিশুকে ধর্ষণ করলে এবং সেই ঘটনায় শিশুটির মৃত্যু হলে অপরাধীকে মৃত্যদন্ড বা যাবৎজীবন কারাদণ্ড দেয়া হবে।

৩.দন্ডবিধি ধারা ১৮৬০
#ধারা ৩২৩ - সাধারণ আঘাত
যদি কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে কোন শিশুকে আঘাত করে, তবে তাকে ১ বছরের কারাদন্ড বা জরিমানা অথবা উভয় শাস্তি দেওয়া হতে পারে।

# ধারা ৩২৪ - বিপজ্জনক অস্ত্র দিয়ে আঘাত
যদি কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে বিপজ্জনক অস্ত্র বা মাধ্যম ব্যবহার করে কোন শিশুকে আঘাত করে, তবে তাকে ৩ বছরের কারাদণ্ড বা জরিমানা অথবা উভয় শাস্তি দেওয়া যেতে পারে।

#ধারা ৩২৫ - গুরুতর আঘাত
যদি কেউ কোন শিশুকে গুরুতর আঘাত করে, তবে তাকে ৭ বছরের কারাদণ্ড এবং জরিমানা করা হতে পারে।

#ধারা ৩২৬ - গুরুতর আঘাতজনিত বিপজ্জনক অস্ত্র ব্যবহার
যদি কেউ কোন শিশুকে গুরুতর আঘাত করে এবং বিপজ্জনক অস্ত্র ব্যবহার করে, তবে তাকে ১০ বছরের কারাদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং জরিমানা দেওয়া যেতে পারে।

৪.গৃহস্থলির নির্যাতন আইন ২০১০
এই আইনের মাধ্যমে শারীরিক, মানসিক, যৌন ও আর্থিক নির্যাতনকে অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এছাড়া আদালতের মাধ্যমে শিশুকে সুরক্ষা, আশ্র‍য়, আর্থিক সহায়তা ইত্যাদি প্রদানের ব্যবস্থা আছে

৫.শ্রম আইন ২০০৬
#এই আইনের মাধ্যমে ১৪ বছরের নিচে শিশুদের কাজে নিয়োগ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এই বিধান লঙ্ঘন করলে রয়েছে ৫০০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা
#১৪-১৮ বছর বয়সী শিশুদের কাজ করার বিধান রয়েছে তবে বিপজ্জনক কাজে নিয়োগ করা হলে ৫০০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানার বিধান রয়েছে।
#শিশুদের কর্মস্থলে সুরক্ষা ও স্বাস্থ্যবিধান লঙ্ঘন করা হলে ২৫০০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা অথবা কারাদণ্ড দেয়া হবে।

এছাড়াও জাতীয় শিশু নীতি ২০১১ তে শিশুদের নির্যাতন থেকে সুরক্ষা ও শিক্ষা, স্বাস্থ্য ইত্যাদি অধিকার নিশ্চিতের কথা বলা আছে।

কিন্তু বাংলাদেশের এসকল আইন থাকার পরও সুষ্ঠু প্রয়োগের অভাব ও বিভিন্ন ঘাটতির কারণে শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। এসকল সমস্যা নিরসনের মাধ্যমে ২০২৪ এর গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী নতুন বাংলাদেশে সকল শিশুদের স্বাভাবিক বিকাশের জন্য সুষ্ঠু পরিবেশ গঠন করার আশা ব্যক্ত করছি।

18/10/2024

মিডিয়া ট্রায়াল আসলে কী এবং এটি কীভাবে বিচার বিভাগকে প্রভাবিত করে?

পাঠ্যপুস্তকের ভাষায় যদি বলি তাহলে মিডিয়া ট্রায়াল হচ্ছে আদালতের চূড়ান্ত রায় প্রদান করার পূর্বেই গণমাধ্যম কর্তৃক কোন মামলার বা ঘটনার বিচার প্রক্রিয়া। আমরা প্রায়শই এমন কিছু হাইপ্রোফাইল মামলা দেখি যেগুলা বিভিন্ন গণমাধ্যম, সোশাল মিডিয়া , টেলিভিশন ইত্যাদিতে অনেক মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এবং মানুষ এই মাধ্যম ব্যবহার করে নিজেদের মতামত প্রকাশ করে যা বিচারাধীন মামলার উপর প্রভাব বিস্তার করে। এছাড়া জনগণের মধ্যেও উক্ত মামলা সম্পর্কে একটি নির্দিষ্ট ধারণা তৈরি করে।
মিডিয়া ট্রায়াল আমাদের সংবিধানের গণমাধ্যম এর স্বাধীনতা বিষয়ক ধারা ৩৫(৩) এবং ফেয়ার ট্রায়াল বিষয়ক ধারা ৩৯ এর দ্বন্দের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে।

মিডিয়া ট্রায়াল কি ক্ষতিকর? মিডিয়া ট্রায়ালের খারাপ প্রভাবগুলো কী?
অনেক ক্ষেত্রেই মিডিয়া ট্রায়াল সুষ্ঠু বিচার প্রক্রিয়ায় অসুবিধা এবং ব্যক্তিজীবনে ভয়ানক পরিণতি নিয়ে আসতে পারে। এটি স্বাভাবিক সমাজ জীবনকে ধ্বংস করার ক্ষমতাও রাখে। সম্প্রতি প্রাক্তন স্বামী কর্তৃক তার স্ত্রীকে প্রমাণহীন অভিযোগ দ্বারা নিষ্ঠুর মিডিয়া ট্রায়াল সংঘটিত হয়। নিচে মিডিয়া ট্রায়ালের কিছু খারাপ দিক উল্লেখ করা হলো-
১.গণমাধ্যম, সোশ্যাল মিডিয়া অনেক সময় বিচার কার্য শেষ হবার পূর্বেই একজন ব্যক্তিকে দোষী অথবা নির্দোষ হিসেবে আখ্যা দেয় এবং আদালত তথা বিচারকদের উপর চাপ সৃষ্টি করে
২.সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, সংবাদপত্র ইত্যাদি তথ্য প্রচারের অনেক শক্তিশালী মাধ্যম যার দ্বারা ভূল তথ্য অতিদ্রুত ছড়িয়ে পরে এবং সমাজে জনগণের মধ্যে বিরুপ প্রভাব তৈরি করে
৩.আইন অনুযায়ী সকল মানুষের সুষ্ঠু বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সঠিক বিচার পাওয়ার অধিকার আছে। ইংরেজিতে এ সম্পর্কে একটি নীতি আছে যা হলো "Every person accused of any crime is innocent until proven guilty " অর্থাৎ সুষ্ঠু বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অপরাধ প্রমাণ না হওয়া পর্যন্ত কোন ব্যক্তি অপরাধী হিসেবে গন্য হবেন না। কিন্তু মিডিয়া ট্রায়ালের মাধ্যমে প্রায়শই একজন ব্যক্তিকে বিচারের পূর্বেই দোষী সাব্যস্ত করে এই মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়।
৪.গনমাধ্যমের মাত্রাতিরিক্ত হস্তক্ষেপ বিচার প্রক্রিয়াকে আরো বেশি বিশৃঙ্খল করে তোলে এবং বিলম্বিত করে।এছাড়া বিভিন্ন অনাকাঙ্ক্ষিত বিতর্কের জন্মও দেয়।
৫.মিডিয়া ট্রায়াল অনেক সময় জনগণের মধ্যে ভুল ও অতিরঞ্জিত তথ্য দিয়ে জনগণের মধ্যে আদালত ও আইনের প্রতি অবিশ্বাস তৈরি করে এবং তাদেরকে আইন হাতে তুলে নিতে উৎসাহিত করে যা একটি সমাজ ব্যবস্থাকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিতে পারে।

মিডিয়া ট্রায়ালের ভালো দিকগুলো কী?
যদিও মিডিয়া ট্রায়্যালের প্রভাব অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নেতিবাচক হয়ে থাকে তবুও এর কিছু ভালো দিক রয়েছে। জুলাই বিপ্লবকালীন আটককৃত শিশুর জামিনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে মিডিয়া ট্রায়াল।
১.নির্দিষ্ট কোন বিষয়ে জনমত তৈরি করা, অপরাধ সম্পর্কে জনসচেতনা তৈরি ও প্রতিবাদ সৃষ্টি এছাড়া অপরাধীদের বিশেষ করে সমাজের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় বিচারের মুখোমুখি করা এবং দুর্নীতিসহ সকল ঘৃন্য অপরাধের বিরুদ্ধে জনগণকে সোচ্চার করা ইত্যাদি।
২. গণমাধ্যম অনুসন্ধানের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রয়োজনীয় তথ্য প্রমাণ ও মামলার সাথে সংগতিপূর্ণ ফ্যাক্ট উৎঘাটন করে আদালতকে বিচার কাজে সহযোগিতা করে
৩.মিডিয়া ট্রায়ালের মাধ্যমে একটি মামলার বিচারকার্যের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সকল গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও সিদ্ধান্ত সম্পর্কে জনগণ জানতে পারে যার দ্বারা বিচার প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা যায়।

12/10/2024

বাংলাদেশের সাইবার নিরাপত্তা আইন 2023 বিভিন্ন ত্রুটির জন্য সমালোচিত হয়ে আসছে:
1. অস্পষ্ট সংজ্ঞা: আইনের কিছু পদ, যেমন "সাইবার ক্রাইম" এবং "সমালোচনামূলক তথ্য পরিকাঠামো" স্পষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়নি, যা সম্ভাব্য অপব্যবহারের দিকে পরিচালিত করে।
2. বিস্তৃত ক্ষমতা: আইনটি আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলিকে ব্যাপক ক্ষমতা প্রদান করে, সম্ভাব্য অপব্যবহার এবং নাগরিক স্বাধীনতার লঙ্ঘনের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে।
3. অভিব্যক্তির স্বাধীনতা: অনলাইন বিষয়বস্তু নিয়ন্ত্রণের সাথে সম্পর্কিত বিধানগুলি বাকস্বাধীনতাকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে, যা নির্বিচারে সেন্সরশিপ এবং ভিন্নমতকে শাস্তি দেওয়ার অনুমতি দেয়৷ এই আইনে উল্লেখিত "ডিজিটাল স্পেসগুলি অবশ্যই সরকারী তত্ত্বাবধানে এবং নিয়ন্ত্রণে থাকতে হবে"- এই দৃষ্টিকোণটি ধারণা বিনিময়ের জন্য একটি মুক্ত এবং উন্মুক্ত স্থান হিসাবে ইন্টারনেটের মৌলিক নীতির বিপরীতে চলে৷ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নয়টি ধারা (সাবেক সাইবার আইন ) স্বাধীন সাংবাদিকতা এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতার জন্য হুমকি হিসাবে চিহ্নিত ধারাগুলি হল 8, 21, 25, 28, 29, 31, 32, 43 এবং 53৷ সাইবার নিরাপত্তা আইনে এই সমস্ত ধারা রয়েছে
4. স্বচ্ছতার অভাব: প্রয়োগ ও বিচার প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতার অভাব হতে পারে, যা দুর্নীতি বা অন্যায্য আচরণের ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
5. অপর্যাপ্ত ডেটা সুরক্ষা: যদিও ডেটা সুরক্ষার দিকগুলি রয়েছে, সমালোচকরা যুক্তি দেন যে ব্যাপক ডেটা সুরক্ষা ব্যবস্থার অভাব রয়েছে৷
6. সীমিত স্টেকহোল্ডারদের সম্পৃক্ততা: খসড়া প্রক্রিয়ার সময় প্রাসঙ্গিক স্টেকহোল্ডারদের সাথে পরামর্শের অভাবের বিষয়ে সমালোচনা করা হয়েছে, যা বাস্তব বাস্তবায়নে ফাঁক হতে পারে। এই উদ্বেগগুলি সাইবার নিরাপত্তা এবং নাগরিক অধিকারের জন্য একটি ভারসাম্যপূর্ণ পদ্ধতির নিশ্চিত করার জন্য সতর্কতা যাচাই এবং সম্ভাব্য সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে।

সাইবার নিরাপত্তা আইন নিয়ে
আপনার কি মনে হয়? বাতিল নাকি সংস্কার, কোনটির পক্ষে আপনি?

10/10/2024

সামনেই বিয়ের মৌসুম।বিয়ের জন্যে একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে মহর।যা নিয়ে অনেক সময় অনেক ঝামেলাও হয়।

03/10/2024

বাংলাদেশের সংবিধানে "উপজাতি" এবং "আদিবাসী" সম্পর্কে আলাদা করে সুস্পষ্টভাবে সংজ্ঞায়ন নেই, তবে সংবিধানের প্রেক্ষাপটে "উপজাতি" শব্দটি বিভিন্ন প্রান্তিক জাতিগোষ্ঠীর মানুষদের বুঝাতে ব্যবহৃত হয়। সংবিধানের ২৩(ক) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, "রাষ্ট্র বিভিন্ন উপজাতি, ক্ষুদ্র জাতিসত্তা, নৃগোষ্ঠী ও সম্প্রদায়ের অনন্য স্থানীয় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সংরক্ষণ, সুরক্ষা ও বিকাশ করবে।"

উপজাতি কারা: উপজাতি বলতে মূলত দেশের প্রান্তিক বা ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীসমূহকে বোঝানো হয়, যারা মূলধারার বাঙালি জনগোষ্ঠী থেকে ভিন্ন সাংস্কৃতিক, ভাষাগত ও সামাজিক বৈশিষ্ট্য বহন করে। পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, ম্রো, তঞ্চঙ্গ্যা, বমসহ বিভিন্ন গোষ্ঠী এবং সমতল অঞ্চলের সাঁওতাল, হাজং, গারো, মণিপুরীসহ বিভিন্ন সম্প্রদায়কে উপজাতি হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

আদিবাসী কারা: আদিবাসী শব্দটির অর্থ হল স্থানীয় বা প্রাচীন অধিবাসী, যারা ঐতিহাসিকভাবে একটি নির্দিষ্ট ভূখণ্ডে বাস করে আসছেন। আন্তর্জাতিক সংজ্ঞা অনুযায়ী, আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীগুলো একটি অঞ্চলের প্রথম অধিবাসী বা স্বতন্ত্র সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য বহনকারী সম্প্রদায় হিসেবে বিবেচিত হয়। আদিবাসী শব্দটি প্রায়ই জাতিসংঘের বিভিন্ন কনভেনশন এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনে ব্যবহৃত হয়।

উপজাতি এবং আদিবাসীদের মধ্যে পার্থক্য: ১. স্বীকৃতি ও শব্দচয়ন: "উপজাতি" শব্দটি বাংলাদেশ সরকার প্রায়ই ব্যবহার করে থাকে, তবে "আদিবাসী" শব্দটি অধিকাংশ প্রান্তিক গোষ্ঠী নিজের পরিচয়ের জন্য ব্যবহার করতে চায়। কারণ তারা নিজেদেরকে ঐতিহাসিকভাবে প্রাচীন অধিবাসী বা আদিবাসী হিসেবে বিবেচনা করে।

২. আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি: আন্তর্জাতিকভাবে "আদিবাসী" শব্দটির একটি বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে এবং এর সাথে তাদের অধিকারের প্রশ্নটি যুক্ত। যেমন: আদিবাসীদের ভূমি অধিকার, ভাষা ও সংস্কৃতির সংরক্ষণ ইত্যাদি। বাংলাদেশ সরকার সাধারণত এই গোষ্ঠীগুলোকে "উপজাতি" বা "ক্ষুদ্র জাতিসত্তা" হিসেবে চিহ্নিত করে, কারণ "আদিবাসী" স্বীকৃতির সাথে আন্তর্জাতিকভাবে কিছু নির্দিষ্ট দাবি ও অধিকার সংযুক্ত থাকে।

৩. রাষ্ট্রের অবস্থান: বাংলাদেশ সরকার সাংবিধানিকভাবে "আদিবাসী" শব্দটি ব্যবহার করতে কিছুটা সতর্ক থাকে, কারণ তারা মনে করে এই স্বীকৃতির ফলে আন্তর্জাতিকভাবে কিছু সংবেদনশীল ইস্যুতে (যেমন: ভূমি অধিকার) জটিলতা তৈরি হতে পারে। তাই "উপজাতি" শব্দটি ব্যবহার করে তাদের সাংস্কৃতিক ও সামাজিক স্বতন্ত্রতাকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়, তবে "আদিবাসী" স্বীকৃতি এখনো সরকারিভাবে প্রদান করা হয়নি।

বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপট:

বর্তমানে বাংলাদেশে প্রান্তিক জাতিগোষ্ঠীর মানুষেরা তাদের সাংস্কৃতিক, ভাষাগত এবং ভূমির অধিকার সুরক্ষার দাবি জানিয়ে আসছে। তারা নিজেদের "আদিবাসী" হিসেবে স্বীকৃতি চায় এবং আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী তাদের অধিকার সুরক্ষার দাবি করছে। তবে সরকারের অবস্থান হলো, তারা এসব গোষ্ঠীকে "উপজাতি" হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে তাদের অধিকার সুরক্ষা করবে, তবে "আদিবাসী" শব্দটি ব্যবহার না করার জন্য সরকার সতর্ক।

উপসংহারে, উপজাতি এবং আদিবাসী শব্দ দুটির মধ্যে তাত্ত্বিক এবং বাস্তব পার্থক্য রয়েছে। তবে বাংলাদেশে এই পার্থক্যের বিষয়টি এখনো বিতর্কিত এবং রাজনৈতিকভাবে সংবেদনশীল।

19/09/2024

মব জাস্টিস (জনতার ন্যায়বিচার) মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন করে, বিশেষ করে লঙ্ঘন করে সংবিধান এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দলিলের অধীনে সংরক্ষিত ব্যক্তির জীবন, স্বাধীনতা এবং নিরাপত্তার অধিকার। সংবিধানের ৩১ অনুচ্ছেদে আইনের সুরক্ষার অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে, উল্লেখ করা হয়েছে যে প্রতিটি নাগরিক শুধুমাত্র আইন অনুযায়ী আচরণ করার অধিকারী এবং অনুচ্ছেদ ৩৫ একটি ন্যায্য বিচারের অধিকার প্রদান করে। বাংলাদেশে মব জাস্টিস এর ব্যাপকতা এই সাংবিধানিক গ্যারান্টিগুলির সম্পূর্ণ বিপরীত। মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণা এবং নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকারের আন্তর্জাতিক চুক্তি সুস্পষ্টভাবে একটি ন্যায্য বিচারের অধিকার এবং নির্দোষতার অনুমান (প্রিজাম্পশন অব ইনোসেন্স) কে রক্ষা করে। মব জাস্টিস প্রতিরোধ বা শাস্তি দিতে রাষ্ট্রের ব্যর্থতা এই ধরনের চুক্তির অধীনে তার বাধ্যবাধকতার লঙ্ঘন হিসাবে দেখা যেতে পারে, যার জন্য বাংলাদেশকে নিশ্চিত করতে হবে যে তার এখতিয়ারের মধ্যে থাকা সমস্ত ব্যক্তি এই আন্তর্জাতিক চুক্তিগুলির দ্বারা সুরক্ষিত অধিকারগুলি উপভোগ করবে। পেনাল কোড 1860 এ হত্যা(ধারা ৩০০) বেআইনি সমাবেশ (ধারা ১৪১), আঘাত করা (ধারা ৩৩৮) ইত্যাদির মতো অপরাধগুলিকে সম্বোধন করে যা মূলত জনতার সহিংসতার ফলাফল। আবার, ফৌজদারি কার্যবিধি 1898 এ (ধারা ১২৭) পুলিশ অফিসারদের বেআইনি সমাবেশের পরিস্থিতিতে হস্তক্ষেপ করার, জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে এবং সহিংসতা প্রতিরোধ করার ক্ষমতা দেয়। আইনি সংস্কার দ্বারা অতি দ্রুত মব জাস্টিস এর অন্তর্নিহিত সামাজিক এবং অর্থনৈতিক বৈষম্যগুলিকে মোকাবেলা করতে হবে।

12/09/2024

ভালোবাসার মানুষটি যদি রাগের বশে বা সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার কারণে পরস্পরের মধ্যকার অন্তরঙ্গ ছবি শেয়ার করার হুমকি দেয়, তবে করণীয় কি?

আপনার বন্ধুর ব্যক্তিগত ছবি দিয়ে যদি ব্ল্যাকমেইল করা হয়, তবে বাংলাদেশে তার জন্য বেশ কয়েকটি আইনি পদক্ষেপ রয়েছে। তিনি যা করতে পারেন তা হলো:

১. আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সাথে যোগাযোগ:

- অভিযোগ দায়ের করুন: যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ব্ল্যাকমেইল সম্পর্কে পুলিশে অভিযোগ জানানো উচিত। ব্যক্তিগত ছবি নিয়ে ব্ল্যাকমেইল ও হুমকি গুরুতর অপরাধ।
- উইমেন সাপোর্ট এন্ড ইনভেস্টিগেশন ডিভিশন :এই ডিভিশন মহিলাদের হয়রানি বা ব্ল্যাকমেইল সম্পর্কিত বিশেষ সহায়তা প্রদান করতে পারে। তারা এই ধরনের সংবেদনশীল মামলা পরিচালনার জন্য প্রশিক্ষিত।

২. আইনি বিধান:
- ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট (২০২৩): এই আইনের অধীনে, কারও সম্মতি ছাড়া ব্যক্তিগত ছবি শেয়ার করা বা শেয়ার করার হুমকি দেওয়া একটি অপরাধ। অপরাধী ৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড এবং/অথবা জরিমানা পেতে পারে। এই আইন বিশেষভাবে সাইবার হয়রানি ও ব্ল্যাকমেইলের মামলা আচ্ছাদিত করে।
- দণ্ডবিধি, ৫০৩ ধারা (অপরাধমূলক ভীতি প্রদর্শন): ব্ল্যাকমেইল এই ধারায় অপরাধমূলক ভীতি প্রদর্শন হিসাবে বিবেচিত হয় এবং কাউকে মানহানি করার হুমকি দিলে আইনি শাস্তির মুখোমুখি হতে পারে।
- পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন (২০১২):এই আইন সম্মতি ছাড়া কোনো ব্যক্তিগত বা স্পষ্ট ছবি তৈরি, বিতরণ বা প্রকাশ করাকে অপরাধ হিসাবে গণ্য করে। অপরাধীরা ৭ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড এবং/অথবা জরিমানা পেতে পারে।

৩. সুরক্ষা আদেশ:
- তিনি আদালত থেকে একটি "সুরক্ষা বা প্রতিরোধ আদেশ" চাইতে পারেন যাতে তার প্রেমিকের কাছ থেকে আরও যোগাযোগ বা হুমকি থেকে রক্ষা পান। এই আদেশ আইনত তাকে যোগাযোগ করা বা ছবি প্রকাশ করতে নিষেধাজ্ঞা দেয়।

৪. সাইবার ক্রাইম ইউনিটে রিপোর্ট করুন :
- বাংলাদেশ পুলিশের সাইবারক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ডিভিশন ডিজিটাল ব্ল্যাকমেইল সম্পর্কিত মামলা পরিচালনার জন্য বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত। তিনি অনলাইনে তাদের পোর্টালের মাধ্যমে বা সরাসরি সাইবার ক্রাইমের সাথে জড়িত পুলিশ স্টেশনে অভিযোগ দায়ের করতে পারেন।

৫. আইনি পরামর্শ নিন:
- তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হল একটি সাইবার আইন বা নারী অধিকারের ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ আইনজীবীর সাথে পরামর্শ করা। আইনজীবী তাকে অভিযোগ দায়ের করা এবং আইনি সুরক্ষা পাওয়ার প্রক্রিয়ায় সহায়তা করতে পারেন।

৬. এনজিও থেকে সহায়তা:
- বাংলাদেশে বেশ কয়েকটি সংস্থা যেমন "আইন ও সালিশ কেন্দ্র (ASK)" এবং "বাংলাদেশ মহিলা আইনজীবী সমিতি (BNWLA)" মহিলাদের হয়রানি, ব্ল্যাকমেইল বা নির্যাতনের শিকার হলে আইনি পরামর্শ, কাউন্সেলিং এবং সহায়তা প্রদান করে।

এই পদক্ষেপগুলো অনুসরণ করে আপনার বন্ধু নিজেকে রক্ষা করতে এবং বাংলাদেশের আইনি ব্যবস্থা ব্যবহার করে ন্যায়বিচারের জন্য লড়াই করতে পারেন।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতাচ্যুতির এক মাস পূর্তি উপলক্ষে পতাকা হাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘শহ...
05/09/2024

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতাচ্যুতির এক মাস পূর্তি উপলক্ষে পতাকা হাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘শহীদি মার্চ’ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে।

26/08/2024

বাংলাদেশ উজানের দেশ। যার বেশিরভাগের উৎপত্তি ভারতে।আন্তর্জাতিক নদীর গতিপথে ভারত যে বাঁধ সৃষ্টি করেছে সেগুলো বেআইনি নাকি আইন সম্মত তা আমরা দেখে নিব।

".......বিগত ১৬ বছরে তোমাদের অনেক না পাওয়া, অনেক ক্ষোভ আছে আমরা বুঝি। কিন্তু প্রতিদিনই সচিবালয় ঘেরাও বা সমাবেশ করলে তো আ...
25/08/2024

".......বিগত ১৬ বছরে তোমাদের অনেক না পাওয়া, অনেক ক্ষোভ আছে আমরা বুঝি। কিন্তু প্রতিদিনই সচিবালয় ঘেরাও বা সমাবেশ করলে তো আমরা আমাদের কাজ করতে পারবোনা। আপনাদের দুঃখ দুর্দশা কমাতে পারবোনা। আপনারা আমাদের সুযোগ দিন, প্রয়োজনে লিখিত ভাবে আমাদের কাছে অভিযোগ প্রেরণ করুন।"

-জাতির উদ্দেশ্য ভাষণে ড. মুহাম্মদ ইউনুস।

24/08/2024

পানি রাজনীতি খুব জটিল। এটা ফেসবুকে পোষ্ট দিয়ে হিন্দু- মুসলিম বাইনারী উসকে দেয়ার ভ্রান্ত রাজনীতি না। এটা প্রতিবেশী দেশের চিরাচরিত দ্বন্ধ মুখর রাজনীতি থেকেও বহুলাংশে জটিল। যতগুলো রাজনীতি আছে তার মধ্যে পানি রাজনীতি সবচেয়ে এডুকেটেড ও ইন্টিলিজেন্ট রাজনীতি।

না বুঝেই বডর করে আপনার অশিক্ষিত মনকে পানি রাজনীতির মধ্যে ঢুকিয়ে হিন্দু- মুসলিম বাইনারী উসকে দিয়ে ভাবিয়েন না, আপনি পূন্য করছেন কিংবা বিশাল পন্ডিত হয়ে গেছেন। আপনি মূর্খ মূর্খই থেকে গেলেন।

মাঠের রাজনীতি আর পানি রাজনীতি এক না। পানি রাজনীতি বুঝতে তথ্য উপাত্ত লাগে, স্লো- কাম-এন্ড স্টিডি মাইন্ড লাগে, ভূগোল, পরিবেশ নিয়ে অতীত বর্তমান ও ভবিষ্যত মাথায় রাখতে হয়।

ভারতের সাথে আমাদের অভিন্ন নদীর সংখ্যা ৫৪ ( মোট আন্তর্জাতিক নদী ৫৭- ৩ টা মায়ানমারের সাথে) কিংবা মতান্তরে ৬২। ভাটির দেশ হিসাবে এইসব আন্তর্জাতিক নদীতে আমাদের পানি প্রাপ্তির অধিকার আন্তর্জাতিক নানা আইন দ্বারাই প্রতিষ্ঠিত। কিন্ত প্রশ্ন হচ্ছে আমরা সেসব আইন কে এক্সেপ্ট করেছি কিনা? হেলসিংকি প্রিন্সিপাল আমরা কতটুকু পালন করছি? ( হেলসিংকি প্রিন্সিপাল নিয়ে এশিয়া প্যাসিফিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক M Mizanur Rahaman এর ভালো গবেষনা আছে)-- ১৯৯৬ সালের নন- নেভিগেশনাল ওয়াটার এক্ট আমরা স্বাক্ষর করেও অনুসমর্থন কেন করছি না? ( এটা নিয়ে নদী গবেষক Sheikh Rokon অনেক দিন থেকেই এডভোকেসি করছে) এটাই আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে পানি সংক্রান্ত বন্টনের সবচেয়ে বড় আইন।।যে আইন ভারত স্বাক্ষর করেই নি।।আমরা স্বাক্ষর করেও ভারতের চাপে অনুসমর্থন করিনি। ভারতকে পানির বন্টনে বাধ্য করতে আমরা দ্বিপক্ষীয় আলোচনার বাহিরে বহুপক্ষীয় আলোচনায় টেনে নিতে না পারার ব্যর্থতা কাদের?

পৃথিবীতেই পানি বন্টন চুক্তির সবচেয়ে ক্লাসিক ও কার্যকরী সমঝোতা-- ইন্দাস ট্রিটি-- সিন্ধু নদের শাখানদী ও উপনদী গুলোর মধ্যে কয়টা পাকিস্তান আর কয়টা ভারত ব্যবহার করবে সেই সংক্রান্ত চুক্তি। সেটা হয়েছে ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের তত্ত্ববধানে। দুই দেশই সেটা মেনে চলে। ভারত পাকিস্তানের মধ্যে এত বৈরিতা থাকার পরেও ইন্দাস ট্রিটি তারা মেনে চলে। সেখানে এই রকম একটা কার্যকর চুক্তি করতে পারিনি আমরা। আমরা তৃতীয় পক্ষকে গ্যারান্টার হিসাবে আনতে পারিনি যাতে ভারতকে চুক্তির শর্ত সমুহ মানতে বাধ্য করা যায়।

ফারাক্কা বাঁধ আন্তর্জাতিক আইনের বৃহদাংশে লংঘন। ভালো হোক, খারাপ হোক ফারাক্কা নিয়ে তাও কিছু চুক্তি আছে।।অন্য নদী গুলোতে সেটাও নেই। এই ব্যর্থতা নিয়ে আলোচনা নেই। তিস্তার গজলডোবায় ভারত বাঁধ দিয়ে একতরফা পানি নিয়ন্ত্রন করেছে, কিন্ত ভাটিতে আমরা তিস্তা ব্যারেজ করে আরেকটু ভাটির গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রামের সাথেও কি একই অনাচার করে যাচ্ছিলাম না? আমাদের ইন্টারনাল পানি ব্যবস্থাপনা নিয়ে আমাদের পরিকল্পনা কই? ইকুয়েটি কি ইন্টারনাল পানি ব্যবস্থাপনার জন্য প্রযোজ্য না? পানি রাজনীতি যতটা সীমান্ত দেশের সাথে, ঠিক ততটাই আভ্যন্তরীন পানি ব্যবস্থাপনার নিয়েও।

আমাদের জি- কে ( গংগা- কপোতাক্ষ) প্রজেক্টের ইভালুয়েশন কই? মেঘনা - ধানাগোদা প্রকল্পের আউটকাম কি? জি -কে প্রজেক্টের কারণেই কি কপোতাক্ষ মরে গেলো? উজানে ফারাক্কা ব্যারেজ থাকার পরেও কোন আক্কেলে আমরা জি-কে প্রজেক্ট করে পানি আরো ডাইভার্ট করলাম? ভৈরব নদ কে পুনরুজ্জীবিত করার প্রকল্প মাঠে কারা মেরে ফেললো? সুন্দরবনে ফ্রেশ ওয়াটার ফ্লো বাড়ানোর এই উদ্যোগ যে সমন্বয় হীনতার কারণে যে মাঠে মারা গেলো সেই আলোচনা কই? গড়াই ও মধুমতির ফ্রেশ ওয়াটার ফ্লো মনসুনে কত আর ড্রাই সিজনে কত? এর কারণে সুন্দরবনে স্যালিনিটির তারতম্য কি হয়? অনেক আগে Sparso র একটা গবেষনা দেখলাম সুন্দরবনে স্যালিনিটির কারণে স্পিসিস কম্পোজিশন চেঞ্জ হয়ে যাওয়ার।ফলো আপ দেখি নাই আর।

ফারাক্কার কারণে আমাদের গড়াই ও মধুমতির কি অবস্থা সেই সংক্রান্ত তথ্য উপাত্ত কি আছে আমাদের? গবেষনা আছে? মনিরুল কাদের মির্জার সেই ২০০৪ সালের গবেষণার পর আর কোন গবেষনা চোখে পড়েনি। কিন্ত এটাতো হওয়া উচিত ছিলো আমাদের রুটিন কাজ। না হলে ভারতের সাথে পানি বন্টন আলোচনায় আমরা কিভাবে নেগোশিয়েট করবো?

আগেই বলেছি পানি বন্টন আলোচনা পৃথিবীর সবচেয়ে জটিল ও সায়েন্টিফিক ডিপ্লোম্যাসি। এখানে গা জোয়ারি আর ফেসবুকের সাম্প্রদায়িক উস্কানী রাজনীতিতে কাজ হয় না।

ডম্বুর লেকের সাথে মহুরী, ফেনী, সিলোনিয়া নদীর সম্পর্ক কি? সবাই কে উসকে দিচ্ছেন, আগে সঠিক তথ্যটা জানবেন। ভুল উসকানী প্রতিবেশি দেশ ক্যাশ করবে।এবং এটাই বারবার হয়। যেটা জানেন না, বুঝেন না- সেখানে রাজনীতি করতে যাইয়েন না। এতে হিতে বিপরীত হয়।

আর পানি বন্টন চুক্তি হয় শুষ্ক মৌসুমের পানি বন্টন নিয়ে। যেকোন ওয়াটার শেয়ারিং চুক্তির ৮০% ই শুষ্ক মৌসুম কেন্দ্রিক।মুনসনাল ওয়াটার শেয়ারিং ইস্যু প্রধান না। তবে মনসুনাল ওয়াটার, ফ্লাড ইনফরমেশন, আর্লি ওয়ার্নিং শেয়ারিং তো একটা রেগুলার কাজ ছিলো। সার্ক মেটেরিওলজিকাল সেন্টারের অধীনে এই ধরনের তথ্য আদান প্রদান তো নিয়মিতই হতো জানতাম- সেগুলো কি তাহলে ফাংশনাল না?

উজানের নদীতে বাঁধ দেয়া আন্তর্জাতিক আইন পরিপন্থী। ডম্বুরে জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন নিয়ে বাংলাদেশ আগে আনুষ্ঠানিক আপত্তি জানিয়েছিলো কিনা? ডম্বুরে বাধের কারণে গোমতীর প্রবাহ কিভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে সেটা নিয়ে আমাদের কোন তথ্য উপাত্ত আছে? আমি শুনি নাই।

জল কপাট খুলে দেয়ায় বন্যা হয়েছে এটা অতি সরলীকরণ। উজানে পানি বাড়লে এমনিতেও বাধ ভেংগে যেতো তাতে ক্ষয়ক্ষতি আরো বেশি বই কম হতো না। উজানে ভারী বষর্ণ, পূর্ব হিমালয়ের হিমবাহ দ্রুত গলা সহ নানা কারণেই আমাদের অবস্থান নাজুক। এইসব কারণে শুধু ভাটি না, উজান ও ক্ষতিগ্রস্থ। এটা শুধু পানি বন্টন চুক্তির কারণেই হচ্ছে এমন না-- এটার কারণ ভারতে সিকিম, দার্জিলিং, ত্রিপুরায় অপরিকল্পিত রাস্তা নির্মান, জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ড্যাম ও ভুল ভাবে পাহাড়ি ক্ষরস্রোতা নদী ব্যবস্থাপনা। ভাটির দেশ হিসাবে এই ধরনের ব্যবস্থাপনার ট্রান্সবাউন্ডারী প্রভাব আমাদের দেশেও পড়ছে।

এইবারের বন্যায় যতনা জলবিদ্যুৎ এর বাঁধ দায়ী তার থেকেও বেশি দায়ী অতি বৃষ্টি, হিমবাহ গলে যাওয়া। এইগুলোর জন্য প্রয়োজন সমন্বিত উদ্যোগ। তথ্য উপাত্ত ও আগাম বন্যা ব্যবস্থাপনা জোরদার করা। মহুরী নদীর পানি বন্টন নিয়ে নিশাত স্যারের নেতৃত্বে কারিগরী কমিটি যে সুপারিশ করেছিলো সেটা বাস্তবায়ন করলে বন্যার প্রকোপ হয়তো কমতো না, কিন্ত ক্ষয়ক্ষতি হয়তো কিছুটা কমতো।

আমাদের জলাধার গুলো অব্যবস্থাপনায় পানি ধারণ ক্ষমতা আশংকাজনকভাবে কমে গেছে। তাই প্রাকৃতিকভাবেই দু একটা অতিবৃষ্টির ইভেন্টেই আমরা বন্যার কবলে পড়ছি। নদীগুলো দখল, ভরাট হয়ে পানি স্প্ল্যাশ হয়ে বন্যা হওয়া স্থানীয় পানি রাজনীতি। সেটাও জোরদার করেন। মুহুরী প্রজেক্ট এই মুহুর্তে গলার কাটা কিনা সেই পর্যালোচনাও জরুরী।

উজানের যে পানি নেমে আসে তার কত শতাংশ বংগোপসাগরে ওয়াস্টেড হয় সেই আলোচনা দেখলাম না। আমাদের নদী গুলোর সম্মিলিত পানি ধারণ ক্ষমতা কত? কেউ জানেন? আমরা বর্ষায় কত পানি পর্যন্ত রিভার কোর্সে রাখতে সক্ষম আর কত পানি বেড়ে গেলে সেটা ফ্লাড হবে এমন কোন মডেলিং কি Warpro কিংবা ওয়াটার মডেলিং ইন্সটিটিউট কিংবা সিইজআইএস করেছে?

রাজনীতি এটা নিয়েও করেন- পানি সংক্রান্ত গবেষনা প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধি। এগুলোর অটোনমি ও বাজেট এইসব নিয়ে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধ ও বন্যা নিয়ন্ত্রন অবকাঠামো নিয়ে যে হরিলুট সেটা নিয়েও রাজনীতি করেন। তাহলে সিস্টেমের সামগ্রিক উন্নতি হবে। একই সাথে আমরাও ওয়াটার নেগোশিয়েশনে তথ্য উপাত্ত দিয়ে একটা শক্তিশালী অবস্থান নিতে পারবো।

JRC ( Joint River Commission) পূর্নগঠন করেন। সরকারী ট্রেইন্ড আমলার সাথে স্বাধীন বিশেষজ্ঞ দিয়ে এই কমিটিকে পূর্নগঠন করে শক্তিশালী করেন যেন আমরা ওয়াটার নেগোশিয়েসনে শক্ত অবস্থান নিতে পারি।

আমাদের উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের পি এইচডির থিসিস ফারাক্কার পানি বন্টন নিয়ে। উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান ও অনেকদিন পরিবেশ নিয়ে এডভোকেসি করার কারণে পানি সংক্রান্ত রাজনীতি ভালোই বুঝেন। তাই উনাদের কাছে প্রত্যাশা এই পানি রাজনীতির দেশীয় ও আন্তর্জাতিক দুই স্তরেই আমরা ভাটির দেশ হিসাবে ন্যায্য দাবী আদায় করতে সমর্থ হবো।

আর বন্যার মানব সৃষ্ট দিক যেমন আছে, তেমনি প্রাকৃতিক কারণ ও আছে। তাই ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালীতে কত হিন্দু আছে, তারা কেন এখন শাহবাগে দাঁড়ায় না ( আমার পরিচিত বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু সহপাঠী ও ভাই বোনকেও দেখলাম এই ধরনের নোংরা ও সস্তা পোষ্ট শেয়ার করতে। ছি। লজ্জা) এই ধরনের ঘৃণাবাদী, সস্তা বাহবা পাওয়ার শিট পোষ্ট শেয়ার করে নিজের ভেতরের নোংরামী আর ফ্যাসিবাদিকে সামনে এনে বন্যার যারা দূর্গত তাদের কে আর গুটি বানাইয়েন না। আগে গিয়ে তাদের পাশে দাড়ান। আপনাদের এই নোংরামিতে তাদের চার আনার লাভ ও হচ্ছে না। যদি সত্যি মন থেকে তাদের ভালো চান-- তাহলে দোষারোপ আর ধর্মের রাজনীতি ছেড়ে আগে তাদের পাশে দাড়ান- আর্থিক,মানবিক, শারিরীক- যেভাবেই হোক।

তারপর বন্যা কমে আসলে-- একটু পড়ালেখা করে আমাদের সরকারকে চাপ দিয়েন যেন পানি রাজনীতির দেশীয় ও আন্তর্জাতিক দুই স্তরেই আরো জোরদার ভূমিকা নেয়।
©️Baten Muhammed

হ্যাঁ, এরকম বাংলাদেশই আমরা চেয়েছিলাম। ❤️
23/08/2024

হ্যাঁ, এরকম বাংলাদেশই আমরা চেয়েছিলাম। ❤️

দোয়ায়ে ইউনুস খতম করে দোয়া করলে দোয়া কবুল হয়। দোয়ায়ে ইউনুস এক খতমে ১ লক্ষ ২৪ হাজার বার পড়তে হয়। আপনাদের কাছে বিনীত অনুরোধ...
23/08/2024

দোয়ায়ে ইউনুস খতম করে দোয়া করলে দোয়া কবুল হয়।

দোয়ায়ে ইউনুস এক খতমে ১ লক্ষ ২৪ হাজার বার পড়তে হয়।

আপনাদের কাছে বিনীত অনুরোধ সবাই ৫ বার করে দোয়ায়ে ইউনুস পড়ে দোয়া করে দিন যেন আল্লাহ বন্যায় কবলিত এলাকার সকল ধর্মের মানুষ কে হেফাজত দান করেন। আমিন।

23/08/2024

বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে ,প্রতি মুহুর্তে এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের মানুষ এটা বুকে ধারন করে এগিয়ে চলেছে "সবার উপরে মানুষ সত্য তাহার উপর নাই।"
Video : Collected

খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার অঞ্চলের ওপর দিয়ে দক্ষিণ দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে ...
23/08/2024

খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার অঞ্চলের ওপর দিয়ে দক্ষিণ দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। ফলে এসব এলাকার নদীবন্দর সমূহকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
Source- Jamuna TV

ক্রমেই যা বেড়ে চলেছে...
23/08/2024

ক্রমেই যা বেড়ে চলেছে...

22/08/2024

বন্যার্তদের উদ্ধারে সেনাবাহিনীর জরুরী নম্বর সমূহ

১। মৌলভীবাজার সদর, শ্রীমঙ্গল, রাজনগর, কমলগঞ্জ, মৌলভীবাজার জেলা:

০১৭৬৯১৭৫৬৮০
০১৭৬৯১৭২৪০০

২। কুলাউড়া, জুরি, বড়লেখা, মৌলভীবাজার জেলা :
০১৭৬৩৯০১৬৯৮

৩। হবিগঞ্জ জেলা:
০১৭৬৯১৭২৫৯৬
০১৭৬৯১৭২৬৩৪

৪। ফেনী জেলা:
০১৭৬৯৩৩৫৪৬১
০১৭৬৯৩৩৫৪৩৪
০১৬১৪৪০৯৫৬৫
০১৯১৯৭৭৪৮৪০
টেলিফোন: ০২৩৩৭৭৩৪১১০

৫। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন: ০১৭৬৯-২৪৪০১২

৬। সীতাকুন্ড-মীরসরাই, চট্টগ্রাম জেলা:
০১৭২৮-২০২৬৭৭ ০১৭৬৯-২৪২১৩২ ০১৭৬৯-২৪২১২৮

৭। ফটিকছড়ি, চট্টগ্রাম জেলা: ০১৭৬৯-২৭২৩৪২ ০১৭৬৯-২৭২৩৩৬

৮। খাগড়াছড়ি জেলা: ০১৭৬৯-৩০২৩৪২ ০১৭৬৯-৩০২৩৩৬

সম্প্রতি ভারত তাদের ডম্বুর গেট খুলে দেওয়ায় তীব্র বন্যায় প্লাবিত হচ্ছে বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলের জনপদ। এমতাবস্থায়, প্রশ্ন আ...
22/08/2024

সম্প্রতি ভারত তাদের ডম্বুর গেট খুলে দেওয়ায় তীব্র বন্যায় প্লাবিত হচ্ছে বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলের জনপদ। এমতাবস্থায়, প্রশ্ন আসতে পারে যে ভারত কি আসলেই এভাবে বাঁধ নির্মাণ ও হুট করেই গেটগুলো খুলে দিতে পারে? চলুন দেখি আইন এ কি বলা আছে এই ব্যাপারে :

রিও ঘোষণা, পরিবেশ ও উন্নয়ন (১৯৯২) এর নীতি ২ বলে:

"রাষ্ট্রগুলির, জাতিসংঘের চার্টার এবং আন্তর্জাতিক আইন এর নীতিগুলির সাথে সঙ্গতি রেখে, তাদের নিজস্ব পরিবেশগত ও উন্নয়নমূলক নীতির ভিত্তিতে তাদের নিজস্ব সম্পদ ব্যবহার করার সার্বভৌম অধিকার রয়েছে এবং তাদের কর্তৃত্ব বা নিয়ন্ত্রণাধীন কার্যক্রম অন্য রাষ্ট্রগুলির পরিবেশ বা জাতীয় সীমার বাইরে থাকা অঞ্চলের পরিবেশে ক্ষতি না করার দায়িত্ব রয়েছে।"

অর্থাৎ এই নীতি রাষ্ট্রগুলির প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবহার করার অধিকার যেমন দিয়েছে, তেমনি তাদের জাতীয় সীমানার বাইরের অঞ্চলে যেনো এর প্রভাব না পড়ে, সেই দায়িত্ব ও দিয়েছে।

আবার, আন্তর্জাতিক জলপথের অ-নৌপরিবহণ ব্যবহারের আইন সংক্রান্ত কনভেনশনের (১৯৯৭) অনুচ্ছেদ ৫ বলে:

১. জলপথ রাষ্ট্রগুলো তাদের নিজ নিজ অঞ্চলসমূহে সব উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে যাতে অন্যান্য জলপথ রাষ্ট্রগুলোর ক্ষতি প্রতিরোধ করা যায়।

২. জলপথ রাষ্ট্রগুলো তাদের নিজ নিজ অঞ্চলসমূহে সব উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে যাতে আন্তর্জাতিক জলপথ ব্যবহারের ফলে অন্য জলপথ রাষ্ট্রগুলোর কোনো উল্লেখযোগ্য ক্ষতি না হয়।

এই অনুচ্ছেদটি রাষ্ট্রগুলোর উপর জোর দেয় যে তারা আন্তর্জাতিক জলপথ ভাগাভাগি করে ব্যবহার করার সময় অন্য রাষ্ট্রগুলোর ক্ষতি প্রতিরোধ এবং নিজেদের ব্যবহারের ফলে উল্লেখযোগ্য ক্ষতি না করার দায়িত্ব পালন করবে।
অর্থাৎ এই সকল আইনের ভিত্তিতে বলা যায়, বাঁধ নির্মাণে ভারতের বৈধতা থাকলেও সেক্ষেত্রে অবশ্য পালনীয় কিছু কর্তব্য তাদের ছিলো। অন্তত বাঁধ গুলো খুলে দেওয়ার পূর্বে আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র গুলো কে জানানোর প্রয়োজন ছিলো। পাশাপাশি এই বাঁধ খুলে দেওয়ার ফলে তাদের সীমানার বাইরের রাষ্ট্রে কি প্রভাব পড়তে পারে, সেটা বিবেচনা করে তাদের সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত ছিলো।

Address

Dhaka

Telephone

+8801877105317

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Eye of Law posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Eye of Law:

Videos

Share

Category